দুর্যোগ প্রস্তুতিমূলক প্রশ্নোত্তর

পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া

(১) পোষা প্রাণীদের সাথে একত্রে আশ্রয় নেওয়ার গুরুত্ব

এনএইচকে দুর্যোগ প্রশমন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বড় কোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে, পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে একটি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করা কি সম্ভব? জাপানে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের নিজস্ব পোষা প্রাণীসহ জায়গা দিতে পারে কি না। এই ধারাবাহিকে আমরা পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া সংক্রান্ত সহায়ক তথ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব।

বিশ্বের অনেক মানুষ তাদের পোষা প্রাণীকে পরিবারের সদস্য বলে মনে করেন। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, চলতি বছরের ৩রা এপ্রিল তাইওয়ানে বিশাল ভূমিকম্পে এক নারী প্রাণ হারিয়েছেন, কারণ তিনি তার বিড়ালকে বাঁচাতে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় ভবনটি ধসে পড়ে। জাপানেও এক পোষা প্রাণীর মালিক গাড়িতে জরুরি অবস্থান করার সময় ইকোনমি ক্লাস সিন্ড্রোমে মারা গেছেন বলে জানা গেছে, কারণ তিনি তার কুকুরের সাথে আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি।

পরিবেশ মন্ত্রণালয় পরামর্শ দেয় যে, দুর্যোগের সময় পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে তাদের মালিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে পারা উচিত। তারা পোষা প্রাণী সাথে থাকা ব্যক্তিদের আশ্রয় প্রদানের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনাকারী স্থানীয় পৌরসভাগুলোর উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা প্রস্তুত করেছে এবং তাদের সহানুভূতির আহবান জানিয়েছে৷

তবে সব আশ্রয়কেন্দ্র পোষা প্রাণী গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। এক্ষত্রে, পোষা প্রাণীর মালিকদেরকে এই বলে উৎসাহিত করা হয় যাতে তারা তাদের পৌরসভায় আগে থেকে খোঁজ নেন সেখানে পোষা প্রাণী গ্রহণ করা হবে কি না। এছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, পোষা প্রাণীদের হোটেল এবং পশু হাসপাতালসহ অস্থায়ীভাবে পোষা প্রাণীদের রাখার জায়গাগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে রাখারও প্রয়োজন হতে পারে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(২) পোষা প্রাণীদের জন্য দুর্যোগ প্রতিরোধমূলক পরামর্শ

এনএইচকে দুর্যোগ প্রশমন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বড় কোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে, পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে একটি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করা কি সম্ভব? জাপানে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের নিজস্ব পোষা প্রাণীসহ জায়গা দিতে পারে কি না। এই ধারাবাহিকে আমরা পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া সংক্রান্ত সহায়ক তথ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব। আজকের পর্বে আমরা পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে সরে যাওয়ার পূর্বে বাড়িতে কোন পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা দরকার সেদিকে নজর দেবো।

দুর্যোগের আঘাত পাওয়া থেকে পোষা প্রাণীকে রক্ষা করার জন্য অনেক আগে থেকেই আপনাকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। বড় একটি ভূমিকম্প যখন আঘাত হানে, তখন কম্পনে পরে যাওয়া আসবাবপত্র ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে মানুষ এবং পোষা প্রাণী আঘাতের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এজন্য, ভারী আসবাবপত্র এবং বড় টেলিভিশন সেটগুলো পড়ে যাওয়া থেকে যেন রক্ষা পায়, সেজন্য সেগুলোর সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া নিচে পিছলে পড়া বন্ধের জন্য বিশেষ পাত যুক্ত করে নিয়ে রাইস কুকারের মতো ছোট বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হলো। আপনি একটি যন্ত্রপাতির দোকানে পতন প্রতিরোধ করা এরকম নিরাপত্তা সরঞ্জাম খুঁজে পাবেন। এছাড়া, আপনাকে এবং আপনার পোষা প্রাণীকে পায়ে আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য কাচের বিভিন্ন আচ্ছাদন সুরক্ষামূলক সংরক্ষণ ফিল্মের শীট দিয়ে ঢেকে রাখাও হচ্ছে কার্যকর। সরে যাওয়ার সময় দীর্ঘায়িত হতে পারার বেলায় আপনার পোষা প্রাণীর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানি আপনার প্রস্তুত রাখা দরকার।

জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, পোষা প্রাণীর মালিকদের তাদের পোষা প্রাণীদের জন্য কমপক্ষে পাঁচ দিন চলার মতো খাবার এবং পানি প্রস্তুত রাখা উচিত। দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত পোষা প্রাণীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধও আপনার প্রস্তুত রাখতে হবে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৩) আপনার পোষা প্রাণীকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা

এনএইচকে দুর্যোগ প্রশমন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বড় কোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে একটি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করা কি সম্ভব? জাপানে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের নিজস্ব পোষা প্রাণীসহ জায়গা দিতে পারে কি না। এই ধারাবাহিকে আমরা পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া সংক্রান্ত সহায়ক তথ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব। আজকের পর্বে আমরা পোষা প্রাণী যাতে আপনার সাথে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে পারে সেই লক্ষ্যে কীভাবে তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করব।

পোষা কুকুরদের ক্ষেত্রে, আপনি তাদের ডাকলে তারা যাতে আপনার কাছে চলে আসে সেরকম প্রশিক্ষণ কুকুরকে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভূমিকম্পের সময়, আপনার কুকুর কম্পনের ভয়ে ভেঙ্গে পড়া আসবাবের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে। কুকুরকে ডাকা হলে অবশ্যই সে যেন আপনার কাছে আসতে সক্ষম হয়, কেননা মালিকের পক্ষে তার পোষা প্রাণীকে নিজে বাঁচানোর চেষ্টা করা বিপজ্জনক।

পোষা প্রাণীদের খাঁচাটি আপনাকে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে যাতে করে এটির উপর আসবাবপত্র ভেঙে না পড়ে। আপনার পোষা প্রাণীকে একটি নির্দিষ্ট আদেশ দ্বারা তার খাঁচায় ফিরে যাওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যেমন “বাড়ি”। খাঁচার ভিতরে থাকার জন্য বিড়ালকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত।

পোষা প্রাণীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে মানিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি হিসাবে নিম্নলিখিত উপায়ে মালিকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

পোষা প্রাণীরা যাতে অত্যধিক ঘেউ ঘেউ বা কান্নাকাটি না করে, তাদের নিজের পরিবারকে বাদ দিয়ে অন্য মানুষ বা প্রাণীদের সাথে অভ্যস্ত হতে পারে এবং একটি প্রতিষ্ঠিত জায়গায় শৌচাগার ব্যবহার করতে পারে সেই লক্ষ্যে তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা উচিত।

একইসাথে মালিকদের তাদের পোষা প্রাণীদের জলাতঙ্ক এবং অন্যান্য সংক্রমণযোগ্য রোগের জন্য টিকা দেওয়া নিশ্চিতকরণসহ কোনও পরজীবী থাকলে তা অপসারণ করা উচিত।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৪) পোষা প্রাণীদের সঙ্গে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে কীভাবে থাকবেন

এনএইচকে দুর্যোগ প্রশমন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বড় কোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে একটি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করা কি সম্ভব? জাপানে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের নিজস্ব পোষা প্রাণীসহ জায়গা দিতে পারে কি না। এই ধারাবাহিকে আমরা পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া সংক্রান্ত সহায়ক তথ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব। আজকের পর্বে আমরা জানবো কীভাবে পোষা প্রাণীদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হয়।

পোষা প্রাণীর মালিকদের আশ্রয়কেন্দ্রের নিয়মগুলো অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কিছু লোক পোষা প্রাণী পছন্দ নাও করতে পারেন অথবা নির্দিষ্ট কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে তাদের অ্যালার্জিও থাকতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, পোষা প্রাণীকে তাদের মালিকদের থেকে দূরে আলাদা জায়গায় খাঁচায় রাখা হয়। সাধারণত মালিকরা তাদের নিজস্ব খাঁচা নিয়ে আসেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে খাঁচা দেওয়া হয়। পোষা প্রাণীর নাম এবং আচরণের তথ্যসহ নোট প্রস্তুত করে রাখা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে প্রাণীগুলোর কামড় দেওয়ার মতো সম্ভাব্য ঘটনা এড়ানো যায়।

কিছু কুকুর তাদের মালিকদের দৃষ্টির বাইরে গেলে ঘেউ ঘেউ করেতে থাকে। এসব কুকুরদের শেখাতে হবে, যাতে তারা মালিকদের কাছ থেকে দূরে থাকলেও শান্ত থাকে।

দুর্যোগের পর পরই আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মীদের খুব ব্যস্ত থাকতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা পোষা প্রাণীদের যথাযথ যত্ন নিতে সক্ষম নাও হতে পারেন। পোষা প্রাণীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা এবং সেই পরিবেশ বজায় রাখার জন্য মালিকদের একে অপরের সাথে সহযোগিতা করা গুরুত্বপূর্ণ।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

(৫) সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি

এনএইচকে দুর্যোগ প্রশমন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বড় কোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে একটি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করা কি সম্ভব? জাপানে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয় হলো, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের নিজস্ব পোষা প্রাণীসহ জায়গা দিতে পারে কি না। এই ধারাবাহিকে আমরা পোষা প্রাণীদের সাথে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়া সংক্রান্ত সহায়ক তথ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব। আজকের পর্বে আমরা পোষা প্রাণীসহ সরে যাওয়ার প্রস্তুতির উপর নজর দেব।

আপনার পোষা প্রাণী যাতে হারিয়ে না যায় সেই সতর্কতা হিসাবে, আপনার কুকুরের কলারে একটি লাইসেন্স ট্যাগ যুক্ত করুন। কোনো কুকুর পৌরসভার সাথে নিবন্ধিত হলে এই ট্যাগটি দেয়া হয়। বিড়ালের ক্ষেত্রে, মালিকের যোগাযোগের তথ্যসহ একটি ট্যাগ লাগিয়ে দিন।

২০২২ সালের জুন মাস থেকে, পোষা প্রাণীর দোকান এবং ব্রিডারদের বিক্রি করা বিড়াল এবং কুকুরগুলোর ক্ষেত্রে মাইক্রোচিপ প্রবেশ করানোর বাধ্যবাধকতার পাশাপাশি এগুলোকে নিবন্ধন করতে হয়। ঘাড়ের চামড়ার নিচে ঢোকানো এই মাইক্রোচিপ থেকে নিবন্ধন করা মালিকের তথ্য জানা যায়। কিছু পৌরসভা এই চিপ প্রবেশ করানোর জন্য ভর্তুকি দিয়ে থাকে।

নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সময়, অন্তত পাঁচ দিনের জন্য পর্যাপ্ত পোষা প্রাণীর খাবার এবং পানি সঙ্গে নিন। একটি অতিরিক্ত কলার, কুকুরকে নিয়ে হাঁটার একটি দড়ি, বহন করার একটি ব্যাগ এবং টয়লেট পণ্য নিতে ভুলবেন না। আপনার পোষা প্রাণীর টিকা, স্বাস্থ্যগত ইতিহাস এবং ওষুধের পাশাপাশি একটি ছবির রেকর্ড রাখাটাও এক্ষেত্রে সুবিধাজনক হবে।

খাঁচা থেকে বের করার সময় একটি বিড়ালের পালানো প্রতিরোধ রোধ করার জন্য একটি ধোয়ার কাপড় রাখার নেটের থলে ব্যবহার করলে ভালো হয়। এর পাশাপাশি, আলোর প্রবেশ রোধ করা এবং আপনার পোষা প্রাণীকে শান্ত রাখার লক্ষ্যে খাঁচাটি আবৃত করার জন্য একটি বড় কাপড় রাখাও এক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

এই তথ্যগুলো ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।