দৈনন্দিন সুরক্ষা প্রশ্নোত্তর

ফুজি পর্বত আরোহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা

(১) পর্বত আরোহণ মৌসুম ও পথ

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আমরা ফুজি পর্বতে আরোহণের আগে একজন পর্বতারোহীর যেসব বিষয়গুলো জানা থাকা উচিত সেই তথ্যগুলো তুলে ধরব।

৩,৭৭৬ মিটার উঁচু ফুজি পর্বত জাপানের সর্বোচ্চ পর্বত। পর্বতটিকে ইউনেস্কো বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। পর্বতটির চূড়ায় আরোহণের জন্য চারটি পথ রয়েছে। প্রতি বছর ইয়ামানাশি জেলার দিক থেকে পথটি ১লা জুলাই এবং শিযুওকা জেলার দিক থেকে তিনটি পথ ১০ই জুলাই পর্বতারোহীদের জন্য খুলে দেয়া হয়। সবকয়টি পথই ১০ই সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায়।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলছে গত গ্রীষ্মে ফুজি পর্বত প্রায় ২ লক্ষ ২১ হাজার পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করেছে। সংখ্যাগত এই হিসাব ২০১৯ সালের করোনাভাইরাস মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের প্রায় সমপর্যায়ে পুনরুদ্ধার লাভ করেছে। তবে পর্বতের সরু পথে ভিড় এবং পর্বতারোহীদের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নতুন কিছু নিয়ম চালু করতে প্ররোচিত করেছে। এসব নিয়মের মধ্যে রয়েছে একটি অনলাইন রিজার্ভেশন বা আসন সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালুকরণ এবং পর্বতারোহীদের কাছ থেকে পর্বত আরোহন বাবদ চাঁদা আদায় করা।

পরবর্তী পর্ব থেকে আমরা চারটি পথের প্রতিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পর্বত আরোহীদের জন্য তুলে ধরব।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ২৭শে জুন পর্যন্ত নেয়া।

(২) নতুন নিয়মাবলি

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা ইয়ামানাশি জেলার ইয়োশিদা ট্রেইলে বা পথে চালু করা নতুন নিয়মাবলির উপর নজর দেবো। ।

২০২৩ সালের গ্রীষ্মকালীন আরোহণ মৌসুমে, প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার পর্বতারোহী ইয়োশিদা ট্রেইল বেছে নিয়েছিলেন, যা পর্বতের মোট পর্বতারোহীদের সংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ।

এদিকে, ১লা জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া এবারের পর্বতারোহণ মৌসুমে, ইয়োশিদা ট্রেইলের জন্য নতুন নিয়মাবলি চালু করেছে ইয়ামানাশি জেলা। পর্বতারোহীর সংখ্যা প্রতিদিন ৪ হাজারে সীমাবদ্ধ করার জন্য ২ হাজার ৩শ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ফিফথ স্টেশন নামক স্থানে একটি প্রবেশদ্বার স্থাপন করা হয়েছে। বিকেল ৪টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত এই দ্বার বন্ধ থাকে।

ইয়োশিদা ট্রেইল ধরে ভ্রমণকারী আরোহীদের জনপ্রতি ২ হাজার ইয়েন বা প্রায় ১৩ মার্কিন ডলার প্রবেশমূল্য দিতে হবে। আরোহীরা প্রবেশদ্বার এই ফি প্রদান করতে পারবেন অথবা আরোহণকে সহজে করার জন্য আগে থেকেই অনলাইনে অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন।

ইয়োশিদা ট্রেইলের জন্য একটি নতুন অগ্রিম আসন সংরক্ষণ ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। আমরা পরবর্তী কিস্তিতে এবিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাব।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ২৮শে জুন পর্যন্ত নেওয়া।

(৩) নতুন আসন সংরক্ষণ ব্যবস্থা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা ইয়ামানাশি জেলার ইয়োশিদা ট্রেইলে বা পথে চালু করা নতুন আসন সংরক্ষণ ব্যবস্থার উপর নজর দেবো।

ইয়ামানাশি জেলা ইয়োশিদা ট্রেইলের জন্য একটি নতুন আসন সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করেছে যেন পর্বতারোহীদের সংখ্যার সীমাবদ্ধতাজনিত বিভ্রান্তি এড়ানো যায়।

এই ব্যবস্থায় ফুজি পর্বতে আরোহণের জন্য আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে অগ্রিম আসন সংরক্ষণ বা রিজার্ভেশন করা যায়। রিজার্ভেশনের জন্য আরোহীকে ‘পাহাড়ের লজে রাত্রিযাপন’ অথবা ‘দিনের মধ্যে ভ্রমণ শেষ করা’ এই দুটি অপশন থেকে যেকোন একটি বেছে নিতে হবে এবং আরোহণের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। এরপর আরোহীকে নিজ দলের আরোহীদের সংখ্যা, দলনেতার নাম এবং ফোন নম্বর প্রদান করতে হবে। সবশেষে, ভ্রমন ফি বাবদ জনপ্রতি ২ হাজার ইয়েন বা প্রায় ১২.৭ মার্কিন ডলার প্রদান করে রিজার্ভেশন সম্পূর্ণ করতে হবে। অবশ্য চাইলে অতিরিক্ত ১ হাজার ইয়েন বা প্রায় ৬.৩ মার্কিন ডলার স্বেচ্ছায় দানসহ ৩ হাজার ইয়েন বা জনপ্রতি প্রায় ১৯ মার্কিন মার্কিন ডলার দেয়ার বিকল্পটিও বেছে নিতে পারেন।

পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করার পর, আবেদনকারী একটি কিউআর কোড পাবেন যা আবেদনকারীকে ইয়োশিদা ট্রেইলে প্রবেশ দরজার কাছে একটি কব্জির ব্যান্ড লাভের অনুমতি দেবে।

রিজার্ভেশন সিস্টেমে জাপানি, ইংরেজি এবং চীনা ভাষায় সেবা দেয়া হচ্ছে। আরোহণের তারিখের আগের দিন আরোহী রিজার্ভেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে পর্বতারোহী যদি ফুজি পর্বতে রাত্রিযাপন করতে চান তবে আরোহীকে আলাদাভাবে একটি পাহাড়ি লজে পৃথক রিজার্ভেশন করতে হবে।

রিজার্ভেশন আবশ্যকীয় নয়, তবে এটি পর্বতারোহীর পছন্দের দিনে এবং আরোহণের প্রক্রিয়াগুলোকে ত্বরান্বিত করে ভ্রমণকে স্বস্তিকর করতে সাহায্য করবে৷ ইয়ামানাশি জেলা প্রতিদিন পর্বতারোহীর সংখ্যা ৪ হাজারে সীমাবদ্ধ করেছে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ১লা জুলাই পর্যন্ত নেওয়া।

(৪) শিযুওকার দিক থেকে আরোহণ পথে নতুন ব্যবস্থা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা শিযুওকা জেলার দিক থেকে পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত কিছু নতুন ব্যবস্থার উপর নজর দেবো।

শিজুওকা থেকে ফুজি পর্বত আরোহণের তিনটি পথ হলো সুবাশিরি, গোতেম্বা এবং ফুজিনোমিইয়া।

চলতি পর্বতারোহণ মৌসুম থেকে শিযুওকা জেলা একটি পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে পর্বতারোহীদেরকে পৌরসভার ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত তথ্য অগ্রিম নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। পর্বতারোহীদের আবশ্যিকভাবে তাদের আরোহণের সময়সূচি ‌এবং পর্বতে রাত্রিযাপনের লজিং সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধনসহ পর্বতারোহণ সংশ্লিষ্ট সুষ্ঠু আচরণ সম্পর্কিত একটি ভিডিও দেখতে হবে।

নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর একটি কিউআর কোড দেওয়া হবে, যা আরোহণ পথের শুরুতে বিতরণ করা কব্জির ব্যান্ড সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া, যেসব পর্বতারোহী রাত্রিযাপনের জন্য কোনো স্থান সংরক্ষণ করেননি, তাদেরকে বিকাল ৪টার পর পর্বতে আরোহণ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করছে জেলা কর্তৃপক্ষ।

নিবন্ধন করতে হবে শিযুওকা পৌরসভার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। ব্যবহারকারীরা এখন তাদের তথ্য ইংরেজি, চীনা বা থাই ভাষায় নিবন্ধন করতে পারবেন। জেলা কর্তৃপক্ষ কোরিয়ান এবং ভিয়েতনামিসহ অন্যান্য ভাষায়ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে।

যেসকল ব্যক্তি পর্বতারোহণের আগে প্রাক-নিবন্ধন করেননি, তারা আরোহণ পথের শুরুতে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পর্বতে প্রবেশ করতে পারবেন।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ২রা জুলাই পর্যন্ত নেওয়া।

(৫) ‘বুলেট ক্লাইম্বিং’

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা তথাকথিত “বুলেট ক্লাইম্বিং” সমস্যার উপর নজর দেবো।

কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়মাবলি চালু করার পিছনে বিভিন্ন কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো ক্রমবর্ধমান সংখ্যক পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ। আরোহীদের মধ্যে কেউ কেউ “বুলেট ক্লাইম্বিং” শীর্ষক উপায়ে, অর্থ্যাৎ বিশ্রাম না নিয়ে রাতের মধ্যে পর্বত শৃঙ্গে আরোহণের চেষ্টা করেন, যা আরোহীর জন্য বিপজ্জনক হিসাবে বিবেচিত। পর্বতারোহীরা পাহাড়ের লজে রাত্রি যাপন না করেই পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যোদয় দেখার জন্য দ্রুতগতিতে চূড়ার দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু আরোহীদের কারো কারো পর্বত আরোহণের তেমন অভিজ্ঞতা থাকে না এবং পর্যাপ্ত সরঞ্জামও থাকে না। এধরনের আরোহীদের উচ্চতাজনিত অসুস্থতা এবং হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। গত পর্বতারোহণ মৌসুমে এই ধরনের উপসর্গ দেখা যাওয়া অনেক ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হয়েছিল। এছাড়া কেউ কেউ পাহাড়ে চড়ার পথের পাশে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটায়, যা অন্য আরোহীদের জন্য পথকে বাধাগ্রস্ত করে তোলে। এই কাজ পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে একেবারেই নিষিদ্ধ। একজন স্থানীয় গাইডের মতে, বুলেট ক্লাইম্বারদের বা দ্রুতগতিতে পর্বতারোহণের চেষ্টকারীদের মধ্যে অনেক বিদেশি রয়েছেন।

এধরনের পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ ইয়ামানাশি জেলার ইয়োশিদা পথের একটি প্রবেশদ্বার বিকাল ৪ টা থেকে পরের দিন সকাল ৩টা পর্যন্ত পথ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিযুওকা জেলার দিক থেকে পাহাড়ে আরোহণকারীদের জন্য, বিকাল ৪ টার পর যারা আরোহণ শুরু করবেন তারা লজ বুক করেছেন কি না, কর্মকর্তারা সেই প্রশ্ন তাদের করবেন। বুকিং না থাকলে আরোহণ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হবে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ৩রা জুলাই পর্যন্ত নেওয়া।

(৬) জনাকীর্ণ পথ এড়িয়ে চলা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা পর্বত আরোহণের জনাকীর্ণ পথ এড়িয়ে চলার উপর নজর দেবো।

ফুজি পর্বতে আরোহণের পথগুলো প্রতি বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, মাত্র দুই মাস সময়ের জন্য খোলা থাকায় তা অত্যন্ত জনাকীর্ণ হয়ে উঠে। ফুজি পর্বত আরোহণের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট বলছে যে চূড়ার কাছাকাছি সরু পথগুলোতে বিশেষ করে সপ্তাহান্তে এবং আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে গ্রীষ্মের ছুটিকালীন রাত ৩টা থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ে প্রচণ্ড ভিড় হয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের ভাষ্যমতে, ভিড় এতটাই মারাত্মক হতে পারে যে পর্বত আরোহীদের চলাচলের জন্যও তা অসুবিধাজনক হয়ে উঠতে পারে। অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় সরু পথগুলোতে ভিড়ের কারণে নিচের পর্বতারোহীদের উপর পাথর পিছলে পড়ার উপক্রম হয়ে উঠে। এছাড়া ভিড়ের ফলে পাথর পড়া এড়িয়ে চলাও বেশ কঠিন হয়ে দেখা দেয়। পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে এটি খুবই বিপজ্জনক।

আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট তাই পর্বত আরোহীদের সপ্তাহের ছুটির দিনগুলো এবং সবচেয়ে বেশি ভিড়ের সময়গুলো এড়িয়ে চলার জন্য উৎসাহিত করার চেষ্টা করছে। । ওয়েবসাইটের মতে, পর্বত আরোহীরা কেবল চূড়া থেকেই নয়, বরং সরু পথ থেকেও চাইলে সূর্যোদয়ের দৃশ্য অবলোকন করতে পারেন।

এসব কারণে সরু পথ জুড়ে যেসব জায়গায় জনতার ভিড় বেশি, সেই সব জায়গা এবং ভিড়ের পূর্বাভাসসমূহ ওয়েবসাইট থেকে জানার জন্য পর্বত আরোহীদের অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়াও এক্ষেত্রে সূর্যোদয় দেখার চমৎকার অবস্থান সংক্রান্ত তথ্যও ওয়েবসাইট সরবরাহ করে থাকে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ৪ঠা জুলাই পর্যন্ত নেওয়া।

(৭) প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা ফুজি পর্বতে আরোহণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের বিষয়ে নজর দিবো।

ফুজি পর্বত যেহেতু ৩,০০০ মিটারেরও বেশি উঁচু, তাই সেখানকার আবহাওয়ায় আকস্মিক পরিবর্তন হতে পারে। পর্বতারোহীদের বিভিন্ন সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। মাউন্ট ফুজি আরোহণ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটে পর্বতারোহণের সময় সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার উপযুক্ত সরঞ্জামের বিষয়ে জাপানি, ইংরেজি, চীনা এবং কোরিয়ান ভাষায় নির্দেশনা দেয়া আছে।

▼কান ঢাকা টুপি এবং দস্তানাসহ শীতের পোশাক সঙ্গে রাখা প্রয়োজন। কারণ, সূর্যোদয়ের আগে চূড়ার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যেতে পারে। বৃষ্টিরোধী পোশাকের ক্ষেত্রে, পর্বতারোহণের জন্য স্বতন্ত্রভাবে ডিজাইনকৃত উপযুক্ত পোশাক সাথে রাখার জন্য সুপারিশ করা হয়।

▼ নুড়ি যাতে ঢুকতে না পারে তার জন্য গোড়ালির অনেকটা উঁচু পর্যন্ত হাই-কাট ট্রেকিং জুতো পরিধান বাঞ্ছনীয়। স্নিকার্স এবং স্যান্ডেল এক্ষেত্রে একেবারেই উপযুক্ত নয়।

▼ উচ্চতাজনিত শারীরিক অসুস্থতা প্রতিরোধের জন্য ঘন ঘন পানি পান করা প্রয়োজন। মাউন্ট ফুজিতে কোনোও পানি সরবরাহের কেন্দ্র বা পানির প্রবাহ নেই। একজন পর্বতারোহীর কমপক্ষে ১ থেকে ২ লিটার পানীয় জলের প্রয়োজন হতে পারে। তাই, যতটা সম্ভব পানি সাথে করে নিয়ে নিন। বাকিটা পাহাড়ের লজ থেকে কিনে নিতে পারেন।

▼ আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটে অপ্রত্যাশিত অগ্নুৎপাতের কথা বিবেচনায় রেখে পর্বতারোহীদের হেলমেট সঙ্গে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া মাস্ক এবং গগলসও সঙ্গে রাখুন, কারণ এগুলো ধুলাবালি প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর।

▼ওয়েবসাইটে পর্বতারোহীদের হেড ল্যাম্প সঙ্গে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে, কারণ সরু পথে ভিড়ের কারণে অথবা আরোহীর স্বাস্থ্যেজনিত অবস্থার উপর নির্ভর করে আরোহীকে অন্ধকারে পর্বত থেকে নামতে হতে পারে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ৫ই জুলাই পর্যন্ত নেওয়া।

(৮) স্বাস্থ্য সমস্যা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তা সুরক্ষিতকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সর্বোচ্চ ফুজি পর্বতের চূড়া প্রতি বছর বিদেশিসহ অসংখ্য পর্বতারোহীকে আকৃষ্ট করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতের সংকীর্ণ পথে ভিড় এবং কিছু পর্বতারোহীর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করে সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চলতি ধারাবাহিকে আজ আমরা স্বাস্থ্যজনিত সমস্যাগুলোর উপর নজর দেবো যার জন্য বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে৷

সকলের ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত যে ফুজি পর্বত আরোহণ করার জন্য সহজ কোনো পর্বত নয়। অনেক আরোহী অসুস্থতাজনিত কারণে আরোহণের মাঝ পথে তা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তাই আরোহণের আগে সম্ভাব্য স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা অর্জন করার জন্য সকলকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ফুজি পর্বতের আরোহীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হলো উচ্চতাজনিত অসুস্থতা, যা মূলত রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। ভুক্তভোগীদের মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং বমি হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এঅবস্থায় যদি একজন রোগী আরোহণ অব্যাহত রাখেন তবে লক্ষণগুলোর আরও অবনতি ঘটতে থাকে। ফুজি পর্বতে আরোহণের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট আরোহীদের উচ্চ উচ্চতায় খাপ খাইয়ে নেবার জন্য তাই, ফিফথ স্টেশনের আশপাশে এক বা দুই ঘন্টার দীর্ঘ বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইটটি আরোহীদের তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে হাঁটতে, নিজেদের শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে এবং নিয়মিত ছোট বিরতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে আরেকটি সাধারণ অসুখ হলো হাইপোথার্মিয়া। এর সাধারণ লক্ষণ হলো সারা শরীর কাঁপানো, শীত অনুভব করা এবং তন্দ্রা অনুভব করা। অবস্থার অবনতি হলে, আরোহী কোমায় চলে যেতে পারেন এবং হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। হাইপোথার্মিয়া প্রতিরোধ করার জন্য, আরোহীকে শীতের পোশাক পরিধান এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার যেমন চকোলেটের পাশাপাশি ঘন ঘন গরম পানীয় গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আরোহী যদি নিজেকে চলতে অক্ষম বলে মনে করেন, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাহায্যের জন্য ফোন করতে দ্বিধা করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে ১১০ নম্বরে পুলিশ এবং ১১৯ নম্বরে উদ্ধারকারীদের ফোন করতে পারেন। এছাড়া সাহায্যের জন্য পাহাড়ের লজগুলোতেও যোগাযোগ করতে পারেন।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ৮ই জুলাই পর্যন্ত নেওয়া।