দৈনন্দিন সুরক্ষা প্রশ্নোত্তর

স্থানীয় সমাজে শিশুদের লালনপালন

(১) শিশু পরিচর্যা সহায়তা কেন্দ্র

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা নবজাতক থেকে শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা-মাকে সহায়তা করার জন্য কী ধরনের সেবা এবং পরিষেবা রয়েছে সেই বিষয়ে আপনাদের অবহিত করব। আশপাশের লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে কীভাবে শিশুকে বড় করে তুলবেন তা জানতে এধরনের তথ্য প্রয়োজনীয়। আজকের পর্বে শিশু পরিচর্যা সহায়তা কেন্দ্র এবং পরিচর্যা সার্কেলগুলোর উপর নজর দিব।

স্থানীয় পৌরসভাসমূহ প্রধানত বাবা-মা এবং তাদের শিশুরা যাতে অন্য বাবা-মা ও শিশুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং একই সাথে বাবা-মায়েদের যাতে বিভিন্ন রকম সহায়তা করা যায়, সেই উদ্দেশ্যে শিশু পরিচর্যা সহায়তা কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করে থাকে। এধরনের পরিষেবাগুলোকে শিশু পরিচর্যা চত্বর বা শিশুদের কক্ষ হিসাবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। বাবা-মা ও শিশুরা যাতে সেখানকার কর্মীদের সহায়তা নিয়ে অন্য বাবা-মা ও শিশুদের সাথে খেলা করতে পারে সেই লক্ষ্যে এসব পরিষেবায় সেধরনের ঘরের ব্যবস্থা করা হয়। এর সাথে সাথে শিশু লালনপালন বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য এবং পরামর্শও বাবা-মা পেতে পারেন। ‌এছাড়া বাবা-মায়েদের পরিচালনায় অনেক চক্র বা সার্কেলও রয়েছে। এরকমই একটি সার্কেল হলো কানাগাওয়া জেলার কামাকুরা শহরের “মারমার”। বিদেশে বসবাসের অভিজ্ঞতা আছে, এমন মায়েরা মিলে এই সার্কেলটি পরিচালনা করেন। এখানে বিদেশি বাসিন্দা এবং তাদের সন্তানরাসহ সদস্যরা তাদের বাচ্চাদের বই পড়ে শোনানো এবং ছবি আঁকার মতো বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেন।

শিশু পরিচর্যা সহায়তা কেন্দ্র এবং বাবা-মায়েদের পরিচালিত বিভিন্ন সার্কেলগুলো থেকে শিশু পরিচর্যা সংক্রান্ত অনেক ধরনের প্রয়োজনীয় স্থানীয় তথ্য আপনি পেতে পারেন। এধরনের পরিষেবার বেশিরভাগই বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার স্থানীয় পৌরসভার সাথে যোগাযোগ করুন।

(ওয়েবসাইট তথ্যসূত্র: কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের নিবন্ধ, “জাপানে সন্তানের পরিচর্যা: গর্ভাবস্থা থেকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি”, https://www.kifjp.org/child/)

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি পর্যন্ত নেয়া।

(২) শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা নবজাতক থেকে শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা-মাকে সহায়তা করার জন্য কী ধরনের সেবা এবং পরিষেবা রয়েছে সেই বিষয়ে আপনাদের অবহিত করব। আজকের পর্বে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র বা “হোইকুয়েন”-এর উপর নজর দিব।

জাপানে শিশুদের স্কুলে ভর্তি করার আগে অর্থাৎ প্রি-স্কুল বয়সে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র বা “হোইকুয়েন” অথবা কিন্ডারগার্টেন বা “ইয়োচিয়েন”-এ পাঠানো হয়।

শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র অথবা কিন্ডারগার্টেনে গিয়ে বিদেশি শিশুরা সবাই মিলে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করতে শেখে, জাপানিতে যাকে বলে “শুদান সেইকাৎসু”। এসময়ে তারা জাপানি ভাষাটিও শেখে। এই সময়টিতে পিতামাতা শিশুর প্রতিপালন ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করতে পারেন এসব কেন্দ্র থেকে। এখানে পিতামাতার স্থানীয় সমাজের লোকজনের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগও ঘটে।

শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র হচ্ছে এমন পরিষেবা যেখানে চাকরিকালীন অথবা অসুস্থ পিতামাতার শিশুদের দেখাশুনা করা হয়। নীতিগতভাবে একটি নবজাতক শিশু শূন্য বয়স থেকে প্রাথমিক স্কুলে শুরু করার আগ পর্যন্ত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে যেতে পারে। শিশুদের টয়লেট ট্রেইনিং এবং পোশাক বদলনো’র মতো কিছু মৌলিক অভ্যাস গড়ে তোলার শিক্ষা এসব কেন্দ্রে দেওয়া হয়। কিছু কিছু কেন্দ্রে শিশুদের দৈহিক ব্যায়াম শেখানোর ব্যবস্থা থাকে, আবার কোথাও কোথাও ইংরেজি ভাষাও শেখানো হয়।

জাপানে দুই রকমের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র আছে। প্রথমটি হলো, জায়গা এবং সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারের নির্ধারণ করা শর্ত মেনে চলা কেন্দ্র। দ্বিতীয়টি হলো, যারা এই শর্ত পূরণ করে না। শিশু পরিচর্যা বাবদ ফি ও নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মধ্যেও পার্থক্য থাকে। তাই সন্তানকে কোন ধরনের পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই সবদিক ভাল করে নিশ্চিত হয়ে জেনে নেওয়া উচিত।

(ওয়েবসাইট তথ্যসূত্র: কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের নিবন্ধ, “জাপানে সন্তানের পরিচর্যা: গর্ভাবস্থা থেকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি”, https://www.kifjp.org/child/)
এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ২৬শে জানুয়ারি পর্যন্ত নেয়া।

(৩) কিন্ডারগার্টেন

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা নবজাতক থেকে শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা-মাকে সহায়তা করার জন্য কী ধরনের সেবা এবং পরিষেবা রয়েছে সেই বিষয়ে আপনাদের অবহিত করব। আজকের পর্বে কিন্ডারগার্টেন বা “ইয়োচিয়েন”-এর উপর নজর দিব।

জাপানে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র বা ‘হোইকুয়েন’ হচ্ছে কর্মজীবী পিতামাতার শিশুদের যত্ন নেওয়ার পরিষেবা। অন্যদিকে, ‘ইয়োচিয়েন’কে আইনত বিবেচনা করা হয় প্রাক-স্কুলগামী শিশুদের শিক্ষিত করার জন্য প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে। উভয়ের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে, পরিষেবাগুলোর শিশু পরিচর্যার জন্য নির্ধারিত সময়। কিন্ডারগার্টেনে সাধারণত প্রায় পাঁচ ঘন্টা শিশুদের দেখাশোনা করা হয়, অন্যদিকে ‘হোইকুয়েন’ এই সেবা দেয় ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত।

শিশুরা সাধারণত ৩ বছর বয়স থেকেই কিন্ডারগার্টেনে যাওয়া শুরু করতে পারে। পাঠ্যক্রমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে শারীরিক ব্যায়ামের পাশাপাশি পড়তে ও লিখতে শেখা।

শিশুরা সাধারণত এপ্রিল মাসে কিন্ডারগার্টেনে যোগ দিতে শুরু করে। আর এর আগের বছরের শরৎকাল থেকেই ভর্তির জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এসংক্রান্ত নথিপত্র অবশ্যই একটি নির্ধারিত তারিখে সরাসরি কিন্ডারগার্টেনে জমা দিতে হয়। কিন্ডারগার্টেন ভেদে ভর্তির শর্ত ভিন্ন হয়ে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, ভর্তি করানোর আগে অভিভাবক এবং সন্তানদের একসাথে একটি সাক্ষাৎকারও দিতে হয়।

(ওয়েবসাইট তথ্যসূত্র: কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের নিবন্ধ, “জাপানে সন্তানের পরিচর্যা: গর্ভাবস্থা থেকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি”, https://www.kifjp.org/child/)

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ২৯শে জানুয়ারি পর্যন্ত নেয়া।

(৪) প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় উপস্থিতি

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা নবজাতক থেকে শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা-মাকে সহায়তা করার জন্য কী ধরনের সেবা এবং পরিষেবা রয়েছে সেই বিষয়ে আপনাদের অবহিত করব। আজকের পর্বে আগাম শিশু শিক্ষা পরিচর্যার উপর নজর দিব।

কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশন এবং কানাগাওয়া জেলার আইয়াসে শহরের যৌথভাবে পরিচালনা করা ২০২২ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ৩ থেকে ৬ বছর বয়সী বিদেশি শিশুদের ৪১% “হোইকুয়েন” বা শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র অথবা “ইয়োচিয়েন” বা কিন্ডারগার্টেনে যায় না। এই সংখ্যা জাপানি শিশুদের তুলনায় ৮.৫ গুণ বেশি এবং শতকরা হিসেবে ৪.৮%। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন নিয়ামক এখানে কাজ করছে। তারা বলছেন, বিদেশি বাসিন্দারা তাদের শিশুদের এই ধরনের শিক্ষা দেয়ার প্রয়োজনের গুরুত্ব সম্পর্কে হয়তোবা পুরোপুরিভাবে অবগত নন। এছাড়াও, এই ধরনের অভিভাবকের জন্য এইসব কেন্দ্র বা প্রি-স্কুলে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে হয়তোবা কঠিন লাগে। এমন ঘটনাও রয়েছে যে, তাদের পটভূমির কারণে তাদের স্কুলে নেয়া হয়নি।

“হোইকুয়েন” কিংবা “ইয়োচিয়েন” বাধ্যতামূলক শিক্ষা নয়, তবে জাপানে এমন বিস্তৃত পরিসরের দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে যে, একদম ছোটবেলা থেকে একটি দল হিসেবে একসঙ্গে বাস করার অভিজ্ঞতা লাভ করাটা শিশুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এই ধরনের অভিজ্ঞতা যখন তারা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবে তখন কাজে লাগবে। জাপানি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুদের ভর্তি কল্পে বিদেশি বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য কিছু পৌরসভায় দোভাষী পরিষেবার সুযোগ রয়েছে। তাই, এই ধরনের পরিষেবার বিষয়ে স্থানীয় পৌরসভার অফিসে খোঁজ নিতে পারেন।

(ওয়েবসাইট তথ্য সূত্র: কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের নিবন্ধ, “জাপানে সন্তানের পরিচর্যা: গর্ভাবস্থা থেকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি”, https://www.kifjp.org/child/)

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ৩০শে জানুয়ারি পর্যন্ত নেয়া।

(৫) প্রাথমিক স্কুল শুরু করা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা নবজাতক থেকে শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা-মাকে সহায়তা করার জন্য কী ধরনের সেবা এবং পরিষেবা রয়েছে সেই বিষয়ে আপনাদের অবহিত করব। আজকের পর্বে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়ার উপর নজর দিব।

বিদেশি জাতীয়তার শিশুরা চাইলে বিনামূল্যের সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষা লাভের জন্য জাপানি শিশুদের মতো একই রকম সুযোগের নিশ্চয়তা পেতে পারে। যে কোনো বছরে এপ্রিল মাসের ২ তারিখ থেকে শুরু করে পরবর্তী বছরের পয়লা এপ্রিল পর্যন্ত যেসব শিশুর বয়স ৭ বছর হবে, স্কুলে তারা ভর্তি হতে পারবে।

যেসব পরিবারে বিদেশি শিশু রয়েছে, সেসব শিশুর স্কুলে যাওয়ার বয়স হওয়ার অব্যবহিত আগের শরৎ কালের দিকে তাদের এলাকার প্রাথমিক স্কুল সংক্রান্ত নির্দেশিকার উল্লেখ থাকা চিঠি পরিবারগুলো পাবেন। স্থানীয় শিক্ষা বোর্ড কিংবা পৌরসভা কার্যালয়ে একটি আবেদন পত্র জমা দেয়ার পর স্কুলে উপস্থিত থাকা সম্পর্কিত নোটিশ পরিবারগুলোকে পাঠানো হবে। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষা গ্রহণ সম্পর্কে অনুগ্রহ করে নিশ্চিত হয়ে নিন। শিক্ষার্থীদের কী করতে হবে তা নিয়ে অভিভাবকদের সাথে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, কর্মকর্তারা সেখানে স্কুলের ভেতরে পরার জুতা এবং জিমনেশিয়ামের পোশাকের মতো কী কী করা দরকার তার ব্যাখ্যা দেবেন। অনেক পৌরসভা কার্যালয় বিদেশি ভাষায় সেবা প্রদান করায় যে কোনো বিষয়ে জেনে নিতে সেখানে যোগাযোগ করুন।

(ওয়েবসাইট তথ্য সূত্র: কানাগাওয়া আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের নিবন্ধ, “জাপানে সন্তানের পরিচর্যা: গর্ভাবস্থা থেকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি”, https://www.kifjp.org/child/)

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত নেয়া।