দৈনন্দিন সুরক্ষা প্রশ্নোত্তর

গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রক্রিয়া

(১) প্রসূতি হাসপাতালে রিজার্ভেশন করা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়া বিদেশিদের অনুধাবণ করাটা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এই ধারাবাহিকে, আমরা এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং সরকারি সহজলভ্য পরিষেবা নিয়ে আলোচনা করব। আজ আমরা প্রসূতি হাসপাতালে রিজার্ভেশন করার বিষয়টি দিয়ে শুরু করব। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

জাপানের নারীরা সাধারণত প্রসূতি হাসপাতালেই শিশুদের জন্ম দিয়ে থাকেন। তাই একটি হাসপাতাল খুঁজে বের করুন এবং সেখানে আপনার গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়েই রিজার্ভেশনের কাজটি সেরে ফেলুন, কেননা এই হাসপাতালগুলো তাড়াতাড়ি পূর্ণ হয়ে যায়। কোন হাসপাতালে যেতে হবে তা যদি আপনার জানা না থাকে, তাহলে আপনি আপনার স্থানীয় সরকারি অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারেন। সরকারি অফিসগুলো পরামর্শও প্রদান করে থাকে।

কিছু কিছু হাসপাতালে দোভাষী পরিষেবাও পাওয়া যায়। যেমন, কানাগাওয়া জেলার কাওয়াসাকি মহানগরের তামা হাসপাতালের রোগীদের জন্য চিকিৎসা দোভাষী পাওয়ার পরিষেবা বিনামূল্যে ১২টি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। বিদেশি নাগরিকত্ব থাকা গর্ভবতী নারীরা যদি চান তাহলে একজন দোভাষী ব্যবহার করে ডাক্তার দেখাতে পারেন এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্বন্ধে ব্যাখ্যাও পেতে পারেন।

তামা হাসপাতাল তাদের ওয়েবসাইটে ইংরেজি, চীনা এবং ভিয়েতনামি ভাষায় একটি বিস্তারিত প্যামফ্‌লেট পোস্ট করেছে, সেখানে গর্ভকালীন এবং শিশুর জন্ম দেয়া সংক্রান্ত অপরিহার্য প্রক্রিয়াসমূহের ব্যাখ্যা রয়েছে।

কিছু কিছু অঞ্চলের হাসপাতালে বিদেশি নাগরিকদের জন্য এই ধরনের সহায়তার প্রস্তাব করা হয়, তাই আপনার স্থানীয় সরকারি অফিসে যোগাযোগ করে সঠিক তথ্যটি জেনে নিন।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(২) মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক বা পুস্তিকা লাভ করা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আজ আমরা নজর দিব মা ও শিশু সন্তানের জন্য প্রকাশিত একটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক বা পুস্তিকা বিষয়ে এবং কীভাবে সেটি পাওয়া যায় তার উপর। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

জাপানে গর্ভধারণ নিশ্চিত হওয়ার পর একজন নারীকে স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টির উল্লেখ করা আবেদনপত্র জমা দিতে হয়। গর্ভধারণ করা বিদেশি নারীরাদের মধ্যে এই প্রক্রিয়া যারা অনুসরণ করে থাকেন, তারাও জাপানি নারীদের মতো একই ধরণের সহায়তা লাভ করতে পারেন। মা ও শিশু সন্তানের জন্য প্রণীত “বোশি-তেচো” নামে পরিচিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক বা পুস্তিকা প্রদানের মধ্যে দিয়ে এক ধরনের সহায়তা দেয়া হয়। এই পুস্তিকা সাধারণত গর্ভধারণের সময় থেকে শুরু করে শিশুর বয়স সাত বছর হওয়ার আগে পর্যন্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফল ও অন্যান্য তথ্য ধারণ করে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। পুস্তিকাটির উপর চোখ বুলিয়ে নেয়ার মধ্যে দিয়ে গর্ভধারণের অগ্রগতি বুঝে নিতে চিকিৎসা কর্মীদের সহায়তা করা হয়। ফলে, একজন নারীর হঠাৎ করে অন্য কোনো হাসপাতালে যাওয়ার দরকার হলে এই পুস্তিকার মাধ্যমে তিনি অব্যাহত সেবা লাভ করতে সক্ষম হন।

পুস্তিকাটি ইংরেজি, ভিয়েতনামি ও পর্তুগিজ’সহ বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, হোক্কাইদো জেলার উরাকাওয়া শহরে বসবাসরত ভারতীয় একজন মহিলাকে হিন্দি ভাষার পুস্তিকা দেয়া হয়েছে। আপনাকে পুস্তিকা প্রদানের সময় অনুগ্রহ করে জেনে নিন আপনার পছন্দের ভাষায় সেটা আছে কিনা।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৩) মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক বা পুস্তিকায় কী থাকে

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আজ আমরা মা ও শিশু সন্তানের জন্য প্রকাশিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক বা পুস্তিকায় কী ধরনের তথ্যাদি নথিভুক্ত করা হয় সেদিকে নজর দেবো। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

পুস্তিকাটিকে জাপানি ভাষায় বলে ‘বোশি-তেচো’। এতে প্রধানত তিন ধরনের তথ্য নথিভুক্ত করে রাখা হয়।

প্রথমত, মায়ের গর্ভাবস্থার কিছু তথ্য, অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় মায়ের যে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়, সেগুলোর ফলাফলের তথ্য। জাপানে গর্ভবতী মহিলাদের, সন্তান জন্মদানের আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার এধরনের ডাক্তারি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

দ্বিতীয়ত হলো, শিশু সন্তানের বিকাশের সাথে সম্পর্কযুক্ত নানান তথ্য, যার মধ্যে রয়েছে জন্মগ্রহণ করার পর বেড়ে ওঠার সমময়টা জুড়ে শিশুদের যে ডাক্তারি পরীক্ষা হয়, সেগুলোর ফলাফল নথিভুক্তকরন।

তৃতীয়ত, শিশুদের দেওয়া টিকার তথ্য। দু মাস বা তার চেয়ে বেশি বয়স থেকে শিশুদের প্রতিষেধকের টিকা দেওয়া শুরু হয়। স্বাস্থ্য পুস্তিকায় তাদের প্রত্যেকটি টিকার বিষয়ে তথ্য নথিভুক্ত থাকার কথা। শিশুদের নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন এবং প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করানোর সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের কখন কোন টিকা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে পিতামাতাকে সব তথ্য জমা দিতে বলে। বাবা-মায়েদের এই পুস্তিকাটি নিরাপদ জায়গায় যত্ন করে রাখা উচিত যাতে প্রয়োজনে এ থেকে সব তথ্য জেনে নেওয়া যায়।

গর্ভবতী মায়েদের এই পুস্তিকার সাথে কুপন দেওয়া হয় যা তারা ডাক্তারি পরীক্ষার সময় ব্যবহার করতে পারেন। চিকিৎসা কেন্দ্রে এই কুপন জমা দিলে তাদের বিলের অংশ বিশেষ মওকুফ করে দেওয়া হয়। প্রতিবারের পরীক্ষায় একটি করে কুপন ব্যবহার করা হয়, তবে সব কুপন সাধারণত একবারে অগ্রীম প্রদান করা হয়।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৪) প্রসব পূর্ববর্তী পরীক্ষাসমূহ

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আজ আমরা প্রসব পূর্ববর্তী চেকআপ বা পরীক্ষাসমূহের উপর নজর দিব। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

জাপানের মহিলারা গর্ভবতী হওয়ার সময় থেকে সন্তান জন্মদানের সময় পর্যন্ত হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত প্রসব পূর্ববর্তী চেকআপ বা পরীক্ষানিরীক্ষার সুযোগ পান। চিকিৎসাকর্মীরা ভবিষ্যৎ মা’কে পরীক্ষা করে দেখবেন যে তার অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা, ভ্রূণ মসৃণভাবে বড় হচ্ছে কিনা এবং তাদের মধ্যে কোন একটি রোগ বা অস্বাভাবিকতা রয়েছে কিনা।

নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রেফারেন্স হিসেবে, চিকিৎসাকর্মীরা মা ও শিশুর জন্য নির্ধারিত স্বাস্থ্য পুস্তিকা বা “বোশি-তেচো”তে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাসমূহের ফলাফল লিখে রাখবেন। নথিভুক্ত করা এই তথ্যগুলোর মধ্যে মায়ের ওজনের পরিবর্তন, রক্তচাপ, রক্ত পরীক্ষার ফলাফল এবং আল্ট্রাসাউন্ডের চিত্রসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। চিকিৎসক বা ধাত্রীরা কখনও কখনও গর্ভবতী মায়েদের তাদের পুষ্টি বা ওজন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ভবিষ্যৎ মায়েরাও এবিষয়ে প্রয়োজনে চিকিৎসক বা ধাত্রীদের প্রশ্ন করতে পারেন।

প্রসব পূর্ববর্তী এই চেকআপসমূহ এড়িয়ে যাওয়া একটি বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে, কারণ এর অর্থ হলো গর্ভাবস্থার গতিপথটি সম্পর্কে প্রসবকালীন চিকিৎসাকর্মীদের কোনো ধারণা থাকবে না। কিছু হাসপাতাল অবশ্য চেকআপ গ্রহণ না করা গর্ভবতী মায়েদের ভর্তিই করবে না।

প্রসবের আগে প্রায় ১৪টি প্রসব পূর্ববর্তী চেকআপ রয়েছে। চেকআপ’এর খরচের জন্য সরকার আংশিক ভর্তুকি প্রদান করবে। তাই, প্রতিবার চেকআপের সময়, আপনার বাস করা পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত ভর্তুকির টিকিটের পাশাপাশি ‘বোশি-তেচো’টিও একসাথে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৫) সন্তান জন্মদানজনিত থোক ভাতা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আজ আমরা সন্তান প্রসবজনিত থোক ভাতার উপর নজর দিব। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

জাপানে সন্তান জন্মদানের জন্য গড় ব্যয় ৫ লক্ষ ইয়েন। যদি গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্য বিমা থাকে, তাহলে তিনি সন্তান প্রসবের জন্য এই থোক সুবিধাটি পাবেন। সন্তান প্রসবের আগে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর, সংশ্লিষ্ট নারীর বিমা কোম্পানি তার হয়ে সরাসরি হাসপাতালে এই অর্থ প্রদান করে থাকে। তাই সন্তান প্রসবকালে আগাম এই বিশাল পরিমাণের অর্থ প্রস্তুত রাখা অপ্রয়োজনীয়। সন্তান সম্ভবা মায়েদের এর থেকে বেশি অর্থের প্রয়োজন হলে কেবল সেই বাড়তি অর্থ যোগাড় করে রাখতে হবে। যদি মোট চিকিৎসা ব্যয় ৫ লক্ষ ইয়েনের কম হয়, তাহলে ‌সংশ্লিষ্ট নারী অব্যয়িত অর্থ ফেরত পাবার জন্য দাবি করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানার জন্য অনুগ্রহ করে হাসপাতালের সাথে পরামর্শ করুন।

এছাড়াও, যেসব মায়েরা নিজেরাই তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে সন্তান প্রসবের সময়ে চিকিৎসা বিল বহন করেছেন, তারাও এই থোক ভাতা পাওয়ার যোগ্য।

এছাড়াও, সন্তান সম্ভবা হওয়ার কথা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর, গর্ভবতী মায়েরা ভর্তুকি হিসেবে কুপন আকারে ৫০ হাজার ইয়েন পাবেন। অনুগ্রহ করে আপনার স্থানীয় পৌরসভায় বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ করুন।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৬) মাতৃত্ব/অভিভাবকত্বের পাঠসমূহ

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আজ আমরা মাতৃত্ব ও অভিভাবকত্বের পাঠ বা ক্লাসের উপর নজর দিব। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

পৌর কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতালের আয়োজিত মাতৃত্বের পাঠসমূহে গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসব এবং শিশু পরিচর্যা সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হয়। এগুলো একই সাথে এমন জায়গা, যেখানে মা হওয়ার অপেক্ষায় থাকা নারীরা অন্য মায়েদের সাথে মেলামেশা করতে পারেন। কিছু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতাল সন্তানকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় থাকা যুগলের জন্যেও অভিভাবকত্বের পাঠে বা ক্লাসে যোগ দেয়ার সুযোগ করে দেয়।

মাতৃত্বের ক্লাস একই সাথে শিশুর ডায়াপার কীভাবে বদল করতে হয় এবং শিশুকে কীভাবে গোসল করাতে হয় সে বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি গর্ভধারণ করা অবস্থায় নিজেদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির যত্ন কীভাবে নিতে হয় সেই শিক্ষাও মায়েদের দিয়ে থাকে। ক্লাসে এছাড়াও স্থানীয় শিশু পরিচর্যা ক্লাব সংক্রান্ত তথ্যও সরবরাহ করা হয়। বিদেশি ভাষায় সহায়তা পাওয়ার জন্য দোভাষীর প্রয়োজন যেসব মায়ের রয়েছে, তারা অনুগ্রহ করে এই কর্মসূচির আয়োজন করা সংগঠনের সাথে পরামর্শ করুন।

কিছু অলাভজনক সংগঠন বিশেষভাবে গর্ভবতী বিদেশি নারীদের জন্য মাতৃত্বের ক্লাসের ব্যবস্থা করে থাকে। মাদার্স ট্রি জাপান নামের সেরকম একটি সংগঠন ইন্দোনেশীয়, নেপালি, ভিয়েতনামি, বর্মী, থাই, ইংরেজি ও চীনা –এই সাতটি ভাষায় অনলাইনে মাতৃত্বের ক্লাসের ব্যবস্থা করে থাকে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য অনুগ্রহ করে এদের ওয়েবসাইট দেখুন।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৭) হাসপাতালে ভর্তি এবং সন্তান জন্মদান

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা জাপানে গর্ভধারণ ও শিশু জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আজ আমরা হাসপাতালে ভর্তি এবং সন্তান জন্মদানের উপর নজর দিব। কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে সংযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

জাপানে গর্ভবর্তী নারীদের সন্তান প্রসবের সময় প্রায় পাঁচ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। প্রসবের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় বিভিন্ন রকমের জিনিস সঙ্গে করে তাদের নিয়ে আসতে হয়, যার তালিকা সাধারণত হাসপাতালগুলো দিয়ে থাকে। সুতরাং আগে থেকে সেগুলো প্রস্তুত করে রাখুন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক, জাপানি ভাষায় যা “বোশি-তেচো” নামে পরিচিত তা সঙ্গে রাখতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিমা কার্ড এবং যে হাসপাতালে আপনি ভর্তি হবেন সেখানকার নিবন্ধন কার্ড সঙ্গে রেখে দেবেন। মোবাইল ফোনে অনুবাদ অ্যাপ ডাউনলোড করাটাও সুবিধাজনক হতে পারে। এসব জিনিস আগে থেকে প্রস্তুত করা থাকলে প্রসব বেদনা শুরু হয়ে গেলে আপনি উদ্বিগ্ন বোধ করবেন না। একই সাথে হাসপাতালে কী করে যাবেন সেটাও আগে থেকে ভেবে রাখতে হবে। জাপানের সব হাসপাতালে আপনার সঙ্গী বা পরিবারের লোকজনকে প্রসবঘরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় না, তাই আগে থেকে এবিষয়ে কথা বলে নিন।

জন্মের পর হাসপাতাল নবজাতকের অনেক ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে থাকে। বাচ্চা কানে ঠিক মতো শুনতে পারছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হলে আগে থেকে আবেদন জানান।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।