দৈনন্দিন সুরক্ষা প্রশ্নোত্তর

সন্তানের জন্ম-পরবর্তী মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য রক্ষায় সেবা

(১) স্বাস্থ্যপরীক্ষা সেবা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা সন্তান জন্মদানের পর মা এবং সন্তানের স্বাস্থ্যপরীক্ষা’সহ অন্যান্য সেবা বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করব। আজ আমরা স্বাস্থ্যপরীক্ষার উপর নজর দেব। কানাগাওয়া ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

সন্তান জন্মদানের পর মা এবং নবজাতক উভয়ের জন্য স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে দেখার বেশ কিছু সেবা প্রদান করা হয়। নবজাতক যখন এক মাস বয়সী হয়, তখন সাধারণত তার জন্ম হওয়া হাসপাতালে তার প্রথম স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। নবজাতককে নিয়ে হাসপাতাল ছাড়ার আগেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ডাক্তাররা নবজাতকের বৃদ্ধি এবং মায়ের স্বাস্থ্যের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখবেন।

এরপর, সাধারণত নবজাতকের একেবারে শৈশবের দিকে ৪ বার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। প্রথমবার নবজাতকের ৪ মাস বয়সের সময়ে, দ্বিতীয়বার ৮ থেকে ১০ মাস বয়সের সময়ে, তৃতীয়বার ১৮ মাস বয়সের সময়ে এবং চতুর্থবার তিন বা সাড়ে তিন বছর বয়সের সময়ে।

নবজাতকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা বিনামূল্যে করা হয়। আপনার স্থানীয় পৌরসভা এই পরীক্ষা করার জন্য তারিখ এবং স্থান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আপনার কাছে পাঠাবে।

নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা আপনার শিশুর বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সম্বন্ধে জানার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ করে দেয়। তাই, এইসব তথ্য পাওয়ার বিষয়টি অনুগ্রহ করে নিশ্চিত করে নেবেন।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের ২০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত নেয়া।

(২) বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা সন্তান জন্মদানের পর মা এবং সন্তানের স্বাস্থ্যপরীক্ষা’সহ অন্যান্য সেবা বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করব। আজ আমরা বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষার উপর নজর দেব। কানাগাওয়া ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

মা এবং নবজাতক, উভয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার জন্য যেসব পরিবারে সন্তানের জন্ম হয়েছে, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের স্বাস্থ্য পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত নার্স এবং প্রসুতি নার্স সেসব বাড়িতে পাঠিয়ে থাকে। একইসাথে সেই পরিবার কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে, সে বিষয়েও তারা পরামর্শ প্রদান করে থাকে।

এধরনের বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষার আগে পৌরসভা থেকে ফোন করে দিন এবং সময় নির্ধারণ করা হয়। জাপানি বুঝতে না পারলে ফোন গ্রহণ করার সময় কর্মকর্তাকে সেটা জানিয়ে দেবেন। কিছু পৌরসভা বহুভাষিক যোগাযোগে সহায়তার জন্য বিভিন্ন ভাষায় লেখা নির্দেশিকা প্রদান করে থাকে। আবার কেউ কেউ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে দোভাষীদের পাঠিয়ে থাকেন।

একজন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নার্স অথবা প্রসুতি নার্স নির্ধারিত দিনে আপনার বাড়িতে যাবেন। মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হ্যান্ডবুক, যা জাপানি ভাষায় বোশি-তেচো হিসাবে পরিচিত, তা হাতের কাছে রাখুন। শিশুর বৃদ্ধি সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা মূল্যায়ন করতে নার্স প্রথমে শিশুর ওজন এবং মাথা ও বুকের মাপ নেবেন এবং হ্যান্ডবুকে সেই তথ্য লিখে রাখবেন। শিশুর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখতে বাচ্চা সাধারণত কী পরিমাণ দুধ খায় এবং তার মলের রঙ কী তা আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।

আপনাকে সাহায্য করার জন্য কেউ আছেন কি না বা শিশু পরিচর্যা কাজে আপনি প্রচণ্ড রকমের ক্লান্ত কি না, এধরনের প্রশ্নও আপনাকে করা হবে। বাচ্চাকে বড় করে তোলার কাজে আপনি যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন, সে বিষয়েও নার্স পরামর্শ দেবেন। আপনার আশে-পাশে শিশু পরিচর্যা ক্লিনিক এবং নার্সারি স্কুলের বিষয়েও আপনি তথ্য পেতে পারেন।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের ২১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত নেয়া।

(৩) টিকা এবং ক্লিনিক

এনএইচকে দৈনন্দিন জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সাথে সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা সন্তান জন্মদানের পর মা এবং সন্তানের স্বাস্থ্যপরীক্ষা’সহ অন্যান্য সেবা বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করব। আজ আমরা টিকা এবং ক্লিনিকের উপর নজর দেব। কানাগাওয়া ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

রোগব্যাধির প্রকোপ থেকে সুরক্ষিত রাখতে জাপানে নবজাতক শিশুদের দুই মাস বয়স থেকে টিকা দিতে শুরু করা হয়। যেসব রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য টিকা দেওয়া হয় সেগুলোর মধ্যে হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি এবং হেপাটাইটিস বি অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ডিপথেরিয়া ও টিটেনাস’সহ চারটি রোগের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কয়েক ধরনের টিকা একসাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়। টিকা কখন নিতে হবে এবং ক’বার নেওয়া দরকার, তা টিকার ধরনের ওপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা হয়।

নির্ধারিত যে টিকাগুলো নবজাতকদের নিতেই হয়, জাপানে সেগুলোর জন্য কোনো মূল্য পরিশোধ করতে হয় না। স্থানীয় পৌরসভার দেওয়া কুপন ব্যবহার করে বিনামূল্যেই এগুলো দেওয়ানো যায়। তবে কুপনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে টিকার জন্য দাম পরিশোধ করতে হবে। তাই এব্যাপারে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

টিকা সাধারণত শিশুরোগের চিকিৎসকরা দিয়ে থাকেন। নিয়মিত শিশুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর জন্য এবং শিশু যদি অসুস্থ হয় তখন তাকে ডাক্তার কাছে নিয়ে যেতেই হবে। তাই বাড়ির কাছে কোথাও শিশুরোগের চিকিৎসার ক্লিনিক খুঁজে নিলে সুবিধা হবে, নিশ্চিন্তে থাকা যাবে এবং শিশু’র স্বাস্থ্যের ওপর লাগাতার নজর রাখা সম্ভব হবে। এধরনের ক্লিনিকের খোঁজ আপনি যেখানে থাকেন সেখানকার পৌরসভার ওয়েবসাইট থেকে পেতে পারেন, অথবা আপনার এলাকার স্থানীয় গণস্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে জিজ্ঞেস করেও জেনে নিতে পারেন। রাত্রিবেলা এবং ছুটির দিনেও খোলা থাকে এমন ক্লিনিক দরকার। এব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো ২০২৩ সালের ২২শে ডিসেম্বরের পর্যন্ত নেয়া।