করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর

নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে আমাদের শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন এনএইচকে’র বিশেষজ্ঞরা।

প্রশ্ন-৫৫৮: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৯) চিকিৎসা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জসমূহ

উত্তর-৫৫৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চ্যালঞ্জগুলোর প্রতি নজর দেব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক নির্দেশমালায় দীর্ঘ কোভিডের উপসর্গে ভুগছেন বলে সন্দেহ হওয়া রোগীদের স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে অথবা তারা নিয়মিত যে চিকিৎসকের কাছে যান তার পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। তবে কথিত আছে, কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক এই ধরনের রোগীদের চিকিৎসা করতে উদাসীনতা দেখাচ্ছে অথবা উপসর্গের ব্যাপারটিকে রোগীর মনের ভুল বলে উড়িয়ে দিচ্ছে।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড মেডিসিন-এর ডাক্তার মোরিওকা শিনইচিরো বলেন, যারা দীর্ঘ কোভিডে ভুগছেন বলে মনে করেন, এমন সব রোগীরা যাতে চিকিৎসা নিতে পারেন তার জন্য একটি ব্যবস্থা থাকা দরকার।

মোরিওকা বলেন যে, তাদের গবেষণায় দেখা গেছে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত প্রতি চারজন রোগীর মধ্যে প্রায় একজন ১৮ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোনোও না কোনও উপসর্গে ভোগেন। এই প্রেক্ষাপটে মোরিওকা মনে করেন, এসব রোগীদের গ্রহণ করার মত চিকিৎসা কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, এসব রোগীদের উপসর্গসহ সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত জানতে পরামর্শ দানের ক্ষেত্রে সাধারণ অসুখ-বিসুখের তুলনায় বেশি সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, যেহেতু এতে করে কিছু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান দৈনিক কম রোগীকে সেবা দিতে পারবে, তাই তিনি বিশ্বাস করেন যে, চিকিৎসা ফি এবং অন্যান্য বিষয়গুলিকে বিবেচনায় নেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা উচিত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সারা দেশের সব কয়টি জেলা কর্তৃপক্ষকে তাদের নিজ নিজ এলাকায় দীর্ঘ কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে পারার মত চিকিৎসা কেন্দ্রের নামের তালিকা তৈরি করতে এবং ২৮শে এপ্রিলের মধ্যে এই তালিকা প্রকাশ করতে আহ্বান জানিয়েছে।

এই তথ্যগুলি এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫৭: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৮) চিকিৎসকরা কীভাবে রোগীদের ব্যবস্থাপনা করছেন

উত্তর-৫৫৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে এই অবস্থার চিকিৎসা করছেন সেদিকে নজর দেব।

ওসাকা শহরের মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট কিতানো হাসপাতাল হল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি যেখানে দীর্ঘ কোভিড নিয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বর্হিবিভাগ ইউনিট রয়েছে।

এই ইউনিটের চিকিৎসকরা রোগীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের পর উপসর্গগুলো কোভিডের সাথে সম্পর্কিত নাকি অন্য কোন রোগের কারণে দেখা দিয়েছে, সেটি নির্ণয় করে থাকেন।

এই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক মারুমো সাতোশি বলেন রোগী কোভিড পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন নাকি অন্য কোন রোগে, প্রথমেই সেটি নির্ণয় করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা, আর্টিকুলার রিউমেটিজমের মত দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা করোনাভাইরাসে সংক্রমণের কারণে আরও জটিলতার দিকে যেতে পারে। তিনি বলেন, সঠিক রোগ নির্ণয় করন, সংশ্লিষ্ট রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ ইউনিটে রোগীর চিকিৎসা সেবা নিতে সহায়তা করে।

চিকিৎসক আরও বলেন, দীর্ঘ কোভিড বলে দাবি করা কিছু ব্যক্তি ক্রমাগত অসুস্থতার কারণে সৃষ্ট গভীর উদ্বেগের ফলে বিষণ্ণ বোধ করেন।

মারুমো বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এধরনের উপসর্গগুলোর কারণ হল সম্ভাব্য করোনা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এমন ৪০ থেকে ৫০-এর কোঠায় বয়সী প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মরত মানুষ সুস্থ হয়ে উঠার পরও দ্রুত কাজে ফিরে যেতে পারেননি।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫৬: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৭) চিকিৎসা প্রক্রিয়া

উত্তর-৫৫৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা এই অবস্থার চিকিৎসা কীভাবে হয় সেদিকে নজর দেব।

ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুৎসুনা সাতোশি বলছেন যে, সমস্যা হলো কোভিড পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার আরোগ্যে লাভে কোনো চিকিৎসাই এখনো পর্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। তিনি বলেছেন, দীর্ঘ কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আপনি এড়িয়ে যেতে চাইলে, সংক্রমণকে এড়িয়ে চলার পদক্ষেপ কিংবা টিকা নেয়ার বিষয়টি তখন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড মেডিসিনের ডাক্তার মোরিওকা শিনইচিরো বলছেন যে, বেশ কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতি এখন ক্লিনিকাল সমীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এসকল সমীক্ষার ফলাফল স্নায়ু সংক্রান্ত উপসর্গের বেলায় যেটি কাজ করে, সেই হাইপারব্যারিক অক্সিজেন থেরাপি এবং ফাইজারের মৌখিক ওষুধ প্যাক্সলোভিডের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এছাড়াও, জাপানের শিওনোগি নতুন মৌখিক ওষুধ “জোকোভা” কোভিড পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার কিছু উপসর্গ লাঘব করতে পারে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখছে। এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে দেখা গেছে, জোকোভা’র চিকিৎসা যাদের দেয়া হয়েছে সেরকম ১৪.৫ শতাংশ রোগী বলেছেন, সুস্থ হবার ছয় মাস পর কাশি কিংবা দুর্বলতা বোধ করার মত দীর্ঘ কোভিডের সাথে সম্পর্কিত ১৪টি উপসর্গের মধ্যে কম পক্ষে একটিতে তারা ভুগেছেন। এই সংখ্যা হচ্ছে নকল ওষুধ যেসব রোগীকে দেয়া হয়েছে তাদের বেলায় পাওয়া হিসাব ২৬.৩ শতাংশের চাইতে কম। শিওনোগি বলছে, জোকোভা’র চিকিৎসা গ্রহণ করা রোগীদের বেলায় কোভিড পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ কম থাকে।

জাপানে এ সংক্রান্ত অন্যান্য অগ্রগতির মধ্যে বেশ কয়েকটি খবরে বলা হয়েছে যে, নাকের ভেতরে কাপড়ের টুকরো সজোরে ঘষে নেয়ার সাথে জড়িত থাকা এপিফারেনগাল এব্রেসিভ থেরাপি দীর্ঘ কোভিডের সাথে যুক্ত বেশ কিছু উপসর্গ লাঘবে সাহায্য করেছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা এখনও বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে যাচাই করে দেখার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে, কিছু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ কোভিড রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই থেরাপি ব্যবহার করছে।

এখনো পর্যন্ত দীর্ঘ কোভিড নিরাময়ে প্রতিষ্ঠিত কোন চিকিৎসা পদ্ধতি নেই, যেহেতু সবই এখনো গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে, তবে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি দীর্ঘ কোভিড মোকাবিলায় সম্ভাব্য ভবিষ্যতের পদ্ধতি হিসাবে প্রতিশ্রুতি দেখাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫৫: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৬) কীভাবে দীর্ঘ কোভিড সনাক্তকরণ হয়

উত্তর-৫৫৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা কোভিড পরবর্তী প্রভাবে একজন রোগী ভুগছেন কিনা সেটি কীভাবে সনাক্ত করা যায় সে সম্বন্ধীয় একটি সমীক্ষার উপর নজর দেব।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইওয়াসাকি আকিকো রোগ-প্রতিরোধ বিদ্যা বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ, যিনি দীর্ঘ কোভিড নিয়ে গবেষণা করছেন। ইওয়াসাকি এবং তার দল খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন, কী ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে একজন রোগী দীর্ঘ কোভিডে আক্রান্ত কিনা সেটি সনাক্ত করা যায়।
তারা এমন কোন সুনির্দিষ্ট উপাদান দীর্ঘ কোভিডে আক্রান্ত রোগীর রক্তে সনাক্ত করা যায় কিনা বা রোগীর দেহে উচ্চ পর্যায়ের সুনির্দিষ্ট কোন হরমান আছে কিনা তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন। মূলত, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ সনাক্ত করার একটি পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্যই এই সমীক্ষা।

দলটি এখন করটিসোল নামে অভিহিত একটি স্টেরয়েড হরমোনের মাত্রার দিকে নজর দিচ্ছে। এই হরমোন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অবদমিত করে এবং প্রদাহকে কমায়। এটি জানা আছে যে, সকালবেলা একজন লোক যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠেন, তখন তার রক্তে করটিসোলের পরিমাণ বেশি থাকে। এটি ব্যক্তির রক্তের চিনির পরিমাণ ও রক্তের চাপকে উপরের দিকে তোলে এবং ব্যক্তিকে সক্রিয় হয়ে উঠতে সহায়তা করে।

ইওয়াসাকি এবং তার দলের সমীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, দীর্ঘ কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে করটিসোলের মাত্রা ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময়ে স্বাভাবিক ব্যক্তির তুলনায় অনেকটাই কম থাকার প্রবণতা থাকে। এই সমীক্ষা থেকে দীর্ঘ কোভিডের বৈশিষ্ট্যের কিছু অংশ জানা গেলেও, এর বিস্তারিত জানতে আরও অনেক অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫৪: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৫) রোগ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার প্রক্রিয়া সংক্রান্ত অনুমিত তত্ত্ব

উত্তর-৫৫৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা দীর্ঘ কোভিডের প্রক্রিয়া সম্পর্কিত বিদ্যমান অনুমিত তত্ত্বের উপর নজর দেব।

কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যগত প্রভাবগুলোর প্রক্রিয়া বা কারণ এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইওয়াসাকি আকিকো দীর্ঘস্থায়ী কোভিডের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করা একজন রোগ-প্রতিরোধ বিদ্যা বিশেষজ্ঞ, যিনি দীর্ঘ কোভিড হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে নিম্নলিখিত অনুমিত তত্ত্বে উপনীত হয়েছেন।

▽কাশি বা জ্বরের মতো প্রাথমিক উপসর্গগুলো অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পরেও, ভাইরাস বা ভাইরাসের ক্ষুদ্রাংশ শরীরে থেকে যায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে প্রদাহের সৃষ্টি করে।
▽সাধারণভাবে শরীরের সুরক্ষা প্রদানকারী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সংক্রমণের পর শরীরকে আক্রমণ করা শুরু করে।
▽সংক্রমণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গগুলোর সুস্থ হতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়।
▽শরীরে আগে থেকে রয়ে যাওয়া হার্পিস বা অন্যান্য ভাইরাসগুলো কোভিড সংক্রমণের পর সক্রিয় হয়ে ওঠে।

ইওয়াসাকির ভাষ্যানুযায়ী, “যেহেতু আমরা বুঝতে পারছি যে, সংক্রমনের পর এমনকি কয়েক মাস পরেও ভাইরাসের অ্যান্টিজেন (ভাইরাসের অংশ) বা আরএনএ (করোনাভাইরাস জিন) শরীরের বিভিন্ন অংশে রয়ে যায়, তাই ভাইরাসের দীর্ঘয়িত সংক্রমণ সম্পর্কিত অনুমিত তত্ত্বটি এখন বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করছে। আমাদের গবেষণাগার এখন কোভিডের ওষুধ ব্যবহার করে প্রলম্বিত এই সমস্যার চিকিৎসার বিষয়ে গবেষণা পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।”

এই তথ্যগুলি এপ্রিল মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫৩: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৪) আরোগ্য লাভের পর নির্দিষ্ট সময়ে পরবর্তী প্রতিক্রিয়া

উত্তর-৫৫৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্য লাভের পর যারা এর দীর্ঘায়িত প্রতিক্রিয়ায় ভুগে চলেন সেইসব রোগীদের অনুপাত জানতে পরিচালিত একটি জরিপের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করব।

জাপানে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, আরোগ্য লাভের পর কতদিন অতিবাহিত হয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে কোভিড-১৯’এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভোগা রোগীদের অনুপাতে পার্থক্য হয়। ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কুৎসুনা সাতোশি এবং ওসাকা জেলার তোয়োনাকা শহর যৌথভাবে এই জরিপটি পরিচালনা করে।

শহরটিতে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন এমন প্রায় ২৬ হাজার বাসিন্দার উপর মেইল এবং অ্যাপসের মাধ্যমে জরিপটি চালানো হয়। এতে ৪ হাজারের বেশি লোক অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪৭.৭ শতাংশ উত্তরদাতা জানান স্ববিচ্ছিন্ন থাকার ১০ দিন পরও তাদের মধ্যে উপসর্গ রয়ে গিয়েছিল। ৫.২ শতাংশ উত্তরদাতা জানান উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১ মাস পরেও তাদের মধ্যে কিছু পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ছিল এবং ৩.৭ শতাংশ উত্তরদাতা জানান উপসর্গ দেখা দেওয়ার দুই মাস পরেও পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ছিল।

জরিপে আরও দেখা গেছে, যাদের উপসর্গ গুরুতর তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভোগার আশংকা ছিল বেশি এবং যাদের টিকা নেওয়া ছিল তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভোগার আশংকা ছিল কম।

কুৎসুনা বলেন, আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে যে, পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত লোকজনের এ ধরনের জরিপে অংশ নেবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে, তোয়োনাকাতে পরিচালিত জরিপের ফলাফলের সাথে বিদেশে পরিচালিত গবেষণার ফলাফলের মিল দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে, গুরুতর উপসর্গে ভোগা লোকজন এবং যারা টিকা নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে। বহু ক্ষেত্রেই সময়ের সাথে সাথে উপসর্গ দূর হয়ে গেলেও, কারো কারো ভোগান্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

এই তথ্যগুলি এপ্রিল মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫২: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (৩) কী ধরনের ঝুঁকি রয়েছে?

উত্তর-৫৫২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা দীর্ঘ কোভিডে কী ধরনের ঝুঁকি আছে তা জানতে চিকিৎসা ফি রসিদের বিস্তারিত বিশ্লেষণের উপর আলোকপাত করব।

নাগোইয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’র অধ্যাপক হিরাতা আকিমাসার নেতৃত্বাধীন একটি দল বিভিন্ন রোগের নাম এবং প্রতিরোধ চিকিৎসার তালিকাভুক্ত করা চিকিৎসা পারিশ্রমিকের সার্টিফিকেট বিশ্লেষণ করে দেখেছে। গুরুতর দীর্ঘস্থায়ী কোন অসুস্থতার আভাস দেয় না এমন ১২ লাখ ৫০ হাজার সেবাগ্রহণকারী এই গবেষণার অর্ন্তভূক্ত ছিলেন, যারা চিকিৎসা ফি বাবদ বছরে ২ লাখ ইয়েনের কম পরিশোধ করেছেন।
দীর্ঘ কোভিড আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সাধারণভাবে দেখা যাওয়া উপসর্গের বিষয়ে, যারা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এবং যারা সংক্রমিত হননি –এই দুই গ্রুপের মধ্যে কোন আনুপাতিক পার্থক্য আছে কিনা, দলটি তা খতিয়ে দেখে। দলটি ক্লান্তির অনুভূতি এবং মাথাব্যাথাসহ ১০টি উপসর্গের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল।

দলটি প্রথমে ২০২১ সালের বসন্তকাল পর্যন্ত এক বছর সময়ের মধ্যে পাওয়া উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখে, যখন জাপানে সংক্রমণের প্রথম থেকে তৃতীয় তরঙ্গ আঘাত হেনেছিল। ভাইরাসে কখনও আক্রান্ত হননি এমন লোকজনের প্রায় ৩ শতাংশ চিহ্নিত ১০টি উপসর্গের জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তবে সংক্রমিত হওয়া লোকজনের ক্ষেত্রে, এই হার হল ১৬ শতাংশ, যা ভাইরাসে আক্রান্ত না হওয়া লোকজনের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি।

চতুর্থ এবং পঞ্চম তরঙ্গের সময় ভাইরাসে সংক্রমিত লোকজনের মধ্যে এই হার ছিল প্রায় ৬ গুণ বেশি। তবে, গবেষণা দলটি ষষ্ঠ তরঙ্গের সময় যখন ওমিক্রন উপধরনটি দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে সেই ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সময়ে দুটি গ্রুপের মধ্যে পার্থক্য তুলনামূলকভাবে কম, মাত্র তিন গুণ দেখতে পায় ।

হিরাতা বলছেন, এই বিশ্লেষণ কেবল চিকিৎসা ফি রসিদের ভিত্তিতেই করা হয়েছে, যার ফলে ভাইরাস এবং উপসর্গের মধ্যেকার সংযোগ বোঝার জন্য এটি যথেষ্ট নয়। তবে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ভাইরাসে সংক্রমিত লোকজন প্রায়ই হাসপাতালে গেছেন বলে এতে দেখা যাচ্ছে, যেগুলোকে দীর্ঘ কোভিড উপসর্গ হিসাবে ধারণা করা হচ্ছে। অধ্যাপক বলেন, ওমিক্রন উপধরনের প্রাধান্য দেখা যাওয়া ষষ্ঠ তরঙ্গের সময় দুটি গ্রুপের মধ্যে পার্থক্য কম হওয়ার ফলে এই সময়ে টিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা হ্রাসের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫১: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (২) ঘটনা

উত্তর-৫৫১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা, দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের উপর আলোকপাত করছি। আজ আমরা জাপানে একটি জরিপের মাধ্যমে পাওয়া ফলাফলের উপর ভিত্তি করে করোনাভাইরাস পরবর্তী এসব অবস্থার উপর আলোকপাত করব।

মোরিওকা শিনইচিরো’র নেতৃত্বে জাতীয় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় হাসপাতালের একটি দল কোভিড-পরবর্তী উপসর্গ সম্পর্কে জানতে একটি শুনানীর আয়োজন করেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে চিকিৎসা পরামর্শ নেয়া লোকজনসহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেরকম ২০ থেকে ৭৯ বছর বয়স সীমার ৫০২ ব্যক্তি এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

উত্তরদাতাদের ৩২.৩ শতাংশ বলেছেন রোগ মুক্ত হওয়ার ছয় মাস পর পর্যন্ত তাদের মধ্যে উপসর্গ ছিল। ৩০.৫ শতাংশ বলেছেন রোগ মুক্ত হওয়ার ১২ মাস পর পর্যন্ত উপসর্গ ছিল। ২৫.৮ শতাংশ বলেছেন রোগ মুক্ত হওয়ার ১৮ মাস পর পর্যন্ত উপসর্গ ছিল। এটি হচ্ছে প্রতি চারজনে প্রায় একজনের মত।

দলটি এছাড়াও রোগ মুক্ত হওয়ার এক বছর পর কোন ধরনের উপসর্গে তারা ভুগেছেন সে সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিল। ১১.৭ শতাংশের স্মৃতিজনিত সমস্যার অভিজ্ঞতা হয়, ১১.৪ শতাংশ মনোনিবেশজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করেন, ১০.৩ শতাংশ গন্ধের অনুভূতির সমস্যা এবং ৯.১ শতাংশ মস্তিষ্ক ঝাপসা হয়ে আসা এবং আগের মত পরিষ্কারভাবে চিন্তা না করতে পারার অনুভূতিজনিত সমস্যার কথা জানান। ৭.৫ শতাংশ বিষন্নতা বোধ, ৫.৯ শতাংশ স্বাদের সমস্যা, ৫.৬ শতাংশ স্বাস কষ্ট, ৩.৮ শতাংশ ক্লান্তি বোধ করা এবং ৩.৫ শতাংশ চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। দলটি এরকম খুঁজে পেয়েছে যে স্বাদের অনুভূতিহীনতা, চুল পড়ে যাওয়া এবং মনোনিবেশ করনজনিত সমস্যা মহিলাদের মধ্যে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং ক্লান্তির অনুভূতি এমন রোগীদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী হয় যারা মাঝারি থেকে গুরুতর কোভিড উপসর্গে ভোগেন।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৫০: দীর্ঘ কোভিড সম্পর্কে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য (১) কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থার উপসর্গগুলো কী কী

উত্তর-৫৫০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অনেক দেশ কোভিড-১৯’কে একটি সাধারণ সংক্রামক রোগ হিসেবে চিকিৎসা দিতে শুরু করেছে। তবে তারা এখনও দীর্ঘ কোভিড নামে পরিচিত কোভিডের মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব সামাল দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে, আমরা কোভিড পরবর্তী অবস্থার সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থাকে নিম্নরূপে সংজ্ঞায়িত করেছে। দীর্ঘ কোভিডের উপসর্গগুলো সাধারণত কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে দেখা দেয়। এইসব উপসর্গগুলো অন্তত পক্ষে দুই মাস স্থায়ী হয়। এই উপসর্গগুলো অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে যেমনটা ব্যাখ্যা করা যায় এই ক্ষেত্রে তেমনটা করা যায় না। সুতরাং, যখন উপসর্গগুলো এই তিনটি সংজ্ঞার সাথে মিলে যায়, তখন এগুলোকে দীর্ঘ-কোভিড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশেষ করে, দীর্ঘ কোভিডের উপসর্গগুলোর মধ্যে অবসাদ, নিঃশ্বাসের দুর্বলতা, স্মৃতিভ্রংশ, মনোনিবেশে অসুবিধাসহ গন্ধ ও স্বাদের সমস্যা দেখা দেয়।

তবে, এক গবেষণায় রোগীদের কাছ থেকে বেশি হলে ৫০ ধরনের উপসর্গের অভিযোগের কথা জানা গেছে। এই ধরনের দীর্ঘ কোভিড অবস্থা কতবার দেখা দেবে তা এখনও জানা যায়নি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর একজন রোগীর যদি কিছু উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে এগুলো সংক্রমণের সাথে সংশ্লিষ্ট কারণে হয়েছে নাকি অন্য কোন কারণে হয়েছে সেটি সনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।

জাতীয় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় হাসপাতালের রোগীদের গ্রহণ করা ডাক্তার মোরিওকা শিনইচিরো বলছেন, বর্তমানে এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে, কেন দীর্ঘস্থায়ী উপসর্গগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দেখা দিচ্ছে এবং কীভাবে এগুলো হচ্ছে। তিনি এও বলছেন, রোগীদের অভিযোগ করা উপসর্গগুলো আসলেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সাথে সংশ্লিষ্ট কিনা তা সনাক্ত করার জন্য রোগীদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে এবং এরপর কীভাবে তাদের চিকিৎসা করা হবে তার উপায় খুঁজে বার করতে হবে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৯: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(১৫) একজন বিশেষজ্ঞের মতামত

উত্তর-৫৪৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সরকার ৮ই মে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’র আইনি শ্রেণীকরণকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। আজ আমরা এই পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে একজন বিশেষজ্ঞের মতামত আপনাদের কাছে তুলে ধরব।

তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাতেদা কাযুহিরো সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উপদেষ্টা প্যানেলের একজন সদস্য। তার ভাষ্যানুযায়ী, তিনি মনে করেন না যে বিনামূল্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং এসংক্রান্ত চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সংক্রমিত সন্দেহ হওয়া লোকজন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। তিনি বলেন, এর কারণ তাদের পকেট থেকে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ, ইনফ্লুয়েঞ্জার সন্দেহে চিকিৎসকের কাছে গেলে যে অর্থ দিতে হয়, তার প্রায় সমান। তবে তিনি এও বলছেন যে করোনাভাইরাসের ওষুধ এবং হাসপাতালে ভর্তির জন্য অর্থ প্রদান রোগীদের জন্য ব্যয়বহুল হবে বলে, সরকারের উচিত হবে আরও কিছু সময়ের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা।

এদিকে, সরকার চাইছে যে পুনঃশ্রেণীকরণের পরে আরও বেশি সংখ্যক ক্লিনিক এবং হাসপাতাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করুক। এই বিষয়ে তাতেদার ভাষ্য হচ্ছে, যেসকল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা দেয়নি, তাদের যদি হঠাৎ এধরনের রোগীদের গ্রহণ করতে বলা হয়, তবে তা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না করে তাদের সাধ্যানুযায়ী সহযোগিতা করতে বলা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ইতিমধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করছে। তিনি এও বলেন যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীদের জন্য তারা ইতিমধ্যে যেসকল সংক্রমণ-রোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা আরও কিছুটা বাড়ানোর অনুরোধ জানানোর মধ্য দিয়ে, করোনাভাইরাস রোগীদের গ্রহণ করা চিকিৎসা স্থাপনার সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষ্যমতে, সংক্রমণ-রোধী কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে রোগীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা এবং যথাযথভাবে বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা করা।

এই তথ্যগুলি এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৮: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(১৪) পরিবর্তন কীভাবে সামাল দেবে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো

উত্তর-৫৪৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সরকার ৮ই মে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’র আইনি শ্রেণীকরণকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। টোকিও’র একটি ক্লিনিককে দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরে নিয়ে আজ আমরা জানার চেষ্টা করব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো কীভাবে এই পরিবর্তন সামাল দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

যেসব চিকিৎসা কেন্দ্র এতদিন কোভিড-১৯’র রোগী ভর্তি করতে পারেনি, তারা এবার রোগী ভর্তি করার কথা বিবেচনা করছে, কারণ কোভিড-১৯’র নতুন শ্রেণীকরণে এটি তারা করতে পারবেন। ডক্টর কিজিমা ফুজিও টোকিও’র শিনজুকু ওয়ার্ডে অবস্থিত কিজিমা ক্লিনিকের পরিচালক। জাপানে যখন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন কিজিমা তার ক্লিনিকে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের ভর্তি করার কথা ভাবলেও, অন্য রোগীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পিছিয়ে যান। কারণ তার ক্লিনিকে ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্য আলাদা স্থান নেই।

শ্রেণীকরণের পরিবর্তন পরিকল্পনা তাকে কোভিড-১৯’র রোগী কীভাবে দেখতে শুরু করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করেছে। কাজটিকে সম্ভব করার জন্য, কোভিড-১৯’এ সংক্রমিত সন্দেহভাজন একজন রোগীকে বলা হবে, যখন ক্লিনিকে অন্য রোগীরা থাকে না সেরকম একটি সময়ে আগেভাগেই ফোন করে রির্জাভেশন বুক করতে। এরপর রোগী ডাক্তার দেখিয়ে চলে যাওয়ার পর ক্লিনিক কর্মীদের ক্লিনিকের ঘরগুলো জীবাণুমুক্ত করে বাতাস চলাচলা স্বাভাবিক করতে হবে।

কর্মীদের এরকম সাবধানতা অবলম্বন করা সত্বেও সংক্রমণের ঝুঁকি সম্পূর্ণভাবে দূর করা যায় না, কারণ সংক্রমিত রোগী এবং অন্যান্য রোগীদের একই স্পেস বা জায়গা ব্যবহার করতে হবে। ক্লিনিকের কর্মীরাও এতে করে দুশ্চিন্তা মুক্ত নন।

কিজিমা বলেন, ক্লিনিকের কর্মীদের জন্য সম্ভাব্য সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রস্তুতি গ্রহণ করা গেলেও, রোগীদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নাও হতে পারে। অতএব, তিনি বলেন, রোগীদের বিশেষত যারা অন্তর্নিহিত সমস্যায় জর্জরিত তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর জন্য তাকে অবশ্যই সতর্কতার সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এই তথ্যগুলি মার্চ মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৭: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(১৩) রোগী ভর্তি নেবে এমন হাসপাতাল খুঁজে বার করার দায়িত্ব কার

উত্তর-৫৪৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সরকার ৮ই মে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’র আইনি শ্রেণীকরণকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। আজ আমরা রোগী ভর্তি নেবে এমন হাসপাতাল খুঁজে বার করার দায়িত্ব কার সেই সংক্রান্ত পরিবর্তনের ব্যাখ্যা দেব।

বর্তমানে সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মত প্রতিষ্ঠানগুলো করোনাভাইরাসে সংক্রমিত লোকজনের হাসপাতালে ভর্তি প্রক্রিয়ার সমন্বয় করে থাকে। তবে সরকার বলছে পুনঃশ্রেণীকরণের পর এই দায়িত্ব ধীরে ধীরে মূলত হাসপাতালগুলোর উপরেই সরিয়ে নেয়া হবে। কোন হাসপাতাল রোগীর ভর্তি নেবে সেই ব্যবস্থা তাদের ভিতরেই করে নিতে হবে, তবে শুরুতে কেবল মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীকেই নিতে হবে। শরতকালের পর মারাত্মক ধরনের উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের জন্য হাসপাতাল খুঁজে দেয়াও তাদেরই দায়িত্ব হবে।

এই লক্ষ্য বিবেচনায় রেখে হাসপাতালগুলোকে তথ্য প্রযুক্তির সদব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে যাতে করে তারা, কোন হাসপাতালের শয্যা খালি রয়েছে -এই ধরনের তথ্য দ্রুত ভাগাভাগি করে নিতে পারে। একই সাথে, জেলা পর্যায়ের স্থানীয় সরকারগুলো রোগীর পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে হাসপাতাল ঠিক করে রোগীদের মসৃণ স্থানান্তর নিশ্চিত করে দেয়ার বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলো বজায় রাখতে পারে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জেলা পর্যায়ের সরকারগুলোর প্রতি এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ হাসপাতালগুলোর মাঝে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ মসৃণভাবে সমন্বয় করে নেয়া নিশ্চিত করতে একটি রূপান্তর পরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানাবে।এই পরিকল্পনা সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ শীত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত চলবে, যে সময়ে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনা রয়েছে।এই সময়ের পর প্রতিটি জেলার নিজস্ব পরিকল্পনার সম্পন্ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করে দেখার পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৬: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(১২) চিকিৎসা ব্যবস্থায় পরিবর্তন

উত্তর-৫৪৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সরকার ৮ই মে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’র আইনি শ্রেণীকরণকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। আজ আমরা করোনাভাইরাস রোগীরা চিকিৎসা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় যেসব পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন সেটি ব্যাখ্যা করব।

করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়া লোকজন যেন বিস্তৃত পরিসরে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেন, সেরকম একটি ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এটি তারা সম্পন্ন করবে। বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ৪২,০০০ প্রতিষ্ঠান বাইরে থেকে আসা রোগীদের গ্রহণ করে। শ্রেণীকরণ নিম্নমুখী করে নেয়ার পর কর্মকর্তারা এই সংখ্যা ৬৪,০০০ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে নিয়েছেন। মন্ত্রণালয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেবল নিজেদের নিয়মিত রোগী নয়, একই সাথে নতুন রোগী গ্রহণের অনুরোধ জানানোর পরিকল্পনা করছে। মন্ত্রণালয় বলছে, জেলা কার্যালয়গুলো করোনাভাইরাস রোগীদের গ্রহণ করা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা অব্যাহত রাখবে।

করোনাভাইরাস রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির জন্য সরকার এই পর্যন্ত প্রায় ৩,০০০ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করে নিয়েছে। নিম্নমুখী শ্রেণীকরণের পর কর্মকর্তারা সারা জাপান জুড়ে আনুমানিক ৮,২০০ হাসপাতাল যেন করোনাভাইরাস রোগীদের ভর্তি করে নেয়, সেরকম একটি ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাইছেন। হাসপাতালের যেসব ওয়ার্ড বয়স্ক রোগীদের রি-হ্যাবিলিটেশন বা পুনর্বাসন সেবা প্রদান করে তাদের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা তারা করছেন, যাতে করে ওয়ার্ডগুলো যেন করোনাভাইরাস রোগীদের গ্রহণ করতে পারে।

সরকার প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণ প্রতিহত করতে স্থাপনা সমূহের নির্দেশিকা পর্যালোচনা করে দেখতে এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে সমর্থন প্রদানের জন্য পরিকল্পনা করছে। করোনাভাইরাস রোগীদের গ্রহণ করা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এটা করা হবে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৫: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(১১) হাসপাতালে বা আবাসন স্থাপনায় থাকার জন্য রোগীদের ব্যয়

উত্তর-৫৪৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার সংক্রামক রোগ আইনের অধীনে ৮ই মে তারিখে সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’র শ্রেণীকরণ নিম্নমুখী করে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ শ্রেণীভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। আজ আমরা ব্যাখ্যা করব, কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত হয়ে রোগীরা যখন হাসপাতালে ভর্তি হবেন বা সরকারের নিশ্চিত করা আবাসন স্থাপনায় থেকে সুস্থ হওয়ার বিকল্প বেছে নেবেন, তখন তাদের প্রদেয় অর্থের পরিমাণে কি পরিবর্তন আসবে।

কোভিড-১৯ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খরচ পুরোটাই বর্তমানে সরকারি তহবিল থেকে বহন করা হচ্ছে। কিন্তু জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, নতুন করে শ্রেণীভুক্তকরণের পর রোগের চিকিৎসা ব্যয় এবং হাসপাতালের খাবারের ব্যয় রোগীদের বহন করার প্রয়োজন হবে।কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালজনিত খরচ উচ্চ-ব্যয়জনিত চিকিৎসা সুবিধার যোগ্য বলে বিবেচিত। কিন্তু হঠাৎ করে দ্রুত চিকিৎসা খরচ বৃদ্ধি এড়ানোর জন্য এবং গ্রীষ্মকালে সংক্রমন বৃদ্ধির সম্ভাবনা মোকাবিলা করার জন্য, মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, তারা সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ অতিরিক্ত ভর্তুকি ২০ হাজার ইয়েন বা প্রায় ১৫০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত সরবরাহ করবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭৫ বা তদুর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের জন্য হাসপাতালের একটি অনুমিত খরচ সরবরাহ করেছে। ৩৮ লক্ষ ৩০ হাজার ইয়েন বা প্রায় ২৯ হাজার মার্কিন ডলার বাৎসরিক আয়ের জন্য আবাসিক কর প্রদান করা কোন ব্যক্তি যখন ১০ দিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হবেন, তখন চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য তাদেরকে অবশ্যই ৩৭ হাজার ৬০০ ইয়েন বা প্রায় ২৯০ মার্কিন ডলার এবং হাসপাতালের খাবারের জন্য ১৩ হাজার ৮০০ ইয়েন বা প্রায় ১০৫ মার্কিন ডলার প্রদান করতে হবে।

মন্ত্রণালয় মৃদু উপসর্গসহ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে না পারা এবং হাসপাতালের আসন সংখ্যার ঘাটতির জন্য হোটেল ও অন্যান্য আবাসন স্থাপনায় থেকে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের যে ব্যবস্থা রয়েছে তা বন্ধ করে দেবে। তবে, মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, স্থানীয় সরকারগুলো প্রবীণ এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ এই ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে পারে, এই ভিত্তিতে যে রোগীরা নিজেরাই এই ব্যয় বহন করবেন।

গ্রীষ্মকালে সংক্রমনের একটি সম্ভাব্য বৃদ্ধি সামাল দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯’র ওষুধের ব্যয় সরকারীভাবে বহন করা অব্যাহত রাখবে এবং হাসপাতালের ব্যয়ের চাপ কিছুটা লাঘবের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রস্তাব দেবে। মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ, তারা অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর সাথে মিল রাখার জন্য, করোনার ক্ষেত্রে সহযোগিতার পদক্ষেপগুলো অব্যাহত রাখবে কিনা তা বিবেচনা করে দেখবে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৪: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(১০) বহির্বিভাগের রোগীদের জন্য কোভিড-১৯’এর চিকিৎসা এবং পরীক্ষার জন্য প্রদেয় অর্থ

উত্তর-৫৪৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সরকার ৮ই মে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’এর আইনি শ্রেণীকরণকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। আজ, আমরা হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসা এবং পরীক্ষার জন্য কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত রোগীদের অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন আসবে, তা ব্যাখ্যা করব।

বর্তমানে, হাসপাতালের বহির্বিভাগে পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক আসার পরে, কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার খরচ, সম্পূর্ণরূপে সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হয়। পুনঃশ্রেণীকরণের পর, অবশ্য রোগীদের নিজেদের পকেট থেকে অর্থ প্রদান করতে হবে।

৭০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিরা যাদের চিকিৎসা ব্যয়ের মোট খরচের ৩০ শতাংশ নিজ তহবিল থেকে প্রদানের জন্য নির্ধারিত রয়েছে, তাদেরকে জ্বরনাশক এবং করোনাভাইরাসের ওষুধের পরামর্শ দেয়া হলে ৪ হাজার ১৭০ ইয়েন বা প্রায় ৩১ ডলার পর্যন্ত প্রদান করতে হবে। এটি মৌসুমি ফ্লু’এ আক্রান্ত বহির্বিভাগের রোগীদের প্রদান করা অর্থের প্রায় সমান, যাদেরকে জ্বরনাশক ও ভাইরাস-রোধী ট্যামিফ্লু সেবনের পরামর্শ দেয়া হলে ৪ হাজার ৪৫০ ইয়েন বা প্রায় ৩৩ ডলার পর্যন্ত প্রদান করতে হয়।

একই পরামর্শের জন্য, চিকিৎসা খরচের ১০ শতাংশ অর্থ প্রদানকারী ৭৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের ১ হাজার ৩৯০ ইয়েন বা প্রায় ১০ ডলার পর্যন্ত দিতে হবে। এটিও মৌসুমি ফ্লু’এ আক্রান্ত বহির্বিভাগের রোগীদের প্রদান করা অর্থের প্রায় সমান, যেখানে তাদের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৮০ ইয়েন বা প্রায় ১১ ডলার প্রদান করতে হয়।

সরকার নিজে নিজে বা স্বপরীক্ষণের কিটগুলোর সহজলভ্যতার কথা বিবেচনা করে এবং অন্যান্য রোগের রোগীদের ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর সাথে মিল রাখার জন্য, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সরকারি তহবিল প্রদান বন্ধ করে দিবে।

এই তথ্যগুলি মার্চ মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪৩: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে?
(৯) করোনাভাইরাসের ওষুধের জন্য কতটা খরচ বহন করতে হবে রোগীদের?

উত্তর-৫৪৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের সরকার ৮ই মে ক্যাটাগরি পাঁচ-এ সিজনাল ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই স্তরে, কোভিড-১৯’এর আইনি শ্রেণীকরণকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। এই ধারাবাহিকে, আমরা রোগীদের চিকিৎসা খরচের বোঝা এবং তারা যেসব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে সেসব বিষয়ে প্রত্যাশিত পরিবর্তনগুলি দেখব। আজ প্রথম পর্বে, আমরা সরকারের নীতি এবং ওষুধের খরচ ব্যাখ্যা করব।

রোগীদের ওপর করোনাভাইরাসের চিকিৎসা খরচের বোঝা আরও বাড়বে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ই মার্চ, মূলত বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসার অবসান ঘটানোর জন্য, সরকারি নীতি পর্যালোচনা করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে, চিকিৎসার কোনো খরচ রোগীদের বহন করতে হয় না, কারণ নীতিগতভাবে এই খরচ মেটাতে সরকারি তহবিল ব্যবহার করা হয়। কোভিড-১৯’কে ক্যাটাগরি পাঁচভূক্ত সংক্রামক রোগের তালিকায় নামিয়ে আনার পর, অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপের সাথে মিল রাখার জন্য, এই সাহায্য কমিয়ে আনা হবে। তবে রোগীদের ওপর আকস্মিক চাপবৃদ্ধি এড়াতে সরকার কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরকারি তহবিল ব্যবহার অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করছে।

গ্রীষ্মকালে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে, এই আশংকায় সেপ্টেম্বর মাসের শেষ অব্দি করোনাভাইরাসের দামি ওষুধ কেনার খরচ মেটাতে সরকারি তহবিল ব্যবহার করা হবে। কর্মকর্তারা শীতকালে সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য, অন্যান্য অসুখের সংক্রমণ বিস্তারের আশংকা এবং সরকারের কাছে কি পরিমাণ ওষুধ মজুদ আছে তা খতিয়ে দেখার পরিকল্পনাও করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, করোনাভাইরাসের ওষুধের জন্য সরকার অর্থ প্রদান বন্ধ করে দিলে, বর্হিবিভাগের একজন রোগীর লাগেভরিও নামক খাওয়ার ওষুধটি কিনতে ৩২ হাজার ৪শো ৭০ ইয়েন বা প্রায় আড়াইশো ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে হতে পারে।

এই তথ্যগুলি মার্চ মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪২: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (৮) উদ্যম থাকবে ব্যক্তির হাতে

উত্তর-৫৪২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। মে মাসের ৮ তারিখে জাপান সরকার কোভিড-১৯কে মৌসুমী জ্বরের মতো পঞ্চম পর্যায়ে নিচের দিকে শ্রেণীভুক্ত করে নেবে। নতুন এই পরিস্থিতিতে অসুস্থতা দেখা দিলে কোন ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে, এবারের পর্বে আমরা সেদিকে আলোকপাত করবো।

নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপের প্রস্তাব উত্থাপন করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্যানেল জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে বলেছে, “সরকারের জানানো অনুরোধের ওপর ভিত্তি করে একক পদক্ষেপ গ্রহণের পরিবর্তে বরং রোগের বিস্তার পরিস্থিতি ও ঝুঁকির ওপর নির্ভর করে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার, ব্যক্তি ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর নিজেদের তা বেছে নেয়া উচিত হবে।”

এতে আরও বলা হয় যে: “সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ যেখানে মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ের কিংবা সন্দেহ দেখা দেয়া প্রতিক্রিয়া যেখানে দেখা গেছে, সেরকম ঘটনা মনে হয় অব্যাহত আছে। আর্থ-সামাজিক ও শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের ওপর ও সেই সাথে শিশুদের দৈনন্দিন জীবনের ওপর মারাত্মক নিয়ন্ত্রণ তা আরোপ করায় এটা হচ্ছে সমস্যা সঙ্কুল।”

এরকমও সেখানে বলা হয়েছে যে, “কাজের জায়গা কিংবা দলগত সমাবেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা ও সর্বসম্মত একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত। কাউকেই পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করা উচিত হবে না এবং ব্যক্তি বিশেষের পছন্দ অবশ্যই বিবেচনা করে দেখতে হবে।”

এতে বলা হয়, “জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ভিড়ের জায়গায় সকলের এটা মনে রাখা উচিত হবে যে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যাওয়া এবং সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে ইচ্ছুক লোকজন সেখানে আছেন। এরা সবাই যেন নিরাপদ বোধ করতে পারেন, সেজন্য বিবেচনা মূলক পদক্ষেপ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। সংক্রমণ যেখানে সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সুদূর প্রসারী প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসতে পারে, হাসপাতাল ও বৃদ্ধদের সেবা প্রদানের মতো সেরকম স্থাপনায় ভাইরাস প্রতিরোধ করা এখনও গুরুত্বপূর্ণ রয়ে গেছে।”

প্যানেল বলেছে ভাইরাস প্রতিরোধের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ দ্রুত প্রচার করা হবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪১: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (৭) চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া কী?

উত্তর-৫৪১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ৮ই মে থেকে কোভিড-১৯’এর শ্রেণীকরণ পঞ্চম বিভাগে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মৌসুমি ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই বিভাগ। চলমান ধারাবাহিকের এবারের পর্বে, আমরা দেখার চেষ্টা করব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এই পরিবর্তনকে কিভাবে দেখছে।

সাইতামা জেলার কাসুকাবে শহরের একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান একটি প্রাকগঠিত জ্বরের ক্লিনিক বাইরে থেকে আসা রোগী দেখার জন্য নির্মাণ করেছে। এখানে জ্বরের মতো উপসর্গ থাকা রোগীদের দেখার পাশাপাশি ডায়াবেটিস ও অ্যাজমার চিকিৎসা’সহ নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

বর্তমানে, যখন কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র একটি হাসপাতাল খুঁজে দেয় যারা তাকে ভর্তি করে নেয়। কিন্তু কোভিড-১৯ ছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য, ডাক্তার ও নার্সদের তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যায় ঘাটতি রয়েছে এমন কারণ দেখানোর জন্য হাসপাতাল খুঁজে পেতে তারা প্রায়ই সমস্যায় পড়েন। তাদের মাঝে মাঝে রোগীদের দীর্ঘদিন ধরে সেবা প্রদান করার প্রয়োজন হয় – অতিরিক্ত অক্সিজেন দেয়া এবং শিরায় ড্রপ দেয়ার মতো সেবা প্রদান করতে হয় যতক্ষণ না তারা তাদের ভর্তি করতে রাজি হওয়া হাসপাতাল খুঁজে পাচ্ছেন।

কাসুকাবের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের একজন ডাক্তার বলেন, যখন কোভিড-১৯’এর শ্রেণীকরণ বিভাগ পাঁচে নামিয়ে আনা হবে এবং করোনাভাইরাসের রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য চিকিৎসা কর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার প্রয়োজন হবে, তখন তাদের প্রচুর পরিমাণে কাজ বেড়ে যাবে।

এই ডাক্তার এ আশাবাদ ব্যক্ত করছেন যে, একবারে বন্ধ করে দেয়ার পরিবর্তে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীদের ভর্তির প্রস্তুতি ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হবে।

অন্য একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান যেটি এখন পর্যন্ত জ্বরের ক্লিনিক স্থাপন করেনি, তারা জানাচ্ছে, তারা অবিলম্বে কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করতে পারবে না, কেননা সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে তাদের কিছু সময়ের দরকার হবে। তারা এও জানাচ্ছে, যদি রোগীরা মনে করেন যে, তাদের যে কোন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করবে, তাহলে সংশয়ের সৃষ্টি হতে পারে। এই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী এই আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকারের এই নতুন শ্রেণীকরণ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে কী ঘটতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক বিবেচনা প্রদান করবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৪০: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (৬) এক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগগুলো কী কী?

উত্তর-৫৪০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ৮ই মে থেকে কোভিড-১৯’এর শ্রেণীকরণ পঞ্চম বিভাগে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মৌসুমি ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই বিভাগ। চলমান ধারাবাহিকের এবারের পর্বে, আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে পুনঃশ্রেণীকরণের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে জানতে চেয়েছি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্যরা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এই নিম্নমুখী শ্রেণীকরণ, স্থানীয় সরকারগুলোর জন্য সম্ভাব্য সংক্রমণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা পরিষেবার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি রোধ করা কঠিন করে তুলতে পারে। বর্তমানে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষসমূহ পৌরসভাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করছে যাতে রোগীদের তাদের প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়ার মতো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো সম্ভব হয়।

তারা এমন একটি সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন যে নিম্নমুখী শ্রেণীকরণের পরে সরকার চিকিৎসা ব্যয় প্রদান বন্ধ করে দিলে সংক্রমিতরা সম্ভবত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসা পেতে সক্ষম হবেন না বা তারা এটি এড়িয়ে যেতে পারেন।

এছাড়া, কোভিড-১৯’কে পুনঃশ্রেণীকরণের মাধ্যমে পঞ্চম স্তরে নামিয়ে আনা হলে, এই রোগটি আর বিশেষ এক আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না যা সরকারকে কঠোর ভাইরাসরোধী পদক্ষেপ প্রয়োগের অনুমোদন দেয়। সরকারি প্যানেলের বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যানুযায়ী, তারা আশঙ্কা করছেন যে এরফলে লোকজন আগের মতো সংক্রমণ-রোধী ব্যবস্থা গ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারেন কারণ এই পরিবর্তন, জনসাধারণকে এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানোর ক্ষেত্রে জেলা গভর্নরদের আইনগত ভিত্তি রদ করবে। তারা এই আশঙ্কাও করছেন, লোকজন হয়ত এটিও বিবেচনা করতে পারেন যে কার্যত বৈশ্বিক মহামারির অবসান হয়েছে।

এক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞদের ব্যক্ত করা আরেকটি উদ্বেগ হলো অত্যন্ত সংক্রামক বা অতি রোগ সৃষ্টিকারী বা উভয় বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন পরিবর্তিত করোনাভাইরাসগুলোর নতুন ধরনসমূহের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের বিষয়টি। তারা এটি নিয়েও আশঙ্কিত যে নিম্নমুখী শ্রেণীকরণের ফলে সরকার এবং স্থানীয় সরকারগুলোর কোভিড-১৯ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সগুলো ভেঙে দিলে, এই ধরনের ঝুঁকির ক্ষেত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানোর বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া, সরকার টিকাদানের প্রচেষ্টা কমিয়ে দিলে টিকাদানের হারের সম্ভাব্য হ্রাস নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৯: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (৫) কোভিড- ১৯’এর ক্ষেত্রেও কি মৌসুমি ফ্লু’র মতোই চিকিৎসা করা হবে?

উত্তর-৫৩৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ৮ই মে জাপান সরকার কোভিড-১৯’কে পঞ্চম শ্রেণীর রোগের তালিকায় নামিয়ে আনবে, মৌসুমি ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগ যে তালিকার অন্তর্গত। চলতি ধারাবাহিকে কোভিড-১৯ ও মৌসুমি ফ্লু’র মধ্যে পার্থক্য এবং করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধপত্রের ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯’এর মোকাবিলা করা কঠিন, কারণ এই সংক্রমণ বিস্তারের ব্যাপ্তি ও সময় সম্পর্কে কিছুই পূর্বাভাস করা যায় না। করোনাভাইরাস মৌসুম নির্বিশেষে যেকোনও সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমনটি মৌসুমি ফ্লু’র ক্ষেত্রে ঘটে না। মৌসুমি ফ্লু’র প্রকোপ সাধারণত বাড়ে শীতের মাসগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা এও বলেন, করোনাভাইরাসের রূপান্তর ঘটে ফ্লু ভাইরাসের তুলনায় দ্রুত, যে রূপান্তরের ফলে জন্ম নিতে পারে সম্পূর্ণ নতুন কোনও স্ট্রেইন।

এখন কোভিড-১৯’এর চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ওষুধ ব্যবহারের প্রক্রিয়া ফ্লু’র ক্ষেত্রে ব্যবহৃত তামিফ্লু’র মতো ভাইরাস বিরোধী ওষুধের তুলনায় অনেক বেশি জটিল। তাছাড়া পুরোনো রোগ যাদের আছে সেই রোগীদের করোনার চিকিৎসায় এই ওষুধগুলো দেওয়ার ব্যাপারে খুব সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। কোভিড-রোগীর চিকিৎসা করা সহজ কাজ নয়।

যেসব হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংক্রমণ বিরোধী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের কোভিড-রোগীর চিকিৎসা করার অনুমতি রয়েছে। এই হাসপাতাল বা ক্লিনিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, এখনও তা ফ্লু’র চিকিৎসা করা হাসপাতাল বা ক্লিনিকের সংখ্যার চেয়ে কম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্লু যেভাবে মোকাবিলা করা হয়, কোভিড-১৯’এর মোকাবিলাও সেভাবে করতে পারার মতো অবস্থায় পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে। তারা বলেন, কোভিড-১৯’কে ক্যাটিগরি ফাইভের অন্তর্ভুক্ত রোগের তালিকায় নামিয়ে আনার পরেও সংক্রমণ বিরোধী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা উচিত।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৮: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (৪) টিকা দানের কী হবে?

উত্তর-৫৩৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার মে মাসের ৮ তারিখে কোভিড-১৯কে নিম্নমুখী দিকে পঞ্চম বিভাগে শ্রেণীভুক্ত করে নেবে, যা হচ্ছে মৌসুমী ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই পর্যায়ভুক্ত। এই পর্বে আমরা টিকাদানের ক্ষেত্রে কোন্‌ ধরনের পরিবর্তন এটা নিয়ে আসবে সেদিকে নজর দেব।

টিকাদান সংক্রান্ত আইনের ওপর ভিত্তি করে এতদিন পর্যন্ত বিনামূল্যে টিকা দিয়ে এসেছে সরকার।

টিকার জন্য লোকজনকে অর্থ পরিশোধ করতে হলে টিকা নেয়ার হার হ্রাস পেতে পারে বলে উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে। ব্যয়ের ভার কে বহন করবে এবং কত পরিমাণ – এই বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল এখন আলোচনা করছে। চলমান বিনা মূল্যের টিকাদান কর্মসূচি এপ্রিলের পরেও অব্যাহত রাখা হবে কিনা এবং তা করা হলে কাদেরকে এর জন্য যোগ্য হিসাবে গণ্য করা হবে, এধরনের সমস্যাগুলোর জন্য বিভিন্ন সমাধানের প্রস্তাব দেবে প্যানেল বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকার জানিয়েছে যে টিকা নেয়ার প্রয়োজন যাদের রয়েছে তারা যাতে বিনামূল্যে টিকা নিতে পারেন সেটা সরকার নিশ্চিত করবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৭: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (৩) মাস্ক পরা নিয়ে কি হবে?

উত্তর-৫৩৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার মে মাসের ৮ তারিখে কোভিড-১৯ কে নিম্নমুখী দিকে পঞ্চম বিভাগে শ্রেণীভুক্ত করে নেবে, যা হচ্ছে মৌসুমী ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই পর্যায়ভুক্ত। এই পর্বে আমরা মাস্ক পরার ক্ষেত্রে কোন্‌ ধরনের পরিবর্তন এটা নিয়ে আসবে সেদিকে নজর দেব।

অন্য মানুষের থেকে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখা যখন সম্ভব হয় না, সেরকম অবস্থায় ঘরের ভেতরে মাস্ক পরার সুপারিশ করা হচ্ছে। ঘরের ভেতরে চালানো আলাপ-আলোচনার সময় দূরত্ব যতটাই হোক না কেন, মাস্ক পরার সুপারিশ করা হয়।

জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে অনুষ্ঠিত করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের এক বৈঠকে সরকার বলেছে ঘরে এবং বাইরে উভয় জায়গায় মাস্ক পরা হবে কি হবে না, সেই সিদ্ধান্ত ব্যক্তি বিশেষের উপর ছেড়ে দেয়া নিয়ে মাস্ক সংক্রান্ত নীতি সরকার পর্যালোচনা করে দেখবে। সরকার বলছে নীতি কখন পর্যালোচনা করা হবে সেই সুনির্দিষ্ট সময় সরকার পরীক্ষা করে দেখবে।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল এরকম মতামত ব্যক্ত করেছে যে এমনকি পুনঃ শ্রেণীবিন্যাসের পরেও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে যারা গণ্য, ভাইরাসের সম্ভাব্য বিস্তার বন্ধ করতে মাস্ক পরা তাদের উচিত হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোভিড-১৯এর পরীক্ষায় যারা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছেন কিংবা রোগের উপসর্গ যাদের মধ্যে দেখা গেছে এবং সংক্রমিত লোকজন অথবা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত মানুষের ঘনিষ্ঠ সংযোগে যারা এসেছেন, তাদের উচিত হবে মাস্ক পরা এবং অন্যদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকা।

তারা বলছেন অন্যদের উচিত হবে রোগের বিস্তার পরিস্থিতি ও পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল যে রয়েছে তা নিশ্চিত করে নেয়া সহ পারিপার্শ্বিকতা অনুযায়ী প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তারা বলছেন বৃদ্ধদের সেবা প্রদান স্থাপনার মতো জায়গায় লোকজনের উচিত হবে মাস্ক পরা।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৬: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (২) নিষেধাজ্ঞা, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে কী পরিবর্তন আসবে?

উত্তর-৫৩৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ৮ই মে থেকে কোভিড-১৯’এর শ্রেণীকরণ ৫ম বিভাগে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মৌসুমি ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই বিভাগ। এবারের পর্বে, আমরা দেখার চেষ্টা করব আমাদের সমাজে লোকজনের চলাচল বা অন্যান্য আইনের উপরের নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কী ধরনের পরিবর্তন এটা নিয়ে আসবে।

বিভাগ পাঁচে নামিয়ে আনা লোকজনের চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে অসম্ভব করে তুলবে যেমনটা কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকার আরোপ করেছিল। এই নিচের বিভাগে নামিয়ে আনা কর্তৃপক্ষকে আর জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেয়া, হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে সেই সুপারিশ বা নির্দেশ জারি করা, সংক্রমিত ব্যক্তি এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনকে বাড়িতে থাকার আহ্বান জানানোর মতো পদক্ষেপ নেয়ার এখতিয়ার দেবে না।

এখন পর্যন্ত সরকারের যেসব সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ রয়েছে তার মধ্যে বিদেশ থেকে জাপানে আসার জন্য কমপক্ষে ৩ ডোজ টিকা নেয়া আছে সেসংক্রান্ত সনদপত্র দাখিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নীতিগতভাবে এ ধরনের প্রয়োজনকে বাতিল করা হবে।

করোনাভাইরাস রোগীদের ভর্তি করা এবং চিকিৎসা করা গুটিকয়েক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমিত ছিল, যেমন স্বীকৃত চিকিৎসা সংস্থা এবং জ্বরের ক্লিনিকগুলো। কর্তৃপক্ষগুলো দফায় দফায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে পারা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়িয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে।

হাসপাতালে থাকা এবং বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যয়ভার সরকার বহন করত। এই নিচের বিভাগে নামিয়ে আনার কারণে, রোগীদের নীতিগতভাবে ব্যয়ভারের কিছু অংশ বহন করতে হবে। এ ধরনের পদক্ষেপ কিছু লোককে ডাক্তারখানায় গিয়ে ডাক্তার দেখানোকে নিরুৎসাহিত করতে পারে এমন উদ্বেগের মাঝে, কর্তৃপক্ষগুলো বিভিন্ন স্তরে তাদের নীতি পর্যালোচনা করে দেখার পাশাপাশি কিছুদিনের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা করছে।

এখন পর্যন্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং আঞ্চলিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোকে সংক্রমণের সব ঘটনা রিপোর্ট করার আহ্বান জানানো হয়। এই নিচের বিভাগে নামিয়ে আনা হবে একটি নমুনা-সমীক্ষা স্কীমের দিকে ঘুরে দাঁড়ানো যেখানে প্রধান প্রধান হাসপাতালগুলোই কেবল সংখ্যা সম্পর্কে রিপোর্ট করবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৫: পুনঃশ্রেণীকরণ কী ধরনের পরিবর্তন আনবে? (১) কেন এটি ৮ই মে নির্ধারণ করা হয়েছে?

উত্তর-৫৩৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ৮ই মে থেকে কোভিড-১৯’এর শ্রেণীকরণ মৌসুমি ফ্লু’র মতো সংক্রামক রোগের একই বিভাগে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে, বিভাগ-৫’এ পুনঃশ্রেণীকরণের ফলে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে, সেই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হবে।

কেন ৮ই মে পুনঃশ্রেণীকরণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে?
সরকার জানিয়েছিল যে এক্ষেত্রে এপ্রিল মাসের শেষের দিকে কিংবা মে মাসের শুরুর দিকের একটি সময় নির্ধারণের লক্ষ্য তাদের রয়েছে। তবে, শেষ পর্যন্ত সরকার কেন এই তারিখটিই নির্ধারণ করেছে, তা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো নিম্নলিখিত কারণগুলো তুলে ধরেছে।

পৌরসভা এবং স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনাগুলো এসংক্রান্ত প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে, সেই সময় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গত ২৭শে জানুয়ারি এই বিষয়ে লিখিত মতামত জমা দেয়। এতে বলা হয়, "নীতিগত এই পরিবর্তন জনগণের জীবনযাত্রার পাশাপাশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসা স্থাপনাগুলোর ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। তাই এই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নিতে তাদের প্রায় তিন মাস সময় দেওয়া উচিত।"

এরপরে, এপ্রিল মাসের শেষের দিক থেকে মে মাসের শুরুর দিক পর্যন্ত জাপানের বসন্তকালীন ছুটির সময়ের আগে বা পরে পুনঃশ্রেণীকরণ করা উচিত কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এক্ষেত্রে, এই উদ্বেগ ছিল যে ছুটির আগে পুনঃশ্রেণীকরণ করলে তা লোকজনের চলাচল বৃদ্ধির মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তার ঘটাতে পারে এবং ছুটির দিনগুলোতে চিকিৎসা স্থাপনাগুলোর ওপর একটি ভারী বোঝা চাপিয়ে দিতে পারে।
এসব আলোচনার ওপর ভিত্তি করেই সরকার পুনঃশ্রেণীকরণের জন্য ৮ই মে তারিখটি নির্ধারণ করে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৪: ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ উপধরন সম্পর্কে আমরা যা জানি (৫) সংক্রমণ আবার ফিরে আসা নিয়ে আশংকা

উত্তর-৫৩৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা এক্সবিবি.১.৫ নামে পরিচিত ওমিক্রন ধরনের একটি নতুন স্ট্রেইনের ওপর আলোকপাত করছি। বিশেষজ্ঞদের আশংকা, এই স্ট্রেইন হয়তো এমন, যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার শক্তি, এখন পর্যন্ত যত স্ট্রেইন দেখা গেছে সেগুলোর মধ্যে সবচাইতে বেশি। ধারাবাহিকের শেষ পর্বে এবারে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক্‌ এক্সবিবি.১.৫ স্ট্রেইনের আধিপত্য থাকা নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার লাভ করার কতটা আশংকা রয়েছে।

জাপানে কি এক্সবিবি.১.৫ স্ট্রেইন আরও ছড়াবে? কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ আমাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ব্যাপকভাবে এড়িয়ে যাওয়ার শক্তি রয়েছে এই স্ট্রেইনটির। তিনি বলেন, যদিও সম্প্রতি জাপানে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা কমছে, তবু এক্সবিবি.১.৫ স্ট্রেইনের হাত ধরে সংক্রমণ আবার বাড়তে আরম্ভ করার আশংকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ওদিকে টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও, যিনি দেশের বাইরে অন্যান্য জায়গার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আসছেন, তিনি বলেন, এক্সবিবি.১.৫ স্ট্রেইন পূর্ণাঙ্গ রূপ ধারণ করলে জাপানে মহামারির চলতি অষ্টম ঢেউ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, অথবা এক্সবিবি.১.৫ স্ট্রেইন সংক্রমণের নবম ঢেউয়ের জন্ম দিতে পারে।

হামাদা বলেন, সংক্রমণ কমে আসার পরেও আবার তা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই আমাদের কিছুটা প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত। তিনি বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধের একটা কার্যকর উপায় যেহেতু টিকা, তাই ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে বানানো টিকা নিয়ে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।

২৫শে জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওমিক্রনের ধরনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে বানানো টিকা, এক্সবিবি.১.৫ সহ এক্সবিবি ওমিক্রনের ধরনগুলোর উপসর্গ রোধে কিছুটা সফল হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩৩: ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ উপধরন সম্পর্কে আমরা যা জানি (৪) নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি

উত্তর-৫৩৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ নামে পরিচিত উপধরনের ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে, যেটা এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যেতে সক্ষম উপধরন হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে আমরা এক্সবিবি.১.৫ এর নতুন সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নজর দেবো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া এক্সবিবি.১.৫ এর নতুন সংক্রমণের ঘটনা বিশ্বের অন্য কোথাও দ্রুত বিস্তার লাভ করেনি। জাপান সহ অধিকাংশ দেশে এই মুহুর্তে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ কোন উপধরনের প্রাধান্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।

টোকিও পৌরসভা জানায় যে এক্সবিবি.১.৫ এর নতুন সংক্রমণের ঘটনা টোকিওতে সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। জানুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত ২২টি নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যা হল জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মোট সংখ্যার কেবল ০.৩ শতাংশ।

এদিকে, এই একই সময়ের মধ্যে খবরে জানা যাওয়া অন্যান্য দুটি উপধরনই ছিল ওমিক্রন স্ট্রেইনের। ২০২২ সালের গ্রীষ্মের পর থেকে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঘটনাগুলোর মধ্যে বিএ.৫ হল ৫০.৬ শতাংশ, যার পরে রয়েছে বিকিউ.১.১ ১৬.২ শতাংশে, বিএফ.৭ ১৪.২ শতাংশে এবং বিএন.১ ১০.৪ শতাংশে।

করোনাভাইরাসের উপধরনগুলোর জেনেটিক বিশ্লেষণ করে দেখা টোকিও মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল ইউনিভার্সিটি’র সহযোগী অধ্যাপক তাকেউচি হিরোআকি বলেন এক্সবিবি.১.৫ তাৎক্ষণিক ভাবে বিস্তার লাভ না করলেও জাপানে অপর একটি প্রাদুর্ভাব ঘটলে আমরা জানি না যে কোন উপধরনটির প্রাধান্য দেখতে পাওয়া যাবে। তাকেউচি বলেন নতুন সংক্রমণের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার উপধরনের উপস্থিতি সম্ভবত আরও কিছু সময় ধরে অব্যাহত থাকবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩২: ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ উপধরন সম্পর্কে আমরা যা জানি (৩) এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার গুণাবলী

উত্তর-৫৩২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ নামে পরিচিত উপধরনের ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে, যেটা এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যেতে সক্ষম উপধরন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে আমরা এই উপধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার সক্ষমতার ওপর নজর দেবো।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাতো কেই’এর নেতৃত্বাধীন জি২পি-জাপান নামের গবেষক দল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, টিকা নেয়ার পর বিএ.৫ উপধরনে সংক্রমিত লোকজনের রক্ত পরীক্ষা করে এক্সবিবি.১.৫ এর বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে কাজ করে সেদিকে যেখানে আলোকপাত করা হয়েছে। গবেষণা পত্রটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আনুষ্ঠানিক পর্যবেক্ষণ এখনও করা হয় নি।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী অকার্যকর করে দেয়া অ্যান্টিবডি বিএ.৫ এর তুলনায় এক্সবিবি.১.৫এর বিরুদ্ধে সক্ষমতার মাত্র প্রায় দশ ভাগের এক ভাগ কাজ করে থাকে। এটা পরিস্কারভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিরুদ্ধে এর বিরোধিতার মাত্রা দেখিয়ে দিচ্ছে।

এর বাইরে স্পাইক প্রোটিনের রূপান্তর অন্য উপধরনগুলোর চাইতে মানব কোষে আটকে থাকার অনেক বেশি সামর্থ্য এটাকে দেয় বলে এক্সবিবি.১.৫কে তা ৪.৩ গুণ বেশি সংক্রামক করে দিচ্ছে।

অতীতের বিভিন্ন ভাইরাস উপধরনের বিপরীতে এক্সবিবি.১.৫ অ্যান্টিবডি নিষ্ক্রিয় করে দেয়া ও সেই সাথে মানব কোষের প্রোটিনে এটার শক্ত ভাবে লেগে থাকার সক্ষমতা যুক্ত করে নিতে পারে।

তবে ভাইরাসের চরম তীব্রতা কিংবা মারাত্মক উপসর্গের কারণ এটার হয়ে উঠার সক্ষমতা সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩১: ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ উপধরন সম্পর্কে আমরা যা জানি (২) ঝুঁকি মূল্যায়ন

উত্তর-৫৩১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা এক্সবিবি.১.৫ নামে অভিহিত ওমিক্রন ধরনের একটি নতুন স্ট্রেইনের বিষয়ে জানব। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে এটি করোনাভাইরাসের ধরনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়া স্ট্রেইন হতে পারে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে, আমরা ঝুঁকি সংক্রান্ত মূল্যায়নের দিকে নজর দেব।

জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও এক্সবিবি.১.৫ ধরনের ঝুঁকি সংক্রান্ত মূল্যায়ন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, এই উপধরনটি যুক্তরাষ্ট্রে অপেক্ষাকৃত উচ্চ হারে ছড়িয়ে পড়ার মতো অবস্থানে ছিল। এতে এও বলা হয়, আরও বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে।

মূল্যায়নে আরও বলা হয়, প্রাথমিক পরীক্ষার উপাত্ত অনুযায়ী আগে কোভিড আক্রান্ত হয়ে বা টিকা নেয়ার থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিবডিকে এড়িয়ে যাওয়ার এই উপধরনটির ক্ষমতা পূর্ববর্তী ধরনগুলোর থেকে বেশি।

এতে বলা হয়, সংক্রমিত হওয়ার পরে মারাত্মক উপসর্গে আক্রান্ত হওয়ার হার সংক্রান্ত কোন ক্লিনিকাল উপাত্ত এখনও তাদের কাছে নেই। ডব্লিউএইচও এও জানায়, তারা এখনও এক্সবিবি.১.৫ এর কোন রূপান্তরের বিষয় নিশ্চিত করেনি, যা তীব্রতার পরিবর্তনের সম্ভাবনার সাথে যুক্ত আছে।

ডব্লিউএইচও আরও জানায়, “এক্সবিবি.১.৫ হয়তো বৈশ্বিকভাবে সংক্রমণের সংখ্যাকে বাড়িয়ে দেবে”, যদিও এখন পর্যন্ত তাদের কাছে এ সংক্রান্ত সীমিত সংখ্যক উপাত্ত রয়েছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫৩০: ওমিক্রনের এক্সবিবি.১.৫ উপধরন সম্পর্কে আমরা যা জানি (১) যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত বিস্তার

উত্তর-৫৩০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এক্সবিবি.১.৫ নামে অভিহিত ওমিক্রন ধরনের একটি নতুন স্ট্রেইন, ডিসেম্বরের শেষের দিক থেকে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে এটি করোনাভাইরাসের ধরনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়া স্ট্রেইন হতে পারে। এক্সবিবি.১.৫ বিষয়ক আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে, কীভাবে উপধরনটি যুক্তরাষ্ট্র’সহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে, সেবিষয়ে আপনাদের অবহিত করা হবে।

এক্সবিবি.১.৫ এর উৎপত্তি এক্সবিবি থেকে, যা একটি তথাকথিত রিকম্বিন্যান্ট বা পুনর্গঠিত ভাইরাস এবং এটি ওমিক্রন বিএ.২ উপধরনের দুটি ভিন্ন ধরনের জিনগত তথ্য বহন করে। উল্লেখ্য, বিএ.২ ২০২২ সালের বসন্তকাল থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে নিউইয়র্ক এবং অন্যান্য পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোতে করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল আসা ব্যক্তিদের মধ্যে এক্সবিবি.১.৫’এ সংক্রমিতদের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এখন এটি দেশটিতে প্রধান উপধরনে পরিণত হয়েছে। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে যে, অনুমিত হিসেব অনুযায়ী গত ২১শে জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশটির মোট কোভিড সংক্রমণের ৪৯.১ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল এই উপধরন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’র ভাষ্যানুযায়ী, ১১ই জানুয়ারি পর্যন্ত, মোট ৩৮টি দেশ এক্সবিবি.১.৫’যুক্ত থাকা কোভিড-১৯ সংক্রমণের খবর জানিয়েছে। জাপানেও এই উপধরনে সংক্রমণের খবর জানা গেছে। এই উপধরন সংক্রান্ত উপাত্ত এখনও সীমিত থাকলেও, ১৯শে জানুয়ারি প্রকাশিত ডব্লিউএইচও’র একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে ২০২২ সালের শেষ সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে খবর পাওয়া কোভিড সংক্রমণের ৮.৩৬ শতাংশের জন্য এক্সবিবি উপধরন সার্বিকভাবে দায়ী ছিল।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৯: সংক্রমণের প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর ৩ বছর (৫) এরপর আমাদের কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?

উত্তর-৫২৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে কোভিড-১৯এর প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা ফিরে দেখার চেষ্টা করছি কীভাবে এই সময়ের মধ্যে বিবর্তিত হয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ধারাবাহিকের শেষ পর্বে এবারে আমরা করোনাভাইরাসকে কীভাবে নেওয়া উচিত এবং কেমন করে এর মোকাবিলা করা উচিত সেসম্পর্কে সরকারি উপদেষ্টা প্যানেলের প্রধান ওমি শিগেরু’র অভিমত জানবো।

ওমি বলেন, “কোভিড-১৯ হচ্ছে ১০০ বছরের মধ্যে একবার ঘটে, এমন এক সংক্রামক রোগ। ২০০৩ সালে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রম বা সার্স নামের একটি রোগ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল, যাকে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম মহামারি বলে অভিহিত করা হয়। বলা হয়ে থাকে এই রোগ হচ্ছে গণস্বাস্থ্যের বিরুদ্ধে এক ভয়ানক হুমকি। তবু এই রোগকে কেবল ৬ মাসের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু নতুন করোনাভাইরাস দেখা দেওয়ার তিন বছর পর আজও তা সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান। শুধু তাই নয়, ভাইরাসটির এমন সব নতুন নতুন ধরন আবির্ভূত হয়েছে যেগুলো মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়িয়ে যেতে পারে। কম বয়সী লোকেদের মধ্যে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয় কদাচিৎ, এটা একটা ভাল খবর ঠিকই, তবে কাউকে কাউকে এই ভাইরাসের দীর্ঘস্থায়ী পরবর্তী-প্রতিক্রিয়ায় ভুগতে দেখা যাচ্ছে। সরাসরি এই ভাইরাস থেকে গুরুতর নিউমোনিয়া হওয়ার ঘটনা কমে আসলেও, এই ভাইরাস হৃৎপিন্ড ও ধমনীর ক্ষতি করছে, এমন দৃষ্টান্তের সংখ্যা বাড়ছে”।

ওমি আরও বলেন, “আমাদের সবারই করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্যগুলো পুরোপুরি বোঝার চেষ্টা করা উচিত এবং সেই জ্ঞানের ভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত মোকাবিলার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি অর্থনীতি ও সমাজকে সচল রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ। দু-দিক রক্ষার সর্বোত্তম উপায় খুঁজে বের করার জন্য আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে বিষয়টির গভীরে যেতে হবে আমাদের”।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৮: সংক্রমণের প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর ৩ বছর (৪) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো ২৪ ঘন্টা ধরে সমস্যা সামাল দিচ্ছে

উত্তর-৫২৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে কোভিড-১৯এর প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। মহামারির শুরু থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সমস্যার সামাল দিয়ে এসেছে এবং পুরো সময় ধরে ভারী কাজের চাপের মুখে পড়ায় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।

জাপান জুড়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো মোট সংক্রমণের সংখ্যা গণনা করা, রোগীদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা এবং হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি সমন্বয় করে দেখার মতো বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত রয়েছে।

মহামারির শুরুতে টোকিওর কিতা ওয়ার্ডের এক কেন্দ্রের কর্মীরা শরীরে জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীকে টেলিফোনে পরামর্শ দেয়া, সংক্রমিত বলে সন্দেহ করা লোকজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা বিভিন্ন স্থাপনায় বিতরণ করা সহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সরকার সেপ্টেম্বর মাসে সংক্রমণের মোট সংখ্যা গণনার শর্তাবলী সহজ করে নেয় যার ফলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কাজের পরিমাণ প্রায় ৭০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন এই পদক্ষেপের ফলে তাদের ওপর চাপ লাঘব হলেও অষ্টম তরঙ্গের সময় হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি সমন্বয় করা এবং বাড়িতে যেসব রোগীরা রয়েছেন তাদেরকে দেখতে যাওয়া বা টেলিফোন করার মতো কাজে তারা লিপ্ত ছিলেন। তাই তারা বলেন রোগীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব তাদের জন্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোম থেকে শুক্রবারের পাশাপাশি সপ্তাহান্তেও কর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে বলে তারা জানান।

ঐ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি জানায় যে বিপুল সংখ্যক সংক্রমণের কারণে তারা এত বেশি চাপের মুখে ছিল যে তাদের পরিস্থিতিকে দায়িত্ব পালনের কারণে বিধ্বস্ত হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। কেন্দ্র আরও জানায় যে সেই ধরনের পরিস্থিতির মুখে তারা কাজের কিছুটা দায়িত্ব কয়েকটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল এবং তারপরেই তারা লোকজনকে দক্ষতার সাথে কাজে লাগাতে পেরেছিল। গত তিন বছর ধরে কর্মীরা প্রায় ২৪ ঘন্টা ধরেই তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে কেন্দ্র আরও বলে যে এছাড়া কোন বিকল্প নেই তবে পরিস্থিতি খুবই কঠিন বলে বর্ণনা করা যায়।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৭: সংক্রমণের প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর ৩ বছর (৩) চাপের মুখে চিকিৎসা ব্যবস্থা

উত্তর-৫২৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে কোভিড-১৯এর প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। মহামারির শুরু থেকে করোনাভাইরাস রোগীদের গ্রহণ করা বিভিন্ন হাসপাতালকে নতুন একটি সংক্রমণ তরঙ্গ এসে পড়ার পর প্রত্যেক বার চাপের মুখে পড়তে হয়েছে।

টোকিওর হাচিওজি শহরের মিনামিতামা হাসপাতাল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইয়োকোহামা বন্দরে একটি প্রমোদতরীতে গুচ্ছ সংক্রমণ চিহ্নিত হওয়ার সময় থেকে করোনাভাইরাস রোগীদের গ্রহণ করে আসছে।

তখন থেকে হাসপাতাল ২৩টি শয্যা, বা এর মোট ১৭০টি শয্যার মধ্যে ১৪ শতাংশ মাঝারি কিংবা হালকা থেকে মাঝারি পর্যায়ের কোভিড ঘটনার জন্য নির্ধারণ করে রাখে। এখন পর্যন্ত হাসপাতাল ১ হাজারের কাছাকাছি করোনাভাইরাস রোগীকে গ্রহণ করেছে।

গত বছরের শুরুর দিকে ওমিক্রন ধরণের সংক্রমণ বিস্তৃত হতে থাকা সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া এবং মারাত্মক রকম অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীর সংখ্যা হ্রাস পায়।

তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোভিড রোগীর সংখ্যা মোট শয্যার সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর চাপ তা সৃষ্টি করে এবং অন্য রোগীদের চিকিৎসা প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।

বর্তমান অষ্টম তরঙ্গের সময় ডিসেম্বর মাস থেকে কোভিড রোগীর জন্য নির্ধারিত সব কয়টি শয্যা পূরণ হয়ে আছে। করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য শয্যার ব্যবস্থা করে দিতে হাসপাতাল অন্যান্য ওয়ার্ডের অংশবিশেষ বন্ধ করে দিয়েছে।
কোভিড বহির্ভূত জরুরি রোগীদের গ্রহণ করা এটা কঠিন করে দেয়।
হাসপাতাল সাধারণত জরুরি সেবা যাদের দরকার সেরকম ৯০ শতাংশ রোগীকে গ্রহণ করলেও চলতি বছরের শুরু থেকে সেই হার প্রায় ৫০ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে।

হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেছেন সংক্রমণের নতুন একটি তরঙ্গ আসার পর প্রতিবার চাপের মুখে পড়তে হওয়ায় কঠিন অবস্থা এখনও অব্যাহত আছে। কর্মকর্তা বলছেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখা হাসপাতালের দরকার হলেও আরও বেশি রোগী যেন গ্রহণ করা যায় সেজন্য সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ বদল করে নেয়ার উপায়ও হাসপাতালকে খুঁজে দেখতে হবে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৬: সংক্রমণের প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর ৩ বছর (২) নতুন ধরন এবং উপধরনের অব্যাহত আবির্ভাব

উত্তর-৫২৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে কোভিড-১৯ এর প্রথম সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার পর তিন বছর পার হয়েছে। এই তিন বছরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন এবং উপধরন বার বার দেখা দিয়েছে।

জাপানে করোনাভাইরাসের স্ট্রেইনের যে ধরনটি প্রথম নিশ্চিত করা হয়েছিল সেটি ছিল চীনের উহানে মহামারি শুরুর প্রথম দিকে যে ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছিল সেটি। ২০২০ সালের বসন্তে এই ভাইরাসের বিভিন্ন ধরন দেখা দিতে শুরু করার পরে, এই ধরনটি ইউরোপে আধিপত্য বিস্তার করে এবং পরে জাপানেও ছড়িয়ে পড়ে।

২০২২ সালের প্রথমদিকে, ওমিক্রন ধরন জাপানে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু এই ধরনটি অত্যন্ত সংক্রামক, তাই আগের চেয়েও অনেক বেশি লোক আক্রান্ত হন এবং সেইমতো মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে যায়।

ওমিক্রনের বেশ কয়েকটি উপধরন ভাইরাসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যেই আবির্ভূত হয়েছে। জাপানে চলমান মহামারির বর্তমান অষ্টম তরঙ্গের মধ্যে বিকিউ.১ উপধরন তাদের উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে।

এক্সবিবি.১.৫ উপধরনটি ইতোমধ্যেই জাপানেও সনাক্ত করা হয়েছে। এই উপধরনটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বিস্তার লাভ করছে এবং এটির এমনকি আরও বেশি সংক্রামক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

একজন ভাইরাস বিশেষজ্ঞ এবং টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাতো কেই বলেন, নতুন উপধরনগুলো টিকা নেয়ার মাধ্যমে বাড়ানো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কৌশলে এড়িয়ে একের পর এক আবির্ভূত হচ্ছে।

সাতো বলেন, অন্য যেকোন স্ট্রেইনের তুলনায় এক্সবিবি উপধরনগুলোর বিরুদ্ধে এন্টিবডির নিষ্ক্রিয়করণ কম কার্যকর।

তিনি এও বলেন, তিনি অনুভব করছেন যে, করোনাভাইরাসের উপধরনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। তিনি আরও বলেন, এই মহামারির অবসান প্রত্যাশা করার পরিবর্তে এটিকে চলতে দেয়ার মতো পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা এখন প্রয়োজন।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৫: সংক্রমণের প্রথম ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর ৩ বছর (১) করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার

উত্তর-৫২৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে কোভিড-১৯ এর প্রথম সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার পর তিন বছর পার হয়েছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কিভাবে এই সময়কালের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিবর্তন হয়েছে, আমরা তা পর্যালোচনা করব।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত, বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬৬ কোটি ৮০ লক্ষ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬০ লক্ষ ৭০ হাজার।

তিন বছর আগে ১৫ই জানুয়ারি জাপানে কোভিড-১৯’এর প্রথম সংক্রমণের খবর প্রকাশ করা হয়েছিল। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যানুযায়ী, চলতি বছরের ২০শে জানুয়ারি পর্যন্ত, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ এবং এসময়ে ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

এদিকে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ওমিক্রন ধরন ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বিশেষ করে, গত এক বছরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরে হওয়া কোভিড-১৯ সংক্রমণের মোট সংখ্যা, গত তিন বছরের সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশ।

অন্যদিকে, চিকিৎসা ও টিকার উন্নয়নের কারণে গত তিন বছরে জাপানে কোভিড-১৯ রোগীদের মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সংক্রমণের প্রথম তরঙ্গের সময় মৃত্যুর হার ৫.৩৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল। আর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার পর, সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ থেকে চলমান অষ্টম তরঙ্গ পর্যন্ত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে ০.১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৪: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (৭) বিতর্ক থেকে কী ফল লাভ করা যেতে পারে?

উত্তর-৫২৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের অধীনে করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানে। বিতর্কের কী ফল হতে পারে? এবারে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনা সংক্রান্ত আলোচনায় উপসংহারে পৌঁছানোর ব্যাপারে কোনও সুনির্দিষ্ট সময়সূচি স্থির করা হয়নি।

ভাইরাসে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার আশংকার মতো নানা বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের গবেষণার ভিত্তিতে, ধারনা করা হচ্ছে আরও সুনির্দিষ্ট কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা হবে, যেমন চিকিৎসা খরচ সরকার বহন করবে কিনা ইত্যাদি। বর্তমানে কোভিড-১৯’কে দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত রোগ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এর চিকিৎসা খরচের পুরোটা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হয়।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে দেওয়া বিনামূল্যের টিকা অব্যাহত রাখা হবে কিনা, তা নিয়েও বিতর্ক হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯’এর শ্রেণী পরিবর্তন করে একে পঞ্চম শ্রেণীভুক্ত রোগ হিসেবে গণ্য করতে হলে, বিষয়টি অবশ্যই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের কাছে উত্থাপন করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের সংশোধন করতে হবে।

কোভিড-১৯’কে যদি পঞ্চম শ্রেণীর রোগের তালিকাভুক্ত করা হয়ও, তবু এর চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়ার ব্যবস্থাটি সরকার অব্যাহত রাখতে পারে।

আর যদি কোভিড-১৯’এর জন্য নতুন একটি শ্রেণী তৈরি করা হয়, সেক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের সংশোধন আবশ্যক এবং তা নিয়ে সংসদে বিতর্ক বাধ্যতামূলক।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২৩: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (৬) ওষুধ এবং চিকিৎসা সেবা

উত্তর-৫২৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের অধীনে করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানে। এবারে আমরা জাপানে বর্তমানে কী ধরনের ওষুধ এবং চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে এবং তার সাথে বিশেষজ্ঞদের জানানো উদ্বেগের ওপর আলোকপাত করব।


জাপানে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসায় দুই ধরনের কোভিড-১৯ ওষুধ লাগেভরিও এবং প্যাক্সলোভিড ব্যবহার করা হয়েছে। নভেম্বর মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মুখে খাওয়ার ওষুধ যোকোভার জরুরি ব্যবহার অনুমোদন করে। ঝুঁকির মাত্রা যাই থাকুক না কেন সবধরনের রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা সম্ভব জাপানে এটি হল প্রথম ওষুধ। জাপানি একটি ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি শিওনোগি এই ওষুধটি উদ্ভাবন করেছে।

চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণ সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হলে জাপানে বর্তমানে যে কোন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানই কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা করতে পারে। কোভিড রোগীর চিকিৎসা করা হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে, কয়েকজন বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। অক্টোবর মাসে তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওশিতানি হিতোশি, কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি এবং অন্যান্য কয়েকজন গবেষক, করোনাভাইরাস মহামারির সম্ভাবনার ওপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের কাছে এক প্রতিবেদন পেশ করেন। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের কারণে আকস্মিক ব্যাপক হারে সংক্রমণ বিস্তার লাভ করতে পারে বলে সতকর্তা অবলম্বন করে চলার জন্য তারা আহ্বান জানান। একই সাথে প্রত্যাশা অনুযায়ী টিকা কর্মসূচিতে অগ্রগতি না হলে মৃতের হার বা লোকজন গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার হার পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও তারা সতর্ক করে দেন।

বিশেষজ্ঞদের প্যানেলের নেতৃত্ব দেয়া ওয়াকিতা তাকাজি নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ সাংবাদিকদের বলেন কোভিড-১৯ আমাদের শরীরে কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করছে তার ওপর আমাদের ঘনিষ্ঠ নজর রাখতে হবে। ওয়াকিতা বলেন করোনাভাইরাস সংক্রমণে অতীতে শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থাকলেও সম্প্রতি চিকিৎসকেরা কার্ডিওভাসকুলার বা হৃদরোগ জনিত জটিলতাই বেশি লক্ষ্য করছেন। এর অর্থ হল কোভিড সম্ভবত সংবহন সংক্রান্ত রোগ হয়ে উঠেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২২: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (৫) টিকাদানের হার

উত্তর-৫২২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের অধীনে করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানে। ধারাবাহিকের এই পর্বে আমরা জাপানে টিকাদানের হারের ওপর আলোকপাত করব, পর্যালোচনার সময় যে বিষয়টি বিবেচনায় রাখার প্রয়োজন ছিল।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ বিষয়ক সরকারের সাবকমিটির প্রধান ওমি শিগেরু আভাস দিয়েছেন যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত - এই পূর্বশর্তের আওতায় কোভিড-১৯ পুন:শ্রেণীবিন্যাসের জন্য কয়েকটি বিষয় প্রয়োজনীয়।
গত জুলাই মাসে এনএইচকে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিষয়গুলোর উল্লেখ করেছিলেন যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ব্যাপক হারে টিকাদান, নিম্ন মূল্যের সহজলভ্য ওষুধ এবং আরও অধিক সংখ্যক চিকিৎসা কেন্দ্র যাতে রোগীর চিকিৎসা করে।

প্রথমটি হলো টিকাদানের হার। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যার ৮১.৪ শতাংশ কোভিড-১৯ রোগের প্রথম টিকা, ৮০.৪ শতাংশ দ্বিতীয় টিকা এবং ৬৭.৫ শতাংশ তৃতীয় টিকা নিয়েছেন। তবে ওমিক্রন ধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা নিয়েছেন মাত্র ৩০.৬ শতাংশ। এই টিকা নিতে যারা আগ্রহী বছরের শেষ পর্যন্ত সরকার তাদেরকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২১: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (৪) মৃত্যু হারে পরিবর্তন

উত্তর-৫২১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের অধীনে করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানে। সংক্রমণের পুরো সময়টা জুড়ে মৃত্যু হার কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সে ব্যাপারে ধারাবাহিকের এই পর্বে আমরা আলোকপাত করব, কেননা এটি সম্ভবত একটি প্রধান বিষয় যা এই আলোচনাকে প্রভাবিত করতে পারে।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রথম তরঙ্গের সময়ে যখন ভাইরাসটি প্রথম জাপানে সনাক্ত করা হয়, তখন মৃত্যু হার ছিল ৫.৩৪ শতাংশ। এই হার একই বছরের গ্রীষ্মে কমে ০.৯৩ শতাংশ হয়ে যায়, যখন সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গ চলমান ছিল। আর এই হার অংশত কমে গিয়েছিল এই কারণে যে তখন কিভাবে মারাত্মক উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসা করা হবে সেই বিষয়টিতে খানিকটা অগ্রগতি অর্জিত হয়েছিল।

তবে মৃত্যু হার আবার ২০২১ সালের প্রথমদিকে বেড়ে ১.৮২ শতাংশ হয়ে যায় তৃতীয় তরঙ্গ চলার সময়ে, কেননা তখন চিকিৎসা ব্যবস্থা ভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে প্রচণ্ড চাপের মুখে ছিল। এরপর চতুর্থ তরঙ্গ চলাকালীন এই হার বেড়ে ১.৮৮ শতাংশে পৌঁছে যায় ২০২১ সালের বসন্তে, আলফা ধরনের বিস্তারের পর। উল্লেখ্য এই আলফা ধরনটিই হচ্ছে করোনাভাইরাসের প্রথম উল্লেখযোগ্য রূপান্তর। ২০২১ সালের গ্রীষ্মে ডেল্টা ধরন ছড়িয়ে পড়লে মৃত্যু হার কমে ০.৩২ শতাংশে পৌঁছে যায়। ফলে পঞ্চম তরঙ্গ দেখা দেয় কেননা মৃদু বা এমনকি কোন উপসর্গ না থাকা রোগীর সংখ্যা তখন বেড়ে যায়।

২০২২ সালের প্রথম দিকে অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ধরনের বিস্তারের কারণে ষষ্ঠ তরঙ্গ দেখা দেয়া সত্ত্বেও মৃত্যু হার আরও কমে যায়। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেলেও, মৃত্যু হার কমতে থাকে, কেননা সংক্রমিত লোকের সংখ্যা হঠাৎ করে নজীরবিহীন মাত্রায় পৌঁছে যায়।

ষষ্ঠ তরঙ্গের সময়ে মৃত্যু হার ছিল ০.১৭ শতাংশ। এই হার চলতি গ্রীষ্মে সপ্তম তরঙ্গ চলাকালীন আরও কমে গিয়ে ০.১১ শতাংশে দাঁড়ায়। যদিও মৃত্যু হার কমেছে, তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩১ হাজারে পৌঁছে যায় অত্যন্ত সংক্রামক ওমিক্রন ধরনের বিস্তারের কারণে। এই রেকর্ড সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৩ বছরে এই ভাইরাসে জাপানে মৃত্যুবরণ করা লোকের সংখ্যার ৬০ শতাংশে পৌঁছে যায়।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫২০: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (৩) শ্রেণী-৫’এ পুন:শ্রেণীকরণের মাধ্যমে কী পরিবর্তন আনা যেতে পারে?

উত্তর-৫২০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের অধীনে করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানে। বর্তমান শ্রেণীবিভাগটি সংশোধন করে একে শ্রেণী-৫’এ অন্তর্ভুক্ত করা হলে কী পরিবর্তন ঘটতে পারে, ধারাবাহিকের এই পর্বে আমরা তার ওপর আলোকপাত করব।

বর্তমানে, সংক্রামক রোগের চিকিৎসার জন্য মনোনীত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই কেবল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের আবাসিক রোগী হিসাবে ভর্তি করার অনুমোদন রয়েছে। তবে, কোভিড-১৯’কে যদি শ্রেণী-৫ হিসেবে পুনরায় শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, তবে সাধারণ হাসপাতালগুলোও তাদের গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে, করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়লে তা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে চাপ কমাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে, সংশ্লিষ্টদের মনে এমন উদ্বেগও রয়েছে যে পর্যাপ্ত সংক্রমণ-রোধী পদক্ষেপের স্বল্পতার মতো কারণে কিছু হাসপাতাল সম্ভবত কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত রোগীদের গ্রহণ করতে সক্ষম নাও হতে পারে।

এছাড়া, চিকিৎসা ব্যয় নিয়েও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে, পরীক্ষা এবং হাসপাতালে ভর্তির খরচ সহ সমস্ত ব্যয় সরকার বহন করে থাকে। তবে, পুনঃশ্রেণীবিন্যাসের পরে, লোকজন চিকিৎসা ব্যয়ের একটি অংশ নিজেরা দিতে বাধ্য থাকবে কারণ তাদের জনস্বাস্থ্য বীমা আর এই খরচ বহন করবে না। এরফলে, কেউ কেউ চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার বিষয়টি স্থগিত রাখতে পারেন, যা রোগ নির্ণয়কে বিলম্বিত করতে পারে।

উপরন্তু, জনগণের কর্মকাণ্ডের ওপর আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না। সরকারের সেক্ষেত্রে যা করার থাকবে, তা হচ্ছে, সংক্রমিত হলে যেন দায়িত্বশীলভাবে আচরণ করেন, লোকজনের কাছে সেই অনুরোধ জানানো।

জাপান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী বোর্ডের সদস্য কামাইয়াচি সাতোশির ভাষ্যানুযায়ী, সংক্রমণের সম্ভাবনা অনিশ্চিত রয়ে যাওয়াকালীন সরকারি ব্যয়ের তীব্র হ্রাসের পরিকল্পনার বিরোধীতা করেন তিনি। তিনি বলেন, শ্রেণী-৫’এ অন্তর্ভুক্তকরণের পরিবর্তে, পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি নতুন পদক্ষেপ প্রণয়নে কাজ করাটা আরও বাঞ্ছনীয় হবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৯: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (২) পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে এখন কেন ভাবনাচিন্তা?

উত্তর-৫১৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের অধীনে করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জাপানে। সামাজিক বিধিনিষেধের কড়াকড়ি এবং চিকিৎসা খরচের চাপ সহ কী কী পরিবর্তন এর ফলে হতে পারে? চলতি ধারাবাহিকে আমরা এর উত্তর জানার চেষ্টা করছি।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাপান সরকার নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে এবং কোভিড -১৯’কে “ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারি’র (নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা পুনরায় দেখা দেওয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা”) শ্রেণীভুক্ত করে। সংক্রামক রোগ আইনের অধীনে এই শ্রেণীটিকে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি এবং অন্যান্য খুঁটিনাটি দিক বিচার করে মোটামুটি ক্যাটিগরি দুইয়ের সমপর্যায়ের বলে গণ্য করা হয়। তবে ক্যাটিগরি দুইয়ের অন্তর্গত সংক্রামক রোগ থেকে যে দিকটি আলাদা, তা হলো কোভিড-১৯’এর ক্ষেত্রে লোকজনকে বাড়ি থেকে না বেরোনোর আহ্বান জানানো বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার মতো সংক্রমণ-রোধী কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি সরকারকে দেওয়া হয়েছে।

এরপর আমরা দেখেছি জাপানে এবছর গোড়ার দিকে সংক্রমণের ষষ্ঠ ও সপ্তম তরঙ্গে প্রধানত যে উপধরনটির প্রকোপ ঘটেছিল, সেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে রোগীর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার কম। তাছাড়া জাপানে ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্যবস্তু করে বানানো নতুন টিকা দেওয়া শুরু হয়ে যায় লোকজনকে। এর ফলে সরকারের পক্ষে পরীক্ষায় পজিটিভ নির্ণয় হওয়া রোগীর বিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ কমিয়ে আনা, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত খবর প্রদান ব্যবস্থার সরলীকরণ এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার পথ প্রশস্ত হয়।

২রা ডিসেম্বর জাপানের সংসদে সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত আইনের আরেকটি সংশোধনী পাশ হয়েছে। সংশোধনীর এক অতিরিক্ত ধারায় সরকারকে এই আইনের অধীনে কোভিড-১৯’এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে আহ্বান জানানো হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে তারা কোভিডের শ্রেণীবিন্যাস পর্যালোচনার জন্য আলোচনা করবে। মন্ত্রণালয় এই বলে আভাস দেয় যে তারা কোভিড’কে ক্যাটিগরি পাঁচ, অর্থাৎ মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার সমপর্যায়ের শ্রেণীতে নামিয়ে আনার কথা বিবেচনা করছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৮: সংক্রামক রোগ আইনের আওতায় কোভিড-১৯ এর পুন:শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে বিতর্ক (১) শ্রেণীবিভাগ বিষয়ে

উত্তর-৫১৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় করোনাভাইরাসের শ্রেণীবিন্যাস নিয়ে জাপানে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা সামাজিক নিষেধাজ্ঞা এবং চিকিৎসা ব্যয়ের বোঝা সহ কী ধরনের পরিবর্তন হতে পারে তার ওপর আলোকপাত করব।
রোগের সংক্রমণের মাত্রা এবং রোগী গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার কতটা ঝুঁকি সেই রোগ সৃষ্টি করতে পারে তার ওপর নির্ভর করে সংক্রামক রোগকে জাপানের আইন অনুযায়ী এক থেকে পাঁচটি বিভাগে শ্রেনীবদ্ধ করা হয়।

কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে আইনে তা নির্ধারণ করা আছে।
প্রথম বিভাগের মধ্যে প্লেগ বা ইবোলার মতো জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ এমন এবং তার সাথে অত্যন্ত বিপজ্জনক রোগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

দ্বিতীয় বিভাগে রয়েছে যক্ষা এবং সার্স বা গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রীয় রোগলক্ষণসমষ্টির মতো রোগ যেগুলো অত্যন্ত সংক্রামক এবং গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকির মধ্যে মানুষকে ফেলে। বর্তমানে কোভিড-১৯কে দ্বিতীয় বিভাগের সমতুল্য বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

এই বিভাগের রোগে লোকজন সংক্রমিত হলে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের মোট সংখ্যক রোগীর সংখ্যা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। স্থানীয় সরকার লোকজনকে তাদের কাজ সীমিত রাখার বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিতে পারে। সরকারি তহবিল থেকে তাদের চিকিৎসা ব্যয় পুরোপুরি পরিশোধ করা হয়।

পঞ্চম বিভাগের আওতায় মৌসুমি ফ্লু এবং সিফিলিসের মতো রোগ অন্তর্ভুক্ত আছে। স্থানীয় সরকার সংক্রমিত লোকজনকে তাদের কাজ সীমিত করা বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার উপদেশ দিতে পারে না। এক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যয়ের এক অংশ রোগীকে পরিশোধ করতে হয়। সাধারণ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এই বিভাগের রোগে আক্রান্ত লোকজনকে ভর্তি করতে পারে। রোগে আক্রান্তের মোট সংখ্যা সব প্রতিষ্ঠানের জানানোর দরকার নেই। কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে কিনা তা রোগের ওপর নির্ভরশীল।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৭: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (৭) নতুন জরুরি অনুমোদন ব্যবস্থার প্রয়োগ

উত্তর-৫১৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯’এর নতুন খাওয়ার ওষুধ যোকোভা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। সর্বশেষ এই পর্বে আমরা নতুন অনুমোদন ব্যবস্থার ওপর নজর দেবো।

জাপানে নতুন কোনো ওষুধ কিংবা টিকার অনুমোদন হচ্ছে সময় সাপেক্ষ এক প্রক্রিয়া, পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য যেখানে সাধারণত এক বছর সময়ের দরকার হয়। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে দীর্ঘ এই সময় হচ্ছে জাপানে টিকার অনুমোদন লাভ বিদেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়ার প্রধান কারণ।

পরিস্থিতির উন্নতি করে নিতে জাপান সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার মতো জরুরি পরিস্থিতি দেখা দেয়া এবং চিকিৎসার জন্য বিকল্প কোন টিকা না থাকার শর্তের আওতায় প্রয়োগ করার জন্য নতুন একটি জরুরি অনুমোদন ব্যবস্থা ২০২২ সালের মে মাসে প্রবর্তন করে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে যোকোভার প্রয়োগ নতুন এই ব্যবস্থার আওতায় যাচাই করে দেখা দরকার। বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল নতুন খাওয়ার ওষুধ পর্যালোচনা করে দেখেছে। তবে এর ফলপ্রসূতা নিয়ে সতর্ক আলোচনা চালানো দরকার উল্লেখ করে অনুমোদন দেয়া হবে কিনা সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বিশেষজ্ঞরা দুইবার ব্যর্থ হন। সবশেষে নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফার আলোচনায় তারা ওষুধটি অনুমোদন করেন।

ওষুধের অনুমোদন ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকা টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওনো শুনসুকে বলেছেন, নতুন জরুরি অনুমোদন ব্যবস্থার অধীনে ফলপ্রসূতা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে কতটা তথ্য প্রদান করা দরকার, বিশেষজ্ঞরা ও কর্তৃপক্ষ সমূহ তা নিয়ে সম্মত হতে পারে নি।

তিনি অনুভব করেছেন বিতর্ক দৃশ্যত ছিল বিভ্রান্তিকর এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত মনে হয় ছিল রক্ষণশীল ও বিস্তারিত বিষয়াবলীতে আটকে থাকা। পর্যালোচনা প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত আগের ব্যবস্থার আওতায় অনুসরণ করা প্রক্রিয়ার প্রায় কাছাকাছি হয়ে উঠায় “অনুমোদন কিভাবে তরান্বিত করা যায়” এবং “ওষুধ কিংবা চিকিৎসার ফলপ্রসূতা ও নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করে নেয়া যায়” – এই দুই লক্ষ্যের মধ্যে ভারসাম্য গড়ে নেয়ার প্রয়োজনীয়্তার ওপর তিনি জোর দিয়েছেন।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৬: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (৬) কোভিড-১৯’এর চিকিৎসার বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

উত্তর-৫১৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯’এর নতুন একটি মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ যোকোভা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। এবারের পর্বে, যোকোভার অনুমোদন থেকে আমরা কী প্রত্যাশা করতে পারি সে সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ মতামতের কথা আমরা আপনাদের জানাব।

আইচি চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং কোভিড-১৯’এর চিকিৎসা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মোরিশিমা ৎসুনেও বলছেন, “যেহেতু এটা অনুমান করা কঠিন যে একজন সংক্রমিত ব্যক্তি কেবল মৃদু উপসর্গ সৃষ্টি করবে না মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়বে, তাই মারাত্মক উপসর্গ সৃষ্টির স্বল্প ঝুঁকি থাকা রোগীকে চিকিৎসার জন্য দিতে পারা যায় এমন ওষুধের জন্য প্রথম সারির স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন”।

যোকোভার ফলপ্রসূতা নিয়ে তিনি বলেন, “ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে যে, যোকোভা একদিনের মধ্যে কফ বা জ্বরের মতো উপসর্গগুলোকে বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দরকারি সময়টাকে কমিয়ে দিতে পারে। এটি হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোধী ওষুধের মতো একই পর্যায়ের কার্যকর এবং মনে করা হচ্ছে এটা যথেষ্ট। যেহেতু যোকোভা শরীরের মধ্যকার ভাইরাসের পরিমাণকে কমাতে পারে, তাই এটা আশা করা যায় যে এটি মারাত্মক উপসর্গগুলো দেখা দেয়াকে রোধ করবে। মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকি থাকা অনেক লোক যেখানে থাকেন সেই নার্সিং হোম বা হাসপাতালে ব্যবহৃত যোকোভা উপসর্গগুলোর অবনতি রোধে, সংক্রমণের বিস্তার হ্রাসে এবং বিভিন্ন স্থাপনার কার্যক্রমজনিত ব্যর্থতা রোধে অবদান রাখতে সাহায্য করবে”।

উদ্ধার পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “বলা হচ্ছে যে উপসর্গ দেখা দেয়ার ৩ দিনের মধ্যে ওষুধ খাওয়া হলে, যোকোভা হবে সবচেয়ে ফলপ্রসূ। দ্রুত রোগ সনাক্তকরণে সক্ষম হওয়ার জন্য একটি কাঠামো গঠন এবং যাদের দরকার তাদের হাতে দ্রুত ওষুধ পৌঁছে দেয়ার জন্য জাতীয় এবং পৌর সরকারগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অপ্রত্যাশিত মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বা চিকিৎসা করতে না পারার মতো নতুন ধরনের ভাইরাস দেখা দেয় কিনা তা দেখার জন্য এই ওষুধের ব্যবহার বিস্তৃত হওয়ার পরেও পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখাটাও প্রয়োজনীয়।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৫: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (৫) অনুমোদনের পরে পদক্ষেপে পরিবর্তন?

উত্তর-৫১৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯’এর নতুন একটি মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ যোকোভা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে।
এটি জাপানি কোনো ওষুধ কোম্পানির উদ্ভাবিত প্রথম মুখে সেবনের ওষুধ। যোকোভার এমন একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এটিকে অন্যান্য ওষুধ থেকে আলাদা করে। আর তা হচ্ছে, এটি গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকা মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীরাও সেবন করতে পারেন। কীভাবে এই ওষুধের অনুমোদন ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের নেয়া পদক্ষেপগুলোকে পরিবর্তন করতে পারে, তার ওপর এবারে আমরা আলোচনা করব।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করার পর প্রায় তিন বছর পার হয়েছে। মহামারির একেবারে শুরুর দিনগুলো থেকেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকা এবং ওষুধ দুটি প্রধান স্তম্ভ হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

অনেক লোকই টিকা নিয়েছেন, তবে এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে ভাইরাসটিকে গুরুতর উপসর্গ সৃষ্টি করতে না দেয়া। অন্যদিকে, যে ওষুধগুলো সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে, সেগুলো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া লোকজনের সংখ্যা কমাতে পারে।

আমাদের এখনও করোনাভাইরাসকে সাথে নিয়েই বসবাস করতে হবে বিধায় সহজে ব্যবহার করতে পারা যায় বলে বলা হয়ে থাকা মুখে সেবনযোগ্য ওষুধের প্রাপ্যতা অপরিহার্য।

তবে, এমনকি টিকা এবং অপেক্ষাকৃত সহজে ব্যবহারযোগ্য ওষুধ উভয়ই আমাদের নাগালের মধ্যে থাকলেও, তার মানে এই নয় যে আক্রান্ত হলে কারো দেহে গুরুতর উপসর্গ দেখা দিবে না। তাই, প্রয়োজন মনে হলে আমাদেরকে মাস্ক পরিধানের পাশাপাশি ভিড় এবং আবদ্ধ স্থান এড়িয়ে চলার মতো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া, তারা টিকা নেয়ার গুরুত্বের ওপরও জোর দিচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৪: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (৪) কবে থেকে লভ্য হবে যোকোভা?

উত্তর-৫১৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯’এর নতুন একটি খাওয়ার ওষুধের জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। যোকোভা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয় ২২শে নভেম্বর। এবারে আমরা চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে এই ওষুধ বিতরণের সময়সূচি সম্পর্কে জানবো।

যোকোভা উন্নয়নকারী জাপানি ওষুধ প্রস্তুতকারক শিওনোগি’র সাথে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ১০ লক্ষ রোগীর চিকিৎসা করার মতো পর্যাপ্ত ওষুধ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। মূলত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ডিসেম্বর মাসের গোড়ার দিকে এই ওষুধের ব্যাপক বিতরণ আরম্ভের কথা ভাবলেও, দিনটি এগিয়ে এনে ২৮শে নভেম্বরই তা শুরু করে।

তবে অন্তঃস্বত্ত্বা নারী বা যে নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে থাকতে পারেন, তাদের এই ওষুধ দেওয়া যাবে না। কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ওষুধ সেবনকারী রোগীরাও কোভিড-১৯’এর এই বড়ি সেবনের অনুমতি নাও পেতে পারেন। যেহেতু বাধানিষেধ আছে তাই মন্ত্রণালয় নিরাপত্তার খাতিরে প্রথম সপ্তাহ দুয়েক এই ওষুধের বিতরণ কেবলমাত্র সেইসব চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ওষুধের দোকানের মধ্যে সীমিত রাখে যারা মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক ফাইজারের তৈরি করা কোভিড-১৯’এর খাওয়ার ওষুধ প্যাক্সলোভিডের প্রেসক্রিপশন করেছে রোগীদের জন্য। এই ওষুধ এবং যোকোভা একই ভাবে কাজ করে।

মন্ত্রণালয় জানায়, এই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে যোকোভা সরবরাহের ওপর নির্দিষ্ট কোনো শর্ত আরোপিত থাকবে না। মন্ত্রণালয় একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলবে যার অধীনে জেলা সরকারের চিহ্ণিত চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ওষুধের দোকান থেকে রোগীরা এই ওষুধ পাবেন। মন্ত্রণালয় জানায়, চিহ্নিত চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ওষুধের দোকানের তালিকা স্থানীয় সরকার ও অন্যান্যদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১৩: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (৩) ওষুধটি কিভাবে কাজ করে?

উত্তর-৫১৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯এর নতুন একটি খাওয়ার ওষুধ যোকোভা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। যোকোভা কিভাবে কাজ করে এবারে আমরা তার ওপর আলোকপাত করবো।

রোগী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তার কোষের ভিতর প্রবেশের মাধ্যমে ভাইরাসটি বেড়ে ওঠে এবং তার আরএনএ জিনোমের প্রতিলিপি তৈরি করে। নতুন এই খাওয়ার ওষুধ যোকোভা ভাইরাসের প্রতিলিপি করার জন্য অপরিহার্য এক এনজাইম বা উৎসেচকের ব্যবহার বন্ধ করার মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া আটকে রাখে।

মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার উদ্ভাবন করা খাওয়ার ওষুধ প্যাক্সলোভিডের মতো একই ভাবে এই প্রক্রিয়া কাজ করে। মানবদেহে চালানো পরীক্ষায় অংশ নেয়া লোকজনকে দিনে একবার করে পাঁচ দিন ধরে এই ওষুধ দেয়া হয়েছিল। চতুর্থ দিনে ভাইরাসের পরিমাণ প্রাথমিক সংখ্যার ত্রিশ ভাগের এক ভাগে নেমে আসে এবং গুরুতর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখতে পাওয়া যায়নি।

ভাইরাসের অন্যান্য উপধরনের সাথে সুপ্ত হয়ে থাকা ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরনের জন্য যোকোভা খুবই কার্যকর বলে দেখা গেছে।

এদিকে, প্রাণীদের মধ্যে চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে যে যোকোভা ভ্রূণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যার ফলে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং যাদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তারা এই ওষুধ গ্রহণ করতে পারবে না। অন্যান্য ওষুধের সাথে এটি নিলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে দীর্ঘস্থায়ী রোগ যাদের আছে তাদের ক্ষেত্রেও এই ওষুধ নেয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আহ্বান জানাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১২: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (২) ওষুধের ফলপ্রসূতা

উত্তর-৫১২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯এর নতুন একটি খাওয়ার ওষুধ যোকোভা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। এটা উল্লেখযোগ্য যে এই ওষুধ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি যাদের কম, সেরকম হালকা উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের জন্যেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা হচ্ছে জাপানের একটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি প্রথম খাওয়ার ওষুধ। কোভিড-১৯এর সাথে সম্পর্কিত উপসর্গের চিকিৎসায় যোকোভা কতটা কার্যকর তার ওপর এবারে আমরা আলোকপাত করবো।

ওষুধ কোম্পানি শিওনোগি সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে ঘোষণা করেছে যে ক্লিনিকাল পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে যোকোভার ফলপ্রসূতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোম্পানি বলছে রোগীর জ্বর হওয়ার অভিজ্ঞতার মতো উপসর্গের সময় সংক্ষিপ্ত করে দিয়ে কোভিড-সম্পর্কিত উপসর্গের উপশম করে নিতে ওষুধটি কার্যকর।

এ বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত কোম্পানি জাপান ও অন্য দুটি দেশে ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালায়। মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি যাদের কম এবং টিকা যারা নিয়েছেন - তারা সহ হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ দেখা দেয়া ১২ বছর থেকে শুরু করে ৬০এর ঘরে বয়সের ১৮২১ জন পরীক্ষায় জড়িত ছিলেন।

রোগীর একটি দল কাশি, গলা ব্যাথা, সর্দি ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, জ্বর ও জ্বর অনুভব করা – ওমিক্রন ধরনের এরকম পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের সব কয়টি দেখা দেয়ার তিন দিনের মধ্যে যোকোভা সেবন করতে শুরু করলে সাত দিনের দিকে এসব উপসর্গের সবগুলোই দূর হয়ে যায়; যার অর্থ হচ্ছে রোগীর উপসর্গে ভুগতে থাকার সময় ২৪ ঘণ্টা হ্রাস পায়।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১১: যোকোভার ফলপ্রসূতা ও বৈশিষ্ট্য (১) যোকোভা কী?

উত্তর-৫১১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯’এর নতুন একটি খাওয়ার ওষুধ যোকোভা ব্যবহারের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। এই ধারাবাহিকে, আমরা যোকোভা’র বৈশিষ্ট্য এবং ফলপ্রসূতার ওপর আলোকপাত করবো।

যোকোভা হচ্ছে কোভিড-১৯’এর একটি খাওয়ার ওষুধ যেটি উদ্ভাবন করেছে জাপানি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি শিওনোগি। এটি মৃদু উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। আগের কোভিড-১৯’এর ওষুধগুলো ছিল সেইসব রোগীদের জন্য যারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন, কিন্তু যোকোভা এমনকি সামান্য ঝুঁকিতে থাকা রোগীরাও ব্যবহার করতে পারবেন।

জাপান এখন পর্যন্ত খাওয়ার বড়ি এবং শিরার মধ্যে প্রবেশ করানো ওষুধ’সহ কোভিড-১৯’এর ৯টি ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রা পর্যন্ত উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যায়, তবে ডায়াবেটিস, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ এবং অতিশয় স্থূলতার মতো মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহার সীমিত ছিল। মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার কম ঝুঁকিতে থাকা লোকজনের ওপর কোন ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালানো হয়নি এবং তাছাড়া ওষুধের সরবরাহও সীমিত।

যোকোভা হয়তো ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, অনেকটা মৌসুমী জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত তামিফ্লু’র মতো। এই ওষুধটি মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়ার তেমন একটা ঝুঁকিতে না থাকা লোকজন’সহ ১২ বা তদুর্ধ্ব বয়সীদের চিকিৎসায়ও ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল যোকোভা’র ব্যবহারের অনুমোদন নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে দিয়েছে। প্যানেলটি মূল্যায়ন করেছে যে, ওষুধটি ফলপ্রসূ বলে অনুমান করা হচ্ছে, কেননা ক্লিনিকাল উপাত্ত থেকে দেখা যে, এই পিল জ্বর এবং অন্যান্য করোনাভাইরাসের উপসর্গের ক্ষেত্রে কার্যকর। যোকোভা হচ্ছে জাপানে অনুমোদিত অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত প্রথম কোভিড-১৯’এর ওষুধ। আশা করা হচ্ছে যে, যোকোভা’র অনুমোদন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোভিডের চিকিৎসায় ওষুধের একটি স্থিতিশীল সরবরাহের প্রসারে নেতৃত্ব দেবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫১০: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (৭) সংক্রমণের বিস্তার রোধ করা

উত্তর-৫১০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা ইদানিং আবারও বেড়ে চলেছে। জাপানে কি তাহলে ইতোমধ্যেই অষ্টম তরঙ্গ শুরু হয়ে গেছে? চলতি ধারাবাহিকে, সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতির পাশাপাশি সংক্রমণ প্রতিরোধে যে উপায়গুলো আমরা গ্রহণ করতে পারি, তার ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল, করোনাভাইরাস টিকার প্রথম দুটি ডোজ গ্রহণ করা ১২ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর চাপে পড়া এড়াতে বছরের শেষ নাগাদ ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে টিকা গ্রহণ করেন।

প্যানেলটি ছোট শিশুদের পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া শিশুদেরও টিকা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে৷

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও’র ভাষ্যানুযায়ী, কিছু লোক এটি ভাবতে পারেন যে টিকাদানের কোনো কার্যকারিতা নেই কারণ ভাইরাসের নতুন ধরনগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়িয়ে যেতে পারে বলে বলা হয়ে থাকে। তবে, বিষয়টি সত্যি নয়।

হামাদার ভাষ্যমতে, ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে তৈরি টিকাগুলো বিকিউ.১ এবং এক্সবিবি উপধরনের বিরুদ্ধেও কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আসন্ন মাসগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। শীতকালে অষ্টম তরঙ্গের জন্য প্রস্তুত হতে, তিনি বছরের শেষ নাগাদ লোকজনকে টিকা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।

হামাদা এই পরামর্শও দিচ্ছেন যে মুখের মাস্ক পরিধান, হাত ধোয়া এবং ভিড়ের জায়গা এড়িয়ে যাওয়ার মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কাজটি লোকজনের চালিয়ে যাওয়া উচিত।

অধ্যাপক হামাদা এটিও বলছেন যে বছরের সমাপ্তি এবং নববর্ষ উদযাপনের জন্য অনেক লোক বিভিন্ন পার্টিতে অংশগ্রহণ করেন বা তাদের নিজ শহরে যান। তবে, সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাদের এসব পরিকল্পনা বাতিল করতে হতে পারে। তিনি বলেন, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৯: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (৬) ইনফ্লুয়েঞ্জা ও করোনা সংক্রমণের যুগপৎ প্রাদুর্ভাব

উত্তর-৫০৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা ইদানিং বাড়ছে আবার। জাপান কি তাহলে অষ্টম তরঙ্গের মধ্যে দিয়ে চলছে? সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে চলতি ধারাবাহিকে।

বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করছেন শীতকাল এগিয়ে আসার এই সময়ে করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা, এ দুয়ের যুগপৎ প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে এবং এর জন্যে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত।

বর্তমানে জাপানে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীর সংখ্যা প্রাক্‌-মহামারি মাত্রার তুলনায় কম। দেশজুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে --- একথা তখনই বলা হয় যখন চিহ্নিত চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো তাদের কাছে সপ্তাহে গড়ে একাধিক রোগীর আগমনের সংবাদ দেয়। ২০শে নভেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহে এই সংখ্যাটি ছিল ০ দশমিক ১১।

দক্ষিণ গোলার্ধের দেশ অস্ট্রেলিয়াতে এবছর শীতের মাস মে এবং জুনে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, বিগত কয়েক সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থাটি এও জানায় যে, ইউরোপে এই সংখ্যা এখনও কম, তবে সেখানেও ঊর্ধমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি বলেন, এখন জাপানে ইনফ্লুয়েঞ্জা বিস্তার লাভ করছে খুব মন্থর গতিতে এবং দেখেশুনে মনে হচ্ছে শীতের ছুটির পরে যখন স্কুল খুলবে, খুব তাড়াতাড়ি হলেও সেই সময় নাগাদ হয়তো ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীর সংখ্যা শিখরে পৌঁছাবে। অধ্যাপক নিশিউরা বলেন, তাই করোনাভাইরাসের অষ্টম তরঙ্গে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একসাথে একই সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে তিনি মনে করেন না।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৮: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (৫) বর্ষশেষ এবং নববর্ষের ছুটির সময় সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব

উত্তর-৫০৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঘটনা সম্প্রতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাপানে ইতোমধ্যে সংক্রমণের অষ্টম তরঙ্গ চলছে কি? এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি এবং কোন্‌ ধরনের প্রতিরোধ পদক্ষেপ আমাদের পক্ষে নেয়া সম্ভব তার ওপর আমরা আলোকপাত করবো।

বর্ষশেষ এবং নববর্ষের ছুটি এগিয়ে আসায় ধারণা করা হচ্ছে যে লোকজনের জন্য তা একে অন্যের সাথে মেশার অনেক বেশি সুযোগ করে দেবে।
জাপান বর্তমানে তার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ শিথিল করে দেয়ায় টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বিদেশে সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে শুধুমাত্র জাপানেই নয় বরং দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া সহ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে কাতারে চলতে থাকা বিশ্বকাপের প্রভাব পড়ার পাশাপাশি নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ থ্যাংকসগিভিং উদ্‌যাপন করা যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে হামাদা সতর্ক করে দেন।

হামাদা বলেন অতীতে থ্যাংকসগিভিং ডে, যখন অনেকগুলো পরিবার সমবেত হয়ে একসাথে পানাহার করে, তার আশেপাশে যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের নতুন ঘটনা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। বিশ্বকাপ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষকে কাতারের দিকে আকৃষ্ট করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। টোকিও বা বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসের তুলনায় বিধিনিষেধ অনেক বেশি শিথিল করে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন বিশ্বকাপ চলাকালে সংক্রমণ বিস্তার লাভ করতে পারে। হামাদা আরও বলেন ফুটবলের ভক্তরা সেখানে সংক্রমিত হয়ে তাদের নিজেদের দেশে ফিরে গিয়ে সেখানকার লোকজনের মধ্যেও রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার সম্ভাবনাকে তিনি উড়িয়ে দিতে পারেন না।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৭: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (৪) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দেয়া পূর্বাভাস

উত্তর-৫০৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের নতুন ঘটনা সম্প্রতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাপানে ইতোমধ্যে সংক্রমণের অষ্টম তরঙ্গ চলছে কি? এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি এবং কোন্‌ ধরনের প্রতিরোধ পদক্ষেপ আমাদের পক্ষে নেয়া সম্ভব তার ওপর আমরা আলোকপাত করবো।

নাগোইয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির অধ্যাপক হিরাতা আকিমাসা এবং তার দল ভাইরাসের বিকিউ.১ ও অন্যান্য নতুন কয়েকটি ধরন বিস্তৃত হবে ধরে নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংক্রমণের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। টিকার কার্যকারিতা এবং মানুষের চলাচলের উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পূর্বাভাস প্রদান করা হয়।

এরকম যখন ধরে নেয়া হয় যে বিকিউ.১ ও নতুন অন্যান্য কয়েকটি ধরন সংক্রমণ ক্ষমতার দিক থেকে বিএ.৫ ধরনের চাইতে ২০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী এবং অতীতের সংক্রমণ থেকে লাভ করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নতুন ধরনের বিরুদ্ধে কাজ করে না, সেরকম অবস্থায় টোকিওতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সাপ্তাহিক গড় হিসাব করা হয়েছে ৩০ হাজারের কাছাকাছি এবং মধ্য জানুয়ারিতে সেটা প্রায় ৩৬ হাজারে উন্নীত হয়ে সপ্তম তরঙ্গের শীর্ষ অবস্থানকে ছাড়িয়ে যাবে। সেরকম এক পরিস্থিতির আলোকে মধ্য জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিক পর্যন্ত টোকিওতে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা হবে ২০জন কিংবা বেশি।

বিকিউ.১ ও অন্য কয়েকটি নতুন ধরন আগের স্ট্রেইনগুলোর মতো একই রকম সংক্রামক হলে এবং অতীতের সংক্রমণ থেকে লাভ করা রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা এদের বিরুদ্ধে কোন এক মাত্রা পর্যন্ত কার্যকর হলে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে টোকিওতে নতুন সংক্রমণ ২৫ হাজারের মতো শীর্ষে উন্নীত হবে।

অধ্যাপক হিরাতা বলছেন বিকিউ.১ ও ভাইরাসের অন্য নতুন ধরনের সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনা করে দেখলে নতুন ঘটনা হয়তো অল্প সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। তিনি বলছেন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন ফিরে আসায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকায় সংক্রমণের সংখ্যা নিচের দিকে ঠেলে দিতে সাহায্য করার মতো কোন উপাদান এখন কার্যত নেই। তিনি উল্লেখ করেছেন যে নতুন ধরন উচ্চ মাত্রার সংক্রামক হলে এবং রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়া সেটা গ্রহণ করলে বছরের শেষ দিকে নতুন ঘটনার সংখ্যা যথেষ্ট দ্রুত গতিতে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে খুবই বেশি।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৬: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (৩) করোনাভাইরাসের নতুন উপধরন

উত্তর-৫০৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঘটনা আবার বেড়ে চলেছে। জাপান কি তাহলে ইতোমধ্যেই সংক্রমণের অষ্টম তরঙ্গ প্রত্যক্ষ করছে? এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি এবং সংক্রমণ রোধে ঠিক কোন্‌ কোন্‌ পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করতে পারি, সেবিষয়ে নানা তথ্য তুলে ধরা হবে।

বিকিউ.১’এর মতো ওমিক্রনের উপধরনগুলোর সম্ভাব্য বিস্তার হচ্ছে একটি প্রধান উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইসব উপধরনের পূর্ববর্তী সংক্রমণ এবং টিকা গ্রহণের মাধ্যমে পাওয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়িয়ে যাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে, এই নতুন ওমিক্রনের উপধরনগুলো বিএ.৫ উপধরনের স্থলাভিষিক্ত হতে শুরু করছে।

টোকিও মেট্রোপলিটন সরকারের নভেম্বরের ২৪ তারিখে প্রকাশ করা উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বিএ.৫ চলতি মাসে বেশি মাত্রায় সক্রিয় ছিল। মোট আক্রান্তের ৮০.১ শতাংশ ছিল বিএ.৫ উপধরন। তবে অন্যান্য উপধরনগুলো ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে – বিকিউ.১.১ বেড়ে হয়েছে ৬.২ শতাংশ, বিএন.১ হয়েছে ৪.২ শতাংশ, বিএফ.৭, বিএ.২.৭৫, বিকিউ.১ রয়েছে ২ শতাংশের পরিসরে, বিএ.২ ও এক্সবিবি’র প্রতিটি রয়েছে প্রায় ১ শতাংশ করে এবং বিকিউ.৪.৬ রয়েছে শূন্য দশমিক তিন শতাংশের পর্যায়ে।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলছেন, বর্তমানে সবার দৃষ্টি রয়েছে ওমিক্রনের এক্সবিবি এবং বিকিউ.১ উপধরনের দিকে, তবে এক্সবিবি সারা বিশ্বে খুব বেশি ছড়িয়ে পড়েনি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে বিএ.৫’এর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে বিকিউ.১।

হামাদা আরও বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলোতে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা হঠাৎ করে বেড়ে যায়নি। তবে তিনি বলছেন, যদি নতুন উপধরনগুলোর অনেকগুলোই দেশে প্রবেশ করে তাহলে জাপানের অষ্টম তরঙ্গের শীর্ষ অনেক বেশি উঁচু হতে পারে। তিনি সতর্ক করে দেন যে সংক্রমণের বিষয়টি জাপানের পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন রয়েছে, কেননা দেশটি ডিসেম্বর মাসে এ ধরনের একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৫: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (২) সংক্রমণের আরেকটি বিস্তারের লক্ষণ

উত্তর-৫০৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঘটনা আবার বেড়ে চলেছে। জাপান কি তাহলে ইতোমধ্যেই সংক্রমণের অষ্টম তরঙ্গ প্রত্যক্ষ করছে? এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে ঠিক কোন্‌ পদক্ষেপগুলো আমরা নিতে পারি, সেবিষয়ে নানা তথ্য তুলে ধরা হবে।

প্রথম পর্বে, আমরা জাপানে ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরনের দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের সর্বশেষ বিস্তারের ওপর আলোকপাত করেছি। অক্টোবরে ইউরোপ বিএ.৫ সংক্রমণের আরও একটি বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে।

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক একটি গবেষণা দল দ্বারা পরিচালিত একটি বৈজ্ঞানিক অনলাইন প্রকাশনা ‘আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা’য় প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে জার্মানিতে প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যার ক্ষেত্রে দৈনিক সংক্রমণের সাত দিনের গড় প্রায় ১ হাজার ৩শ জনে পৌঁছেছে। এই সংখ্যাটি জুলাই মাসে হওয়া সংক্রমণের পূর্ববর্তী সর্বোচ্চ চূড়াকে ছাড়িয়ে গেছে। অনেকটা একই সময়ে ফ্রান্সে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৮৪০, যা জুলাই মাস থেকে সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান, অধ্যাপক ওয়াকিতা তাকাজি গত ১৭ই নভেম্বর বলেন যে বিএ.৫ উপধরন দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণের চলমান বিস্তার বছর শেষ হওয়ার আগেই চূড়ায় পৌঁছাতে পারে।

কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্যানেলের একজন সদস্য এবং গাণিতিক মহামারিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ। তার ভাষ্যানুযায়ী, সংক্রমণ চুড়ায় পৌঁছানোর পরে, এর হ্রাস সম্ভবত শ্লথগতিতে এবং ধাপে ধাপে হবে, কারণ হোক্কাইদোর মতোই সংক্রমণ এখন প্রতিটি অঞ্চল জুড়েই ছড়িয়ে পড়ছে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৪: অষ্টম তরঙ্গের চূড়ান্ত পর্যায় (১) জাপানে এখন কেন সংক্রমণ বাড়ছে?

উত্তর-৫০৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের ঘটনা ইদানিং আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৫ই নভেম্বর দেশব্যাপী এই সংখ্যা প্রায় দু-মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। তাহলে কি জাপানে সংক্রমণের অষ্টম তরঙ্গ এসে গেল ইতোমধ্যে? আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

জাপানে এখন সংক্রমণের নতুন ঘটনা বাড়ছে কেন? বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই প্রশ্নের সমাধান সূত্র যে ব্যাপারটার মধ্যে নিহিত, তা হলো, বড় শহর নয়, এমন সব এলাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে আরম্ভ করেছে। এর আগে এমন কি সাম্প্রতিক কালেও সংক্রমণ বিষ্ফোরণ প্রায়ই শুরু হতে দেখা গেছে জনবহুল টোকিও মহানগর এলাকায়। সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতকারী লোকজনের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। তবে এবার সংক্রমণের ঘটনা বাড়তে আরম্ভ করে টোকিও থেকে বহু দূরে হোক্কাইদো এবং তোহোকু অঞ্চলে।

১৭ই নভেম্বর এক বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল সংক্রমণ বিস্তারের চলতি প্রবণতা নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সপ্তম তরঙ্গের সময় যেসব এলাকাতে বহু লোক বিএ.৫ স্ট্রেইনে সংক্রমিত হয়েছিলেন, সেখানে লোকজনের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠার অনুপাত বেশি। তারা বলেন, বর্তমানে সংক্রমণ এমন এলাকাতেই ছড়াচ্ছে যেখানে কম সংখ্যক লোক বিএ.৫ স্ট্রেইনে সংক্রমিত হয়েছিলেন, এবং এর ফলে ভাইরাসটিকে রুখে দেওয়ার ক্ষমতা গড়ে ওঠা লোকের অনুপাত সেখানে কমই রয়ে গেছে।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলেন, করোনা সংক্রমণের বর্তমান ঊর্ধ্বগতিকে, সংক্রমণের সপ্তম তরঙ্গের দীর্ঘায়িত ফল হিসেবে দেখা যেতে পারে। তিনি বলেন, বড় বড় শহরেও সংখ্যাটা বাড়ছে, তবে আঞ্চলিক শহরগুলোতে যে হারে বাড়ছে, সেই হারে বড় শহরে বাড়ছে না। হামাদা বলেন, সপ্তম তরঙ্গের “অবশিষ্ট শিখা” আবার লেলিহান আকার ধারন করতে আরম্ভ করেছে এমন সব জায়গায় যেখানে এর আগে এই তরঙ্গ অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক লোককে সংক্রমিত করেছিল এবং বহু বাসিন্দারই দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকার ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০৩: নতুন ওমিক্রন উপধরন (৫) চলমান সংক্রমণ বিস্তারে এগুলো কিভাবে প্রভাব ফেলে?

উত্তর-৫০৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বিকিউ.১.১ এবং এক্সবিবি’এর মতো ওমিক্রন স্ট্রেইনের নতুন উপধরন সম্পর্কে খবর পাওয়া গেছে। এই ধারাবাহিকের শেষ পর্বে এবারে আমরা সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞদের মতামত উপস্থাপনের মাধ্যমে জাপানে প্রত্যাশিত পরবর্তী সংক্রমণ বৃদ্ধিতে নতুন ধরনগুলোর প্রভাব ফেলার সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করব।

সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাপানের জাতীয় ইনস্টিটিউটের গবেষকরা বলেছেন এক্সবিবি বা বিকিউ.১.১’এর কারণে যে মারাত্মক রকমের কোভিড-১৯ রোগ দেখা দেবে সে ধরনের কোন প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্য উপধরনগুলোর আছে বলে তারা জানান। এগুলোর ওপর নজর রাখা তারা অব্যাহত রাখবেন বলে আরও উল্লেখ করেন।

জাপানে অক্টোবর মাসের ১১ তারিখ নতুন সংক্রমণের সাত দিন ব্যাপী গড় ছিল প্রায় ২৬ হাজার। এরপর এই সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ প্রায় ৮৮ হাজারে গিয়ে দাঁড়ায়।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলেছেন বিএ.৫’এর তুলনায় বিকিউ.১ উপধরনটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি এড়িয়ে যেতে সক্ষম বলে বলা হয়ে থাকে। আপনি যদি ইতিমধ্যেই সংক্রামিত হয়ে থাকেন বা টিকা নিয়ে থাকেন তবুও এতে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে আপনার। একারণে এই উপধরনটি শীতে বিস্তার লাভ করলে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হামাদা বলেন ওমিক্রন ধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা এখন পাওয়া যাচ্ছে এবং তিনি চান লোকজন যেন এই টিকা নেয়। তিনি বলেন উপধরন বিএ.৫, বিকিউ.১ এবং এক্সবিবি সবকটিই ওমিক্রন ধরনের অন্তর্গত হওয়ায় ওমিক্রনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা নিলে আশা করা যেতে পারে যে আপনি সবকটির বিরুদ্ধেই সুরক্ষিত। এবং তা যদি হয় তবে শীতে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া কমিয়ে আনতে এটা সহায়ক হবে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০২: নতুন ওমিক্রন উপধরন (৪) রূপান্তর অব্যাহত থাকবে কি?

উত্তর-৫০২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বিকিউ.১, বিকিউ.১.১ এবং এক্সবিবি’এর মতো ওমিক্রন স্ট্রেইনের নতুন উপধরন সম্পর্কে খবর পাওয়া গেছে। একের পর এক নতুন ধরনের সংক্রমণ বিস্তৃত হওয়ার এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে কি? এবিষয়ে কিছু তথ্য এবং একজন বিশেষজ্ঞের মতামত আমরা এখানে তুলে ধরছি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অক্টোবর মাসের ২৬ তারিখে নতুন উপধরনের মধ্যে দেখা দেয়া আকর্ষণীয় একটি প্রপঞ্চের উল্লেখ করেছে, যেটা হলো: আবির্ভাবের স্থান ও সময় ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও অভিন্ন রূপান্তর এদের রয়েছে। এটাকে বলা হয় “একই বিন্দুতে এসে মিলিত হওয়া রূপান্তর”, বিচ্ছিন্ন প্রাণীসত্তা যেখানে ভিন্ন ভাবে বিকশিত হয়ে অভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে নতুন উপধরনে রূপান্তর সেই অংশগুলোতে ঘটে, মানুষের সাথে মিলিয়ে নেয়ার জন্য যেটা প্রয়োজনীয়, এবং আরও রূপান্তর ঘটতে পারে।

ভাইরাস বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফুরুসে ইয়ুকি বলছেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক এখন ওমিক্রন স্ট্রেইনে সংক্রমিত হয়েছেন বলে বলা হওয়া অবস্থায় সেরকম উপধরন সম্ভবত ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থেকে পালিয়ে যেতে সাধারণ একটি রূপান্তর ক্ষমতা অর্জন করেছে। তিনি বলছেন করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে যথেষ্ট মাত্রায় রূপান্তরিত হয়েছে এবং মানুষের মধ্যে এটা অভিযোজিত হবে নাকি রূপান্তর অব্যাহত রাখবে তা এখনও অজানা রয়ে গেছে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০১: নতুন ওমিক্রন উপধরন (৩) উপধরন এক্সবিবি

উত্তর-৫০১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের নতুন উপধরনগুলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এবারে আমরা ওমিক্রনের নতুন উপধরন এক্সবিবি’এর ওপর আলোকপাত করব, যা সিংগাপুর এবং বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ছে।

এক্সবিবি উপধরনের কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুর এবং ভারতে বেড়ে চলেছে।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, এক্সবিবি উপধরনটি অক্টোবরের ৯ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহ সেখানে আক্রান্ত রোগীর ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল যা এর আগের সপ্তাহ থেকে ২২ শতাংশ বৃদ্ধি। ফলে এক্সবিবি উপধরনটি সংক্রমণের একটা প্রধান কারণে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও জানাচ্ছে, এক্সবিবি উপধরনটি অক্টোবরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ৩৫টি দেশে সনাক্ত করা হয়েছে।
ডব্লিউএইচও’র একটি বিশেষজ্ঞ দল জানাচ্ছে, যদিও এক্সবিবি উপধরনটির একটি উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকির কথা জানা গেছে, তাহলেও এটা বলা যাচ্ছে না যে, এই উপধরনটির অন্যান্য ছড়িয়ে পড়া ওমিক্রনের উপধরনের তুলনায় রোগের তীব্রতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার অনুপাত বেশি।
দলটি এও জানাচ্ছে, প্রাক-ওমিক্রন সময়কালে প্রথমবার আক্রান্তদের মাঝে প্রাথমিকভাবে আবার আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ছিল সীমিত এবং অন্যান্য ওমিক্রন উপধরনে আবেশিত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করার কোন উপাত্ত নেই।
সিঙ্গাপুরে, এক্সবিবি উপধরনে আক্রান্তের সংখ্যা মধ্য-অক্টোবরে শীর্ষে পৌঁছানোর পর এখন কমতির দিকে।
টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলছেন, সিঙ্গাপুর থেকে এর আশপাশের দেশগুলোতে এক্সবিবি উপধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার কোন বড় ধরনের সম্প্রসারণের খবর পাওয়া যায়নি। তিনি এও বলেন, এই উপধরনটি জাপানেও সনাক্ত করা হয়েছে, তবে আক্রান্তের সংখ্যা কম, তাই আগের মতো এর বিস্তৃত হয়ে পড়া সংক্রান্ত উদ্বেগের মাত্রা তেমন বেশি না।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৫০০: নতুন ওমিক্রন উপধরন (২) ওমিক্রন উপধরন বিকিউ.১ এবং বিকিউ.১.১

উত্তর-৫০০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের নতুন উপধরনগুলো এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এবারে, আমরা ওমিক্রনের নতুন উপধরন বিকিউ.১ এবং বিকিউ.১.১’এর ওপর আলোকপাত করব, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ছে।

এই গ্রীষ্মে জাপানে মূলত বিএ.৫ উপধরন দ্বারা সৃষ্ট কোভিড সংক্রমণের একটি তরঙ্গ আঘাত হেনেছিল। বিকিউ.১ হচ্ছে স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন ঘটা বিএ.৫ এর একটি উপধরন এবং বিকিউ.১.১ হচ্ছে স্পাইক প্রোটিনে অতিরিক্ত আরেকটি পরিবর্তন ঘটা একটি উপধরন। যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৯শে অক্টোবরে শেষ হওয়া সপ্তাহে, প্রায় ১৪ শতাংশ নতুন সংক্রমণের কারণ ছিল বিকিউ.১ উপধরন। অন্যদিকে, একই সময়ে ১৩.১ শতাংশ নতুন সংক্রমণ ঘটে বিকিউ.১.১’এর কারণে৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাষ্যানুযায়ী, অক্টোবরের শুরুর দিকে ৬৫টি দেশে বিকিউ.১ এবং এর অন্যান্য উপধরনের কারণে সৃষ্ট সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

ডব্লিউএইচও’র একটি বিশেষজ্ঞ গ্রুপের ভাষ্যানুযায়ী, নতুন উপধরনের অনুপাত বাড়ছে এবং সম্ভবত তাদের অতিরিক্ত পরিবর্তনগুলো বর্তমানে ছড়াতে থাকা অন্যান্য ওমিক্রন উপধরনের তুলনায় মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা তাদের দিয়েছে। তবে গ্রুপটি এটিও বলছে যে, এই সময়ে রোগের তীব্রতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্য বৃদ্ধি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার মতো কোনো উপাত্ত হাতে নেই।

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, সাধারণভাবে, ভাইরাসের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার সুবিধা অর্জনের মানে হচ্ছে, টিকা দেওয়ার পরেও সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা বা পুনঃসংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি জারি থাকা। তবে, এবিষয়ে আরও অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে।

তারা এটিও বলছেন যে সংক্রমণের বিরুদ্ধে মূল এবং ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকাগুলোর মাধ্যমে প্রাপ্ত সুরক্ষা সম্ভবত হ্রাস পেতে পারে, তবে গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে এগুলোর প্রদান করা সুরক্ষায় বড় কোনও প্রভাব পড়ার পূর্বাভাস আপাতত নেই৷

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৯: নতুন ওমিক্রন উপধরন (১) বিস্তার লাভ করছে ওমিক্রনের নতুন উপধরনগুলো

উত্তর-৪৯৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের উপধরনগুলো ছড়িয়ে পড়ছে সারা পৃথিবীতে। নতুন এই ধারাবাহিকে আমরা ওমিক্রনের নতুন উপধরনগুলো থেকে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি এবং বর্তমান টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।

এ বছর গ্রীষ্মে জাপানে আঘাত হেনেছিল কোভিড সংক্রমণের সপ্তম ঢেউ। ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরনটি। এই উপধরনটি সারা পৃথিবীতে কিছুদিন দৌরাত্ম্য চালিয়ে আসলেও, ক্রমশ এর শক্তি কমে এসেছে। ওদিকে পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে বিকিউ.১, বিকিউ.১.১ এবং এক্সবিবি --- ওমিক্রনের এই উপধরনগুলো থেকে দেখা দেওয়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সংখ্যা।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও হলেন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের কোন উপধরনটির প্রাধান্য থাকবে তা বলা এখনও কঠিন। নতুন উপধরনগুলোর প্রত্যেকটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে চৌকস। সেইসঙ্গে মানবদেহের কোষের সাথে যুক্ত থাকার অনুরূপ ক্ষমতাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে এই উপধরনগুলোর সবক’টির মধ্যে। হামাদা বলেন, নতুন নতুন আরও উপধরনের আবির্ভাব যদি হয়ও, সেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে পারে কিনা, তা সর্তকতার সাথে নজর করা দরকার, এবং দেখা দরকার সেগুলো কতটা সংক্রামক, এবং কতটা গুরুতর উপসর্গের জন্ম দিতে পারে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৮: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (৮) বিশেষজ্ঞদের মতামত

উত্তর-৪৯৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে জাপানে ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ছোট শিশুদের টিকাদান সংক্রান্ত চলতি ধারাবাহিকের এই শেষ পর্বে, এবারে আমরা এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরব।

শিশুদের জন্য টিকাদানের বিষয়টিকে আমাদের ঠিক কীভাবে বিবেচনা করা উচিত, সেসম্পর্কে আমরা দু’জন বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চেয়েছি।

নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইতো আকিহিকো বলছেন, ছোট শিশুদের জন্য মুখে মাস্ক পরা এবং হাত ধোয়া’সহ অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়াটা কঠিন। তিনি বলেন, একারণে এই বয়সী শিশুদের জন্য টিকাদানই হলো সক্রিয়ভাবে কোভিড-১৯’এর সূত্রপাত রোধের পাশাপাশি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা এড়ানোর একমাত্র উপায়।

অন্যদিকে, কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুও বলেন, টিকাদানের নেতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
তবে, তিনি এটিও বলেন যে টিকা দেয়া না হলে, কারো কারো শরীরে এমন জটিলতাও তৈরি হতে পারে, যা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। এ সংক্রান্ত জটিলতার উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে, তীব্র এনসেফালোপ্যাথি নামক মস্তিষ্কের একটি রোগ এবং মায়োকার্ডিটিস, যা মূলত হৃৎপিণ্ডের পেশীর প্রদাহ।

টিকাদানের উপকারিতার বিপরীতে ঝুঁকিগুলো বিবেচনার পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতেই জনসাধারণকে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান নাকাইয়ামা।

এদিকে, জাপান শিশুরোগ চিকিৎসা সমিতিও ছয় মাস থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তারা বলছে, কোভিড-১৯’এর সূত্রপাত প্রতিরোধের উপকারিতা এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিকে ছাড়িয়ে যায়।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৭: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (৭) যে শিশুরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল এবং অন্যান্য টিকা নিয়েছে

উত্তর-৪৯৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে জাপানে ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এবারে আমরা জানার চেষ্টা করবো যে শিশুরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল, তাদের এই টিকা দেওয়া সম্পর্কে এবং এ অবস্থায় অন্যান্য টিকা তাদের জন্য কতটা নিরাপদ, সেকথা।

কোনো শিশু যদি আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেও, তবু তার টিকা নেওয়া উচিত বলে সুপারিশ করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইতো আকিহিকো বলেন, আগে করোনায় আক্রান্ত যদি হয়েও থাকে আর যদি উপসর্গ হাল্কা হয়, তাহলেও শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠা সম্পর্কে নিশ্চিত থাকা যায় না। তিনি এও বলেন, নতুন করোনাভাইরাসকে রুখে দেওয়ার মতো অ্যান্টিবডির পরিমাণ শরীরে কমে আসে সময়ের সাথে সাথে, সে কথা আমরা জানি। সাইতো বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পরে টিকা নেওয়া হলে, তাতে শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠার বিষয়টা নিশ্চিত হয়। কখন নেওয়া যেতে পারে, এই প্রশ্নের উত্তরে সাইতো বলেন, উপসর্গ কমে আসার পরে, শিশুদের স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা ফিরে আসলে, তখনই তাদের এই টিকা দেওয়া যেতে পারে।

শিশুদের অন্যান্য টিকার পাশাপাশি কোভিডের টিকা দেওয়া যেতে পারে। যেমন, কোভিডের টিকা আর ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা একই দিনে নেওয়া সম্ভব। তবে অন্যান্য টিকার ক্ষেত্রে, করোনাভাইরাসের টিকার সাথে নীতিগতভাবে অন্ততপক্ষে দু সপ্তাহের ব্যবধান থাকার দরকার।

শিশুদের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের প্রশ্নে নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইতো বলেন, রুটিন টিকা হিসেবে চিহ্নিত টিকা দেওয়ার দিন-তারিখ অনেক আগে থেকেই স্থির করা থাকে। শিশুদের বাবা-মায়েদের তিনি মূলত সেই সময়সূচি অনুসরণ করে, সেসব টিকার দু সপ্তাহ আগে বা পরে শিশু সন্তানকে কোভিডের টিকা দেওয়ানোর পরিকল্পনা করতে সুপারিশ করেছেন।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৬: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (৬) শিশুদের মধ্যে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা

উত্তর-৪৯৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে জাপান ছয় মাস থেকে শুরু করে চার বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের করোনাভাইরাস টিকা দিতে শুরু করেছে। এবারে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর শিশুরা গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার দিকে নজর দেব যাতে করে কমবয়সী শিশুদের টিকা দেয়ার প্রয়োজন আছে কিনা তা বিবেচনা করার সময়ে এই তথ্য কাজে আসতে পারে।

জাপান শিশুরোগ সমিতি জানায় যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে এমন ৯৫ শতাংশের বেশি শিশুদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র হালকা উপসর্গ দেখা যায়। তবে ওমিক্রন ধরনের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর অধিক সংখ্যক শিশু সংক্রমিত হওয়ায় শিশুদের মধ্যেও মৃত্যু এবং গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউট চলতি বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে ওমিক্রন ধরনের কারণে যখন বেশিরভাগ সংক্রমণ ঘটেছিল, সেই সময়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে ২০ বছরের কম বয়স এমন ৪১ জন তরুণের ওপরে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। ২৯টি মৃত্যু ঘনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করার সুযোগ পেয়েছিল ইনস্টিটিউট এবং তারা জানতে পারে এরমধ্যে চার বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী ১৪ জন শিশু মারা গেছে যাদের মধ্যে ৬ জনের শরীরে অন্য কোন ধরনের রোগ ছিল না।

ছয় মাস থেকে শুরু করে চার বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের মধ্যে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার বিষয়ে কোন উপাত্ত নেই। তবে নিবিড় পরিচর্যা ওষুধ বিষয়ক জাপানি সোসাইটি চলতি বছর মার্চ থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে সারা জাপানে শিশুদের জন্য শয্যা বরাদ্দ করা হাসপাতালগুলোতে ২০ বছরের কম বয়সী করোনাভাইরাস রোগীদের বিষয়ে বয়স এবং উপসর্গ সহ বিভিন্ন ধরনের উপাত্ত সংগ্রহ করে।

সোসাইটি বলছে মাঝারি থেকে গুরুতর উপসর্গ দেখা গেছে এরকম মোট ২২০ জন লোককে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল যার অর্থ হলো এদেরকে অক্সিজেন দিতে বা ভেন্টিলেটরের সাহায্যে রাখতে হয়েছিল। এদের মধ্যে ৫৮.৬ শতাংশ হলো ছয় বা তার চেয়ে কম বয়সী শিশু যারা স্কুলে যাওয়া শুরু করেনি। সোসাইটি বলছে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের বেশিরভাগই এনসেফালোপ্যাথি রোগে ভুগছিল, মস্তিষ্ক ফুলে গিয়ে চেতনাশক্তি দুর্বল করে তুলতে পারে যেটি। নিউমোনিয়া এবং খিঁচুনি হওয়ার ঘটনাও খুব বেশি।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৫: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (৫) প্রজনন সামর্থ্যের ওপর কোনোরকম প্রভাব পড়ে কি?

উত্তর-৪৯৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে জাপান ছয় মাস থেকে শুরু করে চার বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের করোনাভাইরাস টিকা দিতে শুরু করেছে। মানুষের প্রজনন সামর্থ্যের ওপর টিকা কোনোরকম প্রভাব ফেলে কিনা, এবারে আমরা সেদিকে নজর দেব।

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের তৈরি টিকা জাপানে শিশুদের টিকাদানে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা হচ্ছে নতুন ধরনের টিকা, যেটাকে বলা হয় এমআরএনএ টিকা। এমআরএনএ প্রোটিন বা আমিষকে সংশ্লেষ করে নিতে “ব্লু প্রিন্ট” বা নীল নকশা হিসাবে কাজ করে। এমআরএনএ টিকা কাউকে দেয়া হলে করোনাভাইরাস আমিষের একটি অংশ সেই ব্যক্তির দেহের কোষের ভেতরে তৈরি হয়। সেই আমিষ অ্যান্টিবডি তৈরি করে নিতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যাবলী সক্রিয় করে তোলে।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে এমআরএনএ কয়েক মিনিট থেকে কয়েক দিনের মধ্যে ভেঙে যাবে এবং আমাদের দেহ থেকে সরে যাবে। মন্ত্রণালয় আরও বলছে টিকার এমআরএনএ জিনগত তথ্য ধারণ করা মানব ডিএনএ’র সাথে মিশে যাবে না। মানবদেহ ডিএনএ থেকে নিজস্ব এমআরএনএ তৈরি করলেও জিনগত তথ্যের প্রবাহ একদিক বরাবর হওয়ায় এমআরএনএ থেকে ডিএনএ আপনি তৈরি করে নিতে পারবেন না।

ফলে বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস এমআরএনএ টিকার ডোজ কেউ নিলে এমআরএনএ’র জিনগত তথ্য শরীরে দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যাওয়ার কিংবা বীর্য অথবা ডিম্বাণুর জিনগত সাঙ্কেতিক প্রক্রিয়ায় সেটা পৌঁছে যাওয়ার মতো ঝুঁকি নেই।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৪: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (৪) মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিগুলো কী কী?

উত্তর-৪৯৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু হয়েছে অক্টোবরে। এবারে আমরা এই বয়সসীমার শিশুদের টিকাদানের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিগুলোর দিকে নজর দেব।

ডাক্তাররা তরুণ ছেলেদের বিশেষ করে কিশোর বয়সী এবং ২০-এর কোঠার ছেলেদের হৃদপিণ্ডের পেশী বা হৃদপিণ্ডকে ঘিরে থাকা পর্দার প্রদাহকে কোভিডের টিকার বিরল এবং মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ছয় মাস থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এ ধরনের হৃদপিণ্ডের ঝুঁকি সংক্রান্ত পর্যাপ্ত উপাত্ত তাদের কাছে এখনও নেই। তবে, জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, আগস্টের শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজারের টিকা নেয়া ছয় মাস থেকে চার বছরের প্রায় ৬ লক্ষ শিশুর মধ্যে এ ধরনের কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
জাপানের জন্য, পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশু সংক্রান্ত উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে যে, প্রতি ১০ লক্ষ টিকার মধ্যে হৃদপিণ্ডের অবস্থার দু’টি কি তিনটি সন্দেহজনক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।

আমরা কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং টিকা সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ নাকাইয়ামা তেৎসুও’কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। অধ্যাপক নাকাইয়ামা বলছেন, টিকা নেয়ার পরে কিশোর বয়সী এবং ২০-র কোঠার ছেলেদের তুলনায় অল্প বয়সী শিশুদের মধ্যে এ ধরনের হৃদপিণ্ডঘটিত অবস্থা দেখা দেয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত অল্প। তিনি এও বলছেন, এমনকি এ ধরনের অবস্থা দেখা দেয়ার পরে তারা কেবল হাল্কাভাবে আক্রান্ত হয়েছে এবং পুরোপুরি ভালও হয়ে গেছে।
তবে, অধ্যাপক আরও বলছেন, টিকা নেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে যদি শিশুদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয় বা তারা বুকে ব্যথার কথা জানায়, তাহলে অভিভাবকদের তখনই তাদেরকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে কেননা উভয় ক্ষেত্রকেই হৃদপিণ্ডের পেশী বা পর্দার প্রদাহের উপসর্গ হিসেবে ধরে নেয়া যায়।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯৩: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (৩) টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

উত্তর-৪৯৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। গত অক্টোবর মাসে জাপানে ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবারে আমরা এই টিকাদানের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিকে নজর দিব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বেশিরভাগ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মৃদু থেকে মাঝারি পর্যায়ের এবং সাময়িক। আর সেকারণে এগুলো কোনো গুরুতর নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ সৃষ্টি করে না।

ফাইজার তাদের ক্লিনিকাল পরীক্ষায় এক সপ্তাহ ধরে টিকা দেয়া শিশুদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেছে। এতে এটি দেখা যায় যে, দুই থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে গড়ে তিনটি টিকা দেয়ার পর, ৫.১ শতাংশের ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার জ্বর উঠেছে। ২৬.৬ শতাংশের ক্লান্তি অনুভব করার পাশাপাশি ২.৭ শতাংশের বমি এবং ৬.৫ শতাংশের ডায়রিয়া হতে দেখা গেছে। ছয় মাস থেকে এক বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে, ৭.১ শতাংশের ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার জ্বর হয়েছে। ২১.৫ শতাংশ ক্ষুধা কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রদর্শন করে এবং ৪৭.৪ শতাংশ বিরক্ত হয় এবং রাগী মনোভাব দেখায়।

টিকাদান সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইতো আকিহিকো বলেন, পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলনা করা কঠিন হলেও প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ছয় মাস থেকে চার বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার কম হতে দেখা যায়। তিনি এটিও উল্লেখ করেন যে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী বা ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের তুলনায়ও এই বয়সীদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার অপেক্ষাকৃতভাবে কম বা একই হয়ে থাকে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯২: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (২) টিকার কার্যকারিতা

উত্তর-৪৯২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু হয়েছে অক্টোবরে। এই বয়সসীমার শিশুদের টিকাদানের ফলপ্রসূতার দিকটি এবারে আমরা খতিয়ে দেখব।

টিকা শিশুদের শরীরে করোনাভাইরাস উপসর্গের গুরুতর হয়ে ওঠা রোধ করতে পারবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের দেহে এই টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালায়। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনটি শট দেওয়ার পর শিশুদের দেহে অ্যান্টিবডির মাত্রা, এর চেয়ে বেশি বয়সী শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের দেহে ক্লিনিকাল ট্রায়াল-পরবর্তী মাত্রার সমান হয়ে যায়।

তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে যখন করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটি খুব ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন সেখানে ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সী ১ হাজার ১শোটি শিশুর দেহে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালায় এই কোম্পানি। শিশুদের টিকা অথবা টিকা বলে মনে হওয়া শরীরের পক্ষে নিরাপদ লবণাক্ত মিশ্রণ প্ল্যাসিবো দেওয়া হয়।

সংক্রমণ পরিস্থিতির তুলনামূলক চিত্রটির দিকে তাকালে দেখা যাবে, যাদের টিকা দেওয়া হয়, ২০২২ সালের ১৭ই জুন পর্যন্ত সেরকম ৭শো ৯৪টি শিশুর মধ্যে ১৩টি শিশু সংক্রমিত হয়েছে। আর যাদের প্ল্যাসিবো দেওয়া হয়, সেরকম ৩শো ৫১টি শিশুর মধ্যে ২১টি শিশু সংক্রমিত হয়। বলা হচ্ছে তিনটি ডোজের পর, উপসর্গ প্রতিরোধে এই টিকা ৭৩ দশমিক ২ শতাংশ কার্যকর হয়ে ওঠে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই টিকা কতদূর পর্যন্ত গুরুতর অসুস্থতা রোধ করতে পারে, সংক্রমিত শিশুর সংখ্যা তা বিশ্লেষণের সুযোগ দেওয়ার মতো যথেষ্ট ছিল না।

কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, টিকা বিশেষজ্ঞ নাকাইয়ামা তেৎসুও বলেন যে তার প্রত্যাশা গুরুতর অসুস্থতা রোধে টিকা যথেষ্ট কার্যকর হবে কারণ এই টিকা উপসর্গের অবনতি ঠেকিয়ে দেয়। তিনি বলেন, গবেষণা বিশেষে উপাত্তে তারতম্য থাকলেও, বলা হচ্ছে যে এই টিকা ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতা রোধে ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ কার্যকর।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯১: চার বছরের শিশু পর্যন্ত টিকাদান (১) ব্যাখ্যা

উত্তর-৪৯১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ছয় মাস থেকে শুরু করে চার বছরের শিশু পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সরকারি টিকাদান কর্মসূচি অক্টোবর মাসে শুরু হয়েছে। এবারের ধারাবাহিকে আমরা শিশুদের জন্য টিকা কার্যকর কিনা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোন ঝুঁকি আছে কিনা তা নিয়ে কথা বলব। প্রথম পর্বে আমরা টিকার বিস্তারিত প্রদান করব।

টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি হলো মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার। প্রাপ্তবয়স্কদের টিকার তুলনায় প্রতি ডোজে সক্রিয় উপাদানের পরিমাণ হলো ১০ ভাগের এক ভাগ। পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সের শিশুর জন্য এই পরিমাণ হলো প্রায় এক তৃতীয়াংশ। ভাইরাসের প্রচলিত স্ট্রেইনগুলোর ওপর ভিত্তি করে এটি তৈরি করা হয়েছে। ওমিক্রন ধরন থেকে পাওয়া উপাদান এর মধ্যে নেই।

টিকা বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে, এর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারি তহবিল থেকেই যোগান দেয়া হচ্ছে।

সম্পূর্ণ ভাবে টিকা প্রাপ্ত হতে হলে তিনবার এই টিকা নিতে হবে। প্রথম ডোজের তিন সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ এবং তার কমপক্ষে আট সপ্তাহ পর তৃতীয় ডোজ নিতে হবে।

স্থানীয় শিশু ক্লিনিক বা এরকম কোন স্থান, অথবা স্থানীয় সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠা করা গণ টিকা কেন্দ্রে টিকা পেতে গেলে শিশুরা নীতিগতভাবে তাদের পৌরসভার কাছ থেকে টিকার কুপন পাবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভাইরাসের ওমিক্রন ধরন বিস্তারের কারণে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়া, শিশুদের মধ্যে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া এবং টিকার নিশ্চিত কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ছয় মাস থেকে শুরু করে চার বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকা দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। তবে কোন ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই বা টিকা না নিলে শাস্তিমূলক কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে না। টিকা নেবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত পুরোপরি শিশুদের এবং তাদের পিতা-মাতার ওপর নির্ভর করছে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯০: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (৭) সম্ভাব্য দ্বৈত সংক্রমণ সামাল দেয়ার উপায়

উত্তর-৪৯০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। শীতের চলতি মৌসুমে করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার একই সঙ্গে প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। দ্বৈত সংক্রমণ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের সপ্তম ও শেষ পর্বে এবারে আমরা সেরকম সম্ভাবনা প্রতিরোধ করতে হলে কোন্‌ চিন্তা-ভাবনা আমাদের মনে রাখা দরকার সেদিকে নজর দেব।

করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা, উভয়ই হচ্ছে সংক্রামক রোগ যা প্রধানত শ্বসনতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এদের সংক্রমণের পথ হচ্ছে একই ধরনের। আর তাই দুই রোগের বেলায় নিতে হওয়া প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই।

প্রথমত, হাত ও আঙুল জীবাণু মুক্ত রাখা এবং ভেতরে থাকা অবস্থায় অন্য লোকজনের সাথে কাছে থেকে কথা বলার সময় মাস্ক পরার উপদেশ আপনাকে দেয়া হচ্ছে। রেস্তোরাঁ ও পানশালার মতো স্থাপনাগুলোতে বায়ু চলাচলের ব্যাপক ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয়ত, জ্বর কিংবা অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে স্কুলে কিংবা কাজে যাওয়া অথবা অন্য লোকজনের সাথে যোগাযোগ করা থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণও হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার একই সময়ে বিস্তার লাভের সম্ভাবনা হ্রাসের প্রচেষ্টায় এরকম মৌলিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বিশেষজ্ঞরা জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৯: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (৬) টিকা নেয়ার আহ্বান

উত্তর-৪৮৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই শীতে করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার একযোগে প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এই পর্বে টিকা নেয়ার মাধ্যমে দ্বৈত প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে কীভাবে আমরা আমাদের সুরক্ষা প্রদান করতে পারি তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত নিয়ে আলোচনা করব।

সংক্রমণ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা উভয়ের টিকাই কার্যকর বলে সর্বজনবিদিত। এমনকি যদি টিকা নেয়া কেউ আক্রান্তও হন, তাহলে টিকা মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকিকে অনেকটাই কমাতে পারে।

আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওসাকা কেন’কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি আমাদের বলেছেন, করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা একসাথে নিতে কোন অসুবিধা নেই। তিনি বলেন, কিছু কিছু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান একসাথে দু’টো ডোজই নেয়ার কথা বলছে এবং শীত আসার আগেই উভয় ডোজ টিকা নেয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক সবার প্রতি করোনাভাইরাসের তৃতীয় বা চতুর্থ বুস্টার ডোজ এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্যানেলের প্রধান ওয়াকিতা তাকাজি বলেন, ওমিক্রনের উপধরনের করোনাভাইরাসের টিকার পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেয়ার হার বাড়িয়ে নেয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, তা করলে আমরা সংক্রমণের বিস্তারকে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখতে পারব এবং মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীদের সংখ্যাও সীমিত রাখতে পারব।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৮: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (৫) জ্বরের মাত্রা বেশি হলে কী করতে হবে?

উত্তর-৪৮৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই শীতে করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার একযোগে প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। দ্বৈত প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে জ্বর হলে কী করতে হবে, সেই বিষয় নিয়ে এবারে আমরা আলোচনা করব।

জ্বরের মতো উপসর্গের কারণে ভালো বোধ না করলে আপনার কী করা উচিত, গত ১৩ই অক্টোবর তার জন্য একগুচ্ছ পরামর্শ প্রণয়ন করেছে জাপান সরকার। এক্ষেত্রে, ১২ বছর বা তারচেয়ে কম বয়সী শিশু, গর্ভবতী নারী, অন্তর্নিহিত রোগযুক্ত ব্যক্তি এবং বয়োবৃদ্ধদের মতো গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে অবিলম্বে একটি জ্বরের ক্লিনিকে বা পারিবারিক চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাতের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাদের করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য পরীক্ষা করা এবং এরপর এর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে, প্রয়োজনীয় ওষুধের প্রেসক্রিপশন সহ যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

কিন্তু অল্পবয়সী ব্যক্তিদের মতো গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের, সরকার অনুমোদিত অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট ব্যবহার করে, বাড়িতে বা অন্যত্র তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যদি এর ফলাফল নেতিবাচক হয়, তাহলে তাদের ফোন বা অনলাইন পরিষেবার মাধ্যমে চিকিৎসকের সাথে বা তাদের পারিবারিক চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনে ফ্লু-রোধী ওষুধের চিকিৎসাপত্র নেয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।

আর যদি পরীক্ষার ফল ইতিবাচক হয়, তাহলে আপনাকে ধারাবাহিক স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে জানানোর পাশাপাশি বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে, আপনার উপসর্গগুলো যদি গুরুতর হয় এবং আপনি চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইলে, আপনাকে জ্বরের ক্লিনিক বা আপনার পারিবারিক চিকিৎকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে পরীক্ষার কিট এবং জ্বর উপশমের ওষুধ প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন যাতে আপনি নিজেই জ্বরের চিকিৎসা করতে পারেন।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৭: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (৪) কী ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে?

উত্তর-৪৮৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা, এ দুয়ের যুগপৎ প্রাদুর্ভাব ঘটার আশংকা মনে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। এ সংক্রান্ত ধারাবাহিকের এবারের পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করবো, সত্যিই যদি তা হয়, তখন পরিস্থিতি কেমন হতে পারে।

জাপানে এবছর জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সপ্তম তরঙ্গ আঘাত হেনেছিল। এখন পর্যন্ত জাপানে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বড় তরঙ্গ ছিল এটি, যা সংক্রমিত করে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ রোগীকে এবং যা প্রায় সাড়ে তের হাজার রোগীর প্রাণ কেড়ে নেয়। এদিকে, জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি ইনস্টিটিউটের প্রকাশ করা এক হিসেবে জানা যাচ্ছে ২০১৮ সালের শরৎকাল থেকে ২০১৯ সালের বসন্তকাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল কমবেশি ১ কোটি ২০ লক্ষ।

করোনাভাইরাসের সপ্তম তরঙ্গ যখন আঘাত হানে তখন জ্বরের রোগীর চিকিৎসার জন্য আউটডোর বা বহির্বিভাগের ব্যবস্থা থাকা চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো উপচে পড়েছিল রোগীর ভিড়ে। সেসময় লোকজনের পক্ষে চিকিৎসা কেন্দ্র এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর সাথে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। অনেক জায়গায় রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হতে সমস্যা হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সেই রোগীদের পক্ষে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য জরুরি যানবাহনের ব্যবস্থা করাও কঠিন হয়েছে।

এখন বিশেষজ্ঞরা এই ভেবে উদ্বিগ্ন যে করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার দ্বৈত সংক্রমণের প্রকোপ যদি শুরু হয়, সেক্ষেত্রে একই রকম বা আরও খারাপ পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।

কোভিড–১৯ ও ইনফ্লুয়েঞ্জা --- এ দুয়ের উপসর্গ এক। যেমন, বেশি জ্বর, কাশি, গলাব্যথা ও গাঁটে গাঁটে ব্যথা। তাই টেস্ট না করে বলা কঠিন রোগী এই দুটি সংক্রমণের মধ্যে কোন্‌টিতে আক্রান্ত। ধরেই নেওয়া যেতে পারে যে জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা তাদের রোগ নির্ণয় করানোর জন্য আউটডোরে ভিড় করবেন এবং চিকিৎসা পরিষেবা চাপের মুখে পড়বে।

তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাতেদা কাযুহিরো জাপান সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য। তিনি বলেন, সপ্তম তরঙ্গের সময় যা দেখা গেছে, তার চেয়েও বেশি রোগীর ভিড়ে বেসামাল হয়ে পড়তে পারে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর বহির্বিভাগ। তাই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভেবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৬: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (৩) একই সাথে দুটি রোগ প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা কেন রয়েছে?

উত্তর-৪৮৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার একই সাথে সংক্রমণ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবারে আমরা কেন এটি ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করে বলব।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা যারা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে গত তিন বছরের মধ্যে প্রথমবার ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে জাপানে তারা নিম্নলিখিত কারণগুলোর উল্লেখ করেছেন।
প্রথমত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অন্যান্য অনেক দেশ পুনরায় সবকিছু চালু করা শুরু করেছে এবং ২০২২ সালের বসন্তকাল থেকে গ্রীষ্মের মধ্যে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ লাঘব করে নিয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক পর্যটন ক্রমাগত সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

জাপানেও অক্টোবর মাসে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা তাৎপর্যপূর্ণভাবে শিথিল করে নেয়ার ফলে লোকের আসা যাওয়া বৃদ্ধি পাচ্ছে যা সম্ভবত করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা উভয় রোগের বিস্তার সহজতর করে তুলবে।

দ্বিতীয়ত, গত দুই মৌসুমে জাপানে বিরাট আকারের কোন ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারি দেখা যায়নি। এর অর্থ হলো বেশিরভাগ লোকের শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই।

বিশেষজ্ঞদের প্রকাশ করা এক নথিতে লোকজনের এন্টিবডির মাত্রা নিম্ন হওয়ার কারণে মারাত্মক ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে দেয়া হয়।

এসব কারণে এবারের শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য অষ্টম তরঙ্গ একসাথে দেশে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করতে পারে।

অন্যদিকে, লোকজনের সামনা সামনি সংস্পর্শে আসা জাপানে এখনও মহামারির আগের পর্যায়ে ফিরে যায়নি। তাই অতীতের কয়েকটি মৌসুমের মতো পরিস্থিতি খুব খারাপ না হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৫: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (২) গত দুই বছরের পরিস্থিতি

উত্তর-৪৮৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা জাপানে চলতি বছর শীতের মৌসুমে করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার একই সাথে সংক্রমণ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে শীতের গত দুই মৌসুমে কোভিড ও ইনফ্লুয়েঞ্জার একই সাথে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কোন খবর পাওয়া যায় নি। কেন এমন হয়েছে, এবারে আমরা তা পরীক্ষা করে দেখব।

করোনাভাইরাস মহামারি ঘটে যাওয়ার আগে প্রতি বছর শীতকালে জাপান মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা হিসাব করেছেন যে প্রতি বছর ১ থেকে ২ কোটি মানুষ সংক্রমিত হয়েছিলেন।

তবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া শুরু হওয়ার পর থেকে এই সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। জাপানের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউট বলছে সারা দেশের প্রায় ৫ হাজার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ২০২০ থেকে ২০২১ সালের শুরুর দিকের শীতকালে সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ হাজার, এবং পরের বছরের শীতে প্রায় ৩ হাজার।

জাপানে শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা বিস্তার লাভ করে, তবে উষ্ণমণ্ডলীয় কিংবা নাতিশীতোষ্ণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সারা বছর এটা দেখা যায়।

সীমান্ত অতিক্রম করে মানুষের যাতায়াতের সাথে ভাইরাস অন্যান্য দেশে চলাচল করে বলে মনে করা হয় এবং জাপানে শীতের পরিস্থিতিতে ভাইরাসের বিস্তার সহজ হয়ে উঠা হচ্ছে শীতকালে দেশে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার কারণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সম্ভবত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো করোনাভাইরাস নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দুই শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিস্তার ঘটে নি।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৪: ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে দ্বৈত সংক্রমণ (১) উচ্চ সম্ভাবনার ব্যাপারে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা

উত্তর-৪৮৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে চলতি গ্রীষ্ম থেকে নতুন করে দৈনিক করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস পেয়ে চলেছে। অক্টোবর মাসের ১১ তারিখে, করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শিথিল করা হয়েছে। দেশব্যাপী পর্যটনের প্রসারে সরকারি একটি ভ্রমণ ভর্তুকি কর্মসূচি আবার শুরু হয়েছে। তবে, সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা এই উদ্বেগ ব্যক্ত করছেন যে, চলতি শীত মৌসুমে করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণের বিস্তার একসাথে হওয়ার বেশ জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধারাবাহিকে কী ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে এবং কিভাবে তা সামাল দেয়া হবে তার পাশাপাশি এই পরিস্থিতিকে সামাল দেয়ার জন্য সরকারি পদক্ষেপসমূহ সম্পর্কিত নানান তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরা হবে।

বৈশ্বিক মহামারি শুরু হওয়ার পর বিগত দুই শীত মৌসুম চলাকালীন কোভিড এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার কোন যুগপৎ সংক্রমণের বিস্তারের কথা শোনা যায়নি। তাহলে ২০২২ সালের এই মৌসুম এবং আগের বছরগুলোর মৌসুমের মধ্যে কী পার্থক্য রয়েছে?

অক্টোবরের ৫ তারিখে, এই মহামারি সামাল দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজন বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্যানেলের কাছে যৌথভাবে সংক্রমণের রূপরেখা সম্পর্কিত একটি দলিল পেশ করেন। এতে বলা হচ্ছে, অক্টোবর মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৬ মাস করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে যুগপৎ ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে।

বিষয়টি সামাল দিতে বিশেষজ্ঞদের প্যানেল এই ইঙ্গিত দেয় যে, একটি সম্ভাব্য যুগপৎ বিস্তার সামাল দেয়ার জন্য আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

আর সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উপদেষ্টা প্যানেল অক্টোবর মাসের ১৩ তারিখে ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে সম্ভাব্য যুগপৎ বিস্তারের প্রস্তুতির জন্য এক গুচ্ছ পদক্ষেপ প্রণয়ন করেছে। এই পদক্ষেপগুলো এই অনুমানের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে যে, দৈনিক করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে চার লাখে পৌঁছাবে এবং এক দিনে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখে পৌঁছানো সহ যৌথভাবে দৈনিক আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা সাড়ে সাত লাখ হবে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮৩: ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে দুই ধরনের করোনাভাইরাস টিকা (৩) টিকাদানের সময়সূচি

উত্তর-৪৮৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে অক্টোবর মাস থেকে ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি বিএ.১ উপধরনকে লক্ষ্য ধরে উৎপাদিত টিকাও জনসাধারণকে প্রদান করা হচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে এই দু’ধরনের টিকা সম্পর্কিত নানান তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
আর এর তৃতীয় এবং সর্বশেষ পর্বে, আমরা টিকাদানের সময়সূচির দিকে নজর দিব।

অন্তত তিন মাস আগে একটি প্রচলিত ধরনের টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারী ১২ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী সকল ব্যক্তিই, ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া এই টিকা গ্রহণের যোগ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমিত হিসেব অনুযায়ী, এই বছরের মধ্যেই প্রায় ১০ কোটি মানুষ নতুন ধরনের এই টিকা গ্রহণের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন।

মন্ত্রণালয় নভেম্বরের শেষের দিক নাগাদ সারা দেশের পৌরসভাগুলোতে, বিএ.১ এবং বিএ.৫ উপধরনের জন্য নির্ধারিত ফাইজারের টিকা এবং বিএ.১ উপধরনের জন্য নির্ধারিত একটি মডার্না টিকা’সহ মোট প্রায় ৯ কোটি ৯০ লক্ষ ডোজ টিকা সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছে৷

এর বাইরে, বিএ.১ এর জন্য মডার্নার টিকার ৫০ লক্ষ ডোজ আলাদাভাবে শুধুমাত্র কর্মক্ষেত্রে টিকাদান কর্মসূচির জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বছরান্ত এবং নববর্ষের ছুটির সময় সংক্রমণের অষ্টম তরঙ্গের সম্ভাব্য হানা দেয়ার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে, টিকা গ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তিই যাতে কোনরকম ব্যর্থতা ছাড়াই টিকা নিতে পারেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮২: ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে দুই ধরনের করোনাভাইরাস টিকা (২) কোন টিকাটি বেশি কার্যকর?

উত্তর-৪৮২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অক্টোবর মাস থেকে জাপানে ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে বিএ.১ উপধরনকে লক্ষ্যবস্তু করে বানানো টিকাও। চলতি ধারাবাহিকে এই দু’ধরনের টিকা সম্পর্কে নানান তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।

এই দুটির মধ্যে কোন টিকাটি নেওয়া উচিত? বিএ.৫ নাকি বিএ.১? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দুটি টিকার মধ্যেই রয়েছে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনকে প্রতিরোধ করার উপাদান এবং উপধরনগুলোর বিরুদ্ধে এই দুটি টিকা আগেকার টিকাগুলোর চাইতে অনেক বেশি কার্যকর। মন্ত্রণালয়ের ধারণা, সর্বসাম্প্রতিক টিকাগুলো ভবিষ্যৎ ধরনের বিরুদ্ধেও কার্যকর হবে। মন্ত্রণালয় এও বলে, যেহেতু দুটি টিকার কার্যকারিতা তুলনা করে দেখার জন্য প্রয়োজনীয় উপাত্ত এখনও আমাদের হাতে নেই, তাই লোকজনের উচিত দুটি টিকার মধ্যে যেটি তারা তাড়াতাড়ি পাবেন, সেটিই নিয়ে নেওয়া।

কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুও একজন টিকা বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, “সর্বসাম্প্রতিক টিকাগুলো হচ্ছে বর্তমানে যে ভাইরাসের প্রকোপ বেশি সেই বিএ.৫ উপধরন থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধে অধিকতর কার্যকর। তাছাড়া এই টিকাগুলো সংক্রমিত ব্যক্তির উপসর্গ গুরুতর হয়ে ওঠাও রোধ করে। বিএ.৫ এবং বিএ.১ উপধরনের মধ্যে পার্থক্য, প্রচলিত ভাইরাস ও পূর্ববর্তী ধরনগুলোর মধ্যকার পার্থক্যের মতো উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। বিএ.১ উপধরনকে লক্ষ্যবস্তু করে তৈরি টিকারও গুরুতর উপসর্গ রোধে কার্যকর হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে কারুর যদি বিএ.১’এর টিকা নেওয়ার আয়োজন হয়ে থাকে, আমার মতে তার উচিত হবে সেই টিকাটিই নিয়ে নেয়া”।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮১: ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে দুই ধরনের করোনাভাইরাস টিকা (১) আমরা কি নিজেদের পছন্দমতো টিকা নিতে পারি?

উত্তর-৪৮১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে অক্টোবর মাস থেকে জাপান দেশের জনগণকে করোনাভাইরাস টিকা দিতে শুরু করেছে। একই সাথে দেশটি বিএ.১ উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকাও লোকজনকে দিচ্ছে।
এবারের ধারাবাহিকে আমরা এই দুই ধরনের টিকার বিষয়ে আপনাদের সামনে তথ্য উপস্থাপন করব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টিকা দিয়ে থাকা স্থানীয় সরকারের প্রতি যেসব টিকার মেয়াদ দ্রুত উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে প্রথমে সেগুলো শেষ করে দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। এর অর্থ হল বিএ.৫ উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা যদি এমন এক কেন্দ্রে বিতরণ করা হয় যাদের কাছে তখনো বিএ.১ এর টিকার মজুত রয়েছে, সেক্ষেত্রে ডাক্তারদের বলা হবে মেয়াদ আগে উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া বিএ.১ এর টিকা প্রথমে শেষ করতে যাতে করে সেগুলো নষ্ট না হয়ে যায়।

প্রশ্ন হলো যারা টিকা নিচ্ছেন তারা কি নিজেদের পছন্দমতো কোন একটা বেছে নিতে পারবেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকারগুলোকে বলেছে যে টিকার জন্য বুকিং করা লোকজনকে কি ধরনের টিকা তারা পাবেন সেটা জানানো হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত তাদের উপর নির্ভর করছে।
তবে মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে জানিয়েছে যে তাদের টিকা দান পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি স্থানীয় সরকার যাতে অধিবাসীদের সকলকে টিকা দিতে পারে তা বিবেচনায় রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা তাদের পাঠানো হবে। মোট পরিমাণ হবে বিএ.১ কে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা এবং বিএ.৫ কে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকার সংমিশ্রণ।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮০: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (৭) সরকারের নীতি-অবস্থান

উত্তর-৪৮০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ক সরলীকৃত অবহিতকরণ ব্যবস্থা দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে ২৬শে সেপ্টেম্বর থেকে।

চলতি সিরিজে আমরা দেখছি অবহিতকরণ ব্যবস্থায় কী পরিবর্তন হয়েছে এবং তা নিয়ে মানুষের মনে কী প্রশ্ন জাগতে পারে। এবারে আমরা জানার চেষ্টা করবো এই পরিবর্তনের বিষয়ে সরকারের নীতি-অবস্থান কী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী কাতো কাৎসুনোবু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সংক্রান্ত সরলীকৃত অবহিতকরণ ব্যবস্থার সুবিধা এবং অসুবিধা উভয় দিকই তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “যেসব পৌর এলাকায় অন্যদের চেয়ে আগে এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে, তারা তাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রশমিত হওয়ার কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে, এই নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে, করোনা পরীক্ষার ফলাফলে পজিটিভ অর্থাৎ এই ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া বা তাদের সাথে যোগাযোগের টেলিফোন নম্বর সংগ্রহ করার প্রয়োজনটাই ফুরিয়ে গিয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্তের অভাব থাকলে, কোনো রোগীর অবস্থা যদি খারাপের দিকে যায়, তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া বা হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা নিতে সময় লেগে যেতে পারে”। কাতো আরও বলেন যে তার মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাসরোধী ব্যবস্থার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, প্রয়োজনে পৌর সরকারসমূহের সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করবে এবং এই ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলবে।

করোনাভাইরাসরোধী ব্যবস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ইয়ামাগিওয়া দাইশিরো বলেন, এই শরৎকাল এবং শীতকালে সংক্রমণের অষ্টম ঢেউ জাপানে আঘাত হানতে পারে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে এসময়ে একসঙ্গে করোনাভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের যুগপৎ প্রকোপ আরম্ভ হয়ে যাওয়ার আশংকাও আছে। এই আশংকার কথা মাথায় রেখে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উপযুক্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “কী করা উচিত তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ঠিক করে রাখা দরকার”। তিনি আরও বলেন যে তিনি বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করবেন এবং সামাজিক প্রভাবের দিকটি বিবেচনায় রেখে, কাজে এগিয়ে যাবেন।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৯: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (৬) নতুন ব্যবস্থা নিয়ে দেখা দেয়া উদ্বেগ

উত্তর-৪৭৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাস ঘটনা সম্পর্কে জানানোর সরলীকৃত একটি ব্যবস্থা সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখে সারা দেশ জুড়ে কার্যকর হয়েছে।


ধারাবাহিক এই আয়োজনে আমরা অবহিতকরণ বা জানানোর এই ব্যবস্থার রদবদল কিভাবে হয়েছে এবং কোন উদ্বেগ এর থেকে সম্ভবত দেখা দিচ্ছে তা নিয়ে বলছি। পরিবর্তনের ফলে সংক্রমণ পরিস্থিতির বিস্তারিত বিশ্লেষণ কঠিন হয়ে পড়বে বলে একজন বিশেষজ্ঞের জানানো মতামতের উপর এবারের পর্বে আমরা নজর দেব।


পরিবর্তনের আগে ভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ আসা লোকজন কোথায় বসবাস করেন, কখন তারা শরীরে উপসর্গ দেখতে পান এবং কিভাবে তারা সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন, এধরনের সমস্ত তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের HER-SYS ডেটাবেসে নিবন্ধন করতে হত। বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য ব্যবহার করে সংক্রমণের সংখ্যা কোথায় সর্বোচ্চ, কোন পথে সাধারণত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, প্রতিটি অঞ্চলে কত দ্রুত ভাইরাস বিস্তার লাভ করছে, এধরনের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখতেন। তাদের করা বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করেই সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করত।

তবে সারা দেশ জুড়ে বাস্তবায়নের আগেই যেসব জেলায় সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে হিসাব তারা ডেটাবেসে নিবন্ধন করেছে তা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রকৃত সংখ্যার তুলনায় অনেক কম।

কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি করোনাভাইরাস উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আসছেন। তিনি বলেন, ভাইরাসের প্রজনন হার যা দেখে বোঝা যায় যে ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তির থেকে কতজন সংক্রামিত হচ্ছেন, তাৎক্ষণিক ভাবে তা হিসাব করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। মানুষের গতিবিধিতে পরিবর্তন কিভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে দেখা তার পক্ষে আর সম্ভব হবে না বলে তিনি জানান। নিশিউরা আরও উল্লেখ করেন যে সরলীকৃত ব্যবস্থায় সংক্রামিত ব্যক্তির টিকা সংক্রান্ত তথ্য আর রেকর্ড করা হয় না যার ফলে টিকার কার্যকারিতা এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকা লোকজনের অনুপাত কি, এসব বিষয়ে গবেষণা করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
এর ফলে ভাইরাসের বুস্টার ডোজের সময়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়াও কঠিন হয়ে উঠতে পারে বলে তিনি আরও উল্লেখ করেন।


অধ্যাপক নিশিউরা বলেন যে বহুস্তরযুক্ত তথ্য সংগ্রহ করা এবং তার থেকে কি ধরনের ঝুঁকি মূল্যায়ন সম্ভব সেই সংক্রান্ত আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৮: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (৫) মহামারি সামাল দেয়ায় সরকারের জবাবে পরিবর্তন

উত্তর-৪৭৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাস ঘটনা সম্পর্কে জানানোর সরলীকৃত একটি ব্যবস্থা সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখে সারা দেশ জুড়ে কার্যকর হয়েছে।

ধারাবাহিক এই আয়োজনে আমরা অবহিতকরণ বা জানানোর এই ব্যবস্থার রদবদল কিভাবে হয়েছে এবং কোন উদ্বেগ এর থেকে সম্ভবত দেখা দিচ্ছে তা নিয়ে বলছি। মহামারি সামাল দেয়া নিয়ে জাপান সরকারের জবাব বিভিন্ন সময়ে কোন্‌ পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, এবারে আমরা সেদিকে নজর দেব।

ভাইরাসের আধিপত্য বিস্তার করা ধরন এবং এর বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ও সেই সাথে টিকার অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাপান সরকার করোনাভাইরাস মহামারি সংক্রান্ত নীতি বদল করে নেয়। সরকার যেমন কোনওরকম উপসর্গ দেখা না দেয়া লোকজন যেন বাড়িতে থেকে রোগ মুক্ত হতে পারেন, সেজন্য নীতি পরিবর্তন করেছে এবং পরিস্থিতি বদল হওয়ার সময় মানুষের বাইরে যাওয়া ও ব্যবসায় জড়িত হওয়ার উপর আরোপিত নিয়ন্ত্রণ পর্যালোচনা করেছে।

ভাইরাসের ওমিক্রন ধরন যখন জাপানে প্রাধান্য বিস্তার করা ধরন হয়ে উঠে, সরকার তখন নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। এ কারণে তা করা হয় যে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন সেরকম ধরনের বেলায় তরুণদের মধ্যে মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি কম এবং সংক্রমণ প্রধানত বাড়ি, স্কুল ও বৃদ্ধদের সেবা প্রদান স্থাপনায় বিস্তার লাভ করে, পানশালা কিংবা রেস্তোরাঁয় নয়। সরকার তাই সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা অবস্থায় সংক্রমণের আরও বিস্তার প্রতিহত করার লক্ষ্য বেছে নেয়।

এরপর থেকে জাপান ওমিক্রন ধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা মানুষকে দিতে শুরু করে এবং বিশ্বের অনেক দেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মহামারি পূর্ববর্তী পর্যায়ে ধীরে ফিরিয়ে নেয়। এসব কর্মকাণ্ড বৃদ্ধ এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদের উপর চিকিৎসা সম্পদ কেন্দ্রীভূত রেখে, রোগীদের স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় সংক্ষিপ্ত করে নিয়ে এবং বিদেশ থেকে আসা ভ্রমণকারীদের উপর আরোপিত নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে নিয়ে অবহিতকরণ ব্যবস্থা সরলীকরণ করায় সরকারকে অনুপ্রাণিত করেছে।

সরকার বলছে এমন কি সংক্রমণের আরেকটি সম্প্রসারণ ঘটে গেলেও দেশের চিকিৎসা ও জন স্বাস্থ্য স্থাপনার সক্রিয় থাকা অব্যাহত রেখে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বর্তমান মাত্রা বজায় রাখার পরিকল্পনা সরকার করছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত ও বিশ্বের সংক্রমণ পরিস্থিতির উপর নজর রাখা অবস্থায় করোনাভাইরাসের সাথে সহাবস্থানের এই যুগে সংক্রমণ প্রতিরোধ নীতি পর্যালোচনা করে দেখা সরকার বজায় রাখবে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৭: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (৪) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর উপর চাপ

উত্তর-৪৭৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে একটি সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে।

চলতি এই ধারাবাহিকে অবহিতকরণ ব্যবস্থার কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে এবং এসংক্রান্ত সম্ভাব্য উদ্বেগগুলোর উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এ পর্বে আমরা টোকিওর একটি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধানের কাছে, এই নতুন ব্যবস্থা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর থেকে চাপ কমাবে কিনা, তা জানতে চেয়েছি।

মায়েদা হিদেও টোকিওর কিতা ওয়ার্ডের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান। এছাড়াও তিনি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সরকারি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্যও বটে।
তিনি বলছেন, সপ্তম তরঙ্গের সংক্রমণের সময়, এতো বেশি লোক সংক্রমিত হয়েছিলেন যে প্রত্যেকে ডাক্তার দেখাতে সক্ষম হননি। তিনি এও বলছেন, অবহিতকরণ ব্যবস্থার এই সরলীকরণের একটি সুবিধা হচ্ছে, প্রবীণ ব্যক্তি এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা আরও সহজেই ক্লিনিক বা হাসপাতালে যেতে সক্ষম হবেন।

আর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর চাপ প্রসঙ্গে, মায়েদা বলছেন, সাধারণ কাজের পরিমাণ অনেকখানি কমে যাবে। তবে তিনি এও বলছেন, মৃদু উপসর্গ থাকা লোকজনের বিস্তারিত আর নিবন্ধন করা হবে না, তাই যখন কারো পরিস্থিতির অবনতি হবে ও সাহায্যের প্রয়োজন হবে তখন কেন্দ্রগুলোকে বিস্তারিত পরীক্ষা করে দেখার কিছু জটিল কাজ করার প্রয়োজন পড়বে। সেজন্য তিনি বলছেন, তিনি বলতে পারছেন না যে সত্যিকার অর্থে কাজের চাপ কমবে।

এই সরলীকৃত ব্যবস্থার অধীনে, বিস্তারিতভাবে অবহিত করতে না পারা লোকজন “স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলো”তে নিবন্ধন করতে পারবেন। বাড়িতে থাকার সময় যদি তাদের অবস্থার অবনতি হয়, তাহলে তারা একটি কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ ও পরামর্শ করতে পারবেন এবং তাদেরকে একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

টোকিওতে, করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় পজেটিভ ফলাফল আসা ৬৪ বা তার চেয়ে কম বয়সী লোকজনও সাহায্য পাওয়ার জন্য অনলাইনে মেট্রোপলিটন সরকারের ব্যবস্থায় নিবন্ধন করতে পারবেন।

তবে, কিতা ওয়ার্ডের মায়েদা বলছেন, অনলাইনে যোগাযোগকে জটিল বলে মনে করা লোকজন অবশ্যই যোগাযোগ করতে ইতস্তত করবেন না এবং চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বা ক্লিনিকে দেখাতে যাবেন।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৬: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (৩) মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের ব্যবস্থাপনা

উত্তর-৪৭৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে একটি সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে।

চলতি এই ধারাবাহিকে অবহিতকরণ ব্যবস্থার কী ধরনের পরিবর্তন হয়েছে এবং এসংক্রান্ত সম্ভাব্য উদ্বেগগুলোর উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারের পর্বে, কর্তৃপক্ষগুলো কীভাবে মৃদু বা কোনরকম উপসর্গবিহীন লোকদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে, তার উপর আমরা নজর দিব।

সরলীকৃত এই ব্যবস্থার অধীনে, নিজ উদ্যোগে পরীক্ষা করে ইতিবাচক ফল আসা মৃদু বা কোনরকম উপসর্গবিহীন লোকজন "স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে" নিবন্ধন করার পাশাপাশি কোনও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ ছাড়াই বাড়িতে সুস্থ হয়ে ওঠা শুরু করতে সমর্থ হবেন।

তারা নিজেদের বাড়ি থেকে দূরে থাকার ব্যবস্থা বা খাবার সরবরাহের মতো সহায়তা পেতে সক্ষম হবেন। বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সময় তাদের অবস্থার অবনতি হলে লোকজন স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের এই কেন্দ্রগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে বা তাদের সাথে পরামর্শ করতে সক্ষম হবেন। এরপর, তাদের একটি সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হবে।

যেহেতু জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো আর আগের মতো মানুষের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবে না, তাই বাড়িতে রোগীদের অবস্থার অবনতি হলে কর্তৃপক্ষগুলো দ্রুত তাদের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যুক্ত করার প্রচেষ্টা জোরদার করবে।

কর্তৃপক্ষগুলো এখন স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’সহ অন্যান্য সহায়তা স্থাপনাগুলোর সাথে যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্য প্রচারের পাশাপাশি লোকজনকে স্ব-বিচ্ছিন্ন হতে অনুরোধ করার মতো সংক্রমণ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রসারের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে যে বিশদ প্রতিবেদন প্রেরণের বাধ্যবাধকতার সহজীকরণ গুচ্ছ সংক্রমণ সনাক্ত করাকে কঠিন করে তুলবে। সেকারণে মন্ত্রণালয় জেলা কর্তৃপক্ষগুলোকে বয়স্ক পরিচর্যা স্থাপনার পাশাপাশি অন্যান্য উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভাইরাসের বিস্তার রোধে কাজ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৫: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (২) রোগীর সংখ্যা সম্পর্কে অবগত থাকা যাবে কী ভাবে?

উত্তর-৪৭৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে অবহিতকরণের একটি সরলীকৃত ব্যবস্থা ২৬শে সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।

অবহিতকরণ ব্যবস্থায় কী পরিবর্তন হয়েছে এবং এ নিয়ে যেসব প্রশ্ন জাগতে পারে, তার ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে চলতি ধারাবাহিকে। এবারের পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করবো কর্তৃপক্ষ নতুন সংক্রমিত রোগীদের সম্পর্কে অবগত থাকার জন্য কী পরিকল্পনা করেছে।

করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটি বিস্তার লাভ করার মধ্যে জাপান সরকার সংক্রমণ-রিপোর্টিংয়ের একটি সরলীকৃত ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। উদ্দেশ্য, চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর ওপর চাপ কমানো আর বয়স্ক এবং অন্যান্য উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা।

চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোকে রোগীদের সবার নাম জানানোর জন্য সরকার পরিচালিত HER-SYS নামের একটি ব্যবস্থা ব্যবহার করে। শুধু নাম নয়, কবে থেকে উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করেছে, রোগীর সঙ্গে যোগাযোগের যাবতীয় তথ্যের মতো আরও অনেক কিছুই বিস্তারিতভাবে জানানো হয়ে এসেছে এই ব্যবস্থায়। তবে নতুন ব্যবস্থায় কেবল মাত্র উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন রোগীদের কথাই জানাতে বাধ্য থাকবে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী রোগী, সেইসঙ্গে এমন রোগী যাদের হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন হয়।

HER-SYS ব্যবস্থার মাধ্যমে অবশ্য এরপরেও প্রত্যেক বয়সসীমার গ্রুপের সংক্রমিত লোকজনের মোট সংখ্যার হিসেব রাখা হবে। যারা উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন নন, তারাও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

এছাড়া যেসব করোনা-রোগী বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন, তাদের সাহায্য করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। যেমন, ইন্টারনেটে করোনাভাইরাস পরীক্ষার অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট বিক্রি করার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, সেটি প্রত্যাহার করা হয়। করোনা রোগীদের সাহায্য করার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করেছে জেলা সরকারগুলো এবং ওমিক্রন ধরনকে লক্ষ্যবস্তু করে বানানো টিকা দিতে শুরু করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশা করছে, এই পদক্ষেপগুলো ভবিষ্যতে ভাইরাসের বিস্তার রোধে সহায়ক হবে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৪: করোনাভাইরাস সংক্রমণের সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থা (১) কী সরলীকৃত করা হয়েছে?

উত্তর-৪৭৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখ থেকে কার্যকর হওয়া সরলীকৃত তথ্য অবহিতকরণ ব্যবস্থার আওতায় বর্তমানে দেশ জুড়ে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের বিস্তারিত বিবরণ সরকারকে অবহিত করতে হবে।

এবারের ধারাবাহিকে আমরা অবহিতকরণ ব্যবস্থার কী ধরনের রদবদল হয়েছে এবং এর ফলে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তার উপর আলোকপাত করব। এ পর্বে আমরা এব্যবস্থা কিভাবে সরলীকৃত করা হয়েছে তার উপর নজর দেব।

চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর থেকে বোঝা লাঘব করে আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অবহিতকরণ ব্যবস্থা নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে সীমিত রেখেছে:
 ৬৫ বা তার বেশি বয়সী লোকজন
 হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন রয়েছে এমন লোকজন
 গর্ভবতী নারী এবং গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন যারা

এর বাইরে শরীরে ভাইরাস রয়েছে এমন লোকজনের ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেবল তাদের মোট সংখ্যা এবং বয়সের দিক থেকে রোগীরা কোন গ্রুপে রয়েছেন সেটাই শুধু জানাতে হবে।

প্রচলিত অবহিতকরণ ব্যবস্থায় সংক্রামিত বলে যাদেরকে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করেছে, সেই সমস্ত লোকজনের তথ্য রাষ্ট্র পরিচালিত একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে তাদের নথিভুক্ত করতে হতো। সরলীকৃত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকা জেলাগুলো জানাচ্ছে যে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর থেকে বোঝা লাঘব হয়েছে।

তবে ডাক্তার এবং বিশেষজ্ঞরা সংযোগ ব্যবস্থা প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তুলে ধরেন যাতে করে হালকা উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীরা অবস্থার অবনতি ঘটলে দ্রুত চিকিৎসকদের দেখাতে পারেন।

কেন্দ্রীয় সরকার এধরনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য জেলা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। একই সাথে হালকা উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীরাও যাতে কিছু সময়ের জন্য নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে সেই লক্ষ্যে তাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে সরকার।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭৩: কমিয়ে আনা হয়েছে স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ: ঝুঁকি এবং সাবধানতা (৫) রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি কমিয়ে আনা

উত্তর-৪৭৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ থেকে করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময়সীমা দশ দিন থেকে সাত দিনে কমিয়ে এনেছে। এই ধারাবাহিকে আমরা যেসব উপাত্তের উপর ভিত্তি করে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সেরকম কিছু উপাত্ত আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেব। রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে হলে কী করা দরকার সেদিকে এবারে আমরা নজর দেব।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান ওয়াকিতা তাকাজি বলেছেন, স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় কমিয়ে আনার পর রোগ ছড়ানোর অবশিষ্ট ঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব উদ্যোগে ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার এবং ঝুঁকি যেন আমরা কমিয়ে আনতে পারি সেভাবে কাজ করা উচিত।
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত লোকজন যে ১০ দিন পর্যন্ত রোগ ছড়িয়ে দিতে পারে, বৈঠকের উৎসাহী অংশগ্রহণকারীরা তার উপর জোর দিয়েছেন। বাইরে যাওয়ার সময় সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার আহ্বান তারা জানান। স্বাস্থ্য সেবা কর্মী এবং বৃদ্ধদের সেবা কেন্দ্রে যারা কাজ করছেন, তারা সহ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনের সাথে প্রতিদিন যাদের যোগাযোগ হচ্ছে তাদের প্রতি অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সেরকম লোকজনের উচিত হবে পরীক্ষার ফলাফল যেন তাদের নেগেটিভ হয়, কাজে ফিরে যাওয়ার আগে তা নিশ্চিত করে নেয়া।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এছাড়া ভাইরাসে যারা সংক্রমিত হয়েছেন তারা যেন দশ দিন পর্যন্ত সুরক্ষায় থাকা ছেড়ে না দেন, স্থানীয় অধিবাসীদের সে সম্পর্কে জানানোর জন্য সারা দেশের বিভিন্ন পৌরসভার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। যেসব পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলোর মধ্যে যেমন দেহের তাপমাত্রা পরিমাপ করে নেয়ার মধ্যে দিয়ে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা, বৃদ্ধদের মতো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনের সাথে যোগাযোগ ও সেই সাথে বিনা প্রয়োজনে সেবা কেন্দ্রে যাওয়া এড়িয়ে চলা, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা ও যেসব সমাবেশে খাওয়া দাওয়া করা হয় সেখান থেকে দূরে থাকা, এবং মাস্ক পরা অন্তর্ভুক্ত আছে।
স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় কমিয়ে আনা হলেও করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্যের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি যে ৭ দিনের পরেও বজায় থাকে, সেই ধারণা মাথায় রেখে আমাদের কাজ করা দরকার।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭২: কমিয়ে আনা হয়েছে স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ: ঝুঁকি এবং সাবধানতা (৪) বিশেষজ্ঞদের মতামত

উত্তর-৪৭২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার গত ৭ই সেপ্টেম্বর থেকে করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময়কাল কমিয়ে এনেছে। উপসর্গ থাকা লোকজনকে এখন ১০ দিনের পরিবর্তে ৭ দিন স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে। এই ধারাবাহিকে, আমরা এই পদক্ষেপ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এবং নিরাপত্তার উপর আলোকপাত করব। এই পর্বে, আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর নজর দেব।

৭ই সেপ্টেম্বরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময়কাল কমিয়ে আনা নিয়ে মতামত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে।

যারা অনুমোদন করেছেন তারা বলেন, এটা সবার জানা যে, এই ভাইরাস উপসর্গ দেখা দেয়ার দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত একজন রোগীর কাছ থেকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। তারা এও বলেন, এই পদক্ষেপ চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং সামাজিক কার্যক্রমকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয়।

এদিকে, যারা এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করছেন তারা বলেন, ঝুঁকি মূল্যায়ন ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়নি। তারা এও বলেন, সংক্রমণের ঝুঁকি ১০ শতাংশের উপরে হলে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদকাল তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ সেই সুযোগকে ছাড়িয়ে যায় যা বৈজ্ঞানিকভাবে অনুমোদন করা যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলেন, হাসপাতাল এবং প্রবীণদের সেবা প্রদান করা স্থাপনাগুলোতে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় অবশ্যই কমিয়ে আনা উচিত নয়।

কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি তার উদ্বেগ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, অষ্টম দিন থেকে সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপসমূহ কতখানি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে বদলে যেতে পারে, তাই সংক্রমণ পরিস্থিতির প্রভাব সংখ্যাগতভাবে উপস্থাপন করাটা খুবই কঠিন। কিন্তু তিনি বলেন, কমপক্ষে, নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার হার যা একজন রোগী কতজন লোককে সংক্রমিত করতে পারে সেই সংখ্যাকে বোঝায়, তা বাড়বে। নিশিউরা বলেন, ফলশ্রুতিতে, যখন ভবিষ্যতে আর একটি তরঙ্গ আসবে, তখন আগের থেকে আরও দ্রুতগতিতে রোগীর সংখ্যা বাড়বে এবং তা চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাকে চাপের মুখে ফেলতে পারে বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭১: কমিয়ে আনা হয়েছে স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ: ঝুঁকি এবং সাবধানতা (৩) ৮ম দিনের পরে সংক্রমণের ঝুঁকি

উত্তর-৪৭১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার গত ৭ই সেপ্টেম্বর থেকে করোনাভাইরাস রোগীদের জন্য স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময়কাল ১০ দিন থেকে কমিয়ে ৭ দিনে নির্ধারণ করেছে। এই ধারাবাহিকে, আমরা এমন কিছু উপাত্ত আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিব, যা এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। আর এই পর্বে উপসর্গ দেখা দেয়ার ৮ম দিন পরে সংক্রমণের ঝুঁকির উপর আমরা আলোকপাত করব।

২০২১ সালের নভেম্বর এবং ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে জাপানের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত একটি সমীক্ষায় (যার উপর আগের কয়েকটি পর্বে আলোকপাত করা হয়েছে), উপসর্গ দেখা দেয়া লোকজনের মধ্যে ঠিক কতদিন ধরে ভাইরাসটিকে সনাক্ত করা গেছে, তা যাচাই করে দেখা হয়।

উপসর্গ দেখা দেওয়ার দিনটিকে শূন্য দিন হিসেবে বিবেচনা করলে, প্রথম দিনে ৯৬.৩ শতাংশ, চতুর্থ দিনে ৬০.৩ শতাংশ এবং সপ্তম দিনে ২৩.৯ শতাংশ রোগীর দেহে ভাইরাসটি সনাক্ত করা হয়। এই অনুপাত অষ্টম দিনে ১৬.০ শতাংশে, নবম দিনে ১০.২ শতাংশে এবং দশম দিনে ৬.২ শতাংশে নেমে আসে৷ এটি একাদশ দিনে ৩.৬ শতাংশে, দ্বাদশ দিনে ২.০ শতাংশে, ত্রয়োদশ দিনে ১.১ শতাংশে এবং চতুর্দশ দিনে ০.৬ শতাংশে নামা অব্যাহত রাখে৷
অন্য কথায়, ৮ম দিনে ১০ শতাংশেরও বেশি রোগীর দেহে ভাইরাসটি পাওয়া যায়, যখন নতুন নিয়মের অধীনে তাদের স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময়কাল ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।

কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত থাকা একটি গ্রুপের একটি গবেষণার ফলাফল ৭ই সেপ্টেম্বর বিশেষজ্ঞদের একটি বৈঠকে উপস্থাপন করেন। এই ফলাফল অনুযায়ী, ৫ম দিনে ৫০ শতাংশের বেশি এবং ৮ম দিনে ২৫ শতাংশ রোগীর দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি সনাক্ত করা গেছে। একারণে নিশিউরা এই বলে সতর্ক করে দেন যে উপসর্গ দেখা দেয়ার পর এমনকি একটি নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত সঠিক।

প্রশ্ন-৪৭০: কমিয়ে আনা হয়েছে স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ: ঝুঁকি এবং সাবধানতা (২) বৈজ্ঞানিক ভিত্তি

উত্তর-৪৭০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ৭ই সেপ্টেম্বর থেকে জাপান সরকার করোনাভাইরাসের রোগীদের স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ কমিয়ে দিয়েছে। এই পদক্ষেপের পেছনে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কী এবং নিরাপদ থাকার জন্য কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে --- চলতি ধারাবাহিকে এই বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের যে রোগীদের ক্ষেত্রে উপসর্গ প্রতীয়মান, তাদের বেলায় স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ ১০ থেকে কমিয়ে ৭ দিন করা হয়েছে। আমরা দেখবো কী ধরনের উপাত্তের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?

উপসর্গ থাকা ৫৯ জন করোনাভাইরাস রোগীর ভাইরাস সংক্রান্ত উপাত্ত ৭ই সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের এক বৈঠকে পেশ করা হয়।

যেদিন উপসর্গ প্রথম দেখা দেয় সেই দিনটিকে শূন্য দিবস হিসেবে ধরে নিলে, সপ্তম দিবস থেকে ১৩-তম দিবসের মধ্যে রোগীর দেহ থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের পরিমাণ তৃতীয় দিবসের পরিমাণের কমবেশি এক-ষষ্ঠাংশে নেমে আসে। ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত যে সময়ে বিএ.১ ওমিক্রন উপ-ধরনটি বিস্তার লাভ করছিল, সেসময় জাপানের সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউটের পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে এই উপাত্ত প্রস্তুত করা হয়।

গবেষকরা বলছেন, যদিও সপ্তম দিনের পরেও রোগীদের দেহ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া অব্যাহত থাকে, তবে অন্য লোকেদের সংক্রমিত করার ঝুঁকি ততদিনে কমে আসে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৯: কমিয়ে আনা হয়েছে স্ববিচ্ছিন্ন থাকার মেয়াদ: ঝুঁকি এবং সাবধানতা (১) আগের নিয়মাবলীর পরিবর্তন

উত্তর-৪৬৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ থেকে শুরু করে জাপান সরকার স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময় সংক্ষিপ্ত করে নেয়া সহ করোনাভাইরাস রোগীদের উপর থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করে নিয়েছে। শরীরে উপসর্গ থাকা লোকজনকে এখন ১০ দিনের পরিবর্তে ৭ দিন নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।

এবারের ধারাবাহিকে আমরা নতুন নিয়মাবলীর পিছনে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, নিরাপত্তার বিষয়গুলো এবং এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব।
সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখের পর থেকে স্ব-বিচ্ছিন্নতার নতুন নিয়মগুলো হলো –
■ শরীরে উপসর্গ থাকা লোকজন
উপসর্গগুলো ভালো হতে শুরু করার পর কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা কেটে গেলে উপসর্গ দেখা দেয়ার ৮ দিন পর বিচ্ছিন্ন থাকার সময় শেষ হবে।

■ শরীরে উপসর্গ না থাকা লোকজন
প্রাথমিক পরীক্ষা করে দেখার ৬ দিন পর বিচ্ছিন্ন থাকার সময় শেষ হবে যদি পঞ্চম দিনের পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসে।
তবে যারা বয়স্ক লোকজনের সংস্পর্শে আসেন বা অন্যান্যদের সাথে নৈশভোজ করে থাকেন তাদেরকে পুরোদস্তুর সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ নিতে হবে। উপসর্গ থাকা লোকজন উপসর্গ দেখা দেয়ার ১০ দিন পর্যন্ত অন্যান্যদেরকে সংক্রমিত করতে পারেন। উপসর্গ না থাকা লোকজনের ক্ষেত্রে এই সময় হলো ৭ দিন।

■ হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোর বয়স্ক লোকজন
এ ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন হবে না। উপসর্গগুলো ভালো হতে শুরু করার পর কমপক্ষে ৭২ ঘন্টা অতিক্রান্ত হলে উপসর্গ দেখা দেয়ার ১১ দিন পর বিচ্ছিন্ন থাকার সময় শেষ হবে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৮: করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য (৫) যেসব ওষুধ মূলত অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছিল

উত্তর-৪৬৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা কোভিড-১৯’এর ওষুধ ও চিকিৎসা এবং এদের কার্যকারিতা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্যাদির ওপর আলোকপাত করছি। এবারে বলবো এমন কিছু ওষুধের কথা যেগুলো মূলত তৈরি করা হয়েছিল অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য।

ভাইরাস রোধী ওষুধ রেমডেসিভির মূলত তৈরি করা হয়েছিল ইবোলা রোগের চিকিৎসার জন্য। ২০২০ সালের মে মাসে জাপানে এই ওষুধটিকেই করোনাভাইরাসের রোগীর জরুরি চিকিৎসায় ব্যবহারের প্রথম ওষুধ হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। গোড়ার দিকে এই ওষুধ মাঝারি থেকে গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো। ২০২২ সালের মার্চ মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ওষুধটির ব্যবহার সম্প্রসারিত করে হাল্কা থেকে মাঝারি মাত্রার উপসর্গ থাকা এমন রোগীদের ক্ষেত্রেও যাদের অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠার ঝুঁকি আছে।

২০২০ সালের জুলাই মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেক্সামেথাসোন নামের একটি স্টেরয়েড ওষুধ করোনাভাইরাসের রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তার আগে এই ওষুধটি মূলত ব্যবহার করা হতো গুরুতর নিউমোনিয়া অথবা রিউম্যাটিজম বা বাতের রোগীর চিকিৎসায়। এখন এই ওষুধটি কোভিডের মাঝারি ধরন বা গুরুতর উপসর্গ থাকা রোগী যারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এবং যাদের বাড়তি অক্সিজেনের সহায়তা নিতে হচ্ছে, তাদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে।

২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ব্যারিসিটিনিব নামের একটি প্রদাহ রোধী ওষুধ মাঝারি ধরন বা গুরুতর উপসর্গ থাকা করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। মূলত এটি ছিল খাওয়ার ওষুধ। এই বড়ি রিউম্যাটিজম আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো। জাপানে এই ওষুধের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত। এই ওষুধ কেবল মাত্র রেমডেসিভিরের সাথে ব্যবহার করা যায়।

রিউম্যাটিজম আর্থ্রাইটিসের ওষুধ অ্যাকটেমরা, যা টোসিলিযুমাব নামেও পরিচিত। এই ওষুধটিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। স্টেরয়েডের সাথে এই ওষুধটি মাঝারি ধরন বা গুরুতর উপসর্গে আক্রান্ত কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৭: করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য (৪) অ্যান্টিবডি চিকিৎসা

উত্তর-৪৬৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা কোভিড-১৯এর ওষুধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য এদের কার্যকারিতা সহ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এবারে আমরা অ্যান্টিবডি চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করব।

অ্যান্টিবডি ওষুধের মধ্যে থাকা মানুষের তৈরি অ্যান্টিবডি করোনা ভাইরাসের পৃষ্ঠে থাকা স্পাইক প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয় যার ফলে ভাইরাসটি মানব কোষে প্রবেশ করতে পারে না। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্যানেল কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ২০২১ সালের জুলাই মাসে রোনাপ্রেভে নামের একটি অ্যান্টিবডি সংমিশ্রণকে অনুমোদন করেছিল। মৃদু উপসর্গ রয়েছে এমন কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য জাপানে অনুমোদন পাওয়া এটি প্রথম ওষুধ। এটি হল ক্যাসিরিভিমাব এবং ইমডেভিমাব নামের দুটি ভাইরাস নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডির সংমিশ্রণ, যা ইনজেকশন বা ড্রিপের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করানো হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রণালয়ের প্যানেল যেভুডি নামের অপর একটি অ্যান্টিবডি ওষুধ অনুমোদন করেছিল যা সাধারণত সোট্রোভিমাব হিসাবে পরিচিত। এক ধরনের অ্যান্টিবডি আছে এই ওষুধে এবং এটি ড্রিপের মাধ্যমে রোগীর শরীরে দেয়া হয়ে থাকে।


দুটি ওষুধই বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে বা শরীরে কোন রকমের রোগ রয়েছে এমন লোকজন যারা নিউমোনিয়া সহ মৃদু থেকে মাঝারি উপসর্গে ভুগছেন তবে তা গুরুতর কোন উপসর্গ হয়ে ওঠার ঝুঁকি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে দেয়া হয়ে থাকে। কোভিড-১৯ উপসর্গ দেখা দেয়ার সাত দিনের মধ্যে একবার এই ওষুধ তাদের দেয়া হয়ে থাকে। প্যানেল রোগ নিবারক হিসাবেও এটি অনুমোদন করেছে। দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন লোকজন যারা সংক্রমিত হলে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে, তারা সংক্রমিত লোকজনের সংস্পর্শে এলে তাদেরকে অ্যান্টিবডি দেয়া হবে।

ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে রোনাপ্রেভে ওষুধটি যেসব রোগীকে দেয়া হয় তাদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৭০ শতাংশের কম। পরীক্ষায় আরও দেখা যায় যে যেভুডি ওষুধ যাদেরকে দেয়া হয় তাদের ক্ষেত্রে এধরনের ঝুঁকি প্রায় ৮৫ শতাংশের কম।

তবে অ্যান্টিবডি চিকিৎসায় কয়েকটি ত্রুটি রয়েছে। রূপান্তরিত ভাইরাসের নতুন ধরনের বেলায় এগুলো প্রায়ই খুব একটা কার্যকর হয় না। ওমিক্রন ধরনের সর্বশেষ সংক্রমণের চূড়ার পিছনে থাকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে বিদ্যমান অ্যান্টিবডি ওষুধগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে কম কার্যকর বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোভিড-১৯ চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকার সর্বশেষ সংস্করণে শুধুমাত্র অন্য কোন বিকল্প না থাকলে তবেই চিকিৎসকদের এই ওষুধগুলো ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জাপান আগস্ট মাসের ৩০ তারিখ অ্যান্টিবডি চিকিৎসার জন্য ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাস্ট্রাযেনেকার তৈরি ইভুশেল্ড নামের নতুন একটি ওষুধ অনুমোদন করেছে। গুরুতর রোগ বা উপসর্গ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, এমন লোকজনের ক্ষেত্রেই প্রধানত এটা ব্যবহার করা হবে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৬: করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য (৩) যোকোভা

উত্তর-৪৬৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা কোভিড-১৯এর ওষুধ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য এদের কার্যকারিতা সহ আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এবারে আমরা যোকোভা নিয়ে আলোচনা করব।

জাপানের ওষুধ কোম্পানি শিওনোগি এদের ওষুধ যোকোভার অনুমোদন লাভের জন্য আবেদন করেছে, যে ওষুধ হালকা উপসর্গ দেখা দেয়া কোভিড-১৯ রোগীরা এমন কি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি কম থাকলেও গ্রহণ করতে পারেন।

এই ওষুধ ভাইরাসের ব্লুপ্রিন্ট হিসাবে কাজ করা আরএনএ প্রতিলিপি তৈরি করে নেয়ার জন্য দায়ী একটি এনজাইমের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করার মধ্য দিয়ে কাজ করে।

এবছর এপ্রিল মাসে কোম্পানি জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চালানো ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে। ১২ থেকে ৭০ বছর বয়সী হালকা থেকে মাঝারি ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়া ৪২৮ জন রোগী এতে জড়িত ছিলেন।

কোম্পানি বলছে রোগীদের দিনে একবার ওষুধের একটি ডোজ দেয়া হয় এবং তৃতীয় দিনের পর কাশি, গলা ব্যথা এবং সর্দি ও জ্বর সহ পাঁচটি উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের একটি দলে প্লাসেবো যাদের দেয়া হয়েছে তাদের তুলনায় উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।

শিওনোগি আরও বলেছে যে সংক্রামক ভাইরাস থাকা রোগীর আনুপাতিক হার প্লাসেবো দেয়া দলের তুলনায় ৯০ শতাংশ হ্রাস পায়।

তবে কোম্পানি উল্লেখ করে যে ডায়ারিয়া এবং বমি সহ ১২টি উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের বেলায় প্লাসেবো দেয়া দলের তুলনায় বড় ধরনের কোন পার্থক্য দেখা যায় নি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্যানেল ওষুধের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা যাচাই করে দেখার জন্য জুন ও জুলাই মাসে বৈঠক করেছিল। প্যানেলের কয়েকজন সদস্য মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়া বন্ধ করতে ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা করা যায় বলে উল্লেখ করলেও ওমিক্রন ধরনের উপসর্গের বিরুদ্ধে এটা আসলেই কার্যকর কিনা তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা হয়।

ওষুধটি অনুমোদন করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্যানেল স্থগিত রাখে এবং মূল্যায়ন অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়।

শিওনোগি বলেছে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকের মধ্যে পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিকাল উপাত্ত কোম্পানি প্রকাশ করবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৫: করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য (২) প্যাক্সলোভিড

উত্তর-৪৬৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যকারিতা’সহ জাপানে অনুমোদিত করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করছি।

জাপান সরকার এখন পর্যন্ত মৃদু উপসর্গ থাকা রোগী’সহ করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসায় দু’টি খাওয়ার ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে লাগেভরিও, এটি মার্কিন প্রধান একটি ওষুধ কোম্পানি মার্ক উন্নয়ন করেছে এবং অন্যটি হচ্ছে ফাইজারের প্যাক্সলোভিড, এটিও মার্কিন কোম্পানির ওষুধ। উভয় ওষুধই মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি থাকা রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয় এবং কোষের মধ্যে ভাইরাসের বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ার হারকে কমাতে কার্যকর।

ফাইজার জানাচ্ছে, তাদের ক্লিনিকাল পরীক্ষা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, প্যাক্সলোভিড উপসর্গ দেখা দেয়ার তিন দিনের মধ্যে চিকিৎসা পাওয়া রোগীর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর ঝুঁকিকে ৮৯ শতাংশ কমাতে পারে এবং উপসর্গ দেখা দেয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে চিকিৎসা পাওয়া রোগীর মধ্যে এই শতকরা হার হচ্ছে ৮৮ শতাংশ।

এই কোম্পানিটি এও জানাচ্ছে, চিকিৎসার কারণে দেখা দেয়া বিরূপ ঘটনা প্যাক্সলোভিড এবং প্লাসেবোর মধ্যে তুলনামূলকভাবে একই রকম ছিল এবং এগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ছিল মৃদু মাত্রার। ওষুধের প্যাকেটের ভিতরে থাকা নিয়মাবলীতে বলা হচ্ছে যে, এই ওষুধ মৃদু থেকে মাঝারি উপসর্গের কোভিড-১৯’এর চিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য এবং এটি দিনে দু’বার করে ৫ দিন সেব্য।
প্যাক্সলোভিড বিস্তৃত ব্যবহারের জন্য নয়, কেননা প্রায় ৪০ ধরনের ওষুধ রয়েছে যার সাথে এটি একসঙ্গে সেবন করা নিষিদ্ধ। বৃক্ক সংক্রান্ত বৈকল্য থাকা কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে ডোজ সমন্বয় করে নেয়ারও প্রয়োজন রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, ২০ লক্ষ লোকের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ওষুধ মজুত রয়েছে, তবে অন্যদিকে জুলাই মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত, প্রায় ১৭ হাজার ৬০০ লোক চিকিৎসা হিসেবে এই ওষুধ সেবন করেছেন। এটা ধারণা করা হচ্ছে যে, লাগেভরিও’র মত প্যাক্সলোভিড’ও বেশি মাত্রায় প্রভাবিত না করেই রূপান্তরিত ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৪: করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য (১) লাগেভরিও

উত্তর-৪৬৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা করোনাভাইরাস-রোধী ওষুধ বিষয়ক একটি নতুন ধারাবাহিক শুরু করছি। এর প্রথম পর্বে, আমরা জাপানে অনুমোদিত ওষুধগুলোর কার্যকারিতা’সহ অন্যান্য হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করব।

জাপান সরকার মৃদু উপসর্গ থাকা ব্যক্তি’সহ করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য এপর্যন্ত দুটি মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ অনুমোদন করেছে...বৃহৎ মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি মার্কের উদ্ভাবিত লাগেভরিও এবং যুক্তরাষ্ট্রেরই আরেকটি কোম্পানি ফাইজার উৎপাদিত প্যাক্সলোভিড। উভয় ওষুধই গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

লাগেভরিও’র জেনেরিক নাম হল মোলনুপিরাভির। এটি ২০২১ সালের ২৪শে ডিসেম্বর জাপান সরকারের কাছ থেকে বিশেষ জরুরি অনুমোদন পায়৷ ওষুধটি ভাইরাসের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্লুপ্রিন্ট হিসেবে কাজ করা আরএনএ’প্রতিলিপি তৈরির জন্য দায়ী একটি এনজাইমের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করার মধ্য দিয়ে মানবদেহের অভ্যন্তরে ভাইরাসটির বৃদ্ধি রোধ করে।

প্যাকেটে দেয়া নথি এবং অন্যান্য তথ্য অনুসারে, ওষুধটির লক্ষ্য হচ্ছে ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ যুক্ত রোগী যারা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদের মধ্যে বয়স্ক এবং স্থূলদেহী বা ডায়াবেটিক রোগীরা অন্তর্ভুক্ত আছেন। উপসর্গ দেখা দেয়ার পাঁচদিনের মধ্যেই ওষুধটি প্রতিদিন দুবার করে মোট পাঁচ দিনের জন্য গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু ভ্রূণের উপর সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে গর্ভবতী নারী বা সম্ভাব্য গর্ভবতীদের এটি দেয়া উচিত নয়। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের লাগেভরিও দেয়া হলে, হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কমে যায়। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট বিরূপ ঘটনার সংখ্যা প্লাসেবো এবং ওষুধ প্রদান করা গ্রুপগুলোর মধ্যে একই রকম বলে দেখা গেছে।

জাপানে এ পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৮০ হাজারেরও বেশি লোককে লাগেভরিও সেবন করতে দেয়া হয়েছে। এর প্রস্তুতকারকের ভাষ্যানুযায়ী, এখন একটি উৎপাদন ব্যবস্থা চালু থাকায়, তারা স্থিতিশীলভাবে ওষুধটি সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। আর সরকার এই ওষুধের সম্পূর্ণ খরচ বহন করে বলে এরজন্য রোগীদের উপর কোন আর্থিক চাপও পড়ে না।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬৩: ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য ধরে নেয়া করোনাভাইরাসের টিকা (৫) বর্তমানে লভ্য টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যকারিতা -২

উত্তর-৪৬৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা আলোকপাত করছি ওমিক্রনের উপধরনগুলোর সাথে মোকাবিলা করার জন্য তৈরি নতুন টিকার ওপর। ধারাবাহিকের এই পর্বে বর্তমানে লভ্য টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যকারিতা সম্পর্কে জাপানে সঙ্কলিত উপাত্তের কথা তুলে ধরবো।

জুলাই মাসে টোকিও মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্স, স্বাস্থ্যসেবা খাতের কর্মী যারা টিকার চতুর্থ ডোজ নিয়েছেন তাদের রক্তের নমুনায় শরীরের কোষকে রোগজীবাণু থেকে রক্ষাকারী অ্যান্টিবডি’র পরিমাণ কত, সে সম্পর্কে উপাত্ত প্রকাশ করেছে।

৬০ এবং ৭০’এর কোঠায় যাদের বয়স, তাদের রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে তৃতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার চার মাস পর রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি’র গড় মাত্রাটি ছিল ৮শো ৫৫, তবে চতুর্থ ডোজ নেওয়ার পর তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ৯শো ৪২ হয়ে ওঠে।

তৃতীয় ডোজ নেওয়ার পর লোকের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা, দ্বিতীয় ডোজ-পরবর্তী মাত্রার তুলনায় গড়ে বেশি থাকে, যদিও তা সকলের ক্ষেত্রে সমান হয় না --- মানুষে মানুষে এই মাত্রায় খুব হেরফের হতে দেখা যায়। তবে চতুর্থ ডোজ যারা নিয়েছেন, দেখা গেছে তাদের প্রত্যেকেরই শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মহামারি সংক্রান্ত সরকারের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের অন্যতম সদস্য তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাতেদা কাজুহিরো বলেন, ভবিষ্যতে আমরা হয়তো ওমিক্রন থেকে আলাদা অন্য কোনও ধরনের স্ট্রেইনের প্রকোপ দেখতে পাব। তিনি বলেন যারা এখনও তৃতীয় ডোজের টিকা নেননি এবং যারা ইতোমধ্যে চতুর্থ ডোজের জন্য কুপন হাতে পেয়ে গেছেন, তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা নেওয়া উচিত, যাতে এই ভাইরাসের বর্তমান বিস্তার রোধ করা যায়।

ধারনা করা হচ্ছে যে বর্তমানে লভ্য টিকার একাধিক ডোজ নিয়ে রাখলে, তা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে এবং একটা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত সংক্রমণ প্রতিরোধও করতে পারে। রোগ প্রতিরোধ এবং রোগ জীবাণু ও সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে একমত যে লোকজনের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের প্রাপ্য টিকার ডোজ নিয়ে নেওয়া এবং কোন্‌ ধরনের টিকা নেবেন, তা নিয়ে অতিরিক্ত মাথা না ঘামানো।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬২: ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য ধরে নেয়া করোনাভাইরাসের টিকা (৪) টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যকারিতা -১

উত্তর-৪৬২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা বিষয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকে আমরা আলোকপাত করছি। এবারে আমরা ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রণীত উপাত্ত অনুযায়ী টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যকারিতা নিয়ে কথা বলব।

বিশ্ব জুড়ে জানা যাওয়া খবরের উপর ভিত্তি করে দেখা গেছে যে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে চতুর্থ টিকাটি খুবই কার্যকর।

ইসরায়েলে গবেষকদের একটি দল ২৯ হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর উপর টিকার চতুর্থ ডোজের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে দেখে। আগস্ট মাসের ২ তারিখ তাদের গবেষণার ফলাফল জামা নেটওয়ার্ক ওপেন নামের একটি চিকিৎসা সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয় যে ওমিক্রনের উপধরণ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে এরকম সময় জানুয়ারি মাসে চতুর্থ টিকা পাওয়া ৫ হাজার ৩০০’র বেশি চিকিৎসা কর্মীদের মধ্যে ৩৬৮ জন পরে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তিনবার টিকা পেয়েছেন এমন ২৪ হাজারেরও বেশি কর্মীর ক্ষেত্রে ৪ হাজার ৮০২ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হন। সংক্ষেপে বলতে গেলে তিন বার টিকা পাওয়া লোকজনের মধ্যে সংক্রমণের হার হলো ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ। সেখানে চার বার টিকা নিয়েছেন এমন লোকজনের মধ্যে সংক্রমণের হার অনেক কম, মাত্র ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ বিষয়ক কেন্দ্র সিডিসি, বিএ.২ সহ ওমিক্রনের উপধরনের বিস্তারের মধ্যে ১০টি অঙ্গরাজ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এমআরএনএ কোভিড-১৯ টিকার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে দেখেছে। তাদের গবেষণার ফলাফল জুলাই মাসে প্রকাশ করা হয়েছিল, যাতে দেখা যায় যে ৫০ বা তার বেশি বয়সী লোকজনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধ করতে টিকার কার্যকারিতা ছিল তৃতীয় ডোজ নেয়ার চার মাস পরের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি। তবে চতুর্থ ডোজ নেয়ার এক সপ্তাহ পর এই হার বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। সুপারিশ করা হলে বিলম্ব না করে অতিরিক্ত এই ডোজ নেয়ার জন্য লোকজনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে সিডিসি।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬১: ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য ধরে নেয়া করোনাভাইরাসের টিকা (৩) টিকা কখন নিতে হবে

উত্তর-৪৬১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা বিষয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকে এবারে আমরা আপনার পরবর্তী বুস্টার টিকার সময়ের উপর আলোকপাত করছি।

জাপান সরকার দ্রুত হলে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকাদান শুরু করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ফলে যেসব লোকজন এখনও টিকার তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ডোজ নেন নি, তারা হয়তো ভাবছেন নতুন এই টিকার জন্য তারা অপেক্ষা করবেন, নাকি লভ্য টিকা এখন নিয়ে নেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবসাইট বলছে যে আগষ্ট মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত ৮ কোটি ১০ লক্ষ ১০ হাজার মানুষ, বা মোট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশ তিনটি টিকা নিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, বৃদ্ধ লোকজনের মতো যাদের জন্য চতুর্থ টিকার সুপারিশ করা হয়েছে, সেরকম ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষকে এটা দেয়া হয়েছে।

জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ওয়াকিতা তাকাজি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টিকা বিশেষজ্ঞ প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগষ্ট মাসের ১০ তারিখে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন যে এমন কি অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওমিক্রন উপধরনকে লক্ষ্য ধরে নেয়া টিকা পাওয়া গেলেও, তাৎক্ষনিকভাবে সবাইকে দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টিকা পাওয়া যাবে কিনা তা জানা যায় নি। তিনি বলেছেন, বর্তমান টিকা ওমিক্রন সংক্রমণ থেকে মারাত্মক অসুস্থ হওয়া প্রতিরোধ করায় কার্যকর বলে লোকজনের উচিত হবে তাদের পক্ষে সম্ভব হলে দ্রুত টিকার তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ডোজ নেয়া বিবেচনা করে দেখা।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬০: ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য ধরে নেয়া করোনাভাইরাসের টিকা (২) নতুন এই টিকা কতটা কার্যকর?

উত্তর-৪৬০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য ধরে নেয়া করোনাভাইরাসের নতুন টিকার ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে। আর এই পর্বে আমরা নতুন টিকাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।

ফাইজার জানিয়েছে যে, ৫৬ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর উপর চালানো এক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় বিএ.১ উপধরনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি নিউট্রালাইজ বা নিষ্ক্রিয় করার বর্তমান ফাইজারের টিকার তুলনায় ১.৫৬ গুণ বেশি ক্ষমতা থাকা ওমিক্রন ধরনের সাথে অভিযোজিত টিকাকে চতুর্থ ডোজ টিকা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কোম্পানিটি জানায়, এই নতুন টিকার কোন নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি নেই।

পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করার পরে মডার্নার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে চালানো ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, ওমিক্রন ধরনের সাথে অভিযোজিত টিকাকে একটি চতুর্থ ডোজ টিকা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে যেটির বিএ.১ উপধরনের বিরুদ্ধে এন্টিবডি নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতা বর্তমান মডার্নার টিকার তুলনায় ১.৭৫ গুণ বেশি।

মডার্না এও জানায়, এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের – ৭৭ শতাংশ লোক টিকা নেয়ার স্থানের চারপাশে ব্যথা অনুভব করেছেন, ৫৫ শতাংশ লোক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এবং ৪৪ শতাংশ লোকের মাথা ব্যথা ছিল।

এই টিকাগুলো ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫’এর বিরুদ্ধে এন্টিবডি নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বর্তমানের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের বেশিরভাগই বিএ.৫ উপধরনের।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৯: ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য ধরে নেয়া করোনাভাইরাসের টিকা (১) নতুন এই টিকা কীভাবে কাজ করে?

উত্তর-৪৫৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত হলে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ওমিক্রনের উপধরনগুলোকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়ে নতুন করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ধারাবাহিকে নতুন এই টিকার গঠন, তাদের কার্যকারিতা এবং এটি গ্রহণের জন্য পূর্ববর্তী টিকাদানের পর কতদিনের বিরতির প্রয়োজন রয়েছে, তার উপর আলোকপাত করা হবে। আর এই পর্বে আমরা নতুন টিকাগুলো ঠিক কীভাবে কাজ করে, সেই বিষয়ে আলোচনা করব।

নতুন টিকাগুলো ফাইজার এবং মডার্না উৎপাদন করছে। তথাকথিত এই বাইভ্যালেন্ট বা একইসাথে দুটি ধরনের উপর কার্যকর এই টিকা, বিদ্যমান করোনাভাইরাস টিকাগুলোর জন্য ব্যবহৃত উপাদান এবং ওমিক্রন ধরনের বিএ.১ উপধরন থেকে সংগৃহীত উপাদানগুলোর মিশ্রণের মাধ্যমে তৈরি হয়।

বর্তমানে ব্যবহৃত ফাইজার এবং মডার্নার উদ্ভাবিত টিকাগুলো শরীরকে “স্পাইক প্রোটিন” তৈরিতে প্ররোচিত করে। এরপর শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই স্পাইক প্রোটিনের বিরুদ্ধে অসংখ্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং একটি সত্যিকারের ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে এগুলো সেটিকে আক্রমণ করে।

তবে, করোনাভাইরাস ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়ে চলায় ইতোমধ্যে স্পাইক প্রোটিনের আকারে পরিবর্তন এসেছে। এরফলে সংক্রমণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়া রোধের ক্ষেত্রে ওমিক্রনের উপধরনগুলোর বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা কমে গেছে।

ধারণা করা হয় যে স্পাইক প্রোটিনে সামঞ্জস্য আনার জন্য ওমিক্রন ধরনের জিনগত তথ্য ব্যবহার করে বিদ্যমান টিকাগুলোকে হালনাগাদ করা হলে তা টিকার কার্যকারিতা বাড়াবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৮: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৯) আবার বাড়তে থাকা সংক্রমণ কীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে।

উত্তর-৪৫৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসার ব্যাপারে আলোকপাত করছি। সংক্রমণ আবার যখন বাড়তে আরম্ভ করে, তখন কোন্‌ কোন্‌ বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত? এই নিয়ে আমাদের এবারের আলোচনা।

করোনাভাইরাসের অন্য সব ধরনের বেলায় যা, ওমিক্রনের বেলাতেও তাই, একই পথে এর সংক্রমণ ছড়ায়। হাঁচি-কাশি থেকে নির্গত জলীয় কণা এবং জলীয় কণার অতিক্ষুদ্র কণার মাধ্যমে ছড়ায় এই ভাইরাস, বিশেষ করে যে জায়গায় বাতাস চলাচল কম, সেখানে।

নিশ্ছিদ্র সংক্রমণ-বিরোধী পদক্ষেপ নিলে এই রোগ প্রতিরোধ করা যাবে। বলা হয়ে থাকে ওমিক্রনের সংক্রমণ পরিবারের মধ্যেই ঘটে বেশি। তাই বাড়ির মধ্যেও পর্যাপ্ত সংক্রমণ-বিরোধী ব্যবস্থা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাস সংক্রমণে ওমিক্রনের আধিপত্য শুরু হওয়ার পর থেকে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা লোকজনের জন্য বিধিনিষেধের মাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত ভাইরাস বিরোধী নিয়ম অনুসরণ অব্যাহত রাখা। সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উপদেষ্টা প্যানেলের প্রধান ওমি শিগেরু এনএইচকে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, যে পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সংক্রমণের জন্য বিশেষ ভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়, তা একই আছে, কোনও পরিবর্তন হয়নি। ওমি লোকজনকে ভিড় জায়গা বা যে জায়গায় উচ্চস্বরে কথা বলার প্রবণতা বেশি, সেরকম জায়গা এড়িয়ে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন। বয়স্ক ব্যক্তিদের সাথে দেখা করার আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার আহ্বানও তিনি জানিয়েছেন। তিনি একথাও বলেন যে মহামারির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সবার।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৭: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৮) ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা

উত্তর-৪৫৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত লোকজনের “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজন” হিসাবে চিহ্নিত লোকজনের সংস্পর্শে এলে কী করা উচিত, এবারে আমরা তার ওপর আলোকপাত করবো।


পরিবারের কোন সদস্য যদি করোনাভাইরাস রোগীর সাথে “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসেন তবে কী হবে? টোকিও মেট্রোপলিটন সরকারের সংক্রামক রোগ প্রতিহত করার দায়িত্বে থাকা এক বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন যে “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসার ক্ষেত্রে কোন নিয়ম নির্ধারণ করা হয়নি। তারা বলেন যে “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসা হিসেবে চিহ্নিত করা লোকজন ছাড়া পরিবারের অন্য কোন সদস্যের চলাফেরার উপর মেট্রোপলিটন সরকার কোন বিধিনিষেধ আরোপ করে না।
তবে কর্মকর্তারা বলেন যে “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের” ক্ষেত্রে কয়েকটি জায়গায় তাদের নিজস্ব নিয়মাবলী থাকায় নিজেদের নিয়োগকর্তা এবং স্কুলের সাথে নিশ্চিত করে নেয়া উচিত।

কর্মকর্তারা বলছেন যে “ঘনিষ্ট সংস্পর্শে” আসা লোকজনের পরিবারের সদস্যরা যদি ঘটনাক্রমে সংক্রমিত হয়ে থাকেন অথচ কোন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না, সেরকম ক্ষেত্রে যেন তারা নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলো অবলম্বন করে চলেন।
- স্নান করার তোয়ালে ভাগাভাগি করবেন না এবং একসাথে খাবার খাবেন না। যতটা সম্ভব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে থাকার জায়গা আলাদা করে নিন।
- বাড়িতে মাস্ক পরে থাকুন এবং যত্ন সহকারে হাত ধুয়ে তা জীবাণুমুক্ত করুন।
- যেসব স্থানে হাতের ছোঁয়া বেশি লাগে যেমন দরজার হাতল এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের রিমোট কনট্রোল সেগুলোকে জীবাণুমুক্ত করুন।
- নিয়মিত ভাবে ঘরে বায়ু চলাচল করতে দিন।

করোনাভাইরাসের অন্যান্য রূপের তুলনায় ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম বলা হয়ে থাকে এবং একারণে সতর্কতার মাত্রা কমিয়ে আনার প্রবণতা আমাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। তবে পরিবারে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য বা স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে এমন কেউ থাকলে সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৬: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৭) স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকা অবস্থায় কী করা যাবে কিংবা কী করা যাবেনা

উত্তর-৪৫৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত লোকজনের “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। সেরকম সংযোগে আসা লোকজন স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় তাদের কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, এবারে আমরা তার ওপর আলোকপাত করবো।

তাদের উচিত হবে যতটা সম্ভব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া। বাইরে যাওয়ার একান্ত প্রয়োজন হলে মাস্ক পরা এবং হাত ধুয়ে নেয়ার মতো সংক্রমণ-প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অন্য মানুষের সংযোগ তাদের এড়িয়ে যেতে হবে। স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকা অবস্থায় কাজে কিংবা স্কুলে তাদের যাওয়া উচিত হবে না।

টোকিও মেট্রোপলিটন সরকারের নির্দেশিকা বলছে:
- প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া, কাজ এবং স্কুলে যাওয়া থেকে তাদের বিরত থাকতে হবে, এবং বাড়িতে তাদের অবস্থান করতে হবে।
- প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় দেহের তাপমাত্রা তাদের পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
- জ্বর এবং কাশির মত উপসর্গ দেখা দিলে পারিবারিক চিকিৎসক কিংবা করোনাভাইরাসের পরীক্ষা নেয়া ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা প্রতিষ্ঠানের সাথে পরামর্শ করা তাদের উচিত হবে।
- যতটা সম্ভব গণপরিবহন ব্যবস্থার ব্যবহার তাদের এড়িয়ে যেতে হবে।

টোকিওর সেন্ট লুক’স হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নিচের বিষয়গুলোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখার উপদেশ তাদের দিয়েছেন। তিনি বলছেন সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে বলে এসব বিষয় হচ্ছে উপকারী।
- জ্বর কমানো ও ব্যথা উপশমের ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে পাওয়া যায়।
- শরীরে পানির ঘাটতি দূর করে নেয়ার আইসোটনিক পানীয়
- জেলি সদৃশ পানীয়ের মত সহজ প্রাপ্য খাবার
- দৈনন্দিন প্রয়োজনের সামগ্রীর অতিরিক্ত সরবরাহ
- শারীরিক অসুস্থতা থেকে থাকলে চিকিৎসার জন্য দরকার হওয়া ওষুধের অতিরিক্ত ডোজ।

তিনি এছাড়া টিকা নেয়া এবং স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকতে হওয়ার সময় পরামর্শের জন্য প্রয়োজন হতে পারা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে রাখার আহ্বানও লোকজনের প্রতি জানাচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৫: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৬) কর্মস্থলে আক্রান্তের ঘটনা

উত্তর-৪৫৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে, আমরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ”এ আসার বিষয়টি ব্যাখ্যা করব। এবারে আমরা কর্মস্থলে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা কিভাবে সামাল দিতে হবে তার ওপর আলোকপাত করব।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, কর্মস্থলে কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে, সংক্রমিত ব্যক্তির সহকর্মীদের বাড়িতে বা অন্যান্য স্থানে নীতিগতভাবে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনকে সংস্পর্শে আসার দিন থেকে প্রায় ৭ দিন প্রবীণ ব্যক্তি বা প্রবীণদের থাকার স্থাপনা পরিদর্শন, অনেক লোকের সাথে খাওয়া বা পান করা এবং বড় ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার মতো উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
কেউ যদি মাস্ক না পরার মতো ভাইরাস রোধী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে কর্মস্থলে আক্রান্ত কারো সাথে খাবার খান, তাহলে তাদেরকে ৫ দিন স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকা এবং স্বেচ্ছায় করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করানোর মতো সংক্রমণ রোধী প্রচেষ্টা চালানোর জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
এদিকে, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বা প্রবীণদের সেবাদান কেন্দ্র’সহ মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ লোকদের সমবেত হওয়ার স্থানগুলোতে সংক্রমণ নিশ্চিত করা হলে, অতিরিক্ত যত্ন নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে, যারা ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছেন তাদের ৫ দিন স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকা দরকার। যদি অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ফলাফল দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিন নেগেটিভ আসে, তাহলে তৃতীয় দিনে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজন তাদের স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকা শেষ করে দিতে পারেন, যেমন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসার ঘটনার ক্ষেত্রে।
এই নির্দেশিকা কেবল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কর্মরত কর্মীদের ক্ষেত্রেই নয় বরং সব ধরনের লোকজনের প্রতিই প্রয়োগ করা হবে।
মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, চিকিৎসা কর্মী এবং সেবা প্রদানকারী কর্মীরা যদি প্রতিদিন পরীক্ষা করান এবং ফলাফল নেগেটিভ আসে তাহলে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছেন মনে হলেও, তারা কর্মস্থলে যেতে পারবেন।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৪: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৫) স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময়কাল শেষে করণীয়

উত্তর-৪৫৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। দীর্ঘায়িত প্রাদুর্ভাবের মাঝে জাপান সরকার সম্প্রতি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের বিষয়ে তাদের নির্দেশিকা পরিবর্তন করেছে। এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত লোকজনের “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের” সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আর এবারে আমরা স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার পরবর্তী সময়ের ওপর আলোকপাত করব।

করোনাভাইরাস রোগীর “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” এসেছেন হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরে, তারা তাদের কর্মস্থল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন।

গত ১৩ই জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে, জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউট উল্লেখ করেছে যে লোকজন যখন ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত হন, তখন তিন দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা ৫৩.০৫ শতাংশ, পাঁচ দিনের মধ্যে ৮২.৬৫ শতাংশ এবং সাত দিনের মধ্যে ৯৪.৫৩ শতাংশ।

এর মানে হচ্ছে, বর্তমানের পাঁচ দিনের স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময়কালটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি যে সংক্রমিত নন, তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট দীর্ঘ নাও হতে পারে।

অতএব, এক্ষেত্রে এই পরামর্শ দেওয়া হয় যে "ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে" এসেছেন হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিরা সতর্কতার সাথে তাদের তাপমাত্রা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট অবস্থা যাচাই করে দেখবেন এবং সাত দিন শেষ না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়ানো এবং দলবদ্ধভাবে খাবার গ্রহণ না করার মতো সংক্রমণ-রোধী পুঙ্খানুপুঙ্খ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আর এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে এমনকি এই সময়ের পরেও, সংশ্লিষ্ট সকলের সংক্রমণ-রোধী পদক্ষেপ নেয়া অব্যাহত রাখা উচিত।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫৩: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৪) পরিবারের আরও একজন সদস্য যদি সংক্রমিত হয় তখন কী হবে?

উত্তর-৪৫৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে” আসার বিষয়টির ওপর আলোকপাত করছি। এবারের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো পরিবারে একজন সদস্য প্রথমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে আরেকজন সদস্যও যদি সংক্রমিত হন, তখন কী করতে হবে।

সরকারি নির্দেশকায় বলা হয়েছে, পরিবারে দ্বিতীয় কোনো সদস্য সংক্রমিত হলে, অন্য সদস্যদের স্ব-বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার পালা আরম্ভ হবে আবার। যেমন ধরুন, একটি শিশু সংক্রমিত হলো। তার উপসর্গ হাল্কা এবং সে বাড়িতে থেকে ভাল হয়ে উঠতে লাগলো। এরকম দৃষ্টান্তের ক্ষেত্রে নির্দেশিকায় কী করতে বলা হয়েছে, দেখা যাক।

▼ করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফলাফল তখনও জানা না গেলেও, শিশুটির উপসর্গ যেদিন থেকে দেখা দেয়, সেই দিনটিকে ডে-যিরো বা শুরু হওয়ার দিন হিসেবে গণনা করতে হবে, যদি সেই দিন থেকে বাড়ির মধ্যে সংক্রমণ বিরোধী সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরিবারের বাকী সবাইকে স্ব-বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হবে পঞ্চম দিন পর্যন্ত।

▼ পরীক্ষায় সংক্রমণ নিশ্চিত না হওয়া অব্দি সংক্রমণ বিরোধী ব্যবস্থা যদি না নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে যেদিন জানা যাবে যে ফলাফল পজিটিভ, সেই দিনকে ডে-যিরো বা আরম্ভের দিন হিসেবে গণনা করতে হবে। এই দিনের পরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে পাঁচ দিন।

▼ দশ দিনের একটি সময়সীমা স্থির করা হয়েছে সংক্রমিত শিশু’র সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য। উপসর্গ প্রথম যেদিন দেখা দিল তার পরদিন থেকে গণনা করে দশ দিন। সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার আগে এমনকি আর কোনও পরীক্ষাও করা হবে না। তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে সময়সীমা ফুরানোর আগে অন্তত ৭২ ঘন্টা শিশুটির মধ্যে আর কোনও উপসর্গ প্রতীয়মান হচ্ছে না। উপসর্গ যদি আরও বেড়ে যায়, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে উপদেশ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শিশু’র বাবা-মা’কে।

▼ শিশুটির যদি কোনও উপসর্গ না থাকে, তাহলে যেদিন পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হবে, সেই দিনকে ডে-যিরো হিসেবে গণনা করা হবে এবং সপ্তম দিন পর্যন্ত একটি সময়সীমা ধার্য্য করা হবে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্যে। এখানে উল্লেখ করা দরকার, সংক্রমণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির মধ্যে সংক্রমণ বিরোধী ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, পরিবারের বাকী সদস্যদের স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময়সীমা নির্ধারণের জন্য সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার দিনটিকে ডে-যিরো হিসেবে গণ্য করতে হবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫২: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (৩) পরিবারের একজন সদস্য সংক্রমিত হলে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে?

উত্তর-৪৫২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষের “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের” ব্যাখ্যা দিচ্ছি। পরিবারের একজন সদস্য আক্রান্ত হলে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনকে কতদিন ধরে বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হবে, এবারে আমরা সেদিকে আলোকপাত করবো।

পরিবারের একজন সদস্য যখন করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় পজিটিভ প্রমাণিত হন এবং অন্য সদস্যদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়, তাদেরকে তখন বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে বলা হয়।

ঘনিষ্ঠ সংযোগে আসা লোকজন আগে নীতিগতভাবে সাত দিন পর তাদের স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা শেষ করতে পারতেন। তবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২২শে জুলাই থেকে শুরু করে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় পাঁচ দিনে কমিয়ে এনেছে।

নিচের তিনটি দিনকে সর্বশেষ বিবেচনায় সংক্রমিত ব্যক্তির ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বেলায় সূচনার দিন বা শূন্য দিবস ধরা হয়।
- সংক্রমিত ব্যক্তির উপসর্গ যেদিন দেখা দিতে শুরু করে।
- সংক্রমিত ব্যক্তির উপসর্গ দেখা না গেলে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা যেদিন সংগ্রহ করা হয়।
- সংক্রমিত ব্যক্তির পরীক্ষা পজিটিভ হওয়ার পর যেদিন থেকে সংক্রমণ
প্রতিরোধ পদক্ষেপ কার্যকর করা হয়েছে।

আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা লোকজনের পঞ্চম দিন পর্যন্ত স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা দরকার। ষষ্ঠ দিনে স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থা তুলে নেয়া যেতে পারে।

তবে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় – উভয় দিনে সরকারের অনুমোদিত এন্টিজেন পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া গেলে তৃতীয় দিন থেকে এদের বিচ্ছিন্ন অবস্থা তুলে নেয়া যেতে পারে।

সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ বলতে এখানে যা বলা হচ্ছে তার মধ্যে ফেস মাস্ক ব্যবহার করা, হাত ধুয়ে নেয়া, এবং ঘরে প্রায়শই বায়ু সঞ্চালনের ব্যবস্থা রাখা। পরিবারের সদস্যদের সম্পূর্ণ ভিন্ন কক্ষ ব্যবহার করার মতো আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সবরকম সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার দরকার নেই।

অল্প বয়সী শিশুদের বেলায় মাস্ক পরা কঠিন হলে ভালভাবে এদের হাত পরিষ্কার করা এবং একই তোয়ালে ভাগাভাগি করে ব্যবহার না করার মত অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এর বাইরে ঘরে বাতাস সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা এবং যতটা সম্ভব সংযোগ এড়িয়ে চলার মতো মৌলিক সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপও নিতে হবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫১: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (২) ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?

উত্তর-৪৫১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। রোগের বিস্তার দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকায় জাপান সরকার সম্প্রতি সংক্রমিত লোকজনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা সংশোধন করে নিয়েছে। এই ধারাবাহিকে আমরা “ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ” বলতে কী বুঝায় তার ব্যাখ্যা দিচ্ছি। কিভাবে এটা নির্ধারণ করা হয় এবারে আমরা সেদিকে আলোকপাত করবো।

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় বিশেষ কোন ব্যক্তি সংক্রমিত কারও সংস্পর্শে এসেছেন কিনা, নমনীয়ভাবে তা নির্ধারণ করে নেয়ার অনুমতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পৌরসভাকে দিয়ে থাকে। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, সংক্রমণ কোথায় দেখা দিয়েছে তার উপর নির্ভর করে সাড়া ভিন্ন হয়ে থাকবে।

সংক্রমিত ব্যক্তি পরিবারের সদস্য হলে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে কারা আসছেন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তা চিহ্নিত করবে এবং পরিবারের সদস্যরা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় এদের কর্মকাণ্ড সীমিত করার অনুরোধ জানাবে। তবে ভিন্নভাবে প্রত্যেক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নেবে না।

এদিকে, কাজের জায়গায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ির তুলনায় কম মনে করা হয়, ফলে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কাজের জায়গায় ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা সকলকে চিহ্নিত করবে বলে প্রত্যাশা করা যায় না। নিজের কাজের জায়গায় কেউ কোভিড-১৯এ সংক্রমিত হলে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ ছিল কিনা সেই ব্যক্তির নিজেকেই তা ঠিক করে নিতে হবে।

অন্যদিকে, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ও সেই সাথে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি অনেকের আছে বলে বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত স্থাপনায় ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত নির্ধারণ করে নেবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে নার্সারি স্কুল, কিন্ডারগার্টেন, প্রাইমারি স্কুল ও জুনিয়র হাই স্কুলের জন্য অনুসরণ করা নীতি পৌরসভা ও শিক্ষা বোর্ডের ঠিক করে নিতে হবে। প্রিস্কুল এবং স্কুলের শিশুদের বেলায় ফেস মাস্ক পরা হবে কিনা, সেরকম পদক্ষেপ ভিন্ন হতে পারে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫০: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা (১) সংজ্ঞা

উত্তর-৪৫০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ভাইরাসটি বিস্তৃতভাবে যখন ছড়িয়ে পড়বে, তখন কেউ যতই সতর্ক থাকুন না কেন, তা সত্ত্বেও সংক্রমিত হতে পারেন। জাপানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সমাজ এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর এর প্রভাব ন্যূনতম করার জন্য ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি বলে সনাক্ত করা লোকজনের জন্য শর্তসমূহ বদলে নিয়েছে। এই ধারাবাহিকে, আমরা ব্যাখ্যা করে বলব, ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি হিসেবে কাদেরকে চিহ্নিত করা হবে এবং তাদেরকে ঠিক কী করতে হবে। এবারে আমরা কিভাবে এগুলোকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে তার ওপর নজর দেব।

ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি হিসেবে তারাই চিহ্নিত হবেন যারা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি ছিলেন বা এ ধরনের কারো উপস্থিতিতে কিছু সময় কাটিয়েছেন। ধরে নেয়া হয় যে, এইসব ব্যক্তিরা এই ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন এবং সেজন্য আক্রান্ত হতে পারেন।
আপনি একজন ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি কিনা তা সনাক্ত করার জন্য গুটিকয়েক নির্দিষ্ট বিষয় রয়েছে।

--উপসর্গ দেখা দেয়ার দু’দিন আগে থেকে শুরু করে উপসর্গ দেখা দেয়ার ১০ দিন পর পর্যন্ত সময়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত কারো ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে ছিলেন কিনা। তবে, উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করার ৭ দিন পরেও তা যদি মিলিয়ে না যায়, তাহলে এই সময়কালকে উপসর্গ সেরে যাওয়ার পরে ৩ দিন পর্যন্ত সম্প্রসারণ করে নেয়া হয়। যদি রোগীর কোন উপসর্গ না থাকে, তাহলে এই সময়কাল শুরু হবে তাদের পরীক্ষার ২ দিন আগে থেকে এবং শেষ হবে পরীক্ষার ৭ দিন পর।

--আপনি যখন একজন রোগীকে ছোঁবেন কিংবা রোগীর শরীরের তরল লেগে থাকা কিছু ছুঁয়ে ফেলবেন তখন যদি আপনি মাস্ক পরে না থাকেন। একজন রোগীর ছুঁয়ে দেয়ার দূরত্বে ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে থাকলে আপনি ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছেন বলে চিহ্নিত হবেন।

--এমনকি আপনার বাড়িতে একজন রোগী থাকলে কিংবা একজন রোগীর সেবাযত্ন করলে আপনি অপরিহার্যভাবে একজন ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারেন। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং নার্সিং হোমে গ্রহণ করা পদক্ষেপসমূহ পুরোপুরি পালন করে আপনি একজন ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিতে পরিণত হওয়া এড়িয়ে যেতে পারেন।

--আক্রান্ত কারোর আশপাশে ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে যদি আপনি থাকেন, তাহলেও আপনাকে অপরিহার্যভাবে একজন ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা নাও করা হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়, আপনি কথা বলছিলেন কিনা, ঘরটি পর্যাপ্ত খোলামেলা ছিল কিনা অর্থাৎ বাতাসের প্রবাহ ছিল কিনা এবং আপনি একটি মাস্ক পরিধান করে ছিলেন কিনা এ ধরনের বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৯: ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন কী? (৬) আরও বেশি উদ্বেগের উপধরন

উত্তর-৪৪৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের এই ষষ্ঠ পর্বে এবারে আমরা ওমিক্রনের অন্য কিছু উদ্বেগজনক উপধরনের দিকে নজর দেব।

জুলাই মাসের ১২ তারিখে পশ্চিম জাপানের কোবে শহর কোয়ারেন্টিনে দেখা যাওয়ার বাইরে দেশের ভেতরে প্রথম ওমিক্রন বিএ.২.৭৫ উপধরনের সংক্রমণ সনাক্ত হওয়ার খবর দেয়।
জুন মাসে ভারতে প্রথম সনাক্ত হওয়ার পর যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রেও এই উপধরনের দেখা পাওয়া গেছে।

এই উপধরন বিএ.৫ এর মতোই মানুষের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে বলে খবরে বলা হয়েছে। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভারতে এটা বিএ.৫ এর চাইতে দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করে।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলছেন বিএ.২.৭৫ উপ ধরন বিএ.২ এর চাইতে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এড়িয়ে যেতে আরও বেশি সক্ষম। তিনি বলেছেন এর অর্থ হল প্রতিরোধ ক্ষমতা যারা লাভ করেছেন, সেরকম মানুষের বেলায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি হচ্ছে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে পর্যবেক্ষণে থাকা উদ্বেগজনক বিভাগের একটি উপধরন হিসাবে চিহ্নিত করেছে। অধ্যাপক বলছেন জাপানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের উচিত হবে নতুন এই উপধরনের বৈশিষ্ট্যের দিকে ঘনিষ্ঠ নজর রাখা।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৮: ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন কী? (৫) টিকাদান

উত্তর-৪৪৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্বে আমরা করোনাভাইরাসের টিকার কার্যকারিতার দিকে নজর দেব।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের ২৪শে জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজন সংক্রান্ত মে মাসের শেষ নাগাদ পর্যন্ত এক মাসের উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, বিএ.৫ এবং বিএ.২ উপধরনে টিকার কার্যকারিতার মধ্যে খুব একটা উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই।

এদিকে, মার্কিন খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন বা এফডিএ জুন মাসের ৩০ তারিখ ঘোষণা করে যে, বিএ.৪ এবং বিএ.৫ উপধরনের সাথে লড়াই করার জন্য তাদের বুস্টার ডোজ টিকার মধ্যে অতিরিক্ত স্পাইক প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিকে সুপারিশ করছে। তবে, এফডিএ বর্তমান টিকাকে বদলে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে না, কেননা এগুলো আক্রান্ত রোগীদের আরও মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়ার হাত থেকে রক্ষা করার একটি মৌলিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক হামাদা আৎসুও সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, জাপান হয়তো এই শরতে শুরু হওয়া একটি এমনকি অনেক বড় ধরনের তরঙ্গের মুখোমুখি হতে পারে এবং শরতের জন্য একটি টিকাদান কর্মসূচি প্রণয়নের লক্ষ্যে আগাম আলোচনা করা ও পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করার জন্যও তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৭: ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন কী? (৪) এটি কি আরও বেশি রোগ সৃষ্টিকারী?

উত্তর-৪৪৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে আমরা এই ভাইরাস কি আরও বেশি প্যাথোজেনিক বা আরও বেশি সম্ভাব্য রোগ সৃষ্টিকারী কিনা, সেই বিষয়ের উপর নজর দেব।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাতো কেইয়ের নেতৃত্বাধীন জি২পি-জাপান নামক একটি গবেষণা দল অনলাইনে প্রকাশিত একটি নিবন্ধের প্রাক-মুদ্রণ সংস্করণে তাদের এসম্পর্কিত গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেছে।

গবেষকরা শুরুতে কৃত্রিমভাবে বিএ.৫ উপধরনের বৈশিষ্ট্য সম্বলিত একটি ভাইরাসের পাশাপাশি বিএ.২ উপধরনের বৈশিষ্ট্যযুক্ত আরেকটি ভাইরাস তৈরি করেন।

তারপরে, ভাইরাসটি কতটা বৃদ্ধি পাবে তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য, তারা প্রতিটি উপধরন দিয়ে গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করে নেয়া কিছু কোষকে সংক্রামিত করেন।

তারা লক্ষ্য করেন যে এই সংক্রমণ প্রক্রিয়ার ২৪ ঘন্টা পরে বিএ.৫ উপধরনে সংক্রামিত কোষে ভাইরাসের মাত্রা বিএ.২ দ্বারা সংক্রামিত কোষের তুলনায় ৩৪ গুণ বেশি ছিল।

গ্রুপটি এটিও উল্লেখ করেছে যে হ্যামস্টার ব্যবহার করে করা তাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, ইনজেকশনের মাধ্যমে বিএ.২ উপধরন প্রবেশ করানো প্রাণীগুলোর ওজন খুব সামান্য কমেছে, কিন্তু বিএ.৫ উপধরন প্রবেশ করানো অন্য প্রাণীগুলোর ক্ষেত্রে ওজনের প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

গ্রুপটির ভাষ্যানুযায়ী, বিএ.৫ সংক্রমণে ফুসফুসের প্রদাহের মাত্রা বিএ.২ সংক্রমণের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল।

গ্রুপটি এও বলছে যে যদিও মানব দেহের সম্ভাব্য উপসর্গগুলো নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে, তবুও তাদের এই পরীক্ষাগুলো ইতিমধ্যেই এটি নির্দেশ করছে যে বিএ.৫ উপধরন বিএ.২ উপধরনের চেয়ে বেশি প্যাথোজেনিক বা রোগ সৃষ্টিকারী।

অধ্যাপক সাতো বলছেন যে ভাইরাসের বিষাক্ততা সবসময় দুর্বল হবে না। তিনি বলেন, ভাইরাসটি এখনও পরিবর্তিত হয়ে চলেছে এবং তাই এক্ষেত্রে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৬: ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন কী? (৩) গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি

উত্তর-৪৪৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের বিএ.৫ উপধরন নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা জানার চেষ্টা করবো এই উপধরনে সংক্রমিত হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার আশংকা কতখানি।

প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৬ই জুলাই তার সাপ্তাহিক রিপোর্টে জানায়, এমন কোন প্রমাণ মেলেনি যা থেকে বলা যাবে যে বিএ.৫ আর বিএ.২ উপধরনের মধ্যে বিরাট কোন পার্থক্য আছে। তবে রিপোর্টে বলা হয়, বহু দেশে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অথবা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে হওয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

এছাড়া ইউরোপের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ১৩ই জুন এক রিপোর্টে জানায়, তথ্য-উপাত্ত সীমিত হলেও, এমন কোন প্রমাণ এখনও মেলেনি যে ভাইরাসের উপধরনে আক্রান্ত রোগীদের দেহে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে রিপোর্টে এও বলা হয়, সংক্রমণ যদি বাড়ে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং মৃত্যুর সংখ্যা, দুইই আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিদেশের সংক্রমণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলেন, পূর্ববর্তী উপধরনগুলোর চাইতে বিএ.৫ কিছুটা বেশি ছোঁয়াচে এবং এই উপধরন এমনকি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাসম্পন্ন লোকজনকেও সংক্রমিত করতে পারে। এটি বিএ.২’এর জায়গায় আসা অন্য একটি উপধরন, শুধু তাই নয়, এর ফলে সংক্রমণের সংখ্যাবৃদ্ধিও এড়ানো যাবে না হয়তো। তিনি বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ সংক্রমণ বাড়লে, গুরুতর উপসর্গে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়বে।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৫: ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন কি? (২) এর বৈশিষ্ট্যসমূহ

উত্তর-৪৪৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আমরা ভাইরাসের এই ধরনের বৈশিষ্ট্যসমূহ কি সেদিকে আলোকপাত করবো।

বিএ.৫ এর স্পাইক প্রোটিনে এল৪৫২আর ও অন্যান্য রূপান্তর যুক্ত আছে। ভাইরাসের পৃষ্ঠের এই স্পাইক প্রোটিন স্বাগতিক কোষে সংক্রমণ শুরু করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এল৪৫২আর রূপান্তর মানব দেহের রোগ প্রতিরোধের জবাব এড়িয়ে যেতে ভাইরাসকে সাহায্য করে বলে জানা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জুলাই মাসের শুরুতে প্রকাশ করা একটি হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায় যে বিএ.৫ অ্যান্টিবডির নিষ্ক্রিয় করে দেয়ার কার্যকারিতা বিএ.১ এর তুলনায় সাত গুনের বেশি কমিয়ে দেয়।

বিশেষজ্ঞরা আরও সন্দেহ করছেন যে টিকার মাধ্যমে অর্জন করা রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা সময়ের সাথে কমে আসতে পারে, যা কিনা সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় অবদান রেখেছে।

জাপানে কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি ৩০ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের এক বৈঠকে কিছু উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন, ওমিক্রন ধরন থেকে যারা মুক্ত তাদের শতকরা হার কমে যাওয়ার ইঙ্গিত যেখানে দেয়া হয়েছে। উপাত্তে দেখানো হয় যে জুন মাসের শেষ দিক পর্যন্ত যারা মুক্ত বা নিরাপদ, ২০র ঘরে বয়সীদের মধ্যে তাদের হার ছিল ৪৪.৬ শতাংশ। ৭০এর ঘরে বয়সীদের মধ্যে সেই হার ছিল ৩৭.৪ শতাংশ।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৪: ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন কি? (১) বিএ.৫ এর বিস্তার

উত্তর-৪৪৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা ওমিক্রন বিএ.৫ উপধরন নিয়ে নতুন একটি ধারাবাহিক শুরু করছি। প্রথম পর্বে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকা রূপান্তরিত সেই ভাইরাসের উপর আমরা আলোকপাত করবো। জাপানেও এটা বিস্তৃত হচ্ছে।

বিএ.৫ হচ্ছে ওমিক্রনের একটি উপধরন এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটা প্রথম নিশ্চিত করা হয়। মে মাস থেকে এটা প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে সনাক্ত হওয়া নতুন করোনাভাইরাসের সবরকম ঘটনার মধ্যে এর অংশ হচ্ছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র তাদের সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলেছে যে ২রা জুলাই পর্যন্ত সারা দেশ জুড়ে নতুন সংক্রমণের ৫৩.৬ শতাংশ হচ্ছে বিএ.৫। সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য এই উপধরন আংশিকভাবে দায়ী বলে মনে করা হয়।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ২৪শে জুন ঘোষণা করেছে যে বিএ.৫ উপধরন এই সময়ের আগে পর্যন্ত প্রাধান্য বজায় রাখা বিএ.২ উপধরনের চাইতে ৩৫.১ শতাংশ দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করছে বলে মনে করা হয়।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা টোকিও মেট্রোপলিটন সরকারের বিশেষজ্ঞ প্যানেল বলছে ২৭শে জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে রাজধানীতে সনাক্ত হওয়া ঘটনার মধ্যে ৩৩.৪ শতাংশ সংক্রমণ বিএ.৫ উপধরন ছিল বলে ধারণা করা হয়।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪৩: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (৮) রোগীদের সঠিক সেবা প্রদান হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ

উত্তর-৪৪৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। “লং কোভিড” সংক্রান্ত আমাদের এই ধারাবাহিকের শেষ পর্বে, আমরা যেসব রোগীদের উপসর্গ থেকে যাচ্ছে তাদের সঠিক সেবা প্রদানের গুরুত্বের উপর নজর দেব।

বিলম্বিত প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দেয়া উপসর্গের ব্যাপ্তির অর্থে লং কোভিড নিয়ে এখনও বুঝতে না পারা অনেক বিষয় রয়ে গেছে এবং এইসব উপসর্গের কারণও অজানা রয়েছে। লং কোভিড রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা দু’জন বিশেষজ্ঞ এ ধরনের উপসর্গে ভোগা রোগীদের জন্য সঠিক সেবার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।

কোচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োকোইয়ামা আকিহিতো বলছেন, এইসব উপসর্গের কারণ কী, সেটা কোন বিষয় নয়, বরং এটি একটি বাস্তবতা যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে অনেকেরই বিভিন্ন উপসর্গে ভোগা অব্যাহত থাকছে। এছাড়াও তিনি জোর দিয়ে বলেন, এইসব রোগীদের কথা শুনে সঠিকভাবে সেবা প্রদান করার প্রয়োজন রয়েছে।

গিফু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিমোহাতা তাকাইয়োশি বলছেন, একদিকে রোগীদের কারো কারো মস্তিষ্কের কোষে প্রদাহ দেখা যাচ্ছে, আবার কেউ কেউ তাদের এই থেকে যাওয়া উপসর্গগুলো সামাল দিতে না পেরে মানসিকভাবে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছেন যা আবার হয়তো তাদের উপসর্গগুলোকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শিমোহাতা বলছেন, রোগীদের উপসর্গের কারণ যাই-ই হোক না কেন, ডাক্তারদের অবশ্যই পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে তাদের সাথে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এইসব রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহযোগিতা প্রদান এবং এই পরিস্থিতিতে লোকজনকে সচেতন করে তোলার জন্য, সরকারকে অবশ্যই গবেষণায় পূর্ণাঙ্গ মাত্রায় বিনিয়োগ করতে হবে এবং একটি চিকিৎসা কেন্দ্র গঠন করতে হবে যেটির লং কোভিড চিকিৎসায় বিশেষ জ্ঞান থাকতে হবে।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪২: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (৭) ওমিক্রন ধরনের ক্ষেত্রে কোভিড পরবর্তী উপসর্গের সম্ভাবনা কম

উত্তর-৪৪২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে “লং কোভিড” বা কোভিড-১৯ পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নামে পরিচিত মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা ওমিক্রন ধরনে সংক্রমণের পরবর্তী লং কোভিড এর উপসর্গগুলোর উপর নজর দেব।
টোকিও মেট্রোপলিটন সরকার গত এপ্রিল পর্যন্ত ৪ মাসে ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত ২ হাজারেরও বেশি রোগীর অবহিত করা ‘লং কোভিড’ এর লক্ষণগুলোর একটি তালিকা প্রণয়ন করেছে।

এই তালিকায় দেখা গেছে যে ৩৮.৬ শতাংশ কাশি, ৩৪ শতাংশ ক্লান্তি, ১০.৬ শতাংশ স্বাদ গ্রহণে অসুবিধা এবং ৯.৫ শতাংশ ঘ্রাণের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করেছেন।

এই উপাত্ত বিশ্লেষণকারী বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যানুযায়ী, তারা দেখতে পেয়েছেন যে ডেল্টা এবং অন্যান্য ধরনের সংক্রমণের তুলনায় স্বাদ গ্রহণ, ঘ্রাণের সমস্যা এবং চুল পড়ার মতো উপসর্গগুলো এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
এছাড়া, জাপানের ন্যাশনাল সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড মেডিসিনের একদল গবেষকও বয়স, লিঙ্গ এবং টিকাদানের অবস্থার ভিত্তিতে, ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত রোগীদের সাথে এর আগে প্রাদুর্ভাব ঘটা অন্যান্য ধরনে সংক্রমিত রোগীদের তুলনা সম্বলিত একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে।

এই ফলাফলে দেখা যায় যে ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত রোগীদের ক্ষেত্রে অন্যান্য ধরনে আক্রান্ত রোগীদের তুলনায় ‘লং কোভিড’ বলে মনে করা উপসর্গগুলোর মাত্র এক দশমাংশ পরিলক্ষিত হয়েছে।

তবে, বিশেষজ্ঞরা এই বলে সতর্ক করেছেন যে যেহেতু ওমিক্রন ধরনে সংক্রমণের সংখ্যা অন্যান্য ধরনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি, তাই ‘লং কোভিড’এ ভোগা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্রিটিশ সরকারের প্রকাশিত উপাত্ত এটি নির্দেশ করে যে ২টি টিকা গ্রহণকারী লোকজনের মধ্যে, ওমিক্রন ধরনে সংক্রমণের পরে লং কোভিডের উপসর্গগুলো সম্পর্কে অভিযোগ করার পরিমাণ ডেল্টা ধরনে সংক্রমণের পরে এধরনের লক্ষণগুলো সম্পর্কে অবহিত করার তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম।

এই উপাত্তে অবশ্য এখনও পর্যন্ত এরকম কোন প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যে ওমিক্রন সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোভিড-পরবর্তী উপসর্গগুলো দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকবে।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪১: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (৬) “ব্রেইন ফগ” বলতে কী বোঝায়?

উত্তর-৪৪১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে কোভিড ১৯’এর মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদী পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে যা লং কোভিড নামে পরিচিত। এই পর্বে জানার চেষ্টা করবো “ব্রেইন ফগ” বলতে কী বোঝায়?

ব্রেইন ফগ হচ্ছে লং কোভিড অর্থাৎ করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাঝারি বা দীর্ঘ মেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় সচরাচর দেখা যায় এমন উপসর্গগুলোর অন্যতম। এই অবস্থায় মানুষের মনে হয় তাদের মস্তিষ্ক ঠিকমত কাজ করছে না, যেন কুয়াশায় ঢেকে আছে। গিফু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিমোহাতা তাকাইয়োশি হলেন মস্তিষ্কের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লং কোভিডের চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকা সংকলনের কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ব্রেইন ফগ নির্ণয় করা কঠিন, কারণ এই অস্বাভাবিকতা সাধারণত এমআরআই বা রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে না।

তবে তিনি বলেন যে এই অবস্থা দেখা দেওয়ার কারণ সম্পর্কে গবেষণায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। শিমোহাতা বলেন, বিদেশে জীবজন্তুর ওপর পরিচালিত পরীক্ষায় এই আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের দরুন সারা শরীরে প্রদাহের ফলে অটোঅ্যান্টিবডি বা সাইটোকিনসের মত পদার্থ তৈরি হয়। অটোঅ্যান্টিবডি নিজের শরীরকেই আক্রমণ করে এবং সাইটোকিনস প্রদাহের জন্ম দেয়। শিমোহাতা বলেন, ব্যাপকভাবে মনে করা হয় যে এই পদার্থ রক্তধারার সাথে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছায় এবং সেখানে প্রদাহের জন্ম দেয়।

তিনি আরও বলেন, ব্রেইন ফগের নিরময় কী, তা এ মুহূর্তে জানা নেই। এর যে উপসর্গ, ডাক্তাররা আপাতত সেটুকুরই চিকিৎসা করতে পারেন কেবল। তিনি ব্রেইন ফগ কীভাবে দেখা দেয়, তা বোঝা এবং আরও ফলপ্রসূ চিকিৎসা উদ্ভাবনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪০: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (৫) এমন কি উপসর্গ-হীন, হালকা সংক্রমণের ক্ষেত্রেও পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি

উত্তর-৪৪০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সর্বশেষ ধারাবাহিকে আমরা কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থা বা “লং কোভিড” নামে পরিচিত মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রতিক্রিয়ার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা সেরকম পরিস্থিতি দেখা দিতে পারার ঝুঁকির দিকে নজর দেব।

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ প্রতিরোধ জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক ইওয়াসাকি আকিকো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে ভাইরাসের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া যারা করোনাভাইরাসের মারাত্মক ধরনের অসুস্থতায় ভুগেছেন, কেবল তাদের মধ্যেই সীমিত থাকছে না।

যুক্তরাষ্ট্রে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে রোগ মুক্ত হওয়ার পর কোভিড-পরবর্তী জটিলতায় যারা ভুগেছেন, তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশের ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সময় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় নি। গবেষকদের বিশ্বাস যেসব লোকজনের বেলায় কোন রকম উপসর্গ দেখা যায় নি কিংবা খুবই হালকা উপসর্গ দেখা গেছে, তারাও লং কোভিডে ভুগতে পারেন।

ইওয়াসাকি বলছেন এর সবচেয়ে সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হয়তো এরকম যে দেহের কোথাও করোনাভাইরাস সুপ্ত অবস্থায় থেকে যাওয়ায় এর ফলে প্রদাহ দেখা দিচ্ছে, যা কিনা দেহের অন্যান্য অঙ্গেও উপসর্গ উস্কে দিচ্ছে।

তিনি বলছেন এরকম কিছু ঘটনা আছে যে উপসর্গ-হীন লোকজন সংক্রমিত হওয়ার দুই কিংবা তিন মাস পর লং কোভিড বলে যেটাকে মনে করা হয় সেরকম উপসর্গ তারা দেখাতে শুরু করেন। এরকম খবরও প্রচারিত হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে টিকা নেয়া লোকজনের মধ্যে নিম্ন মাত্রার লং কোভিড লক্ষ্য করা গেছে। তবে খবরের উপর ভিত্তি করে এই হারে তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। ইওয়াসাকি বলেছেন টিকা নিয়েছি বলেই নিরাপদ আমরা বোধ করতে পারি না।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৯: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (৪) লং কোভিডের উপসর্গ কিভাবে দেখা দেয়?

উত্তর-৪৩৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া অথবা “লং কোভিড” নামে পরিচিত মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রতিক্রিয়ার উপর আলোকপাত করছি। আজকের পর্বে আছে “কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরবর্তী অবস্থার উপসর্গ কিভাবে দেখা দেয়।”

কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থার উপসর্গ কিভাবে শুরু হয় সে সম্পর্কে কতটা আমাদের জানা আছে? যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ প্রতিরোধ জীববিজ্ঞান বা ইমিউনো-বায়োলজির অধ্যাপক ইওয়াসাকি আকিকো চারটি ধারণাগত উপাদানের প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।

১। এমনকি কাশি ও জ্বরের মত প্রাথমিক উপসর্গ চলে গেলেও ভাইরাসের ক্ষুদ্রাংশ দীর্ঘ সময় ধরে প্রদাহ নিয়ে আসে।
২। আমাদের দেহের সুরক্ষা দেয়া রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এটাকে আক্রমণ করে।
৩। সংক্রমণে ক্ষতি হওয়া দেহের অঙ্গ ধীরে পুনরুদ্ধার লাভ করে।
৪। হার্পিস ভাইরাসের মতো যেসব ভাইরাস কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার আগে থেকে শরীরে ছিল, সেগুলো আবারও সজীব হয়ে উঠে।

ইওয়াসাকি বলছেন এরকম সম্ভব যে লং কোভিডের নানারকম উপসর্গ এসব উপাদানের মিশ্রণ থেকে দেখা দিতে পারে।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৮: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (৩) কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থার উপসর্গগুলো কী কী

উত্তর-৪৩৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থা বা “লং কোভিড” হিসেবে পরিচিত মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। আর এবারের পর্বে আমরা “কিভাবে কোভিড-১৯ পরবর্তী প্রতিক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে তা উপস্থাপন করছি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও কোভিড-১৯ পরবর্তী প্রতিক্রিয়াকে রোগ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে যেটি সেইসব লোকের মধ্যে দেখা দেয় যাদের সাধারণত ন্যূনতম ২ মাসের জন্য দীর্ঘায়িত হওয়া উপসর্গ বা প্রভাব সহ কোভিড-১৯’এর সংক্রমণের ৩ মাসের মধ্যে সম্ভাব্য বা নিশ্চিত করোনাভাইরাসের সংক্রমণের একটি ইতিহাস রয়েছে। ডব্লিউএইচও এও জানাচ্ছে, এইসব উপসর্গ এবং প্রতিক্রিয়ার প্রভাবকে একটি বিকল্প রোগ হিসেবে নির্ধারণের ব্যাখ্যা দেয়া যাচ্ছে না।

তবে, অনেক ধরনের উপসর্গ রয়েছে যেগুলোকে ডব্লিউএইচও’র সংজ্ঞার আওতায় ফেলা যায় এবং কয়েকজন বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তুলছেন যে, এর সবগুলোকে কি বাস্তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে হয়েছে বলা যায়।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেয়া কোচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োকোইয়ামা আকিহিতো বলছেন, “আমাদের সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, উপসর্গসমূহ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরবর্তী প্রভাব নাকি অন্য কিছু তা সনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন, কেননা আমাদের কাছে সেইসব লোকের উপাত্ত নেই যাদের সংক্রমণের একটি ইতিহাস নেই কিন্তু এ ধরনের উপসর্গের ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। তবে এইসব রোগীর ফুসফুসের এক্সরেতে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে বা তারা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় ভুগলে, এটা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল যে, তারা ভাইরাসের সংক্রমণ পরবর্তী প্রভাবে ভুগছেন। কিন্তু ঘুমের সমস্যা বা মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা হিসেবে এইসব উপসর্গ দেখা দিলে এটা বলা কঠিন যে, এগুলো করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে হয়েছে নাকি অন্য কারণে। এই সম্ভাবনাও রয়েছে যে এইসব উপসর্গ অন্য কোন কারণে হয়তো হয়েছে এবং যদি রোগীর রোগ সঠিকভাবে সনাক্ত করা না যায় তাহলে তারা সমস্যায় পড়তে পারেন। এর মধ্যে কোভিড-১৯ পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা কিছু কিছু উপসর্গ হয়তো প্রকৃতপক্ষে অন্য রোগের কারণে হয়েছে যা চিকিৎসা করে সারিয়ে তোলা যায়। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজনের উপসর্গ এবং স্বাস্থ্যবান বা করোনাভাইরাসের কারণে নয় অন্য কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত লোকজনের উপসর্গের মধ্যে তুলনা করে নির্ভুলভাবে লং কোভিড অনুধাবনের প্রয়োজন রয়েছে।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৭: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (২) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা – ২

উত্তর-৪৩৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে লং কোভিড হিসেবে সনাক্ত হওয়া উপসর্গগুলোর উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। আর এবারে আমরা উপস্থাপন করছি এসম্পর্কিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি জরিপ নিয়ে আলোচনার দ্বিতীয় পর্ব।

কেইও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফুকুনাগা কোইচির নেতৃত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গবেষণা দল ১ হাজারেরও বেশি রোগীর উপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে, যাদের মধ্যে কোভিড-১৯’এর মৃদু থেকে গুরুতর লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। গবেষকরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে এই রোগ সনাক্তকরণ পরবর্তী এক বছর সময়কালে তারা কী ধরনের উপসর্গে ভুগেছিলেন।

তাদের উত্তর থেকে গবেষকরা এটি বের করেছেন যে ১২.৮ শতাংশ সংক্রমণের এক বছর পরেও ক্লান্তি অনুভব করেছিলেন; ৮.৬ শতাংশের শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়েছিল, ৭.৫ শতাংশ পেশী শক্তির পাশাপাশি মনোযোগ হ্রাসের অভিযোগ করেছিলেন; ৭.২ শতাংশের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল; ৭ শতাংশ ঘুমের ব্যাঘাতের কথা উল্লেখ করেন; ৬.৪ শতাংশের গ্রন্থি বা হাড়ের সংযোগ স্থলে ব্যথা ছিল; ৫.৫ শতাংশ মাংসপেশীর ব্যথার কথা উল্লেখ করেন; ৫.৪ শতাংশ তাদের ঘ্রাণশক্তি নিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন; ৫.২ শতাংশের কফ ছিল; ৫.১ শতাংশ চুল পড়ার কথা বলেছেন; ৫ শতাংশ মাথা ব্যথার অভিযোগ করেছেন; ৪.৭ শতাংশ তাদের স্বাদের অনুভূতি সংক্রান্ত সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন; ৪.৬ শতাংশের কাশি ছিল; ৩.৯ শতাংশ তাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অসাড়তার কথা উল্লেখ করেন এবং ৩.৬ শতাংশের চোখে সমস্যা ছিল। সর্বোপরি, যে কোন এক ধরনের উপসর্গের কথা অবহিত করা লোকজনের সংখ্যা ছিল মোট জরিপকৃত ব্যক্তির ৩৩ শতাংশ।

তবে, এক্ষেত্রে গবেষকরা, এর আগেরদিন আমাদের তুলে ধরা সমীক্ষাটির মতো, ভাইরাসে সংক্রামিত না হওয়া লোকজনের সাথে একটি তুলনামূলক জরিপ পরিচালনা করেননি। তাই তাদের ভাষ্যমতে, এই প্রতিটি উপসর্গ যে কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব, তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এই উপসর্গগুলোর জন্য নানা ধরনের প্রতিকারের চেষ্টা করা হলেও, এর সবগুলোই ছিল মূলত সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষণের পরিবর্তে নিছক গড়পড়তা উপসর্গ নির্ভর চিকিৎসা।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৬: লং কোভিড বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া (১) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা – ১

উত্তর-৪৩৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ২০২২ সালের জুন মাসের শেষ পর্যন্ত যা খবর তাতে জাপানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ৯৩ লক্ষের বেশি। এদের মধ্যে অনেক রোগী সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরেও নানা উপসর্গে ভোগেন। বিশেষজ্ঞরা এই অবস্থার নাম দিয়েছেন করোনাভাইরাস-পরবর্তী-প্রতিক্রিয়া বা লং কোভিড। লং কোভিড হিসেবে চিহ্নিত উপসর্গ এবং কীভাবে সেগুলো দেখা দেয়, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত আমরা যা জানতে পেরেছি, তার ওপর এই পর্বে এবং এই সিরিজের অন্যান্য পর্বে আলোকপাত করা হবে।

কোচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োকোইয়ামা আকিহিতো’র নেতৃত্বাধীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক দল গবেষক সারা দেশে এমন ১ হাজারের বেশি রোগীর ওপর সমীক্ষা চালান যারা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এক বছরে করোনাভাইরাসের মাঝারি ধরন বা গুরুতর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ডাক্তারদের প্রশ্ন ও রোগীদের উত্তরের রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে প্রতি তিন মাস অন্তর তাদের উপসর্গগুলো নজর করে এসেছেন গবেষকরা। সংক্রমণের তিন মাস পর, সমীক্ষার অন্তর্গত প্রায় ৫০ শতাংশ রোগী তাদের পেশীর দুর্বলতা সম্পর্কে অভিযোগ করেন। ৩০ শতাংশ রোগী নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়ার কথা জানান। প্রচণ্ড ক্লান্তিতে ভোগার কথা জানান ২৫ শতাংশ রোগী। ঘুমের সমস্যা হওয়ার কথা জানা যায় ২০ শতাংশের বেশি রোগীর কাছ থেকে এবং প্রায় ১৮ শতাংশ রোগী মনঃসংযোগে সমস্যা, পেশীর যন্ত্রণা এবং কাশির অনুযোগ করেন। এদের মধ্যে কিছু রোগী একসঙ্গে একাধিক উপসর্গে ভোগার কথা জানান।

এসব উপসর্গে ভোগা রোগীর সংখ্যা সময়ের সাথে সাথে কমে আসে। সংক্রমণের এক বছর পর ঘুমের সমস্যা নিয়ে অনুযোগ করেন ১০ দশমিক ১ শতাংশ রোগী। ৯ দশমিক ৩ শতাংশ রোগী অনুযোগ করেন পেশীর দুর্বলতা নিয়ে। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়ার কথা জানান ৬ শতাংশ রোগী। ৫ দশমিক ৩ শতাংশ রোগী মনঃসংযোগে সমস্যার কথা বলেন। ৫ শতাংশ কাশি, ৪ দশমিক ৯ শতাংশ ক্লান্তি এবং ৪ দশমিক ৬ শতাংশ পেশীর যন্ত্রণার অনুযোগ করেন।

কোনো না কোনো উপসর্গে ভোগা রোগীর সংখ্যা ছিল মোট সংখ্যার ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
গবেষকরা বলছেন, মূল সংক্রমণের সময় শ্বাসযন্ত্রের সংকটজনক উপসর্গে যারা ভুগেছেন, তাদের লং কোভিডের উপসর্গ গুরুতর হয়ে ওঠার আশংকা বেশি যারা শ্বাসযন্ত্রের সংকটে ভোগেননি তাদের তুলনায়।

এই তথ্যগুলো ১লা জুলাই পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৫: মুখে মাস্ক পরা এবং হিটস্ট্রোক প্রতিরোধের পদক্ষেপ
(৩) পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ

উত্তর-৪৩৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার মাঝে হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য কীভাবে কার্যকরভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হয়, সে সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। এবারে আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে মাস্ক পরিধান করতে হবে নাকি হবে না, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় কী কী বিষয় বিবেচনা করতে হবে, সেবিষয়ের উপর নজর দিব।

আমরা নাগোইয়া প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং হিটস্ট্রোক ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা চালানো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি দলের একজন সদস্য হিরাতা আকিমাসাকে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। হিরাতা বলছেন, বিশেষ করে এই মৌসুমে যখন তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা উভয়ই বেশি থাকে তখন হিটস্ট্রোকের বিরুদ্ধে নিয়মিত সতর্ক থাকার প্রয়োজন। মাস্ক পরিধান করে থাকলে, লোকজনের তৃষ্ণার্ত থাকার প্রবণতার ব্যাপারে তিনি সতর্ক করে দিচ্ছেন, যা তরল গ্রহণের পরিমাণকে কমিয়ে দেয়ায় ইন্ধন যোগায়। হিরাতা ব্যাখ্যা করে বলছেন, বলা হয়ে থাকে যে হিটস্ট্রোক তখনই ঘটবে যখন আপনার শরীরে পানির পরিমাণ কমে যাবে এবং আপনার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে এই উভয়ই ঘটবে। তিনি লোকজনকে সচেতনভাবে প্রচুর পরিমাণে তরল গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন, কেননা যখন আপনি পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ করবেন না এবং আপনার শরীরে জলীয় অংশের পরিমাণ কমে যাবে তখন হিটস্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

মুখে মাস্ক পরিধান কিভাবে সামাল দিতে হবে সে প্রসঙ্গে হিরাতা বলছেন, অন্যদের থেকে যখন পর্যাপ্ত দূরত্বে থাকবেন তখন আপনি মাস্ক খুলে রাখতে পারেন, অন্যদিকে যেখানে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে সেখানে আপনার অবশ্যই মাস্ক পরিধান করা উচিত। তিনি এও বলছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্থান এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৪: মুখে মাস্ক পরা এবং হিটস্ট্রোক প্রতিরোধের পদক্ষেপ
(২) মাস্কের কি নিজস্ব ঝুঁকি রয়েছে?

উত্তর-৪৩৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কোভিড-১৯’এর সংক্রমণ ঠেকাতে মুখের মাস্ক পরলে গরম আবহাওয়ায় কিছু অসুবিধা হতে পারে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার মাঝে হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য কীভাবে কার্যকরভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হয়, সে সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। এবারে আমরা মাস্ক পরিধান হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় কিনা, সেবিষয়ের উপর নজর দিব।

আমরা নাগোইয়া প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’র হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বিষয়ক গবেষণা দলের সদস্য হিরাতা আকিমাসার কাছে এসম্পর্কে জানতে চাই। হিরাতার ভাষ্যানুযায়ী, অতীতের গবেষণায় দেখা গেছে যে কেউ মাস্ক পরলে তা ঢেকে রাখা অংশ এবং ঠিক আশেপাশের অংশ ছাড়া শরীরের তাপমাত্রার উপর খুব একটা প্রভাব ফেলে না। তিনি বলেন, মাস্ক পরিধানকারীর শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা ০.০৬ থেকে ০.০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পায়, যা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকির মোটামুটি ইঙ্গিতবাহী এক ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধির চাইতে অনেক কম।

হিরাতার ভাষ্যমতে, এটি এই ইঙ্গিত দেয় যে মাস্ক পরা সম্ভবত হিটস্ট্রোকের ঝুঁকির উল্লেখযোগ্য কোন বৃদ্ধি ঘটাবে না। তিনি বলেন, কিন্তু যদি কেউ মাস্ক পরার পাশাপাশি অত্যধিক ব্যায়াম করেন, তবে সেই ব্যক্তি হিটস্ট্রোকের বর্ধিত ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন।

তিনি এও বলেন যে ছোট শিশু এবং মাত্র হাঁটতে শেখা শিশুদের মাস্ক পরার সাথে সংশ্লিষ্ট হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সম্পর্কে খুব কম তথ্য রয়েছে। তিনি অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে হিটস্ট্রোকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩৩: মুখে মাস্ক পরা এবং হিটস্ট্রোক প্রতিরোধের পদক্ষেপ
(১) ফেস-মাস্কের ব্যবহার সম্পর্কে চিন্তাভাবনা

উত্তর-৪৩৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধের বিভিন্ন উপায়ের মধ্যে একটি হলো মুখে মাস্ক পরা। তবে গরমকালে মুখে মাস্ক গরমের কষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে, দমবন্ধ করা হাঁসফাস অবস্থা হতে পারে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক ধারাবাহিকে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া ঠেকানোয় মাস্কের কার্যকর ব্যবহার নিয়ে নানান তথ্য জানানো হচ্ছে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের পদক্ষেপ সংক্রান্ত যে মৌলিক নীতি জাপান সরকারের, ২৩শে মে তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, যদিও ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম, তবে এখন কিছু কিছু পরিস্থিতিতে মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতায় ছাড় দেওয়া গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

ঘরের বাইরে মাস্ক খুলে রাখার অনুমতি মিলবে যদি ব্যক্তিদের পরস্পরের মধ্যে ২ মিটার বা তার চেয়ে বেশি দূরত্ব বজায় রাখা হয়। কাছাকাছি লোকজন থাকলেও, তাদের মধ্যে যদি কথোপকথন না হয়, মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সরকার হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য, বিশেষ করে গ্রীষ্ম ঋতুর কয়েক মাস কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাস্ক না পরতে সুপারিশ করছে।

ঘরের ভিতরে মাস্ক খুলে রাখা যাবে যদি লোকজনের মধ্যে ২ মিটার বা তার চেয়ে বেশি ব্যবধান বজায় রাখা যায় এবং যদি তাদের মধ্যে বলতে গেলে কোনই কথোপকথন না হয়।

স্কুলে ফিজিক্যাল এডুকেশনের ক্লাসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নয়। এই নির্দেশ স্কুলের পরে ক্লাবের কর্মকান্ডের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। প্রতিযোগীদের মধ্যে দৈহিক সংস্পর্শ হয়, এমন ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ক্রীড়া সমিতিগুলোর তৈরি করা নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে।

দু বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে মাস্ক পরানোর সুপারিশ করা হয় না। প্রি-স্কুলের শিশু যাদের বয়স দু বছর বা তার চেয়ে বেশি, এদের কিন্ডারগার্টেন বা নার্সারি স্কুলে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব যাই থাকুক না কেন, মাস্ক পরা আবশ্যক নয়।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩২: শিশুদের টিকাদান (৯) শিশুদের টিকা নেওয়া উচিত হবে কি?

উত্তর-৪৩২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বশেষ ধারাবাহিকে টিকা নেয়া উচিত হবে কিনা - শিশু ও বাবা-মায়েদের মিলিতভাবে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করার জন্য নতুন উপাত্ত সহ বিভিন্ন তথ্য আমরা উপস্থাপন করছি। সর্বশেষ এই পর্বে আমরা শিশুদের টিকা নেওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের দিকে নজর দেব।

টিকা সম্পর্কে ভালভাবে জানা থাকা শিশু চিকিৎসক, কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুও এ বিষয়ে তার চিন্তা-ভাবনা এখানে তুলে ধরেছেন। নাকাইয়ামা বলছেন মারাত্মক হাঁপানির মত স্বাস্থগত সমস্যা থাকা শিশুদের বেলায় টিকা নেয়ার সুপারিশ তিনি করলেও শারীরিক সমস্যা না থাকা শিশুদের বেলায় শিশুর পরিবারকে যে উপদেশ তিনি দিচ্ছেন তা হল, শিশুর জীবনধারা এবং নিজেদের পরিবারের পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত তারা যেন গ্রহণ করেন। স্কুলের বাইরের নানারকম কর্মকাণ্ড, স্কুলের ক্লাবের কাজ কিংবা খেলাধুলায় জড়িত হওয়ার মত মানুষের ভিড় হওয়া জায়গায় প্রায়শই যাওয়া শিশুদের বেলায় টিকা নেয়ার সুপারিশ তিনি করেন। দাদা-দাদীর সাথে থাকা শিশুদের বেলায়ও প্রিয়জনদের সুরক্ষার জন্য শিশুদের টিকা নেয়ার উপদেশ তিনি দিচ্ছেন।

নাকাইয়ামা বলছেন টিকা সাধারণভাবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে আমাদের সাহায্য করেছে। হামের মত রোগের বেলায় যেমন সংক্রমিতদের মধ্যে মাত্র এক হাজারে এক জনের বেলায় এনসেফালাইটিস বা মস্তিস্কের প্রদাহের মত মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়। তবে তা সত্ত্বেও মানুষ টিকা নিচ্ছে এবং কদাচিৎ অসুস্থ হচ্ছে।

তিনি বলছেন করোনাভাইরাস টিকাকে আমাদের অন্য সকল টিকার মতই একইভাবে দেখা উচিত এবং টিকা ও সংক্রামক রোগ বিষয়ে নিজেদের শিক্ষিত করে তোলার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩১: শিশুদের টিকাদান (৮) টিকার নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?

উত্তর-৪৩১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকে, টিকা দেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের একসাথে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য আমরা নতুন উপাত্ত সহ তথ্য উপস্থাপন করছি। এবারের পর্বে, আমাদের করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত কিনা তার উপর আলোকপাত করব, কেননা এতে এক নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের টিকা বিশ্বে প্রথমবারের মত ম্যাসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তি প্রয়োগ করছে। রোগের চিকিৎসায় এর সম্ভাব্য প্রয়োগের জন্য এই প্রযুক্তি নিয়ে ৩০ বছরেরও বেশি গবেষণা করা হয়েছে। ম্যাসেঞ্জার আরএনএ হচ্ছে একটি পদার্থ যা সহজেই রাসায়নিকভাবে ভেঙ্গে যায়। টিকা দেয়ার পরে এটি ভেঙে গিয়ে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বেরিয়ে যায়।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, এই পদার্থটি শরীরের মধ্যে থেকে যায় না এবং এর কোন প্রতিকূল প্রভাব নেই। তারা এও জানাচ্ছে, এই টিকা নেয়ার বহু বছর পর টিকাটি কোন রোগের কারণ হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩০: শিশুদের টিকাদান (৭) গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?

উত্তর-৪৩০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকে, টিকা দেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের একসাথে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য আমরা নতুন উপাত্ত সহ তথ্য উপস্থাপন করছি। এবারের পর্বে, আমরা টিকা গ্রহণের পর গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যানুযায়ী, টিকা গ্রহণের পরে কিছু বিরল ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের পেশীর প্রদাহ ঘটতে পারে বলে জানা গেছে, যা এর কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। ১লা এপ্রিল পর্যন্ত জাপানে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ৫ লক্ষ ৩৪ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র একটি শিশুর ক্ষেত্রে এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের আগে শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করেছিল এবং সেখানে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আরও বেশি গবেষণা করা হয়েছে। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের ভাষ্যানুযায়ী, বালকদের প্রথম টিকা দেওয়ার পর ১০ লক্ষ শিশুর ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডকে প্রভাবিত করে এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে, দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পরে এই সংখ্যাটি ছিল ১০ লক্ষের মধ্যে ৪.৩ জন।

অন্যদিকে, বালিকাদের ক্ষেত্রে, প্রথম টিকা দেওয়ার পরে পর্যাপ্ত উপাত্ত ছিল না। তবে, দ্বিতীয় টিকা দেওয়ার পর প্রতি ১০ লক্ষ টিকার জন্য এই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা ছিল মাত্র ২টি। সবগুলো ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো ছিল মৃদু এবং সংশ্লিষ্ট শিশুরা সুস্থ হয়ে উঠেছিল।

মার্কিন প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে যে টিকা নেওয়ার পরে ২টি শিশুর মৃত্যু হয়। তবে, উভয় শিশুরই অন্তর্নিহিত রোগ ছিল এবং এমনকি টিকা নেওয়ার আগেও তারা অসুস্থ ছিল। আর তাদের মৃত্যুর সাথে টিকাদানের সংযোগ বের করার মত কোন উপাত্ত পাওয়া যায়নি।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৯: শিশুদের টিকাদান (৬) সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

উত্তর-৪২৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকাদান শুরু হয়েছে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। টিকা নেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে শিশু ও তাদের অভিভাবকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করতে আমাদের চলতি ধারাবাহিকে নতুন নতুন উপাত্ত সহ নানান তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। এবারের পর্বে টিকার সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করা হবে।

টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শরীরে কিছু কিছু অসুবিধা হতে পারে। যেমন, জ্বর হতে পারে অথবা যেখানে টিকা দেওয়া হয়েছে সেই জায়গায় ব্যথা হতে পারে। এটা হয় কারণ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা টিকায় সাড়া দেয় অথবা এই ব্যবস্থা করোনাভাইরাসকে সনাক্ত করতে “শেখে”। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপসর্গ সম্বন্ধে কয়েকটা সুনির্দ্দিষ্ট তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

টিকা নিয়েছে এমন শিশুদের ওপর মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজারের পরিচালিত সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর শতকরা ৭৪ ভাগ এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর শতকরা ৭১ ভাগ শিশুর ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশনের জায়গায় ব্যাথা হয়েছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৩৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর ৩৯ শতাংশ শিশু ক্লান্তি বা অবসাদের কথা বলেছে। প্রথম ডোজের পর শতকরা ৩ ভাগ শিশুর ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি জ্বর হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজের পর যে মাত্রার জ্বরে ভুগেছে শতকরা ৭ ভাগ শিশু।

সমীক্ষার ফলাফল দেখে এটা বোঝা যাচ্ছে যে বড়দের তুলনায় ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ভোগার আশংকা কম। অধিকাংশ শিশুর উপসর্গ হয় হাল্কা। যেমন ইঞ্জেকশনের জায়গায় ব্যাথা বা হাত নাড়াতে অসুবিধা হওয়া, যা দু এক দিনের মধ্যেই সেরে যায়।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৮: শিশুদের টিকাদান (৫) টিকা কতটা কার্যকর?

উত্তর-৪২৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকে, টিকা নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের একসাথে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য আমরা নতুন উপাত্ত সহ তথ্য উপস্থাপন করছি। এবারের পর্বে, শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতার উপর আমরা আলোকপাত করব।


২০২১ সালে মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের উপর টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করে। ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিটি জানায় যে টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার ৭ বা তার বেশি দিন পর শিশুদের মধ্যে উপসর্গ সমেত সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা ৯০ দশমিক ৭ শতাংশ কার্যকর ছিল বলে পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে। তবে ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে টিকা অতটা কার্যকর নয় বলে জানা গেছে। বর্তমানে জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটাই বিস্তার লাভ করছে।

চলতি বছর ১১ই মার্চ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে, মার্কিন গবেষকরা বলেন যে ফাইজারের দুই ডোজ টিকা নেয়া থাকলে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ওমিক্রন সংক্রমণের ঝুঁকি তা ৩১ শতাংশ হ্রাস করে বলে তারা গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন।

মার্চ মাসের ৩০ তারিখ প্রকাশিত এক গবেষণায় মার্কিন গবেষকরা বলেন যে ওমিক্রনের সময় ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতা ছিল ৬৮ শতাংশ। মারাত্মক ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়া শিশুদের প্রায় সকলেরই টিকা নেয়া ছিল না বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

এই উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে যে টিকা পুরোপুরি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পারলেও হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়বে এধরনের গুরুতর উপসর্গ যাতে শিশুদের মধ্যে দেখা না যায় তা প্রতিরোধে টিকা কার্যকর।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৭: শিশুদের টিকাদান (৪) শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ

উত্তর-৪২৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসে জাপান ৫ থেকে ১১ বছর বয়সের শিশুদের টিকা দেয়া শুরু করেছে। শিশুদের টিকা নেওয়া উচিত হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে শিশু ও তাদের বাবা-মা’কে সাহায্য করার জন্য এই ধারাবাহিকে আমরা নতুন উপাত্ত সহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করে আসছি।
এই পর্বে শিশুদের মধ্যে দেখা দেয়া কোভিড-১৯ এর উপসর্গ সংক্রান্ত তথ্য আমরা দেব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহে সারা দেশে ৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৩৭০টি নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা হচ্ছে ৪৭ হাজার ৬৫৯, বা সমস্ত ঘটনার ১৫.২ শতাংশ, যা হচ্ছে সব কয়টি বয়স গ্রুপের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে গত দুই বছরে দশ বছরের কম বয়সী ৯ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৬২টি শিশু করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়। এদের মধ্যে চারটি শিশু মারা গেছে।
১৯শে এপ্রিল পর্যন্ত সপ্তাহে চারটি শিশু সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিল।

শিশু রোগীদের মধ্যে অধিকাংশের বেলায় হালকা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়, যদিও উপসর্গের মধ্যে কখনও কখনও উচ্চ তাপমাত্রা, বমি এবং গলা ফুলে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে। জাপানের শিশু রোগ চিকিৎসকদের সমিতি – জাপান পেডিয়াট্রিক সোসাইটি বলছে হৃৎপিণ্ড কিংবা ফুসফুসের অসুখে আক্রান্ত শিশুদের বেলায় মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি হচ্ছে বেশি। এমনকি উপসর্গ ছাড়া সংক্রমণের বেলাতেও কাশি এবং নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মত পরবর্তী প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৬: শিশুদের টিকাদান (৩) শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত?

উত্তর-৪২৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকে, টিকা নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের একসাথে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য আমরা নতুন উপাত্ত সহ তথ্য উপস্থাপন করছি। এবারের পর্বে, “শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত?” এই প্রশ্নটি নিয়ে আমরা আলোচনা করব।

প্রতিটি পরিবার ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে এবং তাদের রয়েছে নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা। তাই শিশুদের টিকা দেয়া হবে কিনা সেব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আপনাদের কী কী বিষয় বিবেচনা করা দরকার?

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে প্রত্যাশিত উপকারগুলোর মূল্যায়ন করা এবং টিকা নেয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলোর কথা বিবেচনা করা।

উপকারগুলোর মধ্যে শিশুদের নিজেদের সংক্রমিত হওয়া এবং গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া রোধ, অন্যদের কাছে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়া রোধ এবং স্কুল ও অন্যান্য স্থানে আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা, যা টিকার অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যান্য যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে তা হচ্ছে, এই বাস্তবতা যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হচ্ছে এবং জাপানে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার বিষয়টি বিরল। তারা এও বলছেন, অন্য যে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে তা হচ্ছে, জাপান এবং সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করা ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ রোধে টিকা কম কার্যকর।

৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকা বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে, ঠিক যেমনটা অন্যান্য বয়সীদের গ্রুপের ক্ষেত্রে রয়েছে। কিন্তু হাম, জলবসন্ত ও জাপানিজ এনসেফালাইটিসের টিকার মত এটি কোন বাধ্যতামূলক বিষয় নয় যে অভিভাবকদের তাদের শিশুদের টিকা নেয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
বিভিন্ন পরিবারের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, তাদের শিশুদের সাথে কী করতে হবে তা সতর্কতার সাথে বিবেচনা করা। আমাদের পরবর্তী পর্বে, আমরা লোকজনকে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন উপাত্ত সরবরাহ করব।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৫: শিশুদের টিকাদান (২) টিকা কীভাবে কাজ করে?

উত্তর-৪২৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকে, টিকা নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের একসাথে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য আমরা নতুন উপাত্ত সহ তথ্য উপস্থাপন করছি। এবারের পর্বে, আমরা টিকা কীভাবে কাজ করে তার উপর নজর দিব।

টিকাগুলো আমাদের শরীরের "ইমিউন সিস্টেম" বা “রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায়” প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে। এই ব্যবস্থা মূলত ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মত বাইরে থেকে শরীরে প্রবেশ করা জীবাণুকে আক্রমণ করে। করোনাভাইরাসগুলোর পৃষ্ঠ থেকে "স্পাইক প্রোটিন" ঝুলে থাকে। করোনাভাইরাসের টিকাগুলোতে "মেসেঞ্জার বা বার্তাবাহী আরএনএ" রয়েছে, যা কীভাবে এই "স্পাইক প্রোটিন" উৎপাদন করতে হয় তার নির্দেশাবলী বহন করে। যখন ইনজেকশনের মাধ্যমে একটি টিকাকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করানো হয়, তখন এই নির্দেশাবলীর ভিত্তিতে শরীরের ভিতরে "স্পাইক প্রোটিন" তৈরি হয়। "স্পাইক প্রোটিন" করোনাভাইরাসের অংশ হওয়ায় আমাদের "রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা" এগুলোকে অবাঞ্ছিত উপাদান হিসেবে সনাক্ত করে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় "অ্যান্টিবডি" নামক একটি পদার্থ তৈরি করে, যা ভাইরাসকে আক্রমণ করার জন্য একটি অস্ত্র হিসাবে কাজ করে। এই উপায়ে আমাদের শরীর কোনও সত্যিকারের ভাইরাস প্রবেশ করার পর কীভাবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, তা শিখে নেয়।

কেউ যখন টিকা গ্রহণ না করা অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তখন আমাদের "রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা" শরীরে প্রবেশ করা করোনাভাইরাসের আকারের সাথে মিল রেখে একই মাপের "অ্যান্টিবডি" তৈরি করে এর বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের শরীর সম্ভবত পর্যাপ্ত পরিমাণে "অ্যান্টিবডি" দ্রুত তৈরি করতে সক্ষম নাও হতে পারে বা ভাইরাসটি লড়াইয়ের জন্য অতিরিক্ত শক্তিশালী হতে পারে। এরকম সময়েই আমাদের দেহে কাশি এবং চরম ক্লান্তির মতো উপসর্গ তৈরি হয় এবং কখনও কখনও আমরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি। টিকাদান আমাদের শরীরকে আগে থেকেই ভাইরাস-প্রতিরোধী "অ্যান্টিবডি" তৈরি করার সুযোগ দেয়। ভবিষ্যতের একটি ভাইরাস আক্রমণের জন্য আমাদের শরীরকে এভাবে প্রস্তুত করার মাধ্যমে আমরা এই ভাইরাসের থেকে সংক্রমণ, উপসর্গ দেখা দেয়া এবং গুরুতর অসুস্থ হওয়া প্রতিরোধ করতে পারি।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৪: শিশুদের টিকাদান (১) কতজন শিশু টিকা নিয়েছে?

উত্তর-৪২৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে দু মাসের ওপর হলো ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এই বয়সসীমার শতকরা প্রায় ৯ ভাগ শিশু দু ডোজ টিকা নিয়ে নিয়েছে। এই ভাইরাসে শিশুদের গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার আশংকা তেমন নেই। তবু এই বয়সের ছেলেমেয়েদের সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা যে কমেনি, সেটা একটা চিন্তার ব্যাপার। শিশুদের ক্ষেত্রেও কি টিকার উপকারিতা এর ঝুঁকির চাইতে বেশি? টিকা নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে শিশুদের এবং তাদের অভিভাবকদের একসাথে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সাহায্য করার জন্য আমাদের নতুন ধারাবাহিকে আমরা নতুন নতুন উপাত্ত সহ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করবো।

জাপানে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজারের টিকা এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দুটো করে ডোজ দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। প্রাপ্তবয়স্কদের যে ডোজ দেওয়া হয়, শিশুদের ডোজের শক্তি হচ্ছে তার তিন ভাগের এক ভাগ।

২০২২ সালের ২রা মে পর্যন্ত যা খবর তাতে জাপানে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী ৯ লক্ষ ৯৮ হাজার শিশুর অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। সংখ্যাটি হলো দেশে এই বয়সী মোট ৭৪ লক্ষ ১০ হাজার শিশুর শতকরা প্রায় ১৩ দশমিক ৫ ভাগ। প্রায় ৬ লক্ষ ৬০ হাজার বা ৮ দশমিক ৯ শতাংশ শিশু টিকার দুটো ডোজই নিয়েছে।

কিছু কিছু দেশে শিশুদের টিকাদান শুরু হয়েছে জাপানের আগে। ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত যা খবর তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ শিশুর দু ডোজ টিকা নেওয়া হয়ে গেছে। কানাডায় ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত যা খবর তাতে এই হার হচ্ছে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২৩: “বিএ.২” এবং “এক্সই” ধরন দুটি কী রকমের? (৬) মৌলিক সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপে কোন পরিবর্তন নেই

উত্তর-৪২৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন এবং কোন পদক্ষেপ এই ক্ষেত্রে নেয়া দরকার তার উপর আলোকপাত করছি। ধারাবাহিক এই আয়োজনের শেষ পর্বে আমরা দৈনন্দিন সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপের উপর আলোকপাত করব।

আমাদের আগের পর্বে যেসব পুন:সংযোজিত ধরন এবং সাব-ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমরা কথা বলেছি সেগুলো ছাড়াও ওমিক্রনের “বিএ.৪” এবং “বিএ.৫” সাব-ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে যা দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অন্যত্র দেখতে পাওয়া গেছে। তবে এগুলো কতটা সংক্রামক বা কতটা মারাত্মক তা বিশেষজ্ঞরা এখনো নির্ধারণ করতে পারেননি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে একাধিক স্ট্রেইনের সংমিশ্রণে নতুন করোনাভাইরাসের উদয় হওয়ার ঝুঁকি এখনো খুব বেশি। ডব্লিউএইচও’র কর্মকর্তারা বলেন যে একারণে করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করা চালিয়ে যেতে হবে এবং এই সংক্রান্ত উপাত্ত আমাদের একে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে হবে।

টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুরো বলেন যে “বিএ.২” এর মতই “বিএ.৪” এবং “বিএ.৫” হল ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট। করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটি সংক্রমণ এবং সংখ্যাবৃদ্ধি প্রক্রিয়া চলাকালে রূপ পরিবর্তন করায় সবকটি সাব-ভ্যারিয়েন্টের জন্ম হয়।

তিনি বলেন যে উদীয়মান সবকটি স্ট্রেইনের উপর আমাদের নজর রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি সেটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে কিনা সেটা জানার আগে থেকেই। পুন:সংযোজিত ধরনগুলোর মধ্যে “এক্সই” ধরনটি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সংক্রামক হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করলেও সেটি সংক্রমণের অপর এক বড় ঢেউয়ের সূত্রপাত করবে কিনা তা আমরা এখনো বলতে পারি না। হামাদা আরও বলেন যে সম্পূর্ণ এক ভিন্ন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট উদয় হওয়ার সম্ভাবনার উপরেও আমাদের নজর রাখতে হবে। একারণেই নজরদারী ব্যবস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি ভাইরাসের জিনোম বিশ্লেষণ করে দেখা অব্যাহত রাখতে হবে।

স্বাস্থ্য এবং কল্যাণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজি বলেন যে এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসের যেসব ধরন আমরা দেখতে পেয়েছি সেগুলো আমাদের কল্পনার অতীত রূপ পরিবর্তন করেনি। ভবিষ্যতেও কী ধরনের অগ্রগতি হয় তার উপর তিনি নজর রাখবেন তবে সংক্রমণ প্রতিরোধে নেয়া পদক্ষেপে বিরাট কোন পরিবর্তন আনার প্রয়োজন নেই বলেই তার ধারণা।

ওয়াদা বলেন যে বর্তমানে সংক্রমণের পিছনে প্রধান স্ট্রেইন হল “বিএ.২” তবে তা “এক্সই” তে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্ট্রেইন পরিবর্তন হলেই যে দৈনন্দিন জীবনে যেসব সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ আমাদের নেয়া উচিত তাও বদলে যাবে তা নয়। কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজ নেয়ার প্রয়োজনও তা কমিয়ে দেবে না।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২২: “বিএ.২” এবং “এক্সই” ধরন দুটি কী রকমের? (৫) কোভিড-১৯এর পুন:সংযোজিত ধরন

উত্তর-৪২২: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন এবং কোন পদক্ষেপ এই ক্ষেত্রে নেয়া দরকার তার উপর আলোকপাত করছি। এই পর্বে বেশ কয়েকটি ধরনের সমন্বয়ে দেখা দেয়া পুন:সংযোজিত ধরনগুলোর উপর আমরা নজর দেব।

এর আগের পর্বে আমরা ওমিক্রন ধরনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরন “বিএ.১” এবং “বিএ.২” এর পুন:সংযোজিত ধরন “এক্সই” এর উপর আলোকপাত করেছি। তবে “এক্সই” কেবল পুন:সংযোজিত ধরন নয়।

“এক্সডি” এবং “এক্সএফ” এই উভয় স্ট্রেইন হচ্ছে ওমিক্রন ধরনের উপ-ধরন “বিএ.১” এবং ২০২১ সালের গ্রীষ্মে জাপানে আঘাত হানা পঞ্চম তরঙ্গে প্রাধান্য বিস্তারকারী ডেল্টা ধরনের সংমিশ্রণ।

“এক্সডি” প্রধানত ডেল্টা ধরনের হলেও এর স্পাইক প্রোটিন “বিএ.১” এর।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রামাণ্য দলিলে বলা হয়েছে যে “এক্সডি” ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখে প্রথম সনাক্ত করা হয়। সেইসব দলিল বলছে যে ২০২২ সালের পয়লা এপ্রিল পর্যন্ত ফ্রান্সে “এক্সডি”র ৬৬টি সংক্রমণ, ডেনমার্কে ৮টি এবং বেলজিয়ামে একটি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা “এক্সডি”কে পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকা ধরন হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে। উপসর্গের মারাত্মক অবস্থার কারণ হয়ে দেখা দেয়া এবং যেসব টিকা পাওয়া যাচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সেগুলো কাজ করে কিনা – সেরকম প্রতিক্রিয়া যেসব ধরনের বেলায় এখনও পরিষ্কার নয় সেরকম কোভিড-১৯ ধরনকে পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকা ধরন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে “এক্সডি” এর বিস্তার হচ্ছে সীমিত।

“এক্সএফ” ধরনের স্পাইক প্রোটিন সহ অধিকাংশ অংশ হচ্ছে “বিএ.১” এর এবং অবশিষ্ট কিছু উপকরণ ডেল্টা ধরনের। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে এবছর জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ থেকে ব্রিটেনে “এক্সএফ” ধরনের ৩৯টি সংক্রমণের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে কর্তৃপক্ষ আরও জানায় যে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখের পর থেকে নতুন কোন সংক্রমণের খবর পাওয়া যায় নি।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২১: “বিএ.২” এবং “এক্সই” ধরন দুটি কী রকমের? (৪) “এক্সই” ধরন

উত্তর-৪২১: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন এবং এদের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধের জন্য কোন পদক্ষেপগুলো নেয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনা করছি। এই পর্বে আমরা করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরন “এক্সই”র উপর আলোকপাত করবো।

অনেকগুলো ধরনের সমন্বয়ে গঠিত “এক্সই” ধরনের সংক্রমণের খবর ব্রিটেন এবং অন্যান্য দেশে পাওয়া গেছে।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১১ই এপ্রিল ঘোষণা করে যে, তারা দেশের প্রথম এক্সই ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিমানবন্দরের কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সনাক্ত করেছে।

ভাইরাস যখন বার বার ছোট ছোট রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যায় তখন নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য লাভ করে, তবে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস যখন একই ব্যক্তিকে সংক্রমিত করে ও তাদের জিনগত উপাদানকে সংযোজিত করে তখন নতুন পুন:সংযোজিত ধরনের উৎপত্তি হয়।

“এক্সই” ধরন হচ্ছে ওমিক্রন “বিএ.১” এবং “বিএ.২” ধরনের পুন:সংযোজিত ধরন। মানুষের কোষকে আক্রান্ত করার সময় একটি প্রধান ভূমিকা পালন করা ভাইরাসের উপরিভাগের স্পাইক প্রোটিন’সহ “এক্সই” ধরনের অধিকাংশ অংশ “বিএ.২” ধরনের মত, অন্যদিকে অবশিষ্ট অংশ “বিএ.১” ধরনের মত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, “এক্সই” হচ্ছে ওমিক্রনের একটি স্ট্রেইন। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো এক প্রতিবেদনে জানায় যে, ২০২২ সালের ১৯শে জানুয়ারি “এক্সই” ধরনের প্রথম সনাক্তকরণের পর থেকে, ৫ই এপ্রিল পর্যন্ত এই পুন:সংযোজিত ধরনে ১ হাজার ১৭৯ জনের আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গুচ্ছ সংক্রমণ হচ্ছে, তবে এই স্ট্রেইনকে ১ শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে দায়ী করা হয় যেগুলো নিয়ে সেদেশে বিশ্লেষণ পরিচালনা করা হয়েছে।

ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো ৩০শে মার্চ পর্যন্ত নেয়া উপাত্তের উপর ভিত্তি করে একটি গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে এক বিশ্লেষণ পরিচালনা করে এবং অনুমান করে যে, এক্সই স্ট্রেইনের সংক্রমণ হার বিএ.২ ধরনের চেয়ে ১২.৬ শতাংশ বেশি।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২০: “বিএ.২” এবং “এক্সই” ধরন দুটি কী রকমের? (৩) “বিএ.২” কি সপ্তম তরঙ্গে প্রধান ধরনে পরিণত হবে?

উত্তর-৪২০: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন এবং এদের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধের জন্য কোন পদক্ষেপগুলো নেয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনা করছি। এই পর্বে আমরা ভবিষ্যতে জাপানে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরন “বিএ.২”র সম্ভাব্য বিস্তারের ওপর আলোকপাত করবো।

সুযুকি মোতোই হচ্ছেন জাপানের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের নজরদারি, টিকাদান এবং মহামারি সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান। তিনি বলেন, সংক্রমণের সপ্তম তরঙ্গে “বিএ.২”ই প্রধান স্ট্রেইনে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “বিএ.২”কে যেহেতু “বিএ.১” এর চাইতে কিছুটা বেশি সংক্রামক বলে মনে করা হয়, তাই সপ্তম তরঙ্গ পূর্ববর্তী তরঙ্গকে ছাড়িয়ে যেতে পারে, এমন সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। ষষ্ঠ তরঙ্গে যখন ওমিক্রনের “বিএ.১” ধরনটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন লোকজন কম সতর্ক হয়ে পড়েছিলেন বলে প্রতীয়মান হয় কারণ ওমিক্রন ধরনের ক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি ডেল্টা ধরনের তুলনায় কম বলে বলা হয়েছিল।
তবে, ষষ্ঠ তরঙ্গে সংক্রমণের সংখ্যা এর আগের তরঙ্গগুলোর চাইতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল বলে মৃত্যুর সংখ্যাও ছিল বেশি। “বিএ.২” এর ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ঘটবে বলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

টোকিও চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলেন, "বিএ.২" স্ট্রেইনটি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে সংক্রমণের প্রধান উৎস হিসেবে অন্যান্য ধরনগুলোকে প্রতিস্থাপন করেছে বলে মনে করা হয়। তিনি উল্লেখ করেন যে কিছু ইউরোপীয় দেশে ৯০ শতাংশেরও বেশি সংক্রমণের ঘটনার জন্য "বিএ.২" দায়ী। তিনি এও উল্লেখ করেন যে সেকারণে লোকজনের মধ্যে পারস্পরিক সংস্পর্শ হ্রাসের পাশাপাশি বুস্টার টিকাদানের প্রসার ঘটানোর মধ্য দিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধে আরও কিছুটা শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া জাপানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এও বলেন যে বিশেষ করে, ২০এর কোঠার বয়সীদের মধ্যে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে বিধায় এই বয়সী গ্রুপকে লক্ষ্য করে নেয়া পদক্ষেপসমূহ সংক্রমণের একটি পুনরুত্থানের সম্ভাবনা হ্রাসের মূল চাবিকাঠি হতে পারে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৯: “বিএ.২” এবং “এক্সই” ধরন দুটি কী রকমের? (২) “বিএ.২”র বৈশিষ্ট্য এবং টিকার কার্যকারিতা

উত্তর-৪১৯: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন এবং এদের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছি। এই পর্বে আমরা আলোকপাত করবো করোনাভাইরাসের একটি ধরন ওমিক্রনের আরো বেশি ছোঁয়াচে সাব-ভ্যারিয়েন্ট “বিএ.২”র বৈশিষ্ট্য এবং টিকার কার্যকারিতার ওপর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে করোনাভাইরাসের ষষ্ঠ তরঙ্গের সময় পৃথিবী জুড়ে প্রাধান্য বিস্তার করেছিল যে ধরনটি, সেই “বিএ.১”এর চেয়ে “বিএ.২” বেশি সংক্রামক। ডেনমার্ক থেকে পাওয়া উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, “বিএ.২” ধরনটির ছড়িয়ে পড়তে “বিএ.১”এর চেয়ে ১৫ শতাংশ কম সময় লাগে। বিশ্লেষণে জানা যায়, “বিএ.২”র ক্ষেত্রে সংক্রমিত একজন ব্যক্তি থেকে আরও কতজন সংক্রমিত হবেন তার গড়পড়তা সংখ্যা বা তথাকথিত কার্যকর পুন:উৎপাদনের সংখ্যা “বিএ.১”এর চাইতে ২৬ শতাংশ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। অন্য দিকে রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠার ঝুঁকি  কম। ডব্লিউএইচও ব্রিটেনে করা এক বিশ্লেষণের উল্লেখ করেছে যেখানে দেখা যায় “বিএ.১” এবং “বিএ.২”এ সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হারে কোনো তফাৎ নেই। ওতে আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তি “বিএ.১”এ সংক্রমিত হওয়ার পরে “বিএ.২”তেও সংক্রমিত হতে পারেন। 

ব্রিটেনে পরিচালিত গবেষণায় জানা যায়, বুস্টার ডোজ টিকা নেওয়ার অন্ততপক্ষে এক সপ্তাহ পরে “বিএ.১”এ যারা সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের  মধ্যে ৭১ দশমিক ৩ শতাংশের বেলায় কোনো উপসর্গ ছিল না। “বিএ.২’র ক্ষেত্রে এই হার সামান্য বেড়ে ৭২ দশমিক ২ শতাংশ হয়। তৃতীয় ডোজ নেওয়ার কমপক্ষে ১৫ সপ্তাহ পরে টিকার কার্যকারিতা “বিএ.১”এর ক্ষেত্রে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং “বিএ.২”এর ক্ষেত্রে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পায়।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৮: “বিএ.২” এবং “এক্সই” ধরন দুটি কী রকমের? (১) “বিএ.২” বিশ্বজুড়ে বিস্তার লাভ করছে

উত্তর-৪১৮: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। “বিএ.২” হল ওমিক্রনের একটি সাবভেরিয়েন্ট যেটি আরও বেশি ছোঁয়াচে। এপ্রিল মাসের ১১ তারিখ ওমিক্রনের নতুন একটি ধরন “এক্সই” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা এক নারীর দেহে পাওয়া যাওয়ায় জাপান তার প্রথম সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত করেছে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনগুলো এবং এদের সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে কী রকম পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে, সে বিষয়টি নিয়ে আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকের এবারে রয়েছে প্রথম পর্ব।

করোনাভাইরাস বিশ্ব জুড়ে বিস্তার লাভ করার সাথে সাথে বারংবার তা রূপ পরিবর্তন করছে। বর্তমানে ভাইরাসের যে ধরনটি বিশ্বে প্রধানত দেখা যাচ্ছে তা হল ওমিক্রনের সাবভেরিয়েন্ট “বিএ.২” যেটি “বিএ.১” এর পরিবর্তিত রূপ। ভাইরাসের পৃষ্ঠে স্পাইক প্রোটিনের জিনগত উপাদানের কিছু অংশ পরিবর্তিত হতে দেখা যায়। মানব কোষকে সংক্রমিত করার সময় স্পাইক প্রোটিন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

“বিএ.২”-এ সংক্রমিত লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে মার্চ মাসের ২৭ তারিখের সপ্তাহে সংক্রমিতদের ৯৩ দশমিক ৯ শতাংশই হল সাব ভেরিয়েন্টের কারণে সংক্রামিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী এপ্রিল মাসের ২ তারিখের সপ্তাহে সংক্রমিতদের ৭২ দশমিক ২ শতাংশই হল “বিএ.২” এর কারণে।

ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখার বেসরকারি এক কোম্পানির থেকে পাওয়া উপাত্তের উপর ভিত্তি করে সংক্রামক রোগ সংক্রান্ত জাপানের জাতীয় ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী মার্চ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ দেশে আক্রান্তদের প্রায় ৩০ শতাংশ হল “বিএ.২” সাবভেরিয়েন্টের কারণে। তবে ইনস্টিটিউটের ধারণা যে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সংক্রমণের সংখ্যা ৯৩ শতাংশে এবং জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে তা ১০০ শতাংশে উন্নীত হবে।

“বিএ.১” এর গোষ্ঠী সংক্রমণ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষে প্রথমবারের মত জাপানে নিশ্চিত করা হয়েছিল। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ সংক্রমণের প্রধান স্ট্রেইন ডেল্টাকে কার্যত স্থলাভিষিক্ত করে এই ধরনটি। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ প্রথমবার টোকিওতে “বিএ.২” এর গোষ্ঠী সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়। “বিএ.১” যে গতিতে ডেল্টাকে স্থলাভিষিক্ত করেছিল এই ধরনটি অতি দ্রুত “বিএ.১” কে সরাতে না পারলেও স্থিরভাবে এটি সেদিকেই এগোচ্ছে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৭: করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুগছেন এমন ৪২২ জন রোগীর কেস স্টাডি (৫) ভবিষ্যতের চিকিৎসায় পর্যবেক্ষণ ফলাফল কাজে লাগানো হবে।

উত্তর-৪১৭: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাব নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকের শেষ পর্বে, আমরা রোগীদের ভবিষ্যৎ চিকিৎসার উপর আলোকপাত করবো।

সাইতামা জেলা কর্তৃপক্ষ এবং সাইতামা চিকিৎসা সমিতি দীর্ঘমেয়াদী উপসর্গ যাদের বেলায় দেখা গেছে সেরকম রোগীদের উপর বিশ্লেষণ চালায়, যাদের অধিকাংশই অমিক্রন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বিশ্লেষণের ফলাফলকে এরা রোগ নির্ধারণ ও রোগের চিকিৎসার বেলায় ব্যবহারের নির্দেশিকায় রূপান্তরিত করে নিয়েছে। কর্মকর্তারা একই সাথে দীর্ঘমেয়াদী উপসর্গ সহ অমিক্রন-আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা করে দেখারও পরিকল্পনা করছেন।

সাইতামার কর্মকর্তারা দীর্ঘমেয়াদী উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে সক্ষম চিকিৎসা কেন্দ্রের সংখ্যা জেলায় ১৪০টির বেশীতে বৃদ্ধি করে নেয়ার পরিকল্পনা করছেন। তারা চাইছেন সেরকম চিকিৎসা কেন্দ্র যেন সমস্ত জেলা জুড়ে সমানভাবে বিস্তৃত হয়ে অবস্থান করে। সাইতামা চিকিৎসা সমিতির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মারুকি ইয়ুইচি এরকম প্রত্যাশা করছেন যে রোগের পরবর্তী তরঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীর সংখ্যা পঞ্চম তরঙ্গের বেলায় যতটা দেখা গিয়েছিল তার চাইতে দ্বিগুন কিংবা বেশি বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেছেন সেরকম রোগীদের উপর চালানো পর্যবেক্ষণ থেকে পাওয়া নতুন জ্ঞান নির্দেশিকায় যোগ করে নেওয়া হবে। তিনি আশা করছেন চিকিৎসকদের এটা করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের বেলায় রোগীর অবস্থা আরও ভালভাবে বুঝে উঠতে সাহায্য করবে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৬: করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুগছেন এমন ৪২২ জন রোগীর কেস স্টাডি (৪) অব্যাহত প্রচেষ্টাই সুস্থ হওয়ার চাবিকাঠি।

উত্তর-৪১৬: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাব নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে, আমরা এমন একজন রোগী সম্পর্কে আপনাদের অবহিত করব যিনি অব্যাহত প্রচেষ্টার কল্যাণেই এই রোগ থেকে সেরে উঠেছেন।

এই রোগী হচ্ছেন সাইতামা জেলায় বাস করা ১৬ বছর বয়সী একজন ছাত্রী। তিনি হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার পরপরই, ২০২১ সালের মে মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি প্রচণ্ড মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি তাপমাত্রার জ্বরে ভুগেছিলেন। তিনি সরকার স্বীকৃত কোয়ারেন্টাইন থাকার হোটেলে থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করেন। তবে তিনি অবিলম্বে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন যেমন, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, প্রচণ্ড অবসাদ এবং ঘ্রাণ ও স্বাদের পরিবর্তিত অনুভূতি পেতে থাকেন। ঐ বছরের শরৎকাল পর্যন্ত তিনি মাথা ঝিম ঝিম করার দরুণ স্কুলে যেতে পারেননি। তাকে অধিকাংশ সময় বিছানাতেই থাকতে হয়েছে। তিনি ৪টি পৃথক পৃথক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে যান, কিন্তু তার রোগের লক্ষণের কোন উন্নতি হয়নি।

এরপর এই ছাত্রী একটি কান, নাক ও গলার ডাক্তারখানায় যান যেখানে কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য একটি বিশেষ বিভাগ রয়েছে। সেখানকার একজন ডাক্তার প্রস্তাব করেন যে, মাথাঘোরা কমানোর জন্য তাকে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং ঘ্রাণশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্যও তাকে চেষ্টা করতে হবে।

এই রোগীকে দেয়ালের একটি বিন্দুতে তাকিয়ে থাকার অনুরোধ করা হয় এবং নির্দেশমত তার চোখ উপর, নিচ, বাম ও ডানে ঘুরাতে বলা হয়। তবে তখন তিনি মাথা এবং শরীরের অন্যান্য অংশ নাড়াতে পারবেন না। এই প্রশিক্ষণ হচ্ছে তার ভারসাম্যের বোধকে ফিরিয়ে আনার জন্য। ঘ্রাণশক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য অন্য এক প্রশিক্ষণে, তাকে ল্যাভেন্ডার বা লেবুর মত গন্ধযুক্ত নির্যাস-সংক্রান্ত তেলের গন্ধ নিতে বলা হয় যেন তিনি এইসব গাছের ছবি দেখছেন। এটি হচ্ছে ঘ্রাণ এবং তার স্মৃতিশক্তির মধ্যে সংযোগ পুন:স্থাপনের জন্য। তিনি বাড়িতে প্রতিদিন এই প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান এবং তার অবস্থা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে আসতে থাকে।

তার দেখানো সেই ক্লিনিকের পরিচালক, সাকাতা হিদেআকি আমাদের বলেছেন, সাথে সাথে ডাক্তার দেখানো এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পাওয়া রোগীদের অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি সেরে ওঠার প্রবণতা রয়েছে। তবে, তিনি এও বলেন, ডাক্তার দেখানোর আগে ৩ থেকে ৬ মাস অপেক্ষা করা কোন কোন রোগীর মধ্যে তাদের অবস্থার সামান্য উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। তিনি বলেন, পরিস্থিতি আশাবাদী হতে দিচ্ছে না, কেননা সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ থেকে আরও কোভিড পরবর্তী রোগী তাকে দেখতে হবে বলে তিনি মনে করছেন।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৫: করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুগছেন এমন ৪২২ জন রোগীর কেস স্টাডি (৩) ছয় মাসেরও বেশি সময় পরে।

উত্তর-৪১৫: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাব নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে, আমরা এমন এক রোগী সম্পর্কে আপনাদের অবহিত করব যিনি এই রোগ থেকে সেরে ওঠার ছয় মাস পরেও এখনও ভুগছেন।

এই রোগী হচ্ছেন সাইতামা জেলায় বাস করা ৬০ বছর বয়সী এক পুরুষ। তিনি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি ক্লান্তি, নিউমোনিয়া ও ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি তাপমাত্রার জ্বরে ভুগেছিলেন। তিনি বাড়িতেই সুস্থ হয়ে ওঠেন, তবে ঘ্রাণ ও স্বাদের অনুভূতি হারান এবং খুব বেশি খেতে পারতেন না। ঐ ব্যক্তি ১০ কিলোগ্রামেরও বেশি ওজন হারান। সুস্থ হয়ে ওঠার পরে তিনি একটি নির্মাণ স্থলে কাজে যোগ দেন। তবে তিনি দীর্ঘায়িত ক্লান্তি এবং ঘুমের সমস্যা নিয়ে অভিযোগ করেন। তিনি কাজ করা চালিয়ে যেতে না পেরে একই বছরের ডিসেম্বর মাসে চাকরি ছেড়ে দেন।

ঐ ব্যক্তি বলেন, তিনি যখন ঘুমাতে যান তখন তিনি সম্ভবত ঘন্টাখানেক ঘুমাতে পারেন এবং এরপরে ভোরের আলো না ফোটা পর্যন্ত তিনি আর ঘুমাতে পারেন না। তিনি বলেন, কাজের ক্ষেত্রে তার মনে হত যে তিনি অনেকক্ষণ ধরে কাজ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, কি করতে হবে, সেটি তার জানা থাকলেও তার মন শীঘ্রই বিচলিত হতে শুরু করত এবং তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গও নড়াচড়া বন্ধ করে দিত। তিনি বলেন, এই অবস্থায় যে আর কাজে যেতে পারবেন না, তা তিনি জানতেন।

কোভিড-পরবর্তী অবস্থা সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ ঐ ব্যক্তিকে বলেন যে তার ব্রেইন ফগ সিনড্রোম বা মস্তিষ্কের ধোঁয়াশা নামক একটি উপসর্গ দেখা দিয়েছে যার মধ্যে অস্পষ্টতার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ হ্রাসের সমস্যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যদিও তিনি ওষুধ সেবনের পাশাপাশি চিকিৎসকের দেয়া দৈনন্দিন জীবনযাত্রার নির্দেশিকা অনুসরণ করছেন, তথাপি সাত মাস পরেও এখনও তার অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। তিনি এখনও ক্লান্তি ও অস্পষ্টতার অভিযোগ করছেন। ঐ ব্যক্তি বলেন, তিনি এটি আশা করেননি যে এই রোগের রেশ এতদিন ধরে চলতে থাকবে। তিনি বলেন, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

তার চিকিৎসক কোদাইরা মাকোতো আমাদের বলেন যে ক্লান্তি এবং মস্তিষ্কের ধোঁয়াশা হচ্ছে দুটি প্রধান কোভিড-পরবর্তী অবস্থা, যেগুলোর কখনও কখনও ছয় মাস বা তারও বেশি সময়ের জন্য দীর্ঘায়িত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তিনি বলেন, এই ধরনের অবস্থা থাকা রোগীদের অব্যাহত সমর্থনের প্রয়োজন।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৪: করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুগছেন এমন ৪২২ জন রোগীর কেস স্টাডি (২) ডাক্তারদের জন্য নির্দেশাবলী।

উত্তর-৪১৪: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাব নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে জানব উপসর্গ নির্ণয় ও চিকিৎসার বিষয়ে সম্মুখসারির ডাক্তারদের সংকলন করা নির্দেশিকাতে কী বলা হয়েছে।

সাইতামা জেলা এবং সাইতামা চিকিৎসা সমিতি করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুক্তভোগী ৪২২ জন রোগীর ওপর ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে পরিচালিত এক সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে। সমীক্ষার ফলাফল যারা সংকলন করেছেন, সেই ডাক্তাররা কোভিড-পরবর্তী প্রধান প্রধান উপসর্গের তালিকা তৈরি করার পাশাপাশি, কীভাবে রোগীদের অবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়, সে সম্পর্কে কিছু নির্দেশ ও উপদেশ-পরামর্শ দিয়েছেন।

ইন্টারনাল মেডিসিনের ডাক্তারদের তৈরি করা নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে, জেনে নেওয়া যাক।

১) বেশ কয়েকটা উপসর্গে রোগীরা ভোগেন, যার মধ্যে অবসাদ বা ক্লান্তি এবং তথাকথিত ব্রেইন ফগ সিনড্রোম অন্তর্ভুক্ত। ব্রেইন ফগ সিনড্রোম দেখা দিলে লোকেদের চিন্তা করার শক্তি, স্মৃতি শক্তি এবং মন:সংযোগের ক্ষমতা কমে যায়।
২) সেরে উঠতে ছয় মাস বা তার চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে। এসব উপসর্গ রোগীর প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
৩) ডাক্তারদের উচিত সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় থাকা রোগীদের বিশ্রাম ও প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্মের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করা।
৪) রোগীরা যাতে উপসর্গগুলো সামাল দিতে এবং এগুলো সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শেখে, সে ব্যাপারে তাদের সাহায্য করা উচিত ডাক্তারদের।

কান, নাক ও গলার ডাক্তাররা তাদের নির্দেশিকায় বলেছেন: --

১) কোভিড-পরবর্তী উপসর্গ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেশি প্রকট।
২) ঘ্রাণ ও স্বাদ গ্রহণের ইন্দ্রিয়ে পরিবর্তন ঘটার ফলে রোগীরা জীবনমানের অবনতিতে কষ্ট পান। তাদের এ থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় ডাক্তারদের নৈতিক ও মানসিক সমর্থনের বিরাট গুরুত্ব রয়েছে।
৩) ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের উন্নতি ঘটানোর একটি বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে ডাক্তাররা তথাকথিত ওলফ্যাকটরি ট্রেইনিংয়ের সুপারিশ করেন, যেখানে রোগীকে দিয়ে বার বার নানারকম ঘ্রাণ শোঁকানো হয়।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১৩: করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুগছেন এমন ৪২২ জন রোগীর কেস স্টাডি (১) কী ধরনের উপসর্গ জানানো হয়েছে?

উত্তর-৪১৩: এনএইচকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবের ওপর আমরা আলোকপাত করব।

সাইতামা জেলা এবং সাইতামা চিকিৎসা সমিতি, ২০২১ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু করে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের দীর্ঘ-মেয়াদী প্রভাবে ভুগছেন এমন রোগীদের ওপর চালানো এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। ঐ জেলার সাতটি হাসপাতালে আসা ৪২২ জন বহিরাগত রোগীর উপসর্গ গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখা হয়।

গবেষণায় দেখা যায় যে রোগীদের ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ ঘ্রাণের অনুভূতি জনিত সমস্যা, ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ অল্পতে হাঁপিয়ে উঠা সহ শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা, ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ ক্লান্তির অনুভূতি এবং ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ কাশি ও কফের সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।

৯ দশমিক ৭ শতাংশ চুল পড়ে যাওয়া, ৯ শতাংশ জ্বর, মাথাব্যাথা বা মাথার পিছনে অস্বস্তি এবং ৭ দশমিক ১ শতাংশ স্বাদের অনুভূতিতে অস্বাভাবিকতার বিষয়টি জানিয়েছেন।

রোগ নির্ণয়ের প্রায় এক বছর পরেও কয়েকজন রোগী দীর্ঘ-মেয়াদী উপসর্গে ভুগে চলেছেন বলে গবেষণায় দেখা যায়।

আমাদের পরবর্তী পর্বে আমরা কেস স্টাডি প্রতিবেদনে সংক্ষিপ্ত ভাবে উল্লেখ করা চিকিৎসা নির্দেশিকার ওপর আলোকপাত করব।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১২: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও এত বেশি কেন এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে? (৫) ভবিষ্যতের কথা ভেবে কী করা উচিত?

উত্তর-৪১২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছালেও, নতুন সংক্রমণের সংখ্যা হ্রাসের গতিতে মন্থরতা দেখা যাচ্ছে। কেন এই সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে না চলতি ধারাবাহিকে আমরা তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে এর পঞ্চম ও চূড়ান্ত পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করবো আগামী দিনগুলোর কথা ভেবে কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত।

১৭ই মার্চ জাপান সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত উপদেষ্টা প্যানেলের প্রধান ওমি শিগেরু বলেন যে কার্যত জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পর নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা আবার বৃদ্ধি পেতে পারে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা কম রাখা এবং চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার ওপর চাপ যাতে না বাড়ে তা নিশ্চিত করা।

ওমি বলেন, লোকজনের টিকা নেওয়া প্রয়োজন, তবে সেটুকুই যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধের বিধিনিয়ম অনুসরণ অব্যাহত না রাখলে কোভিডের কারণে প্রাণহানি বৃদ্ধি পেতে পারে, যা ঘটেছে ইউরোপের কয়েকটি দেশে। তিনি লোকজনকে নিজেদের এবং অন্যদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরা অব্যাহত রাখতে আহ্বান জানান, কারণ হাঁচি-কাশি’র ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজি লোকজনের নিজেদের এবং পরিবার ও বন্ধুদের সুরক্ষার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকার অতিরিক্ত ডোজ বা বুস্টার ডোজ নেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তরুণ প্রজন্ম সহ সবাইকে তিনি টিকার সবকটা ডোজ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার ফলে তাদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছে। তিনি এও বলেন কার্যত জরুরি অবস্থা উঠে যাওয়ার পর লোকজন ও ব্যবসাসমূহের কী কী নিয়ম মেনে চলা সমীচীন, সরকারের তা পরিস্কার করে জানানো উচিত।

ওকিনাওয়া চুবু হাসপাতালের তাকাইয়ামা ইয়োশিহিরো বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সপ্তম তরঙ্গ আঘাত হানার যথেষ্ট আশংকা রয়েছে, কারণ গতবছর এবং ২০২০ সাল, এই দু বছরই স্কুলে বসন্তকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর নতুন সংক্রমণের সংখ্যা এক লাফে অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন আবার একই পরিস্থিতির অবতারণা হতে পারে এবং তার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভাল।

তাকাইয়ামা বলেন যে সমাজের ওপর কড়া বিধিনিষেধ না চাপিয়েও সংক্রমণের সপ্তম তরঙ্গের মোকাবিলা করা যাবে, সেই প্রত্যাশা তিনি করছেন। এর জন্যে তিনি দুটি দিকের প্রতি নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথমত, বয়োবৃদ্ধদের পরিচর্যা বা থাকার কোনও জায়গায় কেউ সংক্রমিত হলে, ছড়িয়ে পড়া রোধ করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, বুস্টার ডোজের টিকাদান কর্মসূচির গতি আরও বাড়াতে হবে।

এই তথ্যগুলো এপ্রিল মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১১: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও এত বেশি কেন এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে? (৪) ওমিক্রনের বিএ.২ সাবভেরিয়েন্ট মূল সাবভেরিয়েন্টকে কি স্থলাভিষিক্ত করবে?

উত্তর-৪১১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ সর্বোচ্চ পর্যায় অতিক্রম করেছে। তবে নতুন সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ার গতি হচ্ছে মন্থর। ধারাবাহিক এই আয়োজনে আমরা সংক্রমণ কেন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে না এবং আগামীতে কি হবে তার উপর আলোকপাত করছি। চতুর্থ পর্বে এবারে আমরা ওমিক্রনের বিএ.২ সাবভেরিয়েন্ট মূল সাবভেরিয়েন্টের স্থলাভিষিক্ত করবে কিনা সে বিষয় নিয়ে কথা বলবো।

জাপানে সর্বশেষ দফার সংক্রমণের ক্ষেত্রে ওমিক্রনের বিএ.২ সাবভেরিয়েন্টই হল প্রধান উদ্বেগের কারণ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্যানেল মার্চ মাসের ১৫ তারিখ সমবেত হয়েছিল। দেশে বিএ.২ কিভাবে বিস্তার লাভ করবে বলে তাদের ধারণা সে বিষয়ে প্যানেল তার পূর্বাভাস উপস্থাপন করেছিল।

কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি টোকিওতে পরীক্ষামূলক উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখেন। তার অনুমান অনুযায়ী ওমিক্রনের সব ধরনের সংক্রমণের মধ্যে ৮২ শতাংশই হবে বিএ.২-এর কারণে এবং এটি পয়লা এপ্রিলের মধ্যে রাজধানীতে মূল সাবভেরিয়েন্টকে স্থলাভিষিক্ত করবে।

জাপানে সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউটে নজরদারী, টিকাদান এবং মহামারি সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান হলেন সুযুকি মোতোই। দুটি বেসরকারি পরীক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা পরীক্ষার ফলাফলের নমুনা তিনি বিশ্লেষণ করে দেখেন এবং সারা জাপানে বিএ.২ সংক্রমণ কত শতাংশ বিস্তার লাভ করবে সে বিষয়ে পূর্বাভাস করেন। তার অনুমান অনুযায়ী এই সাবভেরিয়েন্টটি এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে সব ধরনের সংক্রমণের ৭০ শতাংশ এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ৯৭ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে।

বিএ.২ সাবভেরিয়েন্টটি বর্তমানে যে সাবভেরিয়েন্টের প্রাধান্য বেশি, সেই বিএ.১-এর তুলনায় বিশ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। বিএ.২ যদি বিএ.১’কে স্থলাভিষিক্ত করতে শুরু করে তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বর্তমানে নেয়া পদক্ষেপ যথেষ্ট নাও হতে পারে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১০: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও এত বেশি কেন এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে? (৩) যথেষ্ট মাত্রায় হ্রাস পাওয়ার আগে সংক্রমণের ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে দেখা দেয়া উদ্বেগ।

উত্তর-৪১০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ সর্বোচ্চ পর্যায় অতিক্রম করেছে। তবে নতুন সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ার গতি হচ্ছে মন্থর।
ধারাবাহিক এই আয়োজনে আমরা সংক্রমণ কেন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে না এবং আগামীতে কি হবে তার উপর আলোকপাত করছি। তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা পর্যাপ্ত মাত্রায় হ্রাস পাওয়া দেখা না গিয়ে আবারও তা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবো।

নাগোইয়া প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হিরাতা আকিমাসার নেতৃত্বে একদল গবেষক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই’তে নানারকম উপাত্ত যুক্ত করে নিয়ে টোকিওর ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কি হতে পারে তার একটি নকল তৈরি করেছেন। এসব উপাত্তের মধ্যে মানুষের চলাচল, অতীতের সংক্রমণ এবং টিকার কার্যকারিতা অন্তর্ভুক্ত আছে।

একটি ধারণা ছিল এরকম যে কার্যত জরুরি অবস্থা শেষ হয়ে যাওয়ার পর মানুষ গত বছরের একই সময়ের মাত্রার মত জীবনযাপনে ফিরে যাবে। সেরকম অবস্থায় টোকিওতে দৈনিক নতুন সংক্রমণ এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে প্রায় ৫,৪০০টির মত থাকার পর সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে একই পর্যায়ে অবস্থান করে এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ৫,৬০০টির কিছু বেশিতে বিরাজ করবে।

মানুষের চলাচল গত বছরের চাইতে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে ধারণা করে নিলে এপ্রিল মাসের শুরুতে দৈনিক গণনা ধীরে বৃদ্ধি পাবে এবং এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৭,৭০০টির বেশিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে।

নকল পরীক্ষা একই সাথে এরকম ধারণা নিয়ে চালানো হয়েছে যে মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পাবে ও সেই সাথে পানাহারের জন্য লোকজনের সমাবেশও ইংরেজি নববর্ষের ছুটির সময়ের মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে। সেরকম অবস্থায় দৈনিক নতুন সংক্রমণ মার্চ মাসের শেষ দিক থেকে বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ১৩ হাজারেরও বেশিতে পৌঁছে যাবে।

গবেষকরা বলছেন, বুস্টার টিকার কার্যকারিতা বিবেচনা করে দেখলে বলা যায় যে মারাত্মক অসুস্থ রোগীর সংখ্যা সম্ভবত নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে না। তবে তারা আরও বলছেন সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়া কমিয়ে আনতে হলে একসাথে খাওয়া-দাওয়া করা মানুষের সংখ্যা সীমিত করা হয়তো উচিৎ হবে।

হিরাতা বলছেন বড় দলে জড়ো হয়ে মানুষের খাওয়া-দাওয়া করা বছরের এই সময়ে সাধারণত বৃদ্ধি পায়, যা কিনা সংক্রমণ হ্রাস করা কঠিন করে তুলতে পারে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৯: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও এত বেশি কেন এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে? (২) সংক্রমণের হ্রাস শ্লথ হওয়ার একটি কারণ- শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার।

উত্তর-৪০৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ওমিক্রন ধরনের বিস্তারের কারণে সৃষ্ট সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গ এর চূড়া ছুঁয়েছে। তবে, সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ার গতি শ্লথ এবং অনেকে এরকম আশঙ্কাও করছেন যে সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি হয়ত ৭ম তরঙ্গে রূপ নিতে পারে।
আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস না পাওয়ার কারণ ও সংক্রমণ পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ গতিবিধির ওপর আলোকপাত করা হবে। ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আমরা শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের কথা তুলে ধরব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহে ১০ বছরের ছোট ৬৫ হাজারেরও বেশি শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, যদিও সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গ এর চূড়ায় ইতোমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিল। ৫ম তরঙ্গের মাঝে গত বছরের ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত এক সপ্তাহে তাদের মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ১০ হাজার ৩৮০ জনের তুলনায় অনেক বেশি।

নতুন করে আক্রান্ত হওয়া সব বয়সের রোগীর মধ্যেও শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। জানুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ শতাংশ, তবে মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশে যা এমনকি মধ্য-ফেব্রুয়ারি থেকে সংক্রমণের মোট সংখ্যা কমতে শুরু করলেও অন্য সব বয়সের গ্রুপকে ছাড়িয়ে গেছে।

নার্সারি স্কুলের মত শিশু কল্যাণ স্থাপনাগুলোতে মার্চ মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহে গুচ্ছ সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে রেকর্ড ২২৯ হয়েছে যা এর আগের সপ্তাহ থেকে ৫৬টি বেশি। স্কুলগুলোতেও গুচ্ছ সংক্রমণের সংখ্যা একই সময়কালে ৫৯ থেকে বেড়ে ৩১৮-তে পৌঁছেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনের মত যেসব স্থানে তারা একসাথে সময় কাটাচ্ছে সেখানে শিশুদের মধ্যে ওমিক্রন ধরন ডেল্টা ধরনের চেয়ে সহজে বিস্তার লাভ করছে। তারা এই ইঙ্গিতও দিচ্ছেন যে অন্য প্রজন্মের চেয়ে শিশুদের মধ্যে টিকা নেয়ার হার কম।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৮: করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা এখনও এত বেশি কেন এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে? (১) সংক্রমণের হ্রাস শ্লথ হওয়ার একটি কারণ- বুস্টার টিকাদানে বিলম্ব এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার।

উত্তর-৪০৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ওমিক্রন ধরনের বিস্তারের কারণে সৃষ্ট সংক্রমণের ৬ষ্ঠ তরঙ্গ এর চূড়া ছুঁয়েছে। তবে, সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ার গতি শ্লথ এবং নতুন সংক্রমণের সংখ্যা এখনও বেশি। অনেকে এরকম আশঙ্কাও প্রকাশ করছেন যে সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি হয়ত ৭ম তরঙ্গে রূপ নিতে পারে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস না পাওয়ার কারণ এবং সংক্রমণ পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ গতিবিধির ওপর আলোকপাত করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণ হ্রাসের গতি শ্লথ হওয়ার নেপথ্যে একাধিক প্রধান কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথম কারণ হলো, টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়ায় বিলম্বের কারণে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। তাদের ভাষ্যানুযায়ী, অন্য কারণটি হল, শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব অব্যাহত রয়েছে।

পঞ্চম তরঙ্গের ক্ষেত্রে প্রবীণদের মধ্যে সংক্রমণের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০২১ সালের জুলাই মাসের শেষ নাগাদ সংক্রমণ তুঙ্গে ওঠার সময় ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের ৭০ শতাংশেরও বেশি টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়া সম্পন্ন করেছিলেন। সেসময়, তরুণ প্রজন্মের মাঝে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও বয়োজ্যেষ্ঠরা এতে আক্রান্ত হননি। আর বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এর ফলেই সংক্রমণের সংখ্যা তখন দ্রুত হ্রাস পেয়েছিল।

অন্যদিকে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে ৬ষ্ঠ তরঙ্গের মাঝে, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পরে অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ায়, কোভিড-১৯’এর বিরুদ্ধে টিকার সুরক্ষার মাত্রা ক্রমশ দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। তার উপর, ৬৫ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সীদের ১ শতাংশেরও কম তখন বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছিলেন।

আবার, ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখ যখন সংক্রমণের সর্বোচ্চ সংখ্যা নিবন্ধিত হচ্ছিল, তখন বুস্টার টিকার হার ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার পরে বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। মূলত, বয়স্কদের মধ্যে করোনাভাইরাস এখনও ছড়িয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যানুযায়ী, ১৪ই মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে সারা দেশে বয়স্ক পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোতে সর্বোচ্চ ৩শ ৪১টি গুচ্ছ সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৭: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (৮) পোলেন এলার্জির উপসর্গ বলে মনে হলে অবিলম্বে ডাক্তার দেখান।

উত্তর-৪০৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে এই ভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটির বিস্তার যখন অব্যাহত রয়েছে, তারই মধ্যে শুরু হয়েছে পোলেন এলার্জির মৌসুমও। এ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের অষ্টম ও শেষ পর্বে, পোলেন এলার্জির উপসর্গ বলে মনে হওয়া মাত্র ডাক্তার দেখানোর গুরুত্বের প্রতি আলোকপাত করা হবে।

আপনি যদি পোলেন এলার্জির বলে অনুমিত উপসর্গে হঠাৎ ভুগতে আরম্ভ করেন, যে উপসর্গ আপনার গতবছর ছিল না, সেক্ষেত্রে উচিত হবে সতর্ক হওয়া এবং এই উপসর্গকে এলার্জি বলেই ধরে না নেওয়া।

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পোলেন সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে সিডার গাছের রেণু সারা জাপানে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ইতোমধ্যেই। জাপান আবহাওয়া সমিতি এই মৌসুমে তার পোলেন সংক্রান্ত পূর্বাভাষে জানিয়েছে যে জাপানের বহু এলাকা, বিশেষ করে পূর্ব জাপানে ছড়িয়ে পড়ার হার বিগত মৌসুমের তুলনায় কোথাও সামান্য বেশি, কোথাও অনেক বেশি। বাইরে বেরিয়ে আপনি যদি ঘন ঘন হাঁচি দেন এবং নাক দিয়ে জল গড়ায়, তাহলে আশপাশের লোকেরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবে, কারণ তারা বুঝতে পারবে না এটা এলার্জির উপসর্গ নাকি কোভিড-১৯।
তাই পোলেন এলার্জির উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করানোই সমীচীন।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৬: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (৭) উপসর্গের কারণ কোভিড-১৯ না এলার্জি, বিষয়টি নিয়ে আপনি যখন নিশ্চিত নন।

উত্তর-৪০৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় জাপান এখন পোলেন এলার্জির মৌসুমে প্রবেশ করছে। আমাদের এই ধারাবাহিকের সপ্তম পর্বে এবারে আমরা উপসর্গের কারণ কোভিড-১৯ না পোলেন এলার্জি, এটা নির্ধারণে অসুবিধার মুখে পড়লে আপনাকে কী করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করবো।

কিমুরা ইয়ুরিকা হলেন একজন চিকিৎসক যিনি মাথা ও গলার অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত জাপানের অটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি সমিতিতে করোনাভাইরাস পদক্ষেপ বিষয়ক একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আপনার যদি সচরাচর যে এলার্জি উপসর্গগুলো দেখা দেয় সেগুলোই হয়ে থাকে এবং প্রচণ্ড জ্বরের মত অন্যান্য কোন ধরনের উপসর্গ দেখতে না পাওয়া যায় এবং তারসাথে আপনার চারিপাশে যদি কেউ কোভিড-১৯’এ সংক্রমিত না হয়ে থাকে, তাহলে সাধারণ এলার্জি চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে কোন অসুবিধা নেই।

তিনি আরও বলেন, আপনি যদি সাধারণ হাঁচি এবং সর্দির মত সমস্যায় ভুগে থাকেন, এবং সেই সাথে এই বছরে যদি প্রচন্ড জ্বর, গলা ব্যাথা এবং মাথা ব্যাথার মত উপসর্গও আপনার শরীরে দেখা দেয়, তবে ক্লিনিকে যাওয়ার আগে এই তথ্য অবশ্যই তাদেরকে জানাবেন।

নিজেকে এবং চারিপাশের লোকজনকে সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে যেসব মানুষের পোলেন এলার্জি রয়েছে তারা যেন এই মৌসুমে আগে থেকেই চিকিৎসা নিতে শুরু করেন সেটা তিনি দেখতে চান বলে জানান।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৫: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (৬) হাঁচি বা সর্দির মত উপসর্গ আপনার দেখা দিলে কী হবে?

উত্তর-৪০৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় জাপান এখন পোলেন এলার্জির মৌসুমে প্রবেশ করছে। আমাদের এই ধারাবাহিকের ষষ্ঠ পর্বে এবারে আমরা হাঁচি কিংবা সর্দি দেখা দিলে আপনাকে কী করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করবো।

মাথা ও গলার অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত জাপানের অটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি সমিতি পোলেন এলার্জি থাকা লোকজনকে স্বাভাবিক অবস্থার চাইতে দ্রুত সময়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

চিকিৎসকরা বলছেন আগাম চিকিৎসা পোলেন এলার্জির উপসর্গ কমিয়ে দিতে সক্ষম। তারা বলছেন গবেষণায় দেখা গেছে যে উপসর্গ দেখা দেয়ার আগে কিংবা উপসর্গ হালকা ধরনের থাকা অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করা হলে পরবর্তীতে উপসর্গ উপশম করা যায়।

পোলেন এলার্জির নানারকম চিকিৎসা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এলার্জিতে যারা ভুগছেন, কান-নাক-গলার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে উপসর্গের এবং স্বাস্থ্যের অবস্থাভেদে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব।

চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে এলার্জির উপসর্গ চলে যাওয়ার পরও গলা ব্যথা, মাথা ধরা কিংবা খুব বেশি অবসাদ বোধ করলে আপনি হয়তো করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন বলে সন্দেহ পোষণ করতে পারেন। এছাড়া পোলেন এলার্জির চিকিৎসা নেয়ার পরও এলার্জি পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না বলে আপনার মনে হলে করোনাভাইরাসে আপনি হয়তো সংক্রমিত হতে পারেন।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৪: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (৫) এই ভাইরাসের অনিচ্ছাকৃত বিস্তারের ঝুঁকি

উত্তর-৪০৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের ব্যাপক বিস্তার লাভের মধ্যেই জাপান প্রবেশ করছে পোলেন এলার্জি বা ফুলের রেণু থেকে সৃষ্ট এলার্জির মৌসুমে। চলতি ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্বে এবার আমরা আলোচনা করবো লোকজন যে আক্রান্ত হতে পারেন সেব্যাপারে সচেতন না থাকার কারণে এই ভাইরাস বিস্তারের সম্ভাবনা নিয়ে।

নাক, কান ও গলার রোগ এবং মাথা ও ঘাড়ের সম্পর্কযুক্ত অংশের সার্জারি সংক্রান্ত জাপান সমিতির প্রকাশ করা পরামর্শবলীতে বিভিন্ন সমস্যার কথা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যেগুলো একটি ওমিক্রন মহামারির মাঝে পোলেন এলার্জির মৌসুম শুরু হওয়ায় দেখা দিতে পারে।

এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে লোকজনের তাদের উপসর্গ পোলেন এলার্জি থেকে হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বরং হয়নি এটা বিশ্বাস করার কারণে এই ভাইরাসের বিস্তারের ঝুঁকি এবং এভাবে প্রয়োজনীয় বিস্তার রোধী পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়া। পোলেন এলার্জি এবং ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত এই উভয় ধরনে ভোগা লোকজনের বিশেষ করে হাঁচি হলে সতর্ক থাকা উচিত। জাপান সমিতি জানাচ্ছে, জোরে কাশির থেকে হাঁচি ১০ গুণ বেশি জলীয়কণা উৎপাদন করতে পারে।

সমিতি যদি এলার্জির সঠিক চিকিৎসা করানো না হয় তাহলে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে বলেও সতর্ক করে দিচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, লোকজন এলার্জির একটি উপসর্গ চুলকানির হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ভাইরাসে দূষিত হাত দিয়ে হয়তো তাদের চোখ বা নাক চুলকাবে এবং এভাবে শ্লেষ্মা ঝিল্লির মধ্য দিয়ে সংক্রমিত হবে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০৩: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (৪) আমাদের যেসব সমস্যা হয় ১) কী হয়েছে বুঝতে না পারার ফলে দুশ্চিন্তা

উত্তর-৪০৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের ব্যাপক বিস্তার লাভের মধ্যেই জাপান প্রবেশ করছে পোলেন এলার্জি বা ফুলের রেণু থেকে সৃষ্ট এলার্জির মৌসুমে। চলতি ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে এবার আমরা আলোচনা করবো তফাৎ বুঝতে না পারার জন্য মনে যে উদ্বেগ জন্মায়, তা নিয়ে।

নাক, কান ও গলার রোগ এবং মাথা ও ঘাড়ের সম্পর্কযুক্ত অংশের সার্জারি সংক্রান্ত জাপান সমিতির প্রকাশ করা পরামর্শবলীতে ওমিক্রন সংক্রমণের মধ্যে পোলেন এলার্জির মৌসুম শুরু হওয়ার পর যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে তার একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে।

প্রথমত তালিকায় সেই উদ্বেগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা মানুষ অনুভব করে যখন তারা বুঝতে পারে না যে তাদের কী হয়েছে, এলার্জি নাকি কোভিড-১৯। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারুর যদি পোলেন এলার্জি হয়, সেই ব্যক্তির পক্ষে উপসর্গ থেকে বোঝা কঠিন এটা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নাকি এলার্জি। এমনকি একজন দক্ষ চিকিৎসকের পক্ষেও উপসর্গ দেখে নিশ্চিত হওয়া কঠিন যে রোগী পোলেন এলার্জিতে ভুগছেন নাকি ওমিক্রনের সংক্রমণে। চিকিৎসকের পক্ষেই যেখানে বোঝা সহজ নয় সেখানে রোগী যে তার উপসর্গের আসল হেতু বুঝে উঠতে পারবে না, তাতে আর আশ্চর্যের কী আছে।

পোলেন এলার্জির জন্য সর্দি হলে স্কুলে বা কাজে যাওয়ায় বাধা নেই। কিন্তু যদি আশংকা থাকে যে এটা হয়তো ওমিক্রন সংক্রমণের উপসর্গ, তখন বাড়িতে থাকা উচিত এবং ডাক্তার দেখানো উচিত। কীসের উপসর্গ, কী করা উচিত, এসব জানা না থাকলে মানুষের উৎকন্ঠা হয়।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০২: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (৩) পোলেন এলার্জিতে ভুগছেন, এমন সবাইকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা নাও করানো হতে পারে।

উত্তর-৪০২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় জাপান এখন পোলেন এলার্জি মৌসুমে প্রবেশ করছে। আমাদের এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা কান, নাক এবং গলার ডাক্তারদের একটি গ্রুপের দেওয়া পরামর্শের উপর নজর দেব।

২০১৯ সালে দেশ জুড়ে চালানো এক জরিপের ফলাফলে দেখা যায় যে জবাবদাতাদের ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ তাদের কোন না কোন ধরনের পোলেন এলার্জি ছিল বলে জানিয়েছিলেন এবং ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ তাদের সিডার বা পাইন জাতীয় গাছের পোলেনে এলার্জি ছিল বলে জানান। জরিপটি চালিয়েছিল জাপান সোসাইটি অব ইমিউনোলজি এন্ড এলার্গোলজি ইন অটোল্যারিঙ্গোলজিকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি দল। জরিপের ফলাফলে আভাস দেয়া হয়েছিল যে জাপানে প্রতি তিন ব্যক্তির একজন পোলেন এলার্জিতে ভুগছেন। তবে বিরাট সংখ্যক এই লোকজনের হাঁচি এবং সর্দির মত উপসর্গ দেখা দিলে এদের সবাইকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করে দেখা সহজ কাজ নয়।

এধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে বলে তা আগে থেকে অনুমান করে নিয়ে জাপানিজ সোসাইটি অব অটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি- হেড এন্ড নেক সার্জারি, পোলেন এলার্জি মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ তাদের ওয়েবসাইটে একটি পরামর্শ পোস্ট করে।

এতে বলা হয় যে সর্দি, হাঁচি, নাক বন্ধ, ঘ্রাণের অনুভূতি চলে যাওয়া এবং ক্লান্তির মত উপসর্গগুলো পোলেন এলার্জিতে ভুগছেন এমন লোকজনের ক্ষেত্রে যেমন দেখা যায় ঠিক তেমনই কোভিড-১৯ রোগের বেলায় বিশেষ করে ওমিক্রন ধরনের ক্ষেত্রেও উপসর্গগুলো একই ধরনের। এলার্জি উপসর্গে যারা ভুগছেন তারা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত কিনা তা নির্ণয় করা খুবই কঠিন হয়ে ওঠে বলে সোসাইটি জানায়।

এরপরের পর্বে আমরা সোসাইটির পরামর্শ নিয়ে আপনাদের আরও জানাবো।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০১: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (২) মৌসুমি এলার্জি এবং করোনাভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পেতে এমন কি চিকিৎসকদেরও অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে

উত্তর-৪০১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া অবস্থায় জাপান এখন পোলেন এলার্জি মৌসুমে প্রবেশ করছে। আমাদের এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে এবারে আমরা সেরকম উপসর্গের রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে নিয়োজিত একজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলবো।

কিমুরা ইয়ুরিকা হচ্ছেন একজন চিকিৎসক, যিনি নাক, কান ও গলার চিকিৎসা সংক্রান্ত জাপানের সমিতি অটোরাইনোলারিনগোলোজি সোসাইটির করোনাভাইরাস পদক্ষেপ সম্পর্কিত একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন মৌসুমি পোলেন এলার্জি ও ওমিক্রন ধরনের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পেতে এমনকি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।

এরকম একটি ঘটনার বর্ণনা কিমুরা দিয়েছেন, যেখানে একজন রোগী হাঁচি ও সর্দির উপসর্গ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য পোলেন এলার্জির নিয়মিত চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। তবে দুই দিন পর সেই রোগী গলা ব্যথা নিয়ে আবারও চিকিৎসা কেন্দ্রে ফিরে যান এবং রোগ নির্ণয়ে তার করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।

কিমুরা বলছেন প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাভাইরাস উপসর্গের পার্থক্য বুঝতে পারার জটিলতা অনুধাবন করতে সেই ঘটনা তাকে সাহায্য করেছে। তিনি বলেছেন নাকের শ্লেষ্মা ঝিল্লির রঙ সাদা হয়ে যাওয়া পোলেন এলার্জির বৈশিষ্টসুলভ চিহ্ন বলে প্রথাগত দিক থেকে বলা হলেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এরকম উপসর্গ এলার্জির প্রাথমিক পর্যায়ে ফুটে উঠে না। কিমুরা আরও বলেছেন রোগীর পরীক্ষা করানো ছাড়া পোলেন এলার্জির সাথে কোভিড-১৯এর পার্থক্য খুঁজে পাওয়া চিকিৎসকদের জন্য কঠিন।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪০০: এলার্জি নাকি কোভিড-১৯? (১) ওমিক্রন সংক্রমণ এবং পোলেন এলার্জির রয়েছে একই ধরনের উপসর্গ

উত্তর-৪০০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে ওমিক্রন ধরনের ব্যাপক সংক্রমণের মাঝে সিডার এবং হিনোকি সাইপ্রেস পোলেন এলার্জির মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। যখন আপনি হাঁচি দেবেন বা নাক দিয়ে জলের মত সর্দি পড়তে থাকবে, তখন আপনি হয়তো ভাবতে থাকবেন এটা পোলেন এলার্জি নাকি কোভিড-১৯। আমাদের নতুন ধারাবাহিকে, যখন আপনি আপনার উপসর্গ সম্বন্ধে বুঝতে পারবেন না তখন কী করতে হবে, তার পাশাপাশি কী কী ব্যাপারে সতর্ক থাকবে হবে এবং কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে সে ব্যাপারে তুলে ধরব।

কান, নাক এবং গলার ডাক্তাররা এই উপসর্গগুলোকে পোলেন এলার্জির প্রধান উপসর্গ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন – হাঁচি, নাক দিয়ে জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে থাকা, চোখ চুলকানো, অবসাদ, ঠিকমত গন্ধ না পাওয়া, জ্বর জ্বর ভাব হওয়া, গলা ব্যথা, গলার ভিতর চুলকানো, কফ, সামান্য মাথাব্যথা এবং কান চুলকানো।

এদিকে, জাপানের জাতীয় সংক্রমণ রোগ ইনস্টিটিউট জানাচ্ছে, ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে এই ধরনের উপসর্গ দেখা যায় – ৬৬.৬ শতাংশ রোগীর জ্বর থাকে, ৪১.৬ শতাংশ রোগীর কফ থাকে, ২২.৫ শতাংশ রোগীর সাধারণ অবসাদ থাকে এবং ২১.১ শতাংশ রোগীর থাকে মাথাব্যথা। ইনস্টিটিউটটি এও জানাচ্ছে, ১২.৯ শতাংশ রোগীর কফের চেয়ে বরং শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত উপসর্গ দেখা যায়, ২.৭ শতাংশ রোগীর বমি বমি ভাব থাকে বা তারা বমি করে থাকে, ২.৩ শতাংশ রোগীর থাকে ডায়রিয়া এবং ০.৮ শতাংশ রোগীর থাকে গন্ধ বা স্বাদে সমস্যা।

জাতীয় ইনস্টিটিউটের অন্য এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, ৪৫.১ শতাংশ রোগীর থাকে কফ, ৩২.৮ শতাংশ রোগীর থাকে জ্বর, ৩২.৮ শতাংশ রোগীর থাকে গলা ব্যথা, ২০.৫ শতাংশ রোগীর থাকে সর্দি, ১.৬ শতাংশ রোগীর থাকে গন্ধে সমস্যা এবং ০.৮ শতাংশ রোগীর থাকে স্বাদে সমস্যা। কিন্তু যুক্তরাজ্যের গবেষকদের একটি দলের অন্য এক সমীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত উপসর্গ থাকা রোগীর ৬০ শতাংশের মধ্যে হাঁচির লক্ষণ দেখা যায়।

যেহেতু উপসর্গ মানুষভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে, তাই পোলেন এলার্জি এবং ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত উভয় ধরনের লোকের হাঁচি এবং নাক দিয়ে জল পড়া’সহ একই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়ার প্রবণতা রয়েছে।

আমাদের ধারাবাহিকের পরবর্তী পর্বে, আমরা এই ধরনের উপসর্গ থাকা রোগী দেখা ডাক্তারদের সাথে কথা বলব।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৯: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (১০) টিকার ভাল ও মন্দ দিক বিবেচনা করুন: বিশেষজ্ঞ

উত্তর-৩৯৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশুদের কোভিডের টিকাদান শুরু হয়েছে। শিশুদের টিকাদান বিষয়ক চলতি এই ধারাবাহিকের দশম পর্বে আমরা এবিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞের মতামত তুলে ধরব।

কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুও হচ্ছেন টিকাদান সম্পর্কে জ্ঞানসম্পন্ন একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, টিকাদানের ভাল দিকের পাশাপাশি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মত নেতিবাচক দিকগুলো বা কোন শিশু সংক্রামিত হলে কী হতে পারে, সেই বিষয়গুলো লোকজনের অনুধাবন করা উচিত।

নাকাইয়ামা বিবেচনায় নেয়ার জন্য কিছু বিষয় উল্লেখ করেন। তার ভাষ্যমতে, যদি শিশুরা সংক্রামিত হয়, তবে উপসর্গগুলো মৃদু হলেও তাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়িতে থাকতে হবে এবং এরফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে কঠিন সময় পার করতে হবে।

নাকাইয়ামা বলেন, টিকা পুরোপুরি সংক্রমণ প্রতিরোধ না করলেও উপসর্গগুলোকে মৃদু রাখতে পারে। তিনি এও বলেন যে টিকা শিশুদের ভাইরাসটি বাড়িতে এনে একত্রে বসবাসকারী পিতামাতা এবং দাদা-দাদি বা নানা-নানিদের সংক্রামিত করাকে রোধ করতে পারে।

নাকাইয়ামার ভাষ্যমতে, আগে থেকে স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকা শিশু যারা গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, তাদের সক্রিয়ভাবেই টিকা নেয়ার পরামর্শ দেয়া উচিত। তিনি বলেন, তবে সব শিশুকেই টিকাদানের পরামর্শ দেয়া উচিত কিনা, সেটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

নাকাইয়ামা বলেন, কেউ একজন এমন ভাবতে পারেন যে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বেড়ে চললেও খুব বেশি কেউ গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেনা বিধায় তাদের টিকা দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। তবে তিনি এও বলেন যে, কে আসলে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে, তা আগে থেকে জানা সম্ভব নয়।

নাকাইয়ামার ভাষ্যানুযায়ী, জনসাধারণকে টিকা নিতে বাধ্য করা উচিত নয়। তিনি বলেন, তাদের বিষয়টি অনুধাবন করা এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এও বলেন যে এক্ষেত্রে তার চাওয়া হল, লোকজন যেন নিজেদের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সঠিক তথ্য খুঁজে নেয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৮: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৯) শিশুসন্তানদের টিকাদানের বিষয়ে পিতামাতা ও অভিভাবকরা কী মনে করছেন।

উত্তর-৩৯৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশুদের কোভিড ১৯’এর টিকাদান শুরু হয়েছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা শিশুদের টিকাদানের ওপর আলোকপাত করছি। এবারে এর নবম পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করবো শিশুসন্তানদের টিকাদানের বিষয়ে পিতামাতা ও অভিভাবকরা কী মনে করছেন।

টোকিও’র কোতো ওয়ার্ড লাইন অ্যাপ’এর মাধ্যমে নিবন্ধিত পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশুসন্তান থাকা পিতামাতাদের মধ্যে একটি সমীক্ষা চালায়। ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে পরিচালিত এই সমীক্ষায় প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ২ হাজারের ওপর উত্তরদাতা।

শিশুসন্তানদের টিকাকরণে তারা ইচ্ছুক কি না জানতে চাওয়া হলে ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, “হ্যাঁ। আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা দেওয়া হোক”। ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, “একটু অপেক্ষা করে দেখতে চাই। কোনো সমস্যা দেখা না দিলে তখন দেওয়াতে চাই”। ওদিকে ২০ শতাংশ উত্তরদাতা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে শিশুসন্তানদের টিকাকরণে তাদের একেবারেই সম্মতি নেই।

শিশুসন্তানদের টিকাকরণ নিয়ে মনে উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাওয়া হলে ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন যে তারা “খুব উদ্বিগ্ন”। ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন যে তারা “একটু উদ্বিগ্ন”। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে শিশুসন্তানদের টিকাকরণ নিয়ে বহু লোকের মনে উদ্বেগ রয়েছে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৭: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৮) শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধে টিকা কার্যকর জানিয়েছে সিডিসি।

উত্তর-৩৯৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান ৫ থেকে ১১ বছর বয়সের শিশুদের কোভিড-১৯ টিকাদান শুরু করেছে। ধারাবাহিক এই আয়োজনে আমরা শিশুদের টিকাদানের ওপর আলোকপাত করছি এবং অষ্টম পর্বে এবারে আমরা টিকার কার্যকারিতার উপর নজর দেব।


পয়লা মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের উপর ফাইজার-বিয়োনটেক টিকার কার্যকারিতা বিষয়ে এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। গত বছর এপ্রিল মাসের গোড়া থেকে শুরু করে চলতি বছর জানুয়ারি মাসের প্রায় শেষের দিক পর্যন্ত এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছিল। কোভিড-১৯’এ সংক্রমিত প্রায় ৪০ হাজার শিশু, কিশোর ও কিশোরী যাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে জরুরি ভিত্তিতে সেবা প্রদান করা হয় বা চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করতে হয়, তাদের উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছিল।

গবেষণা অনুযায়ী ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুরা যারা টিকার দ্বিতীয় ডোজ সমাপ্ত করেছে, সেইসব শিশুদের বেলায় ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি এড়ানো গেছে। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের বেলায় তারা কোন সময়ে টিকা নিয়েছে তার উপর ভিত্তি করে ৭৩ থেকে ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধ করা গেছে।


এই বয়সের জন্য টিকাদানের সুপারিশ অব্যাহত রেখেছে সিডিসি। সংস্থা জানায় যে সময়ের সাথে সাথে টিকার কার্যকারিতা হ্রাস পেলেও হাসপাতালে ভর্তি আটকাতে এটা খুবই কার্যকর।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৬: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৭) টিকা শিশুদের মধ্যে মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়া প্রতিরোধ করতে পারবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

উত্তর-৩৯৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান ৫ থেকে ১১ বছর বয়সের শিশুদের কোভিড-১৯ টিকাদান শুরু করেছে। ধারাবাহিক এই আয়োজনে আমরা শিশুদের টিকাদানের ওপর আলোকপাত করছি এবং সপ্তম পর্বে এবারে আমরা অল্প বয়সী শিশুদের টিকা দেয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেদিকে নজর দেব।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখানো হয়েছে যে ওমিক্রন ধরন প্রাধান্য বিস্তার করার সময় ফাইজারের টিকার সংক্রমণ প্রতিহত করার সামর্থ্য ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের বেলায় যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছিল। কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ নাকাইয়ামা তেৎসুও টিকার বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট পরিচিত। তিনি বলছেন ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকার যে ডোজ দেয়া হয়, পরিমাণে সেটা হচ্ছে ১২ বছর কিংবা বেশি বয়সীদের টিকার এক তৃতীয়াংশ। তিনি উল্লেখ করেছেন ১১ ও ১২ বছর বয়সীদের মধ্যে দেহের আকারের দিক থেকে সাধারণত খুব বেশি পার্থক্য নেই। তিনি বলছেন টিকার পরিমাণ কম হলে এর কার্যকারিতাও হবে কম। ফলে তিনি উল্লেখ করেন যে এটা খুব সহজেই ধারণা করে নেয়া হয় যে শিশুদের বেলায় টিকা কার্যকর থাকার মেয়াদ হবে কম সময়ের।

অধ্যাপক নাকাইয়ামা বলছেন টিকার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যারা সংক্রমিত হয়েছেন তাদের অসুখ মারাত্মক হয়ে উঠা প্রতিহত করা। সেদিক থেকে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বন্ধ করতে কার্যকারিতা কমপক্ষে ৫০ শতাংশ প্রমাণিত হওয়ায় ফাইজারের টিকা নিশ্চিতভাবেই হচ্ছে কিছুটা কার্যকর। তিনি বলেছেন কোন রকম সুরক্ষা ছাড়া সংক্রমিত হওয়ার চাইতে বরং টিকা নিয়ে রোগ প্রতিরোধ করা ভাল।

তিনি আরও বলেছেন যে শিশুদের বেলায় সঠিক ডোজ কোনটি হবে তা নির্ধারণ করা কঠিন। তিনি উল্লেখ করেন যে প্রাপ্ত বয়ষ্কদের ডোজের পরিমাণ থেকে কতটা এবং কোন ভিত্তিতে হ্রাস করতে হবে, সতর্কতার সাথে তা বিবেচনা করে দেখা দরকার। কেবল বয়স নয়, একই সাথে শিশুর দেহের আকারের দিকটিও বিবেচনায় রাখা দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেছেন যে ছোট আকারের ডোজের বেলায় বয়স-সীমা কমিয়ে আনা একটি বিকল্প হতে পারে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৫: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৬) সময়ের সাথে সাথে সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা হয়তো ক্ষীণ হয়ে আসবে।

উত্তর-৩৯৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশুদের কোভিডের টিকাদান শুরু হয়েছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা শিশুদের টিকাদানের ওপর আলোকপাত করছি। এর ষষ্ঠ পর্বে এবার আমরা সময়ের সাথে সাথে সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার কী ধরনের পরিবর্তন হবে তার উপর নজর দিব।

মার্কিন অঙ্গরাজ্য নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে সংক্রমণ রোধে ফাইজারের টিকার কার্যকারিতা এবং ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সংক্রান্ত এক সমীক্ষা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে, ওমিক্রন ধরন যখন প্রাধান্য বিস্তার করতে শুরু করে তখন ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ রোধে টিকার সুরক্ষার হার মধ্য-ডিসেম্বরের ৬৬ শতাংশ থেকে জানুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ ৫১ শতাংশে নেমে এসেছে।

তবে, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এর কার্যকারিতায় আরও বেশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণের পতন লক্ষ্য করা গেছে। এর পতন ৬৮ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে।

গবেষকরা বলছেন, অল্প বয়সী শিশুদের মধ্যে এই হারের পতন হয়তো এই কারণে হয়েছে যে, তারা ১২ বা তদূর্ধ্ব বয়সী শিশুদের টিকার ডোজের পরিমানের কেবল এক-তৃতীয়াংশ পেয়েছে।

জানুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে ফাইজারের টিকার কার্যকারিতা ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ৭৩ শতাংশ এবং ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ৪৮ শতাংশ দেখা গেছে।

গবেষকরা বলছেন, একটি নির্ভুল বিশ্লেষণ প্রদান করার জন্য পর্যাপ্ত উপাত্ত তাদের হাতে নেই, কারণ অনেক বেশি শিশুর মধ্যে মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়নি।

যদিও এই ফলাফল একটি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এখনও যাচাই করে দেখা হয়নি, তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা শিশুদের জন্য বিকল্প টিকার ডোজের পাশাপাশি বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজের টিকা সংক্রান্ত সমীক্ষার এক সম্ভাব্য প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করছেন।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৪: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৫) সিডিসি’র ভাষ্যানুযায়ী এই টিকা “নিরাপদ, কার্যকর এবং উপকারী”।

উত্তর-৩৯৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশুদের কোভিডের টিকাদান শুরু হয়েছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা শিশুদের টিকাদানের ওপর আলোকপাত করছি। এর পঞ্চম পর্বে এবার আমরা শিশুদের টিকাদান নিয়ে মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলোর মূল্যায়নের উপর নজর দিব।

টিকাদানের সুবিধাগুলো সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মত ঝুঁকিগুলোকে ছাড়িয়ে গেলে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষসমূহ সাধারণত টিকা দেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র বা সিডিসি এই বলে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড টিকা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে যে এটি নিরাপদ, কার্যকর এবং এর উপকারিতা বা সুবিধাগুলো অসুবিধার চাইতে বেশি।

এক্ষেত্রে, কানাডা এবং ফ্রান্সের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও একই মত পোষণ করে। এদিকে, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির কর্তৃপক্ষগুলোর ভাষ্যমতে, শুধুমাত্র উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা শিশু এবং পরিবারের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন সদস্যদের সাথে বাস করা শিশুদেরই কোভিডের টিকা দেয়া উচিত।

২০২১ সালের নভেম্বরে টিকাদানের প্রয়োগ সংক্রান্ত সিডিসি’র পরামর্শক কমিটি শিশুদের টিকাদানের সুবিধার দিকগুলোর কথা উল্লেখ করে।
সংস্থাটির ভাষ্যানুযায়ী, টিকাদান অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে শিশুদের সংক্রমিত হওয়া বা সংক্রমিত হলে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়া প্রতিরোধ করে, শিশুদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানো বন্ধ করে এবং স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিশুদের মনে নিরাপত্তার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। আর অসুবিধার ক্ষেত্রে, কমিটি স্বল্পমেয়াদী বিরূপ ঘটনার পাশাপাশি মায়োকার্ডাইটিস বা হৃৎপিণ্ডের প্রদাহ অন্তর্ভুক্ত থাকা বিরল কিছু গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯৩: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৪) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সিডিসি’র রিপোর্ট।

উত্তর-৩৯৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সী শিশুদের কোভিডের টিকাদান শুরু হয়েছে। চলতি ধারাবাহিকে আমরা শিশুদের টিকাদানের ওপর আলোকপাত করছি। এর চতুর্থ পর্বে এবার আমরা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কী বলা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করবো।

নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ থেকে এগারো বছরের শিশুদের কোভিডের টিকাদান শুরু হয়েছে। ১৯শে ডিসেম্বরের মধ্যে যাদের টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়, সেই শিশুদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ৪ হাজার ২শো ৪৯টি ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র বা সিডিসি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই সময়ের মধ্যে এই বয়সসীমার শিশুদের প্রায় ৮৭ লক্ষ টিকা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে টিকা নেওয়ার পর কারোর কোনো সমস্যা হলে, সেটিকে সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো যায়। সিডিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয় ৪ হাজার ১শো ৪৯টি ঘটনায়, অর্থাৎ শতকরা ৯৭ দশমিক ৬ ভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গ গুরুতর ছিল না। এরকম কয়েকটি সুনির্দিষ্ট উপসর্গের উল্লেখ করা যাক। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি হওয়ার কথা জানা গেছে ৩শো ১৬টি অর্থাৎ মোট সংখ্যার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ ক্ষেত্রে। জ্বরের কথা জানা গেছে ২শো ৯১ অর্থাৎ শতকরা ৭ ভাগ ক্ষেত্রে। মাথাব্যথা ২শো ৫৫ বা ৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং সমান সংখ্যক ক্ষেত্রে সংজ্ঞা হারানোর কথা জানা গেছে। ২শো ৪৪ জন বা ৫ দশমিক ৯ শতাংশের মাথা ঘোরা এবং ক্লান্তি বা অবসাদে ভোগার কথা জানা গেছে ২০১ অর্থাৎ ৪ দশমিক ৮ শতাংশের কাছ থেকে।

১শোটি ক্ষেত্রে উপসর্গ গুরুতর বলে চিহ্নিত করেছে সিডিসি। সেগুলোর মধ্যে ২৯ জন বা ২৯ শতাংশের জ্বর হওয়ার কথা জানা গেছে। বমি হওয়ার কথা জানা গেছে ২১ জন বা ২১ শতাংশের ক্ষেত্রে, আর ১২ জন বা ১২ শতাংশের খিচুনি হওয়ার কথা জানা গেছে।
.
টিকা নেওয়া শিশুদের মধ্যে ১১ জন মায়োকার্ডাইটিস বা হৃৎপিণ্ডের পেশীর প্রদাহে ভুগলেও, প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে গেছে বলে জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয় টিকা নেওয়ার পর পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সীদের মধ্যে মায়োকার্ডাইটিস হওয়ার অনুপাত ১২ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের তুলনায় অনেকটাই কম।

টিকা নেওয়ার পর দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে সিডিসি’র প্রতিবেদনে জানানো হয় এদের দুজনেরই জটিল অসুখ ছিল এবং টিকা নেওয়ার আগে থেকেই স্বাস্থ্য খুব খারাপ ছিল। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয় যে এই মৃত্যু এবং টিকার মধ্যে কোন কার্যকারণ সম্পর্ক থাকার প্রমাণ কোন তথ্যেই মেলেনি।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯২: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (৩) ক্লিনিকাল পরীক্ষার নিরাপত্তা

উত্তর-৩৯২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সের শিশুদের কোভিড টিকাদান শুরু করেছে। শিশুদের টিকাদান সংক্রান্ত এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা ক্লিনিকাল পরীক্ষার নিরাপত্তার ওপর আলোকপাত করবো।

ফাইজার এবং বিয়োনটেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন এবং অন্যান্য এলাকায় পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সের ২ হাজার ২০০ জন শিশুর উপর ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালিয়েছে। ইঞ্জেকশন দেয়ার জায়গায় ব্যাথা এবং ক্লান্তির মত কয়েকটি বিরূপ প্রভাবের বিষয়ে জানা গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকার প্রতিক্রিয়া ছিল মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের এবং ১-২ দিনের মধ্যেই তা ভালো হয়ে যায়।

এবার তাহলে নির্দিষ্ট কয়েকটি উপসর্গের ওপর আলোকপাত করা যাক।

টিকার প্রথম ডোজের পর ৭৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ৭১ শতাংশ ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশন দেয়ার জায়গায় ব্যাথা হয়েছে বলে জানানো হয়।

প্রথম ডোজের পর ৩৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ৩৯ শতাংশ ক্ষেত্রে ক্লান্তির বিষয়টি জানানো হয়েছে।

প্রথম ডোজের পর ২২ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ২৮ শতাংশ ক্ষেত্রে মাথাব্যাথার কথা জানানো হয়েছে।

ইঞ্জেকশন দেয়ার জায়গায় লাল হয়েছে বলে প্রথম ডোজের পর ১৫ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ১৯ শতাংশ ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে।

ইঞ্জেকশন দেয়ার জায়গাটা ফুলে গেছে বলে প্রথম ডোজের পর ১০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে।

পেশিতে ব্যাথা বলে প্রথম ডোজের পর ৯ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ১২ শতাংশ ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে।

টিকা নেয়ার পর শীত করছে বলে প্রথম ডোজের পর ৫ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে।

৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রা ছিল বলে প্রথম ডোজের পর ৩ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ৭ শতাংশ ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে।

এন্টিপাইরেটিক বা জ্বর, গায়ে ব্যাথা কমানোর ওষুধ প্রথম ডোজের পর ১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯১: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (২) ক্লিনিকাল পরীক্ষায় উপসর্গ প্রতিরোধে ৯০.৭ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণিত

উত্তর-৩৯১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে জাপান পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সের শিশুদের কোভিড টিকাদান শুরু করেছে। শিশুদের টিকাদান সংক্রান্ত এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে এবারে আমরা টিকার কার্যকারিতার ওপর আলোকপাত করবো।

ফাইজার যুক্তরাষ্ট্র এবং স্পেনের মত দেশে ২,২০০র বেশি শিশুর উপর ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালিয়েছে। ওষুধ নির্মাতা বলছে পরীক্ষার ফলাফল সংক্রমণ উপসর্গ প্রতিরোধে টিকার ৯০.৭ শতাংশ কার্যকারিতা নিশ্চিত করেছে। ফাইজার আরও জানায় যে টিকা নেয়ার পর যেসব উপসর্গ শিশুদের মধ্যে দেখা গেছে তা মূলত হালকা ও মাঝারি ধরনের হওয়ায় টিকা হচ্ছে নিরাপদ।

পরীক্ষায় ১,৫০০র বেশি শিশু তিন সপ্তাহের বিরতিতে ১০ মাইক্রোগ্রামের প্রতিটি ডোজের দুটি করে ডোজ পায়, যে পরিমাণ হচ্ছে প্রাপ্ত বয়স্কদের পরিমাণের এক তৃতীয়াংশ। সাড়ে সাত’শ শিশুকে নকল বা মেকি ডোজ দেয়া হয়েছে। গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া অ্যান্টিবডির মাত্রা টিকা নেয়া শিশুদের বেলায় ছিল ১৬ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বয়সসীমার যারা নিয়মিত টিকা নিয়েছেন তাদের মতই উচ্চ পর্যায়ের। টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার সাত কিংবা আরও বেশিদিন পর কোভিডের উপসর্গ যাদের মধ্যে দেখা গেছে, তাদের সংখ্যা নকল টিকা যারা নিয়েছে সেই দলের ১৬ জনের তুলনায় ছিল তিন জন। গবেষকরা এরকম সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে উপসর্গ প্রতিরোধে টিকা ৯০.৭ শতাংশ কার্যকর।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯০: জাপান শিশুদের জন্য কোভিড টিকাদান শুরু করেছে (১) শিশুদের টিকাদান সংক্রান্ত সরকারি নীতি

উত্তর-৩৯০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
জাপান ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড টিকা দেয়া শুরু করেছে। এই ধারাবাহিকে আমরা শিশুদের টিকাদান সম্পর্কে ও এতে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ার সম্ভাবনা আছে এবং কিভাবে এই কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে তার ওপর আলোকপাত করব। এর প্রথম পর্বে আমরা সরকারি নীতির দিকে ঘনিষ্ঠভাবে নজর দেব।

জাপান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড টিকা নেয়ার বিষয়টি কার্যকর করেছে। এই বয়সের শিশুদের গ্রুপের টিকা ১২ বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের টিকার পরিমাণের এক-তৃতীয়াংশ। শিশুদের ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে দু’বার টিকা দেয়া হবে। সরকার স্কুলে গণটিকাদানের বিষয়টির ব্যাপারে সুপারিশ করছে না। শিশুরা তাদের পৌরসভা বা শিশুদের ডাক্তারখানায় ব্যক্তিগতভাবে এই টিকা নিচ্ছে।

বর্তমানে, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড টিকা নেয়া অপরিহার্য নয়, কেননা ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য পর্যাপ্ত উপাত্ত এখনও নেই। যখন এই বয়সের গ্রুপের শিশুদের টিকা দেয়া হবে তখন তাদের পিতামাতা বা অভিভাবকের অনুমতির প্রয়োজন হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পিতামাতা বা অভিভাবকদের প্রতি আগেভাগেই টিকার কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত উপাত্তের উপর ভিত্তি করে টিকা নিয়ে শিশুদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করার আহ্বান জানাচ্ছে। টিকা দেয়া হবে নাকি হবে না সেব্যাপারেও পারিবারিক ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার সুপারিশ করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা এবং অন্যান্য কোন মৌলিক সমস্যা থাকা শিশুদের টিকা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, কেননা তাদের মারাত্মক কোভিড উপসর্গ দেখা দেয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।

এই তথ্যগুলো মার্চ মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৯: গবেষক দল বুস্টার ডোজ হিসাবে ভিন্ন কোম্পানির টিকা নেয়ার বিষয়ে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছে (৩) টিকার বুস্টার ডোজ বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উভয়ই বিবেচনায় নেয়া উচিত।

উত্তর-৩৮৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
জাপান সরকারের একটি গবেষণা দল প্রথমবারের মত আগের দুটি ডোজের থেকে ভিন্ন কোম্পানির টিকার বুস্টার ডোজ নেয়ার কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে।

এই ধারাবাহিকে লোকজনের শুরুতে নেয়া টিকার দুটি ডোজের অনুরূপ বুস্টার টিকা নেয়ার পরিবর্তে ভিন্ন কোম্পানির টিকা নেয়ার ওপর আলোকপাত করা হচ্ছে।
এর তৃতীয় এবং শেষ পর্বে আমরা এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরব।

গবেষণা দলটির নেতা এবং জুনতেনদো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের অধ্যাপক ইতো সুমিনোবু বলেন যে তিনটি টিকাই ফাইজারের নেয়ার পরিবর্তে তৃতীয় টিকাটি মডার্নার নিলে টিকার এই মিশ্রণের ফলে এন্টিবডির মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি হবে। এতে আরও বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেলেও অসুস্থতার জন্য ছুটি নেওয়া লোকের সংখ্যার ক্ষেত্রে সামান্য পার্থক্যই ঘটেছে। তিনি বলেন, টিকা বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে লোকজনের উচিত হবে এর কার্যকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উভয়ই বিবেচনায় নেয়া।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং টোকিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো জীবনযাত্রা এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে দ্রুত বৈশ্বিক মহামারির পূর্বের সময়কালের পর্যায়ে ফিরিয়ে নিচ্ছে। তবে, তিনি উল্লেখ করেন যে জাপানে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা মাত্র চূড়ায় পৌঁছেছে এবং বুস্টার ডোজ নেয়া লোকের সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশের কিছুটা উপরে। তিনি বলেন, অনেক সংক্রমণের খবর না পাওয়া এলাকাগুলোর জন্য সেখানকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়া ঠিক আছে। তবে, অব্যাহতভাবে একটি বড় সংখ্যক নতুন সংক্রমণের খবর দিয়ে যাওয়া টোকিও এবং ওসাকার মতো এলাকাগুলোর জন্য কার্যত জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে, বিশেষ করে, ঠিক কত শতাংশ প্রবীণ লোক এখন পর্যন্ত বুস্টার টিকা পেয়েছেন, সেই বিষয়টি’সহ কর্তৃপক্ষের সার্বিক চিকিৎসা পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া উচিত।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৮: গবেষক দল বুস্টার ডোজ হিসাবে ভিন্ন কোম্পানির টিকা নেয়ার বিষয়ে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছে (২) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

উত্তর-৩৮৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম দুটি ডোজে যে কোম্পানির টিকা ব্যবহার করা হয়েছে, তার থেকে আলাদা টিকা বুস্টার ডোজে ব্যবহারের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে এই প্রথম জাপান সরকারের একটি গবেষক দল তার পরীক্ষানিরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে। প্রথম দুটি ডোজের অনুরূপ টিকা না নিয়ে, বুস্টার ডোজে ভিন্ন কোম্পানির টিকা নেওয়া সম্পর্কে আমাদের এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানার চেষ্টা করবো।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষক দলের রিপোর্টে, বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর লোকেদের কীরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যারা তিনটি ডোজেই ফাইজারের টিকা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ২১ দশমিক ৪ শতাংশ লোকের ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেশি মাত্রার জ্বর এসেছিল। ৬৯ দশমিক ১ শতাংশ লোক ক্লান্তি বা অবসাদে কষ্ট পেয়েছেন। ৫৫ শতাংশ লোক ভুগেছেন মাথার যন্ত্রণায়। যারা প্রথম দুটো ডোজ ফাইজার এবং বুস্টারে মডার্নার টিকা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ লোকের ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেশি মাত্রায় জ্বর এসেছিল। ৭৮ শতাংশ ভুগেছেন ক্লান্তি বা অবসাদে এবং ৬৯ দশমিক ৬ শতাংশ মাথার যন্ত্রণায় কষ্ট পেয়েছেন। সবকটি ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সবচেয়ে তীব্র আকার ধারন করে বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরদিন, এবং দু তিন দিনের মধ্যে নিরাময় হয়ে যায়।

তিনটিই ফাইজারের টিকা নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে দু জনের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের পেশীর প্রদাহজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে ধারণা। তবে জানা গেছে তাদের কারুরই উপসর্গ গুরুতর ছিল না। প্রথম দু ডোজ ফাইজারের টিকা এবং বুস্টারে মডার্না যারা নিয়েছেন তাদের কারুর ক্ষেত্রেই গুরুতর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়নি।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৭: গবেষক দল বুস্টার ডোজ হিসাবে ভিন্ন কোম্পানির টিকা নেয়ার বিষয়ে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছে (১) বুস্টার ডোজের কার্যকারিতা।

উত্তর-৩৮৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।
জাপান সরকারের গবেষকদের একটি দল প্রথমবারের মত আগের দুটি ডোজের থেকে ভিন্ন কোম্পানির বুস্টার ডোজ নেয়ার কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে।
এই ধারাবাহিকে লোকজনের প্রাথমিক দুটি টিকার ডোজের মত অনুরূপ টিকা নেয়ার বদলে ভিন্ন কোম্পানির টিকা নেয়ার ওপর আলোকপাত করা হবে। প্রথম পর্বে আমরা এধরনের টিকার কার্যকারিতার ওপর নজর দেব।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষক দল, দেশে প্রথম টিকার তৃতীয় ডোজ পেয়ে থাকা স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখে। এদের সকলেই প্রাথমিকভাবে ফাইজারের দুটি ডোজ পেয়েছিলেন। তৃতীয় ডোজের ক্ষেত্রে ২৮শে জানুয়ারির মধ্যে ২ হাজার ৮২৬ জন ফাইজার নেন এবং ৭৭৩ জন মডার্নার টিকা নিয়েছেন।

গবেষকরা তাদের দেহে মূল ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করে দেখেন এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করেন। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্যানেলের একটি বৈঠকে দলটি তাদের ফলাফল ব্যাখ্যা করে জানায়।

তৃতীয় টিকা নেয়ার এক মাস পর লোকজনের দেহে অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করে দেখে দলটি। তাদের শরীরে ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়া থেকে সৃষ্ট কোন অ্যান্টিবডি ছিল না। ফাইজারের বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের শরীরে টিকা নেয়ার ঠিক আগের পর্যায়ের সাথে তুলনা করলে অ্যান্টিবডির মাত্রা ছিল গড়ে ৫৪ দশমিক ১ শতাংশ গুণ বেশি। এদিকে, যারা মডার্নার বুস্টার নিয়েছেন তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা গড়ে ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

গবেষকরা বলছেন যে বিদেশে চালানো পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনা করে দেখার পর দৃশ্যত: মনে হচ্ছে যে ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধেও মডার্না টিকা আরও বেশি কার্যকর।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (২২) কোচি জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। চলমান এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দিব কোচি জেলার ওপর।

কোচি জেলা:
পুরো অঞ্চল জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে। জেলাটি সবগুলো পানাহারের দোকানকেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনার সময় সংক্ষিপ্ত করতে বলছে।

জেলা সরকারের কাছ থেকে ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলো অ্যালকোহল পরিবেশন চালিয়ে যাবে এবং রাত ৯টায় দোকান বন্ধ করবে নাকি অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করবে, সেই বিকল্প বেছে নিতে পারবে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

প্রতি টেবিলে একত্রে আহার বা পানীয় পান করা লোকের সংখ্যা চার জনে সীমিত করা হয়েছে এমনকি একই পরিবারের সদস্য হলেও।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের কোম্পানি পরিচালিত স্থাপনাসমূহ যারা রাত ৯টা পর্যন্ত কার্যক্রম চালাবে ও অ্যালকোহল পরিবেশন করবে তারা দৈনিক ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি পাবে। অন্যদিকে, অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করা স্থাপনাসমূহ তাদের বিক্রির উপর নির্ভর করে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি পাবে।

কর্মকর্তারা অপ্রয়োজনীয় উদ্দেশ্যে এই জেলার বাইরে যাওয়া থেকে লোকজনকে বিরত থাকার আহ্বানও জানাচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (২১) ওয়াকাইয়ামা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। চলমান এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দিব ওয়াকাইয়ামা জেলার ওপর।

ওয়াকাইয়ামা জেলা:
পুরো অঞ্চল জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে। জেলাটি সবগুলো পানাহারের দোকানকেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনার সময় সংক্ষিপ্ত করতে বলছে।

জেলা সরকারের কাছ থেকে ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলো অ্যালকোহল পরিবেশন চালিয়ে যাবে নাকি যাবে না, সেই বিকল্প বেছে নিতে পারবে।

আর যেসব স্থাপনা অ্যালকোহল পরিবেশন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিবে, তাদের রাত ৮টায় অ্যালকোহল পরিবেশন বন্ধের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকানের কার্যক্রম বন্ধ করারও অনুরোধ জানানো হচ্ছে। সনদপ্রাপ্ত অন্যান্য দোকানগুলোকে রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করতে বলা হচ্ছে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

প্রতি টেবিলে একত্রে আহার বা পানীয় পান করা লোকের সংখ্যা চার জনে সীমিত করা হয়েছে।

এছাড়া, ওয়াকাইয়ামা সরকারের কর্মকর্তারা সরাসরি অনুষ্ঠান স্থলে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার দাবিও জানাচ্ছেন।

১ হাজারের বেশি দর্শক থাকা অনুষ্ঠানসমূহের আয়োজকদের অগ্রিম জেলা সরকারের কাছে তাদের অনুষ্ঠানসূচি দাখিল করতে হবে। আর দর্শকের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেলে, আয়োজকদের অনুষ্ঠানের দু’সপ্তাহ আগেই সরকারের কাছে বিস্তারিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা দাখিলের পাশাপাশি অনুষ্ঠান-পরবর্তী একটি প্রতিবেদনও জমা দিতে হবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (২০) কাগোশিমা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দেব কাগোশিমা জেলার উপর।

কাগোশিমা জেলা:
এই জেলার সবটা জুড়ে কার্যত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। জেলা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব পানশালা ও রেস্তোরাঁকে দোকান খোলা রাখার সময় কমাতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

ভাইরাস-রোধী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সার্টিফিকেট প্রাপ্ত পান-ভোজনের জায়গাগুলোকে দেওয়া হয়েছে দুটো বিকল্প। হয় তারা মদ্যপানীয় বিক্রি করবে এবং দোকান খোলা রাখবে রাত ৯টা পর্যন্ত, অথবা মদ্যপানীয় বিক্রি করা থেকে বিরত থাকবে এবং দোকান বন্ধ করে দেবে রাত ৮টার মধ্যে।

সার্টিফিকেট নেই এমন পান-ভোজনের জায়গাগুলোকে মদ্যপানীয় পরিবেশনে বিরত থাকতে এবং রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

জেলা সরকারের অনুরোধ মেনে চলা রেস্তোরাঁ ও পানশালাকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। ছোট বা মাঝারি আকারের জায়গাগুলোকে তাদের বিক্রির পরিমাণের উপর নির্ভর করে দৈনিক ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। ভাইরাস-রোধী সার্টিফিকেটধারী পান-ভোজনের জায়গা যারা মদ্যপানীয় পরিবেশন করছে না, তারা পাচ্ছে দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েনের মধ্যে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৯) সাগা ও ওইতা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দিব সাগা ও ওইতা জেলার ওপর।

সাগা জেলা:
কার্যত জরুরি অবস্থা পুরো জেলায় কার্যকর রয়েছে।

জেলা সরকার খাওয়ার জায়গাগুলোকে তাদের পরিচালনার সময় সংক্ষিপ্ত করে নিতে বলছে।

ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলো অ্যালকোহল পরিবেশন করতে এবং রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে। সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে রাত আটটার পর অ্যালকোহল পরিবেশন করা এবং স্থাপনা খোলা রাখা থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।

এই অনুরোধ মেনে চলা প্রতিষ্ঠানগুলোর সনদ থাকলে বা না থাকলেও তাদের বিক্রির পরিমাণের উপর ভিত্তি করে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে এক লাখ ইয়েন দেয়া হবে।

জেলা কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময় ধরে বিরাট আকারের দল নিয়ে খাওয়াদাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। প্রতিটি টেবিলে সর্বোচ্চ চারজন করে বসা উচিত এবং দুই ঘন্টার মধ্যে খাওয়া সমাপ্ত করা উচিত বলে কর্মকর্তারা জানান।

যেসব খাওয়ার জায়গাগুলোতে ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি সেখানে না যাওয়ার জন্য জেলা সরকার লোকজনকে পরামর্শ দিচ্ছে।

ওইতা জেলা:
জেলা সরকার পুরো এলাকার রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে তাদের ব্যবসার সময় সংক্ষিপ্ত করে নিতে বলেছে।

ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ নেয়ার সনদ থাকা প্রতিষ্ঠানকে দুটি বিকল্পের একটি বেছে নিতে বলা হয়েছে – অ্যালকোহল পরিবেশন করে রাত নয়টার মধ্যে স্থাপনা এরা বন্ধ করে দিতে পারে, অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত আটটায় এরা বন্ধ করে দিতে পারে।

সনদ নেই এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাত আটটার মধ্যে বন্ধ করে দেয়া এবং অ্যালকোহল পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলো যারা অনুরোধ মেনে চলবে তাদেরকে প্রতিদিন ৩০ হাজার ইয়েন বা তার বেশি দেয়া হবে যদি তারা অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত আটটায় স্থাপনা বন্ধ করে দেয়। সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যারা রাত নয়টার মধ্যে বন্ধ করে দেয় এবং অ্যালকোহল পরিবেশন করে থাকে তাদেরকে প্রতিদিন ২৫ হাজার ইয়েন বা তার বেশি দেয়া হবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৮) শিমানে ও ওকাইয়ামা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দেব শিমানে ও ওকাইয়ামা জেলার উপর।

শিমানে জেলা:
কার্যত জরুরি অবস্থা পুরো জেলায় কার্যকর রয়েছে।

জেলা সরকার সংক্রমণ প্রতিহত করার পদক্ষেপ গ্রহণের সনদ যাদের আছে সেরকম পানশালা ও খাওয়ার জায়গাগুলোকে দুটি বিকল্পের একটি বেছে নেয়ার অনুমতি দিচ্ছে। রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন অব্যাহত রেখে রাত ৯টার মধ্যে স্থাপনা বন্ধ করে দিতে, অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন করা থেকে বিরত থেকে এবং রাত ৮টার মধ্যে বিক্রি বন্ধ করে দিতে এদের বলা হচ্ছে।

সনদ না থাকা প্রতিষ্ঠানকে রাত ৮টার মধ্যে স্থাপনা বন্ধ করে দেয়া এবং অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসার পরিচালিত রেস্তোরাঁ ও পানশালাকে এদের বিক্রয়ের পরিমাণের উপর নির্ভর করে প্রতিদিনের জন্য ৩০ হাজার থেকে এক লক্ষ ইয়েন দেয়া হচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টার মধ্যে স্থাপনা বন্ধ করে দিচ্ছে, তাদের বেলায় এটা প্রযোজ্য।

সনদপ্রাপ্ত যে সব স্থাপনা অ্যালকোহল পরিবেশন করছে এবং রাত ৯টায় বিক্রি বন্ধ করে দিচ্ছে, প্রতিদিনের জন্য তারা পাবে ২৫ থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন।

দলবদ্ধভাবে খাওয়াদাওয়া ও পান করার সময় প্রতিটি টেবিলে চারজন করে বসার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

ওকাইয়ামা জেলা:
কার্যত জরুরি অবস্থা পুরো জেলার সকল অংশে কার্যকর আছে।

সনদ না থাকা খাওয়ার জায়গা, কারাওকে পার্লার এবং বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলকে রাত ৮টার মধ্যে স্থাপনা বন্ধ করে দিতে এবং সারা দিন ধরে অ্যালকোহল পরিবেশন না করতে বলা হয়েছে।

সনদ থাকা প্রতিষ্ঠানকে দুটি বিকল্পের একটি বেছে নিতে বলা হয়েছে– রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশন করে রাত ৯টার মধ্যে স্থাপনা এরা বন্ধ করে দিতে পারে, অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টায় স্থাপনা এরা বন্ধ করে দিতে পারে।

প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এরা মেনে চলছে, সেই শর্তে রেস্তোরাঁ ও পানশালাকে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের কোম্পানির পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের বেলায় অ্যালকোহল পরিবেশন করে এবং রাত ৯টায় যারা স্থাপনা বন্ধ করে দিচ্ছে, তাদেরকে প্রতিদিনের জন্য ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত; এবং অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টার মধ্যে স্থাপনা বন্ধ করে দেয়া সনদ পাওয়া কিংবা না পাওয়া উভয় প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হবে প্রতিদিনের জন্য এক লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৭) নাগানো ও শিযুওকা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দিব নাগানো ও শিযুওকা জেলার ওপর।

নাগানো জেলা:
পুরো জেলা জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে।

জেলাটি বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও পানশালা এবং কারাওকে পার্লার ও বিবাহ হল’সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের কর্মঘণ্টা হ্রাসের আহ্বান জানাচ্ছে।

ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলোকে দুটো বিকল্প থেকে একটি বেছে নিতে বলা হয়েছে। স্থাপনাসমূহ অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করা অথবা অ্যালকোহল পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করা- এরমধ্যে যেকোন একটি বিকল্পকে বেছে নিতে পারবে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করা স্থাপনাসমূহ তাদের বিক্রির উপর নির্ভর করে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি পাবে। রাত ৯টা পর্যন্ত কার্যক্রম চালানো ও অ্যালকোহল পরিবেশন করা সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাসমূহ অপেক্ষাকৃত কম দৈনিক ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি পাবে।

খাবারের স্থাপনাগুলোকে প্রতি টেবিলে ক্রেতার সংখ্যা ৪ জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

শিযুওকা জেলা:
পুরো জেলা জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে।

জেলাটি সমস্ত রেস্তোরাঁ ও পানশালার প্রতি তাদের ব্যবসায়িক কর্মঘণ্টা হ্রাস করার আহ্বান জানাচ্ছে।

সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলো অ্যালকোহল পরিবেশন করবে কী করবে না তা বেছে নিতে পারবে। হয় রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করা অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করা।

উপরের প্রথম স্থাপনাসমূহকে তাদের বিক্রির ওপর নির্ভর করে দৈনিক ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় স্থাপনাসমূহকে দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এই অনুরোধ মেনে চলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তুকি পাওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে।

খাবারের স্থাপনাগুলোকে প্রতি টেবিলে ক্রেতার সংখ্যা ৪ জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৬) তোচিগি ও ইশিকাওয়া জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দিব তোচিগি ও ইশিকাওয়া জেলার উপর।

তোচিগি জেলা:
পুরো অঞ্চল জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে।
ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং বারগুলো হয় অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করা অথবা রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করা- এরমধ্যে যেকোন একটি বিকল্পকে বেছে নিতে পারবে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। জেলা সরকার এই অনুরোধ মেনে চলা স্থাপনাসমূহকে দৈনিক ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি পরিশোধ করছে।

ইশিকাওয়া জেলা:
পুরো জেলা জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে। ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং বারগুলো হয় অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করা অথবা রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করার বিকল্পকে বেছে নিতে পারবে। আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এই অনুরোধ মেনে চলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তুকি পাওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে। ছোট ও মাঝারি আকারের কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত স্থাপনাগুলোর ক্ষেত্রে, অ্যালকোহল পরিবেশন না করা দোকানগুলো পরিবেশন করা দোকানগুলোর চাইতে অপেক্ষাকৃত বেশি প্রণোদনার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে। অ্যালকোহল পরিবেশন করা সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাসমূহকে দৈনিক ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত এবং অ্যালকোহল পরিবেশন না করা স্থাপনাসমূহকে দৈনিক ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৫) আওমোরি ও ইয়ামাগাতা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সারা দেশ জুড়ে টোকিও ও অন্য বেশ কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কার্যত জরুরি অবস্থার আওতায় প্রতিটি জেলা সুনির্দিষ্ট যেসব পদক্ষেপ কার্যকর করছে, আমাদের সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা আলোকপাত করবো আওমোরি ও ইয়ামাগাতা জেলার ওপর।

আওমোরি জেলা:
এই প্রথমবার আওমোরি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা কার্যকর করা হল।

হিরোসাকি শহরের খাওয়ার জায়গাগুলোকে তাদের ব্যবসার সময় সীমিত করে নিয়ে সকাল পাঁচটা থেকে রাত আটটার মধ্যে রাখার অনুরোধ জানিয়েছে জেলা সরকার। তবে এটি বিতরণ এবং টেকআউটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

প্রতিষ্ঠানগুলোকে মূলত অ্যালকোহল পরিবেশন না করার জন্য বলা হচ্ছে তবে সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণের সনদ যাদের কাছে আছে তাদেরকে সকাল এগারোটা থেকে রাত আটটার মধ্যে অ্যালকোহল পরিবেশনের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

প্রতিটি টেবিলে চারজন পর্যন্ত একটি দলের বসার অনুমতি দেয়া হবে।

অনুরোধ মেনে চললে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিক্রির পরিমাণ, ব্যবসায়িক সামর্থ্য এবং তারা অ্যালকোহল পরিবেশন করে কিনা তার উপর ভিত্তি করে প্রতিদিন ২৫ হাজার থেকে ২ লাখ ইয়েন দেয়া হবে।

ইয়ামাগাতা জেলা:
নয়টি বড় এবং ছোট শহরে কার্যত জরুরি অবস্থা বলবৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইয়ামাগাতা, তেনদো, ইয়োনেযাওয়া, ৎসুরুওকা, সাকাতার বড় শহর এবং তাকাহাতা, মিকাওয়া, শোনাই ও ইয়ুযার ছোট শহর অন্তর্ভুক্ত।

এই সব এলাকার লোকজনকে অপরিহার্য কাজ ছাড়া বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে। বাইরে খাবার খেতে হলে প্রতিটি টেবিলে চারজন পর্যন্ত একটি দলের বসার অনুমতি দেয়া হবে এবং দুই ঘন্টার মধ্যে খাবার শেষ করে তাদেরকে বেরিয়ে যেতে হবে।

খাবারের স্থানগুলোকে তাদের ব্যবসায়িক সময় সংক্ষিপ্ত করে নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে জেলা সরকার। তবে বিতরণ এবং টেকআউটের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।

সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণের সনদ যাদের কাছে আছে তাদেরকে সকাল পাঁচটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা রাখার এবং অ্যালকোহল পরিবেশনের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

সনদ নেই এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করে সকাল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা রাখার জন্য বলা হচ্ছে।

নির্দেশ মেনে চলা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তুকি পাওয়ার যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবে। সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিদিন ১ লাখ ১০ হাজার ইয়েন পর্যন্ত দেয়া হবে এবং সনদ না থাকা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১ লাখ ইয়েন পর্যন্ত দেয়া হবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৪) ফুকুশিমা ও ইবারাকি জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সারা দেশ জুড়ে টোকিও ও অন্য বেশ কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কার্যত জরুরি অবস্থার আওতায় প্রতিটি জেলা সুনির্দিষ্ট যেসব পদক্ষেপ কার্যকর করছে, আমাদের সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা আলোকপাত করবো ফুকুশিমা ও ইবারাকি জেলার উপর।

ফুকুশিমা জেলা:
কার্যত জরুরি অবস্থা সমগ্র জেলা জুড়ে কার্যকর আছে। সেই সব এলাকার রেস্তোরাঁ ও পানশালাকে খোলা রাখার সময় সংক্ষিপ্ত করতে বলা হয়েছে। ব্যাপক সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণের সনদ যাদের নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানকে রাত ৮টার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া এবং অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি বিকল্প রাখা হয়েছে। রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশন করে রাত ৯টা পর্যন্ত এরা নিজেদের প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারবে, অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যবসা এরা চালাতে পারবে। প্রথম দলের প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিদিন ২৫ হাজার ইয়েন বা তার বেশি দেয়া হবে এবং দ্বিতীয় দলভুক্তরা দিনে কমপক্ষে ৩০ হাজার ইয়েন পাবে।

প্রতিটি টেবিলে চারজন পর্যন্ত একটি দলের বসার অনুমতি দেয়া হবে।

ইবারাকি জেলা:
সমগ্র জেলা কার্যত জরুরি অবস্থার আওতায় পড়ছে। রেস্তোরাঁ ও পানশালা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন করা থেকে বিরত থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যবসা চালাতে পারবে কিংবা অ্যালকোহল পরিবেশন করে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারবে।

ক্ষুদ্র কিংবা মাঝারি আকারের কোম্পানির পরিচালিত খাওয়ার যেসব জায়গা রাত ৮টার মধ্যে বিক্রি বন্ধ করে দিচ্ছে এবং অ্যালকোহল পরিবেশন করছে না, প্রতিদিনের জন্য এরা ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত পাবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠান রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা এবং অ্যালকোহল পরিবেশন করা বেছে নিয়েছে, এরা পাবে প্রতিদিনের জন্য ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন।

ভর্তুকি পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হতে হলে প্রতিষ্ঠানকে “ইবারাকি’র আমাবিয়ে-চান” নামে অভিহিত জেলার সংক্রমণ তথ্য সম্পর্কে জানতে পারার ব্যবস্থায় নথিবদ্ধ হতে হবে।

জায়গা খালি আছে কি না কিংবা ভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে কি না, তার উপর নির্ভর না করে টেবিল প্রতি অতিথির সংখ্যা চারজনে সীমিত রাখতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১৩) হোক্কাইদো জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দেব হোক্কাইদো জেলার ওপর।

হোক্কাইদো জেলা:
এই জেলার পুরো এলাকা জুড়ে কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা রয়েছে।

ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সনদপ্রাপ্ত কারাওকে পার্লার এবং বিবাহ হলগুলো’সহ রেস্তোরাঁ এবং বারগুলো দুটি বিকল্প থেকে একটি বেছে নিতে পারবে। তারা হয় রাত ৮ পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করতে পারবে অথবা তারা অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করবে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এমন স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

খাবারের স্থাপনাগুলোকে প্রতি টেবিলে ক্রেতার সংখ্যা ৪ জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

কারাওকের বন্দোবস্ত থাকা স্থাপনাগুলোকে অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে যেতে এবং ভেন্টিলেশন বা বাতাস চলাচলের মত সংক্রমণ রোধী অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

অ্যালকোহল পরিবেশন করা’সহ রাত ৯টার মধ্যে বন্ধ হওয়া সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের দোকান বা ব্যবসা মালিকদের তাদের বিক্রির ওপর নির্ভর করে প্রতিটি দোকানকে দৈনিক ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন পরিশোধ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করা সনদবিহীন স্থাপনাসমূহকে দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পরিশোধ করা হচ্ছে।

আর বড় পরিচালনা কোম্পানিগুলোকে সেগুলো সনদপ্রাপ্ত নাকি সনদপ্রাপ্ত নয় তার ওপর নির্ভর না করে তাদের বিক্রি ঠিক কতটা কমেছে, তার ওপর নির্ভর করে দৈনিক ২ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত পরিশোধ করা হচ্ছে।

দর্শকরা উল্লসিত হবেন এমন অনুষ্ঠানসমূহে উপস্থিতির সর্বোচ্চ সংখ্যা ৫ হাজার বা ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের মধ্যে যেটি নিম্ন সেটিতে সীমিত করা হয়েছে। তবে, দর্শকরা উল্লসিত হবেন না সেইসব অনুষ্ঠানে পূর্ণ ধারণ ক্ষমতা বা ৫ হাজার জন দর্শক সংখ্যার মধ্যে যেটি নিম্ন সেটিতে সীমিত করা হয়েছে।

৫ হাজারেরও বেশি লোক সমাগম হবে যেসব অনুষ্ঠানে, সেইসব অনুষ্ঠানের আয়োজকরা যদি দুই সপ্তাহ আগে আগাম ভাইরাস-রোধী পরিকল্পনা দাখিল করেন, তবে ২০ হাজার বা ধারণ ক্ষমতার ১০০ শতাংশের মধ্যে যেটি নিম্ন সেই সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতির অনুমতি পাবে।

দর্শক সমাগম হওয়া অনুষ্ঠানগুলো রাত ৯টার মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া আয়োজকদের রাত ৮টার পরে অ্যালকোহল পরিবেশন না করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১২) ফুকুওকা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দিব ফুকুওকা জেলার উপর।

ফুকুওকা জেলা:
ফুকুওকায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরেও জেলা সরকার গত ২৪শে জানুয়ারি তাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলি সমগ্র এলাকায় বজায় রেখেছে।

খাবারের স্থাপনাগুলোকে প্রতি টেবিলে ক্রেতার সংখ্যা ৪ জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং বারগুলো দুটি বিকল্প থেকে একটি বেছে নিতে পারবে। তারা হয় অ্যালকোহল পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করতে পারবে অথবা তারা অ্যালকোহল পরিবেশন থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টায় কার্যক্রম বন্ধ করবে।

আর সনদপ্রাপ্ত নয় এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

রাত ৯টার মধ্যে বন্ধ হওয়া ছোট এবং মাঝারি আকারের সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাসমূহকে তাদের বিক্রির উপর নির্ভর করে প্রতিটি দোকানকে দৈনিক ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন পরিশোধ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, অ্যালকোহল পরিবেশন না করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করা সনদপ্রাপ্ত এবং সনদবিহীন স্থাপনাসমূহের পরিচালনা কোম্পানিগুলোকে দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পরিশোধ করা হচ্ছে।

আর বড় পরিচালনা কোম্পানিগুলোকে তাদের বিক্রি ঠিক কত কমেছে, সেটির উপর নির্ভর করে দৈনিক ২ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত পরিশোধ করা হচ্ছে।

বড় আকারের অনুষ্ঠানসমূহে উপস্থিতির সর্বোচ্চ সংখ্যা নীতিগতভাবে ৫ হাজারে সীমিত করা হয়েছে। তবে, এই সীমা ২০ হাজারে উন্নীত করা যাবে যদি আয়োজকরা ভাইরাস-রোধী পরিকল্পনা দাখিলের পর জেলা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তা নিশ্চিত করে নেয়।

এছাড়া, জেলার অধিবাসীদের অন্য জেলায় অনাবশ্যক যাওয়া-আসা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১১) কিয়োতো জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ সামাল দিতে টোকিও এবং দেশের আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন এই জেলাগুলোর প্রত্যেকটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, চলতি ধারাবাহিকে আমরা তা জানার চেষ্টা করছি। এবারে কিয়োতোর ওপর আলোকপাত করা যাক।

কিয়োতো জেলা:
এই জেলার সমস্তটা জুড়ে কার্যত জরুরি অবস্থাকালীন বিধিনিষেধ বলবৎ করা হয়েছে।

পানাহারের জায়গাগুলোকে খোলা রাখার সময় কমিয়ে ফেলতে অনুরোধ করেছে জেলা সরকার।

ভাইরাস রোধী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সার্টিফিকেট পাওয়া রেস্টুরেন্ট ও পানশালাগুলোকে দুটো বিকল্প দেওয়া হয়েছে। এরা হয় মদ্যপানীয় বিক্রি করে যেতে পারবে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত এবং রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করতে হবে, নয়তো মদ্যপানীয় পরিবেশনে বিরত থেকে দোকান বন্ধ করে দেবে রাত ৮টার মধ্যে।

ভাইরাস রোধী ব্যবস্থা গ্রহণের সার্টিফিকেট না থাকা পান-ভোজনের জায়গাগুলোকে মদ্যপানীয় পরিবেশন না করতে এবং রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

অনুরোধ মেনে চলা পান-ভোজনের জায়গাগুলোকে, তারা মদ্যপানীয় পরিবেশন করছে কিনা এবং তাদের আগেকার বিক্রি-পরিমাণ কত ছিল তার ভিত্তিতে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।

যথাযথ ভাইরাস রোধী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছোট ও মাঝারি আকৃতির পানশালা ও রেস্টুরেন্ট, যেগুলো রাত ৯টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে দৈনিক ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত। যারা মদ্যপানীয় পরিবেশন করছে না এবং রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং সার্টিফিকেটধারী নয় এমন রেস্টুরেন্ট ও পানশালা যারা সরকারি অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে, তাদের বিক্রির ওপর নির্ভর করে দৈনিক ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যেক টেবিলে সর্বোচ্চ চার জন পর্যন্ত লোককে বসতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ভাইরাসরোধী ব্যবস্থা গ্রহণের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত রেস্টুরেন্ট বা পানশালায় পাঁচ বা ততোধিক লোক এক টেবিলে বসতে পারেন যদি তারা সবাই এই প্রমাণ দাখিল করতে পারেন যে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় তাদের নেগেটিভ ফল এসেছে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১০) হিয়োগো জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া প্রতিহত করতে টোকিও এবং সারা দেশ জুড়ে আরও বেশ কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার আওতায় প্রতিটি জেলা সুনির্দিষ্ট যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দেব হিয়োগো জেলার উপর।

হিয়োগো জেলা:
পুরো এলাকায় কার্যত জরুরি পদক্ষেপ বলবৎ আছে। রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলোকে তাদের পরিচালনার সময় কমিয়ে নিতে বলা হয়েছে।

ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে সনদ পাওয়া রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে দুটি বিকল্প দেয়া হয়েছে। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন করে রাত নয়টা পর্যন্ত এরা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারে, কিংবা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন বিরত রেখে রাত ৮টায় প্রতিষ্ঠান এরা বন্ধ করে দিতে পারে।

সনদ না পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করা এবং রাত আটটার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।

সরকারের এই অনুরোধ মেনে চললে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন করে থাকা সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যারা রাত নয়টার মধ্যে বন্ধ করে দিচ্ছে, বিক্রির উপর নির্ভর করে তাদেরকে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন ভর্তুকি দেয়া হবে।

সনদ থাকা বা না থাকা রেস্তোরাঁগুলো যারা অ্যালকোহল পরিবেশন করে না এবং রাত আটটার মধ্যে বন্ধ করে দিচ্ছে, তাদেরকে প্রতিদিন ৩০ হাজার থেকে এক লক্ষ ইয়েন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৯) ওসাকা জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া প্রতিহত করতে টোকিও এবং সারা দেশ জুড়ে আরও বেশ কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা কার্যত জরুরি অবস্থার আওতায় প্রতিটি জেলা সুনির্দিষ্ট যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তার উপর আলোকপাত করছি। এবারে আমরা নজর দেব ওসাকা জেলার উপর।

ওসাকা জেলা:
পুরো এলাকায় কার্যত জরুরি পদক্ষেপ বলবৎ আছে।

ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে সনদ পাওয়া রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে দুটি বিকল্প থেকে একটি বেছে নেয়ার অনুমতি জেলা সরকার দিচ্ছে। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন করে রাত নয়টা পর্যন্ত এরা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারে, কিংবা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন বিরত রেখে রাত ৮টায় প্রতিষ্ঠান এরা বন্ধ করে দিতে পারে। দ্বিতীয় পছন্দের বেলায় বড় অঙ্কের ভর্তুকি পাওয়া যাবে।

সনদ না পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করা এবং রাত আটটার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।

সনদ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিটি টেবিলে চারজন করে বসার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ক্রেতাদের সকলে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল পাওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারলে অবশ্য পাঁচজন কিংবা তার বেশি একটি টেবিলে বসতে পারবেন।

সনদ না পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঁচ কিংবা বেশি লোকজনের দলকে গ্রহণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বড় আকারের অনুষ্ঠানের বেলায় আয়োজকরা আগে থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধ পরিকল্পনা জমা দিলে প্রতিটি অনুষ্ঠানে ২০,০০০ জন পর্যন্ত অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ২০ হাজার জনের বেশি অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে যদি অংশগ্রহণকারীদের সবার করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ প্রমাণিত হয়েছে তা নিশ্চিত করা হয়।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৮) কুমামোতো ও মিইয়াযাকি জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করা হবে। এবারে আমরা কুমামোতো ও মিইয়াযাকি’র উপর নজর দিব।

কুমামোতো জেলা:
এই জেলায় পুরো অঞ্চল জুড়ে কার্যত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
পৌরসভার সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলো সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারবে। শেষের নিয়মটি বেছে নেয়া প্রতিষ্ঠানসমূহ বেশি করে আর্থিক সহায়তা পাবে।

সনদ না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সারাদিন অ্যালকোহল পরিবেশন না করা এবং রাত ৮টার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। যারা এই অনুরোধ মেনে চলবে তাদেরকে জেলা থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে।

জেলাটি একই টেবিলে বসা লোকের সংখ্যা ৪ জনে সীমিত রাখার আহ্বান এইসব স্থাপনার প্রতি অব্যাহতভাবে জানিয়ে আসছে।
এদিকে, সনদ থাকা স্থাপনাগুলোতে টেবিলে বসা লোকের সংখ্যার উপর কোন বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না যদি তারা নেতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত করতে পারে।

মিইয়াযাকি জেলা:
এই জেলায় সারা অঞ্চল জুড়ে সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। জেলাটি রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলোকে সারাদিন অ্যালকোহল পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছে। যেসব স্থাপনা এই অনুরোধ মেনে চলবে সেগুলোই তাদের ব্যবসায়িক আকারের উপর নির্ভর করে দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ইয়েন আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

এই তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৭) কাগাওয়া এবং নাগাসাকি জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ কার্যকর করা হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করা হবে। এবারে আমরা কাগাওয়া ও নাগাসাকি’র উপর নজর দিব।

কাগাওয়া জেলা:
এই জেলায় নাওশিমা শহর ছাড়া ১৬টি পৌরসভা, বা পুরো এলাকাকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়ে সংক্রমণ-রোধী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

পৌরসভার সনদপ্রাপ্ত নয়, এমন রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলোকে রাত ৮টার মধ্যে কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি অ্যালকোহল পরিবেশন করতে নিষেধ করা হয়েছে। অন্যদিকে, সনদপ্রাপ্ত স্থাপনাসমূহকে দুটি বিকল্প দেয়া হয়েছে। এগুলো রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশনের পাশাপাশি রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে অথবা অ্যালকোহল পরিবেশন না করে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারবে। এই নিয়ম মেনে চলা প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের আকারের ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা পাবে।

নাগাসাকি জেলা:
জেলাটি পুরো অঞ্চল জুড়ে কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করেছে।
জেলার খাবার এবং পানীয় বিক্রির স্থাপনাগুলোকে রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করার পাশাপাশি সারাদিন ধরে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই অনুরোধ মেনে চলা ছোট এবং মাঝারি আকারের কোম্পানিগুলোকে তাদের আয় অনুযায়ী দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পরিশোধ করা হবে। আর এই আদেশ মেনে চলার জন্য বৃহদাকারের স্থাপনাসমূহ তাদের লোকসানের ৪০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাবে। তবে, এক্ষেত্রে দৈনিক ২ লক্ষ ইয়েনের একটি সর্বোচ্চ সীমা রয়েছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৬) গিফু ও মিয়ে জেলা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ সামাল দিতে টোকিও এবং দেশের আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন এই জেলাগুলোর প্রত্যেকটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, চলতি ধারাবাহিকে আমরা তা জানার চেষ্টা করছি। এবারে আলোকপাত করা যাক গিফু এবং মিয়ে’র ওপর।

গিফু জেলা:
গিফু’র ৪২টি পৌর এলাকার মধ্যে সবকটি এলাকার পানশালা ও রেস্তোরাঁকে রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে দিতে এবং মদ্যপানীয় বিক্রি না করতে অনুরোধ করেছে জেলা সরকার। ভাইরাস প্রতিরোধের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যারা সার্টিফিকেট পেয়েছে এবং যারা পায়নি, তা নির্বিশেষে সব রেস্তোরাঁ ও পানশালাকে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যেসব পানশালা ও রেস্তোরাঁ এই অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে, তাদের দৈনিক ৩০ হাজার ইয়েন থেকে ২ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।

কোভিড নাইন্টিনের টিকা নেওয়ার রেকর্ড অথবা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসা সাপেক্ষে কিছু কিছু সামাজিক বিধিনিষেধ শিথিল করার যে নীতি কেন্দ্রীয় সরকারের, গিফু জেলা সরকার সেটি অনুসরণ করছে না।

মিয়ে জেলা:
মিয়ে জেলায় ওয়াসে এবং কুমানো সিটি সহ দক্ষিণের পাঁচটি পৌর এলাকা ছাড়া বাদবাকি আর সব জায়গায় ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ কার্যকর করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপ বলবৎ থাকা পৌর এলাকাসমূহে পানাহারের যেসব জায়গা ভাইরাস-রোধের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সার্টিফিকেট পেয়েছে, তাদের দুটো বিকল্প দেওয়া হয়েছে। একটি হচ্ছে, মদ্যপানীয় বিক্রি করতে পারবে এবং দোকান বন্ধ করতে হবে রাত ৯টায়। অপর বিকল্পটি হচ্ছে, মদ্যপানীয় বিক্রি করবে না এবং খোলা থাকবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
পানাহারের যেসব জায়গার ভাইরাস-রোধী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সার্টিফিকেট নেই, তাদের মদ্যপানীয় বিক্রি না করতে এবং রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।

সরকারের এই অনুরোধে যারা সাড়া দিচ্ছে সেসব রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে তাদের সাইজের ভিত্তিতে অর্থ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। যারা মদ্যপানীয় বিক্রি করায় বিরত থেকে রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে, তাদের ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে তুলনায় বেশি পরিমাণে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৫) আইচি

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করা হবে। এবারে আমরা আইচি’র ওপর নজর দিব।

আইচি জেলা:
তোয়েই শহর এবং তোইয়োনে গ্রাম বাদ দিয়ে ৫২টি পৌরসভায় সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

ভাইরাস রোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলো অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন না করে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবে, অথবা রাত আটটা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশন করে নয়টায় বন্ধ করতে পারবে।

তবে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন না করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও বেশি পরিমাণ আর্থিক সাহায্য দেয়া হবে।

সনদ না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করা এবং রাত ৮টার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।

সবকয়টি প্রতিষ্ঠানকে টেবিল প্রতি গ্রাহকের সংখ্যা চার জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

স্পোর্টিং ইভেন্ট সহ বিরাট আকারের অনুষ্ঠানগুলোতে বিশ হাজার পর্যন্ত দর্শকদের অনুমতি দেয়া হবে যদি আয়োজকদের সংক্রমণ রোধী পরিকল্পনা জেলা সরকার নিশ্চিত করে থাকে। অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য যোগদানকারীদের সংখ্যা পাঁচ হাজারে সীমিত রাখা হয়েছে। তবে যে সব অনুষ্ঠানে দর্শকরা উল্লাস জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে সেই সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ভেন্যুর আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

পৃথক সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা এবং বাড়ি ফিরে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য স্কুলগুলোকে বলা হয়েছে। অথবা এক দিন পরপর বা বিভিন্ন ঘন্টায় শিক্ষার্থীরা যাতে স্কুলে আসে সেই ব্যবস্থা করতে এবং তার সাথে সাথে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থাও রাখতে বলা হয়েছে।

পাঠক্রম বর্হিভূত কার্যক্রমের ক্ষেত্রে অনুশীলন ম্যাচ খেলা থেকে বিরত থাকার জন্য স্কুলগুলোকে বলা হয়েছে।

ভ্রমণ সহ স্কুলের বাইরে অন্যান্য ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্যেও তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৪) গুনমা ও নিইগাতা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করা হবে। এবারে আমরা গুনমা ও নিইগাতা’র ওপর নজর দিব।

গুনমা জেলা:
এই জেলা পুরো এলাকা জুড়ে কার্যত জরুরি অবস্থা কার্যকর করেছে। সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালাকে দুটি পছন্দের মধ্যে থেকে একটি বেছে নেয়ার অনুমতি জেলা দিচ্ছে। একটি হচ্ছে ভোর ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন না করে ব্যবসা চালু রাখা। অন্যটি হচ্ছে রাত ৯টার মধ্যে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা এবং রাত ৮টায় অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশন বন্ধ করে দেয়া। সনদ না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অ্যালকোহল পরিবেশন না করা এবং রাত ৮টার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।

সবকয়টি প্রতিষ্ঠানকে টেবিল প্রতি গ্রাহকের সংখ্যা চার জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

এসব অনুরোধ মেনে চলা সকল প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সমর্থন দেয়া হবে। ছোট আকারের সনদ-প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে এদের বিক্রির উপর নির্ভর করে প্রতিদিন ২৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন দেয়া হবে। বড় আকারের ব্যবসাকে দেয়া হবে ২ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত।

নিইগাতা জেলা:
কার্যত জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকা অবস্থায় জেলার সকল রেস্তোরাঁ এবং পানশালাকে রাত ৮টার মধ্যে সেবা প্রদান বন্ধ করে দিতে এবং অ্যালকোহল পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সনদ-প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেয়ার এক ঘণ্টা আগে, রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পরিবেশনের অনুমতি দেয়া হয়েছে কিংবা কোনরকম অ্যালকোহল পরিবেশন ছাড়া রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখতে বলা হয়েছে। সকল প্রতিষ্ঠানকে টেবিল প্রতি গ্রাহকের সংখ্যা চার জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (৩) কানাগাওয়া

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তার ওপর আলোকপাত করা হবে। এবারে আমরা কানাগাওয়া’র ওপর নজর দিব।

কানাগাওয়া জেলা:
পুরো জেলা জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে।

সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালাকে দু’টি বিকল্প থেকে একটি বেছে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। একটি হচ্ছে রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধের পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে অ্যালকোহল পরিবেশন বন্ধ করা। অন্য বিকল্পটি হচ্ছে অ্যালকোহল পরিবেশন ছাড়াই রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা।

সনদবিহীন রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধ করার পাশাপাশি অ্যালকোহল পরিবেশন করতে নিষেধ করা হয়েছে।

সব ধরনের স্থাপনাসমূহকে প্রতি টেবিলে গ্রাহকের বসার সংখ্যাকে ৪ জনে সীমিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সব ধরনের স্থাপনা এই অনুরোধ মেনে চললে আর্থিক সহযোগিতা পাবে। যদি তারা রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখে, তাহলে তাদেরকে তাদের বিক্রির সাথে সঙ্গতি রেখে ২৫ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি দেয়া হবে। যদি তারা রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখে, তাহলে তাদেরকে ৩০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ভর্তুকি দেয়া হবে।

সনদপ্রাপ্ত স্থাপনায় বিয়ের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের জন্য, যদি অনুষ্ঠানের দিন অংশগ্রহণকারীদের করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হয় তাহলে প্রতি টেবিলে অতিথিদের বসার সংখ্যার ওপর কোন সীমা আরোপ করা হবে না।

বড় ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ অংশগ্রহণকারীর সীমা ২০ হাজার জনে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, এই সীমা তুলে নেয়া হবে যদি অংশগ্রহণকারীদের সবার অনুষ্ঠানের দিনে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হয়।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (২) সাইতামা এবং চিবা

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশ জুড়ে আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীনে থাকাকালীন এই জেলাগুলোর প্রতিটিতে সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তার উপর আলোকপাত করা হবে। এবারে আমরা সাইতামা ও চিবা’র উপর নজর দিব।

সাইতামা জেলা:
পুরো জেলা জুড়েই কার্যত জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছে। সনদপ্রাপ্ত এবং সনদবিহীন উভয় ধরনের পানশালা এবং রেস্তোরাঁকেই রাত ৮টার মধ্যে দোকান বন্ধের পাশাপাশি অ্যালকোহল পরিবেশন করতেও নিষেধ করা হয়েছে।

এই স্থাপনাসমূহ অবশ্য রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকার অনুমতি পাবে যদি তারা কোভিড-১৯ টিকাদানের রেকর্ড বা নেতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল ব্যবহারের মাধ্যমে বিধিনিষেধ শিথিল রাখার সরকারি কর্মসূচির জন্য প্রাক-নিবন্ধন করে রাখে।

ঐ স্থাপনাগুলোতে ক্রেতাদের প্রতিটি দলে সদস্য সংখ্যার উপর কোন বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না যদি তারা ক্রেতাদের টিকাদানের রেকর্ড বা নেতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত করতে পারে। এছাড়া, তারা বেলা ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অ্যালকোহল পরিবেশন করতে পারবে।

চিবা জেলা:
এই জেলা সনদপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁ এবং পানশালাগুলোকে অ্যালকোহল পরিবেশন করতে নিষেধ না করলেও রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছে। যারা এই অনুরোধ মেনে চলবে তারা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

অন্যদিকে, সনদপ্রাপ্ত নয়, এরকম স্থাপনাসমূহকে অ্যালকোহল পরিবেশন করতে নিষেধ করার পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করতেও বলা হয়েছে। এমনকি এই অনুরোধ মেনে চললেও তাদেরকে কোন ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করা হবে না।

সব স্থাপনাতেই ক্রেতাদের দলগুলো চারজনের মধ্যে সীমিত থাকবে। তবে, বিয়ের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রতি টেবিলে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তিকে একত্রে বসার অনুমতি দেয়া হবে যদি সকল অতিথির পরীক্ষার নেতিবাচক ফলাফল নিশ্চিত করা হয়। জেলাটি এই ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই অবহিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে কার্যত জরুরি অবস্থার অধীন জেলাসমূহে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে (১) টোকিও

জাপান সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি সামাল দিতে টোকিও এবং দেশের আরও কয়েকটি জেলায় কার্যত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কার্যত জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকার সময় এই জেলাগুলোতে ভাইরাস ঠেকানোর সুনির্দিষ্ট কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, আমরা তা জানার চেষ্টা করবো আমাদের সর্বসাম্প্রতিক ধারাবাহিকে। এবারে টোকিও’র ওপর আলোকপাত করা হবে।

টোকিও মেট্রোপলিটন সরকার মহানগরের পানশালা ও রেস্তোরাঁগুলোকে ১৩ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার সময় কমিয়ে আনতে অনুরোধ করেছে।

ভাইরাস প্রতিরোধের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যেসব রেস্তোরাঁ ও পানশালা সার্টিফিকেট পেয়েছে, তারা মদ্যপানীয় পরিবেশন করা বা না করার ওপর নির্ভর করে দোকান খোলা রাখার সময়টা বেছে নিতে পারবে, অর্থাৎ যারা মদ্যপানীয় পরিবেশন করবে তারা খোলা রাখতে পারবে ভোর ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত, যার মধ্যে রাত ৮টা পর্যন্ত ৯ ঘন্টা মদ্যপানীয় পরিবেশন অন্তর্ভুক্ত। যারা মদ্যপানীয় পরিবেশন করে না তাদের রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

একসাথে খাওয়াদাওয়া বা মদ্যপান যারা করেন তাদের সেই গ্রুপে লোকসংখ্যা চার জনে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে। তবে সংখ্যাটি পাঁচের অধিক করার অনুমতি দেওয়া হবে যদি সবার করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ থাকে।

ভাইরাস ঠেকানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের সার্টিফিকেট নেই এমন রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোকে রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এদের মদ্যপানীয় পরিবেশন করা বারণ এবং সেখানে একেকটি গ্রুপে চারজনের বেশি লোক থাকা চলবে না।

মদ্যপানীয় পরিবেশনকারী যেসব রেস্তোরাঁ ও পানশালা রাত ৯টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে তাদের দৈনিক ২৫ হাজার ইয়েন থেকে ২ লক্ষ ইয়েন দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ হিসেবে।

মদ্যপানীয় পরিবেশন না করে যেসব রেস্টুরেন্ট ও পানশালা রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে, তাদের দৈনিক ৩০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ইয়েন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

পান-ভোজনের জায়গা ছাড়া অন্য কোনো দোকানকে ব্যবসার সময় কমিয়ে আনতে অনুরোধ করা হচ্ছে না। তবে তাদের প্রত্যেক শিল্পের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া নির্দেশিকা অনুসরণ করে কাজ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া টোকিও’র জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে অপ্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকতে অথবা জনাকীর্ণ জায়গা এড়িয়ে চলতে এবং বেরোতে হলে ভিড়ের সময় এড়িয়ে অন্য কোনো সময় বেছে নিতে। এছাড়া তাদের এমন রেস্তোরাঁ বা পানশালায় বার বার যেতে বারণ করা হয়েছে যারা দোকান খোলা রাখার সময় কমায়নি।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৬: জাপানের করোনাভাইরাসের দৈনিক সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে- ওমিক্রন সম্পর্কে আমরা কী জেনেছি? (৪) টিকার কার্যকারিতা।

উত্তর-৩৮৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ভাইরাসের ওমিক্রন ধরন নজিরবিহীন দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা সংক্রমণ সক্ষমতা এবং মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকির মত ভাইরাসের এই ধরন সম্পর্কে যা জানতে পেরেছি, সে বিষয়ে আপনাদের অবগত করবো। চতুর্থ পর্বে এবারে আমরা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকা কতটা কার্যকর সে বিষয়টির উপর নজর দেব।

টিকার দুটি ডোজ নেয়ার পরেও লোকজন ওমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারেন বলে জানা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ তাদের সাপ্তাহিক আপডেটে সতর্ক করে দিয়ে জানায় যে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে। আপডেটে আরও জানানো হয় যে ওমিক্রন সংক্রমণের ক্ষেত্রে এবং রোগের উপসর্গ দেখা দেয়ার ক্ষেত্রে টিকা যথেষ্ট পরিমাণ সুরক্ষা প্রদান করে না। সংস্থা আরও জানায় যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ক্ষেত্রেও টিকা সম্ভবত খুব বেশি সুরক্ষা প্রদান করে না।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তাদের ৩১শে ডিসেম্বরের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে যে ফাইজার এবং মডার্না যে ধরনের টিকা উন্নয়ন করেছে সেই এমআরএনএ টিকার দুটি ডোজ রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে এমন ধরনের ওমিক্রন সংক্রমণ প্রতিরোধে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ কার্যকর। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার দুই থেকে চার সপ্তাহ পরে এই ধরনের কার্যকারিতা লক্ষ্য করা গেছে। তবে প্রায় ২০ সপ্তাহ পর কার্যকারিতা হ্রাস পেয়ে প্রায় ১০ শতাংশে নেমে আসে।

উপাত্তে আরও দেখা যায় যে দুটি ফাইজার ডোজ পেয়েছেন যারা তাদেরকে ফাইজার বা মডার্নার বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ দেয়ার দুই থেকে চার সপ্তাহ পর উপসর্গ দেখা যাচ্ছে এমন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে তা ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ কার্যকর। তবে পাঁচ থেকে নয় সপ্তাহের পর এই কার্যকারিতা ৫৫ থেকে ৭০ শতাংশে নেমে যায় এবং দশ সপ্তাহ পর এটি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে নেমে আসে।

এদিকে, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানতে পারে যে মারাত্মক ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়া এবং হাসপাতালে ভর্তি কমিয়ে আনতে টিকা আরও বেশি কার্যকর। যারা ফাইজার, মডার্না বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, দুটি ডোজ নেয়ার দুই থেকে চব্বিশ সপ্তাহের মধ্যে তা হাসপাতালে ভর্তি রোধ করতে ৭২ শতাংশ এবং পঁচিশ সপ্তাহের পর থেকে তা ৫২ শতাংশ কার্যকর। উপাত্তে দেখা গেছে যে দুটি টিকা এবং বুস্টার ডোজ নেয়ার দুই সপ্তাহ পর তা হাসপাতালে ভর্তি রোধে ৮৮ শতাংশ কার্যকর।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৫: জাপানের করোনাভাইরাসের দৈনিক সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে- ওমিক্রন সম্পর্কে আমরা কী জেনেছি? (৩) মারাত্মক রোগের স্বল্প ঝুঁকি সত্ত্বেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে – ২

উত্তর-৩৮৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ভাইরাসের ওমিক্রন ধরন নজিরবিহীন দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা সংক্রমণ সক্ষমতা এবং মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকির মত ভাইরাসের এই ধরন সম্পর্কে যা জানতে পেরেছি, সে বিষয়ে আপনাদের অবগত করবো। তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা ওমিক্রন মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে কিনা, সেদিকে আরও বেশি নজর দেব।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখে দেয়া ব্যাখ্যায় বলেছে, ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত লোকজনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি হচ্ছে ডেলটা ধরনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে দ্বিতীয় টিকা নেয়ার পর যাদের বেলায় ১৪ দিন কিংবা আরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে, তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি হচ্ছে টিকা যারা নেয়নি তাদের চাইতে ৬৫ শতাংশ কম। এছাড়া তৃতীয় ডোজ নেয়ার পর ১৪ দিনের বেশি পার হয়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি হচ্ছে ৮১ শতাংশ কম।

তবে এই উপাত্ত ব্যাখ্যা করার বেলায় আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ বলেছে বুস্টার টিকা ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের বেলায় মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়া প্রতিহত করে। যুক্তরাজ্যে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত জনসংখ্যার ৬২.৩ শতাংশ টিকার তৃতীয় ডোজ নিয়েছে।

অন্যদিকে জাপানে জনসংখ্যার মাত্র ১.১ শতাংশ ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত বুস্টার টিকা নিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আভাস দিয়েছে যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কম ঝুঁকি সত্ত্বেও ভাইরাসের এই ধরন প্রতিটি দেশে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে। একারণে এটা হচ্ছে যে সংক্রমণের বিশাল সংখ্যা মারাত্মক অসুস্থ হওয়া এবং মৃত্যুর সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৪: জাপানের করোনাভাইরাসের দৈনিক সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে- ওমিক্রন সম্পর্কে আমরা কী জেনেছি? (২) মারাত্মক রোগের স্বল্প ঝুঁকি সত্ত্বেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে - ১

উত্তর-৩৮৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন নজিরবিহীন গতিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন এই ধারাবাহিকে আমরা ওমিক্রন ধরন সম্পর্কে কী জেনেছি, যেমন এর ছড়িয়ে পড়া, মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর এর সম্ভাব্য চাপের কথা তুলে ধরছি। এবারে এর দ্বিতীয় পর্বে আমরা ওমিক্রন মারাত্মক রোগের কারণ হবে কি না তার উপর নজর দিব।

ওমিক্রন ধরন যে অন্যান্য স্ট্রেইনের তুলনায় কম মারাত্মক সে সম্বন্ধে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক প্রমাণ রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও ১১ জানুয়ারি প্রকাশিত তাদের এক সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে জানায় যে, ওমিক্রন ধরনের আধিপত্য বিস্তার করা সময় চলাকালীন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা দৃশ্যত দেখা গেছে কম এবং খুব অল্প সংখ্যক রোগীর মারাত্মক উপসর্গ দেখা গেছে।

জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখে, ডব্লিউএইচও’র কর্মকর্তারা বলেন, অন্যান্য ধরনের তুলনায়, ওমিক্রন ধরন নাক ও গলা’সহ শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশকে আক্রান্ত করছে, তবে ফুসফুস পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছানোর এবং মারাত্মক উপসর্গের সৃষ্টি করার সম্ভাবনা কম। তবুও, কর্মকর্তারা সতর্ক করেন যে, এইসব দর্শনকে প্রমাণ করার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।

জাপানে, ওকিনাওয়ায় প্রাককলিত প্রাথমিক উপাত্ত বিভিন্ন করোনাভাইরাসের ট্রেইনের কারণে দেখা দেয়া রোগের প্রচণ্ডতা নিয়ে তথ্য সরবরাহ করছে। কর্মকর্তারা এই জেলার কোভিড-১৯ রোগীদের উপর সমীক্ষা পরিচালনা করে যখন বৈশ্বিক মহামারির কোন এক পর্যায়ে সংক্রমণের সংখ্যা ৬৫০’এ পৌঁছায়।

তারা দেখতে পান যে, গত বছরের ১ এপ্রিল পর্যন্ত যখন মূল স্ট্রেইনটি প্রবলভাবে বিস্তার লাভ করছিল, তখন ৮৪.৮ শতাংশ রোগীর হালকা উপসর্গ রয়েছে এবং শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ রোগীর মারাত্মক উপসর্গ রয়েছে। জুলাই মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত, আলফা ধরনটি যখন প্রবল ছিল, তখন ৭২.৮ শতাংশ রোগীর হালকা উপসর্গ বা কোন উপসর্গ ছিল না। অন্যদিকে শূন্য দশমিক নয় শতাংশ রোগী ছিল মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি, যখন ওমিক্রন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে তখন ৯২.৩ শতাংশ রোগীর হালকা উপসর্গ বা কোন উপসর্গ ছিল না। কেউই মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হননি।

তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, বর্তমানে ওকিনাওয়ার অধিকাংশ রোগী হচ্ছেন তরুণ এবং যদি সংক্রমণ বয়স্ক লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়া লোকের সংখ্যা বাড়তে পারে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮৩: জাপানের করোনাভাইরাসের দৈনিক সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে- ওমিক্রন সম্পর্কে আমরা কী জেনেছি? (১) ডব্লিউএইচও ওমিক্রনের “বর্ধিত সংক্রমণ ক্ষমতার” উল্লেখ করেছে।

উত্তর-৩৮৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন নজিরবিহীন গতিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বিশ্ব থেকে আসা ধারাবাহিক কিছু প্রতিবেদনে এই ধরনের উচ্চ-সংক্রমণ ক্ষমতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জাপানেও ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দৈনিক ২০ হাজারের অধিক সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে, সংক্রমণ এবং গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকিগুলো কী? এবং এগুলো কীভাবে আমাদের চিকিৎসা পরিষেবার উপর প্রভাব ফেলবে? নতুন এই ধারাবাহিকে আমরা ওমিক্রন সম্পর্কে কী জেনেছি, তা তুলে ধরব। আর এর প্রথম পর্বে আমরা ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতার উপর নজর দিব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও ১১ই জানুয়ারি তাদের সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে ওমিক্রন ধরনের “বর্ধিত সংক্রমণ ক্ষমতার” উল্লেখ করেছে।

ঐ প্রতিবেদনে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ডেনমার্কে পরিচালিত একটি গবেষণার উল্লেখ করা হয়েছে, যেটিতে দেখা গেছে যে একই বাড়ির ভেতরে পরোক্ষ বা দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণের ক্ষেত্রে ডেল্টা ধরনের ২১ শতাংশের তুলনায় ওমিক্রন ধরনের হার ছিল ৩১ শতাংশ।

মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বা সিডিসি’র ভাষ্যানুযায়ী, তারা ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা ডেল্টা ধরনের তুলনায় সর্বোচ্চ তিনগুণ হিসেবে দেখতে পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলোতে ওমিক্রন দ্রুত ডেল্টাকে প্রতিস্থাপন করে প্রধান ধরনে পরিণত হচ্ছে।

ব্রিটেনে, ২০২১ সালের ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইংল্যান্ডের প্রায় বেশির ভাগ অঞ্চল জুড়ে নিশ্চিত করা করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের প্রায় ৯৫ শতাংশই ছিল ওমিক্রন ধরনের।

সিডিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে জানুয়ারি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নতুন সংক্রমণের প্রায় ৯৮.৩ শতাংশই ছিল ওমিক্রন ধরনের, যা এটি প্রদর্শন করছে যে ওমিক্রন প্রধান ধরনে পরিণত হয়েছে এবং করোনাভাইরাসের অন্য প্রায় সবগুলো ধরনকেই প্রতিস্থাপিত করেছে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮২: যদি কেউ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন, তাহলে কীভাবে বুঝবেন (৪) অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কিট।

উত্তর-৩৮২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সাধারণ সর্দি-জ্বর ছড়িয়ে পড়ার এই সময়ে জাপানে এখন ওমিক্রন ধরনের করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঠাণ্ডা লাগার হালকা উপসর্গ দেখা দিলে এবং সেটা কোভিড-১৯ কি না তা জানতে চাইলে আমাদের কী করা দরকার? এবারে আমরা জানবো উপসর্গ দেখা দিলে কীভাবে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কিট ব্যবহার করতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দোকানে যে করোনাভাইরাস পরীক্ষার অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলো রাত্রিবেলায় হঠাৎ উপসর্গ দেখা দিলে অথবা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হলে তখন ব্যবহারের পক্ষে বেশ উপযোগী। তবে উপসর্গ না থাকলে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কিট ব্যবহারের সুপারিশ করা হয় না, কারণ সে অবস্থায় এই পরীক্ষার ফলাফল যে সব সময় নির্ভুল হয় তা না।

বলা হয় যে উপসর্গ যদি থাকে এবং তা স্পষ্ট হয়ে ওঠার নয় দিনের মধ্যে পরিচালিত অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ফলাফল হয় নির্ভরযোগ্য। তবে এক্ষেত্রে নিশ্চিত করা জরুরি যে প্যাকেটে “ইন ভিটরো ডায়াগনোস্টিক্স” সংক্ষেপে আইভিডি লেখা কিট কেনা হয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য এই কিট সঙ্গে রাখতে লোকেদের উৎসাহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে মনে রাখতে হবে, অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কিট’এ ভুলভাবে নেগেটিভ ফলাফল আসতে পারে। তাই পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও যদি দেখা যায় যে উপসর্গ রয়েই গেছে, তখন উচিত ডাক্তার দেখানো। কামেদা মেডিকেল সেন্টারের ওৎসুকা ইওশিহিতো বলেন, সরকার দ্বারা অনুমোদিত অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট সহজলভ্য এবং একেকটার দাম ২০০০ ইয়েন বা ২০ ডলারের চেয়ে কম। তিনি বলেন এই কিট বাড়িতে কিনে রাখা ভাল। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে শরীরে ভাইরাস একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছানোর আগ অব্দি অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ভুলভাবে নেগেটিভ ফল আসতে পারে। তিনি বলেন উপসর্গের নিরাময় যদি না হয় এবং দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়, সেক্ষেত্রে ডাক্তার দেখানো সমীচীন হবে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮১: যদি কেউ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন, তাহলে কীভাবে বুঝবেন (৩) হালকা উপসর্গ বা উপসর্গ না থাকার ক্ষেত্রে কী করা উচিত।

উত্তর-৩৮১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সাধারণ সর্দি-জ্বর ছড়িয়ে পড়ার এই সময়ে জাপানে এখন ওমিক্রন ধরনের করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঠাণ্ডা লাগার হালকা উপসর্গ দেখা দিলে এবং সেটা কোভিড-১৯ কি না তা জানতে চাইলে আমাদের কী করা দরকার? হালকা উপসর্গ বা কোন উপসর্গ না থাকার সময় কী করা উচিত এবারে আমরা তা নিয়ে আলোচনা করব।


কেন্দ্রীয় সরকার যেসব এলাকায় বিশেষ করে সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে বিনামূল্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় সরকারদের জানিয়েছে। এমনকি যাদের মধ্যে কোন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না তাদের জন্যেও এই পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। অন্যদিকে, স্থানীয় সরকার ইতিমধ্যেই যেসব লোকজন টিকা নিতে পারবেন না তাদের জন্য বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা রেখেছে। তবে এই পরীক্ষাগুলো যাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, শুধুমাত্র তাদের জন্য।

কারোর শরীরে রোগের হালকা উপসর্গ দেখা দেয়ার ক্ষেত্রে কী করা উচিত?

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল হালকা জ্বর, ক্লান্তিভাব এবং অন্য কোন কারণে শরীর ভাল না থাকলে চিকিৎসা স্থাপনাগুলোতে পরামর্শ করার জন্য লোকজনকে আহ্বান জানাচ্ছে।

কামেদা মেডিকাল সেন্টারের ওৎসুকা ইয়োশিহিতো হলেন করোনাভাইরাস পরীক্ষা বিষয়ক নির্দেশিকা তৈরি করে থাকা বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য। তিনি বলেন, গলা ব্যাথা, সর্দি, জ্বর, মাথাব্যাথা, ক্লান্তির মত সাধারণ ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গ যাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে তাদের পরীক্ষা করা উচিত।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮০: যদি কেউ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন, তাহলে কীভাবে বুঝবেন (২) ওমিক্রন ধরনের উপসর্গ।

উত্তর-৩৮০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সাধারণ সর্দি-জ্বর ছড়িয়ে পরার এই সময়ে জাপানে এখন ওমিক্রন ধরনের করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঠাণ্ডা লাগার হালকা উপসর্গ দেখা দিলে এবং সেটা কোভিড-১৯ কি না তা জানতে চাইলে আমাদের কী করা দরকার? ওমিক্রন ধরনের উপসর্গগুলো কেমন, এবারে আমরা তা নিয়ে আলোচনা করব।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখে বৈঠকে মিলিত হয় এবং ১ জানুয়ারির মধ্যে যাদের ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে, ওকিনাওয়া জেলার সেরকম ৫০ জন রোগীর অবস্থা সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে অবগত হয়।

প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে ৭২ শতাংশ রোগী ৩৭.৫ ডিগ্রি কিংবা এর চাইতে বেশি মাত্রার জ্বরে ভুগেছেন, অন্যদিকে ৫৮ শতাংশের কাশি ছিল এবং ৫০ শতাংশ ক্লান্ত বোধ করেছেন। এতে আরও বলা হয়েছে যে ৪৪ শতাংশের গলা ব্যথা ছিল, ৩৬ শতাংশের নাক বন্ধ হয়ে আসছিল কিংবা সর্দিতে তারা ভুগেছেন, ৩২ শতাংশের মাথা ব্যথা এবং ২৪ শতাংশের গ্রন্থিতে ব্যথা ছিল। রোগের লক্ষণ যাদের মধ্যে দেখা গেছে, এদের ৮ শতাংশ বিবমিষায় ভুগেছেন কিংবা বমি করেছেন, ৬ শতাংশের নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল এবং ২ শতাংশ স্বাদ কিংবা ঘ্রাণ হারিয়ে ফেলার সমস্যায় ভুগেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী এদের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশের বেলায় রোগের উপসর্গ দেখা যায়নি।

প্যানেলের প্রধান এবং জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ওয়াকিতা তাকাজি বলেছেন, কোভিড-১৯ রোগীদের বেলায় প্রায়শই পরিপাক সম্পর্কিত কিংবা স্বাদ ও ঘ্রাণ হারিয়ে ফেলার উপসর্গ দেখা দেয়ার কথা বলা হলেও ওকিনাওয়ার প্রতিবেদন আভাস দিচ্ছে যে ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত হওয়ার বেলায় সেরকম দেখা যায় না। তিনি বলেছেন ওমিক্রনের উপসর্গ অনেকটা হচ্ছে সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো একই ধরনের।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৯: যদি কেউ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন, তাহলে কীভাবে বুঝবেন (১) অভিন্ন কোভিড-১৯ উপসর্গ।

উত্তর-৩৭৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। সাধারণ সর্দি-জ্বর লাগার জন্য শীতকাল হচ্ছে বিশেষ সময়। লোকজন হয়তো উদ্বিগ্ন হতে পারেন যখন তাদের ঠাণ্ডার হালকা উপসর্গ দেখা দেবে। তারা ভাবতে পারেন তাদের কোভিড-১৯ হল কিনা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের কী করা উচিত?

কোভিড-১৯’এর উপসর্গ একজনের থেকে আরেকজনের ভিন্ন হতে পারে। যখন কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবেন তাদের মধ্যে নিচের বিষয়গুলোকে অভিন্ন উপসর্গ হিসেবে দেখা যাবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও চিহ্নিত করেছে। এই উপসর্গগুলো হচ্ছে জ্বর, শুকনো কফ, অবসাদ এবং স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়া। কোন কোন রোগীর মধ্যে দেখা দিতে পারে এমন অন্যান্য উপসর্গগুলোর মধ্যে গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া, ত্বকে র‍্যাশ ওঠা বা হাত ও পায়ের আঙ্গুল বর্ণহীন হয়ে যাওয়া এবং চোখ লাল হয়ে যাওয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রও শ্বাসকষ্ট হওয়া বা অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়া, পেশী বা শরীরের ব্যথা, রক্ত জমাট বাধা বা নাক দিয়ে জল পড়া, বমি বমি লাগা এবং শীত শীত লাগাকে কোভিড-১৯’এর উপসর্গ হিসেবে উল্লেখ করে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার সময়েও একই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে?

একজন ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা ৪ঠা জানুয়ারি বলেন, আরও অনেক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, এই ধরনটি শ্বাসযন্ত্রের উপরের দিকের অংশকে আক্রান্ত করছে। এটা ঠিক অন্যান্য স্ট্রেইনের মত ফুসফুসকে আক্রান্ত করছে না এবং মারাত্মক নিউমোনিয়ার কারণ হচ্ছে না। তিনি ইঙ্গিত দেন যে, ওমিক্রনজনিত প্রদাহ প্রধানত নাক এবং গলার মধ্যেই হচ্ছে। এর থেকে এই আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে, বিরাজমান উপসর্গগুলো এক ধরন থেকে অন্য ধরনের জন্য আলাদা হতে পারে।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৮: বর্ষশেষ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে টোকিওতে (২) বাড়ছে ওমিক্রন সংক্রমণ।

উত্তর-৩৭৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বর্ষশেষ এবং নববর্ষের শুরুতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে টোকিও জানিয়েছে। ওমিক্রন ধরন থেকে সংক্রমণ ঘটছে বলে ধারণা করা গোষ্ঠীগত সংক্রমণের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এবারে আমরা স্থানীয় সম্প্রদায়ে ওমিক্রন ধরনের বিস্তারের ওপর আলোকপাত করব।

টোকিও মহানগরে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত হওয়ার প্রথম ঘটনাটি সম্পর্কে নিশ্চিত খবর পাওয়া যায় ১৬ই ডিসেম্বর। এর সপ্তাহ দুয়েক পর ২৮শে ডিসেম্বর ওমিক্রন সংক্রমণের মোট সংখ্যা বেড়ে ১৩’তে পৌঁছায়। ৩০শে ডিসেম্বর দৈনিক সংখ্যাটাই হয়ে উঠলো ৯, আর ৩রা জানুয়ারি সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫’এ।

দৃশ্যত যেখানে ওমিক্রনের গোষ্ঠীগত সংক্রমণ বলে মনে হওয়া ঘটনার সংখ্যা ২৮শে ডিসেম্বরের আগ অব্দি ছিল মাত্র একটি, সেখানে ৩০শে ডিসেম্বর ও ৩রা জানুয়ারি মিলিয়ে সংখ্যাটি পৌঁছায় ১২’তে।

টোকিও মহানগর সরকারের একজন কর্মকর্তা জানান, বড়দিনের পর ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা চোখে পড়ার মত বেড়েছে এবং বর্ষশেষ ও নববর্ষ, এই সময়ের মধ্যে সম্ভবত দ্রুত ছড়িয়েছে এই ধরনটি।

চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলতে হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৯শো ১৯টি শয্যা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। ৩রা জানুয়ারি পর্যন্ত যা খবর তাতে শয্যা পূর্ণ থাকার হার হচ্ছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। মহানগর সরকারের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর পক্ষে সুষ্ঠু ভারসাম্য বজায় রেখে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী ও অন্যান্য ব্যধিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে ওমিক্রন যদি আরও ছড়ায়, হাসপাতালে শয্যার অভাব দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৭: বর্ষশেষ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে টোকিওতে (১) সংক্রমণ বৃদ্ধির গতি ঊর্ধ্বমুখী।

উত্তর-৩৭৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বর্ষশেষ এবং নববর্ষের শুরুতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে টোকিও জানিয়েছে। ওমিক্রন ধরন থেকে সংক্রমণ ঘটছে বলে ধারণা করা গোষ্ঠীগত সংক্রমণের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। আমরা ২৯শে ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সংক্রমণ কী হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তার উপর আলোকপাত করব।

ডিসেম্বর মাসের ২৯ তারিখ নতুন ভাবে ভাইরাসে সংক্রমিতের সংখ্যা ৭৬ বলে টোকিও নিশ্চিত করেছিল। তবে পরপর ৭৩ দিন ধরে দৈনিক নতুন সংক্রমণের হার ৫০ এর নীচে থাকার রেকর্ড ঐ দিন শেষ হয়ে যায়। ডিসেম্বর মাসের ৩০ তারিখ নতুন ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৪ এবং ৩১ তারিখ ছিল ৭৮, যা হল গতমাসের সর্বোচ্চ। সবকটি দিনেই দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা এক সপ্তাহ আগের একই দিনের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণে গিয়ে দাঁড়ায়।

নতুন বছরের শুরুতে দৈনিক হার আরও বেশি বৃদ্ধি পায়। পয়লা জানুয়ারি নিশ্চিত ভাবে জানা সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৭৯ এবং ২রা জানুয়ারি এই সংখ্যা ছিল ৮৪। জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ এই সংখ্যা এক ধাপ বৃদ্ধি পেয়ে ১০৩-এ গিয়ে দাঁড়ালে ২০২১ সালের ৮ই অক্টোবরের পর থেকে এই প্রথম দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যায়। জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখ এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৩৯০এ। টোকিও মেট্রোপলিটন সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন যে বৃদ্ধির হারে গতি সঞ্চারিত হচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষ সংকটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এই সময়ের মধ্যে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণের সংখ্যা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। ৩রা জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় দিনের মধ্যে সংক্রমিত ৪৮৪ জনের মধ্যে ১৭৫ জন বা মোট সংখ্যার ৩৬ দশমিক ২ শতাংশ ব্যক্তি কিভাবে সংক্রমিত হয়েছেন তা সনাক্ত করা গেছে। এদের মধ্যে ১০১ জন বা বেশিরভাগই পরিবারের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন, যা হল ৫৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এর পরে রয়েছে ১২ শতাংশ ব্যক্তি যারা কর্মক্ষেত্রে সংক্রমিত হয়েছেন। ৯ দশমিক ১ শতাংশ বাইরে খাওয়ার সময় এবং ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাইরাস থেকে সংক্রমিত হয়েছেন।

এই তথ্যগুলো জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৬: করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন সম্পর্কে আমরা এখন পর্যন্ত যা জানি (২) আমাদের অবশ্যই ওমিক্রনের তীব্রতা সম্বন্ধে সতর্ক থাকতে হবে।

উত্তর-৩৭৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এই ধারাবাহিকে, আমরা সর্বশেষ করোনাভাইরাসের উদ্বেগজনক ধরন ওমিক্রন সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যা জানি তার দিকে নজর দেব। এবারে ওমিক্রনের তীব্রতার উপর আলোকপাত করা হবে।

এরকম অভিমত রয়েছে যে যদি কোনো ব্যক্তি ওমিক্রন ধরনে সংক্রমিত হন তাহলে এর উপসর্গগুলো হয়তো পূর্ববর্তী ধরনগুলোর তুলনায় কম গুরুতর হতে পারে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে যে ওমিক্রনের তীব্রতা সম্পর্কে আমাদের সতর্কতা অব্যাহত রাখা উচিত।

ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই ধরনের আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীর কোনো উপসর্গ নেই বা হালকা উপসর্গ রয়েছে।

মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র জানাচ্ছে, “এর আগের উপাত্ত থেকে এই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল যে, আগের কোনো ধরন থেকে এই ধরন হয়তো কম মারাত্মক। তবে, ক্লিনিকাল তীব্রতা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য উপাত্ত এখনও সীমিত। এমনকি মারাত্মকভাবে আক্রান্ত সংক্রমণের অনুপাত আগের ধরনগুলোর থেকে কম হলেও, সংক্রমণের সংখ্যার সম্ভাব্য বৃদ্ধির সাথে সাথে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত চূড়ান্ত লোকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়তে পারে।”

এছাড়াও, সংক্রমণ বাড়ার সময় এবং মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়া বা মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার সময়ের মধ্যে একটা সময়ের ব্যবধান রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের ডিসেম্বর মাসের ২১ তারিখে প্রকাশিত এক সাপ্তাহিকে জানায়, এখনও ওমিক্রনের ক্লিনিকাল তীব্রতার উপর উপাত্ত সীমিত। এরপর তারা জানায়, “যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লোকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং সংক্রমণের সংখ্যা দ্রুত বাড়ার কারণে এমন সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে যে, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা হয়তো ভেঙ্গে পড়তে পারে।”

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৫: করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন সম্পর্কে আমরা এখন পর্যন্ত যা জানি (১) নানা প্রতিবেদনে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে এটি উচ্চ সংক্রামক।

উত্তর-৩৭৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন হচ্ছে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ উদ্বেগজনক ধরন। যুক্তরাষ্ট্র এবং যেসব ইউরোপীয় দেশে স্থানীয়ভাবে লোকজনের মধ্যে এই ধরনটি ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে ওমিক্রন দ্রুত প্রধান ধরন হিসেবে ডেল্টাকে প্রতিস্থাপিত করছে। জাপানেও ওমিক্রনের কম্যুনিটি সংক্রমণ বা স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া নিশ্চিত করা হয়েছে। আমাদের এই নতুন ধারাবাহিকে ওমিক্রন ধরন সম্পর্কে আমরা ঠিক কতটুকু জানি, সেসম্পর্কে আলোকপাত করা হবে।

সারা বিশ্ব থেকে আসা নানা প্রতিবেদনে এই আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে এর আগের ধরনগুলোর তুলনায় ওমিক্রন হচ্ছে সবচেয়ে সংক্রামক ধরন। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশগুলোতে ওমিক্রন দ্রুত প্রধান স্ট্রেইনে পরিণত হচ্ছে, যেখানে এর আগে পর্যন্ত প্রায় সবগুলো সংক্রমণের জন্যই করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনই দায়ী ছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’র ভাষ্যানুযায়ী, কম্যুনিটি সংক্রমণ ঘটা দেশগুলোতে দেড় থেকে তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে।
গত ২০শে ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানোম ঘেব্রেইসুস বলেন, ওমিক্রন যে ডেল্টা ধরন থেকে উল্লেখযোগ্য হারে দ্রুত ছড়াচ্ছে, তার ধারাবাহিক প্রমাণ এখন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, টিকা নেয়া এবং কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা লোকজনেরও সংক্রমিত বা পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৪: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (৭) গবেষণার ফলাফল আভাস দিচ্ছে টিকার তৃতীয় ডোজ উচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষা দেবে – চতুর্থ অংশ।

উত্তর-৩৭৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুন দেখা দেওয়া ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে টিকার বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর হতে পারে? এই প্রশ্নে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের সপ্তম পর্বটি এবারে পেশ করছি।

মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি মডার্না জানায় গবেষণাগারে পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে তাদের তৈরি করা করোনাভাইরাস টিকার বুস্টার ডোজ ওমিক্রন মোকাবিলায় উচ্চ মাত্রায় কার্যকর হতে পারে।

২০ ডিসেম্বর কোম্পানির প্রকাশিত গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল সংক্রান্ত রিপোর্টে বলা হয় যারা টিকার দুটো ডোজ নিয়েছেন, তাদের দেহে ওমিক্রন রোধের অ্যান্টিবডির অভাব থাকে।

এই কোম্পানির অনুমোদিত ৫০ মাইক্রোগ্রামের বুস্টার ডোজ জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশে প্রয়োগ করে দেখা গেছে এতে ওমিক্রনকে প্রতিরোধ করতে পারার মতো অ্যান্টিবডির পরিমাণ, বুস্টার ডোজ নেওয়ার আগের মাত্রার চেয়ে প্রায় ৩৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বুস্টার ডোজের মাত্রা বাড়িয়ে ১০০ মাইক্রোগ্রাম করে নেওয়ার পর দেখা যায় অ্যান্টিবডির পরিমাণ, প্রাক্‌-বুস্টার মাত্রার চেয়ে মোটামুটি ৮৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, মডার্নার টিকার প্রথম দুটি ডোজের প্রত্যেকটি হয় ১০০ মাইক্রোগ্রামের।

মডার্না বলছে, বর্তমানে ব্যবহৃত টিকার বুস্টার ডোজ ওমিক্রনের বিরুদ্ধে প্রথম ধাপের প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তুলবে। কোম্পনিটি বলছে, সুনির্দিষ্টভাবে ওমিক্রন মোকাবিলার টিকা উন্নয়নের কাজ তারা চালিয়ে যাবে ঠিকই, তবে এ মুহূর্তে সেরকম টিকার প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করে না।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭৩: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (৬) গবেষণার ফলাফল আভাস দিচ্ছে টিকার তৃতীয় ডোজ উচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষা দেবে – তৃতীয় অংশ।

উত্তর-৩৭৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুনভাবে দেখা দেয়া ওমিক্রন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকার বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর, সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে সেই প্রশ্ন আমরা বিশেষজ্ঞদের করেছিলাম। ধারাবাহিক আয়োজনের ষষ্ঠ পর্বে এবারে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে তার দিকে নজর দেব।

হোয়াইট হাউসের প্রধান চিকিৎসা উপদেষ্টা এন্থনি ফাউচি ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ বলেছিলেন যে বর্তমানে পাওয়া যাওয়া টিকার বুস্টার ডোজ ওমিক্রন রূপের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পরিমাণে কাজ করে।

ফাউচি বলেন যে ফাইজার-বিয়োনটেক বা মডার্না উন্নয়ন করা টিকার দুটি ডোজ নেয়া থাকলেও তা ভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ ঠেকাতে এবং গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া রোধে একেবারেই কার্যকর নয়। তবে সম্প্রতি চালানো একাধিক গবেষণা থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বুস্টার ডোজ নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডির মাত্রা যথেষ্ট পরিমাণ বৃদ্ধি করছে যার ফলে নতুন রূপের বিরুদ্ধে তা আরও বেশি সুরক্ষা প্রদান করতে পারছে বলে তিনি আরও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন এই মুহুর্তে ভাইরাসের নতুন কোন এক ধরনের বিষয়টি চিন্তা করে নির্দিষ্ট কোন টিকার প্রয়োজন নেই বলেই তার মনে হয়। ফাইজার এবং মডার্না ঘোষণা দিয়েছে যে ওমিক্রন ধরনকে বিশেষভাবে লক্ষ্য স্থির করে তারা নতুন টিকার উন্নয়ন করছে। টিকা নেয়ার জন্য এবং বর্তমানে যে টিকা পাওয়া যাচ্ছে তার বুস্টার ডোজ নেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লোকজনের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান ফাউচি।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭২: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (৫) গবেষণার ফলাফল আভাস দিচ্ছে টিকার তৃতীয় ডোজ উচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষা দেবে – দ্বিতীয় অংশ।

উত্তর-৩৭২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুনভাবে দেখা দেয়া ওমিক্রন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকার বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর, সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে সেই প্রশ্ন আমরা বিশেষজ্ঞদের করেছিলাম। ধারাবাহিক আয়োজনের পঞ্চম পর্বে এবারে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া ফলাফলের দিকে নজর দেব।

আফ্রিকা স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক অ্যালেক্স সিগালের নেতৃত্বে পরিচালিত ল্যাবরেটরি গবেষণায় এরকম বলিষ্ঠ আভাস দেয়া হয়েছে যে ফাইজার-বিয়োনটেকের টিকার মধ্যে দিয়ে লাভ করা অ্যান্টিবডি রোগ প্রতিরোধ নিরাপত্তা ওমিক্রন ধরন যথেষ্ট মাত্রায় কমিয়ে দেয়। টিকা নিয়েছেন সেরকম ১২ জনের থেকে সংগ্রহ করা রক্তের প্লাজমা ব্যবহার করে চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে যে ভাইরাসের ধরনকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে টিকা থেকে পাওয়া অ্যান্টিবডি সক্ষমতা ৪০ গুণ হ্রাস পায়। ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক হিসাবে দেখা যায় ওমিক্রন ধরনের উপসর্গমূলক বা অভিলাক্ষণিক সংক্রমণের বিরুদ্ধে টিকা সম্ভবত কেবল ২২.৫ শতাংশ কার্যকর।

গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা যায়, সংক্রমিত যারা হয়েছেন এবং টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন সেরকম ছয় জনের রক্তের নমুনার মধ্যে পাঁচ জনের বেলায় অ্যান্টিবডি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার তুলনামূলক উচ্চ হার দেখা গেছে। ইনস্টিটিউটের মুখপাত্র বলছেন, তৃতীয় ডোজ নেওয়ার মধ্যে দিয়ে মানুষের অ্যান্টিবডি মাত্রা আরও সতেজ করে তোলা এবং মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়া এড়িয়ে যাওয়ার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭১: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (৪) গবেষণার ফলাফল আভাস দিচ্ছে টিকার তৃতীয় ডোজ উচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষা দেবে – প্রথম অংশ।

উত্তর-৩৭১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুনভাবে দেখা দেয়া ওমিক্রন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকার বুস্টার ডোজ কতটা কার্যকর, সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে সেই প্রশ্ন আমরা বিশেষজ্ঞদের করেছিলাম। এবারে রয়েছে এই ধারাবাহিক আয়োজনের চতুর্থ পর্ব।

মার্কিন বৃহৎ ওষুধ কোম্পানি ফাইজার এবং তাদের জার্মান অংশীদার বিয়োনটেক ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখে ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে তাদের টিকা কতখানি কার্যকর সে সংক্রান্ত প্রাথমিক সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে, টিকার একটি তৃতীয় ডোজ প্রথম দুই ডোজের তুলনায় ২৫ গুণ অ্যান্টিবডি বাড়াতে পারে যা মূল স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে একই পর্যায়ের সুরক্ষা দিতে পারে। সমীক্ষায়, কোম্পানি দু’টি ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির পর্যায় কতখানি নিষ্ক্রিয় করতে পারে তা দেখার জন্য তৃতীয় ডোজ নেয়ার এক মাস পরে লোকজনের কাছ থেকে রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখে। তারা দেখতে পায়, মূল স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার তিন সপ্তাহ পরে লোকজনের দেহে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডির পর্যায় ছিল তার প্রায় সমকক্ষ। তারা জানাচ্ছে, টিকার একটি তৃতীয় ডোজ ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে একটি উচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষা দিতে পারবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

কোম্পানি দু’টি এও জানাচ্ছে, রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করা কোষগুলোর লক্ষ্য হিসাবে সনাক্ত স্পাইক প্রোটিনের অংশবিশেষের ৮০ শতাংশ ওমিক্রন ধরনের রূপান্তর দ্বারা প্রভাবিত হয় না। তারা জানাচ্ছে, এর অর্থ হচ্ছে টিকার দু’টি ডোজ এখনও মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করছে। তারা আরও জানাচ্ছে, তৃতীয় ডোজ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করা কোষের পর্যায়কে বাড়ায় এবং কোভিড-১৯ রোগীদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া রোধে সাহায্য করে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৭০: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (৩) ভাইরাসকে আক্রমণকারী ইমিউন কোষ লোকজনের গুরুতর অসুস্থ হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে।

উত্তর-৩৭০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের চলতি ধারাবাহিকে, আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাইছি যে নতুন আবির্ভূত করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে টিকার বুস্টার ডোজ ঠিক কতটা কার্যকর হতে পারে। এবার ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে আমরা ইমিউন বা শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলোর কাজের উপর আলোকপাত করবো।

ভাইরাস এবং টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে অত্যন্ত অভিজ্ঞ কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুও উল্লেখ করেন যে ওমিক্রন ধরনের স্পাইক প্রোটিনে ৩০টি পরিবর্তন ঘটলেও সেটি পুরো স্পাইক প্রোটিনের মাত্র ৩ শতাংশে ঘটেছে। উল্লেখ্য, এই প্রোটিন মানুষের কোষে লেপ্টে থেকে সেগুলোকে আবদ্ধ করে ফেলে। সেকারণে তিনি এই যুক্তি তুলে ধরছেন যে ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে টিকা পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকাগুলোর কার্যকারিতা হয়তো কিছু পরিমাণে কমতে পারে, তবে সংক্রমিত ব্যক্তির গুরুতর অসুস্থ হওয়া রোধে এগুলোর সক্ষমতা খুব একটা কমবে না।

নাকাইয়ামার ভাষ্যানুযায়ী, অ্যান্টিবডির স্তর বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরে প্রবেশ করা ভাইরাসকে আক্রমণকারী ইমিউন কোষের সক্ষমতা বৃদ্ধির সামর্থ্যও টিকার বুস্টার ডোজগুলোর রয়েছে। তিনি বলেন, এই পরিবর্তনগুলোর ভাইরাসকে অ্যান্টিবডি এড়িয়ে যেতে সাহায্য করার সম্ভাবনা থাকলেও, বুস্টার ডোজের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনকারী ইমিউন কোষগুলোর দেয়া সুরক্ষা উচ্চ পর্যায়ে অক্ষুণ্ণ রাখা যাবে। আর এটি শেষ পর্যন্ত গুরুতর রোগীর সংখ্যাই কমাবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৯: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (২) টিকার প্রাইম-বুস্ট কর্মকৌশল

উত্তর-৩৬৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন দেখা দেওয়ার মধ্যে লোকজনকে টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। এমনই এক পটভূমিতে আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম বুস্টার ডোজ ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর হবে বলে ধারনা। এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বটি এবারে পেশ করছি।

জাতীয় মিয়ে হাসপাতালের ক্লিনিকাল রিসার্চের প্রধান তানিগুচি কিইয়োসু জাপান সরকারের করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্যও। তিনি বলছিলেন টিকার তৃতীয় ডোজ শুধু যে শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়াবে তাই নয়, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মেমরি বা স্মৃতিশক্তি আরও বাড়ানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

টিকার প্রথম ডোজ যাকে প্রাইম বলে উল্লেখ করা হয়, সেটি যখন দেওয়া হয় তখন শরীর ভাইরাসকে জন্মগত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য একটি শত্রু হিসেবে এবং আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে শনাক্ত করার ক্ষমতা অর্জন করে। এরপর টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাতে টার্গেট শত্রু সম্পর্কে মেমরি বা চিনে রাখার ক্ষমতা তৈরি হয়। বুস্টার ডোজ নামে পরিচিত টিকার তৃতীয় ডোজের উদ্দেশ্য হোল এই মেমরিকে শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী করে তোলা। তার মানে এই ‘প্রাইম এবং বুস্ট’ কর্মকৌশলের লক্ষ্য হচ্ছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ‘শত্রু’ সম্পর্কে আরও ওয়াকিবহাল করে তোলা এবং শত্রুকে চিনে রাখার শক্তি আরও বাড়ানো।

তানিগুচি বলেন টিকার সাহায্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট বাড়িয়ে তোলার এই কৌশলের উদ্দেশ্য যেহেতু গুরুতর উপসর্গ রোধ করা, তাই ওমিক্রন সহ করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরনগুলোর সবকটির বিরুদ্ধেই এটি কার্যকরী হওয়া উচিত। তিনি বুস্টার ডোজ দেওয়ার পদক্ষেপকে আরও ত্বরান্বিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৮: টিকার বুস্টার ডোজ এবং করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন (১) অ্যান্টিবডি বৃদ্ধি করা হলে তা ভাইরাসের নতুন ধরনের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করবে।

উত্তর-৩৬৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বর্তমানে যে ধরনের করোনাভাইরাস টিকা দেয়া হচ্ছে তা ওমিক্রন রূপের বিরুদ্ধে খুব একটা কার্যকর নয় বলে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাইরাসের নতুন এই রূপ বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বিস্তার লাভ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেসব লোকজন ইতোমধ্যেই টিকার দুটি ডোজ পেয়ে গেছেন তাদেরকে বুস্টার ডোজ দেয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে এবং সেই সময়েই এই উদ্বেগ দেখা দিল। বুস্টার ডোজে যে ধরনের টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে তা হল প্রথম দুটি টিকার মতই। এতদিন পর্যন্ত ভাইরাসের যে রূপের প্রকোপ ছিল সেটি চিন্তা করেই এই টিকা তৈরি করা হয়েছে। তৃতীয় ডোজ নেয়ার প্রয়োজন এখনো কেন রয়েছে এবং ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত এই টিকা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কতটা, সে বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেছি। এবার এই বিষয়ের উপর তৈরি আমাদের ধারাবাহিকের প্রথম পর্ব উপস্থাপন করবো।

ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের অনেকগুলো রূপান্তর ঘটেছে। হোস্ট সেল বা পোষক কোষগুলোকে সংক্রমিত করতে স্পাইক প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ এক ভুমিকা পালন করে থাকে। বিভিন্নবার রূপান্তরের অর্থ হল নিরপেক্ষকারী অ্যান্টিবডির জন্য স্পাইক প্রোটিনগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে সংক্রমণ রোধ করা আরও কঠিন হতে পারে।

তানিগুচি কিইয়োসু হলেন জাতীয় মিয়ে হাসপাতালের ক্লিনিকাল রিসার্চ বিভাগের প্রধান এবং করোনাভাইরাস সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জাপান সরকার গঠিত প্যানেলের একজন সদস্য। তিনি বলেন ওমিক্রন ধরনের জন্য টিকা কম কার্যকর হলেও বুস্টার ডোজ নেয়াটা অর্থপূর্ণ হবে। তানিগুচি বলেন, উদাহরণস্বরূপ ভাইরাসের রূপান্তরের ফলে নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা এক চতুর্থাংশে পরিণত হলেও বুস্টার ডোজ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুললে অ্যান্টিবডির সংখ্যা যদি চারগুণ বৃদ্ধি পায় তবে আমরা একই পর্যায়ের সুরক্ষা পেতে সক্ষম হবো। তিনি বলতে চাইছেন যে তৃতীয় ডোজ নেয়ার পর তা মোট সংখ্যক অ্যান্টিবডির পরিমাণ বৃদ্ধি করবে যার ফলে ওমিক্রন ধরনের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের দেহে অনেক বেশি সংখ্যক অ্যান্টিবডি থাকবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৭: ওমিক্রন মোকাবিলায় ওষুধ কি কার্যকর হবে? (৪) যেসব ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া চাপা দিয়ে রাখে, “ওমিক্রনের বিরুদ্ধে সেগুলোর কাজ করার কথা”।

উত্তর-৩৬৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ওমিক্রন ধরনের ভাইরাস বিস্তৃত হওয়া বিশ্ব জুড়ে নিশ্চিত করা হচ্ছে। নতুন এই ধরনের বিরুদ্ধে ওষুধ কার্যকর হবে কি? বিভিন্ন ধরনের ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের আমরা প্রশ্ন করেছিলাম। বিষয়টির উপর আমাদের ধারাবাহিক আয়োজনের এটা হচ্ছে চতুর্থ পর্ব।

ডেক্সামেথাসন এবং ব্যারিসিটিনিব মাত্রাতিরিক্ত রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া - ভাইরাসের বৃদ্ধি পাওয়া সুনির্দিষ্ট একটি পরিমাণ পর্যন্ত চাপা দিয়ে রাখে। ফলে মনে করা হয় যে ভাইরাসের রূপান্তর বিবেচনায় না রেখে কোভিড-১৯’এর বিরুদ্ধে এগুলো কার্যকর।

জাপানের আইচি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোরিশিমা ৎসুনেও বলেছেন, এটা হতে পারে না যে এন্টিবডি ওষুধ নতুন ধরনের বিরুদ্ধে একেবারেই কার্যকর নয়। তবে তিনি বলেছেন যেসব রোগী এই চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের কাছ থেকে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন ধরনের বিরুদ্ধে ওষুধের কার্যকারিতা কোন মাত্রা পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে তার পরিষ্কার ছবি পাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

উদ্ভাবনের পর্যায়ে থাকা খাওয়ার ওষুধ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, এসব ওষুধ ভাইরাস কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে বলে আগের বিভিন্ন ধরনের বেলায় যেমন দেখা গেছে, ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধেও এগুলোর সেভাবে কাজ করার কথা। মোরিশিমা বলেছেন প্রাথমিক পর্যায়ে এন্টিবডি ওষুধ হিসেবে এগুলো অনুমোদন পেলে বর্তমান কৌশল এসব ওষুধ ব্যবহারের আহ্বান জানাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে এমন কি ওমিক্রন ধরনের বেলায় ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস পেলেও এই কৌশলের কোন বদল হবে না।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৬: ওমিক্রন মোকাবিলায় ওষুধ কি কার্যকর হবে? (৩) আন্তঃকোষীয় বৃদ্ধি রোধে ওষুধ কি ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে সমান কার্যকর হবে?

উত্তর-৩৬৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সারা বিশ্ব থেকেই এখন করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনে নতুনভাবে সংক্রমিত হওয়ার নিশ্চিত খবর পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ এই ধরনটির বিরুদ্ধে ওষুধ কি কার্যকর হবে? ওমিক্রনে সংক্রমণের চিকিৎসায় বিভিন্ন ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা কয়েকজন বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চেয়েছি। এবারে উপস্থাপন করছি এই বিষয় নিয়ে আমাদের নতুন ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্ব।

করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসা করার জন্য উন্নয়ন করা ওষুধের মধ্যে কিছু ওষুধ হচ্ছে এই ভাইরাসের আন্তঃকোষীয় বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম সৃষ্টি রোধ করার জন্য। জাপানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলোর অনুমোদন প্রাপ্ত রেমডেসিভির হচ্ছে এধরনের একটি ওষুধ যা মাঝারি থেকে মারাত্মক উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায় শিরার মধ্যে ফোঁটায় ফোঁটায় ঢুকানো হয়।

প্রধানত হালকা ধরনের উপসর্গ থাকা রোগীরা বাড়িতে বসে সেবন করতে পারা ওষুধের উন্নয়নও এগিয়ে চলেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কিন ওষুধ কোম্পানি মার্ক’এর উদ্ভাবন করা মলনুপিরাভির, মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের উদ্ভাবন করা প্যাক্সলোভিড এবং একই ধরনের মুখে খাওয়ার একটি ওষুধ যেটি বর্তমানে একটি জাপানি ওষুধ কোম্পানি শিয়োনোগি উন্নয়ন করছে। এগুলোর মধ্যে মলনুপিরাভির’এর জন্য কোম্পানিটি জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমোদনের আবেদন করেছে এবং প্যাক্সলোভিড’এর জন্য এর কোম্পানি জরুরি ব্যবহারের জন্য মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের কাছে আবেদন করেছে।

আইচি মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র মোরিশিমা ৎসুনেও বলছেন, যেহেতু এইসব চিকিৎসা পদ্ধতি মানব কোষের মধ্যে প্রবেশ করা ভাইরাসকে লক্ষ্য ধরছে, তাই এইসব ওষুধের ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধেও একইরকম কার্যকর হওয়া উচিত।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৫: ওমিক্রন মোকাবিলায় ওষুধ কি কার্যকর হবে? (২) মানব কোষ আক্রমণ প্রতিরোধে নেয়া চিকিৎসার কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা সংক্রান্ত উদ্বেগ।

উত্তর-৩৬৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সারা বিশ্ব থেকেই এখন করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনে নতুনভাবে সংক্রমিত হওয়ার নিশ্চিত খবর পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ এই ধরনটির বিরুদ্ধে কি ওষুধ কার্যকর হবে? ওমিক্রনে সংক্রমণের চিকিৎসায় নানা ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা কয়েকজন বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চেয়েছি। এবারে উপস্থাপন করছি এই বিষয় নিয়ে আমাদের নতুন ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্ব।

জাপানে অনুমোদন পাওয়া ওষুধগুলোর মধ্যে এন্টিবডি মিশ্রণ এবং সোট্রোভিমাবকে এন্টিবডি ওষুধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এগুলো স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য ধরে নিয়ে করোনাভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করে। এটি ভাইরাসের পৃষ্ঠে থাকা প্রসারিত অংশ যা ভাইরাসটি মানুষের দেহে প্রবেশের অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করে। এই ওষুধসমূহকে হালকা উপসর্গ থাকা রোগীদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়া রোধে ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপ বা শিরার ভেদ করে প্রয়োগ করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ওমিক্রন ধরনের স্পাইক প্রোটিনে ৩০ বারের মত পরিবর্তন ঘটেছে এবং এটি ভাইরাসটির মানব কোষে প্রবেশে বাধা দেয়ার ক্ষেত্রে এই ওষুধের কার্যকারিতাকে হ্রাস করতে পারে।

আইচি চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোরিশিমা ৎসুনেও’র ভাষ্যানুযায়ী, এন্টিবডি ওষুধ স্পাইক প্রোটিনকেই লক্ষ্য হিসেবে ধরে নেয়, তাই তিনি মনে করেন যে সর্বশেষ এই পরিবর্তন এই চিকিৎসার কার্যকারিতার উপরে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। একইসাথে তিনি এটিও বলছেন যে যদি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হিসেবে ধরে নেয়া স্পাইক প্রোটিনে এই পরিবর্তন না ঘটে, তাহলে ওষুধটির কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ থেকে যেতে পারে।

সোট্রোভিমাব অবশ্য ওমিক্রন ধরনের বিরুদ্ধে কাজ করে বলে মনে করা হচ্ছে কারণ এই ওষুধের উদ্ভাবনকারী কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ধরনটির অনুরূপ ভাইরাসের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এর কার্যকারিতা খুঁজে পেয়েছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৪: ওমিক্রন মোকাবিলায় ওষুধ কি কার্যকর হবে? (১) শিরার মধ্য দিয়ে প্রয়োগের ওষুধ বা ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপ এবং বড়ির মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর-৩৬৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে সংক্রমিত হওয়ার নিশ্চিত খবর এখন পৃথিবীর বহু দেশ থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। এই নতুন ধরনটির বিরুদ্ধে ওষুধ কি কার্যকর হবে? ওমিক্রনে সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসায় ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম আমরা। এইসব ওষুধের মধ্যে বর্তমানে ব্যবহৃত ওষুধ এবং উন্নয়নাধীন ওষুধ, দুইই অন্তর্ভুক্ত। এ নিয়ে আমাদের নতুন ধারাবাহিকের প্রথম পর্বটি উপস্থাপন করছি।

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির চিকিৎসায় তিন রকম ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ভাইরাসকে মানুষের শরীরের কোষের মধ্যে প্রবেশে বাধা দেওয়ার একটা ওষুধ। দ্বিতীয় ওষুধটি হচ্ছে কোষের মধ্যে প্রবেশ করা ভাইরাসের বিস্তার লাভে বাধা দেওয়ার জন্য, আর তৃতীয় ওষুধটির কাজ হল প্রতিরূপ ভাইরাসকে শনাক্ত করার অত্যধিক তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ।

আইচি মেডিকেল ইউনিভার্সিটির মোরিশিমা ৎসুনেও হচ্ছেন করোনাভাইরাস চিকিৎসার একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ভাইরাসের বহির্ভাগে “স্পাইক প্রোটিন”কে লক্ষ্যবস্তু করে শিরার মধ্যে দিয়ে প্রয়োগ করা ওষুধ বা ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপের কার্যকারিতা স্পাইকের প্রলম্বিত অংশের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে বদলাতে পারে। তবে হাল্কা উপসর্গের রোগীদের জন্যে যে বড়ি, যার কাজ হল ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি রোধ করা, এই বড়ির কার্যকারিতা বেশি হবে বলে তিনি মনে করেন। এ সম্পর্কে আমরা আরও জানবো ধারাবাহিকের পরবর্তী পর্বগুলিতে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬৩: টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে জাপান (৩) পৌরসভাগুলো কী প্রস্তুত রয়েছে?

উত্তর-৩৬৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে সারা জাপান জুড়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের টিকা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে করোনাভাইরাস টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া জাপান শুরু করেছে। ধারাবাহিক এই আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আমরা টিকার তৃতীয় ডোজের বিতরণ নিয়ে তথ্য প্রদান করছি। এবারে আমরা বুস্টার ডোজ দেয়ার জন্য পৌরসভাগুলো কী ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তার উপর আলোকপাত করবো।


বাসিন্দাদের তৃতীয় ডোজ দেয়ার দায়িত্ব পড়েছে দেশ জুড়ে বড় ও ছোট আকারের শহর এবং গ্রামগুলোর উপর। অনেক মানুষকে টিকার প্রথম ডোজের বুকিং নেয়ার সময় সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল কেননা ফোন লাইনগুলো খুব ব্যস্ত ছিল এবং ইন্টারনেটেও অনেকে একসাথে ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করলে তা অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।

টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়ার সময় এই সমস্যা কিভাবে মোকাবিলার পরিকল্পনা করছে তারা সে বিষয়ে নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ টোকিওর ২৩টি ওয়ার্ডকে প্রশ্ন করেছিল এনএইচকে। জবাবে এদের মধ্যে ১৯টি ওয়ার্ড জানায় যে এই ধরনের বিভ্রান্তি রোধ করতে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বুস্টার ডোজের তারিখ, সময় এবং স্থান পূর্বনির্ধারিত থাকবে এবং এই তথ্য লোকজনের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে ছয়টি ওয়ার্ড জানিয়েছে। আটটি ওয়ার্ড জানায় যে বুকিংয়ের জন্য ফোন লাইনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট স্থানের ব্যবস্থা করা হবে যেখানে লোকজন সরাসরি গিয়ে বুকিংয়ের জন্য সহযোগিতা পেতে পারবেন।

টোকিওর এদোগাওয়া ওয়ার্ড পরিকল্পনা করছে যে বয়স্ক লোকজন যারা তাদের দ্বিতীয় ডোজ ওয়ার্ডের গণটিকাদান কেন্দ্রে নিয়েছিলেন, ঠিক আট মাস পর একই সময় এবং তারিখে তাদের তৃতীয় ডোজটিও সেখানেই পাবেন। ঐ একই কেন্দ্রে বা তার কাছাকাছি স্থানে তাদেরকে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে।
যারা তারিখ বা স্থান পরিবর্তন করতে আগ্রহী তারা টেলিফোন বা ওয়ার্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তা করতে পারবেন। ওয়ার্ডের কর্মকর্তারা বলছেন যে প্রবীণদের জড়িত করে এই প্রচেষ্টা যদি সফল হয় তবে অন্যান্য বয়সের জন্যেও তারা অনুরূপ পদক্ষেপ চালু করার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছেন।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬২: টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে জাপান (২) বুস্টার ডোজের জন্য ভিন্ন ধরনের টিকার ব্যবহার সম্ভব।

উত্তর-৩৬২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে সারা জাপান জুড়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের টিকা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে করোনাভাইরাস টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া জাপান শুরু করেছে। ধারাবাহিক এই আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আমরা টিকার তৃতীয় ডোজের বিতরণ নিয়ে তথ্য প্রদান করছি। এবারে আমরা শুরুতে নেয়া মূল টিকার চাইতে ভিন্ন ধরনের টিকার ব্যবহারের উপর আলোকপাত করবো।

আগের দুটি ডোজের চাইতে ভিন্ন ধরনের টিকা ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেছে। ফাইজারের দুটি টিকা যারা নিয়েছেন, তাদের সকলের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ফাইজার টিকা দ্রুত পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত হতে না পারায় কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে যারা তৃতীয় ডোজের জন্য বৈধ বিবেচিত হবেন, সেরকম প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের জন্য ফাইজার টিকা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে আরও যে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ টিকা নেয়ার জন্য বৈধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন, তাদের বেলায় সরকার সম্ভবত মাত্র ২ কোটির জন্য ফাইজার টিকা প্রস্তুত রাখতে সক্ষম হবে।

সেরকম অবস্থায় মন্ত্রণালয় নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে তৃতীয় ডোজের জন্য মডার্না টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আট মাস পর তৃতীয় ডোজ যারা নিতে চাইছেন, তাদের সকলের জন্য ফাইজারের টিকা পাওয়া যাবে কি না সে সম্পর্কে মন্ত্রণালয় এখনও নিশ্চিত নয়। মন্ত্রণালয় বলছে সেরকম অবস্থায় মডার্না টিকার ব্যবহার বিবেচনা করে দেখা উচিত হবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬১: টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে জাপান (১) কখন আমরা আমাদের ডোজ নিতে পারবো?

উত্তর-৩৬১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে সারা জাপান জুড়ে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের টিকা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে করোনাভাইরাস টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া জাপান শুরু করেছে। ৬৫ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী লোকদের ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়া শুরু হবে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে আমরা টিকার তৃতীয় ডোজের বিতরণ নিয়ে তথ্য প্রদান করছি।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে জানায়, নীতিগতভাবে, লোকজন যারা ন্যূনতম ৮ মাস আগে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন তারা তৃতীয় ডোজ টিকা নেয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে, সরকার সম্প্রতি ইঙ্গিত দেয়, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ টিকার মধ্যে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনা। প্রতিটি গ্রুপের লোকজনের জন্য তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়ার সময়ের বিষয়টি পৌরসভাগুলো তাদেরকে টিকা দেয়ার জন্য প্রস্তুত কিনা এবং কতগুলো টিকা আছে তার উপর ভিত্তি করে নেয়া হবে।
তৃতীয় ডোজ টিকার জন্য পৌরসভাগুলো থেকে লোকজনের কাছে টিকার কুপন পৌঁছে দেয়া হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগে জানায় যে, ডিসেম্বরে ১০ লক্ষ ৪০ হাজার স্বাস্থ্যসেবা কর্মী তাদের তৃতীয় ডোজ টিকা নেয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। জানুয়ারি মাস থেকে, ৬৫ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী লোকজন যারা তাদের প্রথম দুই ডোজ টিকা আগেই নিয়েছেন তারা তৃতীয় ডোজ টিকা নিতে পারবেন।
মার্চ মাসে, কাজের স্থানে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়া শুরু হবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়া কমপক্ষে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬০: হোক্কাইদোতে করোনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা দরকার (৪) মৌলিক ভাইরাস-রোধী পদক্ষেপ নেয়াই হচ্ছে মূল চাবিকাঠি: বিশেষজ্ঞ।

উত্তর-৩৬০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণ এখন বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তবে, তাপমাত্রা কম থাকাকালীন সারা দেশের অন্যান্য এলাকার চাইতে সর্বোত্তরের জেলা হোক্কাইদোতেই সাধারণত সবার আগে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যানুযায়ী, উত্তরের এই জেলাটির প্রবণতার উপর আমাদের ঘনিষ্ঠ নজর রাখা উচিত। এবারে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের সর্বশেষ পর্ব উপস্থাপন করব।

সরকারের বৈশ্বিক মহামারি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য এবং তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাতেদা কাযুহিরো বলছেন, ২০২০ সালে জাপানের মধ্যে হোক্কাইদো ছিল প্রথম জেলাগুলোর একটি, যেখানে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, আবহাওয়া শীতল হলে লোকজনের থেকে নির্গত ভাইরাস বাতাসে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে ভাসমান অবস্থায় থাকে। তিনি আরও বলেন, শুষ্ক আবহাওয়ায় শ্বাসনালীর ঝিল্লি আরও সহজে আঘাত প্রাপ্ত হয়, যা ভাইরাসজনিত সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। তার উপর, তাতেদা এটিও বলছেন যে শীতকালে লোকজন তুলনামূলকভাবে বেশি সময় ধরে আবদ্ধ স্থানে থাকার প্রবণতা দেখায়। তার ভাষ্যানুযায়ী, এটি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

তাতেদা বলছেন, নতুন করোনাভাইরাস এখনও সর্বত্র বিদ্যমান এবং যখন আমরা সবচেয়ে কম প্রত্যাশা করি, তখনই এগুলো বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, শীতকাল হচ্ছে সংক্রমণ বিস্তারের সবেচেয়ে উপযোগী মৌসুম এবং আমাদের সংক্রমণ-রোধী মৌলিক পদক্ষেপগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজন রয়েছে। যেমন, মাস্ক পরিধান করা, কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা এবং “থ্রি সি” নামক পরিস্থিতি এড়ানো অর্থাৎ একইসাথে বদ্ধ স্থান, জনাকীর্ণ এলাকা এবং ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৯: হোক্কাইদোতে করোনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা দরকার (৩) জেলা ভিত্তিক টাস্ক ফোর্স বলছে নতুন করে ব্যাপক সংক্রমণের লক্ষণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।

উত্তর-৩৫৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে এখন নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বছরের ন্যূনতম মাত্রায় রয়েছে। তবে তাপমাত্রা যখন কম থাকে তখন দেশের অন্য জায়গার তুলনায় সর্বোত্তরের জেলা হোক্কাইদোতে আগে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সর্বোত্তরের এই জেলাটির সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখা দরকার। হোক্কাইদোর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বটি এবারে উপস্থাপন করছি।

হোক্কাইদোর করোনাভাইরাস টাস্কফোর্স বলছে, সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ার কারণ হল গুচ্ছ সংক্রমণ। টাস্কফোর্স জানায়, সংক্রমণ যে সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে তা নয়, এবং সংক্রমণ খুব তাড়াতাড়ি বিস্তার লাভ করবে এমন কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত নেই।

টাস্কফোর্স একথাও জানায় যে নতুন সংক্রমণের অধিকাংশ ঘটনাই ঘটেছে এমন লোকজনের মধ্যে যারা টিকা নেননি।

স্বয়ং রোগী এবং এই রোগীদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হোক্কাইদোর জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর কর্মকর্তারা গুচ্ছ সংক্রমণ রোধের পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সংক্রমিত লোকের সংখ্যাবৃদ্ধি রোধ করার জন্য তারা চেষ্টা করছেন সংক্রমণের পথ খুঁজে বের করতে এবং লোকজনকে সংক্রমণ বিরোধী প্রাথমিক নিয়মগুলো মেনে চলতে আহ্বান জানাচ্ছেন।

টাস্কফোর্স বলে নতুন কেসের সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে, তাতে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আরম্ভ হয়ে যেতে পারে। তাই তারা পরিস্থিতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজরদারী অব্যাহত রাখবেন।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৮: হোক্কাইদোতে করোনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা দরকার (২) বাতাস চলাচল নিশ্চিত করা এবং বন্ধ স্থান, মানুষের ভিড় ও ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ।

উত্তর-৩৫৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণ বর্তমানে বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে বজায় থাকলেও তাপমাত্রা নিম্নে বিরাজমান থাকা অবস্থায় সারা দেশের অন্যান্য এলাকার চাইতে আগে হোক্কাইদোতে করোনাভাইরাস সাধারণত ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশে ষষ্ঠবারের মত সংক্রমণ শুরু হওয়ার সঙ্কেত এটা দিতে পারে বলে উত্তরের জেলার পরিস্থিতির উপর আমাদের ঘনিষ্ঠ নজর রাখা উচিত হবে। এবারে এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপন করব।

বন্ধ স্থানে যেখানে বাতাস চলাচল নেই এমন জায়গায় যে অনেক সহজেই করোনাভাইরাস বিস্তার লাভ করে সে বিষয়টি আমাদের সবার জানা। শীতকালে তাপমাত্রা নিম্ন থাকায় এবং বাতাস চলাচলের সুযোগ কম থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি হতে পারে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সাপ্পোরো তুষার উৎসবের সময় অভ্যন্তরীণ এক বিশ্রাম এলাকায় সময় কাটানোর পরেই লোকজন সংক্রমিত হয়েছে দেখে প্রথমবারের মত বোঝা গিয়েছিল যে বন্ধ ঘরে করোনাভাইরাস অনেক বেশি সংক্রামক। অনুরুপ আরও কয়েকটি ঘটনা দেখেও এই উপসংহারে পৌঁছানো যায়। বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে দেখেন যে বন্ধ স্থানে ভাইরাস ধারণকারী ছোট ফোঁটা কিছু সময়ের জন্য বাতাসে ঘুরে বেড়ায় এবং শ্বাস নেয়ার সময় লোকজন এতে সংক্রমিত হতে পারেন। এই ফলাফলের উপর ভিত্তি করে লোকজনকে হাত ধোয়া, জীবাণুনাশকের ব্যবহার এবং মাস্ক ছাড়া কথা না বলার পরামর্শ দেয়া হয়। লোকজনকে বন্ধ স্থান, মানুষের ভিড় এবং ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ, যাকে জাপান সরকার ‘থ্রি সি’ বলে অভিহিত করছে তা এড়িয়ে যেতে বলা হয়। বাতাস চলাচল ব্যবস্থা ভালো হলে তা সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে আনে বলেও জানা যায়।

তবে শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় লোকজন আরও বেশি ঘরের ভিতরে সময় কাটাতে পছন্দ করেন, যার ফলে বর্ষশেষ এবং নববর্ষের ছুটিতে একে অন্যের সংস্পর্শে আসার সুযোগ অনেক বেশি থাকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্যানেল বলছে যে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। বাতাস চলাচলের মত মৌলিক সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপগুলো পুরোপুরি মেনে চলার জন্য তারা লোকজনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৭: হোক্কাইদোতে করোনা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা দরকার (১) ষষ্ঠ তরঙ্গের বেলায় অগ্রবর্তী ভূমিকা হোক্কাইদো পালন করতে পারে।

উত্তর-৩৫৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণ বর্তমানে বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে বজায় থাকলেও দেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা হোক্কাইদোতে নভেম্বর মাসে দৈনিক গণনা সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাপমাত্রা নিম্নে বিরাজমান থাকা অবস্থায় সারা দেশের অন্যান্য এলাকার চাইতে আগে হোক্কাইদোতে করোনাভাইরাস সাধারণত ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশে ষষ্ঠবারের মত সংক্রমণ শুরু হওয়ার সঙ্কেত এটা দিতে পারে বলে উত্তরের জেলার পরিস্থিতির উপর আমাদের ঘনিষ্ঠ নজর রাখা উচিত হবে।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে জাপানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা হওয়া প্রথম জায়গাটি ছিল হোক্কাইদো। এরপর মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে টোকিওতে সংক্রমণের নতুন ঘটনা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

এছাড়া ২০২০ সালের শীতকালে সংক্রমণের তৃতীয় তরঙ্গ আঘাত হানার সময় চোখে পড়ার মত একটি প্রবণতা দেখা গিয়েছিল, যেটা হচ্ছে: টোকিও সহ দেশের অন্যান্য এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার দু’সপ্তাহ আগে হোক্কাইদোতে করোনাভাইরাস বিস্তৃত হয়। গত বছর অক্টোবর মাসের শেষ দিকে নতুন সংক্রমণের সাপ্তাহিক হিসাবের গড় সেখানে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। প্রায় এক মাস পর প্রবণতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠার আগে মধ্য নভেম্বরে টোকিওতে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল।

মধ্য নভেম্বরের আগে পর্যন্ত সারা দেশ জুড়ে গড় সংখ্যা পরিষ্কারভাবেই বৃদ্ধি পায় নি। নভেম্বর মাসের শুরুতে দৈনিক সংক্রমণ এক হাজারের নিচে বজায় থাকলেও নভেম্বরের শেষ দিকে সংখ্যা দুই হাজার ছুঁয়ে যায়, এবং ডিসেম্বরের শেষে চার হাজারে পৌঁছে যায়। ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি সংখ্যা আট হাজারের কাছাকাছি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনাভাইরাস মনে হয় আংশিকভাবে টিকাদান প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির কারণে চলতি বছরের শীতকালে কোন এক মাত্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তবে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে বন্ধ কোন জায়গার ভিতরে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তারা বলছেন সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গের সম্ভাব্য চিহ্ন খুঁজে পেতে হলে আমাদের উচিত হবে হোক্কাইদোর করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উপর ঘনিষ্ঠ নজর রেখে যাওয়া।

এই তথ্যগুলো ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৬: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৯) চলতি শীতে অন্য একটি বৃদ্ধির তরঙ্গ কীভাবে রোধ করা যাবে?

উত্তর-৩৫৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা সাক্ষাৎকার ভিত্তিক চলমান ধারাবাহিকের নবম পর্ব উপস্থাপন করছি। এতে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না, কিংবা কখন তা আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি।

সাক্ষাৎকারে সব বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, সংক্রমণের একটি ষষ্ঠ তরঙ্গ সম্ভবত চলতি শীতে আমাদের উপর আঘাত হানতে যাচ্ছে। অনেকেই বলেন, যদি এবং কখন একটি বৃদ্ধি ঘটবে এর পূর্বাভাসের একটি প্রধান নিয়ামক হবে লোকের সাথে লোকের সংস্পর্শ বেড়ে যাওয়া।

করোনাভাইরাসের পদক্ষেপ সংক্রান্ত একটি উপদেষ্টা প্যানেলের প্রধান, ওমি শিগেরু এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সংযুক্ত বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের চেয়ারম্যান, ওয়াকিতা তাকাজি উভয়ই বছর শেষ এবং নববর্ষের ছুটির সময়ে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলছেন যখন সামাজিক কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তারা প্রত্যেককে অব্যাহতভাবে মাস্ক পরিধান করার মতো মৌলিক সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বদ্ধ, ভিড়পূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ সৃষ্টি করা পরিস্থিতি দূর করার অনুরোধ জানাচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজি বলেন, অন্য একটি বৃদ্ধি যে ঘটবে তারা পূর্বাভাস করা সহজ নয়, কেননা বিভিন্ন বিষয় একটি জটিল উপায়ে পারস্পরিকভাবে সক্রিয় থাকে। তবে, ওয়াদা বলেন, টিকা এবং নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসার উন্নয়ন হচ্ছে বিভিন্ন বিষয় যা আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।

চলতি শীতে অন্য একটি বৃদ্ধি রোধে সংক্রমণের পঞ্চম তরঙ্গ পর্যন্ত নিজস্ব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নিজেদের গড়ে নেয়া এবং বিভিন্ন সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখাই সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৫: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৮) “মিনি টোকিও” সিমুলেশন-পর্ব ২: চিবা আসাকো, টোকিও ফাউন্ডেশন ফর পলিসি রিসার্চ।

উত্তর-৩৫৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা সাক্ষাৎকার ভিত্তিক চলমান ধারাবাহিকের অষ্টম পর্ব উপস্থাপন করছি। এতে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না, কিংবা কখন তা আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি। এই পর্বেও আমরা টোকিও ফাউন্ডেশন ফর পলিসি রিসার্চের পোস্টডক্টরাল গবেষক চিবা আসাকোর সঙ্গে কথা বলব।

চিবার ভাষ্যানুযায়ী, সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ সম্ভবত তখনই আঘাত হানবে যখন টিকাদানের প্রভাব কমে যাওয়া আর ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি একসাথে ঘটবে। তার কাছে আমাদের প্রশ্ন ছিল, পরবর্তী তরঙ্গ মোকাবিলায় আমরা কী করতে পারি।

চিবা বলেছেন, এক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি হচ্ছে সরকার অভিহিত “টিকা এবং পিসিআর প্যাকেজ”এর সর্বোত্তম ব্যবহার করা।
সরকার সামাজিক বিধিনিষেধ শিথিলকরণের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে, করোনাভাইরাসের টিকাদানের রেকর্ড এবং ভাইরাস পরীক্ষার নেতিবাচক ফলাফলের প্রমাণকে সম্মিলিতভাবে ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। চিবা টোকিওর ক্ষুদ্র সংস্করণ ভিত্তিক তার “মিনি টোকিও” মডেলে এসংশ্লিষ্ট একটি সিমুলেশন পরিচালনা করেছেন। তিনি এটি বের করেছেন যে এমনকি বাড়ির বাইরে বেরুনো টিকাপ্রাপ্ত বা পরীক্ষায় নেতিবাচক ফল আসা ব্যক্তির সংখ্যা প্রাক-মহামারি স্তরে ফিরে গেলেও, নতুন সংক্রমণের সংখ্যা সম্ভবত হ্রাস পেতে থাকবে। তবে এটি শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হবে যখন টিকা না নেয়া এবং ভাইরাস পরীক্ষা না করা বাইরে বেরুনো লোকের মোট সংখ্যা, প্রাক-মহামারি স্তরের অর্ধেকে রাখা যাবে।

চিবার ভাষ্যানুযায়ী, মানুষের চলাচলকে অভিন্নভাবে হ্রাসের মাধ্যমে সংক্রমণ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তিনি এও বলেন যে তবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং সংক্রমণ-রোধী পদক্ষেপের ভারসাম্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, এক্ষেত্রে একটি কার্যকর উপায় হল, এখনও টিকা গ্রহণ না করা ব্যক্তির মত সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি থাকা লোকজনের চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করা। তার মতে, কীভাবে “টিকা এবং ভাইরাস পরীক্ষা প্যাকেজ” কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, এটি নিয়ে সরকারের আরও আলোচনা করা উচিত।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৪: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৭) “মিনি টোকিও” সিমুলেশন: চিবা আসাকো, টোকিও ফাউন্ডেশন ফর পলিসি রিসার্চ।

উত্তর-৩৫৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা সাক্ষাৎকারভিত্তিক ধারাবাহিকের সপ্তম পর্ব উপস্থাপন করছি, সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না ও কখন তা আঘাত হানতে পারে এবং এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে - সেই প্রশ্ন যেখানে আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে রেখেছিলাম। এবারে আমরা টোকিও ফাউন্ডেশন ফর পলিসি রিসার্চের পোস্টডক্টরাল গবেষক চিবা আসাকো’র মতামত জানবো।

চিবা এই শীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সংখ্যার সম্ভাব্য বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত। তিনি মনে করেন, টিকার কার্যকারিতা ক্রমশ কমে আসার পাশাপাশি মানুষের প্রবাহ বৃদ্ধি, এই দ্বিমুখী কারণে ষষ্ঠ তরঙ্গ আঘাত হানবে। এই তরঙ্গকে যতটা সম্ভব ছোট রাখা যায় কীভাবে? এই উত্তরটাই খোঁজার চেষ্টা করছেন চিবা কাল্পনিক ‘মিনি টোকিও’র মডেলের ওপর অনুমান ভিত্তিক দৃশ্যপট বিশ্লেষণ করে, অর্থাৎ সিমুলেশন করে। ৭০ হাজার লোকের চেয়ে সামান্য বেশি জনসংখ্যার এই কাল্পনিক শহরে সংক্রমণ কীভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে, চিবা তা বোঝার চেষ্টা করেছেন সিমুলেশনের মাধ্যমে। আদমশুমারি ও অন্যান্য উপাত্ত অনুযায়ী এই কাল্পনিক শহরটি হচ্ছে টোকিও’র একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ। এই শহরে বসবাসকারীদের বয়স কাঠামো, পেশা, পারিবারিক কাঠামো - এই সবই জাপানের আসল রাজধানীর অনুরূপ।

চিবা তার সিমুলেশনে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে বা তার পরে করোনার নতুন সংক্রমণের দৈনিক সংখ্যা ৪’এ নির্ধারণ করেন, যে দৈনিক সংখ্যা আসল টোকিও’র বেলায় কমবেশি ৮০০’তে দাঁড়াবে। এইরকম পরিস্থিতিতে মানুষের প্রবাহ যদি প্রাক মহামারি মাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম রাখা যায়, সেক্ষেত্রে হিসেব করে দেখা যাচ্ছে টিকার কার্যকারিতা যদি কমেও আসে, নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়বে না। তারপর টিকার তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ নেওয়া লোকের সংখ্যা যদি বাড়ে, তখন নতুন সংক্রমণের সংখ্যা কমতে শুরু করবে।

তবে লোকের প্রবাহ যদি প্রাক মহামারি মাত্রার চেয়ে কেবল ২০ শতাংশ কমে, সংক্রমণের নতুন সংখ্যা বাড়তে থাকবে, এমনকি যদি বহু লোক টিকার তৃতীয় ডোজ নেন, তবু। চিবা বলেন, সিমুলেশনে দেখা যাচ্ছে জনপ্রবাহে সামান্য বৃদ্ধিও সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। তিনি বলেন, সমাজের সামগ্রিক পরিবেশে যদি বর্ষ-বিদায়ের পার্টি আয়োজনের প্রবণতা থাকে, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। তবে চিবা এও বলেন, অর্থনীতির কথা চিন্তা করলে জনপ্রবাহ অব্যাহতভাবে কম রাখা হয়তো কঠিন।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫৩: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৬) শহর ও গ্রাম অঞ্চলের মধ্যে বিরাজমান পার্থক্য নিয়ে বলছেন ওকিনাওয়ার চুবু হাসপাতালের তাকাইয়ামা ইয়োশিহিরো।

উত্তর-৩৫৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা সাক্ষাৎকারভিত্তিক ধারাবাহিকের ষষ্ঠ পর্ব উপস্থাপন করছি, সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না ও কখন তা আঘাত হানতে পারে এবং এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে - সেই প্রশ্ন যেখানে আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে রেখেছিলাম। আমরা ওকিনাওয়ার চুবু হাসপাতালের তাকাইয়ামা ইয়োশিহিরোর বক্তব্য টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শোনা অব্যাহত রাখব।

তাকাইয়ামা সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে আসন্ন বর্ষশেষ ও নববর্ষের ছুটির সময় সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধি পেতে পারে।

তিনি বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ আমরা যাই নি না কেন ছুটির মৌসুমে প্রাদেশিক এলাকাগুলোতে কিছুটা হলেও যে ভাইরাস বিস্তার লাভ করবে তা অবশ্যম্ভাবী। দীর্ঘ সময় দেখা না হওয়ার কারণে সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের সাথে নববর্ষ কাটানোর জন্য প্রবীণ ব্যক্তিদের অনেকেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন। বয়স্ক লোকজন এবং তাদের সন্তানসন্ততি, উভয়ের জন্যেই এটা নিশ্চিত করে নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ যে তারা টিকা নিয়েছেন এবং অন্যান্য প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন যাতে করে কোন দুশ্চিন্তা ছাড়াই তারা একত্রে সময় কাটাতে পারেন।

সংক্রমণের সম্ভাব্য ষষ্ঠ তরঙ্গের জন্য প্রস্তুতি জোরদার করে তোলার গুরুত্বের উপর তাকাইয়ামা জোর দেন।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে আরও বিরাট আকারের এক তরঙ্গ আঘাত হানতে পারে বলে অনুমান করে আমাদের উচিত প্রস্তুতি জোরদার করে নেয়া। শীত শুরু হয়ে গেলে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি করা বিশেষ করে পল্লী এলাকায় খুব একটা সহজ কাজ নয়। একারণে তিনি যুক্তি দেখান যে এমন ধরনের স্থাপনার সংখ্যা বৃদ্ধি করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেখানে বিশ্রাম নিয়ে রোগীরা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন, তাতে করে তাদের হাসপাতালে থাকার সময় সংক্ষিপ্ত করা যেতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়ের দৈর্ঘ্য অর্ধেকে কমিয়ে আনা গেলে শয্যার সংখ্যা দ্বিগুণ করে তোলার মত একই রকম প্রভাব তাতে লক্ষ্য করা যাবে। সংক্রমণের নতুন তরঙ্গের সম্ভাবনা বিবেচনায় রেখে পুরোদমে প্রস্তুত কিনা তা নিশ্চিত করতে পরামর্শ করার জন্য স্থানীয় সরকার এবং হাসপাতালগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাকাইয়ামা।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫২: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৫) শহর ও গ্রাম অঞ্চলের মধ্যে বিরাজমান পার্থক্য নিয়ে বলছেন ওকিনাওয়ার চুবু হাসপাতালের তাকাইয়ামা ইয়োশিহিরো।

উত্তর-৩৫২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা সাক্ষাৎকারভিত্তিক ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্ব উপস্থাপন করছি, সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না ও কখন তা আঘাত হানতে পারে এবং এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে - সেই প্রশ্ন যেখানে আমরা বিশেষজ্ঞদের কাছে রেখেছিলাম। এবারে আমরা শুনবো ওকিনাওয়ার চুবু হাসপাতালের তাকাইয়ামা ইয়োশিহিরোর বক্তব্য। তিনি হলেন সংক্রামক রোগের একজন বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞ প্যানেলে তিনি কাজ করছেন।

শহর ও পল্লী এলাকায় ভাইরাস কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে সেই পার্থক্যের উল্লেখ তাকাইয়ামা করেছেন। তার অভিমত হচ্ছে এরকম:

তিনি মনে করেন ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে শহর ও গ্রাম এলাকার ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করা উচিত। শহর এলাকায় এরকম কিছু হটস্পট রয়েছে, সংক্রমণ যেখানে প্রতিনিয়ত অব্যাহত আছে। সেরকম জায়গায় মানুষ একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করলে সংক্রমণের বিস্তার সেখানে অনেকটা ফিউজে আগুন ধরিয়ে দেয়ার মত করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে ওকিনাওয়া জেলা সহ দেশের অধিকাংশ পল্লী এলাকায় প্রধানত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকতে এবং কোনো কোনো অঞ্চলে সংক্রমণ একেবারেই অনুপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এসব এলাকার লোকজনের শহর অঞ্চল থেকে সংক্রমণ এসে পড়া নিয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মুখ্য বিষয়টি এখানে হচ্ছে বাইরে থেকে আসা ভ্রমণকারীদের জন্য “টিকা-পিসিআর পরীক্ষা প্যাকেজ” কার্যকর রাখা আছে কি না এবং সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে জেলার সীমান্তের ভেতরে ভ্রমণ না করার অনুরোধ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানাতে পারে কি না। মফস্বল এলাকার মানুষ সংক্রমণ নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত এবং সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানাতে তারা আগ্রহী। তবে শহরবাসীরা এদের সেই আহ্বানে সারা না দিলে অবশ্য করার কিছু নেই। সংক্রমণের সংখ্যা এখন তুলনামূলক নিচের দিকে বজায় থাকায় খুব কম লোকজনই এরকম বার্তা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন। মানুষ যেন সতর্কতা বজায় রাখে, লোকজনকে সেটা মনে করিয়ে দেওয়া শহর এলাকার কর্তৃপক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বলছিলেন ওকিনাওয়ার চুবু হাসপাতালের তাকাইয়ামা ইয়োশিহিরো।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫১: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৪) স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজি।

উত্তর-৩৫১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমাদের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকারের চতুর্থ পর্ব আপনাদের জন্য উপস্থাপন করছি। এতে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না, কিংবা কখন তা আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি। এই পর্বে আমরা স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজির মতামত শুনব। তিনি সংক্রামক রোগের মত বিষয়ে একজন গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য।

ওয়াদা অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতই সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে বছরের শেষ এবং শুরুতে লোকজনের চলাচল যখন বেড়ে যায়, সেই সময়টিতে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন যে লোকজনের চলাচলের সাথে ঠাণ্ডা এবং আর্দ্রতার মত মৌসুমি বিষয়গুলোর সংমিশ্রণে বছরান্তে এবং নতুন বছরে ভাইরাস সম্ভবত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ নববর্ষ উদযাপনের জন্য লোকজন এসময় বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এই পরিস্থিতি মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার অনুরূপ এবং এসময় অবশ্যই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

ওয়াদা বলেন, এমনকি বিশেষজ্ঞরাও ভাইরাসের সম্ভাব্য একটি ষষ্ঠ তরঙ্গ নিয়ে আগাম অনুমান করাটা কঠিন বলে মনে করছেন। কারণ এটি টিকাদান কর্মসূচির অগ্রগতি, সামাজিক কার্যক্রমের উপর বিধিনিষেধ শিথিলকরণ এবং সময় কীভাবে টিকার কার্যকারিতার উপর ভূমিকা রাখবে, এরকম অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করছে। এর পাশাপাশি এসংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই এখনও অজানা রয়ে গেছে।

তবে, ওয়াদা বিশ্বাস করেন যে টিকাদানের হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এক্ষেত্রে, আগের তরঙ্গগুলোর মত লোকজনের গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশের ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে এটি সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় যে, প্রধানত টিকা না নেয়া লোকজনের ভেতরেই ভাইরাসটি ছড়াবে এবং গুরুতর কোভিডের উপসর্গ দেখা দিবে। উল্লেখ্য, টোকিওতে ৪০’এর কোঠার বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন টিকা নেননি। তিনি বলেন, ব্যক্তি এবং অঞ্চলের নিরাপত্তার অনুভূতির জন্য টিকাদানের হার বাড়ানো জরুরি।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৫০: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (৩) আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বিচার করে ভবিষ্যৎ সংক্রমণ সম্পর্কে পূর্বাভাস - নাগোইয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক হিরাতা আকিমাসা।

উত্তর-৩৫০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমাদের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকারের তৃতীয় পর্ব আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি যেখানে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না, কিংবা কখন তা আঘাত হানবে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি। এবারে আমরা জানবো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি পূর্বাভাস করার কী প্রচেষ্টা চলছে।

নাগোইয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক হিরাতা আকিমাসা সিমুলেশন বা অনুমানের ভিত্তিতে তৈরি করা পরিবেশ বিচার করে টোকিও’র ভবিষ্যৎ সংক্রমণ পরিস্থিতি সম্পর্কে পূর্বাভাস করেছেন। এর জন্য তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থায় অতীতের সংক্রমণ সংক্রান্ত উপাত্ত ব্যবহার করেন। ব্যাপক হারে নানারকম উপাত্ত ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে সংক্রমিত লোকের সংখ্যা হ্রাস, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, লোকজনের প্রবাহ সংক্রান্ত অবস্থা, সেইসঙ্গে জরুরি অবস্থা ঘোষিত ছিল কি না ইত্যাদি বিষয়ে উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল।

অনুমান এটাই যে লোকজনের প্রবাহ ক্রমশ আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। দুই ডোজ টিকা নেয়া লোকজনের অনুপাত, অতিরিক্ত ডোজ টিকা বা বুস্টার ডোজ দেয়া কবে থেকে শুরু হতে পারে ইত্যাদি নানান পরিস্থিতি অনুমান করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ২৭ রকমের সিমুলেশন করা হয়। সবকটি সিমুলেশনের ফলাফল বলছে জানুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে ষষ্ঠ তরঙ্গ আঘাত হানতে পারে।

হিরাতা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পূর্বাভাস হল, যতই রোখার চেষ্টা করা হোক না কেন জানুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে ষষ্ঠ তরঙ্গ দৃষ্টিগোচর হবে। সংক্রমণ ঘটার পর শরীরে উপসর্গগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত সময়টুকু বিবেচনায় আনলে বলতে হয় ভাইরাসের বিস্তার নির্ভর করবে বড়দিন থেকে নববর্ষ পর্যন্ত ছুটির সময় লোকজনের এদিক ওদিক যাতায়াতের প্রবাহ এবং পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে পুনর্মিলনের সংখ্যার ওপর।

একই সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পূর্বাভাসে এও দেখা যাচ্ছে যে বুস্টার ডোজ টিকা যদি দ্রুত দেয়া যায়, সংক্রমিত লোকের সংখ্যা কমে আসবে অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি। গুরুতর উপসর্গে ভোগা লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধিও রুখে দেয়া যাবে বলে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে।

হিরাতা বলেন, উচ্চমাত্রায় টিকার কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য সার্বিকভাবে সকলেরই তৃতীয় অর্থাৎ বুস্টার ডোজের টিকা নেয়া জরুরি। জাপানে টিকাকরণ বাস্তবায়িত হচ্ছে দ্রুত, যার আরেকটি অর্থ হল টিকা যে সুরক্ষা দেয় তার মেয়াদ দ্রুত ফুরিয়ে আসার আশংকা থেকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বুস্টার ডোজ দ্রুত আরম্ভ করা না হলে, জাপানের পক্ষে টিকার কার্যকারিতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৯: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (২) ফুরুসে ইয়ুকি, মহামারি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ।

উত্তর-৩৪৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমাদের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি যেখানে সংক্রমণের ষষ্ঠ তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না, কিংবা কখন তা আঘাত হানবে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি। আমরা আবারও ফুরুসে ইয়ুকি’কে প্রশ্ন করি যিনি সংক্রামক ব্যাধির মহামারি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ।

ফুরুসে বলেন ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি সংস্পর্শ কমাতে পারলে ষষ্ঠ তরঙ্গের সূচনা আমরা বিলম্বিত করতে পারি। সিমুলেশন বা নকল অবস্থা তৈরি করার সময় তিনি দেখেন যে সংস্পর্শ যদি এমনকি ৪০ শতাংশও কমিয়ে ফেলা যায় বা মহামারি পূর্ববর্তী মাত্রার ৬০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া যায় তবে পরবর্তী সংক্রমণের তরঙ্গ এসে পৌঁছাতে সম্ভবত পাঁচ মাস লেগে যাবে। সিমুলেশনের ভিতর বুস্টার ডোজের সম্ভাব্য প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তিনি বলেন, টিকার আর একটি ডোজ ষষ্ঠ তরঙ্গের প্রভাব কমিয়ে আনতে পারে।

ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি সংস্পর্শ কতটা কম হয়েছে তা বুঝতে পারাটা খুব কঠিন। ফুরুসে আমাদের বলেন যে প্রধান বিষয়টি হল বর্ষ শেষ এবং নববর্ষ বিষয়ে লোকজনের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

ফুরুসে বলেন, সংক্রামক শ্বাসকষ্ট জনিত রোগগুলো শীতকালে খুব বেশি বিস্তার লাভ করে। শীতকালে লোকজন পার্টি করতে ভালোবাসেন। তারা যদি একত্রে জমায়েত হয়ে মদ্যপান করেন বা মহামারির আগের সময়ের মত খুব বেশি ভ্রমণ করেন তবে তার থেকে সংক্রমণ বৃদ্ধির আর এক পর্বের সূত্রপাত হতে পারে। তিনি বলেন, লোকজন ধীরে ধীরে সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপগুলো শিথিল করে তুলছেন বলে কয়েকজন চিন্তা করলেও অনেকেই এখনো পর্যন্ত মাস্ক পরছেন, মদ্যপান করার পার্টিগুলোতে খুব একটা যাচ্ছেন না এবং মুখোমুখি দেখা না করে অনলাইনে লোকজনের সাথে সাক্ষাৎ করছেন। করোনাভাইরাস মহামারির সময় “নতুন স্বাভাবিক” নিয়মের উপর ভিত্তি করে মানুষের সাথে সংস্পর্শ কমিয়ে ফেলা সহ বর্তমানে আমাদের জীবনের বেশিরভাগটাই সেভাবে চলছে। তিনি বলেন আমরা যদি এভাবে চালিয়ে যেতে পারি তবে সংকট পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে না পারলেও সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গের প্রভাব কমিয়ে আনতে পারব এবং আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপরেও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে না।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৮: সংক্রমণের পরবর্তী তরঙ্গ কখন জাপানে আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামত (১) ফুরুসে ইয়ুকি, মহামারি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ।

উত্তর-৩৪৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কোভিড-১৯ ঘটনা এখন জাপানে চলতি বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে রয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও জাপান সরকার চলতি মাসের ১২ তারিখে করোনাভাইরাসের আরও একটি সম্ভাব্য তরঙ্গের প্রস্তুতির উপর একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। আজ থেকে শুরু করে আমরা ধারাবাহিক বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকার আপনাদের সামনে নিয়ে আসবো, সংক্রমণের ষষ্ঠ সেই তরঙ্গ আদৌ আঘাত হানবে কি না, কিংবা কখন তা আঘাত হানবে, সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের কাছে যেখানে আমরা জানতে চেয়েছি।

আমাদের প্রথম বিশেষজ্ঞ হলেন সংক্রামক ব্যাধির মহামারি এবং গাণিতিক মডেল কাজে লাগিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখার বিশেষজ্ঞ ফুরুসে ইয়ুকি, যিনি হলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছ সংক্রমণ বিষয়ক টাস্কফোর্সের একজন উপদেষ্টা। তিনি বলছেন ষষ্ঠ তরঙ্গ সম্ভবত শীতকালে আমাদের উপর আঘাত হানতে পারে।

এই মহামারি বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞ প্যানেলের জন্য সংক্রমণ পরিস্থিতির একটি সিমুলেশন বা নকল অবস্থা তৈরি করে নেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। ভাইরাসের সংক্রমণে অবদান রাখা বিভিন্ন উপাদানের সংখ্যাগত পরিমাপ নির্ধারণ করে নিয়ে এবং রোগের গতিধারা সম্পর্কে আগাম পূর্বাভাস পাওয়ার জন্য এসব ফলাফলকে গাণিতিক ফর্মুলায় প্রয়োগ করার মধ্যে দিয়ে তিনি এটা করছেন।

নকল অবস্থা তৈরি করে নিতে বিভিন্ন যেসব ধারণা তিনি কাজে লাগাচ্ছেন সেগুলো হল:
১। টিকা নেয়ার হার ৬০ বছর কিংবা বেশি বয়সের লোকজনের মধ্যে হচ্ছে ৯০ শতাংশ, ৪০ এবং ৫০ বছরের ঘরে যাদের বয়স তাদের বেলায় ৮০ শতাংশ, এবং ২০ ও ৩০এর কোঠায় বয়সীদের বেলায় ৭৫ শতাংশ।
২। পরিপূর্ণ টিকা নেওয়া, যা হচ্ছে টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার বেলায় সংক্রমণ প্রতিহত করা ৭০ শতাংশ কার্যকর।
৩। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির যোগাযোগ হবে মহামারি পূর্ববর্তী মাত্রার প্রায় ৮০ শতাংশ (আগের চাইতে ২০ শতাংশ কম)।

নকল পরীক্ষায় দেখা গেছে নতুনভাবে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে কম থেকে গেলেও একমাস পর তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে এবং দুই মাস পর থেকে তা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাবে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৭: কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের জন্য স্বীকৃত কর্মী-ক্ষতিপূরণ (২) কারা যোগ্য?

উত্তর-৩৪৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজনের কর্মী-ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এছাড়া, এমন কিছু ঘটনা রয়েছে, যেখানে কোভিড-১৯ এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবকেও ক্ষতিপূরণযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এবারে আমরা “কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের জন্য স্বীকৃত কর্মী-ক্ষতিপূরণ” সংক্রান্ত আমাদের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বটি উপস্থাপন করব।

বিদেশিরা যারা কর্মী হিসেবে জাপানে কাজ করছেন তারাও জাতীয়তা নির্বিচারে দেশের কর্মী-ক্ষতিপূরণ বীমার অন্তর্ভুক্ত। এই বীমার মধ্যে কেবল যারা অধিবাসী মর্যাদায় রয়েছেন, যাদের কাজ করার অনুমতি রয়েছে তারা নয়, বরং খণ্ডকালীন চাকরি নিয়ে যেসব শিক্ষার্থীরা রয়েছেন তারাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। জাপান সরকার জানাচ্ছে, কর্মী-ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে লোকজন তখন বিবেচিত হবেন যখন তারা কাজের স্থানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবেন বা এই ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের কারণে কাজ করার জন্য অত্যন্ত অসুস্থ থাকবেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় লোকজনকে তাদের স্থানীয় শ্রম আদর্শমান পরিদর্শন অফিসের সাথে পরামর্শ করার আহ্বান জানাচ্ছে যখন তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন বা তাদের উপসর্গগুলো দীর্ঘায়িত হবে।

মন্ত্রণালয় দেখতে পেয়েছে যে, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫৬৭ জন লোক কাজের স্থানে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পরে কর্মী-ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ হাজার ২১৪ ব্যক্তি হচ্ছেন ডাক্তার, নার্স এবং নিবন্ধনভুক্ত সেবাপ্রদান কর্মী অন্তর্ভুক্ত থাকা চিকিৎসা বা কল্যাণ কর্মী। এই ধরনের লোকের সংখ্যা মোট ক্ষতিপূরণ পাওয়া লোকের প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু এছাড়াও ৩৭৬ জন রয়েছেন পরিবহণ বা ডাক সেবা থেকে, ৩১৫ জন নির্মাতা কোম্পানির এবং ২৪৫ জন সেবা খাতের যার মধ্যে হোটেল ও রেস্তোরাঁ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সংক্ষেপে বলা যায়, বিস্তৃত পরিসরের শিল্পের কর্মীদের যোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়েছে।

একটি হিয়োগো-ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত কর্মীদের সাহায্য করছে এবং কাজের পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মহাসচিব নিশিইয়ামা কাযুহিরো বলছেন, কাজের স্থানে সংক্রমিত হওয়ার পরে দীর্ঘায়িত উপসর্গে যারা ভুগছেন তারা আবারও কর্মী-ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তিনি বলছেন, সরকারের বিষয়টি সবার গোচরে আনার জন্য আরও কিছু করা উচিত।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৬: কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের জন্য স্বীকৃত কর্মী-ক্ষতিপূরণ (১) একজন পুরুষ কর্মীর ঘটনা পর্যালোচনা।

উত্তর-৩৪৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজনের কর্মী-ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এছাড়া, এমন কিছু ঘটনা রয়েছে, যেখানে কোভিড-১৯ এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবকেও ক্ষতিপূরণযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এবারে আমরা কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের জন্য স্বীকৃত কর্মী-ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করব।

হিয়োগো জেলার একটি বয়স্ক পরিচর্যা নিবাসে একজন শারীরিক থেরাপিস্ট হিসাবে কাজ করা ৪০-এর কোঠার বয়সী এক ব্যক্তি, কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের জন্য কর্মী-ক্ষতিপূরণের যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত পরিচর্যা নিবাসের একজন বাসিন্দার ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসার পরে ঐ ব্যক্তি কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে পিসিআর পরীক্ষা করার পরে, তার দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় এবং তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি পান। ঐ ব্যক্তি প্রায় দুই মাস ধরে সুস্থ হয়ে ওঠার পরে পুনরায় কাজ যোগ দেন। তবে, ভীষণ ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট এবং স্বাদের অনুভূতি জনিত সমস্যার কারণে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে তিনি আবারও কাজে যাওয়া বন্ধ করে দেন। তার চিকিৎসক তার দেহে কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব শনাক্ত করেন।

এরপর, তিনি পুনরায় কর্মী-ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেন, এবং গত আগস্ট মাসে শ্রম মান পরিদর্শকরা এই স্বীকৃতি দেন যে কর্মক্ষেত্রে ঘটা করোনাভাইরাসের সংক্রমণই তার দীর্ঘায়িত উপসর্গসমূহের মূল কারণ। ঐ ব্যক্তি এখনও কাজ করতে সমর্থ নন এবং তিনি বর্তমানে তার স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সী কন্যার সহায়তায় বাড়িতে থেকে সুস্থ হওয়ার উপর মনোনিবেশ করছেন।

লোকটির ভাষ্যানুযায়ী, তার দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলোর জন্যও ক্ষতিপূরণের স্বীকৃতি পাওয়ার পরে তিনি স্বস্তি বোধ করেন। তিনি এটিও বলেন যে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের মেয়ের সাথে সরাসরি খেলাধুলায় যোগ দিতে পারার মতো যথেষ্ট সুস্থ না হওয়ায় তিনি ভালো বোধ করছেন না এবং যত দ্রুত সম্ভব কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করতে চান।

কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কর্মী-ক্ষতিপূরণ লাভের যোগ্য হওয়ায়, অনুরূপ উপসর্গে ভোগা লোকজনকে, সরকার শ্রম কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করার আহ্বান জানাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৫: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৯) পঞ্চম তরঙ্গ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা।

উত্তর-৩৪৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার ‘বুস্টার ডোজ’ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের নবম পর্বে এবারে দেখব পঞ্চম তরঙ্গ থেকে কী শিক্ষা পেয়েছি আমরা।

সাইতামা মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ওকা হিদেআকি বলেন, পঞ্চম তরঙ্গে যারা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন, সেই রোগীদের অধিকাংশেরই টিকা নেওয়া ছিল না অথবা কেবল প্রথম ডোজটি নেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি জানান, বয়সে ৮০’র কোঠার একজন রোগী গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন এবং আগস্টের মাঝামাঝি মারা যান। এই ব্যক্তি জুলাই মাসে টিকার দ্বিতীয় ডোজটিও নিয়েছিলেন। তবে ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে হওয়ায় তার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে গিয়েছিল।

ওকা বলেন, দু ডোজ টিকা নেওয়া সত্ত্বেও এই রোগী দুর্ভাগ্যবশত করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিদেশে পরিচালিত গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কমে গেছে, তারা দু ডোজ টিকা নেওয়ার উপকারিতা থেকে অনেক সময় বঞ্চিত হন। গবেষকরা বলেন এই ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা কমে যাওয়ার আশংকা থাকে।

ওকা আরও বলেন অন্য অসুখের চিকিৎসার জন্য যারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার মত ওষুধপত্র গ্রহণ করেন, তাদের শরীরে দু ডোজ টিকা নেওয়ার পরেও পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি না হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ওকা বলেন যে তারা করোনাভাইরাসের টিকা সংক্রান্ত উপাত্ত সংগ্রহ করছেন এবং এখন তারা জানেন যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের দুর্বল, তাদের করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে দু ডোজ টিকা যথেষ্ট নয়। তবে তৃতীয় ডোজের টিকা তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির সংখ্যা বৃদ্ধি করে। ওকা বলেন, এখন যেহেতু টিকা সহজলভ্য হয়েছে, তাই সংক্রমণের আগামী ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের ভেবে দেখতে হবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা লোকেদের কীভাবে রক্ষা করা যায় এবং এই সমস্যা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব ঘাটতি রয়ে গেছে সেগুলো কীভাবে পূরণ করা যায়। ওকা বলেন, এই পদক্ষেপে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া রোধ করা যাবে এবং তা স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাকে রক্ষা করতেও সহায়ক হবে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৪: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৮) বুস্টার ডোজ নিতে পারছেন না কয়েকজন।

উত্তর-৩৪৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার “বুস্টার ডোজ” শীর্ষক আমাদের ধারাবাহিকের অষ্টম পর্বে আমরা এক ব্যক্তির সাথে কথা বলি যিনি টিকা নিতে চান অথচ কোনো এক কারণে নিতে পারছেন না।

ইকেদা মাসাহিরো হলেন ৪৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি যিনি টোকিও’র মিনাতো ওয়ার্ডের রোপ্পোংগি এলাকার এক মদের দোকানে কাজ করেন। তিনি টিকা নেননি। এটপিক ডার্মাটাইটিস সহ অন্যান্য অ্যালার্জি উপসর্গ তার রয়েছে।

নয় বছর আগে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার ডাক্তার তাকে বলেছিলেন যে ওটা ছিল অ্যানাফিল্যাকটিক শক নামে পরিচিত তীব্র অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া। সেই সময়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা ইকেদা আমাদের বর্ণনা করে বলেন। টিকা নেয়ার পর বাড়ি যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ানোর সময় তিনি সোজা হয়ে হাঁটতে পারছিলেন না। তার বুক ধড়ফড় করা শুরু হলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।

ইকেদা করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে তার পারিবারিক ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। ডাক্তার তাকে বলেন যে সম্ভবত কোনো সমস্যা হবে না তবে পূর্বে তার অ্যানাফিল্যাকটিক শকের অভিজ্ঞতা থাকায় সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।

মদ পরিবেশনকারী ঐ ব্যক্তির অ্যাজমা বা হাঁপানিও রয়েছে, তাই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তার শরীরে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি রয়েছে। নিজের জন্য এবং দোকানের খরিদ্দারদের কথা চিন্তা করে তিনি টিকা নিতে চাইলেও মনস্থির করতে পারছেন না।

তিনি আমাদেরকে বলেন যে সত্যি কথা বলতে গেলে যেসব লোকজন তিনটি টিকা নিতে পারছেন তাদেরকে তিনি ঈর্ষা করেন। স্বাস্থ্যবান হলে তিনিও তাই করতেন। একের পর এক বিধি নিষেধ তুলে নেয়া এবং টিকার প্রমাণ থাকা লোকজন ভ্রমণ করতে পারবেন দেখে তিনি বিচ্ছিন্ন এবং উদ্বেগ অনুভব করছেন বলে জানান। তিনি চান, লোকজন যেন বুঝতে পারেন যে তার মতো এমন মানুষও আছে যারা টিকা নিতে পারছেন না এবং তাদের জন্য কী করা যেতে পারে তা নিয়ে যেন আলোচনা শুরু হয়।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪৩: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৭) বুস্টার ডোজ নিয়ে নার্সিং সেবা কেন্দ্রের উচ্চ প্রত্যাশা।

উত্তর-৩৪৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার “বুস্টার ডোজ” শীর্ষক আমাদের ধারাবাহিকের সপ্তম পর্বে নার্সিং সেবা কেন্দ্রের মতামত আমরা তুলে ধরবো।

ধারণা করা হয় যে দুটি টিকা যারা নিয়েছেন সেরকম লোকজনের মধ্যে “ব্রেক থ্রু সংক্রমণ” বা টিকার পূর্ণ ডোজ গ্রহণ পরবর্তী সংক্রমণের বেশ কিছু গুচ্ছ বিস্তার এবছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথাকথিত পঞ্চম তরঙ্গের সময় নার্সিং সেবা কেন্দ্রগুলোতে ঘটেছে।

গত বছর নভেম্বর মাসে ৯০ ব্যক্তির বসবাসের ব্যবস্থা যেখানে রয়েছে এবং ১০০র বেশি কর্মী যেখানে বিভিন্ন সময়ে পালাক্রমে কাজ করছেন, টোকিওর সেতাগায়া ওয়ার্ডের সেরকম একটি নার্সিং হোমে ১০ জনের বেশী বসবাসকারী ও কর্মী ভাইরাসের পরীক্ষায় পজিটিভ সনাক্ত হন, যদিও কারোর মধ্যেই কোনরকম উপসর্গ দেখা যায় নি।

কেন্দ্র টিকা নেয়া উৎসাহিত করেছে এবং চলতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে বসবাসকারীদের অধিকাংশ এবং কেন্দ্রের কর্মীরা টিকার দুটি শট নেয়া শেষ করেছেন। এছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধ প্রচেষ্টাও কেন্দ্র জোরদার করে নেয় এবং এর ফলে সেই নার্সিং সেবা কেন্দ্র নতুন কোন সংক্রমণের ঘটনা সম্পর্কে জানায় নি। অল্প কিছুদিন আগে পর্যন্ত কেন্দ্র দর্শনার্থীদের জানালার অন্য দিকে বিচ্ছিন্নভাবে সাক্ষাত করা কিংবা অনলাইনে কথা বলা ছাড়া সরাসরি উপস্থিত হয়ে সাক্ষাত করার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে গেছে।

প্রতিরোধ পদক্ষেপ নেয়ার পর অক্টোবর মাস থেকে বসবাসকারীরা দর্শনার্থীদের গ্রহণ করতে সক্ষম হচ্ছেন।

নার্সিং সেবা কেন্দ্র বলছে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা বৃদ্ধ লোকজনকে রক্ষা করায় টিকার বুস্টার ডোজের কার্যকারিতা নিয়ে উচ্চ প্রত্যাশা কেন্দ্রের আছে। কেন্দ্র বলছে স্বাভাবিক অবস্থায় বন্ধ থাকা দর্শনার্থীদের কেন্দ্রে আসার ব্যবস্থা ধরে রাখার জন্যেও টিকার তৃতীয় ডোজ প্রয়োজন।

হাকুসুই-নো সাতো নামের সেই কেন্দ্রের প্রধান তানাকা মিসা বলছেন তার বিশ্বাস টিকা বৃদ্ধদের সুরক্ষা প্রদানে কার্যকর হবে। পরিবারের সদস্যরা যেন বসবাসকারীদের সাথে সাক্ষাত করতে পারেন, সেজন্য বুস্টার টিকা দেয়ার অনুরোধ তারা করছেন। তানাকা বলেন জানুয়ারি মাসের মধ্যে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর আট মাস অতিক্রান্ত হবে এবং তিনি আশা করছেন টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়ায় দ্রুত পদক্ষেপ স্থানীয় সরকার গ্রহণ করবে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪২: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৬) জাপানে কী ক্রমে এবং কারা টিকা দেয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন?

উত্তর-৩৪২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার “বুস্টার ডোজ” সম্পর্কিত আমাদের এই ধারাবাহিকের ষষ্ঠ পর্বে আমরা জাপানের পরিস্থিতির দিকে নজর দেব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাসের টিকার তৃতীয় ডোজ তাদেরকে দেয়ার প্রস্তাব দেবে বলে পরিকল্পনা করছে যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন এবং যারা তৃতীয় ডোজ পেতে চান।

জাপানে, প্রথম দফার টিকা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাস্থ্য কর্মীদের দেয়া হয়েছে। এরপরে প্রবীণ নাগরিকদের এপ্রিল থেকে টিকা দেয়া শুরু হয়। এরপর যারা বিভিন্ন রোগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের টিকা প্রদান করা হয়।

মন্ত্রণালয় তৃতীয় ডোজের জন্য কোনো অগ্রাধিকারমূলক তালিকা প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে না। তবে তারা দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার পরে প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে যাওয়া লোকজনকে এই তৃতীয় ডোজ টিকা নেয়ার প্রস্তাব দেবে।

এর অর্থ হচ্ছে, স্বাস্থ্য কর্মীরা তৃতীয় ডোজ টিকা নেয়ার জন্য ডিসেম্বর মাস থেকে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন এবং প্রবীণ নাগরিকরা আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে টিকা নিতে পারবেন।

এর পরে যারা এই দুই ক্যাটাগরির কোনটাতেই পড়েন না তাদের টিকা দেয়া হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তৃতীয় ডোজ টিকা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে স্থানীয় সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। এইসব প্রস্তুতির মধ্যে, টিকা নেয়ার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা, ভেন্যু নিশ্চিত করা এবং দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার পরে দ্রুত ৮ মাস হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে লোকজনকে কুপন প্রেরণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪১: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৫) শুরুতে কাদের টিকা দেয়া উচিত?

উত্তর-৩৪১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার “বুস্টার ডোজ” সম্পর্কিত আমাদের এই ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্বে আমরা একজন বিশেষজ্ঞের কথা শুনব যার মতে, অন্তর্নিহিত কোন স্বাস্থসমস্যা বা অন্যান্য ঝুঁকি থাকা ব্যক্তিদেরই শুরুতে টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া উচিত।

তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাতেদা কাযুহিরো হচ্ছেন সরকারের করোনাভাইরাস বিষয়ক প্যানেলের একজন সদস্য। তাতেদা আমাদের বলেন, গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি থাকা লোকজনকে টিকার অতিরিক্ত ডোজ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। তিনি বলেন, এসংশ্লিষ্ট গবেষণার আরও ফলাফল আসার পরেই কেবল তরুণ প্রজন্ম’সহ অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিসম্পন্ন গ্রুপগুলোকে টিকা দেয়া যায় কিনা, সেটি নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

অধ্যাপক বলেন, লোকজন টিকা নেয়ার পরে কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তথাকথিত ব্রেক থ্রু বা টিকার পূর্ণ ডোজ গ্রহণ পরবর্তী সংক্রমণের ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, তবে ঐ প্রতিবেদনগুলোতে এটিও দেখা যাচ্ছে যে লোকজনকে মারাত্মক অসুস্থ হওয়া বা এর ফলে মৃত্যুমুখে পতিত হওয়া রোধে টিকাসমূহ এরপরেও কার্যকর থাকে। তিনি আরও বলেন, তা সত্ত্বেও বয়স্ক ব্যক্তি এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন লোকজন যদি ব্রেক থ্রু সংক্রমণের শিকার হন, তবে তাদের দেহে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়া এবং এর ফলে কখনও কখনও মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে।

তাতেদা আরও বলেন, উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন গোষ্ঠীর সদস্য না হলেও চিকিৎসা কর্মীদের টিকার তৃতীয় ডোজ নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে, যাতে তারা উচ্চ-ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের কাছে ভাইরাসটি স্থানান্তর করতে না পারেন। তিনি বলেন, জাপানের টিকা নীতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে অগ্রাধিকারের বিষয়টি বিবেচনার পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচির অগ্রগতি এবং বিশ্ব জুড়ে গবেষণার ফলাফলের দিকে নজর রাখা।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪০: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৪) কোন টিকা ব্যবহার করা উচিত?

উত্তর-৩৪০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার ‘বুস্টার ডোজ’ বা অতিরিক্ত ডোজ নিয়ে ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে এবারে আমরা জানার চেষ্টা করবো বুস্টার ডোজ’এ কি মূল ডোজের অনুরূপ টিকা নেওয়া উচিত, না কি অন্য টিকা?

লোকজনের কী করা উচিত, মূলত যে কোম্পানির টিকা নিয়েছেন, বুস্টার ডোজেও সেই কোম্পানিরই টিকা নেওয়া উচিত, না কি বুস্টার ডোজের টিকা অন্য কোম্পানির হলেও ক্ষতি নেই? এই প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনে ক্লিনিকাল ট্রায়াল বা মানব দেহে চালানো পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের টিকার আলাদা আলাদা মিশ্রণ প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়া ব্যক্তিরা বুস্টার ডোজ’এ কোন টিকাটি নিলে তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়বে সবচেয়ে বেশি।

অক্টোবর মাসের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ৪শো ৫৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর চালানো ক্লিনিকাল ট্রায়ালের মধ্য-মেয়াদী ফলাফল ঘোষণা করে। এরা প্রত্যেকেই টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন। নিয়েছেন ফাইজার-বিয়োনটেক অথবা মডার্না অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা। গবেষকরা এদের দেহে হয় মূল ডোজ যে কোম্পানির সেই কোম্পানির টিকা দিয়েই তৃতীয় ডোজটি দিয়েছেন অথবা অন্য কোম্পানির টিকা দিয়েছেন। এরপর তারা সেই ব্যক্তিদের দেহে অ্যান্টিবডির মাত্রার কী পরিবর্তন হয় তা পরীক্ষা করে দেখেছেন। গবেষকরা বলেন, মূল ডোজ কোন কোম্পানির টিকা তা নির্বিশেষে বুস্টার ডোজ’এ ফাইজার বা মডার্নার টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের দেহে করোনাভাইরাসের প্রভাব হ্রাসকারী অ্যান্টবডির মাত্রা দু সপ্তাহে ১০ থেকে ৩০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ফলাফল থেকে এমন আভাসই পাওয়া যাচ্ছে যে মূল ডোজে যে টিকাই দেওয়া হোক না কেন, এই দুটি টিকার বুস্টার মানুষের দেহে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বলছে যে এই ক্লিনিকাল ট্রায়াল ছোট গ্রুপের ওপর চালানো হয়েছে, তবে তার জন্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ইনস্টিটিউট জানায় ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর করোনাভাইরাসের প্রভাব হ্রাসকারী অ্যান্টিবডির মাত্রার হিসাবটিও তারা প্রকাশ করবে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৯: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (৩) সময়ের সাথে অ্যান্টিবডি কমে গেলেও কি করোনাভাইরাস টিকা কার্যকর থাকে?

উত্তর-৩৩৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার “তৃতীয় ডোজ” নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্ব এবারে আমরা উপস্থাপন করব। এই পর্বে বুস্টার ডোজ না নেয়া হলে সময়ের সাথে সাথে টিকা কার্যকর থাকে কিনা সেই বিষয়টির উপর আমরা নজর দেব।

কয়েকটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রা হ্রাস পাওয়ার কারণে টিকা প্রদত্ত সুরক্ষা দ্বিতীয় ডোজের পর সময়ের সাথে সাথে কমে যায়। তবে অন্যান্য পরীক্ষায় দেখা গেছে যে অ্যান্টিবডি কমে গেলেও সংক্রমিত ব্যক্তিরা যাতে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে না পড়েন বা তাদেরকে যাতে হাসপাতালে ভর্তি করতে না হয় তা প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতা যথেষ্ট পরিমাণেই থাকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে গবেষকদের একটি গ্রুপ সেপ্টেম্বর মাসে রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি’র সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে টিকার কার্যকারিতা বিষয়ে তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি অঙ্গরাজ্যের ২১টি হাসপাতালে ঐ গবেষণা পরিচালনা করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায় যে ফাইজার-বিয়োনটেক টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর দুই সপ্তাহ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে তা ৯১ শতাংশ কার্যকর এবং ১২১ তম দিন থেকে শুরু করে ৭৭ শতাংশ কার্যকর। এতে আরও দেখা যায় যে মডার্নার ক্ষেত্রে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর দুই সপ্তাহ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে তা ৯৩ শতাংশ কার্যকর এবং ১২১ তম দিন থেকে শুরু করে ৯২ শতাংশ কার্যকর।

জাপান সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তথাকথিত “যুগান্তকারী সংক্রমণ” লক্ষ্য করা গেছে যেখানে পুরোপুরি টিকা লাভের দুই বা তার বেশি সপ্তাহ পর লোকজন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে এইসব রোগীরা গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার অনুপাত খুব কম বলে জানা গেছে।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং ওষুধ সংক্রান্ত জাপানের জাতীয় কেন্দ্র, দেশ জুড়ে ৬০০টির বেশি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯ রোগের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি লোকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা উপাত্ত পরীক্ষা করে দেখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে এমনকি বয়স্ক লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করলেও পুরোপুরি টিকা প্রাপ্ত লোকজন যাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়েছে তাদের সংখ্যা হল টিকা না পাওয়া লোকজনের সংখ্যার আট ভাগের এক ভাগ। গবেষণায় আরও জানা যায় যে পুরোপুরি টিকা প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার হল টিকা না পাওয়া লোকজনের এক তৃতীয়াংশ। এই ফলাফল দেখে আভাস পাওয়া যায় যে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে টিকা কার্যকর।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৮: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (২) নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধি”

উত্তর-৩৩৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকার “তৃতীয় ডোজ” নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আমরা টিকা নির্মাতাদের জানানো নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রার উপর নজর দেব।

অতিরিক্ত টিকার ডোজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া বা দেয়ার কথা বিবেচনা করা বিভিন্ন দেশ জানাচ্ছে যে, পুরোপুরি টিকা দেয়া লোকজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকার কার্যকারিতা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লোকজনকে রক্ষা করতে সাহায্য করা নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সাথে কমে যাচ্ছে।

ফাইজার, মডার্না এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানাচ্ছে, নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রা বাড়ানোর মাধ্যমে টিকার কার্যকারিতা আরও উন্নত করার জন্য তৃতীয় ডোজ টিকা নেয়ার দরকার আছে।

ফাইজার জানায়, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করা ব্যক্তিদের মধ্যে ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রার এক তুলনামূলক পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, ৫৫ এবং তার নিচের বয়সী তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করা লোকদের মধ্যে অ্যান্টিবডির মাত্রা ৫ গুণেরও বেশি বেড়েছে এবং ৬৫ থেকে ৮৫ বছর বয়সী লোকদের মধ্যে বেড়েছে ১১ গুণেরও বেশি। এই পরীক্ষা উভয় দলের টিকা গ্রহণ করার ১ মাস পরে চালানো হয়।

মডার্নাও জানায়, টিকা গ্রহণের দুই সপ্তাহ পরে তৃতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করা ব্যক্তিদের তুলনায় পুরোপুরি টিকা গ্রহণ করার ৬ থেকে ৮ মাস পরে তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করা ব্যক্তিদের মধ্যে ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির মাত্রা প্রায় ৪২ গুণ বেড়েছে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকাও তৃতীয় ডোজ টিকা নেয়ার পরে নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডির মাত্রা বেড়েছে বলে জানায়।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৭: জাপান এবং অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে টিকার “তৃতীয় ডোজ”এর বিষয়টি সামাল দিচ্ছে? (১) “বুস্টার ডোজকে” কি নিয়মিত ডোজে পরিণত করা উচিত?

উত্তর-৩৩৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি চালু করা যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশ, টিকার তৃতীয় বা “বুস্টার ডোজ” দেয়া শুরু করেছে। দেশগুলোর ভাষ্যানুযায়ী, সময়ের সাথে সাথে টিকার কার্যকারিতা কমতে থাকে। এবারে আমরা আপনাদের জন্য টিকার “বুস্টার ডোজ” নিয়ে নতুন একটি ধারাবাহিকের প্রথম পর্ব উপস্থাপন করব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শকরা গত ১১ই অক্টোবর সুপারিশ করেন যে দুর্বল ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা ফাইজার-বিয়োনটেক, মডার্না এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার মত করোনাভাইরাস টিকাগুলোর বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝারি বা মারাত্মক দুর্বল ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এমনকি টিকার পূর্ণ ডোজ নেয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি বেশি কারণ ইতিপূর্বে নেয়া টিকার দুই ডোজের প্রদান করা সুরক্ষা পর্যাপ্ত নয়।

মার্কিন সরকার টিকার পূর্ণ ডোজ নেয়া লোকজনকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় পরে অতিরিক্ত ডোজ টিকা প্রদানের পরিকল্পনা করছে। সরকারের ভাষ্যানুযায়ী, করোনাভাইরাসের টিকার কার্যকারিতা সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বা এফডিএ, ফাইজার-বিয়োনটেক করোনাভাইরাস টিকার একটি বুস্টার ডোজের জরুরি অনুমোদন দেয়। যারা টিকার এই তৃতীয় ডোজ নিবেন, তাদের অবশ্যই ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী হতে হবে। এছাড়া, গুরুতর রোগের উচ্চ ঝুঁকি থাকা ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী এবং ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার উচ্চ সম্ভাবনা থাকা চিকিৎসা কর্মী বা অন্যান্য ব্যক্তিরাও এর জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।

এফডিএ’র ভাষ্যমতে, বুস্টার ডোজটি টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার অন্তত ছয় মাস পরে প্রয়োগ করতে হবে। বুস্টার টিকা দেয়া অবশ্য ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

আর অক্টোবরের ১৪ তারিখ, এফডিএ’র পরামর্শক প্যানেল মডার্নার টিকা নিয়েও অনুরূপ এক পরামর্শ দিয়েছে। এক্ষেত্রে, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তি এবং গুরুতর রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের টিকার তৃতীয় ডোজ দেয়ার প্রস্তাব তারা দিয়েছে।

এই তথ্যগুলো নভেম্বর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৬: কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া (৪) টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ

উত্তর-৩৩৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। দীর্ঘ কোভিড নামেও পরিচিত করোনাভাইরাস সংক্রমণের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে পরিচালিত জাপানের একটি জরিপের ফলাফল নিয়ে ধারাবাহিকের চতুর্থ ও শেষ পর্বটি এবারে আপনাদের সামনে আমরা পেশ করছি।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্র ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মিলে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর যারা কোভিড-১৯ থেকে আরোগ্যলাভ করেছেন তাদের ওপর জরিপ চালায়। ২০’এর কোঠা থেকে ৭০’এর কোঠায় যাদের বয়েস, এইরকম ৪৫৭ জন ব্যক্তির দেওয়া উত্তর বিশ্লেষণ ক’রে দেখেছে এই গ্রুপ।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্রের গবেষকদের মধ্যে একজন মোরিওকা শিনইচিরো এই জরিপ গ্রহণের কর্মসূচিতে যোগ দেন। তিনি বলেন, নারীদের মধ্যে কোভিড-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভোগার সংখ্যা বেশি বলে ধারণা এবং জরিপেও দেখা গেছে চুল পড়ে যাওয়া বা স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি ও অবসাদ সংক্রান্ত সমস্যা নারীদের মধ্যেই বেশি হচ্ছে। পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স্ক ব্যক্তি যাদের মেদবহুল শরীর তাদের করোনাভাইরাসে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। মোরিওকা বলেন, স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি সংক্রান্ত সমস্যার মতো পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নারীদের মধ্যে কেন বেশি, তা এখনও বোঝা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, কমবয়সী রোগাপাতলা নারীদেরও কোভিড পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভোগার আশংকাকে হাল্কাভাবে নেওয়া উচিত নয়। সত্যি বলতে কি, স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি হারানোর আশংকা যে এদের বেশি, জরিপের এই ফলাফলকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া খুব জরুরি। মোরিওকা বলেন স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি সংক্রান্ত সমস্যা কমবয়সী লোকের মধ্যেই হতে দেখা যায় বেশি। কোভিড ১৯’এর হাল্কা উপসর্গে যারা ভুগেছেন এবং যাদের বয়েস কম, উভয়ের ক্ষেত্রেই পরবর্তী প্রতিক্রিয়া বিরাট সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে।

এছাড়া টিকা যারা নেননি এবং যারা নিয়েছেন তাদের মধ্যে তুলনা করে দেখা গেছে যে দুটো ডোজই যারা নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে উপসর্গ ২৮ দিনের বেশি স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার মানে পরবর্তী প্রতিক্রিয়া রোধেও টিকা সহায়ক হতে পারে। তাই অল্পবয়সীদের দুই ডোজ টিকা নেওয়া খুব জরুরি। তাছাড়া দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরেও সংক্রমণ প্রতিরোধের মৌলিক নিয়মাবলী অনুসরণ করে যাওয়া দরকার, কারণ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়া এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় ভোগার ঝুঁকি টিকা নেওয়ার পরেও থেকে যায়।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৫: কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া (৩) ভাইরাস প্রতিরোধক ওষুধের প্রভাব এবং লিঙ্গ ভেদে পার্থক্য

উত্তর-৩৩৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। দীর্ঘ কোভিড নামেও পরিচিত করোনাভাইরাস সংক্রমণের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার উপর জাপানে চালানো জরিপের ফলাফল সম্পর্কে আমাদের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্ব এবারে আপনাদের সামনে আমরা উপস্থাপন করছি। আমরা এই রোগে ব্যবহৃত ওষুধের প্রভাব এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে লক্ষ্য করা পার্থক্যের উপর এবারে মনোনিবেশ করব।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও ওষুধ সম্পর্কিত জাতীয় কেন্দ্র এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা লোকজনের উপর জরিপ চালিয়ে আসছে। বিশের কোঠা থেকে সত্তরের কোঠায় বয়স, এমন ৪৫৭ জনের জবাব বিশ্লেষণ করে দেখেছে গ্রুপটি।

কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হলে ভাইরাস প্রতিরোধক ওষুধ বা স্টেরয়েড সহ যে ধরনের চিকিৎসা তারা পেয়েছেন দীর্ঘ কোভিডের উপর তার কোন প্রভাব রয়েছে কিনা গবেষকরা সেই বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখেন। স্পষ্ট কোন সংযোগ আছে কিনা তার প্রমাণ তারা পাননি। তারা লোকজনকে টিকা নেয়ার এবং ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন যাতে করে লোকজন সংক্রমিত না হন এবং ভাইরাসের দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাবের মুখে তাদেরকে পড়তে না হয়।

দীর্ঘ কোভিডের ক্ষেত্রে পুরুষ এবং নারীর মধ্যেকার পার্থক্য বিষয়ে জরিপের ফলাফল থেকে নিম্নলিখিত বিষয়টি জানা যায়।

উপাত্ত থেকে দেখা গেছে যে পুরুষের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১ দশমিক ৯ গুণ বেশি এবং স্বাদের অনুভূতি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১ দশমিক ৬ গুণ বেশি। নারীদের ক্ষেত্রে ক্লান্তি অনুভব করার সম্ভাবনা পুরুষের প্রায় দ্বিগুণ এবং চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা হল প্রায় তিন গুণ।

জরিপে আরও জানা যায় যে পুরুষ বা নারীর বয়স যত কম হবে এবং তিনি যত রোগা হবেন ততটাই তাদের স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমনকী কোভিড-১৯ এর উপসর্গ হালকা হলেও রোগের প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদী হওয়ার সম্ভাবনাও তাদের ক্ষেত্রে বেশি হবে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৪: কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া (২) শ্বাসকষ্ট, চুল পড়ে যাওয়া এবং ভুলে যাওয়া

উত্তর-৩৩৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। দীর্ঘ কোভিড নামেও পরিচিত করোনাভাইরাস সংক্রমণের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার উপর জাপানে চালানো জরিপের ফলাফল সম্পর্কে আমাদের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্ব এবারে আপনাদের সামনে আমরা উপস্থাপন করছি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্র এবং অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠা লোকজনের উপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জরিপ চালায়। ২০ থেকে ৭০ বছরের ঘরে বয়সের ৪৫৭ জনের কাছ থেকে পাওয়া উত্তর বিশ্লেষণ করে দেখতে এই দল সক্ষম হয়েছে।

উপসর্গ অনুসরণ করে আরও যেসব উপাত্ত জরিপ থেকে পাওয়া গেছে, সেগুলোর হচ্ছে এরকম।

৪। শ্বাসকষ্ট
প্রায় ২০ শতাংশ উত্তরদাতা উপসর্গ দেখা দেয়ার এক মাস সময়ের মধ্যে এই সমস্যায় ভুগেছেন। প্রায় পাঁচ শতাংশের বেলায় শুরু থেকে প্রায় ১০০ দিনের মধ্যে এটা দেখা গেছে, ৩.৯ শতাংশের বেলায় সময়ের ব্যাপ্তি ছিল ছয় মাস, এবং ১.৫ শতাংশ এক বছর পর এখনও ভুগছেন।

৫. চুল পড়ে যাওয়া
সংক্রমণ শুরু হওয়ার দিকে খুব কম লোকজনকেই নিজেদের চুল পড়ে যাওয়া দেখতে হয়েছে। প্রায় ১০ শতাংশ কয়েক মাস পর এই সমস্যা দেখা দেয়া সম্পর্কে জানিয়েছেন। প্রায় ৮ শতাংশের বেলায় ১০০ দিন পর সমস্যা দেখা দেয়, ৩.১ শতাংশের বেলায় ছয় মাস পর এবং ০.৪ শতাংশের ক্ষেত্রে এক বছর পর সমস্যা দেখা দেয়।

৬. স্মৃতি হারিয়ে যাওয়া ও অন্যান্য সমস্যা
ভুলে যাওয়া এবং স্মৃতি ভ্রমের বেলায় ১১.৪ শতাংশ ছয় মাস পর সমস্যা সম্পর্কে আঁচ করতে পেরেছেন এবং ৫.৫ শতাংশ তা পেরেছেন এক বছর পর। মনোনিবেশ কমে যাওয়ার বেলায় ৯.৮ শতাংশের বেলায় ছয় মাস পর এবং ৪.৮ শতাংশের বেলায় এক বছর পর সমস্যা শুরু হয়। কেউ কেউ বিষণ্ণতায় ভুগেছেন – ৮.১ শতাংশের সমস্যা শুরু হয় ছয় মাস পর এবং ৩.৩ শতাংশের বেলায় এক বছর পর।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩৩: কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া (১) গন্ধ ও স্বাদের অনুভূতি এবং অবসাদ

উত্তর-৩৩৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুন একটি ধারাবাহিকে, আমরা দীর্ঘ কোভিড নামেও পরিচিত করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার উপর চালানো এক জাপানি জরিপের ফলাফলের দিকে নজর দেব।

জাতীয় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কেন্দ্র এবং অন্যান্যরা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা লোকজনের উপর এক জরিপ চালায়। ২০ থেকে ৭০-এর কোঠার ৪৫৭ জন উত্তরদাতার জবাব বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছে এই গ্রুপটি।

ফলাফলে দেখা যায় যে, উত্তরদাতাদের ২৬.৩ শতাংশের রোগের সূত্রপাত বা রোগ সনাক্ত হওয়ার ৬ মাস পরে কিছু না কিছু উপসর্গ ছিল। অন্যদিকে, ৮.৮ শতাংশ ১২ মাস পরেও এখনও কয়েক ধরনের উপসর্গ রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন। উপসর্গ ভিত্তিক উপাত্তের উপর থেকে চলুন একটু চোখ বুলিয়ে আসি-

১। গন্ধ নেয়া সংক্রান্ত সমস্যা
উত্তরদাতাদের ১০ শতাংশেরও একটু বেশি লোকের রোগের সূত্রপাত বা রোগ সনাক্ত হওয়ার প্রায় ১০০ দিন পর্যন্ত সমস্যা ছিল, ৭.৭ শতাংশের ৬ মাস পরেও সমস্যা ছিল, ৫ শতাংশেরও বেশি লোকের ২০০ দিনের পরও সমস্যা ছিল এবং ১.১ শতাংশ লোক এক বছর পর এখনও সমস্যায় ভুগছেন।

২। স্বাদের অনুভূতিজনিত সমস্যা
প্রায় ৫ শতাংশ জানিয়েছেন তারা ১০০ দিন পরেও সমস্যায় ভুগেছেন, ৩.৫ শতাংশ ৬ মাস পরেও এবং ০.৪ শতাংশ ভুগেছেন ১ বছর পরেও।

৩। অবসাদ
একদিকে প্রায় ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন যে, তারা রোগের সূত্রপাতের সাথে সাথেই অবসাদ অনুভব করতে শুরু করেছেন, অন্যদিকে ১০ শতাংশ লোকের এখনও ১০০ দিন পরেও সমস্যা রয়ে গেছে, ৬.৬ শতাংশ লোকের ৬ মাস পরেও সমস্যা রয়েছে এবং ৩.১ শতাংশ লোকের এক বছর পরেও সমস্যা রয়েছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩২: শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত? (৬) উপকার ও ঝুঁকির দিকে দৃষ্টিপাত।

উত্তর-৩৩২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিজেদের টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, জাপান সরকার সম্ভবত সেবিষয়টি যাচাই করে দেখা শুরু করতে পারে। শিশুদের টিকাদান সংক্রান্ত আমাদের এই ধারাবাহিকের ষষ্ঠ এবং শেষ পর্বে আমরা এর উপকার এবং ঝুঁকির দিকে নজর দিব।

মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার এবং তাদের জার্মানির অংশীদার বিয়োনটেক ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য নিজেদের টিকার নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতার দিকটি নিশ্চিত করেছে এবং এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে। এই পদক্ষেপের পরে, জাপান সম্ভবত এই বয়সীদের গ্রুপটিকে তাদের টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, তা যাচাই করে দেখবে।

কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুও বলছেন, টিকাদান নিয়ে ভবিষ্যৎ বিতর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যকার প্রবণতার পার্থক্যের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত।

নাকাইয়ামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষসমূহ সম্ভবত প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের টিকা দিতে চাইবে কারণ সামগ্রিক টিকাদানের হার মন্থর হয়ে পড়ার মাঝে স্কুলগুলোতে গুচ্ছ সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। তবে তিনি বলেন, জাপানে ২০ এবং ৩০ বছর কোঠার বয়সী ব্যক্তি এবং প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের বাবা-মা’দের মধ্যে টিকা গ্রহণের হার সম্ভবত বাড়তে পারে। তাই কর্মকর্তারা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে পারেন।

সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় লোকজনের সুরক্ষার জন্য টিকাগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হবে। তাই শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায় হিসেবে টিকা নিতে পারা ব্যক্তিদের বয়সের সীমা বিস্তৃত করার ধারণা নিয়ে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং কার্যকারিতা বা অন্যান্য উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মত ঝুঁকির মধ্যে ভারসাম্য বিবেচনায় নিয়ে এসম্পর্কে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো কর্তৃপক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। এছাড়া, বাবা-মা এবং শিশুরা আদৌ টিকা নিতে চায় কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া উচিত।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩১: শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত? (৫) টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

উত্তর-৩৩১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। প্রাথমিক স্কুলের শিশুদেরও টিকাদান কর্মসূচির আওতার মধ্যে আনার বিষয়ে বিবেচনা করতে পারে জাপান সরকার। শিশুদের টিকা দেওয়া নিয়ে ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্বে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করা হবে।

২০শে সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার শুধু এটুকুই জানিয়েছে যে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ওপর পরিচালিত টিকা-পরীক্ষায় যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়েছে, সেগুলো টিকার পুরো ডোজ নেওয়া ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে যে ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে দেখা গেছে, সেরকম।

কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নাকাইয়ামা তেৎসুও বলেছেন, এই টিকা শিশুদের জন্য বিপজ্জনক বলে তিনি মনে করেন না। তবে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তিনি আরও বলেন, একটি সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে জ্বর। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন কোন কোন শিশুর জ্বরের সাথে খিঁচুনিও হতে পারে। নাকাইয়ামা জোর দিয়ে বলেন, সন্তানকে টিকা দেওয়ানোর আগে এধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশংকা সম্পর্কে পিতামাতার পুরোপুরি অবগত থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিশুদের টিকা দেওয়ানো উচিত পারিবারিক চিকিৎসককে দিয়ে যিনি তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খুব ভালভাবে জানেন।

ফুকুওকা নার্সিং কলেজের অধ্যাপক ওকাদা কেনজি জাপানিজ সোসাইটি ফর ভ্যাকসিনোলজির সভাপতির পদেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে এমন শিশুদের এবং প্রবেশ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিগ্রহণরত শিক্ষার্থী যারা টিকা নিতে চায়, তাদের টিকা দেওয়া উচিত। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না।

ওকাদা বলেন, শিশুদের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে, তাতে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে। তিনি বলেন, সুস্থসবল শিশুদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনা করার পাশাপাশি, সংক্রমিত হলে উপসর্গ কতটা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে এবং টিকার কার্যকারিতা, এই দিকগুলোও বিবেচনা করা উচিত।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৩০: শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত? (৪) শিশুদের টিকাদানের উপকারিতা।

উত্তর-৩৩০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার সম্ভবত টিকাদান কর্মসূচি প্রাইমারি স্কুলের শিশুদের মধ্যে সম্প্রসারিত করে নেয়া বিবেচনা করে দেখতে পারে। শিশুদের টিকা দেয়ার উপর আমাদের এই ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে শিশুদের টিকাদানের উপকারিতার উপর আমরা নজর দেবো।

কোভিড-১৯ টিকার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি চিন্তা করলে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ক্ষেত্রে এই টিকা দেয়ার উপকারিতা কম হিসাবে দেখা হচ্ছে কেননা অল্পবয়সী লোকজনের ভাইরাসে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশ বিরল।

তাহলে এর উপকারিতা কী?
-সংক্রমণ এবং গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়া প্রতিরোধ করা।
বর্তমানে ব্যবহৃত কোভিড-১৯ টিকা, সংক্রমণ এবং মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়া প্রতিহত করতে ভাইরাসের ডেল্টা রূপের বিরুদ্ধেও খুবই কার্যকর বলে দেখা গেছে।

-স্কুল এবং কোচিং সেন্টারে পাঠের সময় ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা।
সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউয়ের সময়, স্কুলে শিশুদের মধ্যে এবং কোচিং সেন্টারের মতো প্রাইভেট টিউশনগুলোতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এধরনের গুচ্ছ সংক্রমণ রোধে টিকা কার্যকর বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।

-পরিবারের মধ্যে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনে।
শিশুদেরকে টিকা দেয়া হলে তা পরিবারের মধ্যে যেসব লোকজন টিকা নেননি বা যারা টিকা নিতে পারবেন না তাদের মধ্যে সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি কমে আসে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৯: শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত? (৩) শিশুদের বেলায় অল্প কয়েকটি মাত্র মারাত্মক ঘটনার খবর দেয়া হয়েছে।

উত্তর-৩২৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার সম্ভবত টিকাদান কর্মসূচি প্রাইমারি স্কুলের শিশুদের মধ্যে সম্প্রসারিত করে নেয়া বিবেচনা করে দেখতে পারে। শিশুদের টিকা দেয়ার উপর আমাদের এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে যেসব শিশু রোগী মারাত্মক রকম অসুস্থ হয়ে পড়েছে, এদের আনুপাতিক হারের উপর আমরা নজর দেবো।

এটা ইতিমধ্যে জানা গেছে যে অধিকাংশ শিশুর বেলায় হাল্কা উপসর্গ দেখা গেছে এবং অল্প কিছু শিশুই কেবল এমনকি করোনাভাইরাসে এরা সংক্রমিত হলেও মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখাচ্ছে যে ২০২১ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ করা উপাত্তে জাপানে আনুমানিক ১৬ লক্ষ ২৫ হাজার করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৪,২২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে মৃত্যুর হার ছিল প্রায় ০.৯ শতাংশ। সংক্রমণের মোট এই হিসাবের মধ্যে দশ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা হচ্ছে ৮৪ হাজারের মত, অন্যদিকে কিশোর-কিশোরী হচ্ছে প্রায় ১ লক্ষ ৬৩ হাজার। এদের মধ্যে ১১ থেকে ১৯ বছর বয়স-সীমার একজন রোগীর মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য এক গুচ্ছ পরিসংখ্যানে দেখা যায় গত বছরের জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়ে কোভিড-১৯এ যারা সংক্রমিত হয়েছিল, ১০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার হার সেখানে ছিল ০.০৯ শতাংশ, এবং কিশোর-কিশোরীদের বেলায় এমন কিছু দেখা যায় নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শারীরিক অসুস্থতা থাকা শিশুদের বেলায় মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত শিশুদের বেলায় অল্প কয়েকটি মাত্র মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল বলছে সংক্রমণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়িতে বয়স্কদের থেকে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং শিশুরা যেখানে বয়স্কদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে সেরকম ঘটনা ঘটেছে তুলনামূলকভাবে অল্প কয়েকটি। প্যানেল বলছে পরিস্থিতি ইনফ্লুয়েঞ্জার চাইতে ভিন্ন মনে হয়, যা কিনা প্রায়শই শিশুরা স্কুলে সংক্রমিত হওয়ার পর এদের থেকে পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৮: শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত? (২) জাপান আলোচনা শুরু করেছে।

উত্তর-৩২৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার প্রাথমিক স্কুলের শিশুদেরকেও টিকাদানের আওতায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। শিশু এবং টিকাদান সম্পর্কিত আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আমরা জাপানের শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখব।

২৮ মে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে, তারা ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার এবং তাদের জার্মান অংশীদার বিয়োনটেক’এর আবেদনের পরে এই বয়সের গ্রুপের জন্য করোনাভাইরাসের টিকাদান সম্প্রসারণ করে নেবে। মে মাসের ৩১ তারিখে, ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জাপানের আনুষ্ঠানিক টিকাদান কর্মসূচিতে সংযোজন করা হয়। ফলে এই বয়সের গ্রুপকে টিকা দেয়া শুরু হয়।

৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেয়াটা নিরাপদ এবং কার্যকর বলে প্রকাশ করা ফাইজার এবং বিয়োনটেক’এর ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরে, জাপান হয়তো যাচাই করে দেখবে দেশের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে এই বয়সী শিশুদের গ্রুপটিকে যোগ করা যেতে পারে কি না।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের টিকা নেয়ার আওতাভুক্ত করার এই যে পরিস্থিতি তা আমাদের কীভাবে দেখা উচিত? আমরা বিষয়টি নিয়ে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ নাকাইয়ামা তেৎসুও’র সাথে কথা বলি। তিনি কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকও। নাকাইয়ামা বলেন, যেহেতু এখন পর্যন্ত শিশুদের জন্য কোন টিকা নেই, তাই করোনাভাইরাসের বিস্তার সামাল দেয়ার একটি উপায় খুঁজে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ, কেননা বিদ্যালয়, বিদ্যালয় ছুটির পরে শিশুসেবা কর্মসূচি এবং কোচিং সেন্টারগুলোতে সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৭: শিশুদের কি টিকা দেয়া উচিত? (১) যুক্তরাষ্ট্র টিকাদানের ন্যূনতম বয়স ৫ বছরে নামিয়ে আনার কথা বিবেচনা করছে।

উত্তর-৩২৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিক স্কুলের শিশুদের টিকাদানের অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করতে শুরু করেছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে শিশুদের টিকা দেয়া সম্পর্কিত নানা বিষয় বিশ্লেষণ করা হবে। এর প্রথম পর্বে আমরা “আমেরিকার শিশু টিকাদান কর্মসূচির” দিকে নজর দিব।

গত ২০শে সেপ্টেম্বর মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার এবং তাদের জার্মানির অংশীদার বিয়োনটেক, যুক্তরাষ্ট্র’সহ অন্যান্য দেশে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী ২ হাজার ২শ ৬৮টি শিশুর উপর করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে চালানো একটি ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। এই পরীক্ষার আওতায় শিশুদের দেহে প্রাপ্তবয়স্কদের টিকার এক-তৃতীয়াংশ ডোজ দু’বার প্রয়োগ করা হয়। একমাস পরে গবেষকরা শিশুদের দেহে ভাইরাসের কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করা নিষ্ক্রিয়কারী এন্টিবডির পরীক্ষা চালালে জোরালো ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে সক্ষম হন। পরীক্ষায় শিশুদের দেহে ইমিউন ব্যবস্থার সাড়া দেয়া এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার যে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, তা নিয়মিত ডোজ দেয়া ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে পরিলক্ষিত হওয়া প্রতিক্রিয়ার অনুরূপ। অক্টোবরের ৭ তারিখ ঐ কোম্পানিগুলো ঘোষণা দেয় যে তারা ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে নিজেদের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন(এফডিএ)’এর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন দাখিল করেছে।

ফাইজারের টিকা প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ১৬ বছরের বেশি বয়সীদের দেহে প্রয়োগ করা হয়েছিল। গত মে মাসে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এই বয়সসীমা কমিয়ে আনা হয়। কোম্পানিগুলো ঘোষণা করে যে ৩১শে মার্চের একটি ক্লিনিকাল পরীক্ষায় এই বয়সের গ্রুপের জন্য তাদের টিকার নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এপ্রিলের ৯ তারিখ তারা এফডিএ’র কাছে ঐ বয়সের গ্রুপকে টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন জানায় এবং ১০ই মে টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন লাভ করে। আর মে মাসের ১৩ তারিখ থেকে ১২ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৬: নতুন সংক্রমণের ঘটনার তীব্র হ্রাস নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত (৫) ওয়াকিতা তাকাজি, জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক

উত্তর-৩২৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণের দৈনিক হিসাবে আগস্ট মাসের শেষ দিক থেকে পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রুত এই পতনের পেছনে কোন কারণ রয়েছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর আমাদের এই ধারাবাহিকের পঞ্চম ও শেষ পর্বে এবারে আমরা জাপানের জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ওয়াকিতা তাকাজি’র অভিমত জানব।

ওয়াকিতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধানের দায়িত্বও পালন করছেন। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণ হ্রাসের কারণ হিসাবে রাত্রিকালীন বিনোদন এলাকায় লোকজন কমে যাওয়া এবং টিকাদান কর্মসূচিতে অগ্রগতির উল্লেখ করলেও, তাতেই যে হ্রাসের দ্রুত গতির পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় তা না।

ওয়াকিতা বলেন, সংক্রমণের সর্বসাম্প্রতিক ঢেউয়ে সংক্রমিত কমবয়সী লোকেরা অংশত টিকার কার্যকারিতার কল্যাণে বয়স্ক ব্যক্তিদের সংক্রমিত করতে পারেননি। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে সর্বদাই তীব্র বৃদ্ধি বা তীব্র হ্রাসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তিনি বলেন, এমন সম্ভাবনাও আছে যে কমবয়সীদের মধ্যকার এই প্রবণতা সর্বসাম্প্রতিক ঢেউয়ে সাধারণ প্রবণতা হিসাবে দেখা দিয়েছে। ওয়াকিতা বলেন, বিভিন্ন কারণের মধ্যে কোন কারণ কতটা অবদান রেখেছে নতুন সংক্রমণ হ্রাসে, তা এখনও বোঝা যায়নি, তাই এ সম্পর্কে আরও গবেষণা ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।

করোনাভাইরাসের আর রূপান্তর ঘটেছে বলে মনে করেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়াকিতা বলেন, না, তিনি তা মনে করেন না। ওয়াকিতা বলেন যে তারা করোনাভাইরাসের জিনের নকশা বিশ্লেষণ করে, সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সময় যা ছিল তার সাথে এখনকার অর্থাৎ সংক্রমণ দ্রুত হ্রাস পেয়ে চলার সময়কার ভাইরাসের ধরনে সামান্যই পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেন, আপাতত যা দেখা যাচ্ছে তাতে ভাইরাস আগের চেয়ে দুর্বল হয়েছে বলে তিনি মনে করেন না।

এখন থেকে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়াকিতা বলেন, দেশের কিছু কিছু অংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বিদেশিদের মধ্যে, যাদের মধ্যে টিকা নেওয়ার হার কম। ওয়াকিতা বলেন, জনস্বাস্থ্যের নিরিখে যারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন এবং যেখানে লোকজনের পক্ষে টিকা পাওয়া কঠিন, সেরকম এলাকা ও সম্প্রদায়ে টিকাদান কর্মসূচি ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ সরকারের নেওয়া উচিত।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৫: নতুন সংক্রমণের ঘটনার তীব্র হ্রাস নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত (৪) অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশি, কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়

উত্তর-৩২৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণের দৈনিক হিসাবে আগস্ট মাসের শেষ দিক থেকে পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রুত এই পতনের পেছনে কোন কারণ রয়েছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর আমাদের এই ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে এবারে আমরা কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিশিউরা হিরোশিকে প্রশ্ন করেছি।

অধ্যাপক নিশিউরা হলেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য। তিনি বলেন, বর্তমানে চালানো বিশ্লেষণের ফলাফল একবার তার হাতে এসে পৌঁছানোর পর এই হ্রাসের কারণ তিনি পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে চান।

তবে নিশিউরা আরও বলেন যে একটি জিনিস তিনি নিশ্চয়তার সাথে বলতে পারেন এবং তা হল ভাইরাসের প্রজনন হার যার থেকে আভাস পাওয়া যায় যে একজন সংক্রমিত ব্যক্তি কতজনকে সংক্রমিত করার সম্ভাবনা রয়েছে তা ছুটি বা দীর্ঘ সপ্তাহান্তের পর বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন অংশে করোনাভাইরাসের কারণে জরুরি অবস্থা কার্যকর থাকা সত্ত্বেও ছুটির পর ঐ হার বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। তিনি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেন যে ছুটির সময় প্রতিটি ব্যক্তির আচরণ যেমন কদাচিৎ দেখা হয় এমন লোকজনের সাথে সাক্ষাৎ করা বা দূরে কোথাও ভ্রমণ করতে যাওয়া এবং বাহিরে নৈশভোজ করা, এগুলো সবই পরোক্ষ সংক্রমণ বিস্তারে অবদান রাখে বলে নিশিউরা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, টিকাদান কর্মসূচিতে জাপানে আরও অগ্রগতি অর্জিত হলেও অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি সংস্পর্শ বৃদ্ধি পেলে তা নিশ্চিত করে অপর একটি সংক্রমণের ঢেউ নিয়ে আনবে। সম্ভাব্য শীতকালীন প্রাদুর্ভাবের জন্য আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে বলে তিনি জানান।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৪: নতুন সংক্রমণের ঘটনার তীব্র হ্রাস নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত (৩) অধ্যাপক ইয়ামামোতো তারো, ট্রপিকাল মেডিসিন ইন্সটিটিউট, নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয়

উত্তর-৩২৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণের দৈনিক হিসাবে আগস্ট মাসের শেষ দিক থেকে পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রুত এই পতনের পেছনে কোন কারণ রয়েছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর আমাদের এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রপিকাল মেডিসিন ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ইয়ামামোতো তারোকে প্রশ্ন করেছি।

অধ্যাপক ইয়ামামোতো বলেছেন বিভিন্ন পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতিদিন জানানো ঘটনার হিসাব প্রকৃত অবস্থার সাথে কতটা সঠিকভাবে তুলনা করা যায় - তা যাচাই না করে সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পেছনের কারণ সম্পর্কে তিনি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারছেন না।

তবে অধ্যাপক ইয়ামামোতো আরও বলেছেন যে তার বিশ্বাস আরও বেশি লোকজন টিকার মধ্যে দিয়ে প্রতিষেধক ক্ষমতা লাভ করেছেন অথবা ভাইরাস আসলেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। তিনি বলছেন ভাইরাস মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠলে এবং কেউ যদি মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান থেকে এমন লক্ষ্য ধরে নেয় যে কোনো একটা মাত্রা পর্যন্ত অসুস্থতা সমাজে গ্রহণীয়, তাহলে সেই সহনীয় মাত্রা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। তিনি বলেছেন তার বিশ্বাস জাপান এমন এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে, সংক্রমণ পরিস্থিতি চিহ্নিত করার শর্তাবলী যেখানে ঘটনার সংখ্যা থেকে মারাত্মক অসুস্থ রোগী কিংবা মৃত্যুর সংখ্যার দিকে সরে যাচ্ছে।

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ সম্পর্কে ইয়ামামোতো বলেছেন, ভাইরাস রূপান্তরিত হলে এবং আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠলে ভাইরাস নির্মূল করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখা অবস্থায় মানুষকে হয়তো এখন যেমন দেখা যাচ্ছে তার চাইতে আরও কঠিন অবস্থায় কাটাতে হবে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে করোনাভাইরাসের সাথে কীভাবে সহাবস্থান করা যায় বিস্তৃত একটি দৃষ্টিকোণ থেকে সেটা ভেবে দেখা প্রয়োজন হলেও, ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে মানুষের নিজেদের জন্য এরকম ঝুঁকি থেকে যাবে যে লোকজন নিজেরা কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যরা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন অথবা মারাও যেতে পারেন। ইয়ামামোতো তাই বলেছেন যে কমপক্ষে মৃত্যু ঠেকিয়ে রাখার একটি নিরাপদ উপায় হিসাবে চিকিৎসা প্রক্রিয়া ও স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা অবশ্যই গড়ে নেয়া দরকার।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২৩: নতুন সংক্রমণের ঘটনার তীব্র হ্রাস নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত (২) আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজি

উত্তর-৩২৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে নতুন সংক্রমণের দৈনিক সংখ্যা আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ কমতে থাকে। এবারে ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে তীব্র পতনের নেপথ্যে কী রয়েছে তা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানব।

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াদা কোজি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাভাইরাস মোকাবিলা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য। তিনি বলছেন, এই সংক্রমণের সংখ্যায় পতনের সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে টিকাদান কর্মসূচির এগিয়ে চলা এবং মৌসুমী নিয়ামকসমূহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যার মাধ্যমে তিনি বলতে চেয়েছেন যে, কম তাপমাত্রা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের ভিতরে কর্মকাণ্ডকে কমিয়ে দেয় যা লোকজনকে একে অন্যের থেকে একটি দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিকে সহজ করে দেয়।
তবে তিনি এও বলছেন, বরং অনেকগুলো নিয়ামকের প্রতিটি ঠিক কতখানি কাজ করেছে এই সংক্রমণের সংখ্যা কমে যাওয়ার পিছনে তা নির্ধারণ করা কঠিন।
আসন্ন মাসগুলোতে কী প্রত্যাশা করা হবে তা বলতে গিয়ে ওয়াদা বলছেন, শীতকাল যত এগিয়ে আসতে থাকবে তখন সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে। তিনি আরও বলছেন, সংক্রমণ সম্ভবত দশের কোঠার শেষের দিকের বয়সীদের মধ্যে এবং বিশের কোঠার বয়সীদের মধ্যে প্রথম ছড়িয়ে পড়বে। এই বয়সের গ্রুপটির মধ্যে সংক্রমণ বা টিকা নেয়ার মাধ্যমে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার শতকরা হার কম। তিনি বলছেন, এই ভাইরাস তখন সম্ভবত তরুণ প্রজন্মের থেকে টিকা না নেয়া মধ্য-বয়সী বা প্রবীণ লোকজনকে সংক্রমিত করবে যারা হয়তো এই ভাইরাস থেকে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তিনি বলছেন, এই ভাইরাসের প্রবীণদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে যাদের এন্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতার পর্যায় কমে গেছে, কারণ তাদের টিকা নেয়ার পরে বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে গেছে।

প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলো নিয়ে ওয়াদা বলছেন, যেহেতু আমরা শীতের মাসগুলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তাই টিকাদানের হার যত বেশি হবে, ততই হয়তো আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থার ভেঙ্গে পড়া এড়িয়ে যেতে পারব। তিনি যারা এখনও টিকা নেননি, তাদেরকে অক্টোবর মাসের শেষ নাগাদের মধ্যে তাদের টিকার ডোজগুলো নিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানান। তবে তিনি এও বলছেন, টিকাদান কর্মসূচির অগ্রগতির অর্থ হতে পারে যে, এমনকি একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত সংক্রমণের সংখ্যা বাড়লেও, চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আগের মত চাপ হয়তো সৃষ্টি করবে না।

তিনি এই ইঙ্গিতও দেন যে, কিভাবে করোনাভাইরাসকে বুঝতে হবে এবং কতদূর পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তার উপর আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২২: নতুন সংক্রমণের ঘটনার তীব্র হ্রাস নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত (১) ওমি শিগেরু, সরকারের উপদেষ্টা প্যানেলের প্রধান

উত্তর-৩২২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই গ্রীষ্মে সংক্রমণের পঞ্চম তরঙ্গ চলাকালীন জাপানে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা একটি অভূতপূর্ব পর্যায়ে উন্নীত হয়, যা আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে ২৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তবে, মাসের শেষে এই সংখ্যা কমতে থাকে। অক্টোবরের ৫ তারিখ পর্যন্ত টানা তিনদিন ধরে এটি ১ হাজারের নিচে ছিল, যা সংক্রমণের চূড়ার সময় থেকে প্রায় ২৫ ভাগের ১ ভাগ। নতুন এই ধারাবাহিকে, সংক্রমণের তীব্র হ্রাসের নেপথ্যের কারণ নিয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামত শুনব।

জাপান সরকার ২৮ সেপ্টেম্বর জরুরি অবস্থা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেদিন অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের উপদেষ্টা প্যানেলের প্রধান ওমি শিগেরু এই সিদ্ধান্তের জন্য বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেন।

প্রথমত, আসন্ন দিনগুলোতে সাধারণত লোকজনের চলাচল বৃদ্ধি পাওয়া গ্রীষ্মকালীন ছুটির মত দীর্ঘ ছুটি বা সপ্তাহান্তের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম থাকবে। এর মানে হল, মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাস সংক্রমণের সুযোগও তুলনামূলকভাবে কমে যাবে।

দ্বিতীয়ত, নতুন সংক্রমণের বৃদ্ধির কারণে রোগীর সংখ্যা হাসপাতালগুলোর শয্যা ছাড়িয়ে যাওয়ায়, অনেক রোগীই বাড়িতে থেকে সুস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন। আর এরকম খবর শোনার পরে লোকজন নিজেদের মধ্যে সংকটের একটি অনুভূতি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

তৃতীয়ত, বিনোদন এলাকাগুলোতে রাতের বেলা পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ানোর ঘটনা কমে গেছে। এসময় সাধারণত সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

চতুর্থত, টিকাদান কর্মসূচির অগ্রগতি, যা শুধুমাত্র বয়স্কদের মধ্যে নয় বরং অপেক্ষাকৃত তরুণদের মধ্যেও নতুন সংক্রমণের ঘটনা কমিয়ে এনেছে।

পরিশেষে, তাপমাত্রা এবং বৃষ্টির মত আবহাওয়া পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে, যেগুলোকে ঝুঁকির উপাদান বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

ওমি তার এই মত তুলে ধরেন যে শীতল আবহাওয়ায় লোকজন বাইরে বেশি সময় কাটানোর প্রবণতা দেখায়, যা বেশি সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা থাকা সঙ্কীর্ণ স্থানগুলোতে পারস্পরিক যোগাযোগ কমিয়ে আনে। তবে তিনি বলেন, এটি বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই করা সম্ভব নয়। ওমি বলেন, নতুন সংক্রমণ হ্রাসের ক্ষেত্রে কোন কারণগুলো ঠিক কতটুকু ভূমিকা রেখেছে, সেটি খতিয়ে দেখা তিনি অব্যাহত রাখবেন।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২১: গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকির মুখে যারা রয়েছেন (২) নতুন ব্যারোমিটারে নির্দেশিত বয়সের ভিত্তিতে ভাগ করা কোন্‌ গ্রুপের কতটা ঝুঁকি

উত্তর-৩২১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও ওষুধ বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্র এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা মিলে একটি ব্যারোমিটার তৈরি করেছেন যেখানে করোনাভাইরাসের রোগীদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি কতটা তা পয়েন্ট ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয়েছে।

এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আমরা দেখবো বয়সের নিরিখে বিচার করে রোগীর গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে এই ব্যারোমিটার ব্যবস্থায় কী নির্দেশ করা হচ্ছে।

ব্যারোমিটারে বয়সের ভিত্তিতে রোগীদের তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে --- ১৮ বছর থেকে ৩৯ বছর, ৪০ বছর থেকে ৬৪ বছর এবং তৃতীয় গ্রুপটি হচ্ছে ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী রোগীদের নিয়ে।

১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ব্যারোমিটারে পুরুষদের ১ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। ৩০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারী পুরুষকেও দেওয়া হয়েছে ১ পয়েন্ট। যাদের বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই ২৩ থেকে ২৯ দশমিক ৯’এর মধ্যে তাদের দেওয়া হয়েছে ১ পয়েন্ট এবং যাদের বিএমআই ৩০ বা তার চেয়ে বেশি সেই ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে ২ পয়েন্ট। কার কত বিএমআই তা নির্ধারণ করা হয় সেই ব্যক্তির কিলোগ্রামে মাপা দেহের ওজনকে মিটারে মাপা দৈহিক উচ্চতা’র বর্গফল দিয়ে ভাগ করে। বিএমআই’এর হিসেব শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।
ব্যারোমিটারে ক্যানসারের রোগীদের দেওয়া হয়েছে ৩ পয়েন্ট।

ব্যারোমিটারে এই বয়সসীমার কোভিড -১৯’এর রোগী যাদের ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারচেয়ে বেশি তাপমাত্রার জ্বর আছে, তাদের ২ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। ২ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে সেই রোগীদেরও যাদের নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ হয়। ১ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে যাদের নিঃশ্বাসের কষ্ট আছে তাদের।

ব্যারোমিটার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই বয়সসীমার লোকেরা যারা নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সময় ৬ বা তার চেয়ে বেশি পয়েন্ট পান, তাদের উপসর্গ গুরুতর হয়ে ওঠার আশংকা খুব বেশি। তাই তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা দরকার।

৪০ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ব্যারোমিটারে পুরুষদের ১ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সীদেরও দেওয়া হয়েছে ১ পয়েন্ট। ৬০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী যারা তাদের দেওয়া হয়েছে ৩ পয়েন্ট।
যাদের ২৫ বা তার চেয়ে বেশি বিএমআই তাদের ক্ষেত্রে ২ পয়েন্ট আর ডায়াবেটিসের রোগীদের ১ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।

এই বয়সসীমার কোভিড-১৯’এর রোগীদের ক্ষেত্রে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি জ্বর থাকলে ব্যারোমিটারে তাদের জন্য ২ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। নিঃশ্বাসের কষ্ট থাকা রোগীদেরও ২ পয়েন্ট। কাশি থাকলে এবং ক্লান্ত বোধ করলে সেই রোগীদের দেওয়া হয়েছে ১ পয়েন্ট করে।

ব্যারোমিটারে ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সময় ৫ বা তার চেয়ে বেশি পয়েন্ট পেলে সেই ব্যক্তিদের গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার আশংকা খুব বেশি। তাই তাদের উপযুক্ত চিকিৎসা দরকার।

৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ৭৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়েস যাদের, ব্যারোমিটারে তাদের দেওয়া হয়েছে ২ পয়েন্ট। যাদের বিএমআই ২৫ বা তার চেয়ে বেশি তাদেরও ২ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।

২ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে সেই ব্যক্তিদেরও যাদের হৃৎযন্ত্রের সমস্যা আছে আগে থেকেই। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন যারা তাদেরও ২ পয়েন্ট। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত সমস্যা থাকা রোগীদের দেওয়া হয়েছে ১ পয়েন্ট।

এই বয়সসীমার লোকেদের মধ্যে যদি কোভিড-১৯’এর রোগী থাকে এবং জ্বর থাকে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা আরও বেশি, ব্যারোমিটারে তার জন্য দেওয়া হয়েছে ৪ পয়েন্ট। নিঃশ্বাসের কষ্টের জন্যেও ৪ পয়েন্ট। কাশির জন্যে ১ পয়েন্ট।

ব্যারোমিটারে ইঙ্গিত দেওয়া হয় এই বয়সসীমার ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ৩ বা আরও বেশি পয়েন্ট পাবেন, তাদের গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার আশংকা খুব বেশি। তাই তাদের সময়মত উপযুক্ত চিকিৎসা দরকার এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে দেখতে হবে যাতে তারা উপেক্ষিত না হন।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩২০: গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকির মুখে যারা রয়েছেন (১) নতুন এক পূর্বাভাসসূচকের উন্নয়ন – বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং ওষুধ বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্র

উত্তর-৩২০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং ওষুধ বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্র অন্যান্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে রোগীদের করোনাভাইরাসে গুরুতরভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি মেপে দেখতে বিভিন্ন পয়েন্ট ব্যবহার করে একটি পূর্বাভাসসূচক উন্নয়ন করেছে। পয়েন্টের সংখ্যা বেশি যেসব রোগীর, গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তাদের অনেক বেশি। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন রয়েছে এমন রোগীদের অগ্রাধিকার দেয়ার সময় এই সূচক ব্যবহার করা যেতে পারে। পূর্বাভাসসূচক নিয়ে আমাদের দুই পর্বের ধারাবাহিকের প্রথম পর্ব এটি।

২০২০ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সারা জাপানে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এমন প্রায় সাড়ে চার হাজার রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেন গবেষকরা। অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়েছে এধরনের মাঝারি এবং গুরুতরভাবে অসুস্থ লোকজনের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখার পর তারা পয়েন্ট ভিত্তিক এক সূচক উন্নয়ন করেন যেটা রোগ কতটা গুরুতর সেই মাত্রা মেপে দেখবে।

ঐ সূচক রোগীদেরকে বিভিন্ন বয়সের গ্রুপে বিভক্ত করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ৪০ থেকে ৬৪’র মধ্যে বয়সের গ্রুপটিতে রোগী যদি পুরুষ হয় তবে তাকে ১ পয়েন্ট দেয়া হবে। নারী এবং পুরুষ, যাদের বডি মাস ইন্ডেক্স বা বিএমআই ২৫ এর বেশি, তাদেরকে স্থূলকায় হিসাবে গণ্য করে ২ পয়েন্ট দেয়া হবে। বিএমআই দেখে একজন মানুষের দৈহিক গঠন বোঝা যায়। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্ররোগ রয়েছে এমন লোকজনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১ পয়েন্ট বরাদ্দ করা হবে। ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর জ্বর থাকলে আরও ২ পয়েন্ট যোগ করা হবে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হলে অতিরিক্ত ২ পয়েন্ট, কাশির ক্ষেত্রে ১ পয়েন্ট এবং শারীরিক ক্লান্তির জন্য ১ পয়েন্ট দেয়া হবে।

সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের সময় সংগ্রহ করা উপাত্তের সাথে ঐ সূচক পরীক্ষা করে দেখা যায়, মোট পয়েন্টের সংখ্যা ৫ এমন ৪০ থেকে ৬৪’র মধ্যে বয়স রোগীদের ২৩ শতাংশ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মোট পয়েন্টের সংখ্যা ১০, এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৬ শতাংশে।

গবেষকরা বলছেন যে পাঁচের বেশি পয়েন্ট রয়েছে যেসব রোগীর, ভাইরাস দ্রুত বিস্তার লাভের সময় তাদেরকে উচ্চ মাত্রার ঝুঁকির গ্রুপে শ্রেণিভুক্ত করতে হবে। ঘনিষ্ঠভাবে তাদের উপর নজর রাখতে হবে এবং যত শিগগির সম্ভব চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

জাপানের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং ওষুধ বিষয়ক জাতীয় কেন্দ্রের একজন সদস্য, ইয়ামাদা গেন বলেন যে ভাইরাসের আরও একটি ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এবং বাড়িতে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে, গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকা রোগীদের চিহ্নিত করে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানে এই সূচক দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা হবে বলে তারা আশা করছেন। তিনি আরও বলেন, এই সূচকে সবধরনের ঝুঁকির সম্ভাবনা অন্তর্ভুক্ত না থাকলেও আপনি ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপে শ্রেণিভুক্ত হবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত নিতেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৯: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (৮) করোনাভাইরাস অব্যাহত থাকা কীভাবে সামাল দেয়া দরকার।

উত্তর-৩১৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে করোনাভাইরাস মহামারিকে নিয়ে মানুষের মনোভাব ও আচার আচরণের উপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে এনএইচকে’র চালানো জরিপের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। সারা জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১ হাজার ২শ ব্যক্তির উপর এই জরিপ চালানো হয়।

আমাদের এই সর্বশেষ পর্বে আমরা জরিপের শেষ প্রশ্ন – করোনাভাইরাস অব্যাহত থাকা মানুষের কীভাবে সামাল দেয়া উচিত, সেদিকে নজর দেব।

সবচেয়ে বড় অংশ, অর্থাৎ ৬৩.৬ শতাংশ বলেছে মানুষের উচিত হবে কাজকর্মের উপর আরোপিত সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখে মহামারির সমাপ্তি টানার উপর অগ্রাধিকার প্রদান করা; অন্যদিকে ৭.৫ শতাংশ বলেছে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে নিয়ে আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডের উপর মানুষের অগ্রাধিকার প্রদান করা দরকার। এর অর্থ হচ্ছে যারা বলছেন নিয়ন্ত্রণ সহজ করা দরকার, তাদের চাইতে আট গুণ বেশি উত্তরদাতা বলেছেন এমন কি আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড বিসর্জন দিয়ে হলেও মহামারি বন্ধ করার উপর মানুষের অগ্রাধিকার প্রদান করা দরকার।

ভিন্ন অবস্থান ও ভিন্ন বয়স-সীমার মানুষের মধ্যে মহামারি, টিকা এবং দৈনন্দিন জীবনের উপর আরোপিত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানারকম চিন্তা ও উদ্বেগ সত্ত্বেও নিজেদের শান্তিপূর্ণ প্রাত্যহিক জীবন ফিরে পাওয়ায় মানুষের ঐকান্তিক ইচ্ছার প্রকাশ জরিপে ফুটে উঠেছে।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৮: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (৭) লোকজনের আচরণ পরিবর্তনে তাদের জন্য কী প্রয়োজনীয়?

উত্তর-৩১৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনোভাব ও আচরণের উপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে এনএইচকে’র চালানো জরিপের ফলাফলের উপর ধারাবাহিক এই আলোকপাত আমরা অব্যাহত রাখছি। সারা জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১ হাজার ২শ ব্যক্তির উপর এই জরিপ চালানো হয়। এই পর্বে আমরা লোকজনের আচরণ পরিবর্তনে তাদের জন্য কী প্রয়োজনীয় বলে তারা ভাবছেন, সেই বিষয়ের উপর নজর দিব।

টিকা নেয়ার পাশাপাশি, আচরণ পরিবর্তনকে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধের জন্য প্রধান একটি নিয়ামক বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই জরিপে জিজ্ঞাসা করা হয়, লোকজনের আচরণ পরিবর্তন করতে কী ধরনের কর্মকাঠামো বা ব্যবস্থার প্রয়োজন। এই জরিপে একের অধিক উত্তর দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

উত্তরদাতাদের সবচেয়ে বড় অংশ বা ৬৯.২% বলেন, আর্থিক ক্ষতিপূরণ।
৪৫% বলেন, ভাইরাস রোধী পদক্ষেপকে বাধ্যতামূলক করা এবং লঙ্ঘনকারীর জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা।
৪৩.৭% বলেন, বাড়িতে বসে কাজের পরিসর সম্প্রসারণ।
৪৩.২% বলেন, সন্তোষজনক ব্যাখ্যা এবং সরকার ও বিশেষজ্ঞদের বার্তা।
৩৪.৯% বলেন, অনলাইন স্কুল শিক্ষা প্রদান।

এই জরিপে এও জিজ্ঞাসা করা হয়, কী ধরনের শাস্তি’সহ বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ তারা গ্রহণ করবেন।

৬৬.৫% বলেন, মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা।
৫৪.৪% বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাধ্যতামূলক করা।
৪০.৩% বলেলন, টিকা নেয়াকে বাধ্যতামূলক করা।
৩৪.৮% বলেন, খাওয়া এবং পান করার স্থাপনাসমূহের খোলা থাকার ঘণ্টার উপর বিধিনিষেধ বাধ্যতামূলক করা।
২৪.১% বলেন, বাইরে যাওয়ার জন্য লোকজনের অনুমতি গ্রহণকে অপরিহার্য করা।
৬.৮% বলেন, তারা কোনরকম বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ মেনে নিতে চান না।

এই জরিপ সম্পর্কিত ধারাবাহিকের পরবর্তী ও শেষ পর্বে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য করোনাভাইরাস কীভাবে সামাল দেয়া হবে সে সংক্রান্ত লোকজনের দৃষ্টিভঙ্গির উপর আমরা নজর দিব।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৭: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (৬) করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে মানুষ কী ভাবছেন?

উত্তর-৩১৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনোভাব ও আচরণের উপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে এনএইচকে’র চালানো জরিপের ফলাফলের উপর ধারাবাহিক এই আলোকপাত আমরা অব্যাহত রাখছি। সারা জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১ হাজার ২শ ব্যক্তির উপর এই জরিপ চালানো হয়।
এই পর্বে আমরা করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে লোকজন কী ভাবছেন, সেই বিষয়ের উপর নজর দিব।

স্ব-উদ্যোগে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং অন্যান্য ভাইরাস রোধী বিধিনিষেধের সমাপ্তির জন্য একটি নির্ণায়ক পদক্ষেপ হিসেবে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে জনমনে একটি উচ্চ প্রত্যাশা রয়েছে।

টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে তারা কী ভাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ৭৮ শতাংশ লোকজন বলেছেন, তারা মনে করেন টিকা নেয়া উত্তম। ১৯.৪ শতাংশ বলেন, এটির পক্ষে বা বিপক্ষে বলা সম্ভব নয়। আর ২.৬ শতাংশ বলেন, তারা টিকা নেয়াকে ভাল কিছু বলে মনে করেন না।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, সকল বয়স গ্রুপের প্রায় ৭০ শতাংশই উত্তর দিয়েছেন যে তারা বিশ্বাস করেন টিকা নেয়াটা উত্তম। বয়স্ক গ্রুপদের মধ্যে ইতিবাচক প্রবণতা আরও সুস্পষ্ট ছিল।

আর হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, কিশোরদের মধ্যে ৭.১ শতাংশ মনে করেন যে টিকা না নেয়াই ভাল। অনুরূপ মতামত নিয়ে এরপরে অবস্থান করছেন বয়স ২০’এর কোঠার ৪.৬ শতাংশ এবং ৩০’এর কোঠার ৪ শতাংশ লোকজন। এতে দেখা যাচ্ছে যে বয়স্কদের তুলনায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটি বড় অংশ টিকা ছাড়াই চলতে চাইছেন।

কেন করোনাভাইরাস টিকা সম্পর্কে তাদের নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু লোকজন এগুলোর নিরাপত্তা এবং সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ ব্যক্ত করেন।
২০’এর কোঠার বয়সী একজন প্রাতিষ্ঠানিক কর্মী বলেন, নিরাপত্তা এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে টিকার সম্ভাব্য প্রভাব এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে। কিশোর বয়সী এক শিক্ষার্থী জরিপের উত্তরে বলেন, তিনি সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং টিকায় সংশ্লিষ্ট নয় এরকম পদার্থ থাকার সম্ভাবনা নিয়ে ভীত।

জরিপে অংশ নেয়া অনেকে বলেছেন, টিকা নেয়া উচিত হবে কিনা, সেটি নিয়ে তারা এখনও ভাবছেন। ২০’এর কোঠার বয়সী একজন কোম্পানি কর্মী তার জবাবে বলেন, টিকাদান কর্মসূচি সবেমাত্র শুরু হওয়ায় পর্যাপ্ত তথ্য এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। ৫০’এর কোঠার বয়সী এক নারী বলেন, টিকা নেয়া উচিত কিনা, সেটি নিয়ে মতামতের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাধারণীকরণ করা কঠিন।

আমাদের পরবর্তী পর্বে, করোনাভাইরাসকে আরও ভালভাবে মোকাবিলা করার জন্য নিজেদের আচরণে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে লোকজনের কী করা উচিত, সেই বিষয়ের উপর আমরা নজর দিব।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৬: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (৫) লোকজন এভাবে আর কতদিন চালাতে পারবেন বলে মনে করেন

উত্তর-৩১৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনোভাব ও আচরণের উপর এনএইচকে একটি জরিপ পরিচালনা করে সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ার দিকে। আমরা কয়েকটি পর্বে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরছি। সারা জাপানে ১৫ বছর থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১ হাজার ২শো লোকের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধের জন্য আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধ মেনে আর কত দিন চালানো সম্ভব? এবারে জানবো লোকেরা এই প্রশ্নের কী উত্তর দিয়েছেন।

জাপানের লোকেরা এখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আরোপিত কঠোর নিয়ম অনুসরণ ক’রে চলেছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী লোকেদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আর কতদিন তারা এই অবস্থায় চালিয়ে যেতে পারবেন বলে মনে করেন।

৪২ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, যতদিন না সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে। ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, বছরের শেষ পর্যন্ত। জানি না, ঠিক বলতে পারছি না - মন্তব্য ১৮ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতার। এ অবস্থা আর সহ্য করা যাচ্ছে না - বলেছেন ১০ দশমিক ৭ শতাংশ উত্তরদাতা। ৫ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, আরও মাস ছয়েক চালিয়ে দেওয়া যাবে। এইভাবে আরও ১২ মাস চালিয়ে দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৩ শতাংশ উত্তরদাতা।

অর্ধেকের কাছাকাছি উত্তরদাতা করোনাভাইরাস মহামারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত বিধিনিষেধ মেনে চলবেন বলে জানালেও, এক চতুর্থাংশের ওপর উত্তরদাতা কিন্তু বলেছেন এভাবে আর চালানো যাবে না অথবা বছরের শেষ অব্দি কোনোরকমে চালিয়ে দেওয়া যাবে অর্থাৎ জরিপ যখন নেওয়া হয় তখনকার নিরিখে আর চার মাস।

ধারাবাহিকের পরের পর্বে করোনাভাইরাসের টিকা সম্পর্কে লোকজনের অভিমত জানার চেষ্টা করবো আমরা।

এই তথ্যগুলো অক্টোবর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৫: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (৪) মানুষের আত্মসংযম হ্রাস

উত্তর-৩১৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনোভাব ও আচরণের উপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে এনএইচকে’র চালানো জরিপের ফলাফলের উপর ধারাবাহিক এই আলোকপাত আমরা অব্যাহত রাখছি।
সারা জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সের ১,২০০ জনকে জরিপের প্রশ্নের উত্তরে রাখা হয়েছে। কেন কিছু লোক আর আগের মত আত্মসংযমের চেষ্টা চালাচ্ছেন না এবারে আমরা সেদিকে নজর দেব।

গত বছর এপ্রিল মাসে জরুরি অবস্থা যখন প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল সেই সময়ে তারা যেভাবে আত্মসংযম বজায় রেখেছিলেন এখনো ঠিক সেই মাত্রায় আত্মসংযমী কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে প্রায় ২০ শতাংশ বলেন যে তারা তা নন। আমরা এর কারণ জিজ্ঞাসা করি। একাধিক উত্তর থেকে তাদেরকে বেছে নিতে বলা হয়।

সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বা ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ বলেছেন যে আত্মসংযম বজায় রাখার বিষয়ে তারা ক্লান্তি অনুভব করছেন। ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ বলেন যে অধিক সংখ্যক লোক এখন টিকা পেয়ে যাচ্ছেন এবং ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ বলেন যে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ নেয়ার কারণে আগের মত আত্মসংযমী নন। ৩১ দশমিক ১ শতাংশ বলেন যে তাদের পক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে উঠছে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ বিধিনিষেধ কতদিন মেনে চলতে পারবেন বলে লোকজনের ধারণা আমাদের আগামী পর্বে সেই দিকে আমরা দৃষ্টি দেব।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৪: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (৩) মানুষের আত্মসংযম মাত্রার রদবদল

উত্তর-৩১৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মনোভাব ও আচরণের উপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে এনএইচকে’র চালানো জরিপের ফলাফলের উপর ধারাবাহিক এই আলোকপাত আমরা অব্যাহত রাখছি। সারা জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সের ১,২০০ জনকে জরিপের প্রশ্নের উত্তরে রাখা হয়েছে। এদের আত্মসংযমে কতটা রদবদল ঘটেছে, এবারে আমরা সেদিকে নজর দেব।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ অব্যাহত থাকা অবস্থায় এবং অনেক লোকজন তাদের জীবন নিয়ে নানাভাবে উদ্বিগ্ন থাকায় মানুষের আত্মসংযম মাত্রায় কোনো রদবদল ঘটেছে কি?

যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল যে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে জরুরি অবস্থা যখন প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল সেই সময়ের তুলনায় নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ তারা কতটা মেনে চলেছেন, যারা উত্তর দিয়েছেন যে আগের চাইতে আরও বেশি তারা তা করেছেন এদের সাথে যারা বলেছেন তাদের মেনে চলা একই রকমের ছিল, এদের যোগ করে মোট হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ।

সবচেয়ে বড় সংখ্যক লোকজন, অর্থাৎ ৫৪ শতাংশ বলেছেন কোনরকম রদবদল তাদের বেলায় ঘটেনি। অন্যদিকে আগের চাইতে আরও বেশি আত্মসংযমী হয়ে উঠার কথা যারা বলেছেন, তাদের হার ছিল ২৬.৬ শতাংশ এবং আগের চাইতে খুব বেশি কিছু যারা করেননি বলে জানিয়েছেন তাদের হার ছিল ১৯.৪ শতাংশ।

এরকমও প্রমাণিত হয়েছে যে তরুণ উত্তরদাতাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ বলেছেন গত বছরের মত একই ধরনের আত্মসংযম তারা দেখাননি। ৬০এর ঘরে বয়সীদের মধ্যে ১২.৫ শতাংশ, ৫০এর ঘরে বয়সীদের বেলায় ১৫.৫ শতাংশ এবং ৪০এর ঘরে বয়সীদের মধ্যে ১৭.৪ শতাংশ যখন বলেছেন যে একই মাত্রার নিয়ন্ত্রণ তারা মেনে চলেননি; ৩০এর ঘরে বয়সীদের মধ্যে ২২ শতাংশ, ২০এর ঘরে বয়সীদের বেলায় ২৮.৫ শতাংশ এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ২৮.৯ শতাংশ বলেছেন খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ তারা মেনে চলেননি।

এসব লোকজন কেন গত বছরের এপ্রিল মাসে যেভাবে তারা আত্মসংযম বজায় রাখছিলেন সেই মাত্রার আত্মসংযমী ছিলেন না, আমাদের আগামী পর্বে আমরা সেদিকে দৃষ্টি দেব।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১৩: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (২) বর্তমান উদ্বেগ

উত্তর-৩১৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এই ধারাবাহিকে, করোনাভাইরাসের প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ সম্পর্কে, জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১ হাজার ২শ মানুষের উপর সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এনএইচকে’র চালানো এক জরিপের ফলাফলের দিকে আমরা নজর দিব। এবারে আমরা ঠিক এই মুহূর্তে লোকজন সবচেয়ে বেশি কী নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন সে বিষয়ে সমীক্ষায় কী উঠে এসেছে তার উপর আলোকপাত করছি।

উত্তরদাতাদের এই প্রশ্নের জন্য কয়েকটি উত্তর থেকে নিজের উত্তরটি বেছে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সবচেয়ে বেশি উত্তরদাতা, ৬১.৪ শতাংশ বলেন, তারা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন, ৪৯.৫ শতাংশ উত্তর দেন বাড়িতে বসে সংক্রমিত হওয়া বা তাদের সন্তানরা সংক্রমিত হয়ে পড়ছে এবং ৩৩.৩ শতাংশ বলেন, কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে আত্মসংযম পদক্ষেপের (জরুরি অবস্থার ঘোষণা সহ) আরও প্রলম্বণ।

এই প্রশ্নের অতিরিক্ত মন্তব্যের অংশে, অনেকেই বলেন, তারা বিশেষ করে নিজেরা আক্রান্ত হয়ে পড়া নিয়ে আতঙ্কিত।

৪০-এর কোঠার একজন পুরুষ কর্মী বলেন, তিনি এই নিয়ে উদ্বিগ্ন যে, যদি তিনি এই রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তার চিকিৎসা করবে কিনা? ৫০-এর কোঠার একজন খণ্ডকালীন চাকরিজীবী নারী বলেন, তিনি পরিবারের মধ্যে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া বা উপসর্গের দ্রুত বিস্তার নিয়ে চিন্তিত, কেননা এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে সংক্রমিত অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে না পারার কারণে বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

অন্যান্যরা বলেন, তারা তাদের চাকরি এবং আয় বা দীর্ঘায়িত আত্মসংযম পদক্ষেপ নিয়ে মানসিকভাবে চাপ অনুভব করছেন।

৪০-এর কোঠার একজন স্বনিয়োজিত পুরুষ বলেন, তিনি কম পরিমাণ কাজের কারণে কমে যাওয়া তার আয় থেকে মাসিক প্রদেয়গুলো ঠিকমত পরিশোধ করে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন।

পরবর্তী পর্বে লোকজনের আত্মসংযমের মাত্রার পরিবর্তনের উপর আলোকপাত করা হবে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১২: কোভিড-১৯’এর প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ (১) আপনি করোনাভাইরাস নিয়ে কতটা ভীত?

উত্তর-৩১২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে, করোনাভাইরাসের প্রতি লোকজনের মনোভাব এবং আচরণ সম্পর্কে, জাপান জুড়ে ১৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১ হাজার ২শ মানুষের উপর সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে এনএইচকে’র চালানো এক জরিপের ফলাফলের দিকে আমরা নজর দিব। এই ফলাফল মূলত লোকজনের বিচিত্র চিন্তা ও উদ্বেগের পাশাপাশি কর্মকাণ্ডের উপর জারি থাকা দীর্ঘায়িত বিধিনিষেধ এবং টিকাদান কর্মসূচির মত বিষয়গুলো নিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে বিরাজমান পার্থক্যের উপর আলোকপাত করেছে।

করোনাভাইরাস নিয়ে তারা কতটা উদ্বিগ্ন, এমন প্রশ্নের জবাবে ৫০.৪ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন তারা অত্যন্ত ভীত, ৪২.৪ শতাংশ বলেছেন তারা মোটামুটি ভীত এবং ৬.১ শতাংশ তারা অতটা ভীত নন বলে উল্লেখ করেন। এই ফলাফলে দেখা যায় যে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ৯৩ শতাংশই করোনাভাইরাস নিয়ে ভীত।

এরপরের পর্বে, আমরা লোকজন এখন কী নিয়ে উদ্বিগ্ন, সেই বিষয়ের উপর নজর দিব।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১১: করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া নিয়ে জরিপ (২) ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের অস্বাভাবিকতায় ভুগছেন সবচেয়ে বেশি লোক

উত্তর-৩১১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সর্বসাম্প্রতিক এই ধারাবাহিকে আমরা করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করছি।

টোকিও’র সেতাগায়া ওয়ার্ড ওই এলাকায় কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী লোকজনের ওপর জরিপ পরিচালনা করে এবং তাতে দেখা যায় শতকরা ৫০ ভাগ উত্তরদাতা অবসাদ ও ক্লান্তিতে ভোগার কথা জানিয়েছেন।

প্রায় ৫৪ শতাংশ অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক উত্তরদাতা তাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের অস্বাভাবিকতার কথা জানিয়েছেন। ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা ক্লান্তিতে ভোগার কথা বলেছেন। ৪৫ শতাংশ জিভের স্বাদ হারানোর কথা জানিয়েছেন এবং ৩৪ শতাংশ উত্তরদাতা একটানা কাশিতে ভোগার অভিযোগ করেছেন।

বয়স-বিশেষে ভুক্তভোগীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় কিছু কিছু পার্থক্যের কথা জানা গেছে জরিপের ফলাফলে।

ঘ্রাণের ক্ষমতা হারানোর ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে কৈশোর থেকে আরম্ভ করে ৩০’এর কোঠায় যাদের বয়স, তাদের মধ্যে। ৪০’এর ঘরের ওপরে যাদের বয়স তাদের মধ্যে অবসাদ ও ক্লান্তিতে ভোগার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

কিছু উত্তরদাতা চুল পড়া এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া সহ দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া ছয় মাসের ওপর স্থায়ী হয়েছে বলে জানান।

সেতাগায়া ওয়ার্ড এই দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার প্রভাব বিশ্লেষণ করবে এবং ভবিষ্যত পাল্টা-ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করবে।

সেতাগায়া’র মেয়র হোসাকা নোবুতো বলেন বহু লোক এখনও তাদের কাজকর্ম এবং দৈনন্দিন জীবনে করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন, অথচ এদের সাহায্য করার ব্যবস্থাতে এখনও অপ্রতুলতা রয়ে গেছে। মেয়র আভাস দেন যে তিনি প্রত্যাশা করছেন এই জরিপ থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে সহায়ক হবে যে ব্যবস্থায় করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় অগ্রগতি অর্জনের পাশাপাশি একই সাথে কোভিড-১৯’এর দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী রোগীদের জন্যেও উপযুক্ত চিকিৎসা উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া হবে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১০: করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া (১) প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকজনের মধ্যে অর্ধেকের বেলায় দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা উপসর্গের প্রমাণ দিচ্ছে জরিপ।

উত্তর-৩১০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার উপর আলোকপাত করা হচ্ছে।

হাসপাতাল কিংবা বাড়িতে যারা করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন, সেরকম লোকজনের উপর টোকিও’র সেতাগায়া ওয়ার্ড ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে জরিপ চালায়।

যে ৩,৭১০ জন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, এদের মধ্যে প্রায় ১,৮০০ জন, যা কি না মোট সংখ্যার প্রায় অর্ধেক, জানিয়েছেন যে দীর্ঘ সময় ধরে রোগের উপসর্গ তাদের মধ্যে ছিল। বিশেষ করে ৩০ থেকে ৫০’এর ঘরে বয়সের যারা জবাব দিয়েছেন, তাদের মধ্যে এই হার ছিল খুবই উঁচু, অর্ধেকের বেশি যেখানে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়ার কথা বলেছেন।

কোন ধরনের উপসর্গে এরা ভুগেছেন, পরবর্তীতে আমরা সেদিকে নজর দেবো।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৯: করোনাভাইরাসের ওষুধ (১১) করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যবহার করতে পারা বিদ্যমান ওষুধ

উত্তর-৩০৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে ভাইরাস মোকাবিলা করা ওষুধের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় ইতিমধ্যে ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া ওষুধ নিয়ে আলোচনা করব।

জাপান সরকার এখন পর্যন্ত নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ৪ ধরনের ওষুধ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। এগুলো ছাড়াও, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধেও কার্যকর কিনা তা যাচাই করার জন্য অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিদ্যমান ওষুধ নিয়েও ক্লিনিকাল পরীক্ষা চলমান রয়েছে।

বিশেষ করে এখন পর্যালোচনারত বিদ্যমান ওষুধগুলো হচ্ছে অ্যাকটেমরা, আভিগান, আলভেস্কো, ফুথান এবং আইভারমেক্টিন।
অ্যাকটেমরা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস’এর চিকিৎসায় এবং আভিগান ইনফ্লুয়েঞ্জার একটি নতুন স্ট্রেইনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। আলভেস্কো অ্যাজমা’র উপসর্গকে দমিয়ে রাখতে ব্যবহৃত হচ্ছে, অন্যদিকে ফুথান সেইসব রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যেগুলো তীব্র প্যানক্রিয়াটাইটিস বা রক্ত জমাট বাধার মত রোগকে উস্কে দেয়। আইভারমেক্টিন পরজীবী জীবাণুর কারণে সৃষ্ট সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ হিসেবে পরিচিত।

আইভারমেক্টিন অনলাইন শপিং সাইটগুলো থেকে সহজেই কেনা যায়। কোভিড-১৯’এর চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে বলে ধারণা করা এই ওষুধটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

কিছু কিছু ক্রেতা নিজেদের দায়িত্বে নিজেরাই এই ওষুধটি কিনছেন।

তবে, বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানিগুলো জানাচ্ছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ওষুধটির কার্যকারিতা এখনও ক্লিনিকাল পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে দেখা হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগতভাবে রোগীদের নিজেদের ইচ্ছামত এই ওষুধটি খাওয়া উচিত নয়।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৮: করোনাভাইরাসের ওষুধ (১০) উন্নয়নাধীন ওষুধ ২ – রোশ, শিওনোগি

উত্তর-৩০৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত নতুন ওষুধের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা বর্তমানে উন্নয়নের অধীনে থাকা আরও ওষুধ নিয়ে আলোচনা করব।

সুইজারল্যান্ডের নেতৃস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি রোশ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণের চেষ্টা করছে টাইপ-সি হেপাটাইটিসের রোগীর চিকিৎসার জন্য এটি-৫২৭ নামক যে ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধটি তৈরি করছে এই কোম্পানি, সেই ওষুধ কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়েও একটি কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে কি না। জাপান ও অন্যান্য দেশের রোগীদের দেহে প্রয়োগ করে ওষুধটির ক্লিনিকাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এখন এই কোম্পানি। জাপানে ওষুধটির উন্নয়নে সাহায্য করে আসা কোম্পানি চুগাই ফার্মাসিউটিকাল জানায় যে তারা আগামী বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ওষুধটি অনুমোদনের জন্য আবেদন জানাতে পারবে বলে আশা করছে।

এছাড়া জাপানের এক নেতৃস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি শিওনোগি করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য একটি নতুন ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ উন্নয়নের চেষ্টা করছে। জুলাই মাসে কোম্পানিটি জানায় যে তারা এই ওষুধের নিরাপত্তা যাচাই করার জন্য মানব দেহে পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রথম ধাপটি শুরু করেছে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৭: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৯) উন্নয়নাধীন ওষুধ ১ – মার্ক, ফাইজার

উত্তর-৩০৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ব্যবহৃত নতুন ওষুধের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা বর্তমানে উন্নয়নের অধীনে থাকা ওষুধগুলো নিয়ে আলোচনা করব।

বিশ্ব জুড়ে বহু লোক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এর অর্থ হল গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া রোধ করতে মৃদু উপসর্গ থাকাকালীন বাড়িতে থেকে রোগী নিজেই নিতে পারেন এমন ধরনের মুখে সেবনের ওষুধের চাহিদা খুব বেশি। জাপান এবং বিদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো ঠিক সেই ধরনের ওষুধ উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

নেত্রীস্থানীয় মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক মার্ক এন্ড কোম্পানি বর্তমানে ভাইরাস প্রতিরোধক এক ওষুধ উন্নয়ন করছে, যার নাম হল মোলনিউপিরাভির। ওষুধটি এখন জাপান সহ অন্যান্য দেশের রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করে চালানো মানবদেহে পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ঐ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির জাপানি সহায়ক কোম্পানি জানায় যে পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত হলে চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসে জানা যাবে। ফলাফল আশাব্যঞ্জক হলে ওষুধটির জরুরি ব্যবহার অনুমোদনের জন্য কোম্পানি চলতি বছরের শেষ নাগাদ মার্কিন খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন বা এফডিএ’র কাছে আবেদন জানানোর পরিকল্পনা করছে।

অপর এক নেত্রীস্থানীয় মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার বর্তমানে বিদেশে মানবদেহে চালানো পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দুটি ভাইরাস প্রতিরোধক ওষুধ একত্রে নেয়ার প্রয়োজন এমন এক চিকিৎসার জন্য ঐ পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। কোম্পানি জানায় যে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল বেরোনোর কথা রয়েছে। দ্রুত হলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা জরুরি ব্যবহারের জন্য এফডিএ’র কাছে আবেদন জানানোর পরিকল্পনা করছে। মানবদেহে চালানো পরীক্ষায় জাপানের রোগীরা যাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে বর্তমানে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে ফাইজার আরো জানায়।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৬: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৮) ওষুধের ধরন ৩ - মাত্রাতিরিক্ত রোগ প্রতিরোধ সাড়া হ্রাস করা।

উত্তর-৩০৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত নতুন ওষুধের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে।

জাপান সরকার অনুমোদিত করোনাভাইরাসের ওষুধগুলো তাদের কার্যকারিতার পদ্ধতি অনুসারে তিন ভাগে বিভক্ত।

১। ভাইরাসকে কোষ আক্রমণে বাধাদানকারী ওষুধ।
২। ইতিমধ্যে কোষের মধ্যে ঢুকে পড়া ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি প্রতিরোধকারী ওষুধ।
৩। ইতিমধ্যে বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতিরিক্ত সাড়া দেয়া রোধকারী ওষুধ।

ডেক্সামেথাসোন এবং ব্যারিসিটিনিব হচ্ছে তৃতীয় ধরনের অন্তর্গত ওষুধ, মাত্রাতিরিক্ত রোগ প্রতিরোধ সাড়া হ্রাস করা যেগুলোর লক্ষ্য। ভাইরাস আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধক কোষকে উজ্জীবিত করে তুলতে নানারকম উত্তেজক উপাদান কোষ নিঃসরণ করে। তবে ভাইরাস সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকা অবস্থায় মাত্রাতিরিক্ত উত্তেজক উপাদান কখনও কখনও নিঃসরিত হতে থাকে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এটা নিয়ন্ত্রণহীন পর্যায়ে সক্রিয় করে তুলে। ফুসফুস ও দেহের অন্যান্য অংশের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিয়ে রোগীর অবস্থা এটা সংকটজনক করে তুলতে পারে। এই পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কাজ চাপা দিয়ে রাখতে এবং প্রদাহ বন্ধ করতে স্টেরয়েড ওষুধ সম্ভবত ব্যবহার করা হতে পারে। ডেক্সামেথাসোন এবং ব্যারিসিটিনিব প্রধানত মারাত্মক উপসর্গের রোগীদের বেলায় কার্যকর বলে পরিচিত।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৫: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৭) ওষুধের ধরন ২ – ভাইরাসের প্রতিলিপি রোধ।

উত্তর-৩০৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত নতুন ওষুধের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার নানা ধরনের উপর নজর দিব।

জাপান সরকার অনুমোদিত করোনাভাইরাসের ওষুধগুলো তাদের কার্যকারিতার পদ্ধতি অনুসারে তিন ভাগে বিভক্ত।

১। ভাইরাসকে কোষ আক্রমণে বাধাদানকারী ওষুধ।
২। ইতিমধ্যে কোষের মধ্যে ঢুকে পড়া ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি প্রতিরোধকারী ওষুধ।
৩। ইতিমধ্যে বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতিরিক্ত সাড়া দেয়া রোধকারী ওষুধ।

রেমডেসিভির হচ্ছে দ্বিতীয় ধরনের অন্তর্গত ওষুধ যেটি কোষের মধ্যে ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি রোধ করে। কোষের মধ্যে, ভাইরাস বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য আশ্রয়দাতা জীবের শক্তিকে ব্যবহার করে নিজের প্রতিলিপি তৈরি করা অব্যাহত রাখে। রেমডেসিভির’সহ দ্বিতীয় ধরনের অন্তর্গত ওষুধগুলো, ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট একটি এনজাইম’এর কার্যকারিতা ছেঁটে ফেলার মাধ্যমে ভাইরাসটির প্রতিলিপি তৈরি করাকে রোধ করে। আরও কয়েকটি মুখে সেবন করা ওষুধ আছে যেগুলো এখন হালকা উপসর্গ থাকা কোভিড-১৯’এর রোগীদের জন্য উন্নয়ন করা হচ্ছে। এগুলোর অধিকাংশই দ্বিতীয় ধরনের অন্তর্গত। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের মধ্যে প্রতিলিপি তৈরির পদ্ধতি স্বাভাবিক। বিষয়টি অনেক ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিকে অন্যান্য ভাইরাসের জন্য উদ্ভাবন করা ওষুধের উপর ভিত্তি করে করোনাভাইরাসের ওষুধের উন্নয়নকে সক্ষম করেছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ে এইসব ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৪: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৬) ওষুধের ধরন ১ - কোষ আক্রমণ প্রতিরোধ।

উত্তর-৩০৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত নতুন ওষুধের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা কোভিড-১৯ এর ওষুধ বা চিকিৎসার নানা ধরনের উপর নজর দিব।

জাপান সরকার অনুমোদিত করোনাভাইরাসের ওষুধগুলো তাদের কার্যকারিতার পদ্ধতি অনুসারে তিন ভাগে বিভক্ত।

১। ভাইরাসকে কোষ আক্রমণে বাধাদানকারী ওষুধ।
২। ইতিমধ্যে কোষের মধ্যে ঢুকে পড়া ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি প্রতিরোধকারী ওষুধ।
৩। ইতিমধ্যে বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অতিরিক্ত সাড়া দেয়া রোধকারী ওষুধ।

প্রথম ধরনের অন্তর্গত “অ্যান্টিবডি মিশ্রণ চিকিৎসা” করোনাভাইরাসকে কোষে আক্রমণ বা প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে। করোনাভাইরাসের পৃষ্ঠ থেকে বের হওয়া স্পাইক প্রোটিন মানব কোষে প্রবেশের আগে এর সাথে নিজেকে আবদ্ধ করে। অ্যান্টিবডি মিশ্রণ চিকিৎসায়, একটি কৃত্রিমভাবে তৈরি অ্যান্টিবডি ব্যবহৃত হয়, যা ভাইরাসকে কোষের সাথে আবদ্ধ হতে বাধা দেয়ার জন্য স্পাইক প্রোটিনের সাথে নিজেকে যুক্ত করে। রোগের প্রাথমিক স্তরে এই চিকিৎসা বা ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়। ভাইরাসকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নেয়ার মত করে অ্যান্টিবডিকে তৈরি করা হয়েছে বিধায় এটি উচ্চ কার্যকরী হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আর এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম দেখা গেছে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০৩: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৫) সোট্রোভিমাব ।

উত্তর-৩০৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। পৃথিবীর নানা দেশে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং ওষুধের কোম্পানিগুলো নতুন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ফলপ্রসূ হতে পারে, এই প্রত্যাশায় নতুন নতুন ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল অর্থাৎ ওষুধগুলো মানব দেহে প্রয়োগ করে পরীক্ষা চালাচ্ছে। করোনাভাইরাসের কার্যকর চিকিৎসার নতুন দ্বার এই ওষুধগুলো খুলে দিতে পারে কি না, সেদিকেই এখন সবার নজর। ওষুধগুলো নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের এই পর্বে আমরা নতুন ওষুধ সোট্রোভিমাব সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।

জাপান সরকার নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য চার রকম ওষুধ অনুমোদন করেছে।

বর্তমানে সরকারের পর্যালোচনাধীন রয়েছে ব্রিটেনের গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন সহ কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি করা আরেকটি নতুন ওষুধ।

এই নতুন ওষুধ সোট্রোভিমাব হচ্ছে এক ধরনের অ্যান্টিবডি যা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। ই্নট্রাভেনাস অর্থাৎ শিরার মধ্যে দিয়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধটি রোগীর দেহে প্রবেশ করানো হয়। অক্সিজেন দরকার হয় না এমন হাল্কা বা মাঝারি ধরনের উপসর্গ যাদের, তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে। মনে রাখতে হবে হাল্কা বা মাঝারি ধরনের উপসর্গ হলেও এই রোগীদের অবস্থা যে কোনো সময় সংকটজনক হয়ে ওঠার উচ্চ ঝুঁকি থাকে। বিদেশে এই ওষুধটির মানব দেহে পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে এতে রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মারা যাওয়ার ঝুঁকি ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব।

ওষুধটি জাপানে ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ার জন্য গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ৬ই সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন পত্র পেশ করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ওষুধটির জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে মে মাসে।

ধারনা করা হচ্ছে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও সোট্রোভিমাব ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেবে। তাই যদি হয়, সোট্রোভিমাব হবে অ্যান্টিবডির ককটেল রোনাপ্রেভে নামক আরেকটি ওষুধের পাশাপাশি জাপানে করোনাভাইরাসের হাল্কা উপসর্গের রোগীদের চিকিৎসার জন্য অনুমোদিত দ্বিতীয় ওষুধ।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০২: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৪) অ্যান্টিবডি মিশ্রণ

উত্তর-৩০২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে প্রত্যাশা করে বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ওষুধ কোম্পানি নতুন ওষুধের ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ওষুধ থেকে নতুন প্রতিষেধক পাওয়া যাবে কি না, সেদিকে এখন দৃষ্টি আকৃষ্ট হচ্ছে। সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা এক এক করে সেরকম ওষুধের উপর আলোকপাত করবো। এবারে আমরা নজর দেব দুটি অ্যান্টিবডির মিশ্রণ ব্যবহার করে চিকিৎসার উপর।

নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় জাপান সরকার চারটি ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। অ্যান্টিবডি ককটেল নামে পরিচিত এই চিকিৎসার অনুমোদন দেয়া হয় ২০২১ সালের জুলাই মাসে।

একজন রোগীকে শিরায় প্রবেশ করানো ইন্ট্রাভেনাস ফোঁটার মধ্যে দিয়ে ক্যাসিরিভিম্যাব এবং ইমডেভিম্যাব নামের দুটি অ্যান্টিবডির মিশ্রণ দেয়া হয়। মৃদু উপসর্গ থাকা রোগীদের জন্য এটি জাপানে অনুমোদন পাওয়া প্রথম চিকিৎসা যা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করছে বলে জানা গেছে। বিদেশে মানবদেহে চালানো পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীকে অ্যান্টিবডি দেয়া হলে তা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৭০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে জরুরি ব্যবহারের জন্য এই চিকিৎসার অনুমোদন দেয়। যেসব ক্ষেত্রে রোগ দ্রুত অগ্রগতি লাভের ফলে রোগী গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি খুব বেশি সেই সব ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা কিছুটা হলেও কার্যকর বলে সংস্থা জানায়। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং তার চিকিৎসায় অ্যান্টিবডির এই মিশ্রণটি ব্যবহার করা হয়।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, চিকিৎসা চলাকালীন এবং তার পরেও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের রোগীর উপর নজর রাখার প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডি মিশ্রণের ব্যবহার সীমিত রেখেছিল। তবে সম্প্রতি সংক্রমণ বিস্তার লাভ করার কারণে অনেক রোগীকেই হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ মন্ত্রণালয় তাদের নির্দেশিকা সংশোধন করে নেয় যাতে করে অ্যান্টিবডির মিশ্রণ হোটেল বা অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে বিচ্ছিন্ন করে রাখা রোগীরা যাদেরকে যথেষ্ট পরিমাণ পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োগ করা যায়।

আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী সুগা ইয়োশিহিদে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগীদের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবডি ককটেল ব্যবহারের অনুমতি দেবেন তিনি।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০১: করোনাভাইরাসের ওষুধ (৩) ব্যারিসিটিনিব।

উত্তর-৩০১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে প্রত্যাশা করে বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ওষুধ কোম্পানি নতুন ওষুধের ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ওষুধ থেকে নতুন প্রতিষেধক পাওয়া যাবে কিনা, সেদিকে এখন দৃষ্টি আকৃষ্ট হচ্ছে। সর্বশেষ এই ধারাবাহিকে আমরা এক এক করে সেরকম ওষুধের উপর আলোকপাত করবো। এবারে আমরা নজর দেব ব্যারিসিটিনিবের উপর।

নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় জাপান সরকার চারটি ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করা বা প্রদাহরোধী ওষুধ ব্যারিসিটিনিব ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়, যা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ট্যাবলেট আকারে এই ওষুধ পাওয়া যায় এবং মাঝারি থেকে মারাত্মক রকমের উপসর্গ দেখা দেয়া রোগীদের বেলায় কেবলমাত্র রেমডেসিভিরের সাথে এটা ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে চালানো এক ক্লিনিকাল পরীক্ষায় দেখা গেছে যে রেমডেসিভিরের সাথে মিশিয়ে ব্যারিসিটিনিব প্রয়োগ করা হলে শুধুমাত্র রেমডেসিভির দিয়ে চিকিৎসা করার চাইতে গড়ে একদিন আগে রোগী আরোগ্য লাভ করে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩০০: করোনাভাইরাসের ওষুধ (২) ডেক্সামেথাসোন।

উত্তর-৩০০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে গবেষণা সংস্থা এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে বলে প্রত্যাশা করা নতুন ওষুধ নিয়ে ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। এগুলো আরোগ্য লাভের একটি নতুন উপায় হবে কি না, সেদিকেই এখন সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ নিবদ্ধ রয়েছে। আর করোনাভাইরাসের ওষুধ নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের এবারের পর্বে, আমরা ডেক্সামেথাসোন’এর উপর নজর দিব।

জাপান সরকার নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় চারটি ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ভাইরাস রোধী ওষুধ ডেক্সামেথাসোন ২০২০ সালের জুলাই মাসে বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ডেক্সামেথাসোন প্রদাহ এবং অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া সহজ করতে বেশ কার্যকর। এই ওষুধটি রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস এবং নিউমোনিয়ার মারাত্মক ধরনের ঘটনায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

ব্রিটেনের এক ক্লিনিকাল পরীক্ষায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই ওষুধটি কোভিড-১৯’এর মারাত্মক উপসর্গ থাকা রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকিকে কমাতে পারে। ডেক্সামেথাসোন জাপানে রেমডেসিভির’এর সাথে সমন্বয় করে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২০ সালের বসন্তে এই ভাইরাসের প্রথম তরঙ্গের পরে মৃত্যুর হারে ব্যাপক হ্রাসের নেপথ্যে এই চিকিৎসা রয়েছে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৯: করোনাভাইরাসের ওষুধ (১) রেমডেসিভির।

উত্তর-২৯৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে গবেষণা সংস্থা এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে বলে প্রত্যাশা করা নতুন ওষুধ নিয়ে ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। এগুলো আরোগ্য লাভের একটি নতুন উপায় হবে কিনা, সেদিকেই এখন সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ নিবদ্ধ রয়েছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে, এধরনের একেকটি ওষুধ নিয়ে আলোকপাত করা হবে। আর এবারের প্রথম পর্বে, আমরা রেমডেসিভিরের উপর নজর দিব।

জাপান সরকার নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় চারটি ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। ভাইরাস রোধী ওষুধ রেমডেসিভির ২০২০ সালের মে মাসে জরুরি ব্যবহারের জন্য বিশেষ অনুমোদন পায়, যা সরকারি অনুমোদন পাওয়া চারটি ওষুধের মধ্যে প্রথম।

রেমডেসিভির শুরুতে ইবোলায় আক্রান্ত লোকদের চিকিৎসার জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল। এটি ইনট্রাভেনাস ড্রিপ বা শিরা ভেদ করে প্রয়োগ করা হয়। এই ওষুধের ব্যবহার গুরুতর অবস্থায় থাকা রোগী যেমন, কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্র এবং একমো নামক হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের যন্ত্র ব্যবহারকারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে সরকার ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া মাঝারি মাত্রার উপসর্গ থাকা রোগীদের জন্যও এটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৮: শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি (৫) ক্লাসে পাঠদান বন্ধ রাখার বিষয়ে এই প্রথম সরকারের নির্দেশিকা প্রণয়ন।

উত্তর-২৯৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে ধারাবাহিকের এবারের পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব “কোন অবস্থায় শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখতে হবে, তা বোঝার জন্য অনুসরণীয় কয়েকটি নিয়ম” সম্পর্কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে।

এতদিন পর্যন্ত যা দেখা গেছে তা হল একটি শিশু অথবা বিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কর্মীদের মধ্যে কারুর দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হলে শিক্ষা বোর্ডের ওপর নির্ভর করেছে তারা কী সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপদেশ পরামর্শ মোতাবেক শিক্ষা বোর্ডই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাস বন্ধ রাখা হবে কি না। এসব ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো পরিস্থিতি খুঁটিয়ে বিচার করে এবং সংক্রমিতদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে যারা এসেছে তাদের শনাক্ত করে। তবে এই কাজে জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেশ সময় লাগে যা নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তা প্রকাশ করছেন। আসলে যেসব জায়গায় জরুরি অবস্থা জারি থাকে সেখানে এই কেন্দ্রগুলোর ওপর চাপ খুব বেশি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ঠিক কোন অবস্থাতে ক্লাস বন্ধ রাখা হবে, সে সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রণয়ন করে।

নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে কেউ যদি সংক্রমিত হয় সেক্ষেত্রে স্কুলের ঠিক কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে। সংক্রমিতের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে যারা এসেছে অথবা যাদের ভাইরাস পরীক্ষা করানো উচিত তাদের নামের তালিকা তৈরির আবশ্যকতা সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্দেশিকায় বলা হয়, নির্দিষ্টভাবে কাদের ভাইরাস পরীক্ষা করাতে হবে বোঝা যদি কঠিন হয়, ক্লাসের সব শিক্ষার্থীরই ভাইরাস পরীক্ষা করতে হবে।

ওতে বলা হয়েছে একই ক্লাসের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী যদি সংক্রমিত হয়, গোটা ক্লাস বন্ধ রাখতে হবে।

যদি এমন হয় যে কেবল একটি শিশুর দেহে সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে, অথচ বেশ কয়েকটি শিশুর সাধারণ সর্দি-কাশির মত উপসর্গ দেখা দিয়েছে, অথবা বেশ কয়েকজন শিশুর সংক্রমিত শিশুটির ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসার কথা জানা গেছে এবং সারা ক্লাসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশংকা দেখা দিয়েছে, সেক্ষেত্রে ক্লাস বন্ধ রাখতে হবে। বন্ধ রাখতে হবে প্রায় পাঁচ থেকে সাত দিন।

এছাড়া নির্দেশিকায় বলা হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি একটি শ্রেণীর একাধিক সেকশন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় এবং সমস্ত স্কুলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জোরালো আশংকা থাকে, সেক্ষেত্রে গোটা শ্রেণীর ক্লাস বন্ধ রাখতে হবে।। নির্দেশিকায় বলা হয় স্কুলের একাধিক শ্রেণীর ক্লাস বন্ধ থাকলে সারা স্কুল সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিতে হবে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৭: শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি (৪) ডেল্টা রূপ শিশুদেরকে সংক্রমিত করার সম্ভাবনা কি বেশি?

উত্তর-২৯৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজনের এবারের বিষয় হচ্ছে জাপানে শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। আমাদের এবারের প্রশ্ন হল বর্তমানে জাপানে ডেল্টা রূপের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কি অনেক বেশি?

সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে জাপানে যারা ভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছেন বয়স অনুযায়ী তাদের সবার উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখেছে। জুলাই মাস পর্যন্ত ১৮ বা তার কম বয়সী তরুণদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের হারে তারা বিশেষ কোন পার্থক্য লক্ষ্য করে নি যেখানে ডেল্টা রূপের প্রাধান্য ইতোমধ্যেই বিস্তার লাভ করেছিল। ৬৫ বা তার বেশি বয়সের লোকজন টিকা নেয়ার কারণে তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার হ্রাস পাওয়ার ফলে গবেষণায় তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। গবেষকরা বলছেন যে ফলাফল দেখে ডেল্টা রূপ যে শিশুদের জন্য বিশেষ করে ক্ষতিকারক তা বলতে পারা যায় না।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতি এবং জাতীয় ইনস্টিটিউটের প্রধান ওয়াকিতা তাকাজি’কে আমরা এবিষয়ে প্রশ্ন করি। ওয়াকিতা বলেন, মোট আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শিশুদেরকে পজিটিভ হতে দেখা যাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্করা বাইরে বেরিয়ে সংক্রমিত হয়ে বাড়িতে ফিরে এসে শিশুদের কাছে ভাইরাস পৌঁছে দিচ্ছেন। তবে তার ধারণা মৌসুমি ফ্লু’র মত পরিস্থিতিতে এটা গিয়ে দাঁড়াবে না কেননা ফ্লু’র সময় ভাইরাস শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বলে সংক্রমণ আরো বেশি বৃদ্ধি পায়।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৬: শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি (৩) স্কুলের সংক্রমণ বেশি বয়সের শিশুদের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

উত্তর-২৯৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজনের এবারের বিষয় হচ্ছে জাপানে শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে শিশুর বয়স যত বেশি হবে, স্কুলে সংক্রমিত হওয়ার হারও ততটা বাড়বে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে জুলাই মাসের শেষদিক পর্যন্ত ভাইরাসের পরীক্ষায় যারা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল এবং যাদের সংক্রমিত হওয়ার পথের খোঁজ পাওয়া সম্ভব হয়নি, ৩ থেকে ১৮ বছর বয়সসীমার সেরকম প্রায় ৬,৬০০ শিশুর উপর বিশ্লেষণ চালান। মন্ত্রণালয়ের যে ব্যবস্থায় পজিটিভ শনাক্ত হওয়া সকল মানুষের উপাত্ত একসাথে জমা রাখা হয়, সেখান থেকে পাওয়া সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণ তারা চালিয়েছেন। আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞদের প্যানেলের এক বৈঠকে এর ফলাফল জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে ৩ থেকে ৫ বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে ৫৯.৮ শতাংশ বাড়িতে সংক্রমিত হয়েছে, ১৯.৮ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছে দিবা পরিচর্যা কেন্দ্র কিংবা শিশু কল্যাণ স্থাপনায় এবং ১৫.৯ শতাংশ স্কুলে কিংবা কিন্ডারগার্টেনে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে ৭৬.৬ শতাংশ বাড়িতে সংক্রমিত হয় এবং ১৪.৬ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছে স্কুলে। প্রতিবেদন বলছে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছে বাড়িতে এবং ৩৩ শতাংশ স্কুলে। আর ১৬ থেকে ১৮ বছরের সবচেয়ে বেশি বয়সের গ্রুপে ৪৫.৭ শতাংশ স্কুলে সংক্রমিত হয় এবং ৩৯.৪ শতাংশ বাড়িতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

প্রতিবেদনে অবশ্য উল্লেখ করা হয়েছে যে মোট ঘটনার মধ্যে ২০ শতাংশের চাইতে কমের বেলাতেই কেবল শিশুরা কিভাবে সংক্রমিত হয়েছে বিশ্লেষকরা তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে তা সত্ত্বেও এতে বলা হয়েছে যে দৃশ্যত এরকম একটি প্রবণতা দেখা গেছে যে শিশুর বয়স যত বেশি, স্কুলে শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার হারও সেরকম অবস্থায় বেশি হয়ে থাকে।

এই তথ্যগুলো সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৫: শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি (২) স্কুল বন্ধ করার জন্য স্থানীয় পরিস্থিতিসমূহ অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে: শিশু বিশেষজ্ঞরা।

উত্তর-২৯৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে এবারেও শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরা হবে।

জাপানে শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে চলায়, জাপান শিশু সমাজ এবং জাপান শিশু সমিতি বৃহস্পতিবার এক অনলাইন বৈঠকের আয়োজন করে এবং স্কুলের কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।

তারা জানাচ্ছে, অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনটি আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে এবং আরও বেশি করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। তারা স্কুল থেকে আক্রান্ত হওয়া ক্রমবর্ধমান সংখ্যক সংক্রমণ নিয়ে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা জানাচ্ছে এবং ক্রাম স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের স্কুল সহ বিভিন্ন স্থাপনায় সংক্রমণ রোধী পুঙ্খানুপুঙ্খ পদক্ষেপের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে।

তারা এও জানাচ্ছে, নতুন টার্ম শুরু হওয়ার সময় সারা দেশের সমস্ত স্কুল একই সময়ে বন্ধ রাখার দরকার নেই এবং স্কুল বন্ধ রাখা বা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে শিশুদের স্কুলে আসার ব্যাপারে প্রতিটি এলাকার বিভিন্ন পরিস্থিতি অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা সুনির্দিষ্ট সময়-কাঠামো এবং অন্যান্য আদর্শমান উপস্থাপন করার জন্য প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষগুলোকে অনুরোধ জানাচ্ছে।

যদি প্রাথমিক স্কুল বন্ধ থাকে তাহলে অভিভাবকদের কাউকে কাউকে অফিস থেকে ছুটি নিতে হবে বলে ডাক্তাররা বলেন, কাজের স্থানের সমর্থন এবং অনুধাবনের বিষয়টিও প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে। তারা বলেন, ১০ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের সংক্রমণের প্রকৃতি বড়দের মত একই ধরনের বলে, বিশেষ করে সিনিয়র হাইস্কুলে দূর-শিক্ষা অবশ্যই সক্রিয়ভাবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত।

তাঁতে বোনা নয় এমন কাপড় দিয়ে তৈরি একবার ব্যবহার করে ফেলে দেয়া মাস্ক ভাইরাসের সংক্রমণ রোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যবহারের জন্য এক ব্যাপক পরিমাণের মাস্কের প্রয়োজন হবে, তাই দু’টি শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদের গ্রুপই জানায়, পরিবারের উপর থেকে আর্থিক ভার লাঘবের জন্য শিশুদের বিনামূল্যে এই মাস্ক সরবরাহ করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

জাপান শিশু সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ওকা আকিরা বলেন, শিশুদের জন্য স্কুল জীবন নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এও বলেন, যদি স্কুল বন্ধ রাখার মত পদক্ষেপ হাতে নিতে হয়, তাহলে প্রাথমিক, জুনিয়র হাইস্কুল এবং সিনিয়র হাইস্কুলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়ার প্রয়োজন, তাই এগুলোর প্রতিটির জন্য পৃথক পৃথক আদর্শমান নির্ধারণ করতে হবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৪: শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি (১) জাপানের সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইন্সটিটিউট প্রকাশিত স্কুলের জন্য মৌলিক করোনাভাইরাস পদক্ষেপসমূহ।

উত্তর-২৯৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের নতুন এই ধারাবাহিকে শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে নানা তথ্য তুলে ধরা হবে।

জাপানে শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে চলায়, জাপানের সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইন্সটিটিউট গত ২৫ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে স্কুলগুলোর করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য কিছু মৌলিক পাল্টা-পদক্ষেপের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। স্কুলগুলোতে ঘটে চলা করোনাভাইরাসের গুচ্ছ সংক্রমণের কিছু ঘটনার উপর এই ইন্সটিটিউটের চালানো জরিপের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি প্রণীত হয়েছে।

ডেল্টা স্ট্রেইনের বিস্তার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯ বছরের কমবয়সী শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হলেও, প্রাথমিক স্কুলগুলোতে অনেক সংক্রমণের ঘটনার সাথে শিক্ষকদের ছড়ানো তুলনামূলকভাবে বড় গুচ্ছ সংক্রমণ যুক্ত রয়েছে। অন্যদিকে, শিশুদের মধ্যে বড় আকারের গুচ্ছ সংক্রমণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

প্রতিবেদনটিতে, কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি নার্সারি স্কুল’সহ সকল স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে, প্রতিটি শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থা যাচাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের খবর নেয়ার পাশাপাশি বাড়িতে তাদের গতিবিধি অনুসন্ধানের মাধ্যমে অসুস্থ বোধ করা শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণের জন্য স্কুলগুলোকে অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খ পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া, কোনরকম সুনির্দিস্ট স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছাড়া সকল শিক্ষকদের অবশ্যই সক্রিয়ভাবে টিকা নেয়ার পরামর্শ এতে দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে, অনেক মানুষের সমাবেশ ঘটানোর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য হওয়া সাংস্কৃতিক বা ক্রীড়া উৎসবের মত অনুষ্ঠানগুলো স্থগিত বা বাতিল করার বিষয়টি বিবেচনা করতে, স্কুলগুলোকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আর অন্য জেলায় ভ্রমণের প্রয়োজন রয়েছে, স্কুলের এরকম ক্লাব কর্মকাণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে, যাত্রার আগের তিন দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের একটি পিসিআর পরীক্ষা করার পরামর্শ প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, এতে স্কুলগুলোকে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকা আইসিটি প্রযুক্তির সক্রিয় ব্যবহার, স্কুল ভবনে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বায়ু চলাচল অব্যাহত রাখতে কার্বন ডাই অক্সাইড মনিটর স্থাপন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণকারী অ্যাপ্লিকেশনের সক্রিয় ব্যবহার এবং অ্যান্টিজেন পরীক্ষা ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯৩: বৃহদাকার বাণিজ্যিক কেন্দ্রে গুচ্ছ সংক্রমণের জন্য দায়ী অভিন্ন কারণ।

উত্তর-২৯৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।

এবারে আমরা জানার চেষ্টা করবো জাপানে বৃহদাকার বাণিজ্যিক কেন্দ্রে করোনাভাইরাসের গুচ্ছ সংক্রমণ ঘটার পেছনে অভিন্ন কারণগুলো কী।

জাপানের জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের করোনাভাইরাসের গুচ্ছ সংক্রমণ ঘটা ডিপার্টমেন্ট স্টোর ও বিপনী কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল কেন এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লো তার কারণ খোঁজায় সাহায্য করতে।

খুচরো বিক্রেতারা জানায় যে তারা এখনো গুচ্ছ সংক্রমণের কারণ অনুসন্ধান করছে এবং তাদের প্রত্যেকটি স্থাপনায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ব্যবস্থা আরও জোরদার করে তুলছে।

বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোর সবকটার ক্ষেত্রেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রধান প্রধান কয়েকটি কারণ অভিন্ন। সেগুলো ব্যাখ্যা করে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সুপারিশ করা হয় নানান পদক্ষেপ।

প্রতিবেদনে বলা হয় অধিকাংশ কর্মী ঠিক মত মাস্ক ব্যবহার করলেও, হাত ধোয়ার ব্যাপারে তাদের আরও মনযোগী হতে হবে। দিনের মধ্যে কোন কোন সময় ক্রেতারা যে কয়েকটি তলায় ভিড় করেন, প্রতিবেদন সেকথা উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে এও বলা হয় সংক্রমিত কর্মীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে খুঁজে বের করার ব্যাপারে ঘাটতি থেকে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আবার অনেক সময় খুঁজে বের করার পর যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সেই ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয় কোন কোন সময় দেখা যায় কর্মীরা ডাইনিং হল অথবা বিশ্রাম নেওয়ার জায়গায় ভিড় করেন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয় না।

স্থাপনাগুলোতে লোকজনের প্রবাহ এবং যেসব জায়গায় ক্রেতাদের ভিড় করার প্রবণতা বেশি সেখানে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রতিবেদনে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এছাড়া স্থাপনাগুলোতে কার্বন-ডাইঅক্সাইডের ঘনত্ব মাপা সহ বাতাস চলাচলের আরও ভাল ব্যবস্থা করার এবং কর্মীদের বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা ও ডাইনিং হল’এ খাওয়াদাওয়ার সময় কথা না বলার পরামর্শ প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে খুচরো বিক্রেতাদের।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯২: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী নারীরা বাড়িতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখার সময় কখন জরুরি সেবার প্রত্যাশা করবেন, সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা

উত্তর-২৯২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রমণের সাম্প্রতিক ব্যাপক বৃদ্ধির আলোকে, ক্রমবর্ধমান সংখ্যক গর্ভবতী নারীও আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। টোকিও’র প্রতিবেশী জেলা চিবায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক মা বাড়িতে বাচ্চা প্রসব করতে বাধ্য হন কেননা কোন হাসপাতাল তাকে ভর্তি নিতে চাইছিল না। এর ফলে সময়ের আগেই ভূমিষ্ঠ হওয়া তার শিশুটি মারা যায়। ঐ ঘটনার পর জাপান সোসাইটি অব অবস্টেরিক্স ও গাইনিকোলজি এবং জাপান অ্যাসোসিয়েশন অব অবস্টেট্রিশিয়ান্স এবং গাইনিকোলজিস্টস বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ বিষয়ে এক নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে যেখানে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করতে বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হবে। ঐ দুটি গ্রুপের ওয়েবসাইটে নির্দেশিকাটি দেখতে পাওয়া যাবে।

নির্দেশিকার আওতায়, বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা কোভিড-পজিটিভ গর্ভবতী নারীকে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলোর ক্ষেত্রে তার চিকিৎসক বা স্থানীয় সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

• ঘন্টায় দুইবারের বেশি শ্বাস নিতে যখন তার কষ্ট হচ্ছে
• বাথরুমে হেঁটে যাওয়ার মত কার্যকলাপের সময় তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করছেন
• তার হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে ১১০ বা তার বেশি অথবা তার শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি মিনিটে ২০ বা তার বেশি হয়েছে
• তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ থেকে ৯৪ শতাংশের মধ্যে রয়েছে এবং এক ঘন্টা বিশ্রাম নেয়ার মধ্যেও স্বাভাবিক পর্যায়ে তা ফিরে আসছে না

নির্দেশিকায় আরও বলা হয় যে নিম্নলিখিত সময়গুলোতে অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স ডাকার প্রয়োজন।
• শ্বাসকষ্টের কারণে তিনি এমনকি ছোট একটি বাক্যও বলতে পারছেন না
• তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশ বা তার নীচে নেমে গেছে।

জরুরি ফোনকল করার প্রয়োজন না পড়লেও গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে যেতে সাহায্য করার জন্য যেসব হাসপাতাল পরিবহন পরিষেবা প্রদান করে থাকে তাদের প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর প্রতি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ধাত্রীরা আহ্বান জানাচ্ছেন। বাড়িতে বিচ্ছিন্ন থাকার সময় গর্ভবতী নারীরা যাতে প্রতিদিন রক্তে তাদের অক্সিজেন মাত্রা মেপে দেখতে পারেন সেই লক্ষ্যেও এক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য প্রশাসনিক সংস্থাগুলোর প্রতি তারা আহ্বান জানান।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯১: কেউ একা থাকার সময় এবং বাড়িতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হলে সেরকম অবস্থায় কোন দিকে নজর রাখা দরকার

উত্তর-২৯১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রমণের সাম্প্রতিক ব্যাপক বৃদ্ধির আলোকে জাপানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রেকর্ড সংখ্যক লোকজন এখন বাড়িতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখছেন। আপনাকে একা থাকতে হলে, ভাইরাসের পরীক্ষায় আপনি পজিটিভ সনাক্ত হলে এবং বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা ছাড়া অন্য কোন উপায় না থাকলে কোন দিকগুলোতে নজর রাখা দরকার, সে সম্পর্কে আপনাদের এবারে আমরা জানাবো।

স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাৎসুমোতো তেৎসুইয়াকে এই প্রশ্ন আমরা করেছিলাম। সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নেয়া পদক্ষেপের তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। অধ্যাপক মাৎসুমোতো বলেছেন রোগীর কাছ থেকে খবর আসা বন্ধ হয়ে গেলে রোগীর অবস্থার যে অবনতি ঘটেছে বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা সেটা যেন বুঝতে পারেন, সেজন্য উচিৎ হবে তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখা। তিনি বলেছেন সেই যোগাযোগ শারীরিক দিক থেকে কাছাকাছি অবস্থানে না হলেও চলবে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে উপসর্গ দেখা দেয়া অবস্থায় কিছু লোকজন হয়তো ধৈর্য ধরতে পারেন এবং এমন কি প্রতিবার জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টেলিফোনে যোগাযোগ করার সময় লাইন ব্যস্ত থাকার সঙ্কেত পেলে হাল ছেড়ে দিতে পারেন। তিনি বলেছেন সেরকম অবস্থায় এরকম ঝুঁকি থেকে যায় যে অবস্থার আরও অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্স ডাকার জন্য জরুরি সেবা কেন্দ্রে যোগাযোগ করার সুযোগ সেই ব্যক্তি আবার হয়তো নাও পেতে পারেন। তিনি জানিয়েছেন যে সেরকম অবস্থা দেখা দেয়া প্রতিহত করতে হলে কারও উচিৎ হবে আগে থেকে একাধিক সাহায্যকারী বেছে নেয়া এবং জরুরি অবস্থায় নিজের যোগাযোগ রক্ষাকারীর ভূমিকা পালনের অনুরোধ এদের করা।

অধ্যাপক মাৎসুমোতো একই সাথে সংক্রমিত হয়ে বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হতে পারে, সেরকম অবস্থা বিবেচনায় রেখে জনগণের প্রতি খাদ্য, খাবার পানি এবং জ্বর কমানোর ওষুধ বাড়িতে জমা রাখার অনুরোধ করেছেন। সংক্রমিত হওয়ার আগে সেরকম প্রস্তুতি যারা নিয়ে রাখেন নি, নিজেদের কোন বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্যকে ফোন করে বাড়ির প্রবেশ পথের বাইরে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী রেখে যাওয়ার অনুরোধ জানানোর উপদেশ তাদেরকে তিনি দিচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯০: বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকাকালীন কী নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে? (২) আপনার বাড়িতে সংক্রমণ রোধের উপায়সমূহ

উত্তর-২৯০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রমণের সাম্প্রতিক বৃদ্ধির মাঝে জাপানে এখন রেকর্ড সংখ্যক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজন বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। একদল বিশেষজ্ঞ বাড়িতে এরকম আলাদা থাকাকালীন যেসব জরুরি উপসর্গের তাৎক্ষণিক যত্ন নেয়া প্রয়োজন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে কী করা যেতে পারে, তার একটি তালিকা টুইটারে প্রকাশ করেছেন। বাড়িতে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধের উপায়সমূহ কী, দুই পর্বের এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে সেই বিষয়ের উপর আমরা নজর দিব।

করোনাভাইরাস রোধী প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি স্বেচ্ছাসেবী দল, বাড়িতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সংক্রমণ রোধের ৮টি বিষয় তালিকাভুক্ত করেছে।

১। রোগী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবশ্যই পৃথক পৃথক ঘরে অবস্থান করতে হবে।
২। রোগী এবং সেবা প্রদানকারী উভয়কেই অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে।
৩। সেবা প্রদানকারীকে অবশ্যই যতটা বেশি সম্ভব এক ব্যক্তিতে সীমাবদ্ধ করতে হবে।
৪। রোগী এবং সেবা প্রদানকারীকে অবশ্যই ঘন ঘন হাত ধুতে হবে।
৫। দিনের বেলা যতটা বেশি সম্ভব ঘরে হাওয়া বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। প্রায়ই সংস্পর্শে আসা অভিন্ন অংশগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৭। ময়লা বিছানাপত্র ও কাপড়-চোপড় ধুয়ে ফেলতে হবে।
৮। বর্জ্য নিশ্ছিদ্রভাবে আটকে রাখতে হবে এবং বাইরে ফেলে দিতে হবে।

গ্রুপটির ভাষ্যানুযায়ী, আরও বেশি করোনাভাইরাসের রোগীকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের থেকে যোগাযোগবিহীন বা কী করতে হবে সে বিষয়ে ক্লিনিক থেকে কোন পরামর্শ ছাড়াই বাড়িতে থাকতে হবে বিধায় তারা ধারণা করেছে যে তাদেরকেই প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সরবরাহ করতে হবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৯: বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকাকালীন কী নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে? (১) জরুরি উপসর্গসমূহ

উত্তর-২৮৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সংক্রমণের সাম্প্রতিক বৃদ্ধির মাঝে জাপানে এখন রেকর্ড সংখ্যক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজন বাড়িতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। একদল বিশেষজ্ঞ বাড়িতে এরকম আলাদা থাকাকালীন যেসব জরুরি উপসর্গের তাৎক্ষণিক যত্ন নেয়া প্রয়োজন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে কী করা যেতে পারে, তার একটি তালিকা টুইটারে প্রকাশ করেছেন। বাড়িতে বিচ্ছিন্ন থাকার সময় কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, দুই পর্বের এই ধারাবাহিকে সেই বিষয়ের উপর আমরা নজর দিব।

গত ১৭ই আগস্ট করোনাভাইরাস রোধী প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি স্বেচ্ছাসেবী দল, বাড়িতে বিচ্ছিন্ন থাকাকালীন সতর্ক থাকার মত কিছু বিষয়ের তালিকা টুইটারে পোস্ট করেন।

গ্রুপটি অ্যাম্বুলেন্স ডাকার জন্য সতর্কতার সংকেত হিসেবে ১৩টি “জরুরি উপসর্গের” একটি তালিকা তৈরি করেছে। রোগীদের নিম্নলিখিত নয়টি উপসর্গ নিজেদেরই যাচাই করে দেখা উচিত।

১। নীলাভ ঠোঁট
২। ভারী শ্বাসপ্রশ্বাস
৩। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট
৪। সামান্য নড়াচড়াতেই শ্বাসকষ্ট অনুভব করা
৫। বুকে ব্যাথা
৬। শুয়ে থাকলে নিঃশ্বাস নিতে না পারা
৭। কাঁধ উপরে তুলে হাঁপান
৮। আচমকা শব্দ করে নিঃশ্বাস ফেলা
৯। অনিয়মিত নাড়ির স্পন্দনের অনুভূতি

গ্রুপটি পরিবার বা একই বাসায় বাস করা অন্য ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত চারটি উপসর্গের ব্যাপারে সজাগ থাকতে বলেছে।
১০। স্পষ্টতই ফ্যাকাশে মুখ
১১। স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন চেহারা এবং আচরণ
১২। কারো ডাক বা স্পর্শে দুর্বলভাবে সাড়া দেয়া
১৩। ডাক এবং স্পর্শে কোন সাড়া না দেয়া।

গ্রুপটির ভাষ্যানুযায়ী, যেসব এলাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মক চাপের মধ্যে রয়েছে, সেখানে এমনকি একটি অ্যাম্বুলেন্স ডাকার পরেও এরকম উপসর্গ থাকা কোন করোনাভাইরাস রোগীকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। গ্রুপটি এই পরামর্শ দিচ্ছে যে লোকজন নিজেদের অবস্থার অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলে, তাদের করোনাভাইরাস রোগ নির্ণয়কারী ব্যক্তিগত চিকিৎসক, স্থানীয় গণস্বাস্থ্য দপ্তর বা স্থানীয় পৌরসভার উল্লেখ করা একটি করোনাভাইরাস হটলাইনে ফোন করা উচিত।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৮: কোভিড-১৯’এর ডেল্টা ধরনটা কী? (৪) ল্যাম্বডা ধরন থেকে এর পার্থক্য কী?

উত্তর-২৮৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে আমরা আলোকপাত করছি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ওপর। কোভিড-১৯’এর এই ভ্যারিয়েন্ট বা ধরনটি এখন হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে সারা পৃথিবীতে। এবারে আমরা জানার চেষ্টা করবো ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং কোভিড-১৯’এর আরেকটি ধরন ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে পার্থক্য কী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি সর্বপ্রথম নিশ্চিত হয় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে। সংস্থাটি জানায় এই ভ্যারিয়েন্ট প্রধানত বিস্তার লাভ করছে পেরু, চিলি এবং ইকুয়েডরের মত দক্ষিণ আমেরিকার দেশসমূহের মধ্যে।

পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় নতুন করোনাভাইরাসের যত স্ট্রেইন বা ধরন শনাক্ত হয়েছে, সেগুলোর সবকটির জিন বিন্যাসের বিস্তারিত নিবন্ধিত রয়েছে ওয়েবসাইট জিসএইড’এ। সেখানে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৩৪টি দেশ ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির কথা জানিয়েছে। তবে বিগত চার সপ্তাহে এই ভ্যারিয়েন্ট বিস্তার সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি খবর এসেছে চিলি থেকে।

ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট কয়েকটি রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। হয়তো বা সেই কারণেই এটি মূল ভাইরাসের চাইতে বেশি সংক্রামক, অথবা এটি হয়তো ভাইরাসকে দমিয়ে রাখতে পারে যে অ্যান্টিবডি, তার কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ল্যাম্বডাকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা দৃষ্টি আকর্ষণকারী স্ট্রেইনের শ্রেণীভুক্ত করেছে। তবে বর্তমানে ল্যাম্বডা যে ডেল্টা ও আলফা ভ্যারিয়েন্টের মত ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে ডেল্টা ও আলফা হচ্ছে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা উদ্বেগ সৃষ্টিকারী ধরন। জাপানের জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি গবেষণা ইনস্টিটিউট এখনও ল্যাম্বডাকে এই দুটি শ্রেণীর কোনটারই অন্তর্ভুক্ত করেনি।

ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট প্রকৃত অর্থে কতখানি সংক্রামক এবং মানুষের দেহে কতটা গুরুতর উপসর্গের জন্ম দিতে পারে, তা এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ভাইরাস প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে ভেদ করার এবং টিকার কার্যকারিতা ক্ষুণ্ণ করার ক্ষমতা এই ভ্যারিয়েন্টের আছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হলে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার।

সত্যি বলতে কি, ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আগে। তবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিস্তার লাভ করেছে অনেক দ্রুত এবং বহু দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৭: কোভিড-১৯’এর ডেল্টা ধরনটা কী? (৩) টিকার কার্যকারিতা

উত্তর-২৮৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে ডেল্টা ধরন, করোনাভাইরাসের একটি অত্যন্ত সংক্রামক স্ট্রেইনের উপর আমরা আলোকপাত করছি। এবারে আমরা টিকার কার্যকারিতা বিষয়ে কথা বলব।

চলতি বছর জুলাই মাসের ২৭ তারিখ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে, সংস্থা জানায় যে টিকার কার্যকারিতা বিষয়ে গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে টিকার কারণে সৃষ্ট এন্টিবডির সংখ্যা ডেল্টা রূপের বিরুদ্ধে কমে যায়।
তবে সংস্থা আরো জানায় যে এর অর্থ এই নয় যে এটি টিকার কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় কেননা বর্তমানে যে টিকাগুলো রয়েছে সেগুলো অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় যে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা ফাইজার টিকার ক্ষেত্রে ভাইরাসের ডেল্টা এবং আলফা রূপের এক তুলনামূলক মূল্যায়নে দেখা গেছে যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ বা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতা আলফার তুলনায় ডেল্টার ক্ষেত্রে আরো কম। তবে গুরুতর রোগ প্রতিরোধে দুটি টিকার ক্ষেত্রেই বিরাট কোন পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়নি।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৬: কোভিড-১৯’এর ডেল্টা ধরনটা কী? (২) আরও বেশি মারাত্মক অসুস্থতার কারণ এটা হয়ে উঠে কী?

উত্তর-২৮৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ডেল্টা ধরন একটি অত্যন্ত সংক্রামক করোনাভাইরাসের স্ট্রেইন যেটি বর্তমানে সারা বিশ্বে ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে। এবারে ডেল্টা ধরন বিষয়ক ধারাবাহিক এই আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে, মূল স্ট্রেইন বা ধরনের চাইতে আরও বেশি মারাত্মক উপসর্গের কারণ এটা হয় কি না, সেদিকে আমরা আলোকপাত করব।

ডেল্টা ধরন আরও বেশি মারাত্মক অসুখের কারণ হয় কি না তা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ২ লক্ষের বেশি করোনাভাইরাস ঘটনার উপাত্ত বিশ্লেষণ করা কানাডার একটি গবেষণা থেকে জানা যায় যে ডেল্টা রূপ মূল স্ট্রেইন বা ধরনের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি ১২০ শতাংশ, নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে থাকার ঝুঁকি ২৮৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর ঝুঁকি ১৩৭ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৫: কোভিড-১৯’এর ডেল্টা ধরনটা কী? (১) এটা কতখানি সংক্রামক?

উত্তর-২৮৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ডেল্টা ধরন একটি অত্যন্ত সংক্রামক করোনাভাইরাসের স্ট্রেইন যেটি বর্তমানে সারা বিশ্বে ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে। এবারে ডেল্টা ধরন বিষয়ক ধারাবাহিক এই আয়োজনের প্রথম পর্বে, এটা কতটা সংক্রামক হতে পারে সেবিষয়ের দিকে আমরা নজর দেব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও জানাচ্ছে, ডেল্টা স্ট্রেইনটির খবর প্রথম পাওয়া যায় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ভারতে এবং তারপর এটির খবর সারা বিশ্ব নিশ্চিত করতে থাকে। আগস্ট মাসের প্রথমদিকের মধ্যেই এই ধরনটি ১৩০টিরও বেশি দেশ এবং অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। ডব্লিউএইচও এটিকে ভিওসি বা “ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন” বা “উদ্বেগপূর্ণ স্ট্রেইন” এর তালিকাভুক্ত করেছে যেগুলোকে জানা সমস্ত ধরনের মধ্যে সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি বিপদজনক বলে মনে করা হয়।

ডেল্টা ধরন মূল স্ট্রেইন এবং ব্রিটেনে প্রথম সনাক্ত হওয়া আলফা ধরনের চেয়ে আরও বেশি সংক্রামক বলে ধারণা করা হয়। জুলাই মাসের ২১ তারিখে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বৈঠকে প্রদর্শিত একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, ডেল্টা ধরনের ভাইরাসটি মূল স্ট্রেইনের চেয়ে ১.৮৭ গুণ এবং আলফা ধরনের চেয়ে ১.৩ গুণ বেশি সংক্রামক। দেশে ও বিদেশের উভয় স্থানের অন্যান্য সমীক্ষায়ও দেখা যাচ্ছে যে, ডেল্টা ধরনটি প্রচলিত স্ট্রেইনের চেয়ে প্রায় দুই গুণ বেশি সংক্রামক এবং আলফা ধরনের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি সংক্রামক।

ডব্লিউএইচও এও জানাচ্ছে, একদল চীনা বিজ্ঞানীর চালানো এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, প্রচলিত স্ট্রেইনে আক্রান্ত একজন রোগীর থেকে ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত একজন লোকের দেহে ১ হাজার ২০০ গুণ বেশি ভাইরাস পাওয়া গেছে। এই তথ্য থেকে এই স্ট্রেইনের উচ্চ সংক্রমণ হারের বিষয়টি খানিকটা আঁচ করা যেতে পারে।

জাপানের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউশন জুলাই মাসের ২৬ তারিখে অনুমান করে যে, টোকিও এবং এর সংলগ্ন তিনটি জেলা সাইতামা, চিবা এবং কানাগাওয়া’য় জুলাই মাসের শেষ নাগাদ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত করোনাভাইরাসের রোগীর মধ্যে ৮০ শতাংশ হচ্ছে ডেল্টা ধরনের। আর এর পাশাপাশি ওসাকা, কিয়োতো এবং হিয়োগো জেলায় তা হচ্ছে প্রায় ৪০ শতাংশের মত।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৪: কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা আবশ্যকীয় কি? (৫) বুস্টার হিসেবে একটি ভিন্ন ধরনের টিকার ব্যবহার কি ঠিক আছে?

উত্তর-২৮৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কিছু দেশে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি বা বুস্টার টিকা দান বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা কি আবশ্যকীয় এবং সেই টিকা আসলে কি কার্যকর – ধারাবাহিক এই আয়োজনে সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। বুস্টার হিসেবে একটি ভিন্ন ধরনের টিকার ব্যবহার ঠিক আছে কি না, এবারের পর্বে আমরা সেবিষয়ে নজর দেব।

টোকিও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলছেন, তৃতীয় টিকাটি প্রথম এবং দ্বিতীয়টির মত একই ধরনের টিকা হওয়া উচিত কি না, সেটি নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই।

ব্রিটিশ সরকারের ভাষ্যানুযায়ী, দ্বিতীয় টিকা দেয়ার ১০ থেকে ১২ সপ্তাহ পরে একটি অতিরিক্ত টিকা দিলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে কি না, সেটি যাচাইয়ের জন্য এখন একটি ক্লিনিকাল পরীক্ষা চলমান রয়েছে। সরকার বলছে, একটি অতিরিক্ত ডোজ হিসেবে সাত ধরনের টিকার কার্যকারিতার মধ্যে তুলনা করা হচ্ছে।

হামাদা বলছেন, ফাইজার এবং মডার্না টিকার মিশ্র ব্যবহারে কোন সমস্যা হবে না কারণ এগুলো উভয়ই এমআরএনএ টিকা। তবে, পর্যাপ্ত উপাত্তের ঘাটতির কথা উল্লেখ করে তিনি তৃতীয় ডোজ টিকার প্রয়োগ নিয়ে আরও গবেষণার আহ্বান জানান। তিনি এও উল্লেখ করেন যে, এক্ষেত্রে বর্তমানে চালু থাকা টিকা নাকি ভাইরাসের ভিন্ন ধরনগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর নতুন টিকা ব্যবহার করা হবে, সেটি নিয়ে বিবেচনা করাটাও জরুরি।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮৩: কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা আবশ্যকীয় কি? (৪) মডার্নার অভিমত

উত্তর-২৮৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কিছু কিছু দেশে করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ অর্থাৎ কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য টিকার নতুন অতিরিক্ত ডোজ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত ধারাবাহিকে আমরা এই বুস্টার ডোজ সত্যিই আবশ্যক কি না এবং এর অভীষ্ট ফলপ্রসূতা সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। এবারে জানার চেষ্টা করবো যুক্তরাষ্ট্রের জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি মডার্না কী বলছে এ ব্যাপারে।

৫ই আগস্ট মডার্না করোনাভাইরাসের টিকার কার্যকারিতা এবং এই ভাইরাসের নতুন নতুন ধরন বা ভ্যারিয়েন্টগুলো প্রতিরোধে নতুন টিকার উন্নয়ন সম্পর্কিত তথ্যের হালনাগাদ প্রকাশ করে।

এ সংক্রান্ত বিবৃতিতে বলা হয় এই কোম্পানির করোনাভাইরাসের টিকা যারা নিয়েছেন তাদের হয়তো তৃতীয় ডোজ নিতে হবে প্রধানত অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে প্রতিহত করার জন্য।

কোম্পানিটি বলছে তাদের তৈরি করা টিকার কার্যকারিতা “দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে ৬ মাস পর্যন্ত শতকরা ৯৩ ভাগ অটুট থাকবে”।

তবে বিবৃতিতে বলা হয় এরপর ফলপ্রসূতা কমে যেতে পারে এবং এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে “একটি বুস্টার ডোজ নেওয়ার আবশ্যকতা হয়তো দেখা দেবে”। কোম্পানিটি বলে বিশেষ করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ার ফলে বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮২: কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা আবশ্যকীয় কি? (৩) ক্লিনিকাল পরীক্ষায় অ্যান্টিবডি টাইটার বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়

উত্তর-২৮২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কিছু দেশে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি বা বুস্টার টিকা দান বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা কি আবশ্যকীয় এবং সেই টিকা আসলে কি কার্যকর – ধারাবাহিক এই আয়োজনে সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। এবারে আমরা টিকার তৃতীয় ডোজের জন্য মানবদেহে চালানো পরীক্ষায় অ্যান্টিবডি টাইটার বা অ্যান্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধির বিষয়ে নজর দেব।

টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো তৃতীয় ডোজের কার্যকারিতা বোঝার জন্য মানবদেহে পরীক্ষা চালাচ্ছে। ২০২১ সালের ২৮ জুলাই ফাইজার তাদের চালানো পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। তারা আভাস দেয় যে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সের লোকজনের মধ্যে বুস্টার টিকা দ্বিতীয় ডোজের তুলনায় ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডির মাত্রা পাঁচগুণ বাড়িয়ে দেয়। ৬৫ থেকে ৮৫ বছরের লোকজনের মধ্যে অ্যান্টিবডির মাত্রা ১১ গুণ বৃদ্ধি পায় বলে ফলাফলে দেখা যায়।

টোকিও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও বলেন যে শুধুমাত্র একটি কোম্পানির কাছ থেকে উপাত্ত পাওয়া গেছে। উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে তিনি এও বলেন যে ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে টিকার তৃতীয় ডোজের প্রয়োজন পড়তে পারে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮১: কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা আবশ্যকীয় কি? (২) ইসরাইল থেকে পাওয়া প্রতিবেদন

উত্তর-২৮১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কিছু দেশে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি বা বুস্টার টিকা দান বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা কি আবশ্যকীয় এবং সেই টিকা আসলে কি কার্যকর – ধারাবাহিক এই আয়োজনে সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস টিকার কার্যকারিতা যে সময়ের সাথে কমে আসতে থাকে, তা নিশ্চিত করা ইসরাইল থেকে পাওয়া একটি প্রতিবেদনের দিকে এবারে আমরা নজর দেব।

ইসরাইল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত গতির করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। তবে দেশের গবেষকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন যে নতুন ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া অবস্থায়, উপসর্গ দেখা দেয়া সংক্রমণ প্রতিহত করায় টিকার কার্যকারিতা মে মাসের ৯৪ শতাংশ থেকে জুন মাসে ৬৪ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। এটা দেশের কিছু বিশেষজ্ঞকে নিশ্চিত করেছে যে টিকার কার্যক্ষমতা সময়ের সাথে হ্রাস পায়। প্রতিরোধ শক্তিশালী করে নিতে তৃতীয় ডোজ টিকা সরকার দিতে শুরু করেছে।

হামাদা আৎসুও হলেন টোকিও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, যিনি ভাইরাসের ধরণ সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেছেন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বর্তমানে ব্যবহৃত টিকার কার্যকারিতা প্রায় ছয় মাস পর হ্রাস পায় বলে বলা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে করোনাভাইরাসের চাইতে ভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকাও প্রায় ছয় মাস পর কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে বলে ধারণা করা হয়। হামাদা বলছেন, এটা বিবেচনা করে দেখলে একই সময়ের পর অতিরিক্ত একটি টিকা নেয়া যুক্তিসঙ্গত মনে হতে পারে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮০: কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা আবশ্যকীয় কি? (১) দুই ডোজ টিকার কার্যক্ষমতা

উত্তর-২৮০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। কিছু দেশে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি বা বুস্টার টিকা দান বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা কি আবশ্যকীয় এবং সেই টিকা আসলে কি কার্যকর – ধারাবাহিক এই আয়োজনে সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে। এবারে আমরা দুই ডোজ টিকা নেয়ার কার্যকারিতার দিকে নজর দেব।

জাপানের অনুমোদন দেয়া ৩টি টিকা ফাইজার-বিয়োনটেক, মডার্না এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সবগুলোই কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই ডোজ করে নিতে হয়। এটা নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ফাইজার এবং মডার্না এই রোগের মূল ভাইরাস থেকে অন্য ভাইরাসে রূপান্তর বা মারাত্মক নতুন ধরনের ভাইরাসে পরিণত হওয়াকে ৯০ শতাংশের উপরে রোধ করতে পারে। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ক্ষেত্রে এই হার হচ্ছে প্রায় ৭০%।

আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী “নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন”-এর জুলাই, ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে, ফাইজার আলফা ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯৩.৭% কার্যকর এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা ৭৪.৫% কার্যকর। এতে আরও বলা হচ্ছে, ফাইজার ডেল্টা ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে ৮৮% কার্যকর এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা ৬৭% কার্যকর।

প্রতিবেদনে এও বলা হচ্ছে, টিকাগুলো মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়া রোধে সাহায্য করতে পারলেও, সংক্রমণ রোধে এগুলো সমানভাবে কার্যকর নয়। এর অর্থ হচ্ছে, অনেক মানুষ টিকা নিলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে হার্ড ইমিউনিটি বা পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন নাও হতে পারে।

ব্রিটেনের সরকার জানাচ্ছে, ফাইজারের টিকা ডেল্টা ধরনের ভাইরাসের কারণে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোধে ৯৬% কার্যকর হলেও অ্যাস্ট্রাজেনিকা’র টিকা ৯২% কার্যকর।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৯: টিকাদান এবং মিথ্যা গুজব (৫)

উত্তর-২৭৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বর্তমানে যেমন দলে দলে লোক করোনাভাইরাসের টিকা নিচ্ছেন, তেমনি আবার টিকার ব্যাপারে সন্দিহান অথবা মনে উদ্বেগ পোষণ করেন এমন লোকের সংখ্যা এখনও অনেক। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে টিকা সম্পর্কে ভিত্তিহীন তথ্য এবং মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পড়া এর একটা বড় কারণ। করোনাভাইরাসের টিকা সম্পর্কে মিথ্যা গুজব নিয়ে আমাদের ধারাবাহিকের শেষ পর্বে এবারে আমরা আলোকপাত করবো এই সমস্যা নিরসনে ইন্টারনেট পরিষেবা কোম্পানিগুলো কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তার ওপর।

গুজব বা ভিত্তিহীন খবর যাতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভুল পথে চালিত করতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদানকারী কোম্পানিগুলো। যেমন ইয়াহু জাপান মিথ্যা গুজবের সরাসরি পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রকাশ করে। ইয়াহু’র ওয়েবসাইটের সবচেয়ে উপরের পাতায় রয়েছে সংবাদের অংশ এবং কোন বিশেষ বিষয়বস্তুর ওপর আলোকপাতের কলাম। এই পাতাটি দেখেন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইউজার। এখন এই পাতায় করোনাভাইরাসের টিকা সম্পর্কে ভুল তথ্য ও গুজবের চুলচেরা বিচার করে প্রবন্ধ ছাপা হচ্ছে। ছাপা হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এই টিকা সম্পর্কে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সম্বলিত প্রবন্ধ।

অনলাইন সার্চের ক্ষেত্রে ইয়াহু প্রথমেই প্রদর্শন করে সরকারি সংস্থার প্রকাশিত তথ্য অথবা বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্যাদি । এর একটি উদাহরণ হলো, “ভ্যাকসিন” শব্দটির সাথে “ডেথস্‌” অথবা “সাইড এফেক্ট”এর মত কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করা হলে সবচেয়ে উপরে যেসব লিংক প্রদর্শিত হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের একটি প্রশ্নোত্তরের আর্টিকেল এবং ইয়াহু’র একটি নিজস্ব রচনা ও ভিডিও যা কতিপয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের সাথে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ বোধ করলে কী করতে হবে।

ইয়াহু’র কর্পোরেট অফিসার কাতাওকা হিরোশি বলেন টিকাদান কর্মসূচি পূর্ণোদ্যমে চলতে থাকার এই সময়ে মানুষের মধ্যে এই টিকা সম্পর্কে জানার আগ্রহটাও বাড়ছে তা বোঝা যায়। কী ধরনের সার্চ কিওয়ার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কত লোক আর্টিকেলগুলো ব্রাউজ করছেন, সেই সংখ্যার মধ্যেই আগ্রহের ব্যাপারটা প্রতিফলিত হচ্ছে। কাতাওকা বলেন টিকা সম্পর্কিত কোন্‌ তথ্য বিশ্বাসযোগ্য, সেটা নির্ধারণ করা যেহেতু লোকজনের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন, তাই সঠিক তথ্যের সারাংশ এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সহজবোধ্য ভাবে তুলে ধরা ও তা ব্যাপকভাবে মানুষকে জানানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাতাওকা বলেন তার কোম্পানি করোনাভাইরাসের টিকা সম্পর্কে মানুষের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা দূর করা এবং প্রশ্নের উত্তর পেতে সাহায্য করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৮: টিকাদান এবং মিথ্যা গুজব (৪) মিথ্যা গুজবের উদাহরণ - ৩

উত্তর-২৭৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আরও বেশি মানুষ টিকা নিতে থাকা অবস্থায় অনেকে আবার এখনও পর্যন্ত টিকা নেয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন কিংবা সন্দেহপ্রবণ। টিকা নেয়া নিয়ে ভিত্তিহীন তথ্য ও মিথ্যা গুজব মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।
টিকা নিয়ে মিথ্যা গুজব সংক্রান্ত এই ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্বে আমরা যেসব গুজব ছড়াচ্ছে তার কয়েকটি দৃষ্টান্তের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো।

মিথ্যা গুজব ৫: “টিকার মধ্যে মাইক্রোচিপস রয়েছে”
সামাজিক মাধ্যম সহ অন্যান্য স্থানে বিস্তৃত একটি ভুল তথ্য হল যে টিকার মধ্যে মাইক্রোচিপস রয়েছে যার মাধ্যমে লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মত বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এবং কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটে করোনাভাইরাস টিকার উপাদান তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। টিকার ভিতর যে মাইক্রোচিপস নেই তা ঐ তালিকা দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়।

মিথ্যা গুজব ৬: “টিকার কারণে চুম্বক আপনার দেহের সাথে লেগে থাকবে”
সামাজিক মাধ্যমে অপর একটি মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পড়ছে যা হল টিকার কারণে চুম্বক আপনার দেহের সাথে লেগে থাকবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলো তাদের ওয়েবসাইটে জানায় যে টিকার ভিতরে চুম্বক জাতীয় কোন পদার্থ নেই। এই ধরনের দাবি তারা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৭: টিকাদান এবং মিথ্যা গুজব (৩) মিথ্যা গুজবের উদাহরণ -২

উত্তর-২৭৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আরও বেশি মানুষ টিকা নিতে থাকা অবস্থায় অনেকে আবার এখনও পর্যন্ত টিকা নেয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন কিংবা সন্দেহপ্রবণ। টিকা নেয়া নিয়ে ভিত্তিহীন তথ্য ও মিথ্যা গুজব মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে।
টিকা নিয়ে মিথ্যা গুজব সংক্রান্ত এই ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে এবারে আমরা যেসব গুজব ছড়াচ্ছে তার কয়েকটি দৃষ্টান্তের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো।

মিথ্যা গুজব ৩: “টিকা জিনগত তথ্য বদল করে দেয়”
ব্যাপকভাবে বিস্তৃত একটি ভুল তথ্য হচ্ছে এরকম যে টিকা নেয়ার অনেকদিন পর পর্যন্ত টিকার উপাদান আমাদের দেহের ভেতরে থেকে যায় এবং জিনগত তথ্য তা বদলে ফেলে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে বলছে যে ফাইজার-বিয়োনটেক ও মডার্নার টিকায় ব্যবহৃত এমআরএনএ আমাদের দেহে প্রবেশ করার অল্প সময় পর ভেঙ্গে যায় এবং এর ফলে আমাদের ডিএনএ’র সাথে তা যুক্ত হতে পারে না। মন্ত্রণালয় বলছে টিকা যে জিনগত তথ্য বদল করে দিতে পারে তা সত্য নয়।

মিথ্যা গুজব ৪: “টিকা রোগ সংক্রমণের কারণ হয়ে উঠে”
এরকম ভুল তথ্যও প্রচারিত হয়েছে যে বৃদ্ধ লোকজন টিকা নেয়ার পর একের পর এক নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং নার্সিং সেবা কেন্দ্রে তারা মারা গেছেন। টিকায় ভাইরাস থাকে না, আর তাই সংক্রমণের কারণ তা হতে পারে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সুনির্দিষ্ট কোন এক ধরনের রোগ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ যে টিকা হয়ে উঠেছে, মন্ত্রণালয়ের তা জানা নেই।

টিকা নেয়ার অল্প পরে ঘটা মৃত্যুর জন্য টিকাকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যত্র ছড়ানো গুজব নিয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করছে। সরকারকে জানানো টিকা-পরবর্তী মৃত্যুর সংখ্যা, টিকার সাথে সম্পর্ক না থাকা ঘটনা যেখানে অন্তর্ভুক্ত আছে, সেটার ভুল ব্যাখ্যা না করার আহ্বান জনগণের প্রতি মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৬: টিকাদান এবং মিথ্যা গুজব (২) মিথ্যা গুজবের উদাহরণ-১

উত্তর-২৭৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোকজন টিকা নিলেও অনেকেই এখনও টিকা নেয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং সন্দিহান রয়েছেন। টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে ভিত্তিহীন ভুয়া খবর এবং মিথ্যা গুজব বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়ানো হচ্ছে। এবারে টিকাদান সম্পর্কিত মিথ্যা গুজব নিয়ে নতুন ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আমরা ছড়িয়ে পড়া কিছু গুজবের উদাহরণ উপস্থাপন করছি।

মিথ্যা গুজব ১: “টিকা বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি করে”
ব্যাপকভাবে ছড়ানো একটি ভুয়া তথ্য হচ্ছে, টিকাদান বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি করে। এই মিথ্যা গুজবটিতে দাবি করা হচ্ছে, টিকাদানের ফলে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তার প্লাসেন্টা বা অমরার উপর নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। করোনাভাইরাসের টিকা সংক্রান্ত একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, এটা ইতোমধ্যেই সবার জ্ঞাত যে, প্লাসেন্টা সংশ্লিষ্ট প্রোটিনের উপর এই অ্যান্টিবডি আক্রমণ করে না। এছাড়াও, জাপানের টিকাদান কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কোনো তারো জোর দিয়ে বলেছেন, এমন কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে টিকা বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি করে।

মিথ্যা গুজব ২: “টিকা গর্ভপাত ঘটায়”
আরেকটি মিথ্যা গুজব হচ্ছে যখন অন্তঃসত্ত্বা নারীরা টিকা নিচ্ছেন, তখন এই টিকা গর্ভপাতের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে জানাচ্ছে যে, টিকা নেয়া নারীদের মধ্যে গর্ভপাতের সংখ্যা বেড়ে গেছে এমন কোন উপাত্ত নেই। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের গবেষকদের একটি গ্রুপের এক সমীক্ষা থেকে পাওয়া উপাত্তও রয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন করোনাভাইরাসের টিকা নেয়া ৫ হাজারেরও বেশি নারীর উপর চালানো এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, তাদের গর্ভপাত, মৃত শিশুর জন্ম, গর্ভধারণের ৩৮ তম সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই শিশুর জন্ম ও জন্মের সময় শিশুর ওজন কম থাকার হার এবং বৈশ্বিক মহামারি পূর্ব অন্তঃসত্ত্বা নারীদের এ সংক্রান্ত হারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৫: টিকাদান এবং মিথ্যা গুজব (১) মিথ্যা গুজব মোকাবিলার উপায়

উত্তর-২৭৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা টিকাদান সম্পর্কিত মিথ্যা গুজব সামাল দেয়ার উপায় নিয়ে নতুন এক ধারাবাহিকের প্রথম পর্ব উপস্থাপন করছি।
ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোকজন টিকা নিলেও অনেকে এখনও টিকা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধান্বিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে ভিত্তিহীন ভুয়া খবর এবং মিথ্যা গুজব ছড়ানোয় সহায়ক হয়েছে।

এই সমস্যাটিকে কীভাবে সামাল দেয়া যায়, সেটি আলোচনা করতে গত ১৫ই জুলাই অনলাইনে একটি সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালের এপ্রিল এবং জুলাই মাসের মধ্যে এসম্পর্কিত টুইটের সংখ্যা আটগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যে দিয়ে টিকাদান বিষয়ক গুজব এবং ভিত্তিহীন তথ্য কীভাবে ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে, জাপান আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ইয়ামাগুচি শিনইচি সেটি ব্যাখ্যা করেন।
এছাড়া, ইয়ামাগুচি একতরফাভাবে সঠিক তথ্য প্রচারের উপরও গুরুত্ব দেন। তিনি এক্ষেত্রে এই উদাহরণ তুলে ধরেন যে, তথ্য সূত্রের সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে গণমাধ্যমে ফ্যাক্ট-চেকিং বা সত্য-যাচাইয়ের কিছু নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পরে কীভাবে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা গুজবের নিন্দা জানানো পোস্টের সংখ্যা বাড়িয়েছে।

এরপরে, ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর নেয়া পদক্ষেপসমূহ উপস্থাপন করা হয়। টুইটারের একজন কর্মী ব্যাখ্যা করে বলেন যে, কীভাবে কোম্পানিটি একটি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে, যেটি করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা পোস্টসমূহের সাথে একটি লেভেল যুক্ত করে এবং লোকজনের এধরনের টুইটে সাড়া দেয়া, পুনরায় টুইট করা বা লাইক পোষ্ট করার সুযোগকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
এরপরে, লাইন’এর একজন কর্মী, কোম্পানিটি ঠিক কীভাবে কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় সরকারগুলোর আনুষ্ঠানিক একাউন্ট থেকে সরাসরি তথ্য প্রেরণের মধ্যে দিয়ে তাদের পরিষেবা ব্যবহারকারীদের সঠিক তথ্য প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরেন।

ঐ সিম্পোজিয়ামে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কোনো তারো বলেন, ইন্টারনেট এখন করোনাভাইরাসের টিকাদান সম্পর্কিত বিভ্রান্তিমূলক তথ্যে পরিপূর্ণ। কোনো বলেন, এর মাধ্যমে বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে টিকা দেয়া নিয়ে কীভাবে ভুল বোঝাবুঝি এবং অতিরিক্ত উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে, সরকার সেই বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। মন্ত্রী বলেন, ভুল তথ্যের সূত্রগুলো এমন ভাষা বা বাক্য ব্যবহারের প্রবণতা দেখায় যা লোকজনের ভেতরে উদ্বেগের সৃষ্টি করে, যেমন, “আমরা ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো থেকে গোপনে গোপনীয় তথ্য পেয়েছি।” উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, মন্ত্রী লোকজনের কাছে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে টিকা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানান।

আমাদের পরবর্তী পর্বে, আমরা এরকম মিথ্যা গুজবের কিছু সুনির্দিষ্ট ঘটনা তুলে ধরব।

এই তথ্যগুলো আগস্ট মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৪: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৯) সংবাদ মাধ্যমের জন্য নিতে হওয়া পদক্ষেপের দ্বিতীয় অংশ।

উত্তর-২৭৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আছে টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকে নিতে যাওয়া করোনাভাইরাস পদক্ষেপের নবম পর্ব, যেখানে আমরা সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের অনুসরণ করতে হওয়া পদক্ষেপের উপর আলোকপাত করব।

সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের জন্য ঠিক করে নেয়া প্লেবুক বা নির্দেশিকা বই বলছে জাপানের উদ্দেশ্যে ফ্লাইট ছাড়ার আগে ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে ভিন্ন দিনে দুটি করোনাভাইরাস পরীক্ষা তাদের অবশ্যই নিতে হবে। এছাড়া, জাপানে প্রথম ১৪ দিন তারা অবশ্যই গণ পরিবহণ ব্যবহার করবেন না এবং শুধুমাত্র গেমসের ভেন্যু এবং নিজেদের কর্ম পরিকল্পনায় উল্লেখ করা অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার অনুমতি তাদের দেয়া হবে। প্লেবুক বলছে জাপানে থাকার সময় অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য জমা করে রাখার জন্য তাদের স্মার্ট ফোনের জিপিএস ফাংশন কাজে লাগানো হবে।

প্লেবুকে এছাড়া নিজেদের পালন করতে যাওয়া ভূমিকা অনুযায়ী সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের কতবার পরীক্ষা নিতে হবে তার তালিকা দেয়া হয়েছে। খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের কাছাকাছি যেসব সম্প্রচারক বা ফটোগ্রাফারকে আসতে হবে, তাদেরকে অবশ্যই প্রতিদিন পরীক্ষা নিতে হবে। ক্রীড়াবিদ এবং কর্মকর্তাদের সাথে কোন এক পর্যায়ের যোগাযোগ যাদের হতে পারে, প্রতি চারদিনে একবার অবশ্যই তাদের পরীক্ষা নিতে হবে। অন্যদিকে ক্রীড়াবিদ কিংবা কর্মকর্তাদের সাথে সীমিত অথবা কোনরকম যোগাযোগ যাদের হবে না, তাদেরকে অবশ্যই সাতদিনে একবার পরীক্ষা নিতে হবে।

প্লেবুকে উল্লেখ থাকা নিয়মাবলী যারা লঙ্ঘন করবেন, অ্যাক্রেডিটেশন বা নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়া এবং আর্থিক জরিমানার মত পরিণতির মুখোমুখি তাদের হয়তো হতে হবে। এছাড়া তাদের জাপানে অবস্থানের অনুমতিও বাতিল হয়ে যেতে পারে।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭৩: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৮) সংবাদ মাধ্যমের জন্য নিতে হওয়া পদক্ষেপসমূহ।

উত্তর-২৭৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা টোকিও অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসের সময় গ্রহণ করতে যাওয়া করোনাভাইরাসের পদক্ষেপসমূহের অষ্টম পর্ব উপস্থাপন করব। এতে মূলত আলোকপাত করা হবে সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের মেনে চলতে যাওয়া পদক্ষেপসমূহের উপর।

গেমসের খবর পরিবেশনের জন্য বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের সদস্যরা জাপানে আসছেন।
টোকিও গেমসের আয়োজক কমিটি জানাচ্ছে, জুন মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ২০০টি দেশ এবং ভূখণ্ড থেকে ২ হাজারের মত সংবাদ সংস্থার ১৬ হাজারেরও বেশি সংবাদ মাধ্যমের সদস্য এখানে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমিটি এও জানাচ্ছে, গেমস অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে জাপানি এবং বিদেশি সংবাদ প্রতিনিধিদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের টিকা নেয়া হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের জন্য প্রণীত প্লেবুকে দেখা যাচ্ছে, জাপানে প্রথম ১৪ দিন, তারা অবশ্যই গণপরিবহণ ব্যবহার করতে পারবেন না এবং তারা কেবল গেমসের ভেন্যু এবং তাদের কর্ম পরিকল্পনার মধ্যে নির্দেশিত অন্যান্য স্থান ছাড়া কোথাও যেতে পারবেন না।
তবে কেউ কেউ এ ধরনের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০টি সংবাদ মাধ্যম আয়োজক কমিটির কাছে যৌথভাবে এই বলে একটি প্রতিবাদলিপি দাখিল করে যে, তাদের কর্মকাণ্ড সীমিত হবে।
এ ধরনের মতামতের প্রত্যুত্তরে, কমিটি জানাচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন এবং এইসব পদক্ষেপ গেমসের সমস্ত অংশগ্রহণকারী এবং জাপানের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কমিটি এও জানাচ্ছে যে, তারা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং যতটা সম্ভব সাবলীলভাবে বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের সক্ষম করবে।
সংবাদ মাধ্যমের সদস্যদের জন্য তাদের কর্মকাণ্ড চালানোর সময় পূর্ণাঙ্গভাবে সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করা একটি চ্যালেঞ্জ।

আগামী পর্বে আমরা সংবাদ মাধ্যমের জন্য নিতে হওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আরও তথ্য আপনাদের জানাব।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭২: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৭) অলিম্পিক ভিলেজ বা ক্রীড়াবিদদের আবাসনের জন্য প্রযোজ্য আচরণবিধি।

উত্তর-২৭২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা টোকিও অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসের সময় গ্রহণ করতে যাওয়া করোনাভাইরাসের পদক্ষেপসমূহের সপ্তম পর্ব উপস্থাপন করব। এতে মূল আলোকপাত করা হবে অলিম্পিক ভিলেজ নামে পরিচিত ক্রীড়াবিদদের আবাসনে প্রযোজ্য আচরণবিধির উপর।

অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক ভিলেজ হচ্ছে অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিকের একটি প্রতীক যেখানে দেশ বা অঞ্চল এবং প্রতিযোগিতা নির্বিশেষে খেলোয়াড়রা পারস্পরিক সামাজিক মেলামেশা করতে পারেন। তবে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার রোধে টোকিও গেমসের ক্ষেত্রে অপ্রচলিত আচরণবিধি আরোপ করা হয়েছে।

অতীতের গেমসগুলোতে ক্রীড়াবিদদের আবাসনে তাদের প্রতিনিধিরা ঠিক কতদিন থাকবেন, সেটি প্রতিটি দেশ নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিত। তবে, টোকিও গেমসের ক্ষেত্রে ক্রীড়াবিদদের এই আবাসনে তাদের অবস্থান সীমিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অলিম্পিক ক্রীড়াবিদদের তাদের প্রতিযোগিতার পাঁচ দিন আগে সেখানে প্রবেশের অনুমোদন রয়েছে এবং তাদের ইভেন্ট শেষ হওয়ার দু’দিনের মধ্যে অবশ্যই এই ভিলেজ বা আবাসন এলাকা ত্যাগ করতে হবে। প্যারালিম্পিক ক্রীড়াবিদরা অবশ্য প্রতিযোগিতার সাত দিন আগেই প্রবেশ করতে পারবেন।

অন্যদিকে, আবাসনের ভেতরেও নানা ধরনের নিয়মাবলী আরোপ করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম বায়ু চলাচলের স্থান, ভিড় এবং খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থানের মত পরিস্থিতি এড়ানোর পাশাপাশি ক্রীড়াবিদদের আলিঙ্গন বা হাত মেলানোর মত শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে।

টোকিও ২০২০ প্লেবুক অনুযায়ী, ভিলেজের শরীরচর্চা কেন্দ্রে অনুশীলনের সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। প্রধান ডাইনিং হলে ক্রীড়াবিদদের একজনের থেকে আরেকজনের মধ্যে দু’মিটারের দূরত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং তাদেরকে যতটা সম্ভব একা খাবার গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

অতীতের অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিকগুলোতে ব্যক্তিগত আলাদা কক্ষে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পান করার অনুমোদন দেয়া হয়ে আসছিল। টোকিও গেমসের জন্য অবশ্য আয়োজক কমিটি সুনির্দিষ্ট কক্ষে অ্যালকোহল পান অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিলেও জনসমাগমের এলাকাসমূহ এবং ভিলেজের ভেতরে থাকা পার্কে দলগতভাবে পান করা নিষিদ্ধ করবে।

আমাদের পরবর্তী পর্বে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য প্লেবুকে নির্ধারিত করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরব।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭১: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৬) নিয়ম অমান্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

উত্তর-২৭১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ব্যবস্থার রূপরেখা সম্বলিত টোকিও ২০২০ প্লেবুক নিয়ে ধারাবাহিকের ষষ্ঠ পর্ব উপস্থাপন করব। এতে ক্রীড়াবিদ ও গেমসের সাথে যুক্ত অন্য ব্যক্তিরা প্লেবুকে বর্ণিত নিয়মাবলী অমান্য করলে কী পরিণাম হবে, তার ওপর আলোকপাত করব।

প্লেবুকে বলা হয়েছে নিয়মাবলী মেনে চলতে ব্যর্থ হলে শাস্তি পেতে হতে পারে। মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্রাহ্য করা, আগেই জমা দেওয়া ‘অ্যাক্টিভিটি প্ল্যান’এ উল্লেখ করা হয়নি এমন জায়গায় যাওয়া এবং কোভিড-১৯’এর পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে আপত্তি জানানো --- এগুলো হচ্ছে নিয়মাবলীর লংঘন হিসেবে বিবেচিত দৃষ্টান্তের মধ্যে কয়েকটি।

নিয়ম অমান্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেলে, সে সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হবে। অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হলে গেমসের আয়োজক কমিটি, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এবং সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। এই আলোচনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে কৃতিত্বের জন্য অর্পিত আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রত্যাহার, অযোগ্য বলে ঘোষণা করা এবং আর্থিক জরিমানা। প্লেবুকে বলা হয়েছে নিয়ম লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে জাপানি কর্তৃপক্ষ, যেমন ১৪ দিন অন্যদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা অথবা জাপানে অবস্থানের অনুমতি বাতিল করা ইত্যাদি।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭০: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৫) নতুন করোনাভাইরাসের পরীক্ষা (২)

উত্তর-২৭০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা টোকিও অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসের সময় গ্রহণ করতে যাওয়া করোনাভাইরাসের পদক্ষেপসমূহের পঞ্চম পর্ব উপস্থাপন করব, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের করোনাভাইরাস পরীক্ষার বিষয়টির কথা বলব।

টোকিও ২০২০ প্লেবুকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের জন্য নির্ধারিত নিয়মাবলীর উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্যে ভাইরাস পরীক্ষার বিস্তারিত কর্মসূচিও অন্তর্ভুক্ত।

প্লেবুকে বলা হচ্ছে যে মূলত খেলোয়াড়, কোচ এবং দলের অন্যান্যদের দৈনিক কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হবে। এমনকি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর নেয়া পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হলেও দৈনিক পরীক্ষা করাতে হবে।

সকাল ৯টায় বা সন্ধ্যা ৬টায় লালার নমুনা জমা দেয়ার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে তাদেরকে কোয়ান্টিটেটিভ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে দেখা হবে। পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ হলে বা তা পরিষ্কার করে বোঝা না গেলে ঐ একই নমুনা ব্যবহার করে পিসিআর পরীক্ষা করা হবে।

ঐ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল বের হতে প্রায় ১২ ঘন্টা লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লালার পিসিআর পরীক্ষার ফলাফল যদি পজিটিভ হয় বা পরিষ্কার করে বোঝা না যায় তবে ঐ ব্যাক্তিকে অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক ভিলেজে কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্রে নাকের অনেকটা ভিতর থেকে নেয়া শ্লেষ্মা ব্যবহার করে পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হলেই তিনি আবারো খেলায় যোগ দিতে পারবেন। টোকিও ২০২০ আয়োজক কমিটির কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন যে খেলার উপর ভাইরাস পরীক্ষার প্রভাব যাতে ন্যূনতম থাকে সেই লক্ষ্যে তারা সবকিছু বিবেচনা করে দেখছেন।

পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় লালার নমুনা খেলোয়াড় এবং কর্মকর্তারা নিজেদের ঘরে নিতে পারবেন তবে প্রতিটি দলের কোভিড-১৯ লিয়াজোঁ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানেই তা নিতে হবে। প্রশ্ন হল আয়োজক কমিটি কীভাবে নিশ্চিত করতে পারবে যে নমুনা নেয়ার সময় কোন ধরনের কারচুপি করা হবে না।

আয়োজক কমিটি এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি জানায় যে নমুনা সংগ্রহ প্রক্রিয়া যথাযথভাবে যাতে তত্ত্বাবধান করা হয় তা তারা নিশ্চিত করবে। এরসাথে আগাম কিছু না জানিয়ে পরীক্ষা চালানোর ব্যাপারটিও তারা বিবেচনা করে দেখবে।

পরবর্তী পর্বে, প্লেবুকে নির্ধারিত নিয়মাবলী মেনে চলতে ব্যর্থ হলে খেলোয়াড় এবং কর্মকর্তাদের পরিণতি কী হতে পারে সেই বিষয়টির উপর আমরা আলোকপাত করব।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৯: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৪) নতুন করোনাভাইরাসের পরীক্ষা (১)

উত্তর-২৬৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা টোকিও অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসের সময় গ্রহণ করতে যাওয়া করোনাভাইরাসের পদক্ষেপসমূহের চতুর্থ পর্ব উপস্থাপন করব, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের করোনাভাইরাস পরীক্ষার বিষয়টির কথা বলব।

টোকিও ২০২০ প্লেবুকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের জন্য নির্ধারিত নিয়মাবলীর উল্লেখ আছে, যার মধ্যে ভাইরাস পরীক্ষার বিস্তারিত কর্মসূচিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্লেবুকে বলা হচ্ছে, খেলোয়াড়, কোচ এবং দলের অন্যান্যরা যারা জাপানে আসবেন তাদের অবশ্যই দু’টি কোভিড-১৯’এর পরীক্ষা করাতে হবে পৃথক পৃথক দুই দিনে এবং এই পরীক্ষা অবশ্যই জাপানে আসার ফ্লাইটের সময়ের আগের ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে করতে হবে। এই দু’টি পরীক্ষার ন্যূনতম একটি রওনা দেয়ার ৭২ ঘণ্টা আগের মধ্যে হতে হবে।

অংশগ্রহণকারীদের লালার নমুনা বা নাকের অনেকটা ভিতর থেকে সংগৃহিত শ্লেষ্মা ব্যবহার করা জাপান সরকার অনুমোদিত একটি পিসিআর পরীক্ষা বা একটি কোয়ান্টিটেটিভ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে বলা হবে।

তারা যখন জাপানে এসে পৌঁছাবেন, তখন তাদেরকে বিমানবন্দরেই একটি পরীক্ষা অবশ্যই করতে হবে। তাদেরকে এই পরীক্ষার ফলাফলের জন্য বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে হবে। যদি পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ বলে নিশ্চিত হয় তাহলে, সেই ব্যক্তিকে অলিম্পিক ভিলেজ’এ জ্বরের জন্য স্থাপিত বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানে আর একবার করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে।

পরবর্তী পর্বে, জাপানে থাকাকালীন প্লেবুকে নির্ধারিত উপায়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার বিষয়টির উপর আমরা আরও আলোকপাত করব।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৮: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (৩) ক্রীড়াবিদদের কাজকর্ম সংক্রান্ত নিয়মাবলী (২)

উত্তর-২৬৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা “টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমসের অংশগ্রহণকারীদের জাপানে এসে পৌঁছানোর পরের কার্যক্রম সম্পর্কে ঐ নিয়মাবলীর বইয়ে কী বলা হয়েছে,” তার দ্বিতীয় পর্ব উপস্থাপন করব।

টোকিও ২০২০ প্লেবুকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের জন্য নির্ধারিত নিয়মাবলীর উল্লেখ আছে, যার মধ্যে টোকিও গেমসে যোগদানকারীদের জাপানে অবস্থানকালীন কার্যক্রম সংক্রান্ত বিধিমালাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ঘুরে বেড়ানোর সময় ক্রীড়াবিদ এবং কোচদের নীতিগতভাবে গণ পরিবহন ব্যবহারের অনুমতি নেই। তাদের অবশ্যই অলিম্পিক সংস্থার ব্যবস্থা করা গাড়ি পরিষেবা ব্যবহার করতে হবে এবং তারা যদি সেগুলো ব্যবহার করতে না পারেন, তবে তাদের অবশ্যই ভাড়া করা ট্যাক্সি নিতে হবে।

অংশগ্রহণকারীরা যখন অলিম্পিক ভিলেজ নামে পরিচিত ক্রীড়াবিদ আবাসনের বাইরে তাদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করবেন, তখন তারা নীতিগতভাবে কোন ব্যক্তি বিশেষের আবাসস্থলে অবস্থান করতে পারবেন না। যদি স্ব-উদ্যোগে জোগাড় করা আবাসন স্থাপনাগুলো আয়োজক কমিটির নির্ধারিত চাহিদা মেটাতে না পারে, তবে তারা অংশগ্রহণকারীদের একটি নতুন স্থাপনা খোঁজার অনুরোধ জানাবে।

আর খাবারের ব্যাপারে, ক্রীড়াবিদদের আবাসনে অবস্থান করা অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই সেখানে অথবা গেমসের ভেন্যুতে খাবার খেতে হবে। অন্যদের গেমসের ভেন্যু বা তাদের আবাসন স্থাপনায় থাকা রেস্তোরাঁয় খেতে হবে অথবা তারা চাইলে নিজের কক্ষে খাবার আনিয়ে নেয়ার পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন।

পরবর্তী পর্বে আমরা প্লেবুকটিতে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা করোনাভাইরাস পরীক্ষার দিকে নজর দিব।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৭: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (২) ক্রীড়াবিদদের কাজকর্ম সংক্রান্ত নিয়মাবলী (১)

উত্তর-২৬৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমসে যোগদানকারীরা জাপানে এসে পৌঁছানো মাত্র তাদের যে নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে, সে ব্যাপারে নির্দেশিকার সংকলন প্লেবুকে কী বলা হচ্ছে? এবারে এর প্রথম পর্ব।

টোকিও ২০২০ প্লেবুকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের জন্য অনুসরণীয় নিয়মাবলীর বিবরণ রয়েছে, যার মধ্যে টোকিও গেমসে যোগদানকারীদের জাপানে থাকাকালীন ক্রিয়াকর্ম সংক্রান্ত নির্দেশাবলীও অন্তর্ভুক্ত।

ক্রীড়াবিদ ও কোচদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে তথাকথিত “অ্যাক্টিভিটি প্ল্যান” তৈরি করে, জাপানে এসে পৌঁছানোর আগেই সেগুলো পরিচালনা কমিটির কাছে জমা দেওয়ার। জাপানে আসার পর তাদের প্রথম ১৪ দিনের পরিকল্পিত ক্রিয়াকর্ম সম্পর্কে সেই দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে হবে। সবার নাম ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্যাদি সহ, তারা যেখানে থাকবেন সেখানকার ঠিকানা, এবং পরিকল্পিত বা সম্ভাব্য গন্তব্যস্থল সম্পর্কেও দলিলে অবশ্যই জানাতে হবে। স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও অন্য ব্যক্তির সঙ্গে নিকটবর্তীতা শনাক্তকরণের উপযোগী কনট্যাক্ট কনফার্মিং অ্যাপ, কোকোয়া স্মার্টফোনে ডাউনলোড ও ইন্সটল করে নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও থাকবে কোচ ও ক্রীড়াবিদদের। এছাড়া স্মার্টফোনে তাদের অবস্থান ও গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য ও ইতিহাস রেকর্ড করার ব্যবস্থাটিও চালু করতে হবে।

জাপানে এসে পৌঁছানোর পর “অ্যাক্টিভিটি প্ল্যান” অনুসারে চলতে হবে ক্রীড়াবিদ ও কোচদের। প্রথম তিন দিন তারা যদি গেমের সাথে সম্পর্কযুক্ত কাজ করতে চান, সেগুলো তাদের অবশ্যই করতে হবে কড়া তত্ত্বাবধানে, যেখানে পরিদর্শকের উপস্থিতি অথবা জিপিএস উপাত্তের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তাদের গতিবিধি সীমিত রাখতে হবে কয়েকটি জায়গার মধ্যে, যেমন থাকার জায়গা এবং অনুশীলনের জায়গা। পর্যটন স্থলের মত অন্য কোনো জায়গায় যাওয়ার অনুমতি তাদের থাকবে না।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৬: টোকিও গেমসের জন্য নেয়া ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ: টোকিও ২০২০ প্লেবুক (১) জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে আরোপিত নিয়মাবলী।

উত্তর-২৬৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এবারের প্রশ্ন, টোকিও প্যারালিম্পিক এবং অলিম্পিকের জন্য কী ধরনের ভাইরাস প্রতিরোধ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে?

জুন মাসের ১৫ তারিখ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এবং টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক আয়োজক কমিটি টোকিও ২০২০ প্লেবুকের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত সংস্করণ প্রকাশ করে যেখানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ নিয়মাবলীর রুপরেখা তুলে ধরা হয়। ক্রীড়াবিদ সহ খেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি ব্যক্তিকেই ঐ বিধি মেনে চলতে হবে। এর প্রথম সংস্করণ ফেব্রুয়ারি মাসে এবং দ্বিতীয়টি এপ্রিল মাসে প্রকাশ করা হয়েছিল। প্লেবুকের চূড়ান্ত সংস্করণে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি এবং ব্যবস্থা স্পষ্ট করে দিতে অতিরিক্ত বিস্তারিত প্রদান করা হয়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে সর্বশেষ সংস্করণে ক্রীড়াবিদদের প্রতিযোগিতা সময়সূচিতে যাতে ন্যূনতম প্রভাব না পড়ে সেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তাদের জন্য দৈনিক করোনাভাইরাস পরীক্ষার পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে। এতে আরও বলা হয় যে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরন নিয়ে দেখা দেয়া উদ্বেগের মোকাবিলা করতে জাপানে প্রবেশের পর সীমান্ত ব্যবস্থা কঠোর করে নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্লেবুকের বিধি মেনে চলতে ব্যর্থ হলে তার সম্ভাব্য শাস্তি হিসাবে আর্থিক জরিমানার বিষয়টিও নতুন সংস্করণে যুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য শাস্তির মধ্যে খেলা থেকে বের করে দেয়া এবং জাপানে থাকার অনুমতিপত্র বাতিল করে দেয়া হতে পারে।

১ জুলাই, বৃহস্পতিবার থেকে প্লেবুকের নিয়মাবলী কার্যকর হয়ে গেছে তবে তা পরিবর্তনের সম্ভাবনাও রয়েছে।

আগামী পর্বে জাপানে একবার প্রবেশের পর খেলায় অংশগ্রহণকারীদের কর্মকাণ্ড বিষয়ক নিয়মাবলীর উপর আমরা আলোকপাত করব।

এই তথ্যগুলো জুলাই মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৫: কোভিড-১৯ প্রতিরোধে কাজ করে সেরকম কোন খাদ্য কিংবা সম্পূরক আছে কি?

উত্তর-২৬৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের এবারের প্রশ্ন হচ্ছে: “কোভিড-১৯ প্রতিরোধে কাজ করে সেরকম কোন খাদ্য কিংবা সম্পূরক আছে কি?”

জাপানের ভোক্তা সংক্রান্ত এজেন্সি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর বলে দাবী করা অনলাইনে বিক্রি হওয়া কিছু পণ্যের উপর এপ্রিল ও মে মাসে চালানো জরিপের ফলাফল জুন মাসের ২৫ তারিখ প্রকাশ করে। গত বছর থেকে এজেন্সি এরকম জরিপ চালিয়ে আসছে।

এজেন্সির কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন যে ৪৯টি পণ্যের বিজ্ঞাপন কিংবা লেবেলে সমস্যা রয়েছে।

ভিটামিন ডি’র একটি সম্পূরক গ্রহণ করার মধ্যে দিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা আপনি প্রতিহত করতে পারবেন উল্লেখ করা প্রশ্ন-সাপেক্ষ বিজ্ঞাপন হচ্ছে একটি দৃষ্টান্ত। আরেকটিতে বলা হয়েছে পার্সিমন ফলের অম্লরস যুক্ত থাকা একটি ক্যান্ডি যে করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়, সেটা যাচাই করে দেখা হয়েছে। এছাড়া আরও একটি বিজ্ঞাপন বলছে চাগা চা, যেটা হচ্ছে এক ধরনের কালো ছত্রাক থেকে তৈরি চা, করোনাভাইরাস প্রতিহত করার পদক্ষেপ হিসেবে সেটা ভাল।

কর্মকর্তারা বলছেন এসব বিজ্ঞাপনে সুস্পষ্ট প্রমাণের অভাব রয়েছে এবং এগুলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। নিজেদের বিজ্ঞাপন ও পণ্যের লেবেল উন্নত করে নেয়ার অনুরোধ তারা পণ্য বিক্রি করা ৪৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতি জানিয়েছেন। একই সাথে নিজেদের ওয়েবসাইটেও এসব বিজ্ঞাপন তারা পোস্ট করেছেন এবং বিভ্রান্তিকর দাবী সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান ভোক্তাদের প্রতি তারা জানাচ্ছেন।

এজেন্সির খাদ্য সংক্রান্ত লেবেল বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত নিশিকাওয়া কোইচি আমাদের জানিয়েছেন যে সম্পূরক খাদ্য সামগ্রীর উপর অনেক গবেষণা রয়েছে, গবেষকরা যেখানে দাবী করছেন যে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে এগুলো কাজ করে। তবে সেরকম সকল গবেষণাই চালানো হয়েছে কৃত্রিম পথ ধরে। তিনি বলেছেন কেউ আসলে সেরকম খাবার খান নি কিংবা সম্পূরক সামগ্রী গ্রহণ করেন নি এবং এগুলো যে কার্যকর সেই প্রমাণ দেন নি। তিনি বলেছেন এজেন্সি চাইছে ভোক্তারা যেন বিষয়টি নিয়ে শান্তভাবে ভেবে দেখেন এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সুপারিশ করা অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৪: করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরে কোন ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা ঠিক হবে? - ২ যারা অন্তঃসত্ত্বা এবং ওষুধ খাচ্ছেন তাদের অবশ্যই সাবধান থাকা উচিত।

উত্তর-২৬৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরে কারো জ্বরের মত উপসর্গ দেখা দিলে কোন ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে, সেসম্পর্কে প্রথমবারের মত নির্দেশনা দিয়েছে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই পর্বের আলোচ্য প্রশ্নটি হচ্ছে, জ্বরনিবারক বা ব্যাথানাশক ওষুধ সেবনের সময় কাদের সতর্ক থাকা উচিত?

অধিকাংশ সময়ে করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরে যদি কারো জ্বর আসে তাহলে তা আসে এক বা দু’দিন পরে। প্রয়োজন হলে সেই ব্যক্তি জ্বরনিবারক বা ব্যাথানাশক ওষুধ সেবন করতে পারেন এবং তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এও জানাচ্ছে যে, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই যেসব জ্বরনিবারক বা ব্যাথানাশক ওষুধ পাওয়া যায় সেগুলো সেবন করার সময় কারো কারো সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। তারা জানাচ্ছে, এই সতর্ক থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী বা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন নারী, অন্যান্য ওষুধ খাওয়া লোকজন, ওষুধ বা অন্য কিছু থেকে এলার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া বা অ্যাজমা থাকা যে কেউ, প্রবীণ ও পাকস্থলীর আলসার বা অন্যান্য রোগে চিকিৎসাধীন কোন রোগী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। মন্ত্রণালয় এ ধরনের লোকজনের প্রতি তাদের নিজস্ব ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টদের সাথে পরামর্শ করে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

মন্ত্রণালয় আরও জানাচ্ছে, প্রচণ্ড ব্যাথা বা অনেক বেশি জ্বর বা কোন উপসর্গ দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকার মত মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিলে লোকজনকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সাথেও পরামর্শ করতে হবে।

মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, টিকা নেয়ার পরে ব্যাথা বা জ্বরের মত উপসর্গ দেখা দেয়া রোধ করার জন্য বার বার জ্বরনিবারক বা ব্যাথানাশক ওষুধ সেবন করার পরামর্শ তারা দিচ্ছে না।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬৩: করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরে কোন ধরনের ওষুধ গ্রহণ করা ঠিক হবে? - ১

উত্তর-২৬৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার পরে কারো জ্বরের মত উপসর্গ দেখা দিলে কোন ওষুধের উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে, সেসম্পর্কে প্রথমবারের মত নির্দেশনা দিয়েছে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই পর্বের আলোচ্য প্রশ্নটি হচ্ছে, করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণের পরে কোন ধরনের জ্বরনিবারক এবং ব্যাথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা ঠিক হবে?

অধিকাংশ সময়ে টিকা নেয়ার এক বা দু’দিন পরে জ্বর উঠে। প্রয়োজন হলে যেমন, আপনি সম্ভবত ওষুধ সেবন এবং নিজের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেই এটি সামাল দিতে পারবেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যানুযায়ী, টিকা নেয়ার পরে আপনার ব্যবহার করতে পারা সম্ভাব্য ওষুধগুলোর মধ্যে এসিটামিনোফেন, আইবুপ্রোফেন এবং লোক্সোপ্রোফেন অন্যতম। মন্ত্রণালয় ইতিপূর্বে এই তথ্যসমূহ প্রকাশ করেনি। তবে জুন মাসের শুরুতে, একাধিক ওষুধের দোকানের পরিচালক কোম্পানিগুলো জানায় যে কোন চিকিৎসাপত্র ছাড়া তাদের দোকানের কাউন্টারে বিক্রি করা এসিটামিনোফেন ভিত্তিক ওষুধের মজুদ কমে যাচ্ছে। এটি মন্ত্রণালয়কে তাদের ওয়েবসাইটে সবার জ্ঞাতার্থে নতুন এই তথ্য দিতে উৎসাহিত করে যে, এসিটামিনোফেন ছাড়া দোকানের কাউন্টারে বিক্রি করা অন্যান্য ওষুধের ব্যবহারও এক্ষেত্রে ঠিক আছে। এছাড়া, মন্ত্রণালয় জাপান জুড়ে থাকা ওষুধের দোকান এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকেও এবিষয়ে অবহিত করে।

মন্ত্রণালয় এও বলছে যে, তবে গর্ভবতী নারী এবং বিশেষ অবস্থা থাকা ব্যক্তিদের তাদের চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্ট’এর সাথে পরামর্শ করা উচিত কারণ তাদের খেতে পারা উপাদানগুলোর উপর সম্ভবত কিছু বিধিনিষেধ থাকতে পারে।

এছাড়া, করোনাভাইরাস নাকি টিকাদান থেকে লক্ষণগুলো দেখা দিয়েছে, সেটি নির্ধারণের উপায় নিয়েও মন্ত্রণালয় তথ্য সরবরাহ করেছে। তাদের ভাষ্যানুযায়ী, যদি আপনার কাশি, গলা ব্যথা, স্বাদ ও ঘ্রাণহীণতা এবং শ্বাসকষ্টের মত উপসর্গও থাকে, তবে এর জন্য করোনাভাইরাসেরই দায়ী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। টিকাদানের কারণে সৃষ্ট জ্বরের সাথে সাধারণত এই লক্ষণগুলো থাকে না।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬২: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ১২ ভেসোভেগাল সিনকোপি বলতে কী বোঝায়? এর চিকিৎসা কী?

উত্তর-২৬২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক ধারাবাহিকে আলোকপাত করা হচ্ছে জাপানের কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কর্মীবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচির ওপর। ২১ জুন থেকে এই কর্মসূচি পূর্ণোদ্যমে শুরু হয়েছে। এবারে ধারাবাহিকের দ্বাদশ পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব ভেসোভেগাল সিনকোপি বলতে কী বোঝায়। করোনাভাইরাসের টিকা-পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ভেসোভেগাল সিনকোপি সম্পর্কে আমরা একজন বিশেষজ্ঞের মতামত তুলে ধরছি।

সাধারণত বলা হয় টিকা নেয়ার পর মানুষের শরীরে ভেসোভেগাল সিনকোপি নামের একরকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ইঞ্জেকশন নেয়ার ব্যথার সাথে মানসিক চাপ যুক্ত হয়ে এই প্রতিক্রিয়ার অবতারণা ঘটায়। উপসর্গের মধ্যে মাথা ঘোরা এবং শ্বাসকষ্ট অন্তর্ভুক্ত।

চিবা শহরের ইনাগে ওয়ার্ডের এক ক্লিনিকে প্রায় ৫ হাজার লোককে নতুন করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হয়েছে যাদের মধ্যে অধিকাংশই হলেন বয়স্ক ব্যক্তি। এই চিকিৎসা কেন্দ্রের একজন চিকিৎসক কোচি ফুমিও বলছিলেন, মে মাসে বয়সে ষাটের কোঠার এক মহিলা টিকা নেয়ার পর পর্যবেক্ষণের জায়গায় বসে অপেক্ষা করার সময় অসুস্থ বোধ করতে আরম্ভ করেন। তার নাড়ির স্পন্দন ধীর হয়ে আসে এবং চেতনাও কমে আসে। কিন্তু অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার কোনো লক্ষণ মহিলার মধ্যে ছিল না। কোচি সিদ্ধান্তে পৌঁছান এটা হচ্ছে ভেসোভেগাল সিনকোপি, যখন ব্যথা ও মানসিক চাপের ফলে রক্তচাপ হ্রাস পায় এবং এর ফলে মাথা ঘোরার মত উপসর্গ দেখা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে মহিলাকে বিছানায় শুইয়ে দেয়া হল এবং নেয়া হল অন্যান্য ব্যবস্থা। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই মহিলার অবস্থার উন্নতি হল। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে গেলেন। কোচি বলছিলেন ভেসোভেগাল সিনকোপিতে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি এর চেয়ে কমবয়সীদের। তিনি বলেন ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়ার পরেও কারুর কারুর এধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে তিনি এও বলেন যে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই উপসর্গগুলো দূর করা সম্ভব। তিনি লোকজনকে টিকা নেয়ার পর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে ওই জায়গাতেই কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন টিকা নেয়ার আগের দিন রাত্রে পর্যাপ্ত ভাল ঘুম হলে এবং শরীর চাঙ্গা থাকলে উপসর্গগুলো এড়ানো সম্ভব হতে পারে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬১: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? – ১১ তরুণদের মধ্যে টিকাদান কর্মসূচি বিষয়ে আশা পোষণ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উত্তর-২৬১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। যে টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কর্মী ও শিক্ষার্থীদের টিকা দিচ্ছে, আমাদের এই সর্বশেষ ধারাবাহিকে সে বিষয়ে তথ্য আমরা উপস্থাপিত করব। জুন মাসের ২১ তারিখ থেকে এই কর্মসূচি পুরোদমে শুরু হয়েছে। এবারে আমরা এই ধারাবাহিকের ১১তম পর্বে টিকাদান কর্মসূচি তরুণ প্রজন্মকে টিকা নিতে উৎসাহিত করবে কিনা সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলব।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং ওষুধ বিষয়ক জাপান জাতীয় কেন্দ্রের কুৎসুনা সাতোশি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এমন অনেক রোগীর দেখাশুনা করেছেন। তিনি বলেন, রোগের বিস্তার প্রায়শই তরুণদের মধ্যে শুরু হয়। তিনি আশা করছেন যে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় তরুণ প্রজন্মের অনেকেই টিকা নেবেন যার ফলে ভাইরাসের বিস্তার মন্থর হয়ে পড়বে।

তিনি বলেন, লোকজন হয়তো ভাবতে পারেন যে তরুণদের টিকা দেওয়াটা খুব একটা অর্থবহ পদক্ষেপ নয় কেননা তাদের মধ্যে গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তবে বর্তমানে ভাইরাসের যে ধরনের সব স্ট্রেইন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তার ফলে গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা এখন অনেক বেশি। আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে টিকা নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য তরুণদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান কুৎসুনা।

তরুণদের মধ্যে ভেসোভেগাল সিনকোপি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ইনজেকশন নেয়ার পর শরীরে যে ব্যাথা হয় তার সাথে স্ট্রেস মিলে ঐ রোগের সূচনা হয়। এর ফলে একজন ব্যক্তির হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে যায়, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, মাথা ঘুরতে থাকে বা হাইপার ভেন্টিলেশন সমস্যা দেখা যায়। এটা সবধরনের টিকার ক্ষেত্রেই দেখা যেতে পারে, শুধুমাত্র করোনাভাইরাস টিকার ক্ষেত্রেই যে হয় তা নয়।

কুৎসুনা বলেন যে তার কেন্দ্রে আগে এক পরীক্ষা চালানো হয়েছিল যেখানে প্রায় ২০০ বা ৩০০ জনের মধ্যে একজনের দেহে টিকা নেয়ার পর ভেসোভেগাল সিনকোপি দেখতে পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন যে ঐ ধরনের উপসর্গ যাতে না দেখা যায় তার প্রতিরোধে অনেক ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, যেমন স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ প্রদান করা বা টিকা দেয়ার সময় প্রাপককে আরামদায়ক ভাবে শুইয়ে রাখা। কুৎসুনা বলেন যে অতীতে এই ধরনের উপসর্গের অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তারা আগে থেকে চিকিৎসা কর্মীদের জানিয়ে রাখলে, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হবে। তবে একারণে টিকা নেয়ার বিষয়ে লোকজনের দ্বিধা করা উচিত নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপযুক্ত প্রস্তুতি নেয়া হলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৬০: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ১০ টিকাদান সংগঠনের জন্য বিশেষজ্ঞদের দেয়া নির্দেশিকা।

উত্তর-২৬০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। যে টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের টিকা দিচ্ছে, আমাদের এই সর্বশেষ ধারাবাহিকে সে বিষয়ে তথ্য আমরা ভাগাভাগি করে নেব। জুন মাসের ২১ তারিখ থেকে এই কর্মসূচি পুরোদমে শুরু হয়েছে। সেরকম স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য যে নির্দেশিকা বিশেষজ্ঞরা তৈরি করেছেন, এবারে আমরা সেদিকে নজর দেব।

জাপানের দুটি গবেষণা সংগঠনের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা ২১ জুন তাদের ওয়েবসাইটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য কোভিড-১৯ টিকা নির্দেশিকা প্রচার করে। সেই দুই সংগঠন হচ্ছে ভ্রমণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক জাপানি সমাজ এবং পেশাগত স্বাস্থ্যের জাপানি সমাজ।

নির্দেশিকায় বিরল ও মারাত্মক অবস্থা দেখা দেয়া অ্যালার্জি অ্যানাফিল্যাক্সিস সহ সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়। তারা বলছেন এই অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অনেক বেশি স্বাভাবিক এবং টিকাদানের ব্যবস্থা যারা করছে, পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য টিকাদানের জায়গায় ফার্স্ট এইড চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা তাদের উচিত হবে।

নির্দেশিকা আরও বলছে জ্বর সহ অধিকাংশ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এক কিংবা দুই দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেলেও দ্বিতীয় দফার টিকা নেয়ার বেলায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সাধারণত প্রথমবারের টিকা নেয়ার চাইতে খারাপ হয়ে থাকে। দ্বিতীয়বার টিকা নেয়ার পর কর্মক্ষেত্রে সম্ভাব্য অনুপস্থিতির সুযোগ করে দেয়া, যেমন একই দায়িত্ব পালন করা বিভাগের কর্মচারীদের ভিন্ন দিনে টিকা নেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার পরামর্শ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে।

নির্দেশিকায় অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে টিকা যারা নিচ্ছেন সেইসব কর্মচারীর ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে সামাল দিতে হবে, এবং প্রত্যেক কর্মচারী যে নিজের ইচ্ছায় টিকা নিচ্ছেন তা নিশ্চিত করে নেয়া অন্তর্ভুক্ত আছে।

টোকিও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হামাদা আৎসুও নির্দেশিকা প্রণয়ন দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। হামাদা আমাদের বলেছেন যে শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংগঠন করা টিকাদান কর্মসূচি বিস্তৃত হয়ে গেলে, এটা হবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার প্রধান উপায়। তবে তিনি আরও বলেছেন যে সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সামাল দিতে এসব সংগঠনকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে তিনি চাইছেন টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার আগে এসব প্রতিষ্ঠান যেন নির্দেশিকা যত্নের সাথে পড়ে নেয়।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৯: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ৯ এই কর্মসূচির অধীনে কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কী অর্থ গ্রহণ করা হবে?

উত্তর-২৫৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বশেষ ধারাবাহিকে, আমরা কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি সংক্রান্ত তথ্য আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেব। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের কাছে জানতে চাওয়া প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে এক সেট প্রায়ই জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নাবলী প্রকাশ করেছে। এবারের প্রশ্ন হচ্ছে, “কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যারা টিকা নেবেন তাদেরকে এর ব্যয় বহন করার অনুরোধ করতে পারবে কি?

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি হচ্ছে জাপানের টিকাদান আইনের অধীনে একটি “সাময়িক টিকাদান কর্মসূচি” এবং সেকারণে যারা টিকার ডোজ নেবেন তাদের কাছ থেকে কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না।

মন্ত্রণালয় এও জানাচ্ছে, কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের টিকাদান কর্মসূচির জন্য নিজেদেরকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা কর্মী এবং ভেন্যু নিশ্চিত করে নিতে হবে। তারা আরও জানাচ্ছে, কর্মী এবং অন্যান্য যারা টিকার ডোজ নেবেন তাদের উপর টিকার আংশিক ব্যয়ভার চাপিয়ে দেয়াটাও তাদের জন্য যথোপযুক্ত হবে না। তবে কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা নির্দ্বিধায় এই ব্যয়ভারের আংশিক বহন করতে পারেন। যদি টিকাদান কর্মসূচি বেশ কয়েকটি কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে আয়োজন করে, তাহলে তারা হয়তো নিজেদের মধ্যে ব্যয়ভার ভাগাভাগির মাধ্যমে সমন্বয় করে নিতে পারবে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৮: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ৮ এই কর্মসূচির অধীনে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদেরও কি টিকা পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে?

উত্তর-২৫৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমাদের সর্বসাম্প্রতিক ধারাবাহিকে, নিজস্ব কর্মী ও শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার জন্য জাপানের কোম্পানিসমূহ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিচালিত টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কিত তথ্য আমরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছি। প্রাপ্ত প্রশ্নের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাসের টিকাদান সংক্রান্ত FAQ বা প্রায়ই উত্থাপিত কিছু প্রশ্নের উত্তরের তালিকা প্রকাশ করেছে। এই পর্বে আমরা শুরুতে দেখব, স্থানীয় বাসিন্দারাও এই কর্মসূচির আওতায় টিকা নেয়ার জন্য যোগ্য কি না।

FAQ’তে মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে যে টিকা প্রদানকারীদের, সংশ্লিষ্ট গ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি তারা যাতে ঐ ব্যক্তিদের টিকার দ্বিতীয় ডোজও দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। মন্ত্রণালয় তাই কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে টিকা দেয়ার জন্য যোগ্য ব্যক্তি কে হবেন, সেটি নির্ধারণের সময় এই বিষয়গুলো নিয়ে সযত্ন বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছে।

যদি টিকা গ্রহীতার ক্ষেত্রে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তবে সরকার চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধ সরবরাহ করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য হল, কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এধরনের সামগ্রী প্রস্তুত রাখার জন্য দায়বদ্ধ হতে হবে। তারা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অগ্রিম পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় বলে মনে করা যন্ত্রপাতি ও ওষুধ প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি যথাযথভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার কিট বা সরঞ্জামের ব্যবস্থাপনা করার উপদেশ কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দিয়েছে, যাতে তারা যেকোন সময়ে জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়।

মন্ত্রণালয় এটিও বলছে যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পুরোপুরি প্রস্তুত থাকা সাপেক্ষে নির্ধারিত সময়ের আগেই এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৭: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ৭ এই কর্মসূচির অধীনে বিদেশি কর্মীদের কি টিকা পাওয়ার যোগ্যতা থাকবে?

উত্তর-২৫৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমরা আলোকপাত করছি টিকাদান কর্মসূচির ওপর। সরকার জাপানের কোম্পানিসমূহ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের কর্মীবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে অনুমতি দিয়েছে। জেনে নেওয়া যাক কারা এই কর্মসূচির অধীনে টিকা পাওয়ার যোগ্য।

কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে আসা প্রশ্নের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকাদান সংক্রান্ত FAQ বা প্রায়ই উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তরের তালিকা প্রকাশ করেছে।

টিকা পাওয়ার যোগ্যতা প্রসঙ্গে FAQ’তে বলা হয়েছে কোম্পানিগুলো কেবল তাদের নিজেদের কর্মীদেরই নয়, সম্পৃক্ত অন্যান্য কোম্পানির কর্মীদেরও টিকা দেওয়ার অনুমতি পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও তাদের ছাত্রছাত্রীদের টিকা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিদেশি কর্মীদের প্রসঙ্গে FAQ’তে বলা হয়েছে জাপানে বসবাসকারী বিদেশি কর্মীদের বাসিন্দা হিসেবে নিবন্ধনের মৌলিক তালিকা বা বেসিক রেসিডেন্ট রেজিস্টার’এ যাদের নাম আছে তারা সকলেই টিকা পাওয়ার যোগ্য।

কর্মীদের মধ্যে যারা এখনও টিকার কুপন হাতে পাননি, তাদের প্রসঙ্গে FAQ’তে বলা হয়েছে এই কর্মসূচির অধীনে তারাও টিকা নিতে পারবেন কুপন ছাড়াই। সেক্ষেত্রে টিকা নেওয়ার আগে পূরণ করা প্রশ্নাবলীতে কর্মীদের নাম, ঠিকানা ও জন্মের সাল তারিখ তাদের আই ডি কার্ডের সাথে মিলিয়ে নিশ্চিত করে নেওয়া হবে। কর্মীরা পরে কুপন হাতে পেয়ে জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এই পূরণ করা প্রশ্নাবলী তারা যেখানে টিকা নেবেন সেই কোম্পানি অথবা চিকিৎসা কেন্দ্রে সংরক্ষিত রাখতে হবে।

কিছু কিছু কোম্পানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চেয়েছে টিকাদান কর্মসূচি আরম্ভ হওয়ার পর তাদের সব কর্মীকে অবশ্যই টিকা নিতে হবে কি না। এ প্রসঙ্গে FAQ’তে বলা হয় কোম্পানিগুলোকে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে কর্মীদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে বলা হয়েছে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৬: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ৬ সকল কর্মীকে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা।

উত্তর-২৫৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এই ধারাবাহিকে যেসব কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কর্মচারী, কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তাদের উপর আলোকপাত করা হচ্ছে। এবারে আমরা কর্মস্থলে টিকা প্রদান বিষয়ক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত নির্দেশিকার বিষয়ে আলোচনা করব।

জুন মাসের ২১ তারিখ থেকে কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুরোদমে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার প্রাক্কালে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঐ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে।

নিয়মিত এবং অনিয়মিত কর্মীসহ সকল কর্মীকেই, তা তাদের কাজের ধরন যাই হোক না কেন, টিকা প্রদান করতে হবে বলে ঐ নির্দেশিকায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মস্থলে যেন ক্লাস্টার বা গুচ্ছ সংক্রমণ না ছড়াতে পারে সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। সংক্রমণের ঝুঁকি যাদের মধ্যে বেশি টিকা দেয়ার সময় তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়ার মত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করছে মন্ত্রণালয়।

কোন ব্যাক্তিকে যাতে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে টিকা দেয়া না হয় সেই লক্ষ্যে প্রাপকের আগ্রহের বিষয়টি অগ্রিম নিশ্চিত করার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্দেশ্যে নির্দেশিকায় আহ্বান জানানো হয়। এতে আরো বলা হয় যে টিকা পাওয়া লোকজনের ব্যক্তিগত তথ্য যেন অন্য কোন কাজে ব্যবহৃত না হয়।

কর্মস্থলে টিকাদানের পরিকল্পনা করছে এমন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একটি সচিবালয় স্থাপন নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি এগিয়ে নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উপদেশ দিচ্ছে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৫: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? – ৫ প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন সংখ্যার বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হতে পারে।

উত্তর-২৫৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। যেসব কোম্পানি ও বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের কার্যালয় কিংবা ক্যাম্পাসে করোনাভাইরাস টিকা দিতে আগ্রহী, চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে সরকার এদের কাছ থেকে আবেদনপত্র গ্রহণ করতে শুরু করেছে। এবারে আমরা কাজের জায়গায় টিকা দেয়ার বেলায় সরকারের ঠিক করে দেয়া প্রয়োজনীয়তা শিথিল করার সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করবো।

সরকার ঘোষণা করেছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ও কোম্পানিতে কর্মরত লোকজনের সংখ্যা ১ হাজারের বেশি, দক্ষতা নিশ্চিত করার স্বার্থে সেই সব প্রতিষ্ঠান থেকে এই টিকাদান শুরু করা উচিত হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী তামুরা নোরিহিসা ১১ই জুন সংসদের নিম্ন কক্ষের এক কমিটি বৈঠকে বলেছেন যে ১ হাজার কিংবা বেশি কর্মচারী যেসব কোম্পানিতে আছে - টিকা যারা দেবেন এবং প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকের সাথে টেলিফোনে কথা বলার মত টিকা দেয়ার আগের পরীক্ষা যারা চালাবেন, সেই চিকিৎসা কর্মীদের দ্রুত সংগ্রহ করা এদের পক্ষে সম্ভব হওয়ার কারণে তা করা হবে।

তামুরা অবশ্য আরও উল্লেখ করেছেন যে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়ে যাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন সংখ্যা সরকার ধরে রাখবে না। তিনি বলেছেন পরিস্থিতির উপর ঘনিষ্ঠ নজর তারা রাখবেন এবং যখন মনে হবে যে টিকাদানের জায়গার পরিচালক প্রতিষ্ঠান কম সংখ্যার টিকাদান সামাল দিতে পারবে, সর্বনিম্ন এক হাজার জনের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করার বিষয়টি তখন বিবেচনা করে দেখা হবে। তিনি বলেছেন পরিস্থিতির সম্ভাব্য রদবদলের সাথে মানিয়ে চলার প্রস্তুতি সরকার নিচ্ছে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৪: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? – ৪ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের কোম্পানির পরিস্থিতি।

উত্তর-২৫৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সরকার জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি চালুর জন্য কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে। এবারের পর্বে আমরা ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের কোম্পানির পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরব।

সরকার টিকাদান কর্মসূচিতে গতির সঞ্চার করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১ হাজারেরও বেশি কর্মী থাকা কোম্পানিতে টিকাদান কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা করেছে। এদিকে, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের কোম্পানিগুলো আবেদনপত্র জমা দেয়ার পরিকল্পনা করলেও টিকা দেয়ার জন্য চিকিৎসা কর্মী খুঁজে পেতে তাদের সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

এইসব কোম্পানির ভাষ্যানুযায়ী, অনেক কোম্পানিতেই অফিসে পূর্ণকালীন ডাক্তার নেই। এছাড়া, ১ হাজারেরও বেশি আবেদনপত্রের ব্যবস্থা করাটাও কঠিন। এভাবে এইসব কোম্পানিতে বড় বড় কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আবেদনপত্র গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হচ্ছে না।

এ ধরনের অসুবিধার মাঝেও, আড়াই হাজারেরও বেশি সদস্য থাকা টোকিও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের সমিতি জানাচ্ছে, তারা অনেক সদস্যের কাছ থেকে যৌথ টিকাদান কর্মসূচি চালু করার অনুরোধ পেয়েছে। সমিতি এও জানাচ্ছে, এইসব কোম্পানির মুখোমুখি হতে হওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চিকিৎসা কর্মী নিশ্চিত করা। চিকিৎসা সমাজের কাছে সমিতির সাহায্যের অনুরোধ সত্ত্বেও খুব বেশি অগ্রগতি অর্জিত হয়নি।

অন্যান্য সমস্যার মধ্যে টিকার ডোজের অপচয় রোধে কিভাবে আবেদনপত্রের সংখ্যা সঠিকভাবে জানা যাবে এবং টিকাদান কেন্দ্রের ব্যয় কিভাবে বহন করা হবে তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই সমিতির একজন কর্মী বলেন, বড় এবং ছোট আকারের কোম্পানির মধ্যে টিকা পাওয়ার মধ্যকার ব্যবধানের বিষয়টি সম্ভবত বেড়ে চলেছে। তিনি এও বলেন, শর্ত পূরণ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এর পরিবর্তে সমিতির অবশ্যই টিকা বিতরণের জন্য শর্ত পূরণের ব্যবস্থা করা উচিত, কেননা ক্ষুদ্র কোম্পানির কর্মীদের মধ্যে অনেকেই ক্লায়েন্ট সাইটে যান এবং অফিসে বসে কাজ করেন না।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫৩: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? – ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান কর্মসূচি।

উত্তর-২৫৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে সরকার জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি চালুর জন্য কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু করেছে। এবারের পর্বে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু হতে যাওয়া এই টিকাদান কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরব।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি দেখভালের জন্য জুন মাসের ৪ তারিখ প্রায় ৪০ সদস্য সমন্বিত একটি সাড়া দেয়ার দল গঠন করেছে। দলটি দেশ জুড়ে থাকা ৮০০ বা সমসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জানতে চেয়েছে যে তারা নিজেরা টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে চায় কিনা। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করার পূর্বে তারা প্রায় ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি চালুর লক্ষ্য নিয়ে টিকাদানের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমর্থন দিবেন।

দলটি এই কর্মসূচির জন্য আবেদন গ্রহণ শুরুর প্রথম দিন ৮ই জুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকে অজস্র প্রশ্নের মুখোমুখি হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবেদন করার প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির তালিকা এবং ঠিক কাদের উদ্দেশ্য করে এই কর্মসূচি চালানো হবে, সেসম্পর্কে জানতে চায়। চিকিৎসা অনুষদ এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ না থাকা কিছু বিশ্ববিদ্যালয় জানতে চেয়েছিল যে তাদের টিকাদান কেন্দ্র চালুর স্থান থাকলেও, তারা কীভাবে টিকাদানের অনুমোদন থাকা স্বাস্থ্যসেবা কর্মী যোগাড় করতে সক্ষম হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, জাপানের প্রায় ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা, নার্সিং সেবা এবং দন্ত চিকিৎসা বিভাগ রয়েছে। আর এইসব বিশ্ববিদ্যালয় যাতে আশেপাশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে, মন্ত্রণালয় এখন সে উপায় খুঁজছে। মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে টিকাদানের হার বাড়ানোর প্রত্যাশা করছে। এছাড়া, কর্মকর্তারা গ্রীষ্মকালীন ছুটির সুযোগ নিতেও বেশ আগ্রহী। তারা মনে করছেন, সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষা প্রান্তিক শুরুর আগেই কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক স্কুল, জুনিয়র এবং সিনিয়র হাই স্কুলের পাশাপাশি বিশেষ চাহিদা থাকা শিশুদের স্কুলের কর্মীদেরও স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিকা দেয়া যাবে।

মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা করছে, কোভিড-১৯’এর টিকা দেয়ার বাধ্যবাধ্যকতা থাকা বিদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে অধ্যয়নের জন্য নির্ধারিত ব্যক্তিদের তাদের যাত্রার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিকা দেয়া যাবে। মন্ত্রণালয় এই ব্যক্তিদের ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামে টিকাদান প্রত্যয়ন পত্র দেয়ার পরিকল্পনা করছে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫২: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? – ২ এটি কবে শুরু হবে?

উত্তর-২৫২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাস টিকা প্রদানের জন্য কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে আবেদন পাঠানো শুরু করে দিয়েছে। কর্মস্থল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিকাদান সংক্রান্ত ধারাবাহিকের এবারের পর্বে আমরা জানার চেষ্টা করব কবে থেকে এসব জায়গায় টিকা দেওয়া শুরু হবে।

জাপান সরকার কর্মস্থল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১ জুন থেকে টিকাদান কর্মসূচি আরম্ভ করার পরিকল্পনা করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, যেসব পৌর এলাকায় বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকাদান সুষ্ঠুভাবে এগোচ্ছে সেখানকার অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরও আগেই শুরু করা যেতে পারে এই কর্মসূচি। টিকাদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান পৌর সরকারকে এই ব্যয় বহন করতে অনুরোধ করবে।

টিকা প্রাপকদের সম্পর্কে উপাত্ত, অর্থাৎ তাদের নামধাম, তারা কবে টিকা নিলেন এবং কোথায় নিলেন, এসব উপাত্ত সরকারের টিকাদান নথি ব্যবস্থা বা ভিআরএস’এ রেকর্ড করা থাকবে। একাজে ব্যবহারের জন্য টিকাদানের জায়গায় টিকা ও অন্যান্য সামগ্রী ছাড়াও সরবরাহ করা হবে ট্যাবলেট। কর্তব্যরত চিকিৎসক বা অন্য কর্মকর্তারা এই ট্যাবলেটে প্রত্যেক ব্যক্তির টিকা নেওয়ার দিন এবং ক’টা ডোজ তিনি নিলেন ইত্যাদি তথ্য রেকর্ড করে রাখবেন। টিকা প্রাপকরা যে এলাকার বাসিন্দা সেখানকার পৌর সরকারের সাথেও এই তথ্য ভাগ করে নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্যানেলের মতে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য কর্মস্থল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান শুরু করা সহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে এই কর্মসূচির গতি আরও বাড়ানো দরকার, যাতে যতটা সম্ভব বেশি লোক টিকা নিতে পারেন।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫১: কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিকাদানের জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা করছে? - ১ তাদেরকে কী ধরনের শর্তাবলী পূরণ করতে হবে?

উত্তর-২৫১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে করোনাভাইরাস টিকা প্রদানের জন্য কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে আবেদন পাঠানো শুরু করে দিয়েছে। স্থানীয় পৌরসভার সাথে এই সকল স্থানে দেয়া টিকার পার্থক্য কি? আমাদের নতুন ধারাবাহিকে আমরা এই প্রশ্নের উপর আলোকপাত করব।

সরকার টিকাদান কর্মসূচির গতি বৃদ্ধির চেষ্টায় রয়েছে। স্থানীয় পৌরসভাগুলোর উপর থেকে চাপ কমিয়ে আনার জন্য টিকাদান কেন্দ্র হিসাবে কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। স্থানীয় পৌরসভার টিকা প্রচেষ্টা যাতে ব্যাহত না হয় সেই লক্ষ্যে কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের নিজেদের ভেন্যু এবং চিকিৎসা কর্মীর ব্যবস্থা করতে হবে।

স্থানীয় পৌরসভাগুলো ফাইযার এবং বিয়োনটেক তৈরি টিকা ব্যবহার করছে। অন্যদিকে, কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মডার্নার তৈরি টিকা ব্যবহার করবে। বিভিন্ন শর্তাবলীর মধ্যে অন্যতম একটি হল প্রতিটি কেন্দ্র প্রায় এক হাজার লোককে টিকা দেবে। এছাড়া প্রতিটি ব্যক্তিকে টিকার দুটি ডোজ দেয়ার মাধ্যমে তারা টিকাদান প্রক্রিয়া সমাপ্ত করবে।

টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার আগে কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ভেন্যু কোড পেতে হবে এবং চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে। এই কর্মসূচি যাতে মসৃণ ভাবে এগোতে পারে সেই লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উন্নয়ন করা ভি-সিস নামক এক ব্যবস্থায় বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে। চিকিৎসকের নাম, টিকাদান কর্মসূচি তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম এবং কি পরিমাণ টিকার প্রয়োজন রয়েছে - এই ধরনের তথ্য ঐ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। টিকাগুলো হিমাঙ্কের বিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষণের জন্য একটি ফ্রিজারে সেগুলো মজুদ রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণে তারা সহযোগিতা প্রদান করতে পারে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৫০: প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবির এবং ভাইরাস রোধী পদক্ষেপসমূহ (৩) প্রাক-অলিম্পিক শিবির কেন দরকার।

উত্তর-২৫০: প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবির এবং ভাইরাস রোধী পদক্ষেপসমূহ (৩) প্রাক-অলিম্পিক শিবির কেন দরকার।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার সফটবল দলের সদস্যরা প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবিরে যোগ দেয়ার জন্য জুন মাসের ১ তারিখে জাপানে এসেছেন। এরা হচ্ছেন বিদেশের প্রথম অলিম্পিক প্রতিযোগী, মহামারির কারণে টোকিও গেমস স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর প্রথম যারা জাপানে এসে পৌঁছান। প্রাক-গেমস শিবির সংশ্লিষ্ট ভাইরাস রোধী কার্যক্রমের উপর আমাদের ধারাবাহিক আয়োজনে এবারে আমরা এসব শিবির কেন দরকার, সেই কারণের দিকে আলোকপাত করব।

অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকে যোগ দেয়া বিভিন্ন দল সাধারণত গেমস শুরু হওয়ার বেশ কিছু সময় আগে থেকে স্বাগতিক দেশে অবস্থান করে। বিমান ভ্রমণের জেট-ল্যাগ কাটিয়ে উঠা এবং সেখানকার খাদ্য ও জলবায়ুর সাথে অভ্যস্ত হওয়ার জন্যে এটা করা হয়।

২০১৬ সালে জাপানের ক্রীড়াবিদরা রিও ডি জেনেইরোতে অলিম্পিক শুরু হওয়ার প্রায় দু’সপ্তাহ আগে দেশ থেকে রওয়ানা হয়েছিলেন এবং ব্রাজিল কিংবা একই সময় অঞ্চলে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রে শিবিরে অবস্থান করছিলেন। জাপান ও ব্রাজিলের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হচ্ছে ১২ ঘণ্টা।

টোকিও গেমসের জন্য সারা জাপান জুড়ে ৫২৮টি পৌর এলাকা বিদেশি দলের স্বাগতিক শহর হওয়ার জন্য নথিবদ্ধ হয়। অনেকেই এরা গেমস-পূর্ব প্রশিক্ষণ শিবিরে দলকে স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা করছিল। ভ্রমণ ও অবস্থান করার সময়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে কয়েকটি দল প্রশিক্ষণ শিবির বাতিল করে দিয়েছে। কেবিনেট সচিবালয় বলছে শতাধিক দল এখনও গেমস-পূর্ব শিবির ধরে রাখার পরিকল্পনা করছে। কিছু ক্রীড়াবিদ জুন মাসে জাপানে আসতে শুরু করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্ভবত জুলাই মাসে আসবেন।

সেরকম ক্রীড়াবিদদের প্রথম দল, অস্ট্রেলিয়ার সফটবল টিম ১ জুন গুন্মা জেলার ওতা শহরে এসে পৌঁছায়। ওতা শহরের কর্মকর্তারা বলছেন দলের সকল সদস্য ও কর্মীদের জাপানে আসার আগে টিকা দেয়া হয়েছে। জাপানে অবস্থান করার সময় প্রতিদিন এদের পিসিআর পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণের জন্য বল পার্কে যাওয়া ছাড়া বাকি সময় এদের হোটেলে থাকতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন সংক্রমণ প্রতিরোধ পদক্ষেপ তারা কার্যকর রাখবেন এবং ৪৫ দিন ধরে শহরে থাকার সময় দলকে তারা সমর্থন দিয়ে যাবেন।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৯: প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবির এবং ভাইরাস রোধী পদক্ষেপসমূহ (২) স্বাগতিক শহরের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ।

উত্তর-২৪৯: প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবির এবং ভাইরাস রোধী পদক্ষেপসমূহ (২) স্বাগতিক শহরের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারির কারণে টোকিও গেমস স্থগিত করার পরে প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবিরের জন্য ১লা জুন জাপানে আসা প্রথম বিদেশি ক্রীড়াবিদে পরিণত হয়েছেন অস্ট্রেলীয় সফটবল দলের সদস্যরা। সংক্রমণ-রোধী পদক্ষেপসমূহ সংক্রান্ত আমাদের ধারাবাহিকে এবারে আমরা বিভিন্ন দলকে স্বাগত জানানো স্থানীয় পৌরসভাগুলোর গৃহীত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহের ধরনের উপর আলোকপাত করব।

সরকার প্রশিক্ষণ শিবিরের জন্য গেমসের প্রাক্কালে অলিম্পিক ক্রীড়াবিদদের স্বাগত জানানো স্থানীয় সরকারগুলোর জন্য সংক্রমণ রোধী দিক-নির্দেশনা প্রণয়ন করেছে। এইসব দিক-নির্দেশনায় সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করা আছে যে, তথাকথিত স্বাগতিক শহরগুলো বিদেশি ক্রীড়াবিদদের দলকে গ্রহণ করার জন্য আংশিকভাবে দায়বদ্ধ।

তারা জানাচ্ছে, যদি স্বাগতিক শহরগুলো বিমানবন্দর বা ক্রীড়াবিদদের থাকার স্থান থেকে অনেক দূরে হয়, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই ভাড়া করা বিমান, শিনকানসেন বুলেট ট্রেন বা গণপরিবহণ ছাড়া অন্য উপায়ে ভ্রমণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিদেশি ক্রীড়াবিদদের স্টেশন এবং বিমানবন্দর ব্যবহারের জন্য সাধারণ জনগণের থেকে ভিন্ন সময় এবং ভিন্ন যাত্রাপথ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

যখন এই দলগুলো তাদের স্বাগতিক শহরে প্রশিক্ষণ নেবেন, তখন তাদেরকে একান্তভাবে প্রশিক্ষণ শিবিরেই থাকতে বলা হয়েছে এবং স্থানীয় জনগণের সাথে অনুশীলন এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে। তাদের আবাসস্থলে, তাদেরকে পুরো তলা বা ভবন ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে এবং বাইরের কারো সংস্পর্শ এড়িয়ে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ভিন্ন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে, ক্রীড়াবিদ এবং তাদের সংস্পর্শে আসতে পারেন এমন স্থানীয় কর্মকর্তাদের প্রতিদিন পিসিআর পরীক্ষা করার অনুরোধ জানানো হয়। খেলোয়াড় এবং অধিবাসীদের বিনিময়সমূহ অনলাইনে করার আহ্বান জানানো হয়, যাতে করে তারা একে অপরের সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসতে না পারেন।

কেন্দ্রীয় সরকার সংক্রমণ রোধী পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যয় হিসেবে জেলাগুলোকে ১ হাজার ২৭০ কোটি ইয়েন বা প্রায় ১১ কোটি ৬০ লক্ষ মার্কিন ডলার করে বরাদ্দ দিয়েছে। তবে কিছু কিছু স্থানীয় সরকার জানাচ্ছে, এটা অত্যন্ত কঠিন, কেননা বিনিময়ের উপর কঠোর বিধিনিষেধ জারী করা রয়েছে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ বজায় রাখার ব্যয় অত্যন্ত বেশি।

এ তথ্যগুলো জুন মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৮: প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবির এবং ভাইরাস রোধী পদক্ষেপসমূহ (১) ক্রীড়াবিদদের জন্য স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময়।

উত্তর-২৪৮: প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবির এবং ভাইরাস রোধী পদক্ষেপসমূহ (১) ক্রীড়াবিদদের জন্য স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময়।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারির কারণে এক বছরের জন্য টোকিও গেমস স্থগিত করার পরে গত সপ্তাহে প্রাক-অলিম্পিক অনুশীলন শিবিরের জন্য জাপানে আসা প্রথম বিদেশি ক্রীড়াবিদে পরিণত হয়েছেন অস্ট্রেলীয় নারী সফটবল দলের সদস্যরা। আজ থেকে শুরু হওয়া নতুন এক ধারাবাহিকে প্রাক-গেমস শিবির সংশ্লিষ্ট ভাইরাস রোধী কার্যক্রমের উপর আমরা আলোকপাত করব।

টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমসের পাশাপাশি টেস্ট বা অনুশীলন ইভেন্টগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজনের জন্য জাপানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা এবং জাপানের বিমানবন্দরগুলোতে আগমনের পরে একটি অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। এছাড়া, তাদেরকে আসার পরে প্রথম দিন থেকেই ১৪ দিনের জন্য স্ব-উদ্যোগে বিচ্ছিন্ন থাকতে অনুরোধ জানানো হয়।

তবে, “বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে” জাপান সরকার কোয়ারেন্টিন বা বিচ্ছিন্ন থাকার বিধিনিষেধ শিথিলের অনুমোদন দিচ্ছে। ক্রীড়াবিদ এবং কোচরা তাদের অনুশীলনের মতো কার্যক্রম কিছু সুনির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে জাপানে আগমনের প্রথম দিন থেকেই শুরু করতে পারবেন। এরমধ্যে তাদের আগমনের দিন থেকে শুরু করে টানা তিন দিন করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে, ক্রীড়াবিদ এবং কোচ ব্যাতিরেকে অন্যান্য লোকজনকে তাদের কার্যক্রম শুরুর আগে তিন দিনের জন্য স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে। টোকিও গেমস আয়োজক কমিটি বলছে, এই ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ৩য়, ৮ম এবং ১৪তম দিনে ভাইরাস পরীক্ষা পরিচালনা করা হয়।

আয়োজক কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বিশ্বের ৮৩টি দেশ এবং অঞ্চল থেকে টোকিও গেমস এবং অনুশীলন ইভেন্ট সংশ্লিষ্ট মোট ১,৬৪৯ ব্যক্তি জাপানে এসেছেন। তাদের প্রায় ৮৫ শতাংশ বা ১,৪৩২ জন তাদের কোয়ারেন্টিন বা বিচ্ছিন্ন থাকার সময় সংক্ষিপ্ত করেছেন। এই সময়ের মধ্যে একটি ডাইভিং অনুশীলন ইভেন্টে অংশ নেয়া একজন কোচ এবং একটি আন্তর্জাতিক রোয়িং বা দাঁড় বাওয়া প্রতিযোগিতার অপর একজন কোচের ক্ষেত্রে ভাইরাস পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল এসেছে।

অন্যদিকে, স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকার সময় যাই হোক না কেন, সকল আগমনকারী অবশ্যই ১৪ দিনের জন্য গণ-পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করবেন না এবং অনুশীলন ও প্রতিযোগিতার ভেন্যু বা কাজের অন্যান্য স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থানে যাওয়ার জন্য তাদের আবাসন স্থল ত্যাগ করতে বিরত থাকার অনুরোধও জানানো হয়। আয়োজক কমিটির ভাষ্যানুযায়ী, তাদের ইতোপূর্বে ব্যবস্থাপনা করা সবগুলো ঘটনার ক্ষেত্রে আবাসন স্থলগুলোতে কমিটির কর্মীরা অবস্থান করেন। কমিটি বলছে, এপর্যন্ত অননুমোদিত বাইরে যাওয়ার মত কোন বিধি লঙ্ঘনের খবর পাওয়া যায়নি।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৭: টিকাদান কর্মসূচি (৪) চিকিৎসক এবং টিকা প্রাপকের সম্মতি।

উত্তর-২৪৭: টিকাদান কর্মসূচি (৪) চিকিৎসক এবং টিকা প্রাপকের সম্মতি।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। টিকা নেয়ার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্ব এটি।

টিকা নেয়ার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ১৪টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকা একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করতে বলা হচ্ছে লোকজনকে। এই বিষয়গুলোর প্রত্যেকটি আমরা ধারবাহিকের আগের পর্বগুলোতে ব্যাখ্যা করেছি। প্রশ্নের উত্তর এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার ভিত্তিতে চিকিৎসক নির্ধারণ করবেন সেই ব্যক্তির টিকা নেয়ার যোগ্যতা আছে কি না।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের ব্যাখ্যা শোনার পর, সেইসঙ্গে টিকার উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভালভাবে অবগত হয়ে সেই ব্যক্তি টিকা নেয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

প্রশ্নপত্রটি জাপানিতে লেখা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইংরেজি, আরবি, চীনা, ফরাসি এবং আরও কয়েকটি ভাষায় এটি অনুবাদ করিয়েছে। প্রশ্নপত্র পূরণ করার সময় প্রয়োজনে অনুবাদগুলোর সাহায্য নিতে পরামর্শ দিচ্ছে মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিভিন্ন ভাষায় ফাইজার-বিয়োনটেকের টিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো লিফলেটও পাওয়া যাচ্ছে।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৬: টিকাদান কর্মসূচি (৩) টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রশ্নসমূহের ২য় অংশ।

উত্তর-২৪৬: টিকাদান কর্মসূচি (৩) টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রশ্নসমূহের ২য় অংশ।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে রয়েছে টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পর্কে আমাদের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্ব।

জাপানে যারা টিকা নিচ্ছেন তাদেরকে টিকা নেয়ার আগে চৌদ্দটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকা একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করতে বলা হয়েছে। সবকয়টি প্রশ্নের উত্তরে আপনাকে হ্যাঁ কিংবা না বলতে হবে। এবারে আমরা পরের সাতটি প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেব।

আট নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে আপনি আপনার শরীরের কোথাও কোন অস্বস্তি বোধ করছেন কি না। জবাব হ্যাঁ হলে তা আপনাকে বর্ণনা করতে বলা হচ্ছে।

নয় নম্বর প্রশ্নে আপনার কখনো খিঁচুনি বা পেশির সঙ্কোচনের অভিজ্ঞতা রয়েছে কি না তা জিজ্ঞেস করা হচ্ছে।

১০ নম্বর প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে যে ওষুধ বা খাবারের কারণে অ্যানাফিলাক্সিসের মত মারাত্মক অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া আপনার শরীরে কখনো দেখা গেছে কি না। উত্তর ইতিবাচক হলে আপনাকে সেই ওষুধ বা খাবারের নাম লিখতে বলা হচ্ছে।

১১ নম্বর প্রশ্নে টিকা নেয়ার পর আপনি কখনো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কি না তা জিজ্ঞেস করা হয়েছে। জবাব হ্যাঁ হলে টিকার ধরন এবং আপনার রোগের বিবরণ দিতে বলা হচ্ছে।

১২ নম্বর প্রশ্নে আপনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আপনার মাসিকের দিন কি প্রত্যাশার তুলনায় দেরীতে হয়েছে বা বর্তমানে আপনি স্তন্যদান করছেন কি না- এই ধরনের প্রশ্ন করা হয়েছে।

১৩ নম্বর প্রশ্নে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে আপনি কোন টিকা নিয়েছেন কি না তা জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। টিকা নিয়ে থাকলে আপনাকে সেই টিকার নাম এবং দিন উল্লেখ করতে বলা হচ্ছে।

১৪ নম্বর প্রশ্নে করোনাভাইরাস টিকা সম্পর্কে আপনার মনে কোন জিজ্ঞাসা আছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এর পরের পর্বে আমরা টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পর্কে আপনাদের আরও অনেক তথ্য জানাবো।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৫: টিকাদান কর্মসূচি (২) টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রশ্নসমূহের ১ম অংশ।

উত্তর-২৪৫: টিকাদান কর্মসূচি (২) টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রশ্নসমূহের ১ম অংশ।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আছে টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পর্কে আমাদের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্ব।

জাপানে যারা টিকা নিচ্ছেন তাদেরকে টিকা নেয়ার আগে চৌদ্দটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকা একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করতে বলা হয়েছে। সবকয়টি প্রশ্নের উত্তরে আপনাকে হ্যাঁ কিংবা না বলতে হবে। এবারে আমরা প্রথম সাতটি প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেব।

এক নম্বর প্রশ্ন হচ্ছে আপনি প্রথমবারের মত কোভিড-১৯ টিকা নিচ্ছেন কি না। আগে টিকা নিয়ে থাকলে, টিকা কবে নিয়েছেন সেই তারিখ আপনাকে লিখতে বলা হচ্ছে।

দ্বিতীয় প্রশ্নে যে নগর, শহর কিংবা গ্রামে আপনি বসবাসকারী হিসেবে নথিবদ্ধ হয়েছেন, টিকার কুপনে যার উল্লেখ রয়েছে সেটা একই কিনা তা জিজ্ঞেস করা হচ্ছে।

তিন নম্বরে “কোভিড-১৯ টিকার নির্দেশিকা” আপনি পড়েছেন কিনা এবং এর প্রভাব ও ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বুঝতে পেরেছেন কিনা সেই প্রশ্ন আপনাকে করা হচ্ছে।

চার নম্বর প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে টিকার জন্য নির্ধারিত উচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া দলে আপনি অন্তর্ভুক্ত কিনা। সেটা হলে অগ্রাধিকার পাওয়া দলের নাম উল্লেখ থাকা ঘরে আপনাকে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে। এসব দল যেমন হচ্ছে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত লোকজন, ৬৫ বছর কিংবা বেশি বয়স যাদের, ৬০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী, এবং বৃদ্ধদের সেবা কেন্দ্রের কর্মী। শারীরিক অসুস্থতা যাদের আছে তাদেরকে রোগের নাম লিখতে বলা হয়েছে।

পাঁচ নম্বর প্রশ্নে আপনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে বিশেষ কোন রোগে আপনি ভুগছেন কিনা এবং চিকিৎসা লাভ করছেন কিনা। সেরকম হলে রোগের নাম ও কোন ধরণের চিকিৎসা পাচ্ছেন তার উল্লেখ থাকার আগে যে ঘর আছে সেখানে টিক চিহ্ন দিতে, কিংবা রোগের নাম এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়া উল্লেখ না থাকলে তা লিখে নিতে আপনাকে বলা হচ্ছে।

ছয় নম্বর প্রশ্নে বলা হয়েছে, যে চিকিৎসক আপনার রোগের চিকিৎসা করছেন তিনি বলেছেন কিনা নির্দিষ্ট সেই দিনে আপনি টিকা নিতে পারবেন।

আর সাত নম্বর প্রশ্নে আপনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে আপনার জ্বর আছে কিনা কিংবা গত এক মাসে আপনি অসুস্থ হয়েছেন কিনা। উত্তর ইতিবাচক হলে রোগের নাম আপনাকে লিখতে বলা হয়েছে।

এর পরের পর্বে আমরা আরও সাতটি প্রশ্নের উপর আলোকপাত করবো।

এই তথ্যগুলো জুন মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৪: টিকাদান কর্মসূচি (১) টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রসঙ্গে

উত্তর-২৪৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে রয়েছে টিকা নেয়ার আগের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পর্কে আমাদের ধারাবাহিকের প্রথম পর্ব।

জাপানে, কেউ যদি টিকা নেয়ার ইচ্ছাপোষণ করেন তাহলে তাকে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে, আপনাকে একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করতে হবে এবং আপনার বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থা ও আগে থেকে থাকা রোগ সম্বন্ধে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার পূরণকৃত প্রশ্নপত্র পরীক্ষা করে দেখবেন এবং সিদ্ধান্ত নেবেন যে আপনি টিকা নেয়ার যোগ্য কি না।

প্রথমে, আপনাকে আপনার ঠিকানা, নাম, টেলিফোন নম্বর, জন্ম তারিখ, লিঙ্গের পাশাপাশি পরীক্ষার ঠিক আগে মেপে নেয়া আপনার শরীরের তাপমাত্রা লিখতে হবে। তারপর আপনাকে আরও ১৪টি প্রশ্নের হ্যাঁ বা না’তে উত্তর দিতে হবে।

প্রশ্নগুলো জাপানিতে লেখা থাকে। তবে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বিদেশি ভাষায়ও এই প্রশ্নগুলো পাওয়া যায়। যখন আপনি প্রশ্নপত্র পূরণ করবেন তখন আপনি সেগুলোর সাহায্য নিতে পারবেন। আগামী পর্বে আমরা প্রশ্নগুলোর বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাবো, যে প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনাকে দিতে হবে।

এ তথ্যগুলো জুন মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪৩: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? – ৮

উত্তর-২৪৩: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? অসুবিধাজনক শুরু।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে রয়েছে জাপানের মন্থর টিকাদান কর্মসূচির নেপথ্যের কারণ সম্পর্কিত ধারাবাহিকের অষ্টম পর্ব।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাপানের করোনাভাইরাস টিকা উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা শুরু থেকেই অসুবিধাজনক ছিল বলে বর্ণনা করেছেন। এই কর্মকর্তা বলেন, প্রধানত ইতিপূর্বেকার টিকাদান কর্মসূচিগুলোতে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে সাধারণভাবে গত কয়েক দশক ধরেই জাপানের জনগণ টিকা দেয়া নিয়ে ক্রমশ সতর্ক হয়ে উঠেছেন। ঐ কর্মকর্তা বলছেন, মামলা সম্পর্কিত উচ্চ ঝুঁকির পাশাপাশি টিকা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও তাদের স্বল্প সংরক্ষণ কালের সঙ্গে যুক্ত সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে কিছু জাপানি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি নিজেদের টিকা উদ্ভাবনের কাজ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ঐ কর্মকর্তার ভাষ্যানুযায়ী, অভ্যন্তরীণ কোম্পানিগুলো মানব সম্পদ এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার বিচারে তাদের প্রতিযোগীদের কাছে হেরে যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত চারটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের ক্লিনিকাল পরীক্ষা শুরু করেছে, যাদের মধ্যে কয়েকটি চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই সরকারি অনুমোদন পাওয়ার প্রত্যাশা করছে।

অন্যদিকে, জাপান টিকা সংগ্রহের ক্ষেত্রে এখন নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

তবে, জাপান সরকার এই অবস্থান বজায় রেখে চলেছে যে, ঠিক কত ডোজ টিকার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে তুলনা করলে মোটামুটি একই রকম সংক্রমণ পরিস্থিতি থাকা অন্যান্য দেশগুলো থেকে জাপান আবশ্যকভাবে অনেক পিছিয়ে নেই।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪২: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? - ৭

উত্তর-২৪২: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? টিকা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ব্যবস্থায় পার্থক্য।

এনএইচকে শ্রোতাদের কাছ থেকে আসা নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে রয়েছে জাপানে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে মন্থরতার কারণ সম্পর্কিত ধারাবাহিকের সপ্তম পর্ব।

করোনাভাইরাসের টিকা উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে জাপানের সাথে অন্যান্য দেশের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এর একটি কারণ হল সহায়তা ব্যবস্থা, যে সুবিধা বিদেশে কিছু কিছু সরকার সেখানকার কোম্পানিগুলোকে দিচ্ছে। এই কোম্পানিগুলো এমন ওষুধপত্র উন্নয়নের চেষ্টা করে যা হয়তো লাভজনক নয়, তবে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।

সেন্ট মারিয়ানা ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন’এর অধ্যাপক কুনিশিমা হিরোইউকি এ প্রসঙ্গে ব্রিটেন ও সুইডেনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। এই দুটি দেশের সরকার অ্যান্টিবায়োটিক প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট পরিমাণে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে যে ওষুধ অনেক বিক্রি হয় তা না। এই দেশগুলোতে জাতীয় নিরাপত্তার সাথে যুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার জন্য সক্রিয় সরকারি সহায়তা প্রদানের কাঠামো বিদ্যমান।

আরেকটি কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা করোনাভাইরাসের টিকা সম্পর্কে মানুষের মনোভাবে পার্থক্যের কথা উল্লেখ করেছেন। গণমাধ্যমে যেভাবে বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে তা নিয়েও বিশেষজ্ঞদের অনুযোগ রয়েছে।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব মেডিসিন’এ একটি প্রকল্পের গবেষক সাকামোতো হারুকা বলেন মূলত বহু জাপানি “টিকা সম্পর্কে দ্বিধাগ্রস্ত”। এই মনোভাবের কথা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। সাকামোতো বলেন, এর ফলে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যেখানে অনেকেই করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার ব্যাপারে বেশ সতর্ক মনোভাব পোষণ করছেন। এই হার অন্য অনেক দেশের তুলনায় বেশি।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪১: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? – ৬

উত্তর-২৪১: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? দেশের অভ্যন্তরীণ টিকার ধীর গতিতে উন্নয়ন।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা জাপানে করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচির বিলম্বের নেপথ্যের কারণসমূহ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার ষষ্ঠ পর্ব উপস্থাপন করব।

এই বিষয়টি নিয়ে এনএইচকে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলার পর একটি কারণ যেটা সকলেই উল্লেখ করছেন তা হল জাপান দেশের অভ্যন্তরে এখনো পর্যন্ত কোন টিকা উন্নয়ন করেনি।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের অধ্যাপক ইশিই কেন বলেন যে টিকা উন্নয়নের গতি খুব মন্থর হওয়ার পিছনে অপর্যাপ্ত সরকারি সমর্থন সহ বিভিন্ন কারণ জড়িয়ে রয়েছে। খুব গভীর এক সমস্যা এটি। অধ্যাপক ইশিই বর্তমানে একটি জাপানি ওষুধ কোম্পানির সাথে মিলে যৌথভাবে এমআরএনএ করোনাভাইরাস টিকা উন্নয়ন করছেন।

ইশিই বলেন যে ২০২০ সালের শুরুতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সরকারেরা কোভিড-১৯ টিকা উন্নয়নে কয়েক লক্ষ কোটি ইয়েন ব্যয় করে। সেখানে জাপান ঐ একই সময়ে প্রায় ১ হাজার কোটি ইয়েন প্রদান করেছিল। এর ফলে টিকার উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিরাট এক ব্যবধানের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোতে ক্লিনিকাল পরীক্ষার জন্য স্থাপনা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে ব্যাপক উৎপাদনের জন্য কারখানা বন্দোবস্ত করার মত বিভিন্ন কাজে টিকা প্রকল্পগুলোর পিছনে সরকার সর্বাত্মকভাবে সমর্থন করে। নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষরাও টিকা উন্নয়নাধীন থাকাকালেই মূল্যায়ন শুরু করার মাধ্যমে যাচাই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সহযোগিতা করে। সেখানে জাপান সরকার এই ধরনের কোন বিশেষ পদক্ষেপই নেয়নি।

অধ্যাপক ইশিই বলেন যে জাতীয় নিরাপত্তা এবং কূটনীতির ক্ষেত্রেও সংক্রমণ রোগের জরুরি টিকা উন্নয়ন যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝতে ব্যর্থ হয় জাপান সরকার। বিশ বছর আগে থেকেই সংক্রমণ প্রাদুর্ভাব বিষয়ে মৌলিক গবেষণা কাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে জাপান বলে তিনি আরো জানান।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৪০: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? - ৫

উত্তর-২৪০: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? সতর্কতা ও দ্রুততার মধ্যে ভারসাম্য গড়ে তোলা।

এনএইচকে শ্রোতাদের কাছ থেকে আসা নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে রয়েছে জাপানের মন্থর টিকাদান কর্মসূচির নেপথ্যের কারণ বিষয়ক ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্ব।

টিকা সাধারণত নানাধরনের লোকজনকে দেওয়া হয়, ফলে এদের অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়া যত্নের সাথে পরিচালিত হওয়া দরকার। আপনি তাই এটা বলতে পারেন না যে অন্যান্য দেশে এটা অনুমোদন পেয়েছে বলেই জাপানেও টিকার দ্রুত অনুমোদন দরকার। অন্যদিকে আবার এরকম ধারণাও রয়েছে যে বিদেশে চালানো ক্লিনিকাল পরীক্ষায় এশিয়ার লোকজনের পর্যাপ্ত উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত থাকলে দেশের ভেতরের ক্লিনিকাল পরীক্ষা সহজ করা বিবেচনা করে দেখা উচিত।

বিষয়টি হচ্ছে, সঙ্কটের এই সময়ে দ্রুততার বিপরীতে সতর্কতা কিভাবে যাচাই করা দরকার। সরবরাহ সীমিত থাকার সময় সরকার শুরুতে বলেছিল যে টিকাদান প্রক্রিয়া সরকার শুরু করেছে। তবে সরকার বলছে মে মাস থেকে সেই সমস্যার সমাধান হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের টিকাদান নিয়ে বড় ধরনের কোন উদ্বেগ নেই। সরকার উল্লেখ করেছে যে টিকাদান মসৃণভাবে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব স্থানীয় পৌর প্রশাসনের এবং কেন্দ্রীয় সরকার সেই প্রচেষ্টায় সাহায্য করতে চাইছে।

অনুমোদন থেকে শুরু করে বিতরণ ও টিকা দেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায় অতীতের পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে উপস্থিত হচ্ছে। তবে এমনকি টিকাদান কর্মসূচির প্রাথমিক পর্যায়েও আরও একটি বড় দায়িত্ব এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। জাপানের টিকাদান কেন মন্থর গতিতে চলছে, সে বিষয়ে আমাদের আগামী পর্বে আমরা দেশের ভেতরে টিকা তৈরি করার উপর আলোকপাত করবো।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৯: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? - ৪

উত্তর-২৩৯: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? অভ্যন্তরীণ ক্লিনিকাল পরীক্ষা।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে আমরা জাপানের টিকাদান কর্মসূচির মন্থর গতির নেপথ্যের কারণ সম্পর্কিত আমাদের ধারাবাহিকের চতুর্থ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি।

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল এবং অন্যান্যদের কাছ থেকে পাওয়া উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে, মে মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত ইসরায়েলে ৬৩ শতাংশ লোক নিদেনপক্ষে একটি করে টিকার ডোজ নিয়েছেন। এই অনুপাত হচ্ছে ব্রিটেনে ৫২ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬ শতাংশ এবং জাপানে ২.৯১ শতাংশ।

এই উপাত্ত সংগ্রহ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশ এবং অঞ্চলের মধ্যে জাপানের অবস্থান হচ্ছে ১৩১।

ব্রিটেন ডিসেম্বর মাসে ফাইজার-বিয়োনটেক’এর টিকা দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে। জাপান তাদের টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে প্রায় দু’মাস পরে। এই পার্থক্যের পিছনে কী কারণ রয়েছে?

ফাইজার তাদের টিকা জাপানে ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য গত ডিসেম্বর মাসে আবেদন করে। এই টিকার উপর ক্লিনিকাল পরীক্ষা ইতোমধ্যেই বিদেশে পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু জাপান নিজের দেশের লোকজনের উপর চালানো পরীক্ষার উপাত্ত দেখার জন্য ১৬০ জনের উপর আবার ক্লিনিকাল পরীক্ষা পরিচালনা করে। তাই দেশটি এই অতিরিক্ত ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফল বের না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল।

টিকাদান কর্মসূচির সাথে সংশ্লিষ্ট জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আমাদের বলেন, জাপান যদি অভ্যন্তরীণ ক্লিনিকাল পরীক্ষা না করতো, তাহলে আরও তাড়াতাড়ি টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতো। কর্মকর্তাটি আরও বলেন, জাপানের টিকাদান কর্মসূচির বিলম্বিত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে এই ক্লিনিকাল পরীক্ষা।

কিন্তু এই কর্মকর্তা আরও ইঙ্গিত দেন যে, সেই সময়ে বিশ্বের অন্য কোথাও এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত যথেষ্ট তথ্য ছিল না। কর্মকর্তা বলেন, যদি এই টিকার দ্রুত অনুমোদন অপ্রত্যাশিত মাত্রার মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণ হতো, তাহলে বিষয়টি সবকিছুকে এক জটিল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিত।

কর্মকর্তা এও বলেন, জাপানের ক্লিনিকাল পরীক্ষা সংসদে আলোচনার মাধ্যমেই ঠিক করা হয়েছিল। কর্মকর্তা বলেন, জাপানে একটি অতিরিক্ত পরীক্ষা চালানোর পাশাপাশি অন্যান্য দেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৮: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? - ৩

উত্তর-২৩৮: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? একটি সমন্বিত ব্যবস্থার অভাব।

এনএইচকে শ্রোতাদের কাছ থেকে আসা নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবারে রয়েছে জাপানের মন্থর টিকাদান কর্মসূচির নেপথ্যের কারণ বিষয়ক ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্ব।

কয়েকজন বিশেষজ্ঞ টিকাদান কর্মসূচির ব্যবস্থাপনার জন্য দেশব্যাপী একটি সমন্বিত ব্যবস্থার অভাবকেই এই সমস্যার পেছনের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাপানে স্থানীয় সরকারগুলোই বেশিরভাগ দায়িত্ব কাঁধে নেয় কারণ অন্যান্য কয়েকটি দেশের মত লোকজনের টিকাদানের রেকর্ড এবং সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াসমূহ সামাল দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কোন কাঠামো এখানে নেই।

স্থানীয় সরকারগুলো বাসিন্দা নিবন্ধন রেকর্ডের উপর ভিত্তি করে টিকাদানের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন করে এবং তাদের কাছে টিকার কুপন পাঠায়। আর কুপন গ্রহণকারীরা টেলিফোন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অগ্রিম বুকিং দিবেন এবং এরপরে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে এই কুপন দেখিয়ে টিকা গ্রহণ করবেন।

আমরা নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইতো আকিহিকোর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাই। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক ইনস্টিটিউটে গবেষক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি সেখানকার কিছু টিকাদান প্রকল্পেও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি আমাদের বলেন, জাপানের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল কেন্দ্রীয় সরকার সব কাজ স্থানীয় সরকারগুলোর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, দেশ এখন একটি জরুরি অবস্থার অধীনে থাকলেও সরকার যেমন ধরুন, জার্মান হাম’এর জন্য অতিরিক্ত টিকা দেয়ার মত একই উপায়েই কোভিড-১৯’এর টিকাদান কর্মসূচিকে পরিচালনা করেছে। তিনি এও বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ছিল, যেমন, তথাকথিত “মাই নাম্বার” বা “আমার নম্বর”এর মত জাতীয় ব্যক্তিগত পরিচয় শনাক্তকরণ ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এই প্রক্রিয়াটিকে আরও সরল করা। তবে, তারা সেরকম কোন প্রস্তুতি নেয়নি।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অনেক দেশ একটি ডিজিটালকৃত ব্যবস্থার মাধ্যমে নাগরিকদের টিকাদানের রেকর্ডের হিসেব রেখে কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি আরও আগে শুরু করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের অনুরূপ একটি ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। তবে, সরকার এখনও পর্যন্ত এরকম কোন ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে আসেনি।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৭: ব্যাপক টিকাদানের জন্য তালিকাভুক্তি কবে থেকে শুরু হয়েছে? - ৩

উত্তর-২৩৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। সোমবার থেকে জাপান সরকার গণ টিকাদানের জন্য বুকিং নিতে শুরু করেছে। ২৪শে মে থেকে টোকিও এবং ওসাকাতে টিকাদানের কেন্দ্রগুলোতে গণ হারে টিকা দেওয়া শুরু হবে। টোকিও এবং এর তিন পার্শ্ববর্তী জেলা, সেই সঙ্গে ওসাকা এবং এর দুই পার্শ্ববর্তী জেলার বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য এই ব্যবস্থা।

সরকার পরিচালিত গণ টিকাদান কর্মকাণ্ড এবং স্থানীয় সরকার পরিচালিত টিকাদান কর্মসূচির মধ্যে টিকা পাওয়ার জন্য অনুসরণীয় প্রক্রিয়াতে পার্থক্য রয়েছে। এবারে আমরা এই বিষয়টির ওপর আলোকপাত করবো।

কেন্দ্রীয় সরকার টোকিও এবং ওসাকাতে গণ হারে টিকা দেওয়ার জন্য যে কেন্দ্রগুলো গড়ে তুলেছে, সেগুলো একটি স্বতন্ত্র ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত এবং স্থানীয় সরকারসমূহের টিকাদান কর্মসূচি থেকে একেবারে আলাদা।

এর অর্থ, টিকা পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত ব্যক্তিরা হয় কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত জায়গায় গিয়ে অথবা স্থানীয় সরকারসমূহের কর্মসূচির মাধ্যমে টিকা নিতে পারেন। এবারে এই দুয়ের মধ্যে থেকে কোন্‌ ব্যবস্থাটি বেছে নেবেন, তা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করছে যিনি টিকা নেবেন তার ওপর।

তবে যারা স্থানীয় সরকারের কর্মসূচির মাধ্যমে ইতোমধ্যে টিকার প্রথম ডোজটি নিয়েছেন, তারা কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত গণ টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

এই দুটি বুকিং ব্যবস্থার মধ্যে সংযোগ নেই। তাই কেউ যদি কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় উভয় সরকার পরিচালিত জায়গাগুলোতে বুকিং’এর জন্য আবেদন করে থাকেন, তাকে কোনো একটি আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

এমন ব্যক্তিরাও থাকতে পারেন যাদের নিজেদের পক্ষে বুকিং করা কঠিন। এরকম ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের লোকজন, আত্মীয়স্বজন অথবা বন্ধুবান্ধবের সাহায্য নিয়ে বুকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বুকিং প্রক্রিয়ায় এই ব্যক্তিরা যেখানে থাকেন সেখানকার পৌর কর্তৃপক্ষের দেওয়া টিকাকরণের একটি কুপন নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

এদিকে ভোক্তা সংক্রান্ত এজেন্সি টিকাদান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কিছু অনিয়মের ঘটনা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এজেন্সির কাছে এমন কিছু ঘটনার খবর এসেছে যেখানে টিকার জন্য আবেদনকারীদের কাছে আসা সন্দেহজনক ফোনকলে তাদের অর্থ সংক্রান্ত ও অন্যান্য বিষয়ে ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। টেলিফোনকারীদের দাবি, তারা টিকা পাওয়ার জন্য বুকিং করতে লোকজনকে সাহায্য করার সেবা দিচ্ছেন।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৬: ব্যাপক টিকাদানের জন্য তালিকাভুক্তি কবে থেকে শুরু হয়েছে? - ২

উত্তর-২৩৬: ব্যাপক টিকাদানের জন্য তালিকাভুক্তি কবে থেকে শুরু হয়েছে? তালিকাভুক্তির জন্য কোন্‌ সময়সূচি অনুসরণ করতে হবে?

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।

জাপান সরকার টোকিও এবং ওসাকায় মে মাসের ২৪ তারিখে চালু হতে যাওয়া ব্যাপক হারে টিকার জন্য টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে সোমবার থেকে তালিকাভুক্তি শুরু করেছে। টোকিও এবং প্রতিবেশী তিনটি জেলা ও সেইসাথে ওসাকা ও প্রতিবেশী দুটি জেলায় বসবাসরতদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে।
এবারে এই বিষয়ের দ্বিতীয় পর্বে আমরা টিকার তালিকাভুক্তির সময়সূচি বিষয়ে তথ্য প্রদান করব।

টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে শুরু করে আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত তিন মাস সময় ধরে ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি চলবে। জুন মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত তালিকাভুক্তির জন্য নিম্নলিখিত সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬৫ বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিরাই তালিকাভুক্তির জন্য যোগ্য।

একসাথে বহু লোক ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করলে সাইটটিতে সমস্যা হতে পারে এবং তা এড়িয়ে যেতে মে মাসের ১৭ তারিখ থেকে শুরু করে প্রথম সপ্তাহে টোকিওর ২৩টি ওয়ার্ড এবং ওসাকা শহরের প্রবীণদের মধ্যেই তালিকাভুক্তি সীমিত রাখা ছিল। মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে সমগ্র টোকিও এলাকা এবং ওসাকা জেলার প্রবীণ অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে এলাকা সম্প্রসারিত করে নেয়া হবে। ৩১শে মে থেকে টোকিওর প্রতিবেশী তিনটি জেলা সাইতামা, কানাগাওয়া এবং চিবা সহ ওসাকার প্রতিবেশী জেলা কিয়োতো এবং হিয়োগোতে বসবাসরত প্রবীণ ব্যক্তিরাও তালিকাভুক্ত হতে পারবেন।

মে মাসের ২৪ তারিখ থেকে মে মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত টোকিও এবং ওসাকা- উভয় শহরেই সবকটি স্লটই পুরোপরি বুকিং হয়ে গেছে।

এই সময়ের পর প্রবীণ লোক যারা এসব এলাকায় বসবাস করছেন অথচ যাদের কাছে আবাসন সার্টিফিকেট নেই, তারাও তালিকাভুক্ত হতে পারবেন। সংগঠকেরা চিন্তা ভাবনা করছেন যে লোকজনকে তাদের টিকা কুপন সহ বাড়ির ঠিকানা লেখা রয়েছে পোস্টের মাধ্যমে পাওয়া এমন কোন প্রমাণ দেখাতে বলবেন যাতে করে তারা যে ঐ এলাকারই বাসিন্দা তা নিশ্চিত করা যায়।

সরকার পরিচালিত ব্যাপক টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে প্রথম টিকা পাওয়ার বুকিং শুধুমাত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমেই গ্রহণ করা হবে। প্রথম টিকা পাওয়ার পর টিকাদান কেন্দ্রেই দ্বিতীয় টিকার তারিখ প্রদান করা হবে।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৫: ব্যাপক টিকাদানের জন্য তালিকাভুক্তি কবে থেকে শুরু হয়েছে? - ১

উত্তর-২৩৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার টোকিও এবং ওসাকায় মে মাসের ২৪ তারিখে চালু হতে যাওয়া ব্যাপক হারে টিকাদানের স্থানগুলোতে টিকা দেওয়ার জন্য সোমবার থেকে তালিকাভুক্তি শুরু করেছে। টোকিও এবং প্রতিবেশী তিনটি জেলা ও সেই সাথে ওসাকা ও দুটি প্রতিবেশী জেলায় বসবাসরতদের জন্য এটা প্রযোজ্য হবে। সেই নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে টিকা নিতে হলে কী করা দরকার, সেই তথ্য এবার আমরা এখানে দিব।

তালিকাভুক্ত হতে হলে যে এলাকায় বসবাস, সেই এলাকার পৌর প্রশাসনের পাঠানো টিকা কুপন দরকার হবে। শুধুমাত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হওয়া যাবে। আগ্রহীদের তালিকাভুক্তির ওয়েবসাইটে যেতে হবে এবং জন্ম সাল ও তারিখ, কুপন নম্বর ও অন্যান্য তথ্য টাইপ করে নিতে হবে।

কিছু কিছু পৌর এলাকায় ৬৫ বছর ও বেশি বয়সী বৃদ্ধদের টিকাদান এপ্রিল মাসে শুরু হয়েছে। কয়েকটি স্থানীয় সরকার অবশ্য উচ্চতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকা লোকজনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কিছু কিছু স্থানীয় সরকার যেমন এখন পর্যন্ত কেবল ৭৫ বছর কিংবা বেশি বয়সীদের কাছে কুপন পাঠাচ্ছে।

সেইসব পৌর এলাকায় বসবাসরত ৬৫ থেকে ৭৪ বছর পর্যন্ত বয়সের লোকজন এখনও ব্যাপক টিকাদান স্থানে তালিকাভুক্ত হতে পারবেন না। ব্যাপক টিকাদান স্থানগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, সেরকম লোকজনের প্রতি তারা সহানুভূতি বোধ করলেও নম্বর অনুসরণ করে টিকাদানের রেকর্ড সংরক্ষণ করা সরকারের জন্য প্রয়োজন হওয়ায় কুপন ছাড়া কাউকে তারা তালিকাভুক্ত করতে পারবেন না।

এদিকে, সরকার সতর্ক করে দিয়েছে যে এরকম সম্ভাবনা হয়তো আছে যে লোকজন স্থানীয় ক্লিনিক এবং ব্যাপক টিকাদান কেন্দ্র – দুই জায়গাতেই তালিকাভুক্ত হবেন। কর্মকর্তারা বলছেন, সেটা যেন না হয় তা পরীক্ষা করে দেখার কোন ব্যবস্থা এখন কার্যকর নেই। সেরকম হলে একটি জায়গার তালিকাভুক্তি বাতিল করে দেয়ার আহ্বান জনগণের প্রতি তারা জানাচ্ছেন, কেননা তা করা না হলে টিকার মূল্যবান ডোজ হয়তো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৪: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? - ২

উত্তর-২৩৪: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? টিকার সম-বন্টন প্রশ্নের মুখে।

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার রয়েছে জাপানের টিকাদান কর্মসূচির মন্থর গতির পেছনের কারণ সম্পর্কিত আমাদের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্ব।

বিশেষজ্ঞদের কয়েকজন এর দায় চাপাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্থানীয় পৌরসভাগুলোর কাছে টিকা বিতরণের পদ্ধতির উপর। সরকার নীতিগতভাবে সারা দেশের সব জেলাগুলোতে টিকাগুলো সম-বন্টনের সিদ্ধান্ত নেয়। দৃশ্যত এটি একটি নিরপেক্ষ উপায় যা লোকজনের বোধগম্যতা অর্জন করবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, এই ধারণা কিছু কিছু অসুবিধারও সৃষ্টি করেছে।

কিতাসাতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাকাইয়ামা তেৎসুয়ো বলছেন, যেহেতু বিতরণ হচ্ছে সম-বন্টনের ভিত্তিতে, তাই কেবল সামান্য সংখ্যক ডোজ প্রতিটি স্থানীয় পৌরসভার কাছে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে। তিনি এও বলছেন, স্থানীয় সরকারগুলোর তাদের নিজেদের টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনের মধ্যে তারা কেবল স্বল্প সংখ্যক টিকার ডোজ পাচ্ছে। ডক্টর নাকাইয়ামা আরও বলছেন, এটি হচ্ছে স্থানীয় সরকারগুলোর জন্য প্রথম এ ধরনের অভিজ্ঞতা এবং যদি তারা না জানে যে ঠিক কখন এবং কতটা টিকার ডোজ তারা পাবে, তাহলে চিকিৎসা কর্মীদের সংখ্যা নিশ্চিত করার মত প্রস্তুতি নেয়াটা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।

অন্যান্য বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যেহেতু অঞ্চল ভেদে সংক্রমণ পরিস্থিতি ভিন্ন ভিন্ন। তারা মনে করছেন, যদিও এই ধারণা নিরপেক্ষ থাকার বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তবুও টিকাদান কর্মসূচি আরও কার্যকরভাবে এগিয়ে যেতে পারবে।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩৩: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? - ১

উত্তর-২৩৩: জাপানের করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে বিলম্বের পেছনের কারণ কী? কেন্দ্রীয় সরকার কি স্থানীয় পৌরসভাগুলোর উপর অতিরিক্ত দায় চাপিয়ে দিচ্ছে?

এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে দেশগুলো তাদের করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কোন কোন দেশ ইতোমধ্যে তাদের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেককে টিকা দেয়া সম্পন্ন করেছে, যেখানে জাপানে মোট জনসংখ্যার শুধুমাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশকে টিকা দেয়া হয়েছে।
আজ আমরা জাপানে করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচির বিলম্বের কারণসমূহ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার প্রথম কিস্তি উপস্থাপন করব।

কিয়োতো শহরে ১১ই মে প্রবীণদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। লোকজনকে পারিবারিক চিকিৎসকদের কাছে ফোন করে অগ্রিম বুকিং নিতে বলা হচ্ছে। তবে, এর কারণে ক্লিনিকগুলোতে অসংখ্য টেলিফোন কল আসছে। অনেক লোক বুকিং’এর জন্য সরাসরি ক্লিনিকগুলোতেও গিয়েছেন। একটি ক্লিনিক খোলার আগে প্রায় ১শ ব্যক্তি এর সম্মুখে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন।

গতবছরের ডিসেম্বর মাসে জাপান সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে, সংশ্লিষ্ট আইন ভিত্তিক একটি কাঠামো অনুযায়ী প্রধানত স্থানীয় পৌরসভাগুলোরই তাদের অধিবাসীদের টিকা দেয়ার জন্য দায়িত্ব নেয়া উচিত। এরফলে, নানা ধরনের প্রক্রিয়া ও বুকিং পদ্ধতি থাকা পৌরসভাগুলোর টিকাদানের সূচি এবং রিজার্ভেশন পদ্ধতিও ভিন্ন। কর্মকর্তারা তাই সর্বোত্তম উপায় খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

এছাড়া, পৌরসভাগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক এবং নার্স জোগাড়ের ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। কেউ কেউ সরকারের সমালোচনা করে বলছেন, এরফলে স্থানীয় কর্মকর্তাদের নিজেদেরই সবকিছু করতে হচ্ছে।

এর পাশাপাশি পৌরসভাগুলো তাদের জন্য বরাদ্দ দেয়া টিকার সংখ্যা এবং সরবরাহ সময় নিয়েও তথ্য ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছেন। এধরনের তথ্য ব্যতিরেকে কর্মকর্তারা টিকা দেয়ার স্লট বা নির্দিষ্ট সময়ও ঠিক করতে পারছেন না।

টোকিওর একটি ওয়ার্ডের একজন কর্মকর্তা পৌরসভাগুলোর অভিন্ন সমস্যাগুলো নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ঐ কর্মকর্তা বলেন, প্রবীণদের টিকা দেয়া নিয়ে সৃষ্ট সংশয় বিবেচনায় নিলে এটি কল্পনা করা কঠিন যে, যখন টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণ করে ব্যাপক সংখ্যক সাধারণ জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, তখন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে। ঐ কর্মকর্তার ভাষ্যানুযায়ী, পৌরসভাগুলোর উচিত হবে, প্রথমে আসলে প্রথমে সেবা দিয়ার ভিত্তিতে বুকিং গ্রহণ না করে, টিকার কুপনের চূড়ান্ত সংখ্যা অনুযায়ী টিকা দেয়ার কোটা ঠিক করার মত কিছু পদক্ষেপ হাতে নেয়া। তবে ঐ কর্মকর্তা আরও বলেন, এধরনের বিস্তৃত প্রক্রিয়া টিকাদান কর্মসূচিকে শ্লথ করে দেয় বিধায় এক্ষেত্রে একটি উপযুক্ত ভারসাম্য রক্ষা করা কঠিন।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩২: ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি কী ধরনের? – ২

উত্তর-২৩২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার রয়েছে ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন রূপ সম্পর্কে ধারাবাহিক আলোচনার দ্বিতীয় পর্ব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও জানায় ১১ মে পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি ৪৯টি দেশ ও ভূখন্ডে পাওয়া গেছে। এই তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জাপান অন্তর্ভূক্ত।

ডব্লিউএইচও বলছে করোনার এই ভারতীয় ধরনে ভাইরাসের প্রধানত তিনটি রূপান্তর ঘটেছে – এল৪৫২আর, পি৬৮১আর এবং ই৪৮৪কিউ, অথবা ই৪৮৪কিউ বাদ দিয়ে দুটি রূপান্তর ঘটেছে।

জাপানের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের গবেষক ও অন্যান্যরা বলছেন, এল৪৫২আর রূপান্তর থাকা করোনাভাইরাসের ধরনটি আগেকার স্ট্রেইনগুলোর চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে জানা গেছে। এই ধরনটি প্রধানত বিস্তার লাভ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে।

তবে গবেষকরা এও বলছেন ভাইরাসের এই রূপটি অন্যান্য স্ট্রেইনের তুলনায় সত্যিই বেশি সংক্রামক কি না, তা নিশ্চিত ভাবে জানতে হলে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার।

নতুন করোনাভাইরাসের দুই বা ততোধিক রূপান্তর ঘটা কোনো বিরল ব্যাপার নয়। প্রশ্ন হোল, ভাইরাসটির সংক্রমণ-শক্তির ওপর এসব রূপান্তরের কোনো প্রভাব পড়ছে কি না।

যেমন, করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত যে ধরনটি প্রথম ব্রিটেনে শনাক্ত হয় এবং জাপানের কানসাই অঞ্চল সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, সেটির স্পাইক প্রোটিনে অন্তত পাঁচবার রূপান্তর ঘটেছে।

এগুলোর মধ্যে একটি রূপান্তর এন৫০১ওয়াই ভাইরাসকে আরও বেশি সংক্রামক করে তুলেছে, যা উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনগুলোর মধ্যেও একাধিক রূপান্তর সংঘটিত হয়েছে, যেমন এন৫০১ওয়াই, সেইসঙ্গে ই৪৮৪কে, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩১: ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি কী ধরনের? - ১

উত্তর-২৩১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।

মে মাসের ১০ তারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও জানায় যে ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন রূপ খুব সংক্রামক বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সংস্থা ভাইরাসটিকে প্রথমে “আগ্রহজনক” হিসাবে চিহ্নিত করলেও পরে তা পরিবর্তন করে “উদ্বেগজনক” হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করে। একই সাথে এর উপর নজরদারী জোরদার করে নেয় তারা। আজ আমরা ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের নতুন রূপের উপর আলোকপাত করব।

এপ্রিল মাস থেকে ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। ভাইরাসের নতুন রূপ এবং তার সাথে ধর্মীয় উৎসব ও রাজনৈতিক সমাবেশের ফলে গণ জমায়েতকেই উচ্চ মাত্রার এই সংক্রমণের কারণ হিসাবে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মত যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

ডব্লিউএইচও জানায় যে ভারতে পাওয়া যাওয়া স্ট্রেইনের তিনটি প্রধান রূপান্তর রয়েছে – এল৪৫২আর, পি৬৮১আর এবং ই৪৮৪কিউ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শেষের ই৪৮৪কিউ বাদ দিয়ে প্রথম দুটি রূপান্তর লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

স্পাইক প্রোটিন নামে পরিচিত করোনাভাইরাসের ভিতর অ্যামিনো এসিডের গঠনে যে ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে ঐ রূপান্তরগুলোর মধ্যেও একই গঠন দেখা যায়। এই ধরনের রূপান্তর ভাইরাসটিকে অনেক বেশি সংক্রামক করে তুলতে পারে এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এরা দুর্বল করে দেয়। নতুন এই স্ট্রেইনটি নিয়ে বর্তমানে গবেষণা চলছে।

মে মাসের ৭ তারিখ ব্রিটিশ গণ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায় যে ভারতে পাওয়া যাওয়া স্ট্রেইনটি ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়া স্ট্রেইনের মতই সংক্রামক তবে এটি অন্যগুলোর তুলনায় আরো বেশি মারাত্মক কিনা বা এটি টিকার কার্যকারিতার উপর কোন প্রভাব ফেলে কিনা সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৩০: টিকা (৫৪) ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলোর মধ্যে পার্থক্য কি? - ৫

উত্তর-২৩০: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা ফাইজার-বিয়োনটেক এবং মডার্নার উদ্ভাবিত টিকাগুলোর মধ্যকার সামঞ্জস্য এবং পার্থক্যের দিকগুলো তুলে ধরছি। এবার আমরা নজর দেব সম্ভাব্য পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার উপর।

জাপানের স্বাস্থ্য ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের গবেষণা গ্রুপ টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে ফাইজারের টিকার উপাত্ত অনুসরণের খবর দিয়েছে।

গ্রুপ বলছে টিকার প্রথম ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ২৩.২ শতাংশ ক্লান্তি অনুভব করলেও দ্বিতীয় টিকা নেয়া লোকজনের মধ্যে এই হার ছিল ৬৯.৬ শতাংশ। উপাত্ত দেখায় যে প্রথম টিকা নেয়ার পর ২১.২ শতাংশ মাথাব্যথায় ভুগেছে এবং দ্বিতীয় টিকা নেয়ার পর এই হার ছিল ৫৩.৭ শতাংশ। এছাড়া টিকা যারা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩.৩ শতাংশ প্রথম টিকা নেয়ার পর ৩৭.৫ ডিগ্রি কিংবা আরও বেশি জ্বরে ভোগার কথা জানিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর এই হার ছিল ৩৮.৪ শতাংশ।

মডার্নার টিকার বেলায় যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র ১৮ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত বয়সের লোকজন জড়িত থাকা ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে।

এতে বলা হয়েছে এদের মধ্যে ৩৮.৫ শতাংশ প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার পর ক্লান্তি অনুভব করেছেন, এবং দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর এই হার ছিল ৬৭.৬ শতাংশ। উপাত্ত প্রথমবার টিকা নেয়ার পর ৩৫.৪ শতাংশের এবং দ্বিতীয় টিকা নেয়ার পর ৬২.৮ শতাংশের মাথাব্যথার কথা বলছে। এছাড়া টিকা যারা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ০.৯ শতাংশ প্রথমবারের পর জ্বর হওয়ার কথা জানিয়েছেন। দ্বিতীয়বার টিকা নেয়ার পর এই হার ছিল ১৭.৪ শতাংশ।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২২৯: টিকা (৫৩) ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলোর মধ্যে পার্থক্য কি? - ৪

উত্তর-২২৯: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা ফাইজার-বিয়োনটেক এবং মডার্নার উদ্ভাবিত টিকাগুলোর মধ্যকার সামঞ্জস্য এবং পার্থক্যের দিকগুলো তুলে ধরছি। এবার আমরা করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের বিরুদ্ধে এই টিকাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।

উভয় টিকাই যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত হওয়া এবং এখন জাপান ও অন্যান্য অনেক দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের ধরনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর।

ফাইজার, বিয়োনটেক এবং অন্যান্যদের প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হচ্ছে, গবেষণাগারের এক পরীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে যে ফাইজার-বিয়োনটেক’এর টিকা পূর্বের স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে যতখানি কার্যকর যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলে প্রথম শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরন রোধে ঠিক ততখানি কার্যকর। এতে আরও বলা হচ্ছে, এই টিকা দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরনের বিরুদ্ধেও পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্যকর, যদিও সমান নয়, একটু কম কার্যকর।

ফাইজার জানাচ্ছে, তাদের টিকা ইসরায়েলে অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে যেখানে যুক্তরাজ্যের ধরনটি বিস্তৃত হয়ে পড়েছিল। তারা এও জানাচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় চালানো এক ক্লিনিকাল পরীক্ষা থেকে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে এই টিকা সেদেশে প্রথম শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরনটির বিরুদ্ধে যথেষ্ট সুরক্ষা দিতে পারবে।

মডার্না এবং অন্যান্যদের প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী গবেষণাগারের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে মডার্নার টিকা প্রাথমিক স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে ঠিক যতখানি কার্যকর যুক্তরাজ্যের ধরনের বিরুদ্ধেও ঠিক ততখানি কার্যকর। তবে, যে অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই টিকার কারণে তৈরি হয় তা দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনের জন্য প্রাথমিক স্ট্রেইনের ক্ষেত্রের চেয়ে প্রায় ৬ ভাগের এক ভাগ পর্যায়ের এবং ব্রাজিলের ধরনের জন্য তা প্রায় ৩ ভাগের ১ ভাগ পর্যায়ের। তবে মডার্না জানাচ্ছে, তারপরও এই পর্যায় ভাইরাসের ধরন দুটির বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্যকর।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২২৮: টিকা (৫২)ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলোর মধ্যে পার্থক্য কি? - ৩

উত্তর-২২৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে দুটি মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলোর মধ্যকার সামঞ্জস্য এবং পার্থক্যের দিকগুলো তুলে ধরেছি। এবার আমরা এই টিকাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।

ফাইজার এবং মডার্না উভয় টিকাই ক্লিনিকাল বা মানবদেহের প্রায়োগিক পরীক্ষাগুলোতে অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। সত্যিকারভাবে এই টিকা নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যেও এগুলোর কার্যকারিতা দেখা গেছে। ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সংকলিত একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী ফাইজারের টিকাটি করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করে। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত টিকা বিতরণ কার্যক্রম হিসেবে গর্ব করা, ইসরায়েলের একটি টিকাদান কর্মসূচির ফলাফলের উপর ভিত্তি করে চালানো একটি গবেষণা অনুযায়ী, ফাইজারের টিকা উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি ৯৪ শতাংশ পর্যন্ত কমায়। এছাড়া, এটি গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়ার মত ঘটনাও ৯২ শতাংশ হ্রাস করে। একইভাবে, উপসর্গবিহীন সংক্রমণসহ যে কোন সংক্রমণের সম্ভাবনাও ৯২ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনে।

অন্যদিকে, ক্লিনিকাল পরীক্ষার ফলাফল অন্তর্ভুক্ত থাকা একটি গবেষণামূলক নিবন্ধ অনুসারে মডার্নার টিকাটি উপসর্গ দেখা দেয়ার ঝুঁকি ৯৪.১ শতাংশ হ্রাস করে।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২২৭: টিকা (৫১) ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলোর মধ্যে পার্থক্য কি? - ২

উত্তর-২২৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এখন আমরা টিকাগুলোর মধ্যকার সামঞ্জস্য এবং পার্থক্যের দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করছি। এবারের মূল আলোচ্য বিষয় হল, দুটি বৃহৎ মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলো সংরক্ষণের উপায়।

উভয় টিকাই এমন একটি পদার্থের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে এমআরএনএ নামক জিনগত তথ্য রয়েছে। টিকাগুলোতে, লিপিডের একটি পাতলা স্তর দিয়ে এই এমআরএনএ’কে আবৃত করে রাখা হয়। তবে, এটি অস্থিতিশীল এবং সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। একারণে টিকাগুলোকে নিবিড়ভাবে সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।

শুরুতে, ফাইজার জানিয়েছিল যে তাদের টিকাকে ফ্রিজারের মধ্যে মাইনাস ৯০ থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে। তবে, এরপরে ফাইজারের দাখিলকৃত উপাত্তের ভিত্তিতে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই শর্তকে শিথিল করে নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যানুযায়ী, এই টিকা ১৪ দিন পর্যন্ত মাইনাস ২৫ থেকে মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যেতে পারে। ইনজেকশন বা শরীরে প্রবেশ করানোর আগে গলানোর সময় এটিকে রেফ্রিজারেটরের ভেতরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে এবং পাঁচ দিনের মধ্যেই ব্যবহার করতে হবে।

মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র বলছে যে মডার্নার টিকাটিকে ফ্রিজারে মাইনাস ৫০ থেকে মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহে এটিকে রেফ্রিজারেটরে ৩০ দিন পর্যন্ত ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে রাখা যাবে। শরীরে প্রবেশ করানোর আগে এগুলোকে যেমন, সাধারণ কক্ষ তাপমাত্রায় গলিয়ে নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আর টিকা প্রয়োগের আগে না খোলা ভায়াল বা শিশিগুলোকে ৮ থেকে ২৫ ডিগ্রি কক্ষ তাপমাত্রায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখা যাবে।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২২৬: টিকা (৫০) ফাইজার এবং মডার্নার টিকাগুলোর মধ্যে পার্থক্য কি? - ১

উত্তর-২২৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপান সরকার টিকা পাওয়ার জন্য দুটি মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার ও মডার্নার পাশাপাশি ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

এগুলোর মধ্যে ফাইজার-বিয়োনটেক এবং মডার্নার টিকাগুলো হচ্ছে মেসেঞ্জার বা বার্তাবাহী আরএনএ ভিত্তিক, যা একধরনের জিনগত উপাদান। এগুলোকে “মেসেঞ্জার আরএনএ টিকা” বা সংক্ষেপে “এমআরএনএ টিকা” বলে অভিহিত করা হয়।

এবারে আমরা জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই টিকাগুলোর মধ্যকার সামঞ্জস্য এবং পার্থক্যের উপর আলোকপাত করব।

এই দুটি টিকাই ইন্ট্রামাসকুলার বা পেশি ভেদ করে প্রয়োগ করা হয়।

এই পেশি-ভেদী ইনজেকশন হচ্ছে এমন এক পদ্ধতি যা ত্বকের নিচের চর্বি অতিক্রম করে মাংসপেশির অভ্যন্তরে টিকাকে পৌঁছে দেয়। কাঁধের কাছাকাছি উপরের বাহুতে সমকৌণিকভাবে সুচটি প্রবেশ করানো হয়।

জাপানে ইনফ্লুয়েঞ্জার মত রোগের টিকা প্রদানের জন্য ত্বক এবং মাংসপেশির মাঝখানের স্তরে হাইপোডার্মিক ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়। বলা হয়ে থাকে, মানুষের দেহ, ত্বকের নিচে দেয়া এই ইনজেকশনের চাইতে পেশি ভেদ করে দেয়া ইনজেকশনের মাধ্যমে গৃহীত টিকা দ্রুত শোষণ করে নিতে পারে।

ফাইজারের টিকা দুই ডোজের মাধ্যমে দেয়া হয়। দ্বিতীয় ডোজটি সাধারণত প্রথম ডোজের তিন সপ্তাহ পরে দেয়া হয়।

একইভাবে, মডার্নার টিকাও দুই ডোজেই প্রয়োগ করা হয়। তবে, এক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজটি দেয়া হয় প্রথম ডোজ প্রদানের চার সপ্তাহ পরে।

এই তথ্যগুলো মে মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭৮: টিকা (৮) mRNA টিকা কি?

উত্তর-১৭৮: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের অষ্টম কিস্তি তুলে ধরব। mRNA টিকা কি সেদিকে আমরা দৃষ্টি দেব।

নতুন করোনাভাইরাস থেকে সংগ্রহ করা জিনগত উপাদানের তন্তু অন্তর্ভুক্ত থাকা একটি “জিনের টিকা” বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাজারে ছাড়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখে জাপান যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার এবং জার্মানির বিয়োনটেকের যৌথভাবে উদ্ভাবিত টিকা ব্যবহার করে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। এই টিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার উদ্ভাবিত আরও একটি টিকা, এই উভয় টিকা হচ্ছে mRNA টিকা, জিনগত উপাদান যাতে রয়েছে।

ভাইরাসের গায়ে যেসব “সুচালো ফলার প্রোটিন বা আমিষ” থাকে সেগুলোর তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকা mRNA ইঞ্জেকশনের মধ্যে মানব দেহে ঢুকিয়ে দিয়ে টিকা কাজ করে। সুচালো ফলাযুক্ত প্রোটিন তৈরি করে নিতে mRNA মানব কোষের ভেতরে ব্লু-প্রিন্ট হিসেবে কাজ করে।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এসব সুচালো ফলাযুক্ত প্রোটিনের বিরুদ্ধে অসংখ্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে নিতে কাজ করতে শুরু করে। আসল ভাইরাস যখন দেহে প্রবেশ করে, এসব অ্যান্টিবডি তখন তাৎক্ষণিকভাবে হামলা চালায়।

তবে mRNA’র স্থিতিশীলতার ঘাটতি আছে এবং টিকা হিসেবে ইঞ্জেকশন নেয়ার পর দ্রুত তা গলে যায় এবং শরীরে থাকে না।

এছাড়া mRNA টিকা একারণে খুবই নিরাপদ বলে বলা হয় যে মানব জিন যেখানে রয়েছে, দেহের সেই মূল কোষে এটা প্রবেশ করে না।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭৭: টিকা (৭) জাপানের টিকাদান কর্মসূচিতে আগে থেকে স্বাস্থ্য সমস্যা থাকার বেলায় অগ্রাধিকার দেয়া প্রসঙ্গে।

উত্তর-১৭৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের সপ্তম কিস্তি তুলে ধরব। জাপানের কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচিতে বিদ্যমান কোন্‌ ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার উপর অগ্রাধিকার দেয়া হয় তা আমরা দেখব।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য সমস্যার একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। হৃদরোগ ও বৃক্ক বা কিডনির দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সারের মত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল করে দেয়া অসুখ এবং ঘুমের মারাত্মকরকম ব্যাঘাত এতে অন্তর্ভুক্ত আছে। এরকম অসুস্থতার কারণে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কিংবা নিয়িমিতভাবে চিকিৎসকের সাথে দেখা করছেন, তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

শারীরিক অবস্থার সনদ দাখিল করতে রোগীদের বলা হবে না। রোগীদের শুধুমাত্র যা করতে হবে তা হল একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করা।

শারীরিক অবস্থার প্রতিফলন তুলে ধরা বডি-মাস ইন্ডেক্স বা বিএমআই ৩০ এর উপরে থাকা লোকজনও অগ্রাধিকার পাবেন। ধারণা করা হয় স্থূলতার পর্যায়ে যারা অন্তর্ভুক্ত কিংবা আগে থেকে স্বাস্থ্যগত সমস্যা যাদের আছে, জাপানে সেরকম প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮২ লক্ষ।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭৬: টিকা (৬) কাদের শুরুতে টিকা দেয়া হবে?

উত্তর-১৭৬: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের ষষ্ঠ কিস্তি তুলে ধরব। এবারের প্রশ্ন করোনাভাইরাস টিকা পাওয়ার বেলায় কারা শুরুতে থাকবেন?

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে টিকা দেয়ার বেলায় অগ্রাধিকার থাকবে, চিকিৎসা কর্মীদের প্রথমে টিকা দেয়া হবে। এর পরে থাকবেন ৬৫ বছর কিংবা বেশি বয়সের বৃদ্ধরা। তারপর হচ্ছেন বৃদ্ধদের সেবা কেন্দ্রে যারা কাজ করছেন এবং স্বাস্থ্য সমস্যা থাকা লোকজন।

বৃদ্ধদের সেবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মচারীদের বেলায় মন্ত্রণালয় কিছু শর্তের আওতায় বৃদ্ধ লোকজনের একই সময়ে এদের টিকা দেয়া অনুমোদনের পরিকল্পনা করছে; যেমন, চিকিৎক যখন টিকা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে আসবেন। মন্ত্রণালয় বলছে কেন্দ্রে গুচ্ছ সংক্রমণ প্রতিহত করায় তা করা হবে। শর্তাবলির মধ্যে বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যের উপর যারা নজর রাখছেন সেই চিকিৎসকদের প্রতিদিন উপস্থিত থাকা অন্তর্ভুক্ত আছে। টিকা নেয়ার পর কেন্দ্রের টিকা নেয়া কর্মচারীদের জায়গায় অন্য কেউ যেন বৃদ্ধদের অবস্থার উপর নজর রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করে নিতে এটা করা হবে।

টিকা নিতে যারা ইচ্ছুক তাদেরকেই কেবল টিকা দেয়া হবে। কিছু বৃদ্ধ লোকজনের বেলায় টিকা তারা নিতে চাইছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন হতে পারে। সেরকম ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বলছে সিদ্ধান্ত যেন পরিবারের সদস্য ও চিকিৎসকদের সহায়তায় নেয়া হয়।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭৫: টিকা (৫) টিকাদান প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে।

উত্তর-১৭৫: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। জাপানে বসবাসরত বিদেশিদের দেশের টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছে এবং সরকারের যোগানো তহবিলে তারা টিকা নিতে পারবেন। জাপানের আনুমানিক ৩০ লক্ষ বিদেশিকে সমস্যা ছাড়া টিকা নিতে সাহায্য করায় আমরা আমাদের টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তর অব্যাহত রাখছি। এবারের প্রশ্ন টিকাদান কেন্দ্রে টিকা কিভাবে দেয়া হচ্ছে?

প্রচুর সংখ্যক মানুষের টিকাদানের বেলায় টিকা নেয়া লোকজনকে প্রথমে অবশ্যই তাদের বাড়ির ঠিকানায় স্থানীয় পৌরসভার পাঠানো কুপন জমা দিতে হবে এবং ড্রাইভার লাইসেন্স, বিমার কার্ড বা অন্য কিছুর মধ্যে দিয়ে নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করিয়ে নিতে হবে।

টিকা গ্রহণকারী এরপর নিজের শারীরিক অবস্থা, চিকিৎসার ইতিহাস বিষয়ে একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করবেন এবং টিকা তিনি নিতে পারবেন কি না তা নিশ্চিত করে নিতে একজন চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে দেখবেন।

এই পর্যায় পর্যন্ত কোন সমস্যা না হলে টিকা গ্রহণকারী টিকা নিতে পারবেন। প্রত্যেক ব্যক্তির বেলায় ইঞ্জেকশন দেয়ার জন্য দুই মিনিট পর্যন্ত সময় লাগবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ইঞ্জেকশন পাওয়ার পর গ্রহণকারী একটি সনদ পাবেন, যেখানে টিকা নেয়ার তারিখ এবং যে টিকা তিনি পেয়েছেন সেটার নাম লেখা থাকবে। দ্বিতীয় দফার টিকা পাওয়ার সময় সনদের প্রয়োজন হবে।

টিকা গ্রহণকারীদের জন্য যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল টিকা নেয়ার ঠিক পরপর তারা যে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন না তা মনে রাখা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টিকা গ্রহণকারীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি বিশেষ একটি জায়গায় ১৫ মিনিটের বেশি সময় থাকার অনুরোধ তাদেরকে করেছে।

বিদেশে চালানো ক্লিনিকাল পরীক্ষা অনুযায়ী জাপানে যে টিকা পাঠানো হয়েছে সেই টিকা নেয়া কিছু লোকজনের মধ্যে টিকার ডোজ নেয়ার পর মাথাব্যথা কিংবা ক্লান্তি বোধ করার মত উপসর্গের খবর পাওয়া গেছে। দুর্লভ কিছু ঘটনার বেলায় অ্যানাফিল্যাকটিক প্রতিক্রিয়া জড়িত থাকা টিকার মারাত্মক ধরনের এলার্জি প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে জানা গেছে।

টিকা নেয়ার পর কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ার বেলায় সাড়া দেয়ার জন্য টিকা দেয়ার জায়গায় সহায়তা স্টেশন তৈরি করে নেয়া হবে।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭৪: টিকা (৪) কিভাবে এবং কোথায় আমরা টিকা পেতে পারি?”

উত্তর-১৭৪: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের চতুর্থ কিস্তি তুলে ধরব। আমাদের এবারের প্রশ্ন হল জাপানে কিভাবে এবং কোথায় কোভিড-১৯’এর টিকা দেয়া হবে?

কেন্দ্রীয় সরকারের দিকনির্দেশনায় মিউনিসিপ্যাল বা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করার কথা রয়েছে। যারা টিকা নিতে চাইবেন, তারা যে পৌরসভায় অধিবাসী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন, সেখানে টিকা নিতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে এর ব্যতিক্রম হিসেবে যারা কাজের জন্য অথবা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণে নিজেদের বাসা থেকে দূরে রয়েছেন, তাদেরকে অন্য পৌরসভায় টিকা নেয়ার অনুমতি দেয়া হবে। টিকা নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কুপন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ডাকের মাধ্যমে আপনার বাসার ঠিকানায় পৌঁছে দিবে। আপনি যদি টিকাদান কেন্দ্রে সেই কুপন নিয়ে আসেন, তাহলে আপনি বিনামূল্যে টিকা নিতে পারবেন।

তবে, আপনাকে আগে থেকে ফোন বা অন্য কোন উপায়ে অ্যাপয়ন্টমেন্ট নিয়ে রাখতে হবে। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি হল এবং জিমনেশিয়ামে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পরবর্তী কিস্তিতে টিকা নেয়ার সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা আপনাদের জানাব।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭৩: টিকা (৩) টিকা কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে?

উত্তর-১৭৩: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের তৃতীয় কিস্তি তুলে ধরব। আমাদের এবারের প্রশ্ন কোভিড-১৯ এর টিকা কতদিন পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়।

জাপানে এবং জাপানের বাইরে বেশ কয়েকটি কোভিড-১৯ এর টিকার উন্নয়ন করা হয়েছে বা হচ্ছে। তবে আমরা এখনও জানিনা কতদিন তাদের কার্যকারিতা থাকবে, কারণ মানবদেহে পরীক্ষা এবং প্রকৃত টিকাদান কর্মসূচি বিদেশে মাত্র শুরু হয়েছে।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এই টিকাগুলো নতুন করোনাভাইরাসের রুপান্তরিত ধরনের ক্ষেত্রেও কার্যকর। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন সাধারণভাবে ভাইরাসেরা ক্রমাগত পরিবর্তিত হতে থাকে এবং সামান্য এই পরিবর্তন টিকার কার্যকারিতা নষ্ট করার সম্ভাবনা কম।

পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে ফাইযারের টিকা এবং বর্তমানে পাওয়া যাওয়া অন্যান্য টিকা দেহে এন্টিবডি তৈরি করেছে যা করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত ধরনের ক্ষেত্রেও কাজ করেছে। কর্মকর্তারা জানান জাপানে চলমান পরীক্ষার সময় তারা পরিবর্তিত ধরনের ক্ষেত্রে কার্যকারিতা সহ টিকার কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭২: টিকা (২) কেন টিকা নেয়া জরুরি?”

উত্তর-১৭২: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের দ্বিতীয় কিস্তি তুলে ধরব। আমাদের এবারের প্রশ্ন কেন টিকা নেয়া জরুরি সে সম্পর্কে।

টিকা দেয়ার উদ্দেশ্য হল মানুষকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করা বা তাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা। প্রত্যাশা করা হয় যে টিকা একজন ব্যক্তিকে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাবে। এর পাশাপাশি এটি কমিউনিটিতে রোগের বিস্তার কমিয়ে আনবে বলেও ধারণা করা হয়।

জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বিদেশে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে গুরুতর অবস্থা এবং জ্বরের মত লক্ষণ প্রতিরোধে নতুন করোনাভাইরাসের টিকা কার্যকর ভূমিকা রাখে।

অনেক মানুষকে টিকা দেয়ার ফলে যদি গুরুতর অসুস্থ রোগী এবং এই রোগ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসে তাহলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর থেকে চাপ কমে যাবে।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৭১: টিকা (১) বিদেশিদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে।

উত্তর-১৭১: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের প্রথম কিস্তি তুলে ধরব। আমাদের এবারের প্রশ্ন জাপানে বসবাসরত বিদেশিদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে।

জাপানে বসবাসরত বিদেশিরা দেশের যে মিউনিসিপ্যালিটি বা পৌরসভার অধিবাসী হিসেবে নিবন্ধিত সেখান থেকে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে পারবেন।

জাপানের টিকাদান কর্মসূচি ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাদানের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হবে, পরবর্তীতে ধীরে ধীরে এর পরিধি বাড়িয়ে প্রবীণদের এবং তারপরেই শারীরিক সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের এবং অন্যান্যদের টিকার আওতায় আনা হবে।
প্রবীণদের টিকাদান কর্মসূচি এপ্রিলের মধ্যেই শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টিকা পেতে কোথায় যেতে হবে, নীতিগতভাবে, বাসিন্দা হিসেবে লোকজন যে পৌরসভায় নিবন্ধিত সেখানেই টিকা দেওয়ার স্থান নির্ধারণ করা হবে।
সরকার টিকা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কুপন জনগণের বাড়িতে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এ টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

এ তথ্যগুলো ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৬৭: কতদিন পর্যন্ত টিকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকর থাকবে?

উত্তর-১৬৭: এনএইচকে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। এবার আমরা টিকা সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরের ষষ্ঠ কিস্তি তুলে ধরব। এবারের প্রশ্ন কতদিন পর্যন্ত টিকার প্রভাব স্থায়ী থাকবে?

ডব্লিউএইচও’র টিকাদান, টিকা এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ক বিভাগের পরিচালক কেট ও’ব্রায়েন জানুয়ারির ৭ তারিখে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে নিচের কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন মানবদেহে পরীক্ষা বসন্তে শুরু হয়েছিল এবং আমরা এখনও এ টিকাগুলো ব্যবহারের শুরুর দিনে রয়েছি। তিনি বলেন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে লোকজনকে অনুসরণ করা চালিয়ে যাওয়া থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন স্থায়ী হয় তা জানা যেতে পারে, ডব্লিউএইচও’র এখনও এর উত্তর জানা নেই। তিনি বলেন ডব্লিউএইচও আশা ও প্রত্যাশা করছে যে এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হবে। তিনি বলেন ডব্লিউএইচও সেইসব ব্যক্তিদের প্রতিও নজর রাখছে যারা প্রাকৃতিকভাবে কোভিড-১৯এ সংক্রমিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন যে এ থেকে প্রাকৃতিক সংক্রমণ দ্বারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন স্থায়ী হয় তার কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাবে এবং সম্ভবত ভ্যাকসিন সম্পর্কিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় তা প্রয়োগ করা হবে। তিনি পুনরায় বলেন যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কত দিন স্থায়ী হবে এই মুহুর্তে তা জানানো খুব তাড়াতাড়ি।

এ তথ্যগুলো জানুয়ারির ২৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৯: আমি শুনেছি যে স্প্যানিশ ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব তিনটি ওয়েভ বা তরঙ্গে হয়েছিল। অনুগ্রহ করে আমাকে সেই সম্পর্কে আরও বলুন।

১৯১৮ সালের ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী, যা ‘স্প্যানিশ ফ্লু’ নামেও পরিচিত, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের নতুন একটি স্ট্রেইনের কারণে হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যে প্রায় ৫০ কোটি লোক বা সেই সময়কার বৈশ্বিক জনসংখ্যার মোটামুটি এক চতুর্থাংশ সংক্রমিত হয়েছিলেন এবং ৪ কোটি লোক মারা গিয়েছিলেন।

স্প্যানিশ ফ্লু ১৯১৮ সালের বসন্তকাল থেকে প্রথম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এবং গ্রীষ্মকালে হ্রাস পায়। তবে দ্বিতীয় একটি তরঙ্গ ১৯১৮ সালের শরৎকালে এবং পরে ১৯১৯ সালের শুরুতে তৃতীয় তরঙ্গ আঘাত হানে।

দ্বিতীয় তরঙ্গটিকে সবচেয়ে মারাত্বক হিসেবে মনে করা হয় এবং বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ২ কোটি মানুষের মৃত্যুর জন্য সেটিকে দায়ী করা হয়।

১৯১৮ সালের শরৎকাল এবং ১৯২১ সালের বসন্তকালের মধ্যে জাপানে স্প্যানিশ ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব তিনটি তরঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রেকর্ডে দেখা যায় যে মোট প্রায় ২ কোটি ৩৮ লক্ষ লোক এতে আক্রান্ত হন এবং ৩ লক্ষ ৯০ হাজার লোক মারা যান।

জাপানে ১৯১৮ সালের শরৎকালে প্রথম তরঙ্গের সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় যাতে ২ কোটি ১২ লক্ষ লোক সংক্রমিত হন এবং ২ লক্ষ ৬০ হাজার লোক মারা যান। ১৯১৯ সালের শরৎকাল থেকে দ্বিতীয় তরঙ্গ ছোট আকারের প্রাদুর্ভাব ঘটায় যাতে ২৪ লক্ষ লোক আক্রান্ত হন এবং ১ লক্ষ ৩০ হাজার লোক মারা যান। তবে, দ্বিতীয় তরঙ্গে মৃত্যুর হার ছিল সবচেয়ে বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে সতর্ক করে দিচ্ছেন যে স্প্যানিশ ফ্লু’র মতো নতুন করোনাভাইরাস মহামারীরও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তরঙ্গ থাকতে পারে।

এ তথ্যগুলো জুনের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৮: নতুন করোনাভাইরাস কোন অবস্থায় সংখ্যা বৃদ্ধি করে? এগুলো কি শুধুমাত্র আমাদের দেহের ভেতরেই সংখ্যা বৃদ্ধি করে?

আমরা সেন্ট মারিয়াননা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অফ মেডিসিনের অধ্যাপক কুনিশিমা হিরোইয়ুকি’কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি সংক্রামক রোগের একজন বিশেষজ্ঞ। কুনিশিমা বলছেন, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া হচ্ছে এমন কিছু অণুজীব যা রোগ সৃষ্টি করে থাকে।

ব্যাকটেরিয়া হচ্ছে একক কোষ নিয়ে গঠিত জীবনের একটি আদি রূপ। এগুলো নিজেরাই সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে।

ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় অনেক ছোট। এগুলোতে জিন বা নিউক্লিক এসিড এবং প্রতিরক্ষামূলক আবরণ থাকলেও এদের কোনও কোষ নেই। ভাইরাস নিজে থেকে সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে না। তারা কেবল তাদের সংক্রমিত কোনও মানুষ বা প্রাণীর জীবিত কোষের ভিতরেই প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে।

এর অর্থ হল দেয়াল এবং অন্যান্য পৃষ্ঠতলে লেগে থাকা নতুন করোনাভাইরাস সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে না। তবে আমরা জানি যে ভাইরাস কিছু সময়ের জন্য এই ধরনের পৃষ্ঠতলে তাদের সংক্রামক ক্ষমতা বজায় রাখে।

অধ্যাপক কুনিশিমা বলছেন, আপনার বাইরে থাকাকালীন দরজার হাতল ও হ্যান্ডরেলসহ ভাইরাস লেগে থাকা এই জাতীয় পৃষ্ঠতল স্পর্শ করার প্রবণতা থাকে। তিনি বলছেন, সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আপনার বাড়িতে আসার পর বা অফিসে পৌঁছে অথবা খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে বা অ্যালকোহল ভিত্তিক জীবাণুনাশক দ্বারা আপনার হাত পরিস্কার করে নেয়া উচিত।

এ তথ্যগুলো জুনের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৭: নগদ অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে আপনি কি সংক্রমিত হতে পারেন?

আইচি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ মিকামো হিরোশিগে বলছেন, অবস্থা ভাইরাসের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। তিনি বলছেন, তবে কারও হাতে যদি ভাইরাস থাকে এবং সে অর্থ বা মুদ্রা স্পর্শ করে তাহলে এটা ধরে নেয়া ভাল যে ভাইরাস কিছু সময়ের জন্য অর্থের উপরে থাকবে। সংক্রমণ রোধ করার জন্য আপনার মুখ বা নাক স্পর্শ করার আগে আপনার হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নেওয়া অথবা অ্যালকোহল বা অন্য স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ক্রয় করা যে কোনও কিছু স্পর্শ করার পরেও এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার জন্য অধ্যাপক পরামর্শ দিচ্ছেন।

এ তথ্যগুলো জুনের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৬: নতুন করোনাভাইরাস কোন বস্তুর পৃষ্ঠতলে কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে?

মার্কিন জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের তৈরি করা একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে সময়ের সাথে সাথে ভাইরাস বিভিন্ন বস্তুর পৃষ্ঠতল থেকে যথেষ্ট পরিমাণে অদৃশ্য হয়ে যায়। এতে আরও বলা হয়েছে যে তামার উপরে থাকা ভাইরাস ৪ ঘণ্টা পর এবং কার্ডবোর্ডের উপরে থাকা ভাইরাস ২৪ ঘণ্টা পর আর শনাক্ত করতে পারা যায়নি।

তবে, প্লাস্টিকের উপর থাকা ভাইরাস ৭২ ঘণ্টা এবং স্টেইনলেস স্টিলের উপর ভাইরাস ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

এ তথ্যগুলো জুনের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৫: হিমায়িত থাকা অবস্থায় করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে কি ঘটে?

টোকিও স্বাস্থ্যসেবা বিশ্ববিদ্যালয় পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক ও সংক্রমণ প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ সুগাওয়ারা এরিসা’র সাথে আমরা কথা বলেছি।

নতুন করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এখনও অনেক বিষয় অজানা থাকলেও একই ধরনের আরেকটি করোনাভাইরাস, সার্স ভাইরাস নিয়ে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক গবেষণা করা হয়েছে।

গবেষণা অনুযায়ী, ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত তুলনামূলক উচ্চ তাপমাত্রা সার্স ভাইরাসকে মেরে ফেলতে সক্ষম হলেও হিমাংকের নিচে মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে এই ভাইরাস বেঁচে থাকতে সক্ষম হয়।

সমীক্ষাটি এমন ধারণা দিচ্ছে যে নতুন করোনাভাইরাস হয়ত তাপের বিপরীতে দুর্বল এবং নিম্ন তাপমাত্রায় এটি তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী।

সুগাওয়ারা বলছেন, উদাহরণস্বরূপ নতুন করোনাভাইরাস যদি মুদি দোকানের পণ্যের পৃষ্ঠতলে পাওয়া যায় তাহলে এটা ধরে নেয়া যায় যে রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজারে তা বর্ধিত সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকবে। লোকজনকে তাই কোন পণ্য রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে রাখার আগে সেটার মোড়কের বাইরের দিকটা জীবাণুমুক্ত করে নিতে এবং রান্নার আগে ও পরে হাত ভালভাবে ধুয়ে নিতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সুগাওয়ারা বলছেন গরম করা হলে বেশিরভাগ খাবারই নিরাপদে খাওয়া যাবে।

এ তথ্যগুলো জুনের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৪: যদি কোনও খাবারের মোড়ক ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়, তাহলে আমরা কি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে মোড়কটি গরম করে ভাইরাস দূর করতে পারি?

মাইক্রোওয়েভ ওভেনে কোন কিছু গরম করতে খাবারের ভেতরে থাকা পানির অণুগুলোকে ঘূর্ণনের জন্য তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহৃত হয়।

টোকিও স্বাস্থ্যসেবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক ও সংক্রমণ প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ সুগাওয়ারা এরিসা বলছেন, কোন খাবারকে যদি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গরম করা হয় তাহলে সেই খাবার খাওয়া নিরাপদ।

তবে তিনি উল্লেখ করেন, এমন কোন প্রমাণ নেই যে ওভেন খাবার মোড়কের পৃষ্ঠতলকে এতটা উত্তপ্ত করে যার ফলে মোড়কে থাকা ভাইরাস সংক্রামক ক্ষমতা হারাতে পারে।

সুগাওয়ারা বলছেন, রান্না এবং খাওয়ার আগে ও পরে ঘন ঘন হাত ধুয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এ তথ্যগুলো জুনের ১৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪৩: এটা কি সত্যি যে যেসব দেশে যক্ষ্মার জন্য বিসিজি টিকা দেয়া হয়েছে সেসব দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা কম হয়েছে?

বিসিজি টিকা তৈরি করা হয় গরুর যক্ষ্মা সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার একটি দুর্বল স্ট্রেইন থেকে যা মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার মত একই ধরনের। জাপানে সকল শিশুর এক বছর বয়স হওয়ার আগেই বিসিজি টিকা দেয়া হয়। বিসিজি টিকা দেয়ার নীতিমালা দেশ ও অঞ্চল অনুযায়ী ভিন্ন হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইতালি এমন সব দেশের মধ্যে রয়েছে যেখানে বিসিজি টিকা দেওয়ার কোন সর্বজনীন কর্মসূচি নেই।

জাপানের বাইরের কিছু গবেষক উল্লেখ করেছেন যে নিয়মিত বিসিজি টিকা কার্যক্রমের স্থানগুলোতে করোনাভাইরাসের কারণে কম মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ এবং এর লক্ষণগুলো গুরুতর হওয়া রোধ করার সাথে বিসিজি’র কোন সম্পর্ক আছে কিনা তা গবেষণা করে দেখতে অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানো হচ্ছে।

এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ টিকাবিদ্যা বিষয়ক জাপানি সোসাইটি এই বিষয়ে তাদের মতামত উপস্থাপন করে।

সোসাইটি বলছে, ভাইরাসটির বিরুদ্ধে বিসিজি’র কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং এই মুহুর্তে তারা প্রতিরোধ পদক্ষেপ হিসেবে টিকা দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে না।

সোসাইটি বলছে, প্রবীণ প্রজন্মের কিছু ব্যক্তি যাদের বিসিজি টিকা দেয়া হয়নি করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে তাদেরকে টিকা দিতে অনুরোধ করছেন। তবে সোসাইটি বলছে, বিসিজি হচ্ছে শিশুদের একটি টিকা এবং প্রবীণদের জন্য এর কার্যকারিতা ও সুরক্ষার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সোসাইটি আরও বলছে, সুনির্দিষ্ট প্রয়োগের বাইরে বিসিজি ব্যবহার বৃদ্ধি করা এড়ানো প্রয়োজন, কারণ তা না হলে শিশুদের টিকার স্থিতিশীল সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।

এ তথ্যগুলো জুনের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪২: মানুষের ত্বকে থাকা করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে কী ঘটে?” এবং “ব্যক্তি কোন উপসর্গ বা লক্ষণ প্রদর্শন না করলেও এই ভাইরাস কী শরীরে থাকে?

আমরা সেন্ট মারিয়াননা ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কুনিশিমা হিরোইয়ুকি’কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলছেন, কোনও জীবন্ত প্রাণীর কোষে প্রবেশ এবং সংক্রমিত না করে ভাইরাসটি নিজের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে না।

নতুন করোনাভাইরাস প্রধানত মানুষের নাক বা মুখের ঝিল্লির মাধ্যমে তাদেরকে সংক্রমিত করে এবং গলা, ফুসফুস এবং অন্যান্য স্থানের কোষে সংখ্যাবৃদ্ধি করে বলে জানা যায়। ভাইরাস কেবল কারও হাত বা পায়ের পৃষ্ঠতলে থাকলে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে না।

তবে কারও হাতে ভাইরাস লেগে থাকলে এবং তার চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করলে সে সংক্রমিত হতে পারে। কোনও ব্যক্তির ত্বকে থাকা ভাইরাস সাবান দিয়ে ধুয়ে দূর করা যায়, তাই লোকজনের উচিত তাদের মুখ স্পর্শ করার আগে হাত ভাল করে ধোয়া বা অ্যালকোহলের মতো জীবাণুনাশক ব্যবহার করে পরিস্কার থাকা।

জলবসন্তের সৃষ্টিকারী হার্পিসের মত কিছু ভাইরাস কোন আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও মানব দেহে থেকে যায়। তবে সাধারণত, করোনাভাইরাস ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তাই যদি কেউ সংক্রমিত হয় এবং উপসর্গ বা লক্ষণ প্রদর্শন করে তাহলে শেষ পর্যন্ত ব্যক্তির রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা কাজ করে এবং ভাইরাস শরীর থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

এ তথ্যগুলো জুনের ১৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪১: “অতিবেগুনি রশ্মি বা ওজোন গ্যাসের সংস্পর্শে আসলে করোনাভাইরাস কী মারা যায়?”

হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ওওগে হিরোকি’র সাথে আমরা কথা বলেছি। ওওগে বলছেন, এমন প্রত্যাশা রয়েছে যে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে উচ্চ মাত্রায় নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনি রশ্মি ব্যবহার করা হলে সেগুলোর সংক্রামক ক্ষমতা হ্রাসের ক্ষেত্রে তা কার্যকর হয়।

অত্যন্ত কার্যকর অতিবেগুনি রশ্মি নির্গমনকারী যে ডিভাইসগুলো ইতোমধ্যে প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলো নতুন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কার্যকর হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে করোনাভাইরাস রোগী থাকা হাসপাতাল কক্ষগুলো থেকে রোগী চলে যাওয়ার পর একটি ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে, যা পুরো কক্ষজুড়ে এরকম অতিবেগুনি রশ্মি নিঃসরণ করে থাকে।

এদিকে, উপরিল্লিখিত ডিভাইসের মাধ্যমে ধ্বংস করতে পারা ভাইরাসকে মারার ক্ষেত্রে সূর্যরশ্মি অকার্যকর বলে ধারণা করা হয়। সূর্যালোকে অতিবেগুনি রশ্মি থাকলেও তার মধ্যে বিভিন্ন শক্তির রশ্মি রয়েছে এবং সেগুলো এরকম ডিভাইসের দ্বারা তৈরি রশ্মির মতো শক্তিশালী নয়।

ওজোন গ্যাসের ক্ষেত্রে, জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন করোনাভাইরাসকে প্রায় এক ঘন্টা ধরে উচ্চমাত্রার ঘন ওজোন গ্যাসের সংস্পর্শে রাখার পর তারা দেখতে পেয়েছেন যে ভাইরাসের সংক্রামক ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। ওওগে বলছেন, পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব ছিল ১ পিপিএম থেকে ৬ পিপিএমের মধ্যে যা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক বলে মনে করা হয়।

সাধারণ ব্যবহারের জন্য বিক্রি করা জীবাণুমুক্তকরণ ও দুর্গন্ধমুক্তকরণে ওজোন গ্যাস ব্যবহার করা ডিভাইসগুলোতে ঐরকম উচ্চ ঘনত্বের ওজোন গ্যাস ব্যবহৃত হয় না। তবে এই ধরনের কম ঘনত্বের ওজোন গ্যাস নতুন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কার্যকর কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জাপানের ভোক্তা বিষয়ক এজেন্সি উৎপাদকদের যদি ওজন গ্যাস ব্যবহার করা পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে দাবি করার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকে তবে সেটা উৎপাদকদের কাছ থেকে নিশ্চিত করে নিতে ব্যবহারকারীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

প্রশ্ন-৪০: “গ্রীষ্মের সময় মাস্ক পরার ক্ষেত্রে কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?”

উত্তর গোলার্ধ গ্রীষ্মের পুরো উত্তাপ অনুভব করতে চলেছে। স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নেওয়া একটি পদক্ষেপ হিসেবে অনেক ব্যক্তি মাস্ক পড়ায় এবছর হিটস্ট্রোক মোকাবিলায় আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

মন্ত্রণালয় পর্যাপ্ত সামাজিক দূরত্ব (অন্তত ২ মিটার) নিশ্চিত করা গেলে লোকজনকে তাদের মাস্ক খুলে রাখতে পরামর্শ দিচ্ছে।মাস্ক পড়া অবস্থায় কঠোর পরিশ্রমের কাজ কিংবা ব্যায়াম এড়িয়ে চলতে লোকজনের প্রতি তারা আহ্বান জানাচ্ছে। এমনকি তৃষ্ণার্ত না হলেও লোকজনকে ঘন ঘন পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছে মন্ত্রণালয়।

নিপ্পন মেডিকেল স্কুল গ্র্যাজুয়েট স্কুলের অধ্যাপক ইয়োকোবোরি শোজি’র হিটস্ট্রোক সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান রয়েছে। তিনি বলছেন, মাস্ক পড়লেই যে একজন ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার মত সংবেদনশীল হয়ে পড়বেন বিষয়টি তেমন নয়। তবে তিনি বলছেন, মাস্ক পড়লে শ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে যায়। এমন উপাত্ত রয়েছে যা প্রদর্শন করে যে মাস্ক পরা অবস্থায় হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অধ্যাপক ইয়োকোবোরি উল্লেখ করছেন ব্যায়ামের অতিরিক্ত বোঝা বা বাতাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

অধ্যাপক ইয়োকোবরি বলছেন, সম্ভাব্য বায়ুবাহী সংক্রমণ রোধ করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে বয়স্ক ব্যক্তি বা একা বসবাসকারী ব্যক্তিদের বিশেষত হিটস্ট্রোকের বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। বাইরে থাকার সময়, তিনি লোকজনকে মাস্ক খুলে গাছের নীচের মত ভিড় নেই এমন স্থানে বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দেন। স্যাঁতস্যাঁতে মাস্কের ভিতর দিয়ে কম বায়ু চলাচল করার কারণে ঘেমে যাওয়ার পরে মাস্ক বদলে নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

এ তথ্যগুলো জুনের ১১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৯: “শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করার সময় আমাদের কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?”

উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল শুরু হওয়ায় কিছু ব্যক্তি হয়ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানে বায়ুচলাচল সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। বাড়িঘরে ব্যবহৃত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের বেশিরভাগ ঘরের ভেতর থাকা বাতাসকে পুনঃসঞ্চালন করে এবং সেগুলোতে বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা থাকে না। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহারের সময় অনেক ব্যক্তিই সম্ভবত জানালা বন্ধ রাখেন।

টোকিও পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ইয়ামামোতো ইয়োশিহিদে হলেন জাপানের স্থাপত্যবিদ্যা ইনস্টিটিউটের একজন সদস্য। তাঁর পড়াশোনার মূল বিষয়ের মধ্যে স্থাপনার ভিতর বায়ু চলাচল অন্তর্ভুক্ত। তিনি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র এবং প্রাকৃতিক বায়ুচলাচল সমন্বয় করার প্রস্তাব করেছেন।

চার মৌসুম থাকা অঞ্চলে, ইয়ামামোতো গ্রীষ্মের শুরুতে খুব বেশি গরম অনুভূত না হওয়া সময়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করার সময় জানালা আংশিক খোলার পরামর্শ দেন যাতে করে বাইরে থেকে বাতাস ঘরে প্রবেশ করতে পারে। ঘর খুব বেশি গরম হয়ে গেলে জানালা অল্প সময়ের জন্য বন্ধ রেখে অথবা জানালা আংশিক খোলা রেখে বায়ু শীতল করুন।

গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে যখন হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়, ইয়ামামোতো তখন জানালা খোলার পরিবর্তে ঘরের টয়লেট বা রান্নাঘরের মধ্যে থাকা ভেন্টিলেটিং ফ্যানের সক্রিয় ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

বেশিরভাগ বাড়ি এমনভাবে নকশা করা হয় যাতে ভেন্টিলেটিং ফ্যান ব্যবহার করার সময় বাইরে থেকে বাতাস ঘরে ঢুকতে পারে। এর ফলে জানালা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও একটি স্থাপনার ভিতরে এবং বাইরে বায়ু প্রবাহের সৃষ্টি করবে। আপনার বাড়িতে বায়ুচলাচল কীভাবে কাজ করে তা জানতে অনুগ্রহ করে একজন বিশেষজ্ঞকে জিজ্ঞাসা করুন।

এ তথ্যগুলো জুনের ১০ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৮: যদি আমি কোভিড-১৯ সম্পর্কিত বৈষম্যের শিকার হই কিংবা কাউকে বৈষম্যের শিকার হতে দেখি তাহলে আমার কার সাথে পরামর্শ করা উচিত?

আমাদের এবারের প্রশ্নটি এসেছে জাপানে বসবাসরত বিদেশিদের কাছ থেকে।

অনুগ্রহ করে বহুভাষিক পরামর্শ কেন্দ্র, ইয়োরিসোই হটলাইন’এ কেন্দ্রটির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করুন:
https://www.since2011.net/yorisoi/n2/
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

কেন্দ্রটির টোলমুক্ত নম্বর হচ্ছে ০১২০-২৭৯-৩৩৮।

ইওয়াতে, মিইয়াগি এবং ফুকুশিমা জেলার জন্য ০১২০-২৭৯-২২৬।

অথবা, এর ফেসবুক পেজ:
https://www.facebook.com/yorisoi2foreign
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

আপনি নিচেরগুলো থেকেও সহায়তা পাবেন:
ব্যাকস্টোরিজ: জাপানে বহুভাষিক করোনাভাইরাস হটলাইন
https://www3.nhk.or.jp/nhkworld/en/news/backstories/1019/

আমাদের পরবর্তী প্রশ্ন “আমার সঙ্গী আমাকে নির্যাতন করছে। সহায়তার জন্য আমি কার কাছে যাব?”

উত্তর: পারিবারিক সহিংসতা বা ডিভি’র শিকার ব্যক্তিদের কাছে ফোন ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে পরামর্শ নেয়া সহ বিভিন্ন উপায় রয়েছে যার দ্বারস্থ তারা হতে পারেন। আপনি অনসাইট দোভাষী সেবা এবং নিরাপদ আশ্রয়ের তথ্যও পেতে পারেন।

সামাজিক মাধ্যম সম্পর্কিত পরামর্শ ১১টি ভাষায় ২৪ ঘণ্টা পাওয়া যাচ্ছে।

অনুগ্রহ করে https://soudanplus.jp/language.html ভিজিট করুন।
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সহিংসতা সম্পর্কিত পরামর্শ ও সহায়তা কেন্দ্র।
এর ফোন নম্বর হল ০৫৭০-০-৫৫২১০ যা শুধুমাত্র জাপানি ভাষায়।
এটি আপনার নিকটতম পরামর্শ কেন্দ্রের সাথে আপনাকে যুক্ত করবে।

পারিবারিক সহিংসতা সম্পর্কিত হটলাইন প্লাস:
অনুগ্রহ করে ০১২০-২৭৯-৮৮৯ নম্বরে কল করুন তবে এটিও শুধুমাত্র জাপানি ভাষায়।

আমাদের পরবর্তী প্রশ্ন “আমি গর্ভবতী। আমার কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?”

উত্তর: এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে এমনটা আভাষ পাওয়া যায় যে গর্ভবতী নারীর অন্য সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির তুলনায় গুরুতর অসুস্থ হওয়ার বেশি ঝুঁকি না থাকলেও গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে গর্ভবতী নয় এমন নারীদের মতই তার একই অগ্রগতি এবং তীব্রতা থাকতে পারে।
উপাত্ত এটা প্রদর্শন করছে যে আপনার গর্ভাবস্থার সময় কোভিড-১৯ সম্পর্কে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে আপনার ভিড় এড়ানো, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং আপনার প্রতিদিনকার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার মত প্রতিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করা অব্যাহত রাখা উচিত।

আরও তথ্যের জন্য, নিচের বহুভাষিক লিংক-এ যান:
https://share.or.jp/english/news/for_pregnant_womencovid-19_countermeasures.html
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

আমাদের স্থানীয় প্রোগ্রাম ‘হার্ট নেট টিভি’র সহজ জাপানি ভাষার সংস্করণের জন্য নীচের লিংক-এ যান।
লিংক: https://www.nhk.or.jp/heart-net/article/339
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

প্রশ্ন-৩৭: “আমার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আমি কি তিন মাসের বর্ধিত সময়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারব?”

জাপানে বিদেশি নাগরিকদের ভিসা নবায়নের আবেদনের প্রেক্ষিতে অধিবাসী মর্যাদা পরিবর্তন এবং অবস্থানের মেয়াদ বৃদ্ধি, উভয় ক্ষেত্রে তিন মাস বর্ধিত করা হচ্ছে। আমাদের এবারের প্রশ্নটি এসেছে জাপানে বসবাসরত বিদেশিদের কাছ থেকে। এর উত্তর হল ‘হ্যা’। আপনি নির্দিষ্ট কয়েকটি শর্তের অধীনে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। অভিবাসন সেবা এজেন্সি জুন মাসের ২ তারিখ এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান’কে জানায় যে এই বিশেষ বর্ধিত সময়ে আপনি আপনার আগের অধিবাসী মর্যাদার ক্ষেত্রে যেসব শর্তের অধীনে কাজ করার অনুমতি পেতেন সে অনুযায়ীই পাবেন। তবে, আপনার যদি কাজের ধরন এবং নিয়োগকারী সহ কোন শর্ত পরিবর্তন করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই প্রথমে আপনি অভিবাসন সেবা এজেন্সির সাথে পরামর্শ করে নিবেন।

আমাদের পরবর্তী প্রশ্ন “আমি যদি আর কাজ না করতে পারি বা পড়াশুনা না চালাতে পারি তাহলে কি আমাকে বর্তমানের কাজ কিংবা খণ্ডকালীন কাজের অনুমতিসহ শিক্ষার্থী হিসেবে অধিবাসী মর্যাদা হারাতে হবে?”

এর উত্তর হল ‘না’। করোনাভাইরাসের প্রভাবে আপনি যদি কাজ করতে বা পড়াশুনা চালিয়ে যেতে অসমর্থ হন তাহলে আপনার অধিবাসী মর্যাদা বাতিল করা হবে না। তবে আপনাকে অবশ্যই নিচের যেকোন একটি দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করতে হবে।

১. আপনার নিয়োগদাতা অথবা আপনার নিজস্ব কোম্পানিকে অবশ্যই ব্যবসায়িক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে।
২. আপনি অবসর নিয়েছেন এবং অনলাইনের মাধ্যমে কাজের খোঁজ করছেন অথবা কাজ খুঁজে পেয়েছেন কিন্তু সেই কোম্পানিতে যেতে পারছেন না।
৩. আপনি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবেন তা বন্ধ থাকার ঘটনাসহ আপনি যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি রয়েছেন তা যদি বন্ধ থাকে।
৪. আপনি যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিলেন তা যদি বন্ধ থাকে এবং অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে আপনার ভর্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পালন করতে না পারেন।
৫. কোভিড-১৯ সহ অসুস্থতার ক্ষেত্রে হাসপাতালে অবস্থান দীর্ঘ হলে এবং আপনাকে অসুস্থতার জন্য আবশ্যিকভাবে ছুটি নিতে হলে।

অনুগ্রহ করে নিচের পেজে যান, তবে এটি শুধু মাত্র জাপানি ভাষায় রয়েছে। এবং কোন বিষয়ে সন্দেহ থাকলে অভিবাসন সেবা এজেন্সিতে সরাসরি যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়ে নিন।

http://www.moj.go.jp/content/001319592.pdf
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

এ তথ্যগুলো জুনের ৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৬: জাপানে বসবাসের ‘অস্থায়ী দর্শনার্থী’ অধিবাসী মর্যাদার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও যদি কেউ দেশে ফিরে যেতে সক্ষম না হন তাহলে কি ঘটবে?

আমাদের এবারের প্রশ্নটি এসেছে জাপানে বসবাসরত বিদেশিদের কাছ থেকে। এক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন বর্ধিত করা হবে।

বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকটি ভিজিট করুন।

http://www.moj.go.jp/content/001316293.pdf
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

আমাদের পরবর্তী প্রশ্ন “ভিসার মেয়াদ যদি মার্চ এবং জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যায় তাহলে সেটা কি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিন মাস সময়ের জন্য বর্ধিত হয়ে যাবে?”

এর উত্তর হল ‘না’। তবে বিদেশি নাগরিকদের ভিসা নবায়নের আবেদনের প্রেক্ষিতে অধিবাসী মর্যাদা পরিবর্তন এবং অবস্থানের মেয়াদ বৃদ্ধি, উভয় ক্ষেত্রে তিন মাস বর্ধিত করা হচ্ছে। অভিবাসন কাউন্টারে ভিড় কমাতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যাদের ভিসার মেয়াদ চলতি বছরের মার্চ থেকে জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হয়েছে শুধুমাত্র তারাই এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আবেদন করার জন্য বর্ধিত সময় হিসেবে জাপানে অবস্থানের সময়কালের শেষ দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে। অন্যভাবে বলা যায়, ভিসার মেয়াদ যদি মে মাসের ১১ তারিখে শেষ হয়ে যায় তাহলে সময় বর্ধিত করার আবেদন করার জন্য আগস্ট মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে।

বহুভাষায় তথ্য জানতে নিচের লিংক ভিজিট করুন।

http://www.moj.go.jp/content/001316300.pdf
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে

এ তথ্যগুলো জুনের ৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

ভিসা আবেদন পদ্ধতির পরিবর্তন হতে পারে, বিশেষ করে বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে।

ব্যক্তিগত ঘটনার ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায়, তাই অনুগ্রহ করে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে অভিবাসন দপ্তরে যোগাযোগ করুন।

প্রশ্ন-৩৫: সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রা পর্যন্ত করোনাভাইরাস বেঁচে থাকে এবং রান্না করা খাবার কি একে মারতে পারে?

গবেষকরা বলেছেন যে নতুন করোনাভাইরাস ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে একদিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তবে ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এটি ৩০ মিনিটের মধ্যে মারা যায়।

তারা দেখেন যে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পাঁচ মিনিটের মধ্যেই একে আর সনাক্ত করা যায়না।

জাপান সোসাইটির সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রনের সুগাওয়ারা ইরিসা বলেছেন পর্যাপ্ত তাপমাত্রায় রান্না করা হলে ভাইরাস মরে যায় এবং গরম করা খাবার থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ায় এমন কোন নিশ্চিত খবর তাদের কাছে নেই।

এ তথ্যগুলো জুন মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩৪: বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করতে হিমশিম খেলে কী করণীয়?

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে যেসব লোকজন তাদের চাকরি হারিয়েছেন বা যাদের আয় হ্রাস পেয়েছে তারা বাড়ি ভাড়া পরিশোধের জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করতে পারেন।

পারিবারিক আয় এবং সঞ্চয়ের উপর ভিত্তি করে সহায়তা লাভের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হবে।

আর্থিক সহায়তা শুধুমাত্র বাড়ি ভাড়ার জন্য পাওয়া যাবে। গৃহ ঋণের জন্য নয়।

৩ মাসের বাড়ি ভাড়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে যদি শর্তাবলী পূরণ করা হয় তবে সর্বোচ্চ ৯ মাস পর্যন্ত এ সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।    

এ আর্থিক সহায়তা পুনরায় শোধ করতে হবে না।

আবেদন করার পূর্বে মিউনিসিপ্যাল সেলফ সাপোর্ট সেন্টারের সাথে ফোনের মাধ্যমে পরামর্শ করতে হবে। পরামর্শ শুধুমাত্র জাপানি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে।

সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিদিন শুধুমাত্র জাপানি ভাষায় কল সেন্টার থেকে সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ফোন নম্বর হলো- ০১২০-২৩-৫৫৭২।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

আরো তথ্যের জন্য, অনুগ্রহ করে ভিজিট করুন:
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে
ইংরেজি:
https://www.mhlw.go.jp/content/000630855.pdf

কোরীয়:
https://www.mhlw.go.jp/content/000630856.pdf

চাইনিজ:
https://www.mhlw.go.jp/content/000630857.pdf

ভিয়েতনামি:
https://www.mhlw.go.jp/content/000630861.pdf

পর্তুগীজ:
https://www.mhlw.go.jp/content/000630862.pdf

স্পেনীয়:
https://www.mhlw.go.jp/content/000630863.pdf

প্রশ্ন-৩৩: জাপানে করোনাভাইরাস আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?

করোনাভাইরাসের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার দরুণ যেসব পরিবার জীবনধারণের ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছেন তাদের জন্য প্রত্যেক জেলার সমাজ কল্যাণ কাউন্সিল একটি কল্যাণ তহবিল ঋণ কর্মসূচি চালু করেছে। এটি একটি ঋণ এবং অবশ্যই তা পরিশোধ করতে হবে।

অস্থায়ী কাজ বন্ধ থাকায় যেসব পরিবারের আয় হ্রাস পেয়েছে মূলত: তাদের জন্য “জরুরি ক্ষুদ্র আর্থিক তহবিল”। এখান থেকে ২ লক্ষ ইয়েন পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে।

যেসব পরিবারের সদস্যরা এখন কর্মহীন অথবা যাদের আয় হ্রাস পেয়েছে তাদের জন্য মূলত “সাধারণ সহায়তা তহবিল”।

দু’জন বা ততোধিক সদস্যের পরিবারের জন্য এক মাসে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ২ লক্ষ ইয়েন। একজন সদস্যের জন্য এ ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ ইয়েন।

নীতিগতভাবে ঋণের সময়সীমা ৩ মাসের মধ্যে থাকে।

এক্ষেত্রে যোগাযোগের জন্য কল সেন্টারে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ফোন করা যাবে, তবে সেবা পাওয়া যাবে শুধুমাত্র জাপানি ভাষায়। ফোন নম্বর হলো- ০১২০-৪৬-১৯৯৯(জাপানের ফোন নম্বর)।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

আরো তথ্যের জন্য:
*এনএইচকে ওয়ার্ল্ড-জাপান ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যেতে
শুধুমাত্র জাপানি:
https://www.mhlw.go.jp/content/000621849.pdf

ইংরেজি:
https://www.mhlw.go.jp/content/000621221.pdf

কোরীয়:
https://www.mhlw.go.jp/content/000621222.pdf

চাইনিজ (সরলীকৃত):
https://www.mhlw.go.jp/content/000621223.pdf

ভিয়েতনামি:
https://www.mhlw.go.jp/content/000621224.pdf

পর্তুগীজ:
https://www.mhlw.go.jp/content/000621225.pdf

স্পেনীয়:
https://www.mhlw.go.jp/content/000621226.pdf

প্রশ্ন-৩২: “পোষা প্রাণী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে কী করণীয়?”

গৃহপালিত বিড়ালের মাধ্যমে করোনাভাইরাস স্থানান্তরিত হয় এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর লোকজন এ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাচ্ছেন। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক কাওয়াওকা ইয়োশিহিরো এবং উইস্কন্সিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্যরা মিলে তিনটি বিড়ালকে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত করেন এবং প্রত্যেকটিকে আলাদা বাড়িতে অসংক্রমিত বিড়ালের সাথে রাখেন।

গবেষকরা জানান সংক্রমিত বিড়ালগুলোর মধ্যে কোন উপসর্গ দেখা যায়নি। তবে প্রত্যেকটি বিড়ালের নাকের সোয়াবে ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। তিনটি বিড়ালের দু’টির ক্ষেত্রে পরপর ৬ দিন ভাইরাস পরীক্ষায় পজেটিভ ফলাফল আসে।

দলটি জানায় তারা তিনটি অসংক্রমিত বিড়ালকে একই বাড়িতে ঐ তিনটি সংক্রমিত বিড়ালের সাথে রাখেন। তারপর ছয় দিন পর পরীক্ষা করে দেখা যায় যে ঐ তিনটি অসংক্রমিত বিড়ালও ভাইরাস পজিটিভ। যা নির্দেশ করে যে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

দলটি বলছে এ ফলাফল এটা নির্দেশ করে যে করোনাভাইরাস শ্বসনযন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুত বহুগুণে বৃদ্ধি পায় এবং বিড়ালের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

গবেষকরা বলেন যেহেতু ভাইরাসে সংক্রমিত বিড়ালের মধ্যে কোন উপসর্গ দেখা দেয় না এবং এটি তার মালিকের জানার অগোচরে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই গবেষকরা পোষা বিড়ালকে বাড়িতে রাখার জন্য পরামর্শ দেন।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৩১: খাবার বিস্বাদ লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিলে কী করণীয়?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
সাকামোতো বলেছেন যে প্রায় ৩০ শতাংশ বা তার কাছাকাছি করোনাভাইরাস রোগী খাবার বিস্বাদ লাগা বা খাবারের সুঘ্রাণ না পাবার মতো অভিজ্ঞতা হবার কথা বলেছেন। তবে অন্যান্য সংক্রমণ রোগে সংক্রমিত হওয়ার ক্ষেত্রেও একই ধরণের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কিছু সময় উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করার পর, অব্যাহতভাবে জ্বর বা শ্বাসকষ্ট থাকলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে হবে।

প্রশ্ন-৩০: মহামারীর মধ্যে শিশুদের বাইরে বন্ধুদের সাথে কাটানো কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। দেশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে কিছু প্রাথমিক এবং জুনিয়র হাই স্কুল তাদের খেলার মাঠ সময় কাটানোর জন্য শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। যদিও কিছু অভিভাবক দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার দরুণ সৃষ্ট চাপ কমাতে শিশুরা তাদের বন্ধুদের সাথে সময় কাটাক এটা চান, তবে এতে সংক্রমণের ঝুঁকি আছে কিনা তা ভেবেও তারা উদ্বিগ্ন।

সাকামোতো বলেছেন যদি অভিভাবকেরা কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখেন যেমন সময় কাটানোর জন্য যতটা সম্ভব শিশুদের সংখ্যা কম রাখা এবং অল্প সময়ের মধ্যে খেলা শেষ করার পাশাপাশি বাড়িতে ফিরলে তাদের হাত ধোয়ার কথা বলা তবে খুব বড় সমস্যা না হওয়ারই কথা।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৯: জাপান সরকার কিভাবে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার মানদন্ড পরিবর্তন করে নিয়েছে এবং কেন?

নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে শ্রোতাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন আমাদের বিশেষজ্ঞরা। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনগণের জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষার মানদন্ড সংশোধন করেছে।

পুরোনো মানদন্ডে বলা হয়েছিল যে যদি কোন ব্যক্তির চার দিন ধরে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার থেকে বেশি জ্বর থাকে তবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।

নতুন মানদন্ডে কোন নির্দিষ্ট তাপমাত্রার কথা বলা হয়নি। এর পরিবর্তে বলা হয়েছে যেসব ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ক্লান্তি, অথবা উচ্চ তাপমাত্রা এবং চারদিন বা তার বেশি সময় ধরে কাশি, জ্বর ও অন্যান্য ঠান্ডা জনিত মৃদু উপসর্গ রয়েছে তাদের চিকিৎসা সহায়তা চাইতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা এটা ভেবে উদ্বিগ্ন যে পুরোনো মানদন্ড খুবই সংক্ষিপ্ত ও কঠোর এবং এর ফলে খুবই কম সংখ্যক ব্যক্তি পরীক্ষার আওতায় আসছিল।  

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে প্রতিদিন ১৭ হাজারেরও বেশি পরীক্ষা করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে এ সংখ্যা থেকে তারা বেশ দূরে, প্রতিদিন প্রায় ৯ হাজার করে তারা পরীক্ষা করছে।

সেনদাই মেডিকেল সেন্টারের ভাইরাস গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক নিশিমুরা হিদেকাযু বলেছেন নতুন মানদন্ড অনেক সহায়ক হবে।

নিশিমুরা বলেন, নতুন মানদন্ড ডাক্তারদের যেসব নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা গুরুতর নয় কিন্তু হতে পারে সেসব রোগীদের উপেক্ষা করা থেকে বিরত করবে।

তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে অনেক পরীক্ষা না করারও ঝুঁকি থেকে যায়। বিশেষ করে টোকিও’র মত শহুরে এলাকায় যেখানে সংক্রমিত লোকের সংখ্যা অনেক। তাহলে বোঝা যাচ্ছে কোন রোগীর পরীক্ষা করার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা আগের যেকোন সময়ের চেয়ে নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৮: বাড়ির বাইরে হাঁটতে বের হওয়া বা জগিং করতে যাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে শিনযো এক সংবাদ সম্মেলনে যখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন তখন অপ্রয়োজনে এবং জরুরি নয় এমন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে জনগনের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন। আবে আরো বলেছেন যে বাইরে হাঁটতে যাওয়া বা জগিং করতে যাওয়াতে কোন সমস্যা নেই, যা আমাদের কাছে শুনতে পরস্পর বিপরীতধর্মী কথা বলে মনে হয়। তবে, সাকামোতো বলেন যে আমাদের জরুরি অবস্থা ঘোষণার মূল লক্ষ্য ভুলে গেলে চলবে না। আর তা হলো অপরের সাথে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা। যদি করো সাথে কথা বলতে বলতে জগিং করা হয় তবে মুখ থেকে জলীয় কণা বের হয়ে পরস্পরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা এড়িয়ে চলা উচিত। তবে, যেখানে লোকসমাগম নেই সেখানে বাইরে একা জগিং করলে বড় ধরণের ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই।  

এ তথ্যগুলো মে মাসের ১২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-২৭: সুপারমার্কেটে কেনাকাটার সময় আমাদের কেমন সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
সাকামোতো বলেছেন যে সুপারমার্কেটে প্রবেশের পূর্বে আমাদের প্রবেশপথে স্থাপন করা জীবানুনাশক তরল দিয়ে হাতের তালু, আঙ্গুলের নখ এবং কব্জি সহ হাত জীবাণুমুক্ত করতে ভুলে গেলে চলবে না। তিনি আরো বলেন যে যখন ভীড় কম থাকে তখন সেখানে যাওয়াটা বাঞ্ছনীয়।

প্রশ্ন-২৫: গলফ মাঠে আমরা কিভাবে সাবধান থাকব?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। সাকামোতো বলেছেন যে, কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন যে বহিরাঙ্গন খেলা হওয়ার দরুণ গলফ খেলায় কোন ঝুঁকি নেই। তবে, অনেক লোক একসাথে জমায়েত হলে গলফ খেলায়ও অনেক ঝুঁকি রয়েছে। গলফের মাঠ একটি উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ এবং এটি বদ্ধ জায়গায় খেলা হয় না। তবে, খেলার ভেন্যুর লকার রুম অথবা খাবারের ঘরে অনেক লোক সমাগম হলে তা থেকে উচ্চ ঝুঁকি দেখা দেয়। এছাড়াও অনেক এবং অপরিচিত লোক স্পর্শ করা স্থান হাত দিয়ে ধরার পর সেই হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করার মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়েও আমাদের সাবধান হতে হবে।

প্রশ্ন-২৪: যৌথ ভাড়া বাড়িতে থাকার সময় কেউ ভাইরাসে সংক্রমিত হলে তখন পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিতে হবে?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। যৌথ ভাড়া বাড়িতে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির আলাদা শোওয়ার ঘর থাকলেও তারা একই রান্নাঘর এবং টয়লেট ব্যবহার করে। সাকামোতো বলেছেন যে এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করা উচিত তা হলো যেসব জিনিস ঘন ঘন ধরা হয় বা ব্যবহার করা হয় তা জীবানুমুক্ত করতে হবে। যেমন- জলের কল বা বৈদ্যুতিক বাল্বের সুইচ তরল ডিটারজেন্ট বা যদি অ্যালকোহল নির্ভর জীবানুনাশক থাকে তা দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

প্রশ্ন-২২: একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হয় এমন মাস্ক এবং পরিস্কার করা যায় ও বারবার ব্যবহার করা যায় এমন কাপড়ের তৈরি মাস্কের কার্যকারিতা সম্পর্কে।

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। সাকামোতো বলেছেন যে ভাইরাসের বিরুদ্ধে মাস্ক কতটা কার্যকর তা নিয়ে এখনও বিভিন্ন পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যখন কেউ কাশি বা হাঁচি দেয় তখন তা থেকে বেরিয়ে আসা জলীয় কণা রুখতে একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত যেকোন ধরণের মাস্ক কার্যকর। সাকামোতো বলেন তবে এর কার্যকারিতা যে একেবারে নিখুঁত তা নয় এবং অল্প পরিমাণ জলীয় কণা ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই, কাশি এবং হাঁচি হলে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকা নিরাপদ।

প্রশ্ন-২৩: আমাদের এবারের প্রশ্ন এলিভেটর ব্যবহারের সময় কোন বিষয়গুলো সম্পর্কে লক্ষ্য রাখা উচিত?

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। সাকামোতো বলেছেন যে যেহেতু আমরা ১০ তলা বা ২০ তলা বিল্ডিং-এ উঠার সময় সিঁড়ি ব্যবহার করতে পারি না। তাই সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের অনেক লোকের সাথে এলিভেটর ব্যবহার করা এবং এলিভেটরে অন্যদের সাথে কথা বলা পরিহার করা উচিত। এ ধরণের পদক্ষেপ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। সাকামোতো আরো বলেন যে, যে হাত দিয়ে এলিভেটরের বাটন চাপ দেয়া হয়েছিল সে হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করা উচিত না। বাটন চাপ দেয়ার পর যতটা দ্রুত সম্ভব সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা উচিত। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন-২১: করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়ার পরও যেসব রোগীদের কোন উপসর্গ দেখা যায় না তাদের সম্পর্কে।

জাপানের সেন্ট লিউকস আন্তর্জাতিক হাসপাতালের একজন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ সাকামোতো ফুমিয়ে নতুন করোনাভাইরাস সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তর দিবেন। সাকামোতো বলেছেন যে কিছু রোগীর কোন উপসর্গ দেখা দেওয়া ছাড়াই নিজে থেকেই রোগমুক্তি ঘটে। চীনের একদল গবেষকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে জরিপ চালানো অর্ধেক রোগীদের কোন উপসর্গ দেখা যায়নি বা খুব মৃদু উপসর্গ দেখা গেছে। যাহোক, সাকামোতো বলেছেন যে রোগীদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে কারণ তাদের কেউ কেউ ক্রমান্বয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।

প্রশ্ন-২০: স্যানিটাইজারের পরিবর্তে কি শক্তিশালী অ্যালকোহল ব্যবহার করা যাবে?

করোনাভাইরাস মহামারীর দরুন সরবরাহে স্বল্পতা মেটাতে জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শক্তিশালী অ্যালকোহল পানীয়কে স্যানিটাইজারের পরিবর্তে ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার সংগ্রহে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং কেয়ার হোমগুলো হিমশিম খাওয়ার প্রেক্ষাপটে তাদের আহ্বানে এ সিদ্ধান্ত এলো।

এপ্রিল মাসে মন্ত্রণালয় জানায় এসব প্রতিষ্ঠান যদি যথাযথ স্যানিটাইজার না পায় তবে তারা বেভারেজ কোম্পানিগুলোর উৎপাদিত উচ্চ অ্যালকোহল সমৃদ্ধ পানীয় ব্যবহার করতে পারে। ৭০ থেকে ৮৩ শতাংশ অ্যালকোহল সমৃদ্ধ পানীয় ব্যবহার করা যেতে পারে। এই তালিকায় কিছু ভোদকা নামের অ্যালকোহলও পড়ে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নির্দেশ করেছেন যে উচ্চ অ্যালকোহল সমৃদ্ধ পানীয় যেগুলো নিম্ন স্যানিটাইজার সম্পন্ন সেগুলো ব্যবহারের সময় মিশিয়ে নেয়া উচিত।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্যানিটাইজারের স্বল্পতায় একটি ব্যতিক্রম পদক্ষেপ হতে পারে এটি। তারা সংক্রমণের বিস্তার রোধে জনগণকে বাড়িতে সতর্কতার সাথে হাত ধোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৮: “জরুরি অবস্থার ঘোষণা জাপানের জনগণের জীবনে কি প্রভাব ফেলছে?” প্রশ্নের উত্তরের দ্বিতীয় অংশ আমরা এখানে তুলে ধরছি।

ফেসমাস্ক প্রসঙ্গ;

জাপানে ফেসমাস্ক পাওয়া ক্রমেই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিশেষ-পদক্ষেপ আইনের ওপর ভিত্তি করে গভর্নর স্থানীয় সরকারের কাছে মাস্ক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির অনুরোধ করতে পারেন। যদি এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে এ কাজ চালাতে সহযোগিতা না করে তবে গভর্নর এ ধরণের পণ্য বাজেয়াপ্ত করতে পারেন।

বৈশ্বিক তেল সংকটে সাড়া দিয়ে জনগণের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে জারি করা বিশেষ আইন,১৯৭৩ এর জরুরি পদক্ষেপের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে হোক্কাইদো’র জনগণ এবং চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে মাস্ক কিনে পাঠিয়ে দিয়েছে।

জরুরি অবস্থার ঘোষণা গভর্নরদের কিছু আইনগত বলবৎ পদক্ষেপও নেয়ার অধিকার দিয়েছে। সাময়িক চিকিৎসা স্থাপনা তৈরির জন্য গভর্নর জমি বা ভবনের মালিকের অনুমতি ব্যতিরেকে তা গ্রহণ করতে পারবেন। তারা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ওষুধ সরবরাহ, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুত করতে আদেশ দিতে পারেন। যদি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ আদেশ না মানে এবং গোপন করে অথবা পণ্য বাতিল করে তবে উদাহরণস্বরূপ তাদের ছয় মাস পর্যন্ত জেল অথবা ৩ লক্ষ ইয়েন বা প্রায় ২,৮০০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা দেয়া হতে পারে। শুধুমাত্র এই দু’টো পদক্ষেপের ক্ষেত্রেই জরিমানার বিধান রয়েছে।

জাপানের জরুরি অবস্থার ঘোষণায় কিছু জোরপূর্বক বলবৎ করা যাবে এমন পদক্ষেপ রয়েছে এবং বিদেশে জারি করা লকডাউনের মত এটি নয়। তবে এ ঘোষণা জনগণ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ভাইরাসের বিস্তার রোধে প্রচেষ্টা চালাতে সহায়তা করার আশা করে।

জরুরি অবস্থা কিভাবে চিকিৎসা সেবাকে প্রভাবিত করছে?

বন্ধের জন্য গভর্নর অনুরোধ জানাতে পারে এমন স্থাপনার আওতায় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই সেগুলো খোলা রয়েছে। উপরন্তু চিকিৎসা স্থাপনায় যাওয়া আবশ্যকীয় বাইরে যাওয়া হিসেবে বিবেচিত, এমনকি বাড়িতে থাকার অনুরোধের মধ্যেও এটি সীমাবদ্ধ নয়। তবে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সর্বোচ্চ সময় স্থানীয় সরকার আক্রান্তদের প্রধানত করোনাভাইরাসের রোগীদের গ্রহণ করে এমন স্থাপনাতে যেতে এবং অন্যান্য রোগীদের ভিন্ন স্থাপনায় যাওয়ার মত পদক্ষেপ নিতে পারবে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনকে সহজ করতে অনলাইনে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার সুবিধার পরিকল্পনাও করছে। বর্তমানে ডাক্তারের সাথে একবার সশরীরে সাক্ষাতের পর অনলাইন পরামর্শ করা যাচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই চিকিৎসা অনলাইনে করার অনুমতি দিবে।

নার্সিং সেবা কিভাবে প্রভাবিত হচ্ছে?

জরুরি অবস্থা ঘোষণার মধ্যে জেলার গভর্নররা দিবাযত্ন কেন্দ্র এবং স্বল্প সময় সেবা দেয়া নার্সিং সেবা স্থাপনাগুলোকে বন্ধ করে দিতে এবং কার্যক্রম সীমিত করতে অনুরোধ জানাতে পারবে। যেসব স্থাপনা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তারা তাদের সেবাপ্রদানকারীকে সুবিধা গ্রহণকারীর বাড়িতে যেয়ে সেবা প্রদানের মত বিকল্প পন্থায় প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান চালিয়ে যেতে বলতে পারবে। গভর্নররা আবাসিক সেবা স্থাপনাসমূহ এবং বাড়িতে সেবা প্রদান বন্ধ করতে বলতে পারবেন না। এসব সেবা প্রদানকারীকে সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের সেবা চালিয়ে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের ক্ষেত্রে কি হবে?

ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে যদি প্রয়োজন হয় গভর্নর শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের ব্যবহার সীমিত করতে পারেন, সম্ভব হলে এ ধরণের স্থাপনা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে পারেন।

এমনকি গভর্নরের অনুরোধ ছাড়াও মনোনীত এলাকার প্রত্যেক মিউনিসিপালিটি তাদের গ্রহণ করা শিশুদের সংখ্যা হ্রাস করার প্রয়োজনীয়তাও বিবেচনা করতে পারে। অভিভাবকরা যারা বাড়িতে থেকে কাজ করতে পারছেন বা ছুটি নিয়েছেন তাদেরকে দিবাযত্ন কেন্দ্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হবে।

যদি কোন শিশু বা সেবা প্রদানকারী আক্রান্ত হন অথবা সংশ্লিষ্ট এলাকায় যদি সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায় তবে মিউনিসিপালিটির সাময়িকভাবে স্থাপনাটি বন্ধ করে দেবার সুযোগ রয়েছে। অপরদিকে, মিউনিসিপালিটি চিকিৎসাকর্মী এবং অন্যান্য লোকজন যারা সমাজ সচল রাখতে অপরিহার্য পাশাপাশি একা থাকা অভিভাবক যারা কাজ থেকে ছুটি পাননি তাদের শিশুদের সেবা দেয়ার জন্য অন্য উপায় বিবেচনা করছে।

এরপর শ্রম মান পরিদর্শন দপ্তর এবং চাকরি নির্ণয় কেন্দ্র;

নীতিগতভাবে, চাকরি সম্পর্কিত বিষয়সমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলো স্বাভাবিক সময়ের মত খোলা থাকবে। অপরদিকে প্রত্যেক এলাকার সংক্রমণের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে চাকরি নির্ণয় কেন্দ্রগুলো তাদের কার্যক্রম সীমিত করতে পারে।

গণপরিবহন সেবার ক্ষেত্রে কি হবে?

প্রধানমন্ত্রী আবে শিনযো জরুরি অবস্থা ঘোষণার আগে ৭ই এপ্রিল পরিবহনমন্ত্রী কাযুইয়োশি আকাবা সাংবাদিকদের বলেন যে এমনকি যদি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করাও হয় তারপরেও গণপরিবহন এবং প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ সচল রাখা প্রয়োজন হবে।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ৮ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

জরুরি অবস্থা ঘোষণার মধ্যে জীবন কেমন চলছে তা নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আরো প্রশ্নের উত্তর দিব।

প্রশ্ন-১৭: “জরুরি অবস্থার ঘোষণা জাপানের জনগণের জীবনে কি প্রভাব ফেলছে”? প্রশ্নটির উত্তরের প্রথম অংশ নিচে দেয়া হলো।

প্রথমত: বাইরে বের হওয়া;

একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনাবশ্যক কাজে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দিষ্ট এলাকার লোকজনকে ঐ এলাকার মনোনীত গভর্নররা আহ্বান জানাতে পারবেন। হাসপাতালে যাওয়া, মুদি দোকানে কেনাকাটা এবং কর্মক্ষেত্রে গমন এর আওতার বাইরে থাকবে। এই অনুরোধ বাধ্যতামূলক নয়, তবে নাগরিকেরা সহযোগিতা করতে এবং সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে বাধ্য থাকবে।

এরপর স্কুল প্রসঙ্গ;

গভর্নরেরা স্কুল বন্ধ রাখতে আহ্বান জানাতে বা আদেশ করতে পারবেন। এটি গত মাসে কার্যকর হওয়া বিশেষ আইনের ওপর ভিত্তি করে। গভর্নরদের জেলার হাইস্কুলগুলো বন্ধ রাখার কর্তৃত্ব রয়েছে। তারা মিউনিসিপালিটির এক্তিয়ারভুক্ত বেসরকারি স্কুল এবং প্রাথমিক ও জুনিয়র হাইস্কুলগুলো বন্ধ রাখার জন্য বলতে পারবেন। স্কুলগুলো না মানলে তারা তা করতে আদেশ দিতে পারবেন তবে এর জন্য কোন শাস্তি হবে না।

বিভিন্ন স্থাপনা এবং দোকানের ক্ষেত্রে;

আইনটি ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে স্থাপনাসমূহের ব্যবহার কমাতে গভর্নরদের অনুরোধ জানানোর অধিকার দিয়েছে। তারা ১,০০০ বর্গমিটার বা তার চেয়ে বেশি আয়তনের যেসব বড় স্থাপনা রয়েছে তাদের কার্যক্রম সীমিত বা বন্ধ করতেও বলতে পারবেন। এর থেকে ছোট আয়তনের স্থাপনার ক্ষেত্রেও প্রয়োজন হলে একই ধরণের আদেশ দিতে পারবেন। এর আওতায় আসা স্থাপনাগুলোর তালিকায় রয়েছে: থিয়েটার এবং সিনেমা হল, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের ভেন্যু, ডিপার্টমেন্ট স্টোর, সুপারমার্কেট, হোটেল ও সরাইখানা, জিম ও সুইমিং পুল, জাদুঘর, লাইব্রেরি, নৈশক্লাব, ড্রাইভিং স্কুল এবং কোচিং সেন্টার।

সুপারমার্কেটগুলো খাবার, ওষুধ এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট পণ্যের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের শাখাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমোদিত। যখন কিছু স্থাপনা এই অনুরোধ মানবে না গভর্নররা তা করার আদেশ দিতে পারবেন।

তারা এ আদেশ দেয়া স্থাপনা সমূহের নাম প্রকাশ করতে পারবেন।

বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং মেলা প্রসঙ্গে;

নতুন আইনের আওতায়, গভর্নররা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের অনুষ্ঠান না আয়োজন করার জন্য বলতে পারবেন। যদি কোন আয়োজক তা না মানেন তবে তারা আদেশ দিয়ে তা বন্ধ করতে পারবেন। গভর্নররা আদেশ দেয়া আয়োজকদের নাম জেলার ওয়েবসাইট অথবা অন্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবেন।

এবং প্রয়োজনীয় ইউটিলিটি বা সেবা সম্বন্ধীয়;

প্রয়োজনীয় ইউটিলিটির ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার ঘোষণা কোন প্রভাব ফেলবে না। বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পানির সেবাদাতাদের সার্বক্ষণিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে পদক্ষেপের বাস্তবায়ন করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

পরিবহন, টেলিফোন, ইন্টারনেট এবং ডাক সেবা পরিচালনাকারীদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আইনটি গণপরিবহনের চলাচল সীমিত রাখতে বলতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী এবং গভর্নররা ন্যুনতম প্রয়োজন মেটাতে পরিবহন ব্যবস্থা সচল রাখতে পদক্ষেপ নিতে পারবে।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

জরুরি অবস্থা ঘোষণার মধ্যে জীবন কেমন চলছে তা নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আরো প্রশ্নের উত্তর দিব।

প্রশ্ন-১৬: "ফ্লু প্রতিরোধী ওষুধ এভিগান কতটা কার্যকরী?"

ছয় বছর আগে জাপানের একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধী ওষুধ এভিগানের উন্নয়ন ঘটায় যা ফাভিপিরাভির নামেও পরিচিত। ল্যাবরেটরিতে প্রানীর ওপর চালানো পরীক্ষায় ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাওয়ায় জাপান সরকার গর্ভবতী নারীসহ কিছু লোকের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার অনুমোদন করেনি। এভিগান এখন শুধুমাত্র সরকার অনুমোদিত কিছু নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।

এখন পর্যন্ত নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় কার্যকরীভাবে অন্য কোন ওষুধ কাজ করেনি তবে নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এভিগান কার্যকরী হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতই সংখ্যা বৃদ্ধি করে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এই ওষুধের প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে।

চীন সরকার দুটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে চালানো ক্লিনিক্যাল গবেষণার ফলাফল ঘোষণা করেছে। এর একটিতে গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন শহরের ৮০ ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল। যাদের এভিগান দেয়া হয়নি তাদের ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষায় ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক হতে মধ্যবর্তী সময় ছিল ১১ দিন। অপরদিকে যাদের এ ওষুধ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যবর্তী সময় ছিল ৪ দিন। এক্স-রে করার পর দেখা যায় যেসব রোগীদের এভিগান দেয়া হয়নি তাদের ফুসফুসের অবস্থার ৬২ শতাংশ উন্নতি ঘটেছিল, অপরদিকে যাদের এভিগান দেয়া হয় তাদের ৯১ শতাংশের উন্নতি হয়।

চীন সরকার ঘোষণা করে যে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় একটি ওষুধ হিসেবে এভিগানকে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে এই ফলাফল উৎসাহিত করছে।

জাপানে মার্চ মাস থেকে আইচি জেলার ফুজিতা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মত প্রতিষ্ঠানগুলোতে মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়া বা উপসর্গবিহীন আক্রান্ত ৮০ রোগীকে অন্তর্ভুক্ত করে ক্লিনিক্যাল গবেষণা চালানো হচ্ছে। গবেষকরা ভাইরাসের পরিমাণ কমাতে কতটা ওষুধ লাগবে তা তুলনা করে দেখছেন।

এভিগানের প্রস্তুতকারক জাপানের কোম্পানিটি ঘোষণা করেছে যে সরকারের অনুমোদন পেতে তারা ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা শুরু করেছে। ওষুধটির কার্যকারীতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে কোম্পানিটি সরকারের কাছে অনুমোদনের আবেদন করার পরিকল্পনা করছে।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ৬ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৫: চীনের উহান শহর, ইতালি এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশে কি করোনাভাইরাস পরিবর্তিত হচ্ছে?

মার্চ মাসের শুরুতে চীনের একটি গবেষক দল সারা বিশ্বের প্রায় ১০০’রও বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থেকে নেয়া করোনাভাইরাসের জিন পরীক্ষা করে দেখেছেন। জিনের বৈশিষ্ট্যসূচক পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে দলটি এল-টাইপ এবং এস-টাইপ এই দু’ধরণের জিন পায়।

দলটি দেখতে পায় যে বাঁদুড়ের দেহ থেকে পাওয়া করোনাভাইরাসের জিনের সাথে এস-টাইপের যথেষ্ট মিল রয়েছে। এল-টাইপ ভাইরাস ব্যাপকভাবে পাওয়া গেছে ইউরোপীয় দেশগুলোর রোগীদের মধ্যে এবং ধারণা করা হচ্ছে যে তুলনামূলকভাবে এটি এস-টাইপ থেকে নতুন ধরণের।

ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিয়ে গবেষণা করা রিৎসুমেইকান বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ইতো মাসাহিরো জানান করোনাভাইরাস সহজে পরিবর্তিত হতে পারে এবং ধারণা করা হচ্ছে যে অনেক মানুষকে সংক্রমিত করার মধ্য দিয়ে এটি পরিবর্তিত হচ্ছে এবং ভাইরাসের বিস্তারের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।

এদিকে, আরো সহজে বিস্তারের জন্য ভাইরাসটির পরিবর্তনের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ইতো বলেন ভাইরাসটি এখনো এমন পর্যায়ে রয়েছে যেখানে বিবেচনায় নেওয়ার মতো জিনের পরিবর্তন ঘটায়নি। তিনি বলেন এমনকি যদিও এল-টাইপ এবং এস-টাইপ জিনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে তথাপি কোন ধরণটি বেশি মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করে সে বিষয়ে এখনো তথ্যের ঘাটতি রয়েছে। ইতো বলেন যদিও দেশভেদে রোগের প্রবলতা এবং মৃত্যুর হার ভিন্ন তারপরেও ধারণা করা হচ্ছে যে যেকোন দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অনুপাত, সংস্কৃতি এবং খাদ্যাভাসসহ জনগণ নিজেরাই এই ভিন্নতার সৃষ্টি করছে।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ৩ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৪: করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হবার পর তরুণরা কি গুরুতর অসুস্থ হয়?

বিশেষজ্ঞরা সাধারণত বলেন যে বয়স্ক ব্যক্তিরা এবং যারা আগে থেকেই কোন রোগে আক্রান্ত তারা আক্রান্ত হলে তাদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়। তবে গতমাসে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায় ব্রিটেনে একজন ২১ বছর বয়সী তরুণী এবং ফ্রান্সের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী আক্রান্ত হবার পর মারা যান, যাদের দু’জনেরই পূর্বে কোন গুরুতর শারীরিক অসুস্থতা ছিল না। সাম্প্রতিক সংক্রমণের ঘটনাগুলো থেকে দেখা যায় যে কিছু কম বয়সীরাও মারাত্মক অসুস্থ হতে পারেন।

জাপানেও তুলনামূলকভাবে তরুণ বয়সীদের গুরুতর অসুস্থ হতে দেখা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার জাতীয় কেন্দ্রের সাতোশি কুৎসুনা জানান তিনি চিকিৎসা প্রদান করা ৩০ জনেরও বেশি রোগীর মধ্যে ৪০ এর কোঠার প্রথমার্ধে বয়সী একজনের পূর্বে কোন রোগ না থাকলেও গুরুতর লক্ষণ দেখা যায়।

কুৎসুনা বলেন ঐ ব্যক্তির প্রথম কয়েকদিন শুধুমাত্র জ্বর এবং কাশি থাকলেও এক সপ্তাহ পর তার মারাত্মক নিউমোনিয়া দেখা যায় এবং দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে রেসপিরেটরের প্রয়োজন হয়। তিনি জানান ঐ ব্যক্তি পরে আরোগ্য লাভ করেন।

কুৎসুনা বলেন যে তরুণদের এটা ভাবা উচিৎ নয় যে তারা সুস্থ থাকবেন কারণ তারাও মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারেন।

৫০ এর নীচের বয়সী অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে জানা যায় ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সী আক্রান্তদের দুই থেকে চার শতাংশ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছে।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ২ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১৩: ২০০৩ সালের সার্স রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় শোনা গিয়েছিল যে একটি ড্রেনের পাইপের ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে আসা বর্জ্যপানির মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছিল। সার্স করোনাভাইরাসের সঙ্গে নতুন প্রজাতির এই করোনাভাইরাসের মিল থাকার কথা বলা হচ্ছে। তাহলে সেরকম কোন ঘটনা কি নতুন করোনাভাইরাসের মাধ্যমেও ঘটতে পারে?

নতুন এই ভাইরাস এবং সার্স ভাইরাস একই করোনাভাইরাস পরিবারভুক্ত। সার্স সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস শুধুমাত্র গলা ও ফুসফুসেই নয় বরং ইন্টেস্টাইনেও এর সংখ্যা বৃদ্ধি করে বলে জানা গেছে। ২০০৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে যখন সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল তখন হংকং-এর এক কন্ডোমিনিয়ামে গণসংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। সন্দেহ করা হয় যে পুরাতন ড্রেনপাইপের ছিদ্র থেকে ভাইরাস থাকা জলীয় অংশ বেরিয়ে আসার কারণে সেই গণসংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল।

তোহোকু মেডিকেল ও ফার্মাসিউটিকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাকু মিৎসুও, যিনি সংক্রমণ প্রতিরোধী পদক্ষেপের একজন বিশেষজ্ঞ, উল্লেখ করেন যে তুলনামূলকভাবে উচ্চ মাত্রার স্বাস্থ্যসম্মত অবস্থা থাকা দেশগুলোতে ড্রেনের পাইপের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি কম। তবে তিনি বলেন, ভাইরাসের পক্ষে টয়লেটের উপরিতল ও আশেপাশের স্থানে লেগে থাকা সম্ভব এবং আপনি ভাইরাস লেগে থাকা স্থানে হাত দিয়ে স্পর্শ করার মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারেন। তিনি বলেন, লোকজনের উচিত হবে ফ্লাশ করার আগে টয়লেটের ঢাকনা বন্ধ করে নেয়া এবং টয়লেট ব্যবহার করার পরে হাত খুব ভালো করে ধুয়ে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, লোকজনকে পানির কল, বেসিন এবং দরজার নব ভালো করে জীবাণুমুক্ত করে নেয়ার মত বিভিন্ন দৈনন্দিন জীবনের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে অবশ্যই কাজ করতে হবে।

এ তথ্যগুলো এপ্রিলের ১ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-১১: সাবান দিয়ে জীবাণুনাশ করলে কি সেটা অ্যালকোহল ব্যবহারের মতই কার্যকর হবে?

টোকিও’র সেন্ট লুক’স আন্তর্জাতিক হাসপাতালের সাকামোতো ফুমিএ একজন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত সাবান কার্যকরী।

সাকামোতো বলেন, সাবানে সাধারণত সার্ফেক্টেন্ট থাকে যা করোনাভাইরাসের উপরিভাগে থাকা লিপিড স্তরকে ধ্বংস করতে পারে। তিনি বলেন, এর অর্থ হল একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত ভাইরাসকে ধ্বংস করা যায়।

সাকামোতো বলেন, অ্যালকোহলও কার্যকর, তবে আপনার হাত যদি নোংরা থাকে সেক্ষেত্রে অনেক সময় জীবাণুনাশকের জন্য সংক্রামকের ভেতরে যাওয়া কঠিন হয়ে পরে।

সাকামোতো লোকজনকে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য আহ্বান জানান।

প্রশ্ন-১০: কোন অবস্থায় আমরা বলতে পারি যে সংক্রমণের সমাপ্তি ঘটেছে?

শিগেরু ওমি হলেন নতুন করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সরকারি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের ভাইস চেয়ার এবং জাপান কমিউনিটি স্বাস্থ্য সেবা সংস্থার প্রেসিডেন্ট। তিনি এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় সংক্রামক রোগ মোকাবিলায় নেয়া পদক্ষেপের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, সংক্রমণের সমাপ্তি ঘটার অর্থ হচ্ছে সংক্রমণ শৃংখল থেমে গেছে এবং আর কোন সংক্রমিত ব্যক্তি নেই।

স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সমাপ্তির ঘোষণা দিতে পারে যদি ডব্লিউএইচও’র নির্ধারিত মানের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোন নতুন সংক্রমণ ঘটেনি বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

উদাহরণস্বরূপ, ২০০৩ সালে সার্স প্রধানত চীন ও এশিয়ার অন্যান্য অংশে বিস্তার লাভ করেছিল। ডব্লিউএইচও প্রথম সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার আট মাস পরে এর সমাপ্তি ঘোষণা করেছিল।

অপরদিকে, লোকজনকে বাইরে বের হতে নিষেধ করার মত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে কোন সুনির্দিষ্ট এলাকা বা দেশে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংক্রমণের বিস্তার হয়তো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়।

তবে, সেই এলাকার বাইরে থেকে ভাইরাস এসে আবারও সেখানে সংক্রমণের বিস্তার ঘটার সম্ভাবনা থাকে। যেমন- মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা শীতকালে বিস্তার লাভ করে এবং সাময়িকভাবে কমে যায় কিন্তু এখন পর্যন্ত এর সমাপ্তি ঘটেনি।

সংক্রমণের বিস্তার ও জটিল আকারে রুপ নেয়া ঠেকাতে টিকা এবং ওষুধ কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে ওমি বলেন, টিকা ও ওষুধের সজলভ্যতা এবং সংক্রমণের সমাপ্তি ঘটবে কিনা – এ দুটো ভিন্ন বিষয়।

ওমি বলেন, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সংক্রমণের পরিপূর্ণ সমাপ্তিকে লক্ষ্য ধরে সংক্রমণ রোধ করার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট থাকবে।

এ তথ্যগুলো মার্চের ২৭ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৮: আমাদের এবারের প্রশ্ন এসেছে ইন্দোনেশিয়ার শ্রোতা নুরদিয়ান শিয়াহ’র কাছ থেকে। তিনি প্রশ্ন করেছেন জাপান কি করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কোন কার্যকরী ওষুধ বের করতে পেরেছে?

দু:খজনক হলেও সত্যি যে ইনফ্লুয়েঞ্জা চিকিৎসায় যেমন তামিফ্লু এবং জোফ্লুযা ব্যবহার করা হয় তেমন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোন ওষুধ এখনো বের করা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য দেশের মতো, জাপানের চিকিৎসকরাও লক্ষণের ওপর নজর রেখে চিকিৎসা চালাচ্ছেন। যেমন রোগীকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা এবং পানিশূন্যতার জন্য শরীরে স্যালাইন দেয়া।

যদিও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোন ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি, তবে জাপান এবং বিশ্বজুড়ে ডাক্তারেরা এর চিকিৎসায় কাজ করতে পারে ভেবে বিদ্যমান ওষুধগুলো ব্যবহার করছেন।

এর একটি হচ্ছে ছয় বছর আগে জাপানের একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির উদ্ভাবিত ফ্লু প্রতিরোধী ওষুধ এভিগান। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসায় এটি কার্যকর হয়েছে।

জাপানের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার জাতীয় কেন্দ্র জানিয়েছে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর ক্ষেত্রে এইডস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি এন্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করেছে। কেন্দ্রটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন রোগীর জ্বর নেমে গিয়েছিল এবং ক্লান্তিবোধ ও শ্বাসকষ্টের উন্নতি হয়েছিল।

বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী চিকিৎসা বের করার চেষ্টা চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রের গবেষকরাসহ গবেষকদের একটি দল করোনাভাইরাসের কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া এক ব্যক্তির ওপর ইবোলা চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি এন্টিভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করার কথা জানিয়েছেন। গবেষকরা বলেছেন ওষুধটি প্রয়োগ করার পর ঐ ব্যক্তির দেখা দেওয়া লক্ষণসমূহের উন্নতি হতে থাকে। তারা জানান তাকে আর অক্সিজেন দেবার প্রয়োজন হয়নি এবং তার জ্বর নেমে গিয়েছিল।

থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ফ্লু এবং এইডস্‌ রোগে ব্যবহৃত ওষুধ একত্রে ব্যবহারের ফলে এক রোগীর অবস্থার উন্নতি হয়েছিল এবং পরে তিনি করোনাভাইরাস মুক্ত হন।

তবে প্রতিক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ওষুধগুলোর নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা পরীক্ষায় পুনরায় ক্লিনিক্যাল গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

এ তথ্যগুলো মার্চের ২৫ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৭: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুদের মধ্যে কি মারাত্মক লক্ষণ দেখা দেয়?

নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সময় শিশুদের মধ্যে মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিয়েছিল এমন কোন তথ্য চীন থেকে পাওয়া যায়নি।

চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রের একটি গবেষক দল বিশ্লেষণ করেছেন যে ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত ৪৪,৬৭২ জনের মধ্যে নয় বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী কোন শিশু সংক্রমণে মারা যায়নি। রোগীদের মধ্যে কিশোর বয়সী মাত্র একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

উহান বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের একদল গবেষক জানিয়েছেন চীনের মূল ভূখন্ডে ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখের মধ্যে এক মাস থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। তাদের কেউই গুরুতর অসুস্থ হয়নি।

শিশুদের সংক্রামক ব্যাধির একজন বিশেষজ্ঞ হলেন আইচি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ৎসুনেও মোরিশিমা। মোরিশিমা জানান কিছু ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের বজায় থাকা প্রজাতির সাথে নতুন ভাইরাসের মিল রয়েছে, যারা প্রায়ই সাধারণ সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হন তাদের এর প্রতিরোধক ক্ষমতা থাকতে পারে।

অধ্যাপক আরও জানান যে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে কারণ সংক্রমণ দ্রুত স্কুল এবং শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন শিশুরা যাতে নিয়মিত তাদের হাত পরিস্কার করে এবং তাদের থাকার কক্ষে যাতে যথেষ্ট বায়ু চলাচল করে তা অভিভাবকদের নিশ্চিত করতে হবে।

এ তথ্যগুলো মার্চের ২৪ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৬: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর কাদের মধ্যে গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগসহ এমন রোগ রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয় তাদের অনেকের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

এটা নিশ্চিত যে যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের শুধুমাত্র নতুন করোনাভাইরাস নয় বরং মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার মত সাধারণ সংক্রমণের থেকেও সাবধান হতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ রয়েছে, যারা বাতসহ অন্যান্য রোগের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করার ওষুধ গ্রহণ করছেন এবং বয়স্কদের এর অন্তর্ভুক্ত করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভোগা রোগীদের সাথে তাদের লক্ষণের প্রকাশ কতটা মারাত্মকভাবে সম্পর্কিত গবেষকরা তা খুঁজে বের করেননি।

গর্ভবতী নারীরা করোনা ভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রয়েছেন এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সাধারণভাবে বলা যায় তারা ভাইরাসে সংবেদনশীল এবং যদি তাদের নিউমোনিয়া দেখা দেয় তবে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

ছোট শিশুদের ক্ষেত্রেও করোনাভাইরাসে কি ধরণের লক্ষণ দেখা দেয় তা সংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। তবে বলা হচ্ছে যে তারা নিজেরা হাত ধোয়া বা ভীড় এড়িয়ে চলার মতো প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না বিধায় তাদের অভিভাবকদের প্রতি শিশুদের রক্ষা করতে যা করা সম্ভব তা করার আহবান জানানো হচ্ছে।

প্রশ্ন-৫: একজন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কি কি লক্ষণ দেখা দেয়?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞসহ বিশেষজ্ঞদের একটি যৌথ দল এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। দলটি ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত চীনে নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত ৫৫,৯২৪ ব্যক্তির লক্ষণ বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে ৮৭.৯ শতাংশ রোগীর জ্বর ছিল, ৬৭.৭ শতাংশের কাশি দেখা গিয়েছিল, ৩৮.১ শতাংশ ক্লান্তিবোধের অভিযোগ করেছিলেন এবং ৩৩.৪ শতাংশের কফ ছিল। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে ছিল শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যাথা এবং মাথা ব্যাথা। আক্রান্তদের মধ্যে গড়ে ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে এসব লক্ষণ প্রকাশ পায়।

আক্রান্তদের প্রায় ৮০ শতাংশের মধ্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। কিছু লোকের নিউমোনিয়া হয়নি। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩.৮ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ হন এবং শ্বাসকষ্টে ভুগেন।

৬০ বছর বা ততোর্ধ ব্যক্তি এবং যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এবং যাদের ক্যান্সার রয়েছে তাদের মারাত্মক অথবা প্রাণনাশক লক্ষণ দেখা যায়। শিশুদের আক্রান্ত হবার বা গুরুতর অসুস্থ হবার তেমন কোন খবর পাওয়া যায়নি। আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ২.৪ শতাংশ ১৮ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার জাতীয় কেন্দ্রের ডাক্তার সাতোশি কুৎসুনা জাপানে ভাইরাসের পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পাওয়া রোগীদের চিকিৎসা করছেন। কাৎসুনা বলেন তিনি দেখেছেন রোগীদের সর্দি, গলা ব্যাথা এবং কাশি ছিল। তাদের সবার ক্লান্তিবোধ এবং প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি জ্বর ছিল।

ডাক্তার জানান কিছু লোকের ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ পর উচ্চ তাপমাত্রা দেখা গিয়েছিল। তিনি বলেন এ লক্ষণগুলো মৌসুমি ফ্লু বা অন্যান্য ভাইরাসে সৃষ্ট রোগের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ছিল।

এ তথ্যগুলো মার্চের ১৯ তারিখ পর্যন্ত নেয়া।

প্রশ্ন-৪: আমরা কিভাবে আমাদের জামাকাপড় সংক্রমণমুক্ত করতে পারি? আমরা জানবো যে কাপড় ধোয়া হলে সেটা থেকে ভাইরাস দূর হয়ে যাবে নাকি কাপড় ধোয়ার সময় অ্যালকোহলের জীবাণুনাশক ব্যবহার করা উচিৎ হবে।

সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক জাপানি সোসাইটির এরিসা সুগাওয়ারা বলছেন কাপড়ে অ্যালকোহলের জীবাণুনাশক ব্যবহারের কোন প্রয়োজন নেই। তিনি এর ব্যাখ্যা করে বলেন যে স্বাভাবিক কাপড় ধোয়ার পদ্ধতিতেই বেশিরভাগ ভাইরাস কাপড় থেকে দূর হয়ে যায়। যদিও নতুন করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে একথা এখনও প্রমাণিত হয়নি।

কাশি বা হাঁচি দেয়ার সময় মুখ ঢাকার জন্য ব্যবহৃত রুমালের মত যেসব কাপড়ের মধ্যে এই ভাইরাসটি থাকতে পারার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে হবে সেগুলো ১৫ থেকে ২০ মিনিট ফুটন্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সুগাওয়ারা।

প্রশ্ন-৩: "গর্ভবতী নারীদের কোন কোন বিষয়ে সর্তক থাকা উচিৎ?"

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রাক্কালে ধাত্রীবিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিজ্ঞানে সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ক জাপান সোসাইটি গর্ভবতী মা এবং গর্ভধারণে ইচ্ছুক নারীদের জন্য পরামর্শ সম্বলিত দলিল প্রকাশ করেছে।

সোসাইটি বলছে এখন পর্যন্ত এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে গর্ভবতী নারীদের মধ্যে জটিল লক্ষণ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি কিংবা এই ভাইরাস ভুমিষ্ট না হওয়া শিশুর ক্ষেত্রে কোন সমস্যার সৃষ্টি করেছে।

তবে সোসাইটি সতর্ক করছে যে, সাধারণভাবে এই ভাইরাসের কারণে গর্ভবতী নারীদের নিউমোনিয়া হলে তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরতে পারেন।

সোসাইটি গর্ভবতী নারীদের বিশেষ করে বাইরে যাওয়ার পর এবং খাবার গ্রহণের আগে সাবান এবং বহমান পানি দিয়ে হাত পুরোপুরি ধুয়ে নিতে এবং অ্যালকোহল ভিত্তিক জীবাণুনাশক ব্যবহারের মত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছে।

অন্য যেসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর ও কাশি থাকা ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, নিরাপত্তামূলক মাস্ক পরিধান করা এবং নিজের হাত দিয়ে নাক ও মুখ স্পর্শ না করা। নিহন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক সাতোশি হায়াকাওয়া এই দলিলটি প্রণয়ন করেছেন। তিনি বলছেন, গর্ভবতী নারীরা যে উদ্বেগ অনুভব করছেন তা তিনি বুঝতে পারছেন। তবে তিনি তাদেরকে বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন কারণ সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় সব ধরনের ভুল তথ্য ছড়িয়ে পরে।

প্রশ্ন-২: "আমরা কিভাবে সংক্রমিত হই এবং আমরা কিভাবে সংক্রমিত হওয়া প্রতিরোধ করতে পারি?"

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন নতুন করোনাভাইরাস মৌসুমী ফ্লু বা সাধারণ সর্দিজ্বরের মতই সর্দি বা কাশির জলীয় অংশ অথবা ভাইরাস লেগে থাকা কোন স্থান স্পর্শ করার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এর মানে হল সংক্রমিত ব্যক্তি যখন কাশি বা হাঁচি দেয় তখন যে জলীয় অংশ নির্গত হয় তার মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। একজন ব্যক্তি এই ভাইরাস লেগে থাকা দরজার হাতল বা ট্রেনের হাতল ধরার পর সেই হাত দিয়ে যদি তার নাক কিংবা মুখ স্পর্শ করে তাহলেও সে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে। ধারণা করা হয় করোনাভাইরাস মৌসুমী ফ্লু’র মত একই মাত্রার সংক্রামক।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের মূল পদক্ষেপগুলো মৌসুমী ফ্লু মোকাবিলায় নেয়া পদক্ষেপগুলোর অনুরূপ। যেমন– হাত ধোয়া এবং কাশি দেয়ার শিষ্টাচার।

যখন কেউ হাত ধুবে, তখন তাকে সাবান ব্যবহার করতে হবে এবং কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে বহমান পানি দিয়ে হাতের কব্জি পর্যন্ত প্রতিটি অংশ খুব ভালো করে ধুতে হবে। অথবা কেউ অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারে। এই ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল কাশি দেয়ার সময় শিষ্টাচার অনুসরণ করা। যখন কেউ কাশি দিবে তখন সে টিস্যু কাগজ বা জামার হাতা দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখবে যাতে করে ভাইরাস থাকা জলীয় অংশ অন্য কারও উপর ছড়িয়ে না পরে। অন্যান্য কার্যকর পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলা এবং বাসায় থাকার সময় বাতাস চলাচলের জন্য জানালাগুলো খুলে রাখা।

জাপানে প্রত্যেক রেল কোম্পানিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা ট্রেনের যাত্রী ভর্তি কারের জানালাগুলো খোলা রাখবে কিনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রেনের কারগুলো যাত্রীদের উঠানামার জন্য যখন বিভিন্ন স্টেশনে থামে তখন এর দরজাগুলো খুলে যাওয়ার ফলে সেখানে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার বাতাস চলাচলের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-১: "করোনাভাইরাস কি?"

করোনাভাইরাস হচ্ছে একধরনের ভাইরাস যা মানুষ ও অন্য প্রাণীকে সংক্রমিত করে। সাধারণত, এটি মানুষের মধ্যে বিস্তার লাভ করে এবং এর ফলে সাধারণ সর্দিজ্বরের মত লক্ষণ যেমন কাশি, জ্বর ও সর্দি দেখা দেয়। ২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম নিশ্চিত হওয়া মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা মার্স সৃষ্টিকারী ভাইরাসটির মত করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া কিংবা অন্য জটিল লক্ষণের সৃষ্টি করতে পারে।

বিশ্বজুড়ে মহামারী সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসটি হচ্ছে এর একটি নতুন প্রজাতি। এই ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে জ্বর, ক্লান্তিবোধ, কফ, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যাথা এবং মাথা ব্যাথার মত বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী মৃদু লক্ষণ দেখা দেয়ার পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেন। ২০ শতাংশের কাছাকাছি রোগীর নিউমোনিয়া কিংবা বিভিন্ন অঙ্গ কাজ না করার মত গুরুতর অবস্থার সৃষ্টি হয়। লোকজন যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি, অথবা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট ও ক্যানসারের মত রোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া কিংবা মৃত্যুর সম্ভাবনা খুব বেশি। শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাস সংক্রমণের খুব কম খবর পাওয়া গেছে এবং তাদের মধ্যে দেখা দেয়া লক্ষণগুলো তুলনামূলকভাবে মৃদু প্রকৃতির।
TOP